Jump to ratings and reviews
Rate this book

ডমরু-চরিত

Rate this book
Domrucharit (The Story of Damru) is a collection of humorous and satirical short stories. The stories recounts the life of times of the hero Domrudhar in colonial India. The protagonist Domrudhar is portrayed as a dishonest man who rises from a lowly shop-assistant to a land owner.

160 pages, Hardcover

First published January 1, 1923

19 people are currently reading
317 people want to read

About the author

Troilokyanath Mukhopadhyay

20 books7 followers
Troilokyanath Mukhopadhyay, also known as T. N. Mukharji, was a remarkable person in British India. He worked as a curator at the Indian Museum in Calcutta, preserving India's cultural heritage. Beyond his museum work, Mukharji was a prolific writer in both English and Bengali.
Trailokyanath, recognized as a pioneer in Bengali literature, left an indelible mark as a renowned writer. Among his notable works stands "Damru Charit", a collection of humorous and satirical short stories published posthumously in 1923.
Troilokyanath's creations continue to delight people from generation to generation.


ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি। তিনি টি.এন. মুখার্জি নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি কলকাতায় অবস্থিত ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম-এ কিউরেটর ছিলেন। এই কাজের মধ্য দিয়ে তিনি ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তবে তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় হলো, ইংরেজি এবং বাংলা উভয় ভাষায় তিনি একজন প্রসিদ্ধ লেখক ছিলেন।
ত্রৈলোক্যনাথকে বাংলা সাহিত্যের একজন পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বেশকিছু ধ্রুপদী ও পাঠকনন্দিত লেখা লিখেছেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনা "ডমরু চরিত", যা ১৯২৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। এটি মূলত হাস্যরসাত্মক এবং ব্যঙ্গাত্মক ছোটগল্পের একটি সঙ্কলন।
ত্রৈলোক্যনাথের সৃষ্টকর্ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আজও মানুষকে আনন্দ যোগায়।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
88 (45%)
4 stars
70 (35%)
3 stars
25 (12%)
2 stars
7 (3%)
1 star
5 (2%)
Displaying 1 - 30 of 35 reviews
Profile Image for মাশুদুল Haque.
Author 19 books1,008 followers
October 30, 2015
ত্রৈলোক্যনাথের লেখা পড়ে আমার প্রথম বোধ হয় সাহিত্যিকরা সময়ের সীমা পেড়িয়ে আসতে পারেন, ডমরু চরিত কত কাল আগের লেখা, অথচ কত আধুনিক!
ডমরু চরিত রুডলভ এরিখ রাসপের বিখ্যাত চরিত্র ব্যারন মুনশাউজেনের মত, অসম্ভব ও উদ্ভট সব গল্প শোনায়, কিন্তু এসব গল্পের পাশাপাশি নানা সংস্কারকে নিয়ে তিনি যেসব রসিকতা করেছেন ভাবলেই অবাক লাগে সেসব গ্রহণের মত মানুষ সেসময় ছিলো কিনা।

বাঙালি পাঠকদের জন্য অতি অবশ্যপাঠ্য একটি বই।
Profile Image for Zarif Hassan.
121 reviews42 followers
October 10, 2022
এইরকম ডার্ক কমেডি - বাংলা সাহিত্যে তাও আবার প্রায় একশ বছর আগের... এমন কিছু পাবো কখনো ভাবতেও পারিনাই।

ডমরুধর চতুর, অকপট কপট, লুচু এবং সর্বাঙ্গে বাটপার। তার কিছু অপকর্মের ওপর ভিত্তি করে আজগুবি গল্প ফাঁদেন তিনি। আজগুবি শুধু বিষয়বৈচিত্র্যতেই, তার গল্পের গাঁথুনী নিরেট। এমনভাবে তিনি গল্প বলেন যা প্রমাণ করা যায় না আবার অপ্রমাণও করা যায়না। প্রমাণ চাইলে ডমরুধর সাথে সাথে এমন প্রমাণ দেখান যেখান থেকে ঘটনার সত্যতা আসে না কিন্তু প্রমাণ চাওয়ার হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। এখানেই ডমরুধরের সার্থকতা। তার কাহিনী এতোই আজগুবি তবুও এতোই বিশ্বাসযোগ্য যে, ধাঁধায় পড়িয়া যাইতে হয়। এই দেখুন না, এখন আমার মুখ ‍দিয়া ডমরুধর কথা বলিতে শুরু করিয়াছে। বেশিদূর কথা বলিতে পারার পূর্বেই ক্ষান্ত হই। শেষ করি বাটপারেশ্বর ডমরুধরের মুখনিঃসৃত কিছু ধাঁধালাগানিয়া বাক্য দিয়া যাহা ‍দিয়া তিনি আমায় বিভ্রান্ত করিয়াছেন তাহাকে মানিতে।

"কিছু একটা হুজুগ লইয়া বাঙালি অধিক দিন থাকিতে পারে না। হুজুগ একটু পুরাতন হইলেই বাঙালি পুনরায় নূতন হুজুগের সৃষ্টি করে। অথবা এই বঙ্গভূমির মাটির গুণে আপনা হইতেই নূতন হুজুগের উৎপত্তি হয়।"

"টাকা উপার্জন করিলেই টাকা থাকে না; টাকা খরচ না করিলেই টাকা থাকে।"

"টাকা হইলে কেহ তখন জিজ্ঞাসা করে না যে, অমুক কী করিয়া সম্পত্তিশালী হইয়াছে। জাল করিয়া হউক, চুরি করিয়া হউক, যেমন করিয়া লোক বড়মানুষ হউক না কেন, অমুকের টাকা আছে, এই কথা শুনিলেই ইতর-ভদ্র সকলেই গিয়া তাহার পদলেহন করে, সকলেই তাহার তৈলমর্দন করে।"

"দেখ লম্বোদর! সত্য সত্য লোকের টাকা না-থাকুক, একটা জনরব উঠিলেই হইল যে, অমুকের অনেক টাকা আছে। কাহাকেও একটি পয়সা দিতে হয়না। মুখবন্ধ গুড়ের কলসির নিকট কত মাছি থাকে। তাহারা একফোঁটা গুড় খাইতে পায় না, তথাপি আশেপাশে ভ্যানভ্যান করে।"

"যে কাজ সম্ভব, যে কাজে লাভ হইতে পারে, সে কাজে বাঙালি বড় হস্তক্ষেপ করে না। উদ্ভট বিষয়েই বাঙালি টাকা প্রদান করে।"

"রোগ ভালো হইলে অনেকেই ডাক্তার-বদ্যিকে কলা দেখায়।"

ইয়ে মানে এই প্রয়াসে বলিয়া রাখিলাম, ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, ‘দুর্গেশনন্দিনী’ ইত্যাদিও ডমরুধরেরই লেখা কিন্তু। বিশ্বাস না হইলে প্রমাণ করিয়া দেখান, এ-সমস্ত ডমরুধরের লেখা নয়!

জিলেট জিলেটি সিলেমেল কিলেকিট কিলেমিশ!!
Profile Image for Yeasin Reza.
508 reviews85 followers
March 26, 2024
ডমরুচরিত এক আশ্চর্য বই। এতো আগে এমন ডার্ক হিউমার সম্পন্ন লেখা হয়ে আছে তা ভাবতে পারিনি। ডমরুচরিত নিছক হাস্যরসের বই নয়, এতে উঠে এসেছে তৎকালীন নানান সামাজিক বিষয়আশয় যা আমাদের ফেলে আসা সমাজের নানা অন্ধকার সম্পর্কে নতুন দৃষ্টি দিয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে। ডমরুচরিত পুরো বাংলা সাহিত্যের এক ব্যতিক্রমী সৃৃষ্টি বলে আমার হয়।
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
February 6, 2023
শালা ডমরুধর মাল একটা! গুলগাপ্পি আর ওস্তাদিতে কোথায় লাগে টেনিদা, ঘনাদারা। 🤣😂 সিরিয়াসলি বিশাল ভুল হয়ে গেছে এতোদিন পড়ব পড়ব করে ফেলে রেখে।

বুড়োর বয়স না হলেও প্রায় ৭০। যদি জিজ্ঞাসা করেন, দেখতে কেমন? মহাশয়ের ভাষ্যমতে, তিনি স্বয়ং দেবী দুর্গা আর সরস্বতীর আশীর্বাদ প্রাপ্ত। চেহারায় কার্তিক (উনি কিন্তু গুলপট্টি মারায় উস্তাদ! কাজেই সাবধান) যখনই বিপদগ্রস্ত হোন, স্বয়ং দেবী দুর্গা বুদ্ধি দিয়ে সহায়তা করেন। তার আছে মহামন্ত্র (হুঁ হুঁ বাবা... এই জিলেটি মন্ত্রের জোর না জেনে যারা তাকে নিয়ে আড়ালে হাসাহাসি করে তারা যখন প্যাচে পড়ে ডমরুধরের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবে, তখন বুঝবে ঠেলা। বুঝবে তখন মন্ত্রের মাহাত্ম্য।) ওহ! যদি জিজ্ঞাসা করেন, ডমরুধরের চরিত্র কেমন? ঘরের ঘরণী যদি হয় মারমুখো, যখন তখন ঝাঁটাপেটা করতে চায় কার প্রাণ তখন সেই রমণীমুখো হবে, বলেন তো? সেজন্যই না একটুখানি শ্বাস ফেলে প্রাণ বাঁচবার আশায় কখনও দুর্লভী বাগদির কাছে যাওয়া... কখনও সখনও অন্য যা হোক কেউ। আর এতেই যদি কারও প্রাণে সহ্য হয়! ঠিক লাগিয়ে দেবে দুর্মুখো, মারকুটে, খাণ্ডারনি এলোকেশীর কাছে। আর তার ঝাঁটা নিয়ে তেড়ে আসা আর ডমরুধরের হেনস্থা দেখে মজা লুটবে সবাই। তা যা হোক... ডমরুধরের আয়ের উৎস কী জানতে চাইলেন? তা বাপু একটুখানি চালাকচতুর না হলে কি আর এই পোড়া পৃথিবীতে টেকা যায়? আর লোকে কেবল দোষ ধরে ডমরুধরের। কী? ডুমরুধরের গপ্পো শুনতে চান? কেবলমাত্র অই মর্কট লম্বোদরটাই বলবে ডমরুধর গপ্পো ফাঁদে। শুনতেও চাইবে আবার বিশ্বাস না করে টিপ্পনীও দেবে। এগুলো কিন্তু গপ্পো নয়.. একদম নির্জলা সত্যি! কেউ এসে প্রমাণ করে দেখাক না হয়! হুঁহ!
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
October 8, 2022
কথায় আছে, 'গল্প। কেউ দেয় না অল্প' । আমাদের ডমরুধর ও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে তার গল্পগুলো এতটাই অতিরঞ্জিত যে বিশ্বাস করা অসম্ভব। বৈঠকী চালে বসে গল্প শুনিয়ে আমাদের বাংলা সাহিত্যে বেশ কমই আছে বলতে গেলে। তার মধ্যে আমার প্রথম পছন্দ তারানাথ তান্ত্রিক। তারপর তারিণীখুড়ো। তারপরই ডমরুধর । এক্ষেত্রে তারানাথ ও তারিণীর গল্পগুলো ডমরুর মতো এতো অতিরঞ্জিত না, সবসময়ই বিশ্বাস অবিশ্বাসের মাঝখানে থাকে। কিন্তু ডমরুধরের গল্পগুলো এতটাই আজগুবি যে শ্রোতাদের মনের মধ্যে বিশ্বাসের ছিটেফোঁটা তৈরি করাও সম্ভব না। ডমরুধরের বিশ্বাস তিনি মনুষ্য নন। স্বয়ং পার্বতীপুত্র কার্তিক, দাদা গনেশের শাপ পেয়ে পৃথিবীতে পতিত হয়েছেন।

ডমরু বসবাস করেন দক্ষিণ কলকাতার একটি গ্রামে। তাঁর জীবনের প্রথমার্ধ কাটে নিতান্ত দারিদ্র্যের মধ্যে। কিন্তু পরবর্তী কালে তিনি বিচিত্র কৌশলে বেশ ধনী হয়ে ওঠেন। তাঁর সেই বিশেষ কৌশলগুলির মধ্যে একটি হলো 'কিপটেমি' - তিনি একটি পয়সাও বাজে খরচ করেন না। বিত্তবান হবার সাথে সাথে তাঁর নামেরও বদল ঘটে 'ডমরু' থেকে 'ডমরুধর'হয়ে যায়। তা, আমাদের প্রাণপ্রিয় ডমরুধর বাবু এখন পাকা ইমারতে বাস করেন। গত তিন বছর ধরেই তাঁর বাড়িতে দুর্গোৎসব হচ্ছে। কিন্তু কেন এই দুর্গাপুজো তাঁর বাড়িতে, সেই নিয়েই শুরু হয় তাঁর গপ্পো !

প্রতি বছর দুর্গা পঞ্চমীর সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির দালানে বসে ডমরুধর তাঁর ইয়ারবকশিদের সাথে করে চলেন অসম্ভব, অমূলক রসেভরা, অদ্ভুত জগতের গল্পগাছা। ডমরু বাংলা সাহিত্যের অদ্ভুত এক চরিত্র। চুরি,জোচ্চুরি, স্বদেশী কোম্পানীর নামে অর্থ আত্ম���াৎ এমন কোনো হীন কুকর্ম নাই, যা সে করে নি। আসলে লেখক, তার সময়ের চিত্রটিকে এমন সুনিপুণ শৈল্পিক রূপে সৃষ্টি করেছেন,চরম হাস্যরস এর পাশাপাশি উন���িংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের চিত্রও মানসপটে ভেসে ওঠে। মোট ৭ টি গল্প দিয়ে সাজানো চমৎকার এই বইটি পড়ার আমন্ত্রণ রইলো সকলকে।
Profile Image for Shadin Pranto.
1,470 reviews560 followers
October 23, 2022
ধনবান ডমরুধর দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। বয়সে প্রবীণ। দর্শনে সৌন্দর্যের দেবী মূর্ছা যান। বর্তমানে সে জমিদার এবং প্রভূত সম্পত্তির মালিক হলেও প্রথম জীবনে ছিল নিতান্তই গরিব৷ নুন আনতে নিত্য ফুরাত ডমরুধরের পান্তা। কলকাতার বাগবাজারের এক কাপড়ের দোকানে কাজ করতো ডমরুধর। সেই ডমরুধর বৃদ্ধ বয়সে নিজের অতীত জীবনের অত্যাশ্চর্য নানা ঘটনা শোনাচ্ছে লম্বোদর এবং ঘোষকে। চতুর ডমরুধরের সেইসব ঘটনা নিয়েই ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের 'ডমরু-চরিত'।

ডমরুধরের কাহিনিগুলো গুলগাপ্পিতে ভরা। বিষয়ী লোক ডমরুধর অত্যন্ত অসৎ এবং কৃপণ। সে বিভিন্ন বিচিত্র ঘটনার মুখোমুখি হয়। কখনো প্রতিবেশীর লুকানো মোহর চুরি করে। তা খুবই সূক্ষ্মভাবে হাপিস করে দেয়। চুরির টাকায় সুন্দরবনের জলায় জমিদারি কেনে। কিন্তু পত্তন করতে পারে না। সেই না-পারার পেছনে আছে চড়ুইপাখি সাইজের মশাদের উৎপাত! কীভাবে নিধন হল ভয়ংকর মশারা জানতে পড়ুন ডমরুধরের কাহিনি।

দেবী দুর্গার আরাধনা করেন ডমরুধর। নিজেকে দাবি করেন দেবীর সাক্ষাৎকার বরপুত্র। এইখানে তৎকালীন সময়ের চাইতে অনেকবেশি প্রাগ্রসর চিন্তার প্রমাণ দিয়েছেন ত্রৈলোক্যনাথ। তিনি ধর্মীয় সংস্কারের বাড়াবাড়িকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। সন্ন্যাসী এসে ডমরুধরের ধনসম্পদ দ্বিগুণ করে দেওয়ার লোভ দেখাল। কিন্তু হুঁশিয়ার ডমরু তাতে মজবেন কেন? হ্যাঁ, লোভে পড়ল ডমরু। তারপর আত্মা নিয়ে কী নাকালটাই না হলো।

চরিত্রবান ডমরু। কিন্তু পাড়ার বাগদিনীকে দেখে চিত্তচঞ্চল হয়ে ওঠে তার। তার ঘরনি এলোকেশী তো একাই একশ'। বুড়ো ডমরু দেবীকে কুপিত করে বাগদিনী এবং গৃহিনী এলোকেশীর আচ্ছামত মার খেল। কিন্তু বাগদিনীর ছোট বোনকে দেখে মন যে উড়ু উড়ু করছে ডমরুধরের!

অত্যন্ত হাস্যরসিক চরিত্র ডমরুধর। ভারি সেয়ানা। খুব লোভী। কিপ্টেদের রাজা-গজা। এবং অতীব ইংরেজভক্ত। আ্যডভেঞ্চার, রুপকথা, রম্য এবং সামাজিক বিভিন্ন কাহিনি নিয়েই ডমরু-চরিত। তবে -

ডমরুধরের স্রষ্টা ত্রৈলোক্যনাথের জীবন ছিল বিচিত্র। জীবিকার তাগিদে হরেকরকম পেশার সাথে মোলাকাত হয়েছিল তাঁর। শেষ জীবনে ইংরেজ সরকারের কৃপাদৃষ্টি পেয়েছিলেন। বড় পদে চাকরি করেছেন৷ প্রভুর দয়ায় বিলেত ঘুরে এসেছেন৷ প্রভু ইংরেজ সরকারের কৃপা তিনি ভোলেননি। ব্রিটিশভক্ত ত্রৈলোক্যনাথ তাঁর ভক্তির প্রমাণ নিজের লেখার মধ্যেও রেখেছেন৷ ডমরু-চরিত পড়লে বোঝা যায়, গল্পগুলো স্বদেশি আন্দোলন অর্থাৎ ১৯০৬ সালের পর লেখা। তখন ইংরেজবিরোধী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। হোমরুল তথা স্বরাজের দাবিও শোনা যাচ্ছে। স্বদেশবাসীর রাজনৈতিক সচেতনতার বাতাবরণ তৈরি 'হব হব' করছে৷ আমাদের ত্রৈলোক্যনাথ মশাই এসব অনাসৃষ্টি সহ্য করতে পারেননি। তিনি ডমরুকে দিয়ে বন্দনা করিয়েছেন ইংরেজদের। ব্যঙ্গ করেছেন, অপদস্থ করেছেন স্বদেশী আন্দোলন এবং এর সাথে যারা জড়িত ছিল তাঁদের। যার নুন খেয়েছেন, সেই মহাপ্রভুর গুণগান খুবই উচ্চাঙ্গে গেয়েছেন ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়।
Profile Image for Nayeem Samdanee.
58 reviews14 followers
March 23, 2024
অনেক ভাবিয়া দেখিলাম—কিন্তু ডমরুধরকে কোন্ উপায়ে যথার্থরূপে বিশেষায়িত করা সম্ভব, তাহা সঠিক বলিতে পারি না।

যাইহোক, ডমরুধর যে একজন পাকা গুলবাজ, ধড়িবাজ, অসৎ, লোভী, দুশ্চরিত্র ও তস্করস্বভাবের বুড়ো, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। নিজমুখেই অকপটে বলে যায় সে নিজের দুর্বৃত্তি, দুরভিসন্ধি আর দু্র্মতির কথা। কিন্তু সেখানেই তো মজা। এই যে সে নির্জলা গুলপট্টি মেরে যাচ্ছে, গপ্পের গরুকে চার হাতপায়ে তুলে ফেলছে গাছের মগডালে, কে জানে সেখানে গিয়ে সেই গরু হয়তো আয়েশে কয়েকবান্ডিল বিড়িই ফুঁকছে। ডমরুর খপ্পরে পড়লে সবই সম্ভব—আহা, সে কী ভয়ানক সৃজনক্ষমতা। আসরে বসে যারা গোগ্রাসে গল্প গিলছে, তাদেরকে ঘাড়ে ধরে কোত্থেকে কোথায় নিয়ে যায় ডমরুধর তা ঠাহরই করা যায় না। তবে ডমরুর সব গল্পের পেছনেই গূঢ় উদ্দেশ্য থাকে। একপর্যায়ে সে নিজের পুরোনো কোনো একটা দুষ্কর্মের এমন অদ্ভুতুড়ে আর অবিশ্বাস্য ব্যাখ্যা দাঁড় করায় যে, লোকে প্রশ্ন তুলবে কী—বিস্মিত হয়েই থই পায় না। এই যেমন ভূতের হাতে কামড় দেয়ার বিবরণের কথাই ধরা যাক। পড়ে আক্ষরিক অর্থেই আমার বিষম লেগেছে। বুড়ো বলে কিনা—দাঁতগুলো আগে পড়ে গেছে বলে ভূত বড়ো বাঁচা বেঁচে গেছে সেবার, নয়তো আরো ভালোভাবে কামড় বসানো যেতো, আর তাতে ভূতের হাতে দগদগে ঘা থাকতো। গল্পগুলোর পরিধি কেবল এরকম নির্মল হাস্যরসেই সীমাবদ্ধ নয়, ক্ষেত্রবিশেষে তা পরিণত হয় ভয়ঙ্কর তিক্তরসে, অর্থাৎ কিনা ডার্ক হিউমর যাকে বলে।

খানিকটা খটকা আছে। সমালোচনার সুযোগও আছে। সে সময়টায় স্বদেশী আন্দোলনের ধুয়ো তুলে করা লোকঠকানো কারবার দেদার হয়েছে, তা অনস্বীকার্য; কিন্তু সেসবকে কটাক্ষ করতে গিয়ে ত্রৈলোক্যনাথ ক্ষেত্রবিশেষে খানিকটা বাড়াবাড়ি করেছেন বলেই মনে হয়েছে। অবশ্য সরকারি চাকুরির সুবাদে তাঁর ইংরেজপ্রীতির বিষয়টা আগেই বুঝেছি, অন্য আরো কিছু লেখা পড়ে। শক্তিশালী লেখকরা নিজের মনের কথাকে চরিত্রের মুখে বলিয়ে নিয়ে মানুষকে ম্যানিপুলেশনের অসীম ক্ষমতা রাখেন, তাতে আর সন্দেহ কী? তবে সে-যাইহোক, ধর্মান্ধতাকে আর গোঁড়ামিকে গল্পচ্ছলে যেমন তীব্রভাবে তিনি আক্রমণ করেছেন, সেটিও তো ভুলে গেলে চলবে না।

মোটকথা, ডমরুধরের খপ্প‌রে একবার পড়লে বাকিটুকু শোনার কৌতূহল চাপা দেয়ার উপায় নেই।

তবে? তবে আর কী!

জিলেট জিলেকি সিলেমেল কিলেকিট কিলেকিশ!
Profile Image for Sanowar Hossain.
281 reviews25 followers
June 28, 2023
'জিলেট জিলেকি সিলেমেল কিলেকিট কিলেকিশ'। বইয়ের রিভিউ দিতে এসে আবার কী বলছি? একটু অপেক্ষা করুন। ডমরুধরকে চিনেন? ঐ যে গালগল্পের বেলায় যার জুড়ি মেলা ভার। বাংলা সাহিত্যে বৈঠকি আড্ডায় সেরা ডমরু ধরের গল্পগুলো। তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া আশ্চর্য সব গল্প শোনান। গল্পগুলো বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও আবার ফেলেও দেওয়া যায় না। বইটিতে ডমরুধরের সাথে ঘটে যাওয়া আশ্চর্যজনক সাতটি গল্প রয়েছে।

ডমরুধর কলকাতার বাসিন্দা। বয়স সত্তরের উপরে। একসময় অনেক গরিব থাকলেও চতুরতা ও ছলনার আশ্রয় নিয়ে তিনি অনেক টাকা উপার্জন করেছেন। সেই গল্পগুলোই লম্বোদর ও ঘোষকে পূজার অবসরের সময়ে শোনান। মনোযোগী শ্রোতা হিসেবে তারাও ডমরুধরের গল্পগুলো শুনেন। তবে গল্পের সত্যতা সম্পর্কে সন্দিহান হলেই ডমরুধর বেঁকে বসেন এবং প্রমাণ হাজিরের নিমিত্তে লম্ফঝম্প করেন। তখন শ্রোতাদের আর সন্দেহ থাকেনা। পঁয়ষট্টি বছর বয়সে যখন ডমরুধর তৃতীয় বিবাহ করতে মনস্থির করেছেন, তখন বিপত্তি বাঁধে এক সন্ন্যাসীর সাথে। সন্ন্যাসী ও ডমরুধরের আত্মা প্রতিস্থাপন হয়ে যায় এবং ডমরুধরের পরিবর্তে সন্ন্যাসী যখন বর সেজে বিয়ে করতে যায়, সেই ঘটনারই হাস্য রসাত্মক বর্ননা পাই ডমরুধরের গল্পে।

প্রথম জীবনে ডমরুধর কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেখানেই প্রহ্লাদ সেন পরিবারসমেত থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে ডমরুধরের প্রথম স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। প্রহ্লাদবাবুর কন্যাকে যখন বিবাহ করতে মনস্থির করেন তখন তাঁর বয়স পঁয়ত্রিশ। কন্যাটির বয়স তখন নিতান্তই কম। তবে ঝিকে দিয়ে ডমরুধর প্রহ্লাদবাবুর কানে ফুলিয়ে ফাপিয়ে জমিদারির মিথ্যা গল্প করেছিলেন। অনেক বলা-কওয়ার পর নগদ পাঁচশত টাকা পণ দিয়ে মালতীকে ডমরুধরের কাছে বিয়ে দেন প্রহ্লাদবাবু। কিন্তু ডমরুধর তখন কানাকড়ির মালিকও ছিলেন না। তাহল��� এত টাকা কোথায় পেলেন? বাটপারি বা চুরি যাইই বলুন ডমরুধর টাকা জোগাড় করেছিলেন। সুন্দরবনে জঙ্গল সাফ করে আবাদের কাজেও হাত দিয়েছিলেন ডমরুধর। বাঘের মন্ত্র ও মশার মাংসের গল্পগুলোও জানা যায় এই যাত্রায়।

ডমরুধরের স্ত্রী এলোকেশী। এলোকেশীর হুঙ্কারে পুরো গ্রাম কেঁপে উঠে। তবুও ডমরুধরের চরিত্র রক্ষা হয় না। তিনি দুর্লভী বাগদিনীর প্রতি দূর্বল। এলোকেশী সেই সম্পর্কে অবগত এবং মাঝেমধ্যেই স্বামীকে দাবড়ানি দিয়ে থাকেন। শব সাধনা করে দেবী দূর্গার থেকে বর হিসেবে কার্ত্তিকের ময়ূরটি একদিনের জন্য পেয়েছিলেন। সাথে দুইটি মন্ত্রও দিয়েছিল দেবী দূর্গা; 'জয় কৈলাসবাসিনী মহেশগৃহণী গণেশজননী' ও ' জয় কৈলাসবাসিনী ত্র‍্যম্বকগৃহণী ষড়াননজননী'। প্রথম মন্ত্র উচ্চারণের পর ময়ূর বাতাসে উড়তে শুরু করে এবং সারাদিন ঘোরাঘুরির পর যখন বাড়ি ফিরতে হবে তখন ডমরুধর আর দ্বিতীয় মন্ত্র মনে করতে পারেন না। তখন সেই দ্বিতীয় মন্ত্র জোড়াতালি দিয়ে উচ্চারণ করেন এবং সেটা হয়ে যায় 'জিলেট জিলেকি সিলেমেল কিলেকিট কিলেকিশ'। ভুল মন্ত্র শুনে ময়ূর ডমরুধরকে পিঠ হতে কৈলাস পর্বতের উপর ফেলে দেয়। ডমরুধর সেখান হতে বেঁচে ফেরার গল্প শোনান শ্রোতাদের।

বইটি মূলত ডার্ক কমেডি ঘরানার। ভাবলে অবাক হতে হয় এত বছর পূর্বে এমন বৈঠকি আড্ডার ঢঙে ডার্ক কমেডিকে উপস্থাপন করেছিলেন ত্রৈলোক্যনাথ মহাশয়। পুরো বইতেই ডমরুধরের কাহিনি পাঠককে হাসাবে। গাল গল্পে টেনিদা, ঘনাদা কিংবা সন্তুর বন্ধু জোজোর যে দক্ষতা তার চাইতে গোছানো গল্পের ক্ষেত্রে ডমরুধর কোনো অংশে কম নন। শ্রোতারা গল্পগুলোকে আজগুবি বলে উড়িয়ে দিতে চাইবে অথচ ডমরুধরের গল্প বলার ধরন শ্রোতাকে বিশ্বাস করিয়ে ছাড়বে। বিশ্বাস না করলেই বা কী? মজা ত পাওয়া যায়। আর ডমরুধরও গল্পগুলো বলে নিজের বুদ্ধিমত্তাকে জাহির করতে পারলেন। নির্মল আনন্দ পেতে চাইলে বইটি নিয়ে বসে পড়ুন। হ্যাপি রিডিং।
Profile Image for Anik Chowdhury.
175 reviews36 followers
May 21, 2022
শ্রীমান ডমরুধর! রসবোধ আর কল্পনাশক্তিতে যার জোর অদম্য। অদ্ভুত অদ্ভুত গল্প তৈরি করে অবিশ্বাস্য সব কান্ড করতে যা জুরি মেলা ভার। প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময়ে বসে তার গল্পের আসর। সে কৃপণ ডমরু যে কিনা সত্তর বছর বয়সের বুড়ো সে একাই জমিয়ে দেন আসর।

সাতটি গল্পের সমাহারে এই বইটি। লেখক তার কল্পনার জাল বিছিয়ে যেমন অনেক উদ্ভট কাহিনী তৈরি করেছেন তেমনি রসবোধের মাত্রাকেও তিনি নিয়ে গিয়েছেন অন্য মাত্রাতে। যেমন ধরুন ডমরু নিজেই সত্তরের বৃদ্ধ, কুচকুচে কালো তার গায়ের বর্ণ, মাথায় চকচকে টাক, গালে একটাও দাঁত নেই সেই ডমরু কিনা পার্বতীর প্রিয় পুত্র কার্তিকেয়! আস্ত জ্যান্ত বাঘ তার ছাল ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে আর ডমরু সেই ছাল অনায়াসে নিজে জড়িয়ে হয়ে উঠেছে বাঘ। কখনো গিয়েছে অশ্বাণ্ডে আবার কখনো বা জমালয়ে।
পার্বতী দেবীর প্রিয় পুত্র বলে দেবীকে ডাকা মাত্রই তিনি ডমরুধরের সামনে প্রকট হয়ে তার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। ডমরু তখন ময়ূরের পিঠে চড়ে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড প্রদক্ষিণ করেন। কখনো বা দেখে এক বুড়ি ফলাফলা করে কেটে ফেলছে আস্ত সূর্যকে। তবে লেখক ত্রৈলোক্যনাথ রম্যের আড়ালে সমাজের নিকট ছুঁড়ে দিয়েছেন তীক্ষ্ণ উপহাস। সেই প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তার তীব্র হেঁয়ালিপূর্ণ রম্য বাক্যগুলো পাঠকের মনে হানা দিয়ে যাবে আলোআঁধারির রহস্যময়তা নিয়ে। যেমন লেখক নাকি নিজেই সেই সময় দুইবার বিদেশ যাত্রা করতে পারেননি কালাপানি পার হলে ধর্ম যায় এমন কুসংস্কার তখনকার সমাজে প্রচলিত ছিলো বলে। সেই কুসংস্কারকেও তিনি গল্পে মজার ছলে কটাক্ষ করে গিয়েছেন। তবে পরে লেখক বিদেশযাত্রা করেছিলেন এবং বিদেশফেরত হয়ে আবার শুদ্ধ হয়েছিলেন নানান ধরণের ধর্মীয় আচার পালন করে। লেখক তার সমাজের কুসংস্কারকে গা থেকে ঝেড়ে ফেলতে না পারলেও লেখনি দিয়ে কটাক্ষ করে গিয়েছেন নানান হেয়ালি আর ধোঁয়াশার জাল বুনে সাথে ছিলো লেখকের কল্পনাপ্রবণ মন।
Profile Image for Ahmed Atif Abrar.
719 reviews12 followers
July 30, 2025
ডমরুধর বাচ্চা মেয়ে মেনী গোয়ালিনী আর তার ছোটো ভাইয়ের ঘরের এক কোণে লুকিয়ে বসে তাদের কথাবার্তা শুনছে:
ভিলে বলিল,—'দিদি! রায়েদের বাড়ী হইতে আর ভাত আন না কেন? কাল কেবল একটা তাল খাইয়া আমরা ছিলাম। আমাকে সমস্ত দিয়াছিলে, তুমি কেবল একটুখানি খাইয়াছিলে। আজ আমরা কিছুই খাই নাই। রায়েদের বাড়ী হইতে কবে ভাত আনিবে?'

মেনী কেনারাম রায়ের শিশু পুত্রকে লইত, তাঁহারা দুই বেলা দুইটা ভাত দিতেন। বাড়ীতে আনিয়া সেই ভাত ভাই ভগিনীতে ভাগ করিয়া খাইত। আজ দুইদিন হইল রায়ের শিশুপুত্র এক সোঁ পোকা ধরিয়াছিল, মেনী তাহা দেখে নাই, সে জন্য মেনীকে তাঁহারা ছাড়াইয়া দিয়াছেন।

মেনী উত্তর করিল,—'রায়েদের খোকা সোঁ-পোকা ধরিয়াছিল; সেজন্য তাঁহারা আর আমাকে ভাত দিবেন না।'

ভিলে বলিল,—'তবে দিদি, আমাদের কি হবে? ভাত কোথা হইতে আসিবে? ক্ষুধায় আমার পেট জ্বলিয়া যাইতেছে।”

মেনী উত্তর করিল,—'দেখ ভিলু! পাড়ার লোকের নিকট হইতে কাল তোমাকে দুইটী ভাত আনিয়া দিতে পারি। কিন্তু চাউলের দাম বাড়িয়াছে, রোজ রোজ লোকে দিবে কেন? আমাদের দশা কি হইবে, তাহাই এখন ভাবিতেছি।'

ভিলে বলিল,—'তবে দিদি কি হবে, ভাত না খাইয়া আর আমি থাকিতে পারি না। আজ সমস্ত দিন কিছু খাই নাই, আমার বড় ক্ষুধা পাইয়াছে। ক্ষুধায় আমার পেট জ্বলিয়া যাইতেছে।'

মেনী বলিল,—'আর বৎসর ভড়েদের বাড়ী তুমি দুর্গা ঠাকুর দেখিয়াছিলে। সেই দশ হাত আর কত রাঙতা? ভড়েরা তোমাকে মুড়কি ও নারিকেল নাড়ু দিয়াছিল? পূজা হইয়া গেলে বোসেদের গঙ্গায় তাহারা ঠাকুর বিসর্জ্জন করিয়াছিল, মা দুর্গা বোসেদের গঙ্গার ভিতর আছেন। কাল যদি তোমাকে দুইটী ভাত দিতে না পারি, তাহা হইলে আমরা দুইজনে বোসেদের গঙ্গায় যাইব। তোমাকে কোলে লইয়া আমি জলে ঝাঁপ দিব; জলের ভিতর মা দুর্গা আছেন; তাঁহার কাছে আমরা যাইব। তিনি আমাদিগকে অনেক ভাত দিবেন, আমদের সকল দুঃখ ঘুচাইবেন।'


এরপর ডমরু তাদের বসতের অল্প জায়গাটুকু, যা তার বাগানের ঘেঁষেই পড়েছে, দখলে নিতে চাইল। একদম নিরাবেগ থেকে, সামনের সারির দর্শক থেকে ত্রৈলোক্যনাথ সমাজের কদর্য চেহারা দেখিয়ে গেছেন। অন্ধকার রসের দারুণ উপস্থাপন।

এরপর ঢাক মহাশয়ের বিধবা মেয়ে কুন্তলা পানি না পেয়ে মারা গেল। তারপর ভূত হয়ে তাড়া করে বেড়াতে লাগল গোটা পরিবারকে ‘জল জল’ চিৎকার করে:
ফল কথা, যখনই কুন্তলার ভূত চীৎকার করিত, তখনই বাড়ীর একটা না একটা লোক মরিতে লাগিল। দাসীর মৃত্যুর পর ঢাক মহাশয় গয়াতে পিণ্ড দিবার জন্য লোক পাঠাইলেন। কিন্তু তাহাতে কোন ফল হইল না। কারণ কিছুদিন পরে পুনরায় যখন চীৎকার হইল, তখন ঢাক মহাশয়ের ছট্টু নামক চাকর মরিয়া গেল। বিধবা হইয়া একাদশীর দিন ভিজা মেজে চাটা পাপটি সামান্য নহে। গয়াতে হাজার পিণ্ড দিলেও ইহা ক্ষয় হয় না।

এই জায়গায়ই বোধ হয় ত্রৈলোক্যনাথ আর দর্শকসারিতে থাকতে পারলেন না, মঞ্চে উঠে মাইক নিয়ে একটু বকে গেলেন।
এই থিমের সাথে তুলনা করতে পারি হুমায়ূন আহমেদের ’পোকা’ উপন্যাসের।
Profile Image for Csk Himalay.
15 reviews4 followers
May 13, 2023
ডমরুধর বাংলা সাহিত্যের ম���ল্যবান সম্পদ। আগামী একশো বছর পরও ডমরুধর এমনই অসাধারণ অনন্য থাকবে।
Profile Image for Md Khalid Rahman.
137 reviews38 followers
February 17, 2023
ডমরুর কুটিলত্ব, হিউমার এবং লম্বোদরের টিপ্পনী বেশ ভালোই লাগলো পড়তে। একশ বছরেরও বেশি আগে বাংলায় এমন ডার্ক হিউমারের বই লেখা হয়েছে বুঝে বেশ ��মকই লাগলো।

লেখকের লেখা আরও পড়তে হবে।
Profile Image for DEHAN.
275 reviews86 followers
January 8, 2020
ডমরুধরের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র ... অন্তত ডমরুধরের সেরকম ই ধারনা । তাঁর চাপার জোর অস্বাভাবিক । মানুষ সাধারনত বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা কিছু বললে এমন ভাবে বলে যেন তা একটু বিশ্বাসযোগ্য হয় কিন্ত আমাদের ডমরুধর একেবারে ভিন্ন।উনি কে কি মনে করলে তাঁর ধার ধারে না । তিনি চাপাবাজি জিনিসটাকে একটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে ।
আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না বইটির একটা জায়গায় ডমরুধর দাবী করে মেঘনাদবধ কাব্য নাকি তাঁর রচনা, মাইকেল সাহেব তার কাছ থেকে লেখাটি নিয়ে বাজারে নিজের নামে প্রকাশ করেন শুধু তাই ই নয় বঙ্কিমের দুর্গেশনন্দিনীও তাঁর ই লেখা।
মোট কথা বইটি আসলে একটা অদ্ভুত বই ।ডমরুধর গল্প বলার ফাঁকে ফাঁকে গল্পের দৃশ্যটার আরো নিখুঁত বর্ণনার জন্য মাটিতে ছবি একে দেখান সেটা আরো ভালো লেগেছে ।বলতে সংকোচ নাই ত্রৈলোক্যনাথ মশাই এর রসবোধ আধ্যাত্মিক পর্যায়ের ।
আপনার মন ভাল ? এই বইটা পড়তে পারেন ।
আপনার মন খারাপ? এই বইটি পড়তে পারেন ।
আপনার মন ভালোও না খারাপ ও না ? তাও এই বইটি পড়তে পারেন ।
পাঁচ তারকা কম হয়ে গেছে আমি এইটারে দিলাম সাড়ে ছয় তারকা । বাকি সাড়ে এক তারকা অদৃশ্যমান তারকা ।
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
543 reviews
November 14, 2024
অসাধারণ!
আজ থেকে শত বছর আগে প্রকাশিত এই বইয়ে, ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় কেবল রম্যরচনা লিখেননি, কালিতে প্রকাশ করেছেন সমাজ আর মানুষকেও।
Profile Image for Ana.
82 reviews
January 25, 2019
Prva recenzija ove knjige koja nije na bengalskom!

Na ovu sam knjigu slučajno nabasala na prošlom Interliberu u kutiji azijske književnosti nekog antikvarijata. Dosad sam od indijske (također bengalske) književnosti čitala samo Rabindranatha Tagorea pa sam očekivala nešto slično. Ali ne, nisu nimalo slični.

Za razliku od Tagoreove ozbiljne, društveno-preispitujuće književnosti, Mukhopadhyay mi se čini kao ogromni za*ebant. Glavni lik, Damoru, nekakvi je oblik anti-heroja koji svojim prijateljima prepričava na koje se sve načine tijekom života obogatio. Svoju "sreću" najviše pripisuje božici Durgi, ali u stvarnosti je najobičniji prevarant i gad.

Damoruove su priče obogaćene mitološkim bićima i nadnaravnim zbivanjima, npr. odvajanje duše od fizičkog tijela, pretvaranje u tigra i jahanje na paunu kroz svemir, ali Damoruovi prijatelji (svi osim jednog skeptika) očarano upijaju njegove priče.

Jedna me konkretna scena užasno nasmijala, ne zato što je smiješna nego zato što sam ja jako blesavo i naivno očekivala nekakvu promjenu karaktera koja se nije dogodila. Dakle, Damoru je upravo, po običaju, napravio neko sranje i u bijegu se, "prerušen" u vreću kokosa, odlučio privremeno skriti u kući dvoje djece siročića. Čuje njihov razgovor o tome kako je sestra napravila pogrešku na poslu i poslodavci joj više neće davati zdjelicu riže za nju i brata, što znači da bi mogli umrijeti od gladi. Moj je naivni um u tom trenutku pomislio: Damoru će sigurno napraviti dobro djelo i ostaviti im koji kokos! Ali Damoru je, sukladno svom karakteru, pomislio: Odlično! Kad siročići umru, moći ću proširiti svoj posjed!

Damoru je od početka do kraja vjeran sebi (i Durgi) i u knjizi nema nikakve magične preobrazbe, već samo niz pričica koje lelujaju na granici između smiješnog i žalosnog. Ako ova knjiga ima ikakvu pouku, to je: Laži, kradi i varaj i bit će ti dobro.
Profile Image for Afnan Nahid.
1 review
May 4, 2017
ডমরুধর হাড়কেপ্পন লোক বটে, তবে পাড়াগাঁর আর দশটি লোকের মতো ছ-পোষা মানুষ নন। রীতিমতো দুর্গাদেবীর বরপুত্র। আর দেবীর বরেই নানা মহাবিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তবে ডমরুধের প্রখর বুদ্ধির তারিফ করতেই হয়। ডমরুধরের বিশ্বাস তিনি মনুষ্য নন। স্বয়ং পার্বতীপুত্র কার্তিক, দাদা গনেশের শাপ পেয়ে পৃথিবীতে পতিত হয়েছেন।
ডমরুধরের নানান কীর্তি নিয়েই ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়-এর ডমরুচরিত।

প্রথমজীবনে বেশ গরীব ছিলেন ডমরুধর, তারপর বুদ্ধি খাটিয়ে কিভাবে ধনার্জন করেছেন, দুর্গোৎসবের সময় তার ঠাকুরদালানে বসে সেইসব গল্প করছিলেন বন্ধুদের সাথে। বলা বাহুল্য সবাই আজগুবি গল্প বলে টিপ্পনী কাটছিলো কিন্তু ডমরুধর দমবার পাত্র নন তার গল্পে কখনো তিনি যমালয়ে ভ্রমন করেছেন কখনো বা কার্তিক বহনে চড়ে ত্রিভুবন দর্শন করেছেন। এছাড়াও ভন্ড সাধু, ভালোমানুষ ভূত, বোগদাদী জ্বিন, সুন্দরবনের বাঘ কী নেই! তার গল্পে।
Profile Image for Shotabdi.
819 reviews194 followers
July 3, 2020
ঘনাদা-টেনিদা-তারিণীখুড়ো-জোজো এদের সকলের পূর্বসূরি এই ডমরুধর৷
কল্পিত এবং বিদ্রুপাত্মক কাহিনী, হাসি আটকিয়ে রাখা দায়৷
ফাঁকে ফাঁকে ছবিগুলো আরো বেশি মজাদার৷
মাসের শুরুতেই মজার, মন ভালো করে দেয়া কিছু পড়তে চেয়েছিলাম।
আমার সিলেকশন তাই হাণ্ড্রেড পার্সেন্ট ঠিক ছিল।
ডমরুধরের জয়!
Profile Image for orunavo.
42 reviews4 followers
August 23, 2018
হাস্যরসে ভরা বৈঠকী আমেজের গল্পসম্ভার, শ্রীমান ডমরুধরের মুখে। এ বই শুধু পড়ার জন্য নয়, বেদীতে বসিয়ে পুজো করার মত বই।
Profile Image for Samiha Kamal.
121 reviews119 followers
May 21, 2021
বাহ ডমরুধরের মাথাতে তো বেশ বুদ্ধি। বৈঠকি চালে বলা এই ছোট গল্পগুলো বেশ মজাদার, স্থূল ও সূক্ষ্ণ রসবোধসম্পন্ন। ডমরুধর এক লোক ঠকিয়ে পয়সাওয়ালা হওয়া ধুরন্ধর লোক।
Profile Image for Subhojit Bera.
122 reviews16 followers
February 13, 2025
ডমরু-চরিত-কথা অমৃত সমান
স্বয়ং ডমরু ভণে শুনে ভাগ্যবান


অনেকদিন পরে বাংলা বই পড়তে গিয়ে বাংলা ডিক্শনারি খুলতে হলো। কিছু কিছু শব্দ এই বইতে ব্যবহার হয়েছে যা অভিধানেও নেই। যেমন "কঞ্জড়" । বইতে প্রসঙ্গ ধরে যা বোঝা যায়, "কঞ্জড়" মানে বেদে বা জিপসি। তেমনি বইতে অনেক জায়গাতে সংস্কৃত শ্লোক ব্যবহার হয়েছে, যার মানে বোঝা আমার কাছে অসম্ভব।

কিন্তু বইটি এককথায় অসাধারণ। "ম্যাজিক্যাল রিয়ালিজম" পরিপুষ্ট। "ব্ল্যাক হিউমার" ও আছে বটে, কিন্তু সময়ের সঙ্গে তার ধার কিছু ভোঁতা হয়েছে। তাতে অবশ্য কোনো ক্ষতি নেই। এক শতক আগে যে বই লেখা হয়েছে, তাকে আধুনিক দিনের মাপকাঠি দিয়ে মাপার ধৃষ্টতা আমার নেই।

বইটিতে সাতটি গল্প রয়েছে। প্রতিটি গল্পের শুরু হয়ে ডমরুর দূর্গাপূজার প্রাঙ্গনে। আরব্য রাজনীর গল্পের মতো (লেখক যে সিন্দবাদের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন, তা তিনি বইতে গল্পচ্ছলে প্রকাশ করেছেন) প্রত্যেক গল্পই শোনা হয় ডমরুর মুখ থেকে। অর্থাৎ তিনিই "narrator" । পরে বোধকরি তারই উত্তরসূরি হয়ে ঘনাদা, তারিণীখুড়ো, টেনিদা এরা এসেছে ।

ডমরুর চরিত্র ব্যাখ্যা করা মুশকিল। তার রূপ বর্ণনা বিশদে ও বারবার করা হয়েছে। কৃষ্ণঠাকুরের চেয়ে কালো রং, গায়ে মাংস নেই, কেবল কতগুলি হাড়, চামড়া শুকিয়ে মুখে খড়ি উঠেছে, দাঁত একটিও নেই, একেবারে ফোকলা। এই চমৎকার রূপের বর্ণনা দিয়ে বলা যেতে পারে, তার চরিত্রটি তার রূপের থেকেও খারাপ।সে চোর, ঠগবাজ, ষঠ, চরিত্রহীন, কৃপণ ও ধুরন্ধর। তার আজগুবি গল্পের মাঝে মাঝে কিছু সত্যি ঘটনা লুকোনো থাকে, হয়তো সেই সত্যি ঘটনাকে লুকোনোর জন্যই এতো বড়ো বড়ো আজগুবি গল্প ফাঁদা হয়।

বইটি থেকে তৎকালীন (১৯০০) সময়ের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। "স্বদেশী কোম্পানি" নামটি বেশ কয়েকবার ব্যবহার হয়েছে। বই থেকে যা বুঝলাম, সেই সময় দেশাত��ববোধক সুড়সুড়ি দিয়ে অনেকেই স্বদেশী কোম্পানি খুলতেন,শেয়ার কেনার জন্যে ভদ্রলোকদের পীড়াপীড়ি করতেন, এবং কিছুদিন পরে কোম্পানির লালবাতি জ্বললে সমস্ত পয়সা নিয়ে ভেগে পড়তেন। সুন্দরবনের কথা অনেক বার উঠে এসেছে - সে জায়গা তখন পুরোই জঙ্গল ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরোক্ষ উল্লেখ রয়েছে, এক সৈন্যকে বাগদাদ (তখনকার বানান অনুযায়ী বোগদাদ ) যেতে হয়েছিল জার্মানদের আটকাতে, কিন্তু বাংলাদেশ��� ফিরে আসার পর সমুদ্রযাত্রার জন্যে তিনি স্লেচ্ছ হয়েছেন। লেখক যে বাঙালির গোঁড়ামি ভালো চোখে দেখতেন না তা স্পষ্টই বোঝা যায়।

হোমিওপ্যাথি যে সেই সময় বাঙালির বিশস্ত চিকিৎসামাধ্যম ছিল, তা আন্দাজ করতে অসুবিধে হয়না। একটি গল্পতে এক হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের প্রধান চরিত্র আছে, এবং লেখকের বর্ণনা পরে মনে হয় একশো বছর আগেও তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এই চিকিৎসা বুজরুকি ছাড়া কিছু নয়।
Profile Image for Payel Nusrat.
89 reviews17 followers
February 21, 2021
ডমরুচরিত-ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়
নিউ এজ পাবলিশার্স (প্রাপ্তিস্থান-বাতিঘর)

বইয়ের কথা বলার আগে লেখক পরিচয় দেয়া বিশেষ জরুরী।লেখকের জন্ম সেই ১৮৪৭ সালে,তাই ধারণা করা যেতে পারে যে খটোমটো বই লেখেন হয়তো।কিন্তু এই লেখককে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের ব্যঙ্গকৌতুক রসের স্রষ্টা।পুলিশের এসআই ছিলেন,করেছেন অধ্যাপনা,সিভিল সার্ভিসের চাকরির সুবাদে ইউরোপ ঘুরে এসেছেন,আবার কলকাতা জাদুঘরের কিউরেটর ছিলেন।ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দুর্ভিক্ষের সময় তার পরামর্শে সরকার গাজর চাষ করে প্রাণহানি অনেক কমাতে সক্ষম হয়।আর ভারতের বিভিন্ন রেলস্টেশনে ভারতীয় যেসব কারুকাজ দেখা যায়,সেটা তার অবদান।

ডমরুচরিত হলো সুন্দরবনের দিকের এক গ্রাম্য অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তি ডমরুধরকে নিয়ে।ডমরুধর জীবনে যত কামাই করেছে সবই বিভিন্ন ছলছাতুরির মাধ্যমে মানুষ ঠকিয়ে।বইটি পুরোটিই ডমরুধরের জবানিতে তার বিভিন্ন কীর্তির সপক্ষে গ্রামের আড্ডায় যুক্তি দেয়া এবং ধর্মের উৎপটাং ব্যাখ্যা দিয়ে তার কর্মগুলো কেন পাপ নয়,বরং দেবীর আশীর্বাদপুষ্ট সেই সাফাই গাওয়াকে কেন্দ্র করে।বইটি যদিও স্বদেশী আন্দোলন ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন পটভূমির (প্রকাশ-১৯২৩),কিন্তু বইয়ের মালমসলা আশ্চর্যজনকভাবে আধুনিক,কারণ এখনও পাড়ায় দাঁড়িয়ে চারদিকে চোখ বুলালেই এরকম আটটা মানুষ পাওয়া যাবে,উপার্জনের হালাল-হারামের বালাই নেই,কিন্তু ধর্মীয় বয়ান দিতে ওস্তাদ।ব্যঙ্গরসের মাধ্যমে ডমরু চরিত্রের হিপোক্রিসি তুলে ধরেছেন।যেহেতু বলেছি ব্যঙ্গরসাত্মক,অতএব নির্জলা জ্ঞানের বই তো এটা কোনোমতেই নয়,উলটো ত্রৈলোক্যনাথের লেখার গুণে পড়তে পড়তে বেশ কয়েকবার জোরে হেসে উঠে পাশের বান্ধবীর পিলে চমকে দিয়েছি,তবে তারও ডমরুচরিত পড়া আছে দেখে আমাকে পাগল ভাবেনি।

লেখক অবশ্যই তার সময়ের তুলনায় মনমানসিকতায় অনেক আধুনিক।যেসব সামাজিক সমস্যা ও ধর্মীয় আচারের গোড়ামি তিনি অ্যাকনলেজ করেছেন,তার অন্তত ১০০ বছর পরে জন্ম নেয়া আমাদের আত্মীয়দের সেটা মাথা কুটেও অ্যাকনলেজ করানো যায়না।
Profile Image for Heisenberg.
151 reviews8 followers
June 15, 2023
ওপার বাংলার প্রাচীন হাস্যরসাত্মক উপন্যাস সর্বদাই আমাকে আনন্দ প্রদান করিয়া থাকে, যাহার দরুন আমি এই রূপ উপন্যাস পাইলেই পড়িবার চেষ্টা করিয়া থাকি। এই রূপ উপন্যাসের ভাষা প্রায়শই অতি মাত্রায় সাবলীল হইয়া থাকে, শব্দের ব্যাবহারে যে মাধুর্য থাকে, তাহা আমাকে অতিমাত্রায় বিমোহিত করিয়া থাকে। ইহার দরুন ত্রৈলোক্যনাথ বাবুর উপন্যাস খানা আমার হস্তগত হইতেই তাহা পাঠ করিতে শুরু করিয়া দিলাম । সত্যি বলিতে এই উপন্যাসখানা “ফেলুদা”র ভাষায় “আনপুটডাউনেবল”। "আনপুটডাউনেবল” হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন কর্মের দরূণ আমাকে বহুবার ইহাকে “পুট ডাউন” করিতে হইয়াছে। তথাপি কর্ম শেষ করিয়া পুস্তক খানা হস্তে লইয়াছি, সুকুমার রায়ের “এই দেখো না কত হাসির খবর বলে যায়” এর ন্যায় হাসিয়া আনন্দে আটখানা হইয়াছি।
পুস্তকখানা পাঠ করিয়া মনের মধ্যে আমার একটি কথা বারে বারে বাজিতেছিল, তাহা হয়ল, দুনিয়ার সকল তাবড় রাজনীতিবিদ ডমরু ভায়া কে গুরু মানিতে বাধ্য। কি সুন্দর করিয়া সে নিজেকে মানসপুত্র বলিয়া নিজের পাপকার্য বলিয়া বেড়াইতেছে আর লোকেরা শুনিয়া শুধুমাত্র গল্পের সত্যতা নিয়া ব্যাস্ত হইয়া পড়িয়াছে, এ যেন কিয়ৎক্ষণ পূর্বে লিখিত কোন পুস্তক যাহা আমি মাত্রই আত্মস্ত করিলাম। যাহা এখন-ও চলিতেছে, ভবিষ্যতেও চলিবে বলিয়া আমি চক্ষু মুদিয়া অকপটে বলিতে পারি। ইহা যেন যুগে যুগে বাস্তবতাকে নিজের বুড়ো আঙ্গুলি প্রদর্শণ করিয়া বলিতেছে, ডমরু ভায়া যুগে যুগে আসিবে, নিজেদের মানসপুত্র হিসেবে ব্যাক্ত করিয়া সাধারণ মানুষের মস্তকে কাঁঠাল সদৃশ ফল ভাঙ্গিয়া খায়বে, আমরা অতি সাধারণ লোকেরা বাহবা দিতেই থাকিব দিতেই থাকিব, তাহার পাপকর্ম লইয়া আমাদের কোন মাথা ব্যাথা থাকিবে না।
Profile Image for Koushik Ahammed.
150 reviews12 followers
June 5, 2020
অহেতুক ভাঁড়ামি। মাত্রাতিরিক্ত। নেওয়া যায় না।

গল্প বলিয়ে এই ভদ্রলোকের অল্প কিছু বন্ধু আছে। পূজোর আগে দাওয়ায় বসে ডমরুরের বিভিন্ন রকম কায়দা কানুনের কথায় প্যাঁচে পরে ওরাই অনুরোধ করে গল্প শোনাতে। তারপর শুরু হয় এক আজব মসিবত। আমি মসিবত বলছি কারণ এই গল্প পড়ে পড়ে এগুতে অনেক কষ্ট হয়েছে আমার। তবে কল্পনার গাঁথুনি যেসব পাঠকদের বিশেষ রকমের `ভালো' তারা এর রস নিশ্চয়ই আস্বাদন করতে পারবে!

তারপর যা বলছিলাম, শুরু হয় ডমরু-এর গল্প। বিভিন্ন রকম চুরি জোচ্চুরি করে হাতপাকায়ে নিজের অবস্থা ফেরানো ডমরু কন্দর্প পুরুষ বলে নিজেকে দাবি করে। যদিও পাশে বসা লম্বোদর বা শঙ্কর ঘোষদের এ বিষয়ে আপত্তির বিপরীতে নিজে যে মা দূর্গার বরপুত্র বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে তা বুঝিয়ে দেয় গল্পবাজ ডমরু।

সে গল্প এমনই ডালপালা ছড়ায় যে, মর্তলোক ছাড়িয়ে তা ফুৎ করেই দেবালোকে চলে যায়। এবং এক সময়ে যে সে দেবলোকেরই স্থায়ী বাসিন্দা ছিল শুধু মাত্র বিয়ে করার স্বাদ নেওয়া জন্য অল্প কিছুদিনের জন্য মনুষ্যপূরীতে ডমরুর আগমন সে তথ্যও জানিয়ে দেয়।
অনেক গুলো গল্পের মধ্যে এমন গল্পও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলে ডমরুধর যে, এক কুমির শিকার করে পেট চিড়ে দেখতে পায় এর ভিতরে সাঁওতালি এক নারী গহনা টহনা পরে বসে আছে 🙄।

এমনই সব আজগুবি গল্পে ঠাসা এই বই। অতিরঞ্জিত হিউমার পছন্দ করলে পড়ে দেখতে পারেন।
Profile Image for Amit.
770 reviews3 followers
December 3, 2023
........ডমরুধর উত্তর করিলেন, “হাঁ ভাই। এবার আমি মরিয়া বাঁচিয়াছি। দুর্গার আমি বরপুত্র। সেবার সন্ন্যাসী বিভ্রাট হইতে তিনি আমাকে রক্ষা করিয়াছিলেন। তাঁহার কৃপায় গত বৎসর বাঘের মুখ হইতে আমি বাঁচিয়াছিলাম। এবার উৎকট রোগ হইতে তিনি আমাকে মুক্ত করিয়াছেন। সমুদয় দুর্ঘটনা নষ্টচন্দ্র দেখিয়া ঘটিয়াছিল।'

আধকড়ি জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘নষ্টচন্দ্র দেখিয়া কি হইয়াছিল?'.......

এই হলেন গালগল্পে বাকপটু ডমরুধর। তার সকল কথাই অবিশ্বাস্য আবার বিশ্বাস করিতেও ইচ্ছা হয় শুধুমাত্র তার গল্প জানিবার আগ্রহে। যখনি বলা হয় তাঁর কাহিনীসমূহের সত্যতা তথা প্রমাণ কি? উত্তর - সকলই মায়ের কৃপা। যাহাই হোক হাস্যরসাত্মক হরর বই ইহা। এরকম গল্প আগে কখনোই পড়ি নাই, এই-ই প্রথম। ভালো লাগিয়াছে একথা বলিতেই পারি। আরো পড়িব এবং রিভিউও প্রদান করিব। টেনিদাও ডমরুধরের নিকট কিছু নহে। এই রিভিউ যখন লিখিতেছি ০৩-১২-২০২৩ তৎসমেত আমার ঘনাদা প��়া হয় নাই; নতুবা হয়তো ঘনাদার সহিতও ডমরুধরের তুলনার পার্থক্য করিতে পারিতাম। আপাতত আজ এটুকুই।।
Profile Image for Soumyadeb Ghoshal.
7 reviews
March 22, 2025
মেনি আর ভিলে, মা বাবা হারা, মাসির ও মৃত‍্যু হয়েছে, বয়েস ১০ র কম। মেনি, যে বাচ্চা কে দেখাশোনা করত সে সোঁয়াপোকা ধরেছে বলে চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে। ভিলে দুদিন ভাত পায়নি বলে অনুযোগ করাতে মেনি তাকে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে। ডমরুধর মেনির বাড়ির এক কোনে বসে এ কথা শোনে। শুনে আমাদের হিরো কি করে! পরের দিন নিশ্চিত করতে যায় যে সত্যি সত্যিই তারা আত্মহত্যা করল কি না। করলে তিনি বাড়ির দখল নেবেন!

ডমরুধর দুর্গার বরপুত্র। ডমরুধরকে অনেক সময় তিনি বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। কিন্ত ঠিকঠাক পুজো না পেলে তিনি ডমরুধর কে বিপদে ফেলেন। খুব সুন্দর transactional সম্পর্ক। আবার প্রখর বুদ্ধিমান ডমরুধর পুজো outsource করে দুর্গা কে যারপরনাই খুশি করেছেন।

ডমরুচরিত এর satire এবং dark comedy প্রকৃতপক্ষে timeless.
Profile Image for Imam Abu Hanifa.
115 reviews26 followers
November 24, 2022
একটা মানুষের চরিত্রের যতগুলো খারাপ দিক থাকতে পারে তার সবগুলো বোধহয় ডমরুধরের চরিত্রে বিদ্যমান। তবে তার গল্পের গাঁথুনি খাসা। সত্য ঘটনার সাথে মিথ্যা ও কল্পনা মিশিয়ে এক আজগুবি উপাখ্যান ফেঁদে বসা। কিন্তু আপনি মিথ্যা বলতে পারবেন না। সাথে সাথে প্রমাণ দেখিয়ে দিবে। সেটাকে প্রমাণ হিসেবে গ্রাহ্য করবেন কিনা সেটা আপনার মাথাব্যথা।
Profile Image for Ayesha Siddiqua.
31 reviews
March 22, 2022
নিখাদ হাসির একটা বই।কোনো রকম চিন্তা ভাবনা ছাড়া মন পরিষ্কার করার জন্য পড়া যায়।
Profile Image for Soumyarup Bhattacharjee.
22 reviews1 follower
Read
December 26, 2023
Some of the earliest and finest specimens of absurd literature in the Bengali language that combined magic realism and nonsense.
Profile Image for StellaN.
38 reviews10 followers
December 28, 2023
মা দূর্গ্গার বরপুত্র এলোকেশীর বর ডমরুধর।
Profile Image for Shihabul Bashar  Robi.
52 reviews2 followers
June 28, 2024
এইরকম ডার্ক হিউমার আর স্যাটায়ার ওই যুগে বের হইসে, ভাবতেই অবাক লাগে
Displaying 1 - 30 of 35 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.