Konkaboti, Troilokyonath´s first novel (1892), begins with the childhood years of the eponymous heroine and Khetu, a boy from her village, who goes to Kolkata to study. In time, their mothers want them to marry, but Konkaboti´s avaricious father plans her wedding with an aged zamindar. The prospect appals her and she falls seriously ill. Konka and Khetu undergo amazing experiences, including encounters with ghosts, a trip to the moon and back, and the death of both protagonists. But matters are resolved through a major twist in the tail of the narrative. The effortlessly inventive goings-on compel readers to suspend their disbelief.
Troilokyanath Mukhopadhyay, also known as T. N. Mukharji, was a remarkable person in British India. He worked as a curator at the Indian Museum in Calcutta, preserving India's cultural heritage. Beyond his museum work, Mukharji was a prolific writer in both English and Bengali. Trailokyanath, recognized as a pioneer in Bengali literature, left an indelible mark as a renowned writer. Among his notable works stands "Damru Charit", a collection of humorous and satirical short stories published posthumously in 1923. Troilokyanath's creations continue to delight people from generation to generation.
ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি। তিনি টি.এন. মুখার্জি নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি কলকাতায় অবস্থিত ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম-এ কিউরেটর ছিলেন। এই কাজের মধ্য দিয়ে তিনি ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তবে তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় হলো, ইংরেজি এবং বাংলা উভয় ভাষায় তিনি একজন প্রসিদ্ধ লেখক ছিলেন। ত্রৈলোক্যনাথকে বাংলা সাহিত্যের একজন পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বেশকিছু ধ্রুপদী ও পাঠকনন্দিত লেখা লিখেছেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনা "ডমরু চরিত", যা ১৯২৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। এটি মূলত হাস্যরসাত্মক এবং ব্যঙ্গাত্মক ছোটগল্পের একটি সঙ্কলন। ত্রৈলোক্যনাথের সৃষ্টকর্ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আজও মানুষকে আনন্দ যোগায়।
❝ ডমরুচরিত ❞ পড়ার পর থেকে, ত্রৈলোক্যনাথ বাবু মাথায় চেপে বসেছেন। মুশকিলের ব্যাপার উনার সব বই সচরাচর পাওয়া যায় না,একটা ছাড়া। আর সেই এক খানা হচ্ছে " কঙ্কাবতী "। তক্কে তক্কে ছিলাম,বইটা পেলে-ই হস্তগত করব। ভাগ্য আমার পক্ষে কথা সাড়া দিলো," বই বিনিময় " উৎসবে গিয়ে কঙ্কাবতীকে আমার করে নিলাম। এরপর লম্বা সময়ের বিরতি...
বই কিনে বা পেয়ে সাথে সাথে পড়তে ভালো লাগে না। একটু রয়ে সয়ে ধীরে স্থিরে এগোনো টা আমার পছন্দের। অবশেষে দীর্ঘ দিন বিরতি দিয়ে কঙ্কাবতী'র সাথে যাত্রা। দারুণ অভিজ্ঞতা!
ডমরু বাবুর গুল গপ্প পড়ে কেউ যদি কঙ্কাবতীকেও সেই পথের পথিক ভাবেন,তাহলে ভুল করবেন! কারণ কঙ্কাবতী তে দেখা পাওয়া যায়,অন্য ত্রৈলোক্যনাথের। যিনি গল্পের শুরুতে আমাদের পরিচয় করান, খেতুর সাথে। যে মানব সমাজে বসবাস করা রক্ত মাংসের মানুষ! আমরা খেতুর গল্প পড়ি,তার সুখ,দুখ জানি। সমাজের মন্দ দিকগুলো দেখি লেখকের চোখে,গল্প এভাবেই এগোয়। তখনো আমাদের কঙ্কাবতী ছোট্ট পুতুল!
সময় গড়ায়,কঙ্কা বড় হয়। খেতু তাকে পড়াশোনা শেখায়। এরপর যা হওয়ার কথা তাই হয়, কঙ্কাকে ভালো লাগে খেতুর মায়ের। মা ভক্ত খেতুও পছন্দ করে কঙ্কাকে। কিন্তু কঙ্কার বাপ একটা চামার। সে বাগড়া দেয়। এতটুকু পড়ে যে কেউ বলবে,এ আর কি এমন ভালো গল্প,গড়পড়তা! তখন ই মোচড় দেন লেখক দ্বিতীয় ভাগে এসে...
কেউ যদি আমাকে বলেন,ত্রৈলোক্যনাথের কোন বই আগে পড়ব,তাহলে বলব "কঙ্কাবতী "। তারপর যদি পড়তে হয়, তাহলে ডমরুচরিত! কারণ কঙ্কাবতী অনন্য! একটা গল্পে একসাথে রূপকথা এবং বাস্তবতার মিশেল দিয়ে লেখক যা তৈরি করেছেন,এটা অনবদ্য। অনন্য!
বাংলাভাষায় সামাজিক অসঙ্গতি নিয়ে এইরকম স্যাটায়ার খুব একটা লেখা হয় নাই। উনবিংশ শতাব্দীর সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কার নিয়ে এই বই। শেষের দিকে কিছুটা ঝুলে পড়লেও আমি কঙ্কাবতীকে গ্যালিভার'স ট্র্যাভেলের সাথে এক কাতারে রাখবো।
রসের জ্ঞানটা লেখকের ভালোমতই মজুদ থাকলেও, এই উপন্যাস পড়ে আহ্লাদিত হওয়ার উপাদান আমার কাছে খুব কমই মনে হইছে। হইলো না হয় তার সময় নিয়ে স্যাটায়ার, এইভাবে উপকথায় হাত দেয়াটাও সাংঘাতিক, অলমোষ্ট অবন-ঠাকুরের মত করে তিনি এটা ওটা নিয়ে এসেছেন, কিন্তু যেই উদ্দেশ্যে এনেছেন তা ত আরো সাংঘাতিক। এইসব মিলায়েই উপন্যাসটার একটা জায়গা হয়ে যায়, সত্য। তবুও, যেই সম্ভাবনা এই বইয়ের মাঝ পর্যন্তও টিকে থাকে, তা শেষে গিয়ে শতকরায় শূণ্য অঙ্কের দিকে আগাইতে থাকে যেনো। মানে, হইলো না হয় স্বপ্ন, তাই বলে এইভাবে একটা উপন্যাসেরে শেষ করা -
তবে ভালো দিক ত আর নেহায়েত কম না। অবনী-ম্যাজিকের পূর্বসূরী বাংলা সাহিত্যে যারা, তার মাঝে ত এইটা থাকবেই। আকাশে চুনকাম করা, বা বাঘের আগমনী ধ্বনি, মিস্টার ব্যাং সাহেব, এদের কাউরেই এই জনমে ভোলা যাবে না। সেই অর্থে অনেক নৌকায় পা দেয়া হয়ত একটা সমস্যা হয়ে থাকবে, এই বই একই সাথে ভুলভুলাইয়া, সমাজের প্রতিচ্ছবি, আর প্রেমের উপন্যাস হতে গিয়ে যে একটু লেজেগোবরে হয়ে গেছে, আমি অন্তত তা অস্বীকার করবো না। এইগুলি যে একসাথে হওয়া যাবে না তা নয়, কিন্তু লেখক এদেরকে কিছুটা জোর করেই এই বইয়ে বর্ডারের এইপাশে ওইপাশে রেখে দিছেন।
অবশ্য লেজেগোবরেটা একটুই, বরং ভালোর দিকটাই শেষ বিচারে অনেক বেশি। পড়ে দেখবেন, বেশ একটা ভারী বই এই ভাষার সাহিত্যের ইতিহাসে। অথচ, ভাষাটা এই বইয়ে কত হাল্কা!
সুমীদিরে ধন্যবাদ, এই বই হটাত একদিন কিনে দেয়ার জন্য।
দারিদ্রের সঙ্গে কঠোর সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ত্রৈলোক্যনাথ সাহিত্যচর্চায় এসে পরিচিতি লাভ করেন রঙ্গ ব্যাঙ্গের একজন সার্থক স্রষ্ঠা রূপে। সমকালীন লেখকদের মতো সামাজিক উপন্যাস বা শুধুমাত্র বাস্তববাদী উপন্যাস না লিখে একি সাথে হাস্য রসের মাধ্যমে বিদ্রূপের তীর যেমন ছুঁড়েছেন তেমনি তার লেখায় উপস্থিত করেছেন ভূত প্রেত আর কাল্পনিক দৈত্য দানো। বাস্তব এবং কল্পনার মিশেলে অদ্ভুত এক মায়াজাল সৃষ্টি করে ত্রৈলোক্যনাথ পাঠককে আটকে রাখেন বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মাঝামাঝি। বলা হয়ে থাকে তার এক পা ছিল বাস্তবে আর আরেক পা কল্পলোকে, তার প্রথম উপন্যাস কঙ্কাবতী(১৮৯২) কে নিজেই আখ্যায়িত করেছেন ‘উপকথার উপন্যাস’ বলে।
কঙ্কাবতী সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের উক্তি, “এইরূপ অদ্ভুত রূপকথা ভাল করিয়া লেখা বিশেষ ক্ষমতার কাজ। ...এতদিন পরে বাঙ্গালায় এমন লেখকের অভ্যুদয়...যাঁহার লেখা আমাদের দেশের বালক বালিকাদের এবং তাঁদের পিতামাতার মনোরঞ্জন করিতে পারিবে”।
উপকথার উপন্যাস কঙ্কাবতীতে লেখক কঙ্কাবতীকে নিয়ে আসেন রূপকথার জগত থেকে, কঙ্কাবতীর ভাই একটি আম এনে ঘরে রেখে বলল, যে এই আম খাবে আমি তাকেই বিয়ে করবো। ছেলেমানুষ কঙ্কাবতী সে কথা না জেনেই একদিন আমটি খেয়ে ফেললো, আর ভাই তখন তাকেই বিয়ে করবে বলে ঘোষণা দিলো। লজ্জায় অন্য কোন উপায় না পেয়ে কঙ্কাবতী নৌকা ভাসাল খিড়কি পুকুরের মাঝখানে আর রূপকথার এই সূত্র ধরেই উপন্যাসের শুরু। শুরুর এই অংশটুকু ছাড়া প্রথম ভাগে রচিত হয়েছে বাস্তব জীবনের গল্প, যে গল্পে কুসুমঘাটী গ্রামের বংশজ ব্রাহ্মন তনু রায়। তিন মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে বড় দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, ছোট বাচ্চা মেয়ের নাম কঙ্কাবতী। মেয়েদের বিয়ে দেবার ব্যাপারে তনু রায়ের আবার পছন্দ ছিল একটু বয়স্ক জামাতা, ছোকরা জামাই গুলো একশত কি দুইশত টাকা দিয়াই বিবাহ করতে চায় বলে দুই মেয়েকে একটু বয়স্ক জামাই দেখেই হাজার টাকা গুনে বিয়ে দিয়েছেন, জামাইদের আর বয়স কতো? একজনের সত্তর আর আরেকজনের পঁচাত্তর। বাস্তব জীবনযাত্রার বাস্তব কিছু ঘটনা প্রবাহের মাঝেই লেখক তুলে এনেছেন মানুষের ভণ্ডামি, কুটিলতা আর নিষ্ঠুরতার কিছু চিত্র।
দ্বিতীয় ভাগে তিনি আমাদের নিয়ে যান রূপকথার রাজ্যে। কঙ্কাবতী নৌকা ভাসিয়েছে আর একে একে পুকুরপাড়ে এসে কঙ্কাবতীর বোন, ভাই, মা, বাবা ছন্দে ছন্দে কঙ্কাবতীকে ডাকছে আর কঙ্কাবতীর জবাবের সাথে সাথেই নৌকা একটু একটু করে মাঝ পুকুরে সরে যাচ্ছে, এই দিয়ে শুরু দ্বিতীয় ভাগ। দ্বিতীয় ভাগের রূপকথার গল্পে একে একে এসে হাজির হয় কাতলা মাছ, কাঁকড়া মহাশয়, ঝিনুক; আসে ভয়ঙ্কর দর্শন বাঘ, নাকেশ্বরী ভুতিনী, ঘ্যাঘো ভূত, ব্যাঙ সাহেব। মশা প্রজাতির মধ্যে কঙ্কাবতী খুঁজে পায় রক্তাবতীকে, দুইজন প্রানের বান্ধবী পাতিয়ে নাম দেয় ‘পচা জল’... মশার ছোট ভাই হাতি, খর্ব্বুর, খোক্কোশ, তাল পাতার সেপাই সহ আরো অনেকেই এসে উপস্থিত হয় গল্পের প্রয়োজনে। যখনি মনে হবে এতো শুধুই রূপকথা তখনি আবার ত্রৈলোক্যনাথ আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন বাস্তবে। রূপকথার ভূত প্রেত, অতি প্রাকৃত জীবজন্তুর কথা বলতে বলতেই তাদের সমাজ দর্শনের চিত্র তুলে ধরে ত্রৈলোক্যনাথ আঘাত হেনেছেন মানুষের সমাজের প্রচলিত নিয়ম কানুন আর বিধি নিষেধের উপর, বিদ্রূপ করেছেন তাদের যারা নিজেদের ইচ্ছা মতো বাণী কপচিয়ে শাস্ত্র বলে তাকে চালানোর চেষ্টা করে।
ত্রৈলোক্যনাথের বর্ণনা ভঙ্গী গল্প বলার মতো। সাধু ভাষায় লিখা হলেও সহজ, সরল, অনাড়ম্বর শব্দের ব্যবহারে মনে হবে সামনে বসিয়ে রেখে তিনি শ্রোতাকে গল্প শোনাচ্ছেন। কঙ্কাবতীর শেষে এসে বৈঠকি রীতিতেই ত্রৈলোক্যনাথ শেষ করে বলে গেছেন, তাহার পর? বার বার “তাহার পর তাহার পর” করিলে চলিবে না। দেখিতে দেখিতে পুস্তকখানা বৃহৎ হইয়া পড়িয়াছে। ইহার মূল্য দেয় কে তাহার ঠিক নাই, কাজেই তাড়াতাড়ি শেষ করিতে বাধ্য হইলাম।
তাহার পর কি হইলো? তাহার পর আমার গল্পটি ফুরাইলো। নোটে গাছটির কপালে যাহা লিখা ছিল, তাহাই ঘটিল।
কঙ্কাবতীর ভাই একদিন একখানা গাব এনে ঘোষণা করলো,এই গাব শুধু তার।যে এই গাব খাবে, তাকে সে বিবাহ করবে। আর ওদিকে এ ঘোষণার বিষয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞ কঙ্কাবতী গাবটি খেয়ে ফেললো। ব্যস,আর যায় কোথা?এবার ভাই তাকে বিয়ে করবেই। ভাইকে বিবাহ করার মতো এক মহা অনর্থ থেকে বাঁচতে,কঙ্কাবতী এক নৌকায় উঠে ভেসে গেলো। এই হলো কঙ্কাবতীর গল্প। কিন্তু লেখক ত্রৈলোক্যনাথ বললেন,এই গল্পটা অসম্ভব,অবাস্তব। এরপর তিনি কঙ্কাবতীর সম্ভাব্য গল্পখানা আমাদের শোনাতে বসলেন। সে গল্প কঙ্কাবতী আর খেতুর,সমাজের নানা পশ্চাদপদ নিয়ম-আচারের,যে নিয়মের নির্মম শিকার কঙ্কা-খেতু দু'জনেই।এই পুরোপুরি বাস্তব মানব সমাজের গল্প ক্রমেই অবাস্তব,কল্প গল্পে রূপ নেয়। খোক্কস আসে,ভূত আসে,ব্যাঙ-মশা-মাছ-হাতী কী বাদ নেই?নতুন অদ্ভুত কত জিনিসের জ্ঞানপ্রাপ্ত হলাম! ভূত মরলে নার্বেল হয় জানতেন?রাতবিরাতে উপর তলায় মার্বেল খেলার রহস্য এবার খোলাসা হলো তবে! এমন নানা রূপকথার উপকরণ আবিষ্কার করে ভারি আমোদ হলো। তবে শেষ পর্যন্ত কিন্তু লেখক বাস্তবজগতে এনেই গল্পখানার মধুর ইতি টানলেন! রূপকথা/ফ্যান্টাসি/স্যাটায়ার ঘরানা পছন্দ করলে,বইটি একটি সুখপাঠ্য।
চিরায়ত বাংলার চিত্রপট । দারিদ্যের কষাঘাত, দানশীল পিতার মৃত্যপুর পর কঠিন লড়াই করে বেচে থাকার এক অনবদ্য কাহিনী । প্রথম দুই পরিচ্ছেদ পড়ে প্লটটা কেবল জমিয়ে তুলেছি বিশেষ করে বরফ খেলে সেই যুগে কিভাবে হিন্দু সমাজ থেকে বিতাড়িত হতে হয় । খারাপ লাগার কঙ্কাবতীর মৃত্যুর পর থেকে , লেখক এর পর থেকে রূপকথার গল্প জুড়ে দিয়েছেন । আমার ধারনা তিনি বোধ তৎকালীন সামাজিক প্রক্ষাপটের চাপে প্লট চেঞ্জ করে ফেলেছেন ।
ইউনিভার্সিটিতে পাঠ্যবই ছিল। ক্লাসে যেদিন ম্যাডাম জিজ্ঞাসা করেছিলেন কতজনের ভালো লেগেছে কঙ্কাবতী হাত তোলো, তখন দেখি হল ঘরভর্তি স্টুডেন্টদের মধ্যে আমি আর ৮-১০ জন মতো হাত তুলেছিল। জানিনা কেনো কারো ভালো লাগেনি। মানছি বড় হয়ে গেলে রূপকথা টাইপ বই পড়তে ভালো লাগেনা। তাও কঙ্কাবতী চমৎকার লেখা একটি বই। ১৫-১৬ বছর বয়সে পড়লে হয়ত অনেক বেশি মজা পেতাম।
ত্রৈলোক্যনাথ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যঙ্গ শিল্পী। ব্যঙ্গ ও কৌতুক - হাস্যরসের ২টি ভাগেই উনি অনায়াস দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। কঙ্কাবতী তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস।
' কঙ্কাবতী ' শুরু হয়েছে একটি লোককথা দিয়ে যা প্রচলিত রূপকথা - সংকলন গুলিতে স্থান পায়নি। কঙ্কাবতী দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে আছে শিরোনাম যুক্ত ১৫টি পরিচ্ছেদ এবং দ্বিতীয় ভাগে আছে ১৮টি শিরোনামে যুক্ত পরিচ্ছেদ এবং একটি পরিশেষ। এই পরিশেষের কোনো শীর্ষনাম নেই। দ্বিতীয় ভাগ শুরু কঙ্কাবতীর স্বপ্ন দিয়ে। প্রথম ভাগের বাস্তব ঘটনা তথা আখ্যানকে পুষ্ট করেছে এই স্বপ্নবিবরণ,লেখক অভিপ্রায়ও সম্যকভাবে স্ফুর্ত হয়েছে সেই বিবৃতিতে। দ্বিতীয় ভাগের স্বপ্নজগতের ঘটনা বিন্যাসে রূপকথার উপাদান ব্যবহৃত হয়েছে। 'কঙ্কাবতী'র মুখ্য চরিত্র কঙ্কাবতী, তনু রায় আর খেতু। এখানে মোট সাতটি উপকাহিনি আছে - ঠ্যাঙাড়ে কাহিনি, জলতলের আখ্যান, স্কল স্কেলিটন উপাখ্যান, ঘ্যাঁঘ্যো নাকেশ্বরী বিবাহ সন্বন্ধ বিবরণ, ব্যাং সাহেব মিঃ গামীশের গল্প, মশা দের কাহিনি, আকাশ বৃত্তান্ত।
আমার তো বেশ মজার লেগেছে...মনে হচ্ছিল কোনো রূপকথার জগতে চলে গেছি। কতসব মজাদার চরিত্রের দেখা পেলাম - কাঁকড়া মহাশয়, নক্ষত্রের বউ, ভূত স্কল ও স্কেলিটন, খর্বুর, মিঃ গামিশ সাহেব, ভূতিনী নকেশ্বরী, আকাশের দুর্দান্ত সিপাহী, রক্তবতী ।
উপন্যাসটি কে রূপকথা বললেও বোধ হয় ভুল হবে না। যদিও কঙ্কাবতী গল্প পরিচিত রূপকথা সংকলন গুলিতে স্থান পায়নি। সম্ভবত সে সব গ্রন্থের সংকলকগণ ভেবেছিলেন আখ্যান টি ঠিক বালকপাঠ্য নয়।
কঙ্কাবতী একটি জটিল প্লট বিশিষ্ট উপন্যাস। কিছু কিছু দুর্বলতা সত্বেও ত্রৈলোক্যনাথ প্লট নির্মাণে যথেষ্ট সফল।একথা এই উপন্যাসের ক্ষেত্রে অন্তত অস্বীকার করা যায় না। কয়েকটি উপকাহিনি বেশ দীর্ঘ হলেও তা কাহিনিকে কখনও তেমন শ্লথ বা অনাকর্ষক করে তোলেনি।
চিরাচরিত গ্রাম বাংলার বাস্তব কাহিনী মাঝখানে বিশাল রকমের ফ্যান্টাসি তারপরে আবার কিছুটা বাস্তব কাহিনী।
ফ্যান্টাসি অংশটা আমার খুবই ভাল লেগেছে। ভূত প্রেত খোক্কশ, পানির নিচে মাছের জগত, ঝিনুকের ভিতরে কঙ্কাবতী বাঘ হয়ে যাওয়া খেতু, জবরদস্ত এক ব্যাং মশাই সব কিছুই আছে ফ্যান্টাসি অংশে।
Long long ago, in some of our darkest times when Bengali females had no rights to education, speech, freedom, or anything essential, this fairy tale was written. Interestingly, the protagonist is a pretty girl called Kankabati.
I found the first mention of Kankabati in a Tagore's poem, a phrase like "abhimani Kankabatir bathya" (the pain of dignified Kankabati) on a rainy evening. That phrase stuck inside like a nail. Long after, I discovered this book in the National Library in Kolkata.
So, what is this fairy tale about?
Well, it is about a girl whose greedy father wanted to sell her to a rich man and the girl's admirer and lover won her back. However, the two sections of this book overwhelm you with emotional conflicts. The first part ends with drowning Kankabati and the second part seems her dreamy journey in a Coma.
Although there is poetic justice in the end, the social structure and power hierarchy reflect various dark elements. I can't resist mentioning the gothic Brahmin killing by hurting his belly button and the journey of Kankabati to save her husband from the Yakshini "Nakeswari". Each woman (be a human or a ghost) here tells a unique suppressive life story that saddens you.
Such a gem of Bengali literature.
P.S. There is a mention of "Andhakup" and I wonder whether the writer was influenced by the "Andhakup killing" (1756) in Kolkata.
কঙ্কাবতীকে সকলেই জানেন। ছেলেবেলা কঙ্কাবতীর কথা সকলেই শুনিয়াছেন। কঙ্কাবতীর ভাই একটি আঁব আনিয়াছিলেন। আঁবটি ঘরে রাখিয়া সকলকে সাবধান করিয়া দিলেন,- "আমার আঁবটি যেন কেহ খায় না; যে খাইবে, আমি তাহাকে বিবাহ করিব।" কঙ্কাবতী সে-কথা জানিতেন না। ছেলেমানুষ! অত বুঝিতে পারেন নাই, আঁবটি তিনি খাইয়াছিলেন। সে জন্য ভাই বলিলেন,- "আমি কঙ্কাবতীকে বিবাহ করবি।" মাতা-পিতা সকলে বুঝাইলেন,- "ভাই হইয়া কি ভগিনীকে বিবাহ করিতে আছে?" কিন্তু কাহারও কথা তিনি শুনিলেন না। তিনি বলিলেন,- "কঙ্কাবতী আমার আঁব খাইল কেন? আমি নিশ্চয় কঙ্কাবতীকে বিবাহ করবি।" কঙ্কাবতীর বড় লজ্জা অইল, মনে বড় ভয় হইল।নিরুপায় হইয়া তিনি একখানি নৌকা গড়িলেন। নৌকাখানিতে বসিয়া খিড়কি পুকুরের মাঝখানে ভাসিয়া যাইলেন। ভাই আর তাঁহাকে বিবাহ করিতে পারিলেন না। কঙ্কাবতীর গল্প এইরূপ। একথা কিন্তু বিশ্বাস হয় না। একটি আঁবের জন্য কেহ কি আপনার ভগিনীকে বিবাহ করিতে চায়? কথা সম্ভব নয়। যাহা সম্ভব, তাহা আমি বলিতেছি।"
যা সম্ভব সেই কথাই আছে বাকি বইটায়। কিন্���ু বইটা যে একটা রূপকথার বই। সেইসব রূপকথাও সম্ভব, খুব সম্ভব। আবার বইটা বাস্তবেরও...
বইটা পড়ে আমার মনে হয়েছে শরৎচন্দ্রের 'পল্লীসমাজ' আর "Alice's Adventures in Wonderland" এর ধারার মিশ্রণে একেবারে অন্যরকম একটা উপন্যাস। লুইস ক্যারোলের উপন্যাসটা ১৮৬৫ তে প্রকাশিত হয়েছিলো এবং আমার মনে হয়েছে ত্রৈলোক্যনাথ অনেকটাই প্রভাবিত হয়েছেন আ্যলিসের গল্পে। ১৮৮১ তে বিলেতে গিয়ে ইউরোপের নানা দেশে ঘুরেছেন এবং অনেক ভাষার পারদর্শী ছিলেন তিনি। আ্যলিসের বই নিশ্চয়ই পড়া ছিলো তাঁর। তবে কল্পজগতে এক তুরুণীর ঘুরে বেড়ানো, নানান প্রাণীর, চরিত্রের আবির্ভাব, তাঁদের সাথে নানান ঘটনার থিমটাকে সম্পূর্ণরূপে আমাদের দেশীয় স্বাদে পরিবেশণ করা হয়েছে এ উপন্যাসে। জানি না আর কোনো পাঠক বা সমালোচক এই মিল খুঁজে পেয়েছেন কিনা।
বইটার দুটি অংশ। এক অংশে সেই কল্পরাজ্য আর বাকিটা বাস্তবতার রাজ্য । কল্পনা ও বাস্তবতার অংশ আলাদা হলেও ধারাবাহিকতা আছে। ঠিক এই ধারার কোনো বাংলা উপন্যাস আমি আগে পড়িনি। কোনো অধৈর্য পাঠক যদি শুধু একটি অংশ পড়তে চান, তবুও পড়ার মতো বই। সব মিলে মাত্র ১৬৭ পৃষ্ঠা।
আমার কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় লেগেছে লেখকের ভাষার পারদর্শীতা। ব্যঙ্গাত্মক স্টাইলে কঠিন বাস্তবতাকেই শুধু তুলে ধরেননি, হাসাতেও বাধ্য করেছেন। তখনকার সমাজে ধর্মান্ধতাকে ব্যবহার করে কিভাবে উদ্দেশ্য হাসিল করা যেতো, সম্পূর্ণ আজব বা ridiculous ব্যাপারকেও প্রতিষ্ঠিত করে ফেলা যেতো তাঁর বর্ণনা ভাষার চাতুর্য দিয়ে লেখক তুলে ধরেছেন চমৎকারভাবে। দুঃখজনক সত্যি এই যে বর্তমান প্রেক্ষাপটেও আমাদের উপমহাদেশের ঘটনাবলীর সাথে মিল পাবেন।
কঙ্কাবতীর প্রচলিত উপকথাকে খুব ছোট করে লিখে বইয়ের ভূমিকা ও পটভূমি তুলে ধরেছেন। " কথা সম্ভব নয়। যাহা সম্ভব, তাহা আমি বলিতেছি।" রূপকথা বা উপকথাকে নতুন করে বলার সাহিত্যিক ধারাটি এখন জনপ্রিয়, তখন কতোটা ছিলো আমি জানি না।
এরপর সেই বাঙালি সমাজের বর্ণনা যেখানে রামতনু রায় একজন বংশজ ব্রাহ্মণ এবং নরক যাওয়া ঠেকানোর জন্য সমস্ত অবশ্য কর্তব্য তিনি পালন করেন। ধর্মরক্ষার যুক্তি দিয়ে তিনি পাঁচশ এবং হাজার টাকা নিয়ে সত্তর এবং পঁচাত্তর বছর বয়সী পাত্রের কাছে বড় দুই মেয়ের বিয়ে দিলেন, যারা অবশ্যম্ভাবী ভাবে বিধবা হয়ে ঘরে ফিরেছে এক বছরের মধ্যেই। ('যাহা সম্ভব' তার এই বর্ণনা পড়ে আমার মনে হচ্ছে এ কিভাবে সম্ভব?)। এই তনু রায়ের ছোট মেয়ে কঙ্কাবতী। কঙ্কাবতীর ভাগ্যেও কি একই ঘটনা ঘটবে?
খ্রিস্টানদের তৈরি বরফ খাওয়ার কারণে ক্ষেত্রকে একঘরে করে যে সমাজ, তাঁর চরম বাস্তব বিবরণের মধ্যেই হঠাৎ করেই কল্পলোকের মতো ঘটনা ঘটতে থাকলো। উপকথার অসম্ভব গল্প খন্ডাতে গিয়ে এ কোন রূপকথা ফাঁদছেন লেখক, পাঠক দ্বিধায় পড়ে যেতে পারেন। পরে সেটা পরিস্কার হবে৷ কল্পলোকের চরিত্রগুলো চমপকপ্রদ। কঙ্কাবতীকে বন্ধু বানানো মশা "রক্তবতী", ইংরেজি বলে জাতে উঠতে চাওয়া ব্যঙসাহেব, ভুত-কোম্পানি, ভুতনী নাকেশ্বরীর গল্পের মধ্যে আবার বাস্তব অনেক চরিত্রের সাথে মিলও পাওয়া যাবে। কিছু উদাহরণ দিচ্ছি বইটির ভাষার ও বর্ণনার।
" আজকাল আর সহমরণ প্রথা নাই বলিয়া, ইনি মাঝে মাঝে খেদ করেন। কারণ, তাহা থাকিলে ভগিনী দুইটি নিমেষের মধ্যে স্বর্গে যাইতে পারিতেন। বসিয়া বসিয়া মিছামিছি বাবার অন্নধ্বংস করিতেন না"।
" ব্যাঙ এদিক ওদিক চাহিয়া দেখিলেন। দেখিলেন যে, কেহ কোথাও নাই। কারণ, লোকে যদি শুনে যে, তিনি বাঙ্গালা কথা কহিয়াছেন, তাহা হইলে তাঁহার জাতি যাইবে, সকলে তাঁহাকে "নেটিভ' মনে করিবে। যখন দেখিলেন, - কেহ কোথাও, তখন বাঙ্গালা কথা বলিতে তাঁহার সাহস হইলো"।
মশা বলিলেন, "শুনো মনুষ্যশাবক, এই ভারতে যতো নরনারী দেখিতে পাও, ইহারা সকলেই মশাদিগের সম্পত্তি।"
ভিন্নধারার এবং উপভোগ্য কিছু পড়তে চাইলে বইটি পড়তে পারেন।
প্রকাশনার মানঃ
লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর যে কোনো বইয়ের কপিরাইট ফ্রি হয়ে যায়। তাই যে কোনো প্রকাশক বের করতে পারে ধ্রুপদী সাহিত্যের বই। এটি প্রকাশ করেছে আ্যডর্ন পাবলিকেশন ২০০৯ সালে। বইয়ের মলাট, কাগজ, ছাপার মান ভালো এবং অক্ষর পড়ার সুবিধামতো বড়ো আর স্পষ্ট। এ ছাড়া আর তেমন ভালো কিছু বলার পেলাম না। মূদ্রণে কয়েকটি ভুল পেয়েছি।
বইটির সম্পাদক হিসাবে নাম দেওয়া আছে "আনিসুজ্জামান" কিন্তু তাঁর সম্পর্কে আর কোনো পরিচিতিই দেওয়া নেই, এক লাইনও না। ইনি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান না আমাদের পাড়ার আনিসুজ্জামান তা বোঝার কোনো উপায় নেই। ঠিক কি সম্পাদনা করা হয়েছে তাও বুঝলাম না।
বইয়ের ভূমিকায় মাত্র চারটি অনুচ্ছেদে দেড় পাতায় লেখক পরিচিতি ও বইয়ের পরিচিতি সেরে ফেলা হয়েছে। ভীষণরকমের দায়সারা কাজ এবং অমার্জনীয় অপরাধ বলে আমি মনে করি। সম্পাদনার কাজ এটুকুতেই শেষ হয়ে যায় না। আমি অনলাইনে একটু খুঁজেই যা জানলাম, লেখকের জীবন ও তাঁর সাহিত্যকর্ম অনেক বিচিত্র এবং প্রচুর তথ্য পাঠকের জন্য তুলে ধরার সুযোগ ছিলো। উপন্যাসটি, তাঁর পটভূমি ও সমালোচকদের মতামত যোগ করাও আবশ্যিক ধ্রুপদী সাহিত্যের ক্ষেত্রে। ফ্রি কপিরাইটের সুযোগ নিয়ে কোনকিছু হুবহু ছেপে দিলে প্রকাশক আর ছাপাখানার মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।
'Konkaboti' is a delightful read. This Bengali novel was published in 1907, 42 years ahead of 'The Kingdom of this World' by Alejo Carpentier, which is considered to be the first ever magical realist novel in history. 'Konkabati' contains a lot of elements of this genre, the blending of fantasy and reality, allegorical satire and dark humor intended at exposing the social evils of that time. Though critics may refuse to include this book in the magical realist category citing that the fantastical elements occurred during a dream, even then they cannot deny this as a predecessor to magical realism as we know it today. So, it turns out that magical realism has made its presence felt in Bengali Literature independently, even when the term was not invented. The fact that such a book had been written at such an early age makes me feel proud as a Bengali
This book is my introduction to Bengali literature. And honestly, what an amazing introduction it is. Trilokyonath Mukhopadhyay's Konkoboti is a story of a young girl and boy and their wish to marry each other, but the girl's father is against the proposal as he doesn't see any personal financial gain. It was set in the late 1800s during British colonialism.
The book is divided into two parts. One is in a realistic world and one set in an absurd magic realm. This book will remind you of Alice in Wonderland and will take you on a wonderful journey.
The context of the story mocks the absurd practices and rituals of religious fanatics. A satire and a comedy, it was a good way to get back to reading after a long hiatus.
I thoroughly enjoyed the story and the afterword written by the translator.
দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া খেতু এবং কঙ্কাবতী নামক এক সুন্দরী ফুটফুটে মেয়ের দারিদ্র্য পরিবারে বেড়ে ওঠার এক অনবদ্য কাহিনি। এখনে কঙ্কাবতীর দীর্ঘ এক স্বপ্নকে রঙ্গ ব্যঙ্গের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। উপন্যাসটির প্রথম ভাগ ও তৃতীয় ভাগ পড়ে ভালো লাগলেও দ্বিতীয় ভাগ পড়ার সময় কিছুটা বিরক্তি কাজ করে সাথে হাসিও পায় অনেক।সব মিলিয়ে অদ্ভুত রূপকথা মেশানো এই কঙ্কাবতী উপন্যাসটি পড়ে বেশ ভালোই লাগলো।
দারুণ লাগছিল পড়তে।এত স��ন্দর করে গল্পটা এগুচ্ছিলো। সামাজিক অসংগতি তারমধ্যে মমতা ভালোবাসার সিক্ততা, জীবনের সংগ্রাম তারপর climax এ যায়ে tragedy but then suddenly the fable starts and i lost my interest to read rest of the story...incase of satire i must say its a bad way to writing a satire.
বইটির শুরুতে ভালো লাগার মতো অনেক কিছুই ছিলো। তৎকালীন বাঙালি সমাজের ধর্মীয় গোড়ামি, নাম ভাঙিয়ে অশাস্ত্রীয় শাস্ত্র উৎপাদন সহ সেই বাংলার অনেকগুলো দিক কে ই তুলে ধরেছেন লেখক। শুরুর সেই প্রবাহিত স্রোত কে বইয়ে নিয়ে যেতে পারলে হয়তো রোমান্টিকতা ও জীবনযাত্রার মিশেলে আমার পড়া অনন্য সাহিত্যের বই গুলোর মাঝে থেকে যেতো এটার নাম। তবে তা হয় নি। রোমান্টিসিজম এর সাথে মিশিয়েছেন রূপকথা, মুন্ডু, নাকেশ্বরী, ব্যাঙ, রূপ-পরিবর্তনীয় ব্যাঘ্র, মনুষ্যভাষায় কথা বলতে পারা মাছ সহ আরো অনেক চরিত্র। যাদের আগমন আমার কাছে পুরো ব্যাপারটাকেই হিজিবিজি করে ফেলেছে। এতোদূর বইটার প্রতি তৈরি করা ভালোলাগা কর্পূরের মতো উবিয়ে দিলেন এক নিমিষে।
হয়তো রূপকথা শোনার বয়স আমার নেই, বা হয়তো রূপকথা আমার পছন্দের সাথে যায় না তাই ভালো লাগেনি। যদি এখনো রূপকথায় আকর্ষণ অনুভব করতাম বা বয়স কমের কাতারে হতো তাহলে হয়তো ভালো লাগার স্থানে থাকতো এই বইখানি...
সামান্য এক রূপকথার গল্প (রূপকথার গল্পকে সামান্য বলা কি ঠিক?) সুচারুরূপে সমসাময়িক পলিটিক্সকে তুলে আনে। ঘর থেকে বাইর, সব পলিটিক্স। এমনকি গল্পের শেষভাগে প্লেটো, হাইডেগারও উপস্থিত! বারবার মনে হয়, নিজেদের ঘরের সম্ভারকে আমরা কখনো চোখ মেলে দেখি নাই। শিশুসুলভ স্যাটায়ার কতটা বিষ হতে পারে সেটা ত্রৈলোক্যনাথের মুন্সিয়ানাতেই বুঝতে পারবেন।
রুপকথার গল্প শেষ কবে পরেছি মনে নেই, তবে কঙ্কাবতির এই গল্প ছেলেবেলায় আমরা অনেকেই শুনেছি। শুরুটা হয় কঙ্কাবতির মরে যাওয়ার পর থেকে। এর পরে... এর পরে কঙ্কাবতির মাছের রাজ্যে রাণী হওয়া, খেতুর ব্যাঘ্র রুপ ধারণ করা, ব্যাঙ সাহেব ঃ এই সবকিছুর মাছখানে পাওয়া যায় রুপকথার মদ্ধ্য দিয়ে কঠিন কিছু বাস্তবতা।