Jump to ratings and reviews
Rate this book

বিষাদ-সিন্ধু #1-3

বিষাদ-সিন্ধু

Rate this book
Bishad Shindhu is a poetic novel about the history of Muhammad's grandson Hasan, especially Husayn's assassination, and the war for the position of Khalifa of Muslims. It was written by Mir Mosarraf Hussain, one of the first modern Bengali Muslim writers. Bishad Shindhu was written over the period of 1885-1891. It is one of the best known works of Bengali literature. However, it is not considered an authentic source for the history of Karbala, the location of Husayn's war front, or the place of his death. Bishad Shindhu is written in an epic style. It contains much poetic language, and many dramatic scenes. At the time of its composition, there were few published novels in the Bengali language, and Mosharraf Hussain was part of a community of writers working to pioneer a new tradition of novels in Bengali. The novel was written in Shadhubhasha, a Sanskritised form of Bengali.

400 pages, Hardcover

First published January 1, 1891

61 people are currently reading
637 people want to read

About the author

Mir Mosharraf Hossain

9 books23 followers
Mir Mosharraf Hossain (Bangla: মীর মশাররফ হোসেন) was a Bengali language novelist, playwright and essayist in 19th century Bengal. He is principally known for his famous novel Bishad Sindhu. He is considered as the first novelist to emerge from the Muslim society of Bengal.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
149 (31%)
4 stars
174 (37%)
3 stars
92 (19%)
2 stars
21 (4%)
1 star
32 (6%)
Displaying 1 - 30 of 58 reviews
Profile Image for Nadia Jasmine.
213 reviews18 followers
December 8, 2021
মহররমের দিন এক বন্ধুর সাথে বার্তাবিনিময়ের সময়ে ও জানিয়েছিল যে তারা খুব ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছে। সারাদিন অনলাইনে বিভিন্ন দেশে থাকা তাদের কমিউনিটির লোকজন নানা সময়ে মহররম উপলক্ষ্যে একত্র হচ্ছে বলে। তখন মনে পড়ল যে ‘বিষাদ-সিন্ধু’ কিনে রেখে পড়াই হচ্ছে না। তার সাথে সেদিনের কথোপকথনের পর বিশাল এই উপন্যাস ধরেছিলাম। শেষ হল গত মাসে। সব দিক দিয়ে অতুলনীয় উপন্যাসটি পরিচিত অনেকেই ছোটবেলায় পড়েছে। আমি ছোটবেলায় এতো অলঙ্কৃত বাংলা পড়তে পারতাম না, আর ভূতের গল্প ও রহস্য গল্পের সংকলনের পাশে এই বই দিলেও তখন পড়তাম না। মুগ্ধ হয়েছি এই বয়সে পড়েছি বলে। বন্ধুকে ধন্যবাদ বইটির কথা মনে করার কারন হবার জন্য।
Profile Image for Ahmed Habibullah.
22 reviews5 followers
June 11, 2021
একটি বাস্তব চরিত্রের কাল্পনিক রুপায়ণ। ক্লাস সিক্সে বইটি মন ভরে গিলছিলাম। পরে যখন জানতে পারি, কাহিনী মিলে সব অতিরঞ্জন, ভূয়া তথ্যে ভরপূর, সাথে সাথে মন থেকে বমি করে দিলাম।
Profile Image for Zihad Saem.
123 reviews6 followers
September 2, 2025
ছোট বেলায় কত রাত নানির পাশে শুয়ে শুয়ে রাতপাখিদের ডাক আর ঝিঁঝি পোকার ডাকের আবহ সংগীততের সঙ্গে এই 'বিষাদসিন্ধু' এর গল্প শুনেছি তার ইয়ত্তা নেই। আমার নানির সেই সরল ভাষ্যে বিষাদসিন্ধুর গল্প আজও রাত্রিকালীন স্মৃতির অংশ হয়ে আছে। আরেকটা জিনিস মনে পড়ে, ফজরের নামাজের পর নানির গুনগুন করে নবীদের স্তুতি গাইতেন। আহা সেকি অশ্চর্য মধুময় সময় ছিলো।
পরবর্তী এসএইচসি শেষ করে বিষাদসিন্ধু পড়া হইছিলো। কিন্তু এখন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে অনার্স করতে এসে আবার বইটা পড়তে হলো। এবং খুঁটিয়ে খুঁটিয়েই পড়তে হলো। গত দু'বারের পড়া আর এবারের পড়ার মধ্যে তুমুল ফারাক অনুভব করলাম।
সেই আগের মতো মুগ্ধতার অনুভব আর রইলো না।
Profile Image for Shadin Pranto.
1,470 reviews560 followers
June 8, 2024
তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। বরিশাল থাকি। যা পাই, তা-ই পড়ি। আশেপাশে কোনো বই নেই। রীতিমতো দুর্ভিক্ষ চলছে। তখন বড়ো খালার সংগ্রহে থাকা 'বিষাদ-সিন্ধু' পাই। ভাষা তত সহজবোধ্য নয়। তবুও তন্ময় হয়ে পড়তে থাকি 'বিষাদ-সিন্ধু'। এখনো মনে আছে, কিশোর আমি কারবালার ময়দানে ইমাম হোসেনের মৃত্যুর বর্ণনা পড়ে প্রচণ্ড কষ্ট পেয়েছিলাম। খুব সম্ভবত চোখও ভিজে গিয়েছিল। এখানেই মীর মশাররফ হোসেনের সাফল্য। কারবালার এত হৃদয়বিদারক বর্ণনা যে কোনো পাঠককে গভীরভাবে স্পর্শ করবে।

বিয়োগান্তক ইতিহাসনির্ভর উপন্যাসের নাম করলে 'বিষাদ-সিন্ধু'র কথা না বলে পারা যায় না। যদিও অনেকটাই স্বাধীনতা গ্রহণ করেছিলেন মীর মশাররফ হোসেন। এমনকি মরুভূমিতে বামুন পর্যন্ত খুঁজে পেয়েছিলেন। সবকিছু বাদ দিলেও এই উপন্যাস আমার পাঠকমনে বিশিষ্ট একটি জায়গা দখল করে আছে।
Read
January 23, 2018
#বিষাদ_সিন্ধু_এবং_পাঠ_প্রতিক্রিয়া

বিষাদ-সিন্ধু মীর মশাররফ হোসেন রচিত একটি কালজয়ী ঐতিহাসিক উপন্যাস।বলা যায় মীর মশাররফ হোসেনের অনবদ্য সৃষ্টি বিষাদ-সিন্ধু।এটি ১৮৮৮ থেকে ১৮৯০ সালের মধ্যে রচিত হয়।অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে এটি একটি অন্যতম উপন্যাস।

ইমাম হাসানকে বিষপান করানো,কারবালার ঐতিহাসিক কাহিনী ফোরাৎ নদীতীরে রক্তস্রোতে বহমান ঘটনাকে কেন্দ্র করে এটি রচিত হলেও ঐতিহাসিক তথ্যে অনেক ভুল রয়েছে।যেহেতু আমি সঠিক ঘটনা জানিনা তাই কতটুকু ভুল আছে বলতে পারছিনা।তবে উপন্যাসটি পড়ার সময় কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে এটি রচিত এটা মনে না করে অন্যান্য উপন্যাসের মত পড়েছি।

উপন্যাসটি তিনটি পর্বে বিভক্ত ১।মহরম পর্ব ২।উদ্ধার পর্ব ৩।এজিদ-বধ পর্ব।

#মহরম_পর্ব- হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জীবিত থাকা অবস্থায় ভবিষ্যৎবাণী করে যান তাঁরই ভক্ত মাবিয়া পুত্র কর্তৃক তাঁর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হাসেন এবং ইমাম হোসেন মৃত্যুবরণ করবেন।এ কথা শোনার পর সকলের মধ্য হাহাকার সৃষ্টি হলেও এটি রোধ করার সাধ্য সৃষ্টিকর্তা ছাড়া যে কারো নেই তিনি সেটিও জানিয়ে দেন।মাবিয়া বিবাহিত ছিলনা। সে সংকল্প করে কখনো বিয়ে করবেনা।কিন্তু আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করার সাধ্য কার।ঘটনাচক্রে মাবিয়া বয়স্কা এক নারীকে বিবাহ করতে বাধ্য হয় এবং তিনি পুত্র সন্তান প্রাপ্ত হন।তখন মাবিয়া পুত্র হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। অনেক চেষ্টা করেও মাবিয়া প্রাণপ্রিয় সন্তানকে হত্যা করতে পারেনা। এই সন্তানই পিশাচরূপী মানব এজিদ।যার কারণে মদীনায় কান্নায় হাহাকার,নিজ স্ত্রী জাএদা কর্তৃক ইমাম হাসানকে কৌশলে বিষপান করিয়ে মৃত্যু,পরিবারের শোকছায়া,কারবালায় প্রান্তরে হৃদয় বিদারক ঘটনা, অজস্র শিরচ্ছেদ, রক্তস্রোত বয়ে যায়।

মহরম পর্বে ইমাম হাসান ইমাম হোসেনের মৃত্যু এবং ইমাম বংশের বাকিদের এজিদ মন্ত্রী মারওয়ান কর্তৃক কারাবন্দীর ঘটনা উল্লেখ আছে।ইমাম বংশে পুরুষ বলতে হোসেন এর কনিষ্ঠ পুত্র জয়নাল আবেদিন বেঁচে যায়।

#উদ্ধার_পর্ব- হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এটিও ভবিষ্যৎবাণী করেন যে ইমাম হাসান এবং ইমাম হোসেনের পরিবারকে এজিদ কারা হতে তাঁদেরই বৈমাত্র ভাই মোহাম্মদ হানিফা উদ্ধার করবেন।

উদ্ধার পর্বে হাজারো রক্তাক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে মোহাম্মদ হানিফা, তার ছোট ভাই ওমর আলী মন্ত্রী গাজী রহমান সহ কাছের মানুষের সহিত মিলিত হয়ে জয়নাল আবেদিন সহ বাকিদের উদ্ধার করতে সফল হন।

#এজিদ_বধ_পর্ব-এ পর্বে এজিদের বিনাশ এবং জয়নাল আবেদিন এর পৈত্রিকরাজ্য উদ্ধার ও সিংহাসন লাভের ঘটনা উল্লেখ আছে।

আমার_বিশ্লেষণ - শুনেছি কারবালার ঘটনা ইমাম হাসান,হোসেন প্রতি এজিদের হিংস্র মনোভাব দামেস্ক সিংহাসন, রাজনৈতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে সূচিত হয়।কিন্তু উপন্যাসে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করে জয়নাব (ইমাম হাসানের তৃতীয় স্ত্রী) প্রাপ্তি লাভ না হওয়াকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।এখানে মূল নায়ক এজিদ।ধর্মীয় ব্যাখ্যার তুলনায় জয়নাবের রূপে আকৃষ্ট হয়ে তাকে পাবার আশায় এজিদের এক একটি কুকর্ম সাহিত্যরসে মিশ্রিত হয়ে উপন্যাসে স্থান পেয়েছে।
তাই আমার উপদেশ বইয়ে উল্লেখিত ঘটনা বিশ্বাস করা যাবেনা।আমার অনেকটা কষ্ট হয়েছে এটাকে সাধারণ উপন্যাসের মত পড়তে।বারবার মনে হয়েছে ঠিক বুঝি এমনটায় ঘটেছে।মনের এই ভ্রম দূর করার জন্য কারবালাকে উদ্দেশ্য করে লেখা দুটো বই কিনেছি।আশা করি সেগুলো পড়ে সত্যতা জানতে পারবো।

উপন্যাসটি সাধু ভাষায় রচিত।ঐতিহাসিক কাহিনীতে গড়মিল থাকলেও লেখনী চমৎকার।শুরুতে কিছু শব্দ অভিধান দেখে মানে জেনে নিয়েছিলাম :D পরবর্তীতে আর সমস্যা হয়নি।
কিছু উক্তি মন ছুয়ে গিয়েছে।কয়েকটা শেয়ার করছি

১।প্রণয়, স্ত্রী,রাজ্য,ধন এই কয়েকটি বিষয়ের লোভ বড় ভয়ানক।এই লোভে লোকের ধর্ম,পুণ্য,সাধুতা,পবিত্রতা সমস্তই একেবারে সমূলে বিনাশ প্রাপ্ত হয়।অতি কষ্টে উপার্জিত বন্ধুত্ব রত্নটিও ঐ লোভে অনেকেই অনায়াসে বিসর্জন দেয়।মানুষ এ লোভে অনায়াসে যথেচ্ছ ব্যবহারে অগ্রসর হইতে পার��।

২।কপাল মন্দ হইলে তাহার ফলাফল ফিরাইতে কাহারো সাধ্য নাই।

৩।'মনে করিলেই যদি মনের দুঃখ যায়,তবে জগতে কে না মনে করে?'

৪।বাইরের শত্রু হতে রক্ষা পাওয়া সহজ কিন্তু ঘরের শত্রু হইতে রক্ষা পাওয়া দুষ্কর

৫।স্ত্রীজাতির এমনি একটি মোহনীশক্তি আছে যে, পুরুষের মন অতি কঠিন হইলেও সহজে নোয়াইতে পারে,ঘুরাইতে পারে,ফিরাইতেও পারে।(কথা অধিকাংশ সত্য)তবে অন্যের প্রণয়ে মজিলে একটু কথা আছে বটে,কিন্তু হাতে পাইয়া নির্জনে বসাইতে পারিলে,কাছে ঘেঁষিয়া মোহন মন্ত্রগুলি ক্রমে ক্রমে আওড়াইতে পারিলে অবশ্যই কিছু কিছু ফল ফলাইতে পারিবেই পারবে।এ যে না পারে সে নারী নহে

৬।জলে অগ্নি নির্বাণ হয়,কিন্তু প্রেমাগ্নি অন্তরে প্রজ্বলিত হইয়া প্রথমে নয়ন দুটির আশ্রয়ে বাষ্প সৃষ্টি করে,পরিণামে জলে পরিণত হইয়া স্রোত বহিতে থাকে।সে জলে হয়তো বাহ্যবহ্নি সহজেই নির্বাপিত হইতে পারে, কিন্তু মনের আগুন দ্বিগুন, চতুর্গুণ, শতগুন জ্বলিয়া উঠে

৭।সময়ে সকলই সহ্য হয়।কোন বিষয়ে অনভ্যাস থাকিলে বিপদকালে তাহা অভ্যস্ত হইয়া পড়ে,মহাসুখের শরীরে মহা কষ্ট সহ্য হইয়া থাকে।
৮।ঈশ্বর নিয়োজিত কার্যে কেহ বাধা দিতে পারেনা
৯।যে আমার নয় আমি তাহার কেন হইবো।
১০।বিশ্বাসী না হইলে বিশ্বাসঘাতকতা করিবার সাধ্য কাহার?
১১।বিপদগ্রস্ত না হইলে নিরাপদের সুখ কখনোই ভোগ করা যায়না; দুঃখ ভোগ না করিলে সুখের স্বাদ পাওয়া যায়না
১৩।হুতাশনের দাহন আশা,ধরণীর জলশোষণ আশা,ভিখারীর অর্থলোভ আশা,চক্ষুর দর্শন আশা,গাভীর তৃণভক্ষণ আশা,ধনীর ধন বৃদ্ধির আশা, প্রেমিকের প্রেমের আশা,সম্রাটের রাজ্য বিস্তার আশার যেমন নিবৃত্তি নাই,হিংসাপূর্ণ পাপ হৃদয়ে দুরাশারও তেমনি নিবৃত্তি নাই-ইতি নাই।

১৪।ঈশ্বর যাহা ঘটাইবেন, তাহা নিবারণে কাহারো ক্ষমতা নাই
১৫।বিনাশ করা অতি সহজ রক্ষ করা বড়ই কঠিন।
Profile Image for Hadeesa.
9 reviews
December 16, 2021
I would not recommend this book because not only it’s based on falsehood but also the writer has portrayed the enemies of Islam in an inaccurate way… The incidents that took place in Karbala are not correctly stated and this book is completely misleading for those who aren’t aware of the tragedy of Karbala. The writer is clearly ignorant of the actual story
Profile Image for Aishwarya Rathor.
273 reviews29 followers
October 5, 2018
I love reading translated books and this has become one of my favourites now.
The story was originally written in Bengali by Bishad Sindhu. The book is about the the incident of Karbala  on 10th October, AD680, i.e the demise of Hassan and Hussain, the grandson of prophet Mohammad.
Sometimes it happens that we dont visit some places and we just heard about them but with the help of this book, i could relate to the incident.
We all know that Muhharam is a sad day but we never knew the real story behind it. This book explains that in detail.
The characters are well balanced. It might make you emotional but at the same time surprised by the history.
I am impressed by the way all the events are put out.
Profile Image for Abrar.
29 reviews1 follower
September 3, 2020
বিষাদসিন্ধু নিয়ে আমার মায়ের একমাত্র স্মৃতি তাঁর ভয়ানক দুঃস্বপ্ন। কারবালার প্রান্তরে হোসেন(রাঃ) শহীদ হওয়ার ঘটনা পর্যন্ত পড়ে ঘুমাতে গিয়েছিলেন। রক্তাক্ত কাঁটা মাথার স্বপ্ন দেখে ত্রাহিত্রাহি চিৎকারে ঘুম ভাঙে। নানাজান স্বপ্নের বিবরণ শুনে সকালবেলা ঘর থেকে এই বই হাপিশ করে দেন, আম্মুর আর বিষাদসিন্ধু সম্পন্ন করা হয়নি। কাটা মাথার আকাশমুখি যাত্রার বর্ণনা শুনে অতিরঞ্জিত কিছু পড়বো, সে কথা মাথায় রেখে পড়া শুরু করেছিলাম, লেখক একেবারেই হতাশ করেননি।

কারবালার প্রধান কারন হাশেম ও উমাইয়া বংশের বহু পুরনো দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার আধিপত্য ইত্যাদি জেনে আসলেও এই বইয়ে লেখক ঝামেলার সম্পূর্ন ভার দিয়েছেন ইমাম হাসানের তৃতীয় পত্নী জয়নাবের ওপর, এজিদ যার পাণিপ্রার্থী ছিলেন। ইলিয়াডের হেলেনের কথা মনে পড়ছিলো, লেখক সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন কিনা কে জানে।
বইয়ের শেষের দিকে এসেও ইলিয়াডের কথা মনে পড়ছিলো, তবে তা বাক্যশৈলির জন্য। হেক্টরের সাথে দ্বন্দ্বযুদ্ধে একিলিস বলেছিল, " You won't have eyes tonight; you won't have ears or a tongue. You will wander the underworld blind, deaf, and dumb, and all the dead will know: This is Hector. The fool who thought he killed Achilles"(Troy movie 2004)" অন্যদিকে প্রতিশোধস্পৃহায় ক্ষীপ্ত মোহাম্মদ হানিফা, এজিদকে উদ্দেশ্য করে বলে, "এজিদ! এ অবস্থায় তোমায় প্রাণে মারিব না, জীবন্ত ধরিব। তোমার খন্ডিত শিরের ধরালুন্ঠিত ভাব, শিরশূন্য দেহের ক্রিয়ার দৃশ্য, হানিফা একা দেখিতে ইচ্ছা করেনা..তুই নিশ্চয় জানিস, এই রঞ্জিত অসি তোর পরিশুষ্ক হৃদয়ের বিকৃত রক্তাধারে আবার রঞ্জিত করিব। সূর্যরাগে মিশাইয়া উদয় অস্ত একত্র দেখিব!"

মীর মোশাররফ হোসেনের সময়কালে নিম্নবিত্ত মুসলমান বাদে বাকি মুসলমানগন বাংলা চর্চা করতেন না বললেই চলে, আরবী ফার্সি উর্দুই ছিল তাদের প্রাত্যহিক ভাষা। সেখান হতে তিনি বিশুদ্ধ বাংলায় এমন বিশাল কলেবরের একটি উপন্যাস লিখেছেন, যাতে ব্যবহার করেছেন প্রভু, ঈশ্বর, উপাসনার মত বাংলা শব্দ যা এই যুগে এসেও ব্যবহার করতে আমাদের কুন্ঠাবোধ হয়।
তবে এই উপন্যাসকে ইসলামি উপন্যাস বা তথ্যসূত্র হিসেবে বিবেচনা না করলেই ভালো। "উদ্ধার পর্ব" এর চতুর্থ প্রবাহে ফেরেশতা জিবরাইল, রাসুল(সাঃ), আলি(রাঃ), ফাতেমা(রাঃ) ইত্যাদির কিছু কথোপকথন ছিল যা পড়তে অস্বস্তি হচ্ছিলো। এই ব্যাপারে হয়তো লেখক কল্পনাপ্রসূত ভাবাবেগের আশ্রয় না নিলেও পারতেন।

সাধুভাষায় জড়তা না থাকলে এবং স্থানেস্থানে অতিরঞ্জিত আবেগ আমলে না নিতে পারলে এটি একটি সুখপাঠ্য মহাকাব্য!
Profile Image for Ibnul Fiaaz Dhrubo.
124 reviews3 followers
September 11, 2023
“মহররমের মূল ঘটনাটি বঙ্গভাষাপ্রিয় প্রিয় পাক-পাঠিকাগণের সহজে হৃদয়ঙ্গম করায়া দেওয়াই আমার একমাত্র মুখ্য উদ্দেশ্য।”

লেখকের এই উদ্দেশ্যকে স্বাগত জানাতেই হয়। নিতান্ত এতটি উপন্যাস হিসেবে এর কাহিনীটাও মন্দ নয়। তবে এমন একটি ঐতিহাসিক ঘটনার ওপর কলম ধরার জন্য বিশুদ্ধ উৎস হতে মূল ঘটনাগুলো নেওয়া আবশ্যক ছিল। কিন্তু সেটা না করে যত্তসব জাল, বানোয়াট ও অতিরঞ্জিত কাহিনী দিয়ে ভরপুর করে রেখেছেন। হযরত মুআবিয়া (রা.), হযরত হাসান-হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারকে মূল চরিত্র হিসেবে ব্যবহার করে বিশুদ্ধ-অবিশুদ্ধ উৎস থেকে (লেখকের ভাষ্যমতে পারস্য ও আরব্য গ্রন্থ হতে) ঘটনার সারাংশ নিয়ে আর তার সাথে নিজের কলমের খোঁচা দিয়ে কাহিনী লিখে ফেললেন, আর পাঠকগণও এত আগ্রহের সাথে গ্রহণ করলো যে সেটাই হয়ে গেলো তাঁর ‘অমর উপন্যাস’। যতকিছুই হোক না কেন, অন্তত এই চরিত্রগুলো ব্যবহার করে এমন কোনো কাহিনী রচনা করা উচিত নয় যেটা পাঠকদের প্রকৃত সত্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। সাধারণ পাঠকদের লেখা এই বইয়ের রিভিউগুলো পড়লেই সেটা বেশ ভালোই টের পাওয়া যায়। এটা নিতান্তই তাঁর অজ্ঞতা নাকি তিনি জনসাধারণের আবেগ নিয়ে খেলা করলেন, কে জানে! এখনও কারবালার ঘটনা জানতে যখন ‘বিষাদ-সিন্ধু’ পড়ার পরামর্শ দিতে দেখি তখন হতাশ হওয়া ছাড়া আর কীই বা উপায় থাকে!

তাছাড়া পড়ার সময় যেটা মনে হলো, উপন্যাসটি যেন সনাতন ধর্মালম্বী পাঠকদের নিকট সহজে বোধগম্য হয় সেজন্য লেখক তাদের ব্যবহার্য শব্দসমূহ দিয়ে উপন্যাসটি রচনা করেছেন। ভালো কথা। কিন্তু মুসলিম সংস্কৃতিতে ��রজোড়ে প্রার্থনা, পদচুম্বন, পদধূলী গ্রহণ ইত্যাদি ব্যাপারগুলো কোথায় পেয়েছেন? এটা একটু অতিরিক্ত হয়ে গেল না?

এবার ইতিহাস প্রসঙ্গে আসি। মুআবিয়া (রা.) মুত্রত্যাগকালে কুলুখের মাধ্যমে বিষগ্রস্থ হন এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে বর্ণিত ঘটনার সত্যতা কতটুকু? ভিত্তি কী? কারবালার বিয়োগান্তক ঘটনার প্রেক্ষাপট অনেক রাজনৈতিক বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু এটাকে তিনি জয়নাব চরিত্রের ওপর আলোকপাত করেছেন। ইয়াজিদ, সীমার, মারওয়ান, ওয়ালিদ প্রভৃতি চরিত্রতে খলনায়কের ভূমিকা বণ্টন করতে গিয়ে হুসাইন (রা.)-এর আসল হত্যাকারীকেই গোপন করে ফেলেছেন! তুলনামূলক বিশুদ্ধ সূত্রমতে শিমার নয়, বরং হুসাইন (রা.)-কে সিনান বিন আনাস শহিদ করেছিল। হ্যাঁ, শিমার, ওমর বিন সা’দ কারবালার এই মর্মান্তিক ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, কিন্তু তাই বলে আসল হত্যাকারীর নামটা মোটেও উহ্য থাকা উচিত নয়। আজর যে নিজ হাতে তার তিন পুত্রকে হত্যা করলো- এই ঘটনা কোথায় পেয়েছেন? মোহাম্মদ হানিফা কর্তৃক এজিদ বধের ঐতিহাসিক ভিত্তি কী? রওজা শরীফ সাত বার তওয়াফ করতে হয়? প্রথমবার দেখলাম, তাও এই উপন্যাসে!…

খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করলে এরকম আরো অসংখ্য প্রশ্নের উদয় হয়। আমার চোখে আপাতত এইগুলোই ধরা পড়েছে। তাছাড়া যারা এ বিষয়ে বিজ্ঞ তারা আরো ভালো জানবেন। আগ্রহী পাঠক যারা কারবালার দালিলিক ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনাগুলো জানতে চান তারা ফরিদ আল-বাহরাইনির “কারবালা: কল্পকথা বনাম বাস্তবতা” বইটি পড়তে পারেন।

https://www.goodreads.com/review/show...

এখন অনেকে আপত্তি করবেন যে, ইতিহাস ও সাহিত্য দুটি ভিন্ন শাস্ত্র, ধারাবহিকতা রক্ষার্থে এরকম ঐতিহাসিক উপন্যাসে বাস্তবের সঙ্গে কিছু কিছু কাল্পনিক বিষয় যুক্ত হতে পারে। কিন্তু হাসান-হুসাইন (রা.)-এর মতো এরকম ঐতিহাসিক চরিত্রগুলোর সাথে এটা কীভাবে যায়? সাহিত্য সমালোচনার করার মতো অত জ্ঞান আমার নেই। আবার লেখকের ওপর ব্যক্তিগত কোনো রোষ থেকেও নয়। কিন্তু ‘বিষাদ-সিন্ধু’র মতো অতিরঞ্জিত কাহিনীতে ভরপুর একটা বই যখন পাঠকসমাজ সাদরে গ্রহণ করে তখন আর কিছু না বলে থাকি কীভাবে?
Profile Image for Zunaed.
54 reviews119 followers
June 28, 2017
ঠিক কবে পড়েছিলাম মনে নেই। সম্ভবত ক্লাস ফোরে থাকতে, ২০০৭ সালে। এখন ভাবলে অবাক লাগে এত কঠিন সংস্কৃত শব্দবহুল বইটা তখন শেষ করেছিলাম কীভাবে।

বইটাকে মুসলিম সমাজে খানিকটা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। তখন খারাপ লাগেনি, চারতারা পেয়ে যেত। কিন্তু পরে জানতে পারলাম এতে কিছু ঐতিহাসিক ভুল রয়েছে। কারবালার কাহিনী বলতে গিয়ে লেখক ইতিহাসের চেয়ে বাংলার প্রচলিত বিকৃত ইতিহাসের কাছাকাছি থেকেছেন, যা মূলত পুঁথিকারদের হাতে সৃষ্টি। তাই একতারা কেটে নিলাম। :-(
Profile Image for Sabbir Rahman.
23 reviews2 followers
February 13, 2025
বিষাদ সিন্ধু—মীর মশাররফ হোসেনের কালজয়ী উপন্যাস। কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনা এবং হযরত ইমাম হাসান ও হোসাইনের ট্র্যাজিক পরিণতি তুলে ধরা হয়েছে। ভাষার প্রাঞ্জলতা, বর্ণনার আবেগ, এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সাহিত্যিক রূপায়ণ উপন্যাসটিকে মহাকাব্যের উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে ঠিকই কিন্তু ঐতিহাসিক একটা ঘটনাকে বিকৃত করে উপস্থাপন করার অনেক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
তাছাড়া যেহেতু ঘটনা প্রেক্ষাপট মুসলমান ধর্মের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে রচিত তাই শব্দ ব্যবহারে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবহৃত শব্দগুলো অধিক ব্যবহার না করে মুসলমানদের ধর্মীয় চর্চায় ব্যবহৃত শব্দগুলো ব্যবহার করলে আর উপভোগ্য হতো।
Profile Image for Tazmilur Rahman.
17 reviews2 followers
September 6, 2022
● বিষাদ সিন্ধু বলতে কী বুঝায় —

বিষাদ সিন্ধু দুটি আলাদা আলাদা শব্দ। বিষাদ ও সিন্ধু। বিষাদ শব্দের অর্থ দুঃখ, বিষন্নতা, ভরাক্রান্ত ইত্যাদি। আবার সিন্ধু শব্দের অর্থ সাগর বা সমুদ্র।
সহজ কথায় বিষাদ সিন্ধু অর্থ দুঃখের সাগর বা দুঃখের সমুদ্র।

কিছু ওলামা এবং শিক্ষাবীদগন আবার বিষাদ সিন্ধুর ব্যাখ্যা করেছেন একটু ভিন্ন ভাবে। তারা বলেছেন : বিষাদ শব্দের অর্থ বিষে ভরা। আবার সিন্ধু হচ্ছে নদীর নাম। অর্থাৎ বিষে ভরা সিন্ধু নদীকেই বিষাদ সিন্ধু বলা হয়।

✰ বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসটি মূলত {হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)এর মেয়ে } হযরত ফাতিমা (রাঃ) এবং মুসলিম জাহানের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রাঃ) এর দুই ছেলে ইমাম হাসান (রাঃ) ও ইমান হোসেন (রাঃ) এর জীবন কাহিনী এবং সেইসাথে তাদের চরম শত্রু এজিদের পরাজয়ের কাহিনী নিয়ে লেখা।

● সংক্ষিপ্ত আলোচনা : —

হিজরি ৬১ সালে সংঘটিত কারবালা যুদ্ধের পূর্ব এবং পরের কাহিনী এই উপন্যাসের মূল বিষয়। উপন্যাসটি
৩ পর্বে বিভক্ত। যথা :
১. মহররম পর্ব
২. উদ্ধার পর্ব
৩. এজিদ - বধ পর্ব
এগুলো যথাক্রমে ১৮৮৫, ১৮৮৭ ও ১৮৯১ সালে তিন ভাগে প্রকাশীত হয়। যা পরবর্তীতে বিষাদ সিন্ধু নামক একটি সম্পূর্ণ বই আকারে বের হয়।

✰ নিচে তিনটি পর্বের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো,

১.মহররম পর্ব :

বিষাদ সিন্ধু বইয়ের প্রথম পর্বের নাম মহররম পর্ব। এখানে মোট ২৬ টি অধ্যায় রয়েছে।

➤ একদা মুহাম্মাদ (সাঃ) কিছু সাহাবীদেরকে নিয়ে আলোচনা সভা করছিলেন। তখন আল্লাহর তরফ থেকে জিবরাইল (আঃ) এসে নবীকে বলেলেন, সভায় থাকা মাবিয়া নামক এক সাহাবীর পুত্র দ্বারা আপনার জীবনের থেকেও অতি আদরের নাতি ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেন হত্যাকান্ডের স্বীকার
হবেন।

এ কথা শুনে মাবিয়া বললেন আমি কখনোই বিবাহ করব না। আমার সন্তানও জন্মিবে না।
কিন্তু সৃষ্টিকর্তার কথা যে বিফলে যায় না সেটাও জানিয়ে দিলেন মহানবী।
কয়েকদিন পর মাবিয়া ঘটনা ক্রমে বিবাহ করল এক বয়স্কা মহিলাকে। বিবাহের পরোই জন্ম নিল এক পুত্র সন্তান। নাম রাখলেন এজিদ।
এজিদ এই উপন্যাসের প্রধান কয়েকজন চরিত্রের মধ্যে একজন। এজিদ এমন একজন দানব যার অত্যাচার মদিনা জুরে কেউ সহ্য করতে পারেননি।

বিষাদ সিন্ধুতে এজিদ ইমাম হাসান (রাঃ) স্ত্রী জয়নাবকে লাভের তিব্র কামনাকে চিহ্নত করা হয়েছে। এজিদ চরিত্রে নিষ্ঠুরতম, নির্মমতা,দানবীয় পৈশাচিকতা ও অমানবিক আচরণ সবকিছুর ব্যাখ্যা ঐ জয়নাম প্রেম।

জয়নাবকে পাওয়ার আসায় এজিদ ইমান হাসান (রাঃ) কে মারার ফন্দি আাঁটলেন। এজিদ হাসানের মধ্যম স্ত্রী জায়েদাকে দিয়ে তার স্বামী হাসান (রাঃ) কে বিষ পান করিয়ে মৃত্যু বরণ করান।

এরপর এজিদ হোসেন (রাঃ) কেও শেষ করার জন্য কৌশলে তাকে তার পরিবার ও সৈন্যসহ কারবালার প্রান্তরে নিয়ে আসেন। সেখানে এজিদের সৈন্যরা হোসেন ও তার সাথীদের সাথে যে কারখানা করে বসেন তা ছিল খুবই হৃদয় বিদারক। কারবালার প্রান্তর বয়ে যায় রক্ত স্রতে। সেখানেই ইমাম হোসেনকে হত্যা করেন এজিদ সেনাপতি সিমার। ইমাম বংশে হোসেন পুত্র জয়নাল আবেদীন ছাড়া সেদিন আর কেউ বেচে রইল না।

২. উদ্ধার পর্ব :

বিষাদ সিন্ধু বইয়ের দ্বিতীয় পর্ব হলো উদ্ধার পর্ব। এখানে মোট ৩০ টি অধ্যায় রয়েছে।

➤ কারবালার যুদ্ধ শেষ হবার পর এজিদ জয়নাল সহ,ইমাম বংশের সব মহিলাকে তারা গৃহবন্দী করে রাখেন।
উদ্ধার পর্বে উল্লেখ আছে, মহানবী (সাঃ) ভবিষ্যৎবানী করেছিলেন যে, মোহাম্মদ হানিফা এসে এজিদ গৃহে বন্দী ইমাম বংশীয় সকলকে উদ্ধার করবেন।
পরবর্তীতে মহানবী (সাঃ) এর বাণী সঠিক হিসেবে প্রমানিত হয়।

এই পর্বে ইমাম বংশীয়দের উদ্ধার করা হয় কীভাবে সে সব ইতিহাস ভালো ভাবে জানা যায়।
উদ্ধার কাজে হানিফা বাদে আরো কয়েকজন যোগ দিয়েছিল তারা হলেন : ওমর আলী, গাজী রহমান এবং জয়নাল আবেদীন সহ আরো অনেক নবী প্রেমী ভাইয়েরা।

৩. এজিদ - বধ পর্ব :

বিষাদ সিন্ধু বইয়ের শেষ পর্ব এটি। উপসংহারসহ মোট ৬ টি পর্ব রয়েছে এই অংশে।

➤ এ পর্বে এজিদের বিনাস, জয়নাল আবেদীনের দামেস্ক সিংহাসন লাভের ঘটনা খুব সুন্দর ভাবে
বর্নিত রয়েছে।

● ভালো লাগার মতো কিছু শিক্ষনীয় উক্তি : —

১. “প্রণয়, স্ত্রী, রাজা,ধন এই কয়েকটি বিষয়ের লোভ বড় ভয়ানক। এই লোভে লোকের ধর্ম,পুন্য,সাধুতা পবিত্রতা সমস্তই একেবারে সমূলে বিনাশ প্রাপ্ত হয়। ”
২.“বিনাশ করা অতি সহজ, রক্ষা করা বড়ই কঠিন"
৩.“কপাল মন্দ হইলে তাহার ফলাফল ফিরাইতে কাহারো সাধ্য নেই।"
৪.“সময়ে সকলেই সহ্য হয় কোন বিষয়ে অনভ্যাস থাকিলে বিপদকালে তাহা অভ্যস্ত হইয়া পরে,মহা
সুখের শরীরে মহা কষ্ট সহ্য হইয়া থাকে।"
৫.“কপাল মন্দ হইলে তাহার ফলাফল ফিরাইতে কাহারো সাধ্য নেই। "
৬.“যে আমার নয় আমি তাহার কেন হইব।"
৭.“বিশ্বাসী না হইলে নিরাপদের সুখ ভোগ করা যায় না ; দুঃখ ভোগ না করিলে সুখের স্বাধ পাওয়া যায় না।"

● লেখক এবং লেখকের লিখনশৈলী : —

বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের লেখক মীর মশাররফ হোসেন। তার ছদ্ম নাম গাজীমিয়াঁ। তিনি ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭ সালে কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহন করেন। এবং ১৯ ডিসেম্বর ১৯১২ সালে নবাবপুর,বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ীতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তার জীবনে অনেক গ্রন্থ লিখে গেছেন। তার প্রকাশীত গ্রন্থ প্রায় ৩৬ টি।

মীর মশাররফ হোসেন এর বিষাদ সিন্ধু উপন্যাস দিয়ে তার বই পড়ার সূচনা হলো আমার। এটি একটি মহাকাব্যিক ও বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ও প্রাচীনতম উপন্যাস।

লেখকের লিখনশৈলীর প্রশংসা অবশ্য কাম্য। সম্পূর্ণ উপন্যাসটিতে সাধু ভাষার ব্যবহার করেছেন তিনি।
উপন্যাসের শুরু থেকে শেষ অবধি যে ভাবে গল্প এগিয়ে নিয়েছেন তিনি, তা বইটি পড়লে বুঝতে পাবেন। পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন সব কাহিনী গুলো।

তাছাড়া তার বইয়ের শব্দের ব্যবহারগুলো কিছু কিছু জায়গায় একটু জটিল করেছেন। সেজন্য পরামর্শ থাকলো,বইটি পড়ার সময় সাথে একটি বাংলা ডিকশোনারি রাখবেন। তাহলে পড়তে সুবিধা হবে।

● বানান : —

৩৫০ পৃষ্ঠার বই হওয়া সত্ত্বেও বইটিতে বানানের ভুল খুবই সামান্য। কিছু জায়গায় একটি শব্দের ভিতর থেকে অক্ষর হারিয়েছে। কিছু জায়গায় ডাবল শব্দ পর পর ব্যবহার হয়েছে। তবে, তাতে পড়তে কোনো অসুবিধা বোধ হয়নি।

● প্রচ্ছদ : —

বইটির প্রচ্ছদ নিয়ে আমি সন্দিহান। এই বইটি বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে ছাপানো হয়েছে। (সঠিক প্রকাশনীর নাম কারো জানা থাকলে কমেন্টে জানানোর অনুরোধ রইল)। তাই এর সঠিক প্রচ্ছদ কোনটি, সেইটা আমি নিজেও জানি না। তবে আমার সংগ্রহে যে প্রচ্ছদ নির্মিত বইটি আছে,সেটি আমার ব্যাক্তিগত ভাবে ভালো লাগেনি। অনলাইনে এই বইয়ের বাকী প্রচ্ছদ নির্মিত বইগুলোও দেখেছি। বইয়ের মান হিসেবে একটি প্রচ্ছদও আমার কাছে ভালো লাগেনি।

● মলাট • বাঁধাই • পৃষ্ঠা—

আগেই বলেছি বইটি বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে।তাই একেক প্রকাশনীর বইয়ের মান একেক রকম। আমার সংগ্রহের বইটির মলাট, বাধাই,পৃষ্ঠা সবকিছুই অনুন্নতই বলা চলে। পৃষ্ঠায় ঘষাঘষি একটু বেশী হলে হাতে গুড়ো লেগে যায়। বাধাই, মোলাট একদমই হালকা। তাই বই কেনার সময় অবশ্যই দেখে কিনবেন। কারণ বইয়ের মলাট ,বাঁধাই কিংবা পৃষ্ঠা যদি উন্নত হয় তাহলে বই পড়ার ফিলিংসটা আরো বেড়ে যায়।

(বিঃদ্রঃ বই পড়ার সময় বইয়ের প্রচ্ছদ, মলাট,বাঁধাই, পৃষ্ঠা এসব ম্যাটার করে না। বইয়ের গল্পটাই বেশি ম্যাটার করে। শুধু ফিল একটু কম আর বেশি।)

● খুচরা আলাপ : —

বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের প্রধান প্রধান চরিত্র গুলোর সন্ধান ইতিহাসে স্পষ্ট পাওয়া যায়। কিন্তু অনেক অপ্রধান চরিত্র ইতিহাসের কোনো গ্রন্থে পাওয়া যায়নি। যেহেতু,উপন্যাসটি অনেক বাস্তব ঘটনা কিংবা ঐতিহাসিক ঘটনার উপর নির্মিত, তাই এটিকে ঐতিহাসিক উপন্যাসও বলা হয়।

বইটিতে যে সম্পূর্ণ বাস্তব ইতিহাসের উপর মিল রয়েছে তা নয়। গল্পের মিল রাখার জন্য কিছু অপ্রধান চরিত্র বানিয়ে মিলিয়েছেন লেখক।

সেই বলে বইটিকে একদম এভোয়েট করবেন না। কারণ, এখানে প্রধান চরিত্র গুলো সব ঠিক আছে।
বড় বড় যেসব কাহিনী, যেমন: কারবালার যুদ্ধ, জয়নালের রাজ্য জয় এসব ধর্মগ্রন্থেও উল্লেখ আছে।
আমি বার বার বলছি, গল্পের মিল রাখার কারণে অপ্রধান কিছু চরিত্র সাজিয়েছেন তিনি।

● বইটি কেন পড়া প্রয়োজন / পড়বেন : —

অনেকে নামে মাত্র মুসলমান,কিন্তু কাজে নেই। আল্লাহর আদেশ পালন তো দূরে থাক,আল্লাহর নামটি মুখে নেয়ারও সময় হয় না। সেইসব ভাই বোনদের আমি এই ইসলামিক ইতিহাস রচিত বইগুলো বেশী পড়তে বলব। এর মধ্যে বিষাদ সিন্ধু একটি।

কারণ তাদের দেখা দরকার আগেকার মুসলিমদের আর আমাদের মধ্যে পার্থক্যটা কী?
তারা কখনোই তাদের জীবনের পরোয়া করত না। তাদের ধর্ম রক্ষা আগে,আল্লাহর আদেশ পালন আগে, তারপর অন্যকথা। তারা সামান্য ধর্মের অপমান সহ্য করতে পেতেন না। অনায়াসে দিয়ে দিত জীবন।
এসব হৃদয় বিদারক কাহিনী বেশি বেশি পড়লে, শুনলে হৃদয় উজার হয়।তাই সকল আল্লাহ ভোলা মুসলমান ভাই বোনদের অনুরোধ করব, ইসলামের ইতিহাস গুলো বেশী বেশী জানুন। দেখবেন আল্লাহর নাম এমনিতেই মুখ থেকে বের হয়ে আসবে। ইসলামের প্রতি হৃদয় এমনিতেই নরম হয়ে যাবে।

✰ এছাড়াও বলব,যাদের ইসলামের ইতিহাস নিয়ে আগ্রহ রয়েছে তাদের জন্য অবশ্য পাঠ্য একটি বই এটি। যাদের ইমাম হাসান (রা), হোসেন (রাঃ) এর মৃত্যু কাহিনী, এজিদ বধ কিংবা কারবালার করুণ ইতিহাস জানার আগ্রহ আছে তাদের জন্য বিষাদ সিন্ধুই বেস্ট।

➟ বই : বিষাদ সিন্ধু
➟ লেখক : মীর মশাররফ হোসেন
➟জনরা : ইসলামিক ইতিহাস
➟ প্রকাশনী : শব্দশিল্প
➟ মূল্য : ৩৫০ টাকা
➟ পৃষ্ঠা : ৩৫০
Profile Image for Chiranjib Chowdhury.
54 reviews1 follower
October 16, 2020
মহানবী (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হাসান এবং ইমাম হোসেনের নিষ্ঠুর পরিণতি এবং এর পরবর্তীতে এজিদ বধ পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহের বর্ণনা।
বিষাদসিন্ধু একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস। আপনাকে অবশ্যই ইতিহাসের বই আর উপন্যাসের মাঝে পার্থক্য বুঝতে হবে। ঔপন্যাসিক কোন ইতিহাসবেত্তা নন, অন্তত তিনি যখন উপন্যাস লিখেন তখন। এই কথা বলার কারন হল, বিষাদসিন্ধু-তে ইতিহাসের কিছু এদিক সেদিক হয়েছে (লেখকের বয়ান অনুসারে তিনি আরবি-ফারসি গ্রন্থ হতে এসব সংগ্রহ করেছেন)। লেখক হয়তো উপন্যাসের প্রয়োজনে কিছু চরিত্র, ঘটনা-র সংযোজন এবং বর্ণনার অতিশয়োক্তি করেছেন। কিন্তু সেটা যদি উপন্যাসকে সার্থক করে তাহলে এর থেকে বেশি আপনি কি চাইতে পারেন?
উপন্যাসের লেখনীতে একটা চমকপ্রদ ব্যাপার লক্ষ করা যায়। “ঈশ্বর”, “ভগবান”, “সর্বশক্তিমান”, “স্বর্গ” প্রভৃতি বাংলা শব্দগুলোর বহুল ব্যবহার। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে, সাহিত্যে বিশুদ্ধ বাংলা শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে লেখক ছিলেন একজন অগ্রগণ্য মানুষ। উপন্যাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এর দৃষ্টান্ত চোখে পড়ে।
লেখকের লেখনী অসাধারণ। কাহিনীর বর্ণনা এত বেশী সুন্দর এবং জীবন্ত যে আপনি নিজেই কাহিনীর ভেতর হারিয়ে যাবেন। এই বিষয়টাই ঠিক আগের বই “কলকাতায় নবকুমার” বইয়ে বলেছিলাম। প্রায় ১৩০-১৪০ বছর হতে চলল এখনও এই উপন্যাসের আবেদন ঠিক আগের মতই আছে।
আরেকটা অসাধারণ ব্যাপার হচ্ছে, সম্পূর্ণ উপন্���াসটা হল একটা চলচ্চিত্রের মত। আর পাঠক হল সেই চলচ্চিত্রের দর্শক। উপন্যাসের একদম শেষে জয়নাল তার পরিবারের সাথে মিলিত হয়। একটা সুখকর ইতি। তখন লেখক পাঠককে নিয়ে যেতে চান উপন্যাসেররই আরেকটা ঘটনা প্রবাহের দিকে। যেখানে মোহাম্মদ হানিফা, এজিদের পিছনে ঘোড়া ছুটিয়ে বেড়াচ্ছেন। লেখক scence change করছেন এভাবে “তবে কথা এই যে, তাহাই (সুখকর ইতি) দেখিবেন, না মোহাম্মদ হানিফা এজিদের পশ্চাৎ ঘোড়া চালাইয়া কি করিতেছেন, তাহাই দেখিবেন?.................. আমরা মোহাম্মদ হানিফার অন্বেষণে যাই। চলুন এজিদের অশ্বচালনা দেখি।“ just অসাধারণ। আমি এভাবে কোন উপন্যসের scenery change করতে দেখিনি।
বিশাল বড় একটা উপন্যাস। অসাধারণ লেখনী। বাংলা সাহিত্যের প্রথম দিকে লেখকরা এত সমৃদ্ধ লিখা লিখতেন ভাবতেও অনেক ভালো লাগে।
Profile Image for Ronita Banerjee.
190 reviews24 followers
September 20, 2018
Name- Ocean of Melancholy:The tragedy that was Karbala
Originally written in Bengali as Bishad Sindhu by Mir Mosharraf Hossain
Translated by- Alo Shome
Published by- Niyogi Books
Pages- 206
Storyline-
The original Bishad Sindhu was a retelling of the horrific events that took place in Karbala, Iraq on the 10th of October, AD 680. Till date people all over the world mark it as a day of mourning for the grandsons of Prophet Muhammad, Hassan, who was poisoned and Hussain, who was killed brutally in Karbala. This book translated by Alo Shome explores the events in the manner Mir Mosharraf Hossain narrated them in Bishad Sindhu.
Review-
●Most of the people are aware of the gist that took place in Karbala, but the manner in which this book retells the heart wrenching story is beyond words.
●The graphic descriptions, the foreplay of human emotions, desires, foolishness, greed, suffering everything were definitely well balanced.
●Bishad Sindhu retells this story with a mixture of romanticism, spiritualism, mysticism, supernaturalism instead of just stating the historical records. I was impressed by the research that Alo Shome did for this book which he included as footnotes where he deemed them necessary and also sometimes omitting some subplots of Bishad Sindhu which is debatable.
Personal Views-
I remember reading proses and poetries on Muharram, in bengali as a part of school curriculum. They never elaborated on the events that took place which lead to the tragedy in Karbala. Hence, reading a book which not just states the history but makes the readers feel the story has been a great experience for me.
Profile Image for Dipak Karmoker.
68 reviews2 followers
August 29, 2024
বিষাদ-সিন্ধুর কাহিনি নিয়ে কথা বলার চেয়ে এর লিখনশৈলী নিয়ে কথা বলা ভালো। বিষাদ-সিন্ধুর কাহিনি, মহাকাব্যের কাহিনির ন্যায়, ফলে এর রচনাশৈলীতেও মহাকাব্যের ধারা ফুটে ওঠে। যেমন: বিরাট আকারের সংলাপ, একই কথা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বিভিন্ন আঙ্গিকে বারবার উচ্চারণ করে অনেক বড়ো করে বলা, মূল ঘটনা সুবিশাল না হলেও (বইয়ে যেটুকু লিপিবদ্ধ হয়েছে) মহাকাব্যের ধারায় গিয়ে কাহিনির বিস্তার বেড়ে না গেলেও প্রকাশের ব্যাপ্তি বেড়ে যায় অনেক- ফলে মাঝে মাঝে বিরক্তি চলে আসে, তবে চাইলে এসব অংশ বিষদ্ভাবে না পড়ে চোখ বুলিয়ে গেলেও চলে। তবে মহাকাব্যের ধারায় লিখলেও মহাকাব্যের ন্যায় এর কাহিনির শাখা-উপশাখা সেই অর্থে তৈরি হয়নি, সেসব ব্যাপারে লেখক সংক্ষেপে কাজ সেরেছেন, আরেকটু বিস্তারিত থাকলে পড়ে আরাম পাওয়া যেত। ক্লাইম্যাক্সে গিয়েও লেখককে সংক্ষেপে কাজ সারতে দেখা গেছে। এমন কি যেসব কথা উনি বর্ণনা করতে পারেননি সেগুলো লেখকের (ক্ষেত্রবিশেষে কোন লেখক-কবির) পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেছেন, এরকম কথা বারবার ঘুরে-ফিরে এসেছে, বারবার ব্যবহার করেছেন বিষাদ-সিন্ধু শব্দটি, যা হয়ত সেসময়কার রচনাশৈলীর অংশ।

১৮৯১ সালে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়, তখন পূর্ব বাংলার মুসলিমরা শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে ছিল, লেখক হয়ত হিন্দু পাঠকের কথা মাথায় রেখেই বইটি রচনা করেছিলেন। যার জন্য আরবি শব্দের পরিবর্তে সংস্কৃতের আধিক্য দেখা গেছে, অনেক আরবি শব্দের আবার ব্রাকেটের মধ্যে অর্থও দিয়ে দিয়েছেন। গল্পের স্থান কাল পাত্রের সাথে শব্দগুলো আমার কাছে উপযুক্ত মনে হয়নি। উক্ত স্থানগুলোয় আরবি-ফারসি শব্দ ব্যবহার করলেই গল্পের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেত বলেই আমি মনে করি। অন্তত এরকম একটা সংস্করণ উনি তৈরি করে রাখতে পারতেন।

তবুও বাংলা সাহিত্যের এই কালজয়ী বইটি পাঠ করে যথার্থই ভালো লেগেছে। কালে-কালে নব-নব পাঠকেরা অন্তত একবার করে হলেও বইটি পাঠ করবে বলেই আমি মনে করি।
Profile Image for Purni Chowdhury.
3 reviews
October 13, 2017
বেশ কয়েকবার পড়েছি। যতবারই পড়েছি ততবারই চোখে পানি এসেছে। বিশেষ করে হাসান ও হোসেনের হৃদয়বিদারক হত্যার বর্ণনা যেভাবে দেওয়া হয়েছে, সত্যিই লোমহর্ষক! যেহেতু ঐতিহাসিক কাহিনী নিয়ে লেখা হয়েছে, তাই কোথাও কিছু বাড়িয়ে বলার অবকাশ নেই। কিন্তু লেখক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অতিরঞ্জিত করেছেন বলে মনে হয়েছে আমার। তাছাড়া ধর্মীয় ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখা যথেষ্ট দুঃসাহসিকতার কাজ ও। কারন কোনো রকম বিকৃতি বা অতিরঞ্জন করলে পাপের ও ভয় আছে। কিছু কিছু জায়গায় মনে হয়েছে লেখক ভাবাবেগবশত হয়ে কিছু অসামঞ্জস্য পূর্ন বিষয় ও যুক্ত করেছেন, যার সত্যতা আদৌ আছে কিনা বলা মুশকিল, এবং এই ঘটনাগুলোর উল্লেখ পুরনো দিনের পুঁথিতে পাওয়া যেত। মহররম পর্বটা বেশি ভালো লেগেছে আমার। ইসলামিক ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ণনায় পুরোপুরি বাংলা ভাষার ব্যাবহার আমার কাছে ব্যতিক্রমধর্মী মনে হয়েছে। যেমন: আল্লাহ না বলে বলা হয়েছে ভগবান, জগদীশ্বর বা ঈশ্বর, নামাজ না বলে বলা হয়েছে উপাসনা, ইত্যাদি। খলনায়ক এবং খলনায়িকার বর্ণনাগুলো বেশ জীবন্ত মনে হয়েছে আমার কাছে। এজিদ, মারওয়ান, জায়দা, মায়মুনা প্রত্যেকেই তাদের চারিত্রিক রিপু নিয়ে বিভৎসভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে পড়ে দেখার মত একটা বই।
Profile Image for Sayan Raha.
26 reviews44 followers
March 29, 2015
First of all a must read to know the history of Islam.Secondly , Mir Mosarraf Hossain's magnum opus is Bishad Shindhu, depicting the tale of Martyrdom of Hasan and Husayn in Karbala. He was one of the first Muslim writers to emerge from colonial British India.This book contains much poetic language, and many dramatic sessions. At the time, Bengali novels were rarely written, and a few writers (including Mosarraf Hussain) were trying to establish the concept of novels in Bengali. It was written in Shadhubhasha, a Sanskritised form of Bengali.Though I was surprised by the violence of Muslim history , still a good read.
Profile Image for Shahidul Nahid.
Author 5 books141 followers
December 2, 2017
বাচ্চাকালে পড়েছিলাম ...
Profile Image for Mohammad Kamrul Hasan.
342 reviews15 followers
January 27, 2021
একদিন মহা নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মসজিদে উনার সাহাবাদের নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তখন হঠাৎ করে উনার শরীর ঘর্মাক্ত হয়ে উঠলো, (এই লক্ষনটা হয় তখনই যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে হযরত জীব্রাইল (আঃ) ওহি (বার্তা) নিয়ে নবীজির কাছে আসতেন। আর এই লক্ষনের ব্যাপারটা সাহাবাদের তখন জানা হয়ে গিয়েছিলো)। কিছুক্ষণ পর নবীজি স্বাভাবিক হয়ে উঠলে উনার মুখোমন্ডল চিন্তায়, মনোকষ্টে অন্য রকম দেখা যায়। তখন সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন ‘হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ), জীব্রাইল এসে কী এমন বলল যে আপনার চেহারা মোবারক এমন বিমর্ষ হয়ে গিয়েছে'?
নবীজি অনেকক্ষন কিছু বললেন না। তারপর সাহাবারা আবার জিজ্ঞেস করায় কিছুক্ষণ পর তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে একজনের বংশধরের হাতে আমার বংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে'।

এ কথা শুনে সকলে একযোগে বলে উঠেন ‘কোন সে ব্যাক্তি, নাম বলুন' তিনি বলেন না, অনেক মিনতির পর তিনি বললেন

‘মাবিয়ার পুত্র এজিদ' মাবিয়া তখনোও অবিবাহিত। আর মাবিয়া ছিলেন নবীর খুব ভালো সাহাবিদের একজন। মাবিয়া ততক্ষানৎ বলে উঠলেন ‘আমি জীবিত থাকা কালিন কখনো বিয়ে করবোনা’।
নবীজি কান্নারত কন্ঠে বলেন, মাবিয়া তুমি কী করে আল্লাহর ঠিক করে দেয়া ভাগ্য খন্ডন করবে? যা হবে তা আল্লার ইচ্ছায় হবে।

অনেকদিন পর নবীজির (সাঃ) করে দেয়া সেই ভয়ঙ্কর ভবিষৎবানী সত্যতি হয়।
একদিন সকালে নবীজির কাছে উনার প্রাণ প্রিয় ছোট দুই নাতি ‘হযরত হাসান (রাঃ) এবং হযরত হুসাইন (রাঃ)’ এসে নতুন জামার বায়না ধরে। তখন তিনি তাদের দুজনকে জিজ্ঞেস করেন কার কোন রঙ পছন্দ? জবাবে বড় ভাই হাসানের পছন্দ সবুজ আর ছোট ভাই হুসাইনের লাল রঙ পছন্দ বলে জানায়। তাদের কথা শুনে কী মনে করে নবী কাঁদতে থাকেন। এদৃশ্য দেখে সকলে স্তব্ধ। তখন নবীজির মেয়ে এবং হাসান হোসেনের মা ফাতিমাকে নবীজি জানালেন যে হাসান একদিন মারা যাবে বিষ প্রয়োগে, এবং হাসান কারবালার ময়দানে।

বিষাদ সিন্ধু বইটিতে মুলত হাসান হোসেনের করুণ মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরেছেন লেখক খুব সুন্দর নাটকীয় করে।
মাবিয়া বিয়ে করতে চায়না, কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছাকে কে খন্ডাতে পারে? তাই তার এক দুরারোগ্য ব্যাধি হয়, যা বিয়ে না করলে ভালো হবে না, তাই তিনি বাধ্য হয়ে বিয়ে করলেন। তবে তার থেকে অনেক বেশী বয়স্ক এক মহিলাকে, যে মহিলা আবার সন্তান ধারনে ছিলো অক্ষম। এত কিছুর পরো এজিদ জন্ম নিলো।
তখন মাবিয়া ঠিক করলো এ বাচ্চা মেরে ফেলবেন তিনি, নিজের কোমরে রাখা তলোয়ার হাতে নিয়ে যখন বাচ্চার সামনে গিয়ে দাড়ালো তখন আল্লার ইচ্ছায় তার দিল নরম হয়ে যায়। তিনি আর এজিদকে মারতে পারেন না,
তিনি মনের দুঃখে এবং আসন্ন বিপদের কথা স্বরণ করে এজিদকে নিয়ে দেশ ত্যাগ করে মক্কা থেকে দামেস্কর উদ্দেশ্যে চলে যান। দামেস্ক আবার হাসান হোসেনের পিতা হযরত আলী(রাঃ)র বিজয়ী নগর ছিলো।

এজিদ প্রাপ্তবয়স্ক হয়। একদিন তার চোখে ভালো লেগে যায় জয়নব নামের একটি মেয়েকে। এজিদ তাকে যেভাবেই হোক নিজের করে পেতে চায়। এজিদ নানা কৌশল করে তার জন্য। কিন্তু জয়নব থাকে বিবাহিতা। এবং খুব ধার্মিক নারী। তিনি ছিলেন অল্পে সন্তুষ্ট, এবং খোদা ভীরু মহিলা। কিন্তু তার স্বামি ছিলো অর্থ লোভি। তাই এজিদ জয়নবের স্বামীকে হাত করে জয়নবকে পেতে চায়।
কিন্তু এজিদ কী পেরে ছিলো জয়নবকে পেতে? অনেক ঘটনার সৃষ্টি হয় জয়নবকে ঘিরে।

নারী মন পেতে এজিদ কী কী কুকর্ম করতে পেরে ছিলো, কী করুন লোমহর্ষক ঘটনা তৈরী করে ছিলো তা লেখক খুব সুন্দর ভাবে এবং সমপূর্ণ আবেগ দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন।
প্রতিটি পাতায় ছিলো করুণ কাহিনীর বর্ণনা।
হাসানেকে কী ভাবে বিষ দেয়া হয়, এবং হাসানকে বাঁচানোর জন্য কী কী উপায় গ্রহন করা হয়েছিলো। প্রতিটি যুদ্ধের লোহর্ষক বর্ননা, রাজ্য দখলের কাহিনী। সবকিছুই ছিলো চমকপ্রদ।
যে ব্যাক্তি বিষ প্রয়োগ করে হাসানকে মারে, মৃত্যুর আগে হাসান তার জন্য ছোট ভাই হোসেনের কাছে নসিহত করে যায়

‘যে তাকে বিষ দিলো তার নাম যদি কখনো জানতে পারে তাহলেও যেন কখনো তাকে কিছু না বলে, বরং তাকে যেন তিনি ক্ষমা করে দেন’।

কত সুন্দর করে এসব গুনের মহত্ত্ব লেখক কতটা সুন্দর করে কতটা আবেগ দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন তা না পড়লে কিছুই বুঝা যাবে না।
কারবালা প্রান্তরে সৈনদের সেকি করুণ কাকুতি মিনতী। যা পড়লে আমার বিশ্বাস একজন কঠিন মানুষেরও চোখে পানি আসবেই।
কে ছিলো আরেক অকুতো ভয় যোদ্ধা ‘আবু হানিফা'? কেন তার কথা লুকাইত ছিলো এতোদিন?

-- মতামত

আমি মনে করি বাংলা সাহিত্যের অমর এক সৃষ্টি এই “বিষাদ সিন্ধু”। সত্য কাহিনীর আলোকে উপন্যাস রচনা করে লেখক “মীর মোশাররফ হোসেন” সাহিত্যর মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। তবে লেখক এখানে প্রচুর আবেগ তৈরী করেছেন, যা কোন উপন্যাসেই মানায়। এবং সেটা কাহিনীর সাথে একদম মানিয়ে গেয়েছে খুব সাবলিল ভাবে।
তবে এই বইটাকে কোনো ভাবেই ইসলামি বই ভাবা উচিৎ না। “বিষাদ সিন্ধু”কে একটি স্বার্থক উপন্যাস নেয়াই শ্রেয়। অনেক আলেম ওলামাগনও তাই মনে করেন। এটি একটি উপন্যাস মাত্র।
অনেকেই আবেগে পরে ভূল করতে পারে। তাই আমি বলবো পূর্নাঙ্গ ইতিহাস জানতে প্রকৃত ইতিহাস সংক্রান্ত বই সংগ্রহ করে পড়ুন।

বই হোক আপনার, আপনি বইয়ের
Profile Image for আবদুল মতিন সোহাগ.
44 reviews5 followers
August 19, 2025
জীবনে কতো বই পড়িয়া কতো কাঁদিয়াছি, তাহার হিশাব রাখি নাই। কিন্তু একখানি বইয়ের কথা আজ আপনাদেরকে না বলিয়া পারতেছি না। ‘বিষাদ সিন্ধু’ পড়িয়া পাষাণের হৃদয় কতোটা কাঁদিয়াছিল, কতোটা বুক চাপড়াইয়াছি, তাহাই আজ দুইটি মাত্র ঘটনার মাধ্যমে বর্ণনা করিতেছি।


☞ বিষের যন্ত্রণায় ইমাম হাসান কাঁদিতেছেন। তাহার অন্যান্য বিবিরাও পায়ের কাছে বসিয়া কাঁদিতেছে। সাথে আছে বিষদাতা স্ত্রী, জায়েদাও! বিষের যন্ত্রণায় হাসানের মুখ সবুজবর্ণ ধারণ করিয়াছে। এমন দুঃখ প্রাণে সইবার মতো নয়।


ভাই ইমাম হোসেন আপন তরবারি কোষমুক্ত করিয়া ঘোষণা করিলেন, সেই পাপাত্মা বিজন বনে, পর্বতগুহায়, অতলজলে, সপ্ততল মৃত্তিকামধ্যে— যেখানেই হোক, হোসেনের হাত হইতে তাঁহার নিস্তার নাই। হয় আমার প্রাণ তাহাকে দিব, নয় তাঁহার প্রাণ আমি লইব!


কিন্তু ইমাম হাসান বলিলেন, ভাই! তুমি কী জন্য বিষদাতার নাম জিজ্ঞাসা করিতেছ? তুমি কি তাহার প্রতিশোধ লইবে? আমি আমার বিষদাতাকে চিনিয়াছি। আমি তাহাকে ক্ষমা করিয়াছি। তুমিও তাহাকে ক্ষমা করিবে— এমন কী যদি কখনও তাঁহার পরিচয় জানিতে পাও।


তারপর গভীর দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া ইমাম হাসান বলিলেন, দুঃখের বিষয়, সে আমাকে চিনিতে পারিল না। 


কিয়ত্‍ক্ষণ নিস্তব্ধ থাকিয়া হাসান; ভাই হোসেনকে বলিল, সে জায়েদার সাথে একাকী নির্জনে একটু কথা বলিতে চায়। জায়েদাকে কহিলেন, তোমাকে বড়-ই বিশ্বাস করিতাম, ভালোবাসিতাম। তাহার উপযুক্ত কার্যই তুমি করিয়াছ। যাইহোক, তোমাকে ক্ষমা করিলাম। যে পর্যন্ত তোমাকে ইশ্বরের কাছ হইতে মুক্ত করাইতে না পারিব, সে পর্যন্ত আমি স্বর্গের সোপানে পা রাখিব না! 


তারপর প্রাণপ্রিয় অনুজ হোসেনকে আলিঙ্গন করিয়া দয়াময় ইমাম হাসান প্রাণত্যাগ করিলেন। ঘরের সকলে হাসানের পদলুন্ঠিত হইয়া মাথা ভাঙিয়া কাঁদিতে লাগিলো। জায়েদা কাঁদিয়াছিল কি-না তাহা কেহ লক্ষ্য করে নাই !


☞☞ কারবালার সবকিছু শেষ হইয়া গিয়াছে। দয়াময় ইমাম হোসেন মাটিতে পড়িয়া আছে। পাষাণ সীমার খঞ্জর হাতে প্রিয় হোসেনের বুকের ওপর বসিয়া আছে মাথা কাটিয়া লইবার জন্য! 😭


সীমারের আখিরাত-পরকালের ভয় নাই। পাপ-পুণ্যের ভয় নাই। সে এজিদের দাসানুদাস!


বুকের ওপর বসিয়া থাকার দরুণ প্রিয় ইমাম হোসেনের শ্বাঃসকষ্ট হইতেছিল। এমনিতেই প্রাণ পাখি ছটফট করিতেছে। সীমারের দেয়া কষ্টটা আর সহ্য হইতেছিল না। উপায়ন্তর না দেখিয়া হোসেন কহিল, ভাই সীমার, তুমি কেন আমাকে কষ্ট দিতেছ? আমার বুকের ওপর থেকে তুমি নামিয়া যাও। বিষাক্ত তীরের আঘাতে একটু পরেই আমি মরিব। তখন তুমি আমার মাথা কাটিয়া লইও।


কিন্তু পাষাণ সীমার হোসেনের কথা না শুনিয়া তত্‍ক্ষণাত হোসেনেয় গলার সম্মুখে সজোরে খঞ্জর চালাইয়া দিল কিন্তু গলা কাটিল না। বারবার চালাইল। তবুও গলা কাটিল না। হোসেনের কষ্ট আরো বাড়িয়া গেল। 😭


অবশেষে হোসেন সীমারকে বলিল যে, মাতা জীবিতাবস্থায় আমাকে আদর করিয়া গলদেশে চুম্বণ করিতেন। ঐ পবিত্র ওষ্ঠের কারণেই গলা কাটিতেছে না। তুমি বরং মাথার পিছন হইতে কাটিতে থাক, সফল হইবে। অন্যথায় আমাকে কষ্ট দিয়া তোমার কী লাভ?


এ কথা শুনিয়া সীমার কহিল, তোমার কথা শুনিলে আমারই বা কী লাভ হইবে?


হোসেন বলিল, অনেক লাভ হইবে। তুমি অনুগ্রহ করিয়া মাথার পিছন হইতে আমার মস্তক কাটিয়া লও। আমি ধর্মত প্রতিজ্ঞা করিতেছি, পরকালে তোমাকে আমি অবশ্যই মুক্ত করাইব। তোমাকে না লইয়া আমি কখনও স্বর্গে পা রাখিব না। ইহা অপেক্ষা তুমি আর কী চাও ভাই?


সীমার যখন তীরবিদ্ধ স্থানে খঞ্জর স্পর্শ করিল, অমনি হোসেনের শির দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া গেল! আকাশ-পাতাল, অন্তরীক্ষ, অরণ্য, সাগর, পর্বত, বায়ু, ভেদ করিয়া চতুর্দিক হইতে রব হইতে লাগিল—

হায় হোসেন! হায় হোসেন!! হায় হোসেন!!! 😭😭


পাঠক-বন্ধুগণ, যখন আমি এই লেখা লিখিতেছি, তখনও আমার চক্ষু হইতে অশ্রু ঝরিতেছে। "বিষাদ সিন্ধু"র ভিতর কতোটা বিষাদ মাখা তাহা না পড়িলে কেহ বুঝিতে পারিবেন না। যদিও ইহার ঐতিহাসিকতা লইয়া বিতর্ক রহিয়াছে।


লেখক ইতিহাসের দাস নয়, কাব্যের দাস! এই কাহিনি পড়িয়া বুক চাপড়াইলেও বুকের ব্যথা কমিবে না!


এমনি করিয়া রাসুল (স.) দুই নয়নের মনি দুনিয়া হইতে বিদায় হইয়া যায়। আমাদেরকে শি��াইয়া যায় ইসলামের মহান বাণী। চির শক্রকে ক্ষমা করিবার অপূর্ব শপথ। তারপরে একসময় আবু হানিফা (রহ.) এর নেতৃত্বে মদিনা বিজয় লাভ করে। ভাগ্য দোষে হানিফা তখন পাহাড়ের মাঝে আটকা পড়িয়া যায়।

সে আরেক ইতিহাস...


#বিষাদ_সিন্ধু
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,777 reviews357 followers
May 2, 2025
#এক্কেবারে পাতে দেওয়ার যোগ্য নয়, gimmik আর hype-এর ডানায় ভর দিয়ে ভেসে থাকা ওভাররেটেড বই

বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : Overrated মানেই খারাপ না। অনেক সময় বইগুলো cultural বা emotional value-র জন্য বড় হয়ে ওঠে, অথচ সাহিত্যমান হয়তো তেমন উঁচু নয়।

প্রথমেই বলে রাখা দরকার, "বিষাদ-সিন্ধু" এমন এক উপন্যাস, যেটার পাঠান্তে পাঠক নিজেই বিষ খেয়ে পাড়ে নামতে চায়। কারণ বইটা শুরু থেকেই এমন বিষণ্নতার গভীরে নামিয়ে দেয়, যেখানে রশি নেই, লাইট নেই, আর কোনো অনুভূতির স্বাদও নেই।

এ যেন সেই বন্ধ ঘরের নাটক, যেখানে সবাই কাঁদছে, কেউই হাঁটছে না। রুদ্ধশ্বাস? হ্যাঁ। কিন্তু সেটা আগ্রহে নয়, অতিরিক্ত আবেগের হজম না হওয়ার ফলে।

ইমাম হোসেন, ইয়াজিদ, করবালার প্রান্তর—সবই ইতিহাসের জমকালো উপাদান। কিন্তু মীর মশাররফ তাঁদের রক্তমাখা সাহস, রাজনৈতিক চালাকির, বা মানবিক দ্বন্দ্বের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁদের দীর্ঘ সংলাপ, মুখ ঢেকে কান্না, আর অদ্ভুত স্টাইলিশ আবেগপ্রবণতায়।

সেই সব সংলাপ পড়ে মনে হয় যেন করবালায় নয়, কোথাও এক ক্লাসিক period drama-র rehearsal চলছে।

এই উপন্যাসে যত বেশি নাটকীয়তা, তত কম সাহিত্যিক বাস্তবতা। সমস্ত চরিত্র যেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে দার্শনিক বক্তৃতা দিচ্ছে। অথচ পাঠক খোঁজে টানটান কাহিনী, মানবিক দ্বন্দ্ব, চরিত্রের প্রবৃদ্ধি—যা এখানে চরম অনুপস্থিত।

কেন যেন মনে হয় এই লেখাটা লেখা হয়েছিল পাঠকের মনোরঞ্জনের জন্য নয়, বরং কেবলমাত্র বিষাদের ডামাডোল বাজানোর জন্য।

ভাষা এমন এক জমকালো ধাতব কাঠামোতে গাঁথা, যাতে সাধারণ পাঠক জোরে লাগলে রক্ত বেরিয়ে যায়।

হ্যাঁ, উর্দু-আরবি শব্দের ঝলকানি আছে, আছে অলংকারের জাঁকজমক। কিন্তু এত বেশি মাত্রায় ওল্ড-স্কুল ডেকোর লাগানো যে পাঠের স্বাভাবিক ছন্দটাই উধাও। মনে হয় আমরা কোনো পুঁথি পড়ছি – গল্প নয়, শোকের পুরাণ।

বিষাদ-সিন্ধু ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হলেও, লেখক ইতিহাসকে এমনভাবে মডিফাই করেছেন যে, সাহিত্য আর সত্যের মাঝখানে এক অদৃশ্য ব্লার লাইন তৈরি হয়েছে। এবং সেই লাইনের ওপারে চলে গেছেন পাঠক – বিভ্রান্ত, ক্লান্ত, এবং কিছুটা বিরক্তও।

এটা সেই বই, যেটা পড়া হয় ‘পড়তেই হয়’ বলে। শ্রদ্ধা হয়তো হয়, কিন্তু উপভোগ? তার জন্য তো জীবনের কিছুটা রঙ দরকার, যা এই বিষাদ-মহাসমুদ্রে পুরোটাই ধুয়ে গেছে।

বাদ দিন। স্রেফ একটা হালকা summary পড়ে নেবেন উইকিপিডিয়ায়। সময়ের অপচয় করবেন না।
Profile Image for A. B..
572 reviews13 followers
June 11, 2022
I have always wondered about the events of Karbala and their import. One of the early novelists of the Bengal Renaissance, Mir Mosharaff Hossain discusses this important event of history and myth, with a mix of tragedic and legendary elements. The first part describes Hasan's slow death due to poisoning, as well as Hussein's agonizing end on the dusty plain of Karbala. A certain fatalism pervades throughout, as the characters are often seen to meet their fate on the road they take to avoid it, and the original prophecies come true at the end. The second and third parts describe the rescue of Hussein's family from Yazid's depredations, and Yazid's eventual demise (summarized in my edition). It is a sad tale on a truly epic scale. The author suggests the role of Zainab, a Helen of Troy, as being as fundamental to the brewing conflict as Yazid's debauchery and political reasons; with the character's transformation from a lovesick sensitive youth to a cruel tyrant.

The characters do however seem to be a bit one-dimensional, the 'good guys' remain good throughout, and are shown to be almost hapless victims. The debauchery of Yazid seems untempered by softer concerns. Nevertheless, a good narrative of the important events of Karbala which resonates to this day as a story of dogged determination in the face of tyranny and oppression. The narrative pacing of the translation was very good. Hasan's kindness, ethical nature and youthful naivete, slowly replaced by his internal agony at betrayal, and yet, forgiveness, was very well developed.
Profile Image for Fahim Habib.
38 reviews7 followers
June 30, 2025
কোথাও একবার পড়েছিলাম, মাইকেল মধুসূদন দত্ত যখন বাল্যকালে যশোরে ছিলেন তখন মুসলমানদের আশুরার দিনটি পালন করা তার কাছে ইন্টারেস্টিং ঠেকত। আর তাই সাহিত্য জীবনে কোনো এক পর্যায়ে সে আশুরা (কারবালার প্রান্তরের ইতিহাস) নিয়ে কোনো মানসম্মত সাহিত্য না থাকায় সে কিছুটা ব্যথিত হয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরেই মীর মশাররফ হোসেন রচনা করলেন এবং বাংলা সাহিত্য তার সমৃদ্ধে পেলো "বিষাদ সিন্ধু"।

বাস্তবতার সাথে কাল্পনিক ঢঙে বইটি লেখা নিয়ে যে বিতর্ক সেটাকে যদি কেউ পাশ কাটিয়ে ফেলে তবে এই বইয়ের শব্দশৈলী আর অলংকৃত রূপ মনোমুগ্ধকরই ঠেকবে।

"সকল কার্যে ও সকল কথাতেই ' যদি ' নামে একটি শব্দ আছে। জগতে আমি যদি কিছু ভয় করি, তবে ঐ ' যদি ' শব্দেই সময়ে সময়ে আমার প্রাণ কাঁপিয়া উঠে।"
Profile Image for Aurangzeb Alam.
68 reviews1 follower
August 8, 2022
Like many Muslims, i was unaware of the events that triggered the battle of Karbala…till i read this book which was written in 19th century…it is about the treachery by people of Kufa, crime by own relatives, bravery & humbleness by Imam Hassan (RA) and Imam Hussein (RA) and lastly about the brutality by Yazid..it will definitely make you weep
Some points to note is that the translator did not use words like RA or PBUH which is quite understandable as she was a non-muslim. Furthermore, it would have been great if references of their source were added
Profile Image for Sheikh Salman.
16 reviews
October 15, 2023
I know we shouldn't to take this as a history, still it gives me thrills thinking how then Muslims used to fight as a whole instead of seeking selfishness like present day leaders. It's full of horror, blood, deaths yet it's powerful...makes you question yourself, are you really raising your voice against the torturers of your Muslim brothers?

It's mix of faith,love(of god),greed, lust, and lots of blood.

The language might seem overwhelming/bold at the start due the period it was published, it eventually becomes okay and feels like it was required, for the book is very bold.
Profile Image for Tawheeda Rufah Nilima.
294 reviews58 followers
May 26, 2021
যখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ি, তখন কলেজের লাইব্রেরি থেকে বইটা নিয়ে পড়েছিলাম। বইটা পড়ার পর কেমন যে লেগেছিল সেটা মনে হলে এখনো ঠিক সেইরকম ই লাগে। চোখ ছলছল করে ওঠে। বইটা দ্বিতীয়বার কখনো পড়া হবে কিনা জানিনা। যে কষ্ট প্রথমবার পড়ে পেয়েছিলাম, আরেকবার পড়ে সেই একই কষ্ট পাওয়ার সাহস এখনো হয়ে ওঠেনি। যদি কখনো হয় তাহলে পড়বো। তবে হ্যা, "বিষাদসিন্ধু" নামের এই বইটা কিনে সংগ্রহে রাখা চাই। আর একটা কথা, এই বইকে ৫ তারা দিয়ে রেট করলেও কম হয় আসলে।
Profile Image for Tarek Mahmud.
23 reviews2 followers
December 30, 2022
নবীজি(সঃ) এর দৌহিত্র হাসান ও হোসেন-কে নিয়া বিখ্যাত এই মহাকাব্যিক উপন্যাস। এককালে এই গল্প পড়ে বাঙালি মুসলমানেরা শিহরিত হইতো এবং মনের অন্তরালে হাজার বছর আগের দূরদেশের ধর্মকে গেথে রাখতো। মীর মোশারফ হোসেনের এই মহাকাব্যতে অনেক অতিরঞ্জিত বাণী বা কথা রয়েছে যা ইসলাম ধর্মের অনেক বাণীর সাথে অমিল। তবে লেখক কোনো ইতিহাস রচনা করেননি নিঃসন্দেহে। তিনি তার নিজ সাহিত্যসত্তা দিয়া কারবালা প্রান্তরের হৃদয় কাপানো বর্ননা নিজ মননে গড়ে তুলেছেন।
Displaying 1 - 30 of 58 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.