গল্পগুলোর ভাষা সরল, ভঙ্গিটা নির্লিপ্ত। আলভীর নিজস্ব ঢংয়ে লেখা নিখাদ প্রেমের আখ্যান আছে। আছে দ্রোহের গল্পও, তবে চিৎকার নেই। পরাবাস্তব আঙ্গিকে লেখা কিছু গল্পকে সায়েন্স ফিকশন মনে হতে পারে। এর মধ্যে সায়েন্স কম, ফিকশন বেশি। গল্পগুলোতে বাস্তব আর কল্পনা মিলেছে একই রেখায়। ধরুন, পাশাপাশি দুটো দেশ। রাতে তাদের সীমানা বদলে গেল। এক দেশ দখল করে নিল আরেক দেশ। এভাবে পরাবাস্তবতা এসে গিলে খেয়েছে বাস্তবকে। এই পরাবাস্তব সেটিং হয়তো অপরিচিত, তবে অনুভূতিগুলো চেনা, হৃদয়ের নিঃশ্বাসের দূরত্বে দাঁড়িয়ে খুঁজছে আপনাকে।
২.৫/৫ বইয়ের প্রথম গল্প "আফরিন" ভালো লাগেনি। আলভী আহমেদ এটা মুরাকামির "সাউথ অফ দ্য বর্ডার, ওয়েস্ট অফ দ্য সান" উপন্যাসের একটা চরিত্র শিমামোতোকে ট্রিবিউট দিয়ে লিখেছেন। কিন্তু শিমামোতোর তো কারণ আছে অদ্ভুত আচরণ করার ও হারিয়ে যাওয়ার, আফরিনের কি কোনো কারণ আছে? গল্পে তো অন্তত নেই। বরং মনে হচ্ছে আফরিন শিমামোতোকে নিয়ে এতোই আসক্ত যে তার মতো আচরণ করতে চাচ্ছে অকারণে। বইয়ের শেষ গল্প "লোনার" যা "আফরিন" এর দ্বিতীয় পর্ব তা আমার সন্দেহকে প্রমাণ করে। এখানে কিন্তু সে একদম সাধারণ এক নারী যে প্রেম ও বিয়ের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তাহলে প্রথম গল্পে তার আচরণের ব্যাখ্যা কী? "লোনার" গল্প হিসেবে গোছালো হলেও শেষের টুইস্ট কাহিনির গভীরতা কমিয়ে দিয়েছে বলে মনে হোলো।অন্যান্য গল্পের মধ্যে "ফেরা" ও "প্রফেসরস কলোনি " ভালো লেগেছে।
আলভী ভাইয়ের বই পড়তে আসলে দু ধরনের আনন্দ পাই। এক হচ্ছে তার সহজ-সরল-সাবলীল গদ্যের জন্য। আরেক হচ্ছে সম সাময়িক কাহিনীর জন্য। তার লেখনীতে যে সময়টা উঠে আসে সেই একই সময়েই আমি এগজিস্ট করি। ধানমণ্ডি শংকরের যে রাস্তা দিয়ে তার গল্পের চরিত্র হেঁটে যায় সেখান দিয়েই হয়তো গত পরশু আমিও হেঁটে এসেছি। বেঙ্গল বুকসের যে তাক থেকে সে বই নেয় গত সপ্তাহে হয়তো আমিও একই তাক থেকেই বই নিয়ে পড়েছি। আফরিন বইতে আছে ৭টি গল্প। সবগুলোকেই একটু করে ছুঁয়ে আসা যাক।
আফরিন : খুব প্রিয় কিছু হারিয়েছেন কখনো?... তাহলে এই গল্পটা আপনার জন্য। আর কিছু না বলি।
ফেরা : জীবনের আনন্দ-বেদনার যে ভাগ থাকে তাতে অন্যের ভাগে সবটুকু বেদনা দিয়ে আনন্দটুকু শুধু নিজের করে নেওয়া একজন মানুষের গল্প এটা। কিন্তু প্রকৃতির হিসাব একটু অন্য ধারায় চলে। এই দুজনকে মিলতেই হবে কোন না কোন টাইম ডাইমেনশনে। একতরফা আনন্দ বা বেদনা প্রকৃতি কাউকেই নিতে দেবে না। ভাগাভাগি করতেই হবে।
তিওমান : বইয়ের এই গল্পটি আমাদের টাইম ফ্রেমের একদম বাইরের, ভবিষ্যতের গল্প এটা। চারপাশ অমানবিক হয়ে উঠলে কেউই আর মানবিক থাকতে পারে না। বেঁচে থাকার তাগিদে মানবিকতা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এটা পড়ার সময়ে মোহাম্মদ জাফর ইকবালের স্বর্ণযুগের সাই ফাইয়ের কথা মনে পরেছে।
প্রফেসরস কলোনি : চক্র ঘুরতেই থাকে ...ঘুরতেই থাকে। যে চক্র একবার ঘুরেছে তমাল-টুম্বাকে ঘিরে সেই একই চক্র বহু বছর পর আবার ঘুরছে তমা-সুমনকে ঘিরে। চক্র সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত হয়তো ঘুরতেই থাকবে অথবা কে জানে এই অর্ধসমাপ্ত চক্রই হয়তো কারো কারো নিয়তি।
১২ মার্চ, ২০১৮ : জীবনের ছোট্ট একটা ভুলের জন্য হয়তো বাকি জীবন কাটবে অনুতাপে পুড়ে পুড়ে। কেমন হয় যদি একটা সুয়োগ পান সেই দহনে পানি ঢালার। আমরা হয়তো এমন সুযোগ পাই না কিন্তু এই গল্পের মেজবা তেমনী একটা সুযোগ পেয়েছে।
তেইশ বছর : “ঠিক ২৩ বছর বয়সে এসে মনে প্রশ্ন জাগল, কেন বেঁচে আছি?” গল্পের প্রথম লাইনটা পড়ার পরপরই আপনি হয়ে উঠবেন এই গল্পের মূল চরিত্র। আমি আপনি অহোরহো এই প্রশ্ন নিজেকে করে ফিরি.....।
লোনার : বলা হয়েছে এটা বইয়ের ১ম গল্প আফরিনের ২য় পর্ব। বিষয়টায় বেস মজা লেগেছে। একটা ছোটগল্পের বইয়ের শুরুর গল্প ও শেষ গল্পটিকে একই সূতোয় বাঁধা হয়েছে। ভাসা ভাসা ভাবে থেকেও যে চরিত্রটি এই কাজ করেছে তার নাম আফরিন। যাকে লেখক আলভী আহমেদ তৈরি করেছেন হারুকি মুরাকামির বইয়ের একটা চরিত্র শিমামতোর অবয়বে।
সাধারণত ছোটগল্প কম পড়া হয়। পছন্দ করি চার পাঁচশ পেইজের উপন্যাস। তবে আলভী আহমেদের ছোটগল্পগুলো পড়তে ভালো লাগে। এই বইয়ের সবগুলো গল্পই কম বেশি ভালো লেগেছে। একদম ভালো লাগেনি টাইপ কোনটা পাইনি। একটা বইয়ের সবগুলো গল্প পাঠকের সমান ভালো নাও লাগতে পারে। তবে এটা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি উনার সাবলীল গদ্যরীতির জন্য ভালো না লাগা গল্পটি পড়েও পাঠক আরাম পাবেন। ক্রাউন সাইজের বই সব সময়ই কিউট লাগে। আর এটার প্রচ্ছদটাও ভীষণ সুন্দর করে করেছেন সব্যসাচী মিস্ত্রী। কাগজ ও বাঁধাই দুটোই খুব চমৎকার।
ফোর ইসটু ওয়ান পড়ার কিছুদিনের মধ্যেই শেষ করে ফেললাম সদ্য প্রকাশিত আফরিন। যেদিন প্রকাশ হয়েছে, তার পরদিনই সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলাম(সেদিন বাতিঘরে সুহান রিজওয়ানের সাক্ষী ছিল শিরস্ত্রাণের নতুন সংস্করণ প্রকাশ উপলক্ষে একটা আলোচনা অনুষ্ঠান ছিল।) প্রথমে দর্শনধারীর কথা বলি, বইটা দেখলেই হাতে নিতে ইচ্ছে করবে। ক্রাউন সাইজের ১৭৬ পাতার একটা বই। সব্যসাচী হাজরার দুর্দান্ত প্রচ্ছদটা মনে ধরেছিল স্ক্রিনে দেখেই, বাস্তবেও মুগ্ধতা কমেনি।
ফোর ইসটু ওয়ানে যেমন লেখা পেয়েছিলাম আলভি আহমেদের, ঠিক তেমনটাই বলবৎ ছিল আফরিনেও। একদম সাবলীল, সহজ গদ্য। সহজ শুনে অনেকের হয়তো সাহিত্যমান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন, কিন্তু এই বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এমন সিগনেচার একটা টোন প্রতিষ্ঠা করা খুব একটা সহজ নয়। নির্লিপ্ত কিন্তু একদম আবেগ বিবর্জিত নয়। পাঠকেরা পড়লে বুঝতে পারবেন।
এবারে গল্প ছিল সাতটা। সবগুলোই কমবেশি ভালো লেগেছে, যা বেশ বিরল আমার ক্ষেত্রে। অবশ্য যে কোন বই ফাঁকা স্লেটের মতনই শুরু করি আমি। ক্রিটিক্স নই তো, সাধারণ পাঠক মাত্র। নিজের ভালো লাগাটাই আমার কাছে মুখ্য। একটা গল্প পড়ে একটু কম ভালো লাগলেও পরবর্তী গল্পটা নতুন এক যাত্রার মতনই শুরু করি। বেশ কাজে দেয় ব্যাপারটা।
প্রথমেই আছে নাম গল্প 'আফরিন'। সংকলনের সবচেয়ে বড় গল্প। লেখক বলেই দিয়েছেন হারুকি মুরাকামির 'সাউথ অব দ্য বর্ডার, ওয়েস্ট অব দ্য সান' উপন্যাসটির রহস্যমাখা চরিত্র শিমামোতোর প্রতি ট্রিবিউট এই গল্পটা। পুরোটা পড়ার পর আমার কাছে মনে হয়েছে একদম যথার্থ। আলভি আহমেদ লেখক বলেই কিনা, লেখক চরিত্রগুলো দারুণ লেখেন(পান ইনটেন্ডেড)। বেশ অটোবায়োগ্রাফিকাল একটা স্বাদ পাওয়া যায়। গল্পের মূল চরিত্র তকি জীবনের ঝড় ঝাপ্টায় ভেসে যেতে যেতেও নোঙর ফেলে খামখেয়ালিপূর্ণ আফরিনে। 'অদ্ভুত'- এর প্রতি আমাদের আগ্রহ তো সবসময়ই বেশি। বাকি কিছু বলবো না, পাঠকেরা নিজে স্বাদ আস্বাদন করলেই বুঝতে পারবেন। সংকলনের দ্বিতীয় পছন্দের গল্প এটা।
দ্বিতীয় গল্প ফেরায় ম্যাজিক রিয়ালিজম বা জাদুবাস্তবতার স্বাদ পেয়েছি। মূল চরিত্র মাইন একদিন টেইলরের দোকান থেকে স্ত্রী'র কাপড় আনতে গিয়ে প্রাক্তনের দেখা পায়। এরপর ঘটতে থাকে অদ্ভুত সব ঘটনা। বেশ এলিমেন্ট অফ সারপ্রাইজ আছে গল্পটায়।
তৃতীয় গল্প তিওমান : পাক্কা ডিস্টোপিয়ান এক সাইফাই। আগে আলভি আহমেদের এই ধাঁচের কোন গল্প পড়িনি। বিস্মিত হয়েছিলাম, বলা বাহুল্য। তবে এক সময় সেই বিস্ময় রূপ নিয়েছে মুগ্ধতায়। অল্টারনেট ফিউচার সেটিংয়ের এই গল্পে কারেন্সি হচ্ছে রক্ত এবং স্মৃতি। অসুস্থ মেয়েকে বাঁচাতে এক বাবার আকুতি মূল উপজীব্য বলা যায়। বেশ কয়েকটা লেয়ার আছে বলে মনে হয়েছে এই গল্পে।
চতুর্থ গল্প প্রফেসরস কলোনি, পুরনো ঠিকানায় ফিরে যাওয়ার ট্রোপটা ব্যবহৃত হয়েছে। মোটামুটি। সংকলনের সবচেয়ে দূর্বল গল্প।
পঞ্চম গল্প, ১২ মার্চ ২০১৮। সায়েন্স ফিকশন গল্প। নিজের কাছ থেকেই এক ফোনকল পায় গল্পের মেজব���হ। বাকি গল্পটুকু অনেকবার শুনেছেন বলে মনে হবে, কিন্তু আলভি আহমেদ বর্ণনা করেছেন নিজের মতন করে। এন্ডিংটা অনুমেয়, তবে উপভোগ্য।
ষষ্ঠ গল্���, 'তেইশ বছর'। এই সংকলনের আমার সবচেয়ে পছন্দের গল্প। আসলে গল্প তো নয়, ডায়েরির কয়েকটা ছেড়া পাতা যেন। ঠিক এই অনুভূতিটাই পাঠককে দিতে চেয়েছেন লেখক এবং সফল হয়েছেন। তবে গল্পটার একদম শেষ কয়েকটা লাইন এর দূর্বল দিক। পাঠককে সবকিছু স্পুনফিড না করে, তার কল্পনায় ছেড়ে দেয়া উচিৎ। ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার সাথে মিলে গেছে বলেই হয়তো গল্পটা ভীষণ মনে ধরেছে।
সপ্তম গল্প 'লোনার', লেখকের ভাষ্যমতে আফরিনের গল্পের দ্বিতীয় আখ্যান। তবে স্বতন্ত্র গল্প হলেই ভালো হতো বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। তাছাড়া আফরিন গল্পটা পড়ার পর যে রেশটা রয়ে যায়, তা অনেকখানি ভন্ডুল করে দিয়েছে এই গল্পটা। আলাদা গল্প হিসেবে দারুণ কনসেপ্ট। পরাবাস্তব ঘরানার।
সব মিলিয়ে গল্প সংকলনটা ভালো লেগেছে। এখানে ব্যক্তিগত কিছু অবজার্ভেশনের কথা বলি, আমার ধারণা এক শ্রেণীর মানুষ একটু বেশি রিলেট করতে পারবেন গল্পগুলোর সাথে, যারা দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকায় আছেন এবং বইয়ের দোকানগুলোয় টুকটাক যাতায়ত আছে। পপ কালচারের বেশ কিছু বিষয়ও চলে এসেছে। সর্বোপরি, গল্পগুলোকে আমি আরবান ফিকশন বলবো। এই নামে কোন জনরা আদৌ আছে কি? জানি না।
প্রায় সবাই গল্প বলতে চায়। গল্প বলার আকাঙ্ক্ষা মানুষের মাঝে গভীরভাবে প্রোথিত। লেখকেরা এই ডিজায়ারটা বুঝেন, এড়িয়ে যান না।
আলভী আহমেদের গল্পগ্রন্থ 'ফোর ইসটু ওয়ান' এর মাধ্যমে তাঁর গল্প বলার ভঙ্গিমার সাথে আমার প্রথম পরিচয়।
লেখকের গল্পে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত রিডারকে গ্রিপ করে রাখার গুন আছে। তাছাড়া আলভী বেশ প্রাঞ্জল ভাষায় লিখেন। সহজ করে লিখা মনে হয় সহজ নয়। নিচে যথাসাধ্য স্পয়লারমুক্ত আলোচনা করছি বইয়ের ৭ টি গল্প নিয়ে।
১) আফরিন : হারুকি মুরাকামির 'সাউথ অব দ্য বর্ডার, ওয়েস্ট অব দ্য সান' নভেলের এক চরিত্র শিমামোতোর প্রতি নড দিয়ে আফরিনকে সৃষ্টি করেছেন লেখক।
গল্পে স্কলারশীপ ছুটে যাওয়া, চাকরি হারিয়ে ফেলা, তকি যেন তীব্র ঝড়ে ভেসে বেরানো একটি সুতো কেঁটে যাওয়া ঘুড়ি। ভাসতে ভাসতে তাঁর পরিচয় ঘটে আফরিনের সাথে। অদ্ভুত আচার-আচরণের আফরিনের তীব্র প্রেমে পড়ে যান তকি। তকির লেখনি আফরিনের ভালো লেগে যাওয়ায় খামখেয়ালিপূর্ণ এক শর্ত জুড়ে দেয় সে। গল্পের সাথে সমসাময়িক পপ কালচারপ্রেমী ঢাকাবাসী নিজেকে রিলেট করতে পারবেন। এরকম নড বা ট্রিবিউট দেয়ার কর্ম মুরাকামি নিজেও করেছেন কাফকার বিখ্যাত 'ম্যাটামরফসিস' এর গ্রেগর সামসা কে নিয়ে।
২) ফেরা : স্ত্রীর কাপড় দর্জির কাছ থেকে আনতে গিয়ে মাইন এমন এক পরাবাস্তবতার চক্রে পড়ে যায়, যেটি তাঁর মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা অভাব পূরণের বাড়াবাড়ির দিকে নিতে থাকে। সার্কুলার টাইপ গল্প। লেখক জায়গায় জায়গায় চমকে দিতে চেয়েছেন পাঠককে।
৩) তিওমান : ডিস্টোপিয়ান এক ভবিষ্যতের গল্প। যেখানে ক্ষমতায় আছেন কয়েকজন বা অনেকজন 'লিডার' এবং কারেন্সি হলো ব্লাড ইউনিট এবং স্মৃতি। নিজের অসুস্থ মেয়েকে বাঁচাতে রোজালানের ডেস্পারেশন দেখা যায় এখানে। আমার মনে হয়েছে মূল গল্প লুকিয়ে আছে উক্ত গল্পের সাবটেক্সটে। সিস্টেম কীভাবে নিরুপায় মানুষজনকে নিজ দানবে পরিণত করতে পারে সেটা-ই মনে হয় মূল গল্প।
৪) প্রফেসরস কলোনি : নিজের আবাসস্থলে বহু বছর পর এক কাজে যাওয়া লাগে টিভির চেনামুখ তমাল মাহবুবের। সেখানে অনেক স্মৃতি এবং নিজের জীবনের স্মরণীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তি অন্যের জীবনে খুঁজে পাওয়ার বিস্ময় অভিজ্ঞতা অর্জনের গল্প এটি।
৫) ১২ মার্চ ২০১৮ : নিজের ফোনকল নিজে পেলে কী করবেন আপনি? যখন দুজনের সময়রেখা একটু এদিক-ওদিকের। সায়েন্স ফিকশনেল গল্প। তবে আলভী যেমন বলেছেন সায়েন্স কম, ফিকশন বেশি, ওরকমই কিছু। এ ধরণের গল্প অবশ্য আগে পড়া হয়েছে অনেকবার। প্রায় সব গল্পই তো অনেকবার বলা। আলভী নিজ গল্পকথনে বলতে চেয়েছেন।
৬) তেইশ বছর : তেইশ বছর বয়সে চিরবিদায় নেয়ার আগে একজন শেষ কিছু ইচ্ছার তালিকা করছেন। বেশ ইন্ট্যারেস্টিং এক লিস্ট।
৭) লোনার : এই গল্প মূলত 'আফরিন' এর দ্বিতীয় পার্ট। এটি অবশ্য আর মুরাকামির চরিত্রের প্রতি ট্রিবিউট থেকে সরে এসে পরাবাস্তবতার ধারায় বলা।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন গল্পগ্রন্থে সব গল্প ভালো লাগবে এরকম হওয়াটা সম্ভব নয়। উল্লেখিত ১) ভালো লেগেছে বেশ। ঢাকার মিডল ক্লাসের সাথে খানিকটা প্রাসঙ্গিকতা আছে স্টোরিতে। ২) তেমন একটা ভালো লাগে নি। বেশি টুইস্ট নির্ভরতা আছে এ কারণে। ৩) বেশ সিম্পল আখ্যান তবে সাবটেক্সটের কারণে ভালো লেগেছে। ৪) এটি খুব সম্ভবত আমার সবচেয়ে কম ভালো লাগা গল্প। জমে নি। ৫) সায়েন্স ফিকশনে ফিকশনের উপাদান বেশি তবে কী ঘটতে যাচ্ছিলো সেটি পাঠকেরা ধরতে পারবেন আগেই। লেখকও এটাই চেয়েছিলেন। মোটামুটি ভালোই লেগেছে। ৬) পুরো গল্প আসলে একটি ডায়রীর অংশ। তবে লেখক যেরকম ডিপ্রেশন সৃষ্টি করতে চেয়েছেন সেটি কম পড়ে গেছে খানিকটা। ৭) আফরিনের দ্বিতীয় অংশ অন্য ধারায় চলে গেছে। মোটামুটি লেগেছে।
আলভী আহমেদের মূল শক্তির জায়গা তাঁর স্টোরিটেলিং। এই স্টোরিটেলিং এর জোরেই সব গল্প তড়তড়িয়ে পড়া হয়ে যাবে পাঠকের। লেখকের নিরীক্ষাধর্মী কাজ এটি মনে হয়। যেকোন লেখক এরকম এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করতে গেলে অ্যাপ্রিসিয়েট করতে হয়। এই বইয়ে পাঠককে চমকে দেয়ার প্রচেষ্টা বেশি ছিলো। অবশ্য নির্মেদ, ঝরঝরে, হাত খুলা লেখনির জন্য অনেকের আলভীর লেখা 'আফরিন' ভালো লাগতে পারে।
বই রিভিউ
নাম : আফরিন লেখক : আলভী আহমেদ প্রকাশক : বাতিঘর প্রথম প্রকাশ : অক্টোবর ২০২৩ প্রচ্ছদ : সব্যসাচী মিস্ত্রী জনরা : গল্প, সায়েন্স ফিকশন, পরাবাস্তবতা রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ
সহজ এবং সাবলীল গদ্যের জন্য পড়ে খুব শান্তি পেয়েছি। সমকালীন ঢাকাকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এইটা আমার লেখকের পড়া প্রথম বই। এক্সপেক্টেশন অনেক বেশি ছিল বলে হয়ত কিছুটা হতাশ হয়েছি।
গল্প ভাবনাগুলো ভালো, পড়েও ভালো লাগছিল কিন্তু শেষ হবার পর তেমন কোন ইমপ্যাক্ট রাখলো না বেশিরভাগ গল্প এ। কিছু গল্পের ট্যুইস্ট এবং শেষটা প্রেডিক্টেবল ছিল।
লেখকের লেখার ধরন আমার ভালো লাগে। আগে ফোর ইসটু ওয়ান পড়ে চমকৃত হয়েছিলাম। সেই প্রত্যাশা থেকেই এবার সদ্য প্রকাশিত আফরিন হাতে তুলে নেয়া। কিন্তু কেন যেন মন ভরল না। কোথায় যেন খামতি থেকে গেল। গল্পগুলো হাহাকার জাগাতে জাগাতেও কেন যেন ব্যর্থ হল। মানুষ আসলে বিরহকামী। আমিও হয়তো লেখকের এই গল্পগুলোতে বিরহ, বিচ্ছেদ, নিঃসঙ্গতা আরেকটু বেশি চেয়েছিলাম। য��ইহোক, আফরিন, ফেরা আর প্রফেসরস কলোনি গল্প তিনটা ভালো লেগেছে। সাইফাইয়ের প্রচেষ্টার জন্য সাধুবাদ। লেখকের পরের কাজের অপেক্ষায় থাকলাম।
গল্পপাঠ শেষে পাঠ্যনুভূতি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে ভুগলে/চিপায় পড়লে নিজেকে ৩/৪ ���িন সময় বেঁধে দেই৷ এই টাইমফ্রেমের ভেতর গল্পগুলোর যদি কেবল নাম-ও ইয়াদ থাকে [ ক্ষেত্রবিশেষ গল্পের প্রতি ঝোঁক ] , ধরে নেই ইম্প্যাক্ট ফেলসে। লেকিন, 'আফরিন' শেষ করার দুই দিনেই সবকয়টার নাম ভুলে গেলাম৷ তাই, বর্তমান-আধুনিক গল্পযুগে — বইয়ের অন্যতম গুণমান নির্দেশক; 'সরল গদ্য' গুণে দুই তারা।
বইটা সব মিলিয়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। লেখকের অনেক প্রশংসা শুনেছি, এই বইটা দিয়ে উনার লেখা কোন বই প্রথম পড়লাম। আমার কাছে কঠিন কাজগুলোর একটা মনে হয় ছোটগল্প লেখা। বইটা ৭টা ছোট গল্পের সংকলন। লেখকের লেখা দুর্দান্ত। কিভাবে লেখার মাধ্যমে পাঠককে ধরে রাখতে হয় উনি তা ভালোভাবেই জানেন৷ বইয়ে ছোট ছোট ডিটেইল এত সুন্দর করে ব্যাবহার করা হয়েছে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। সাতটা গল্পের মধ্যে আমার কাছে সবথেকে ভালো লেগেছে 'ফেরা'। যে গল্পের জন্য বইয়ের নামকরণ সেই 'আফরিন' গল্পটা ভালো লাগলেও আফরিনের পরবর্তী গল্প 'লোনার' কেন যেন ভালো লাগেনি। এছাড়া 'তিওমান', 'প্রফেসরস কলোনি' ভালো ছিলো। লেখকের পরবর্তী বই পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। বইয়ের সাইজটা অনেক কিউট৷ এই সাইজের বইগুলো বাসায় কিংবা যাত্রাপথে পড়ার জন্য পারফেক্ট। বাতিঘর প্রকাশনীর বইয়ের প্রডাকশন নিয়ে আলাদাভাবে বলার কিছু নেই। সবমিলিয়ে বইটা ভালো।
শুক্রবারের ছুটির দিনের দুপুরে এক বসায় গল্পগুলো পড়ে ফেললাম।বইটার কেনার আগে ভেবেছিলাম যে ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে গল্পগুলো পড়বো সময় নিয়ে।কিন্তু শুরু করার পরে শেষ করেই থামলাম।ভালো লেগেছে গল্পগুলো।
আফরিন দিয়ে শুরু করে কোথায় গিয়ে শেষ হলো ঠাওর করতে পারিনি। একটামাত্রই গল্প বেশ লেগেছে, 'প্রফেসরস কলোনি'। এইটা অদ্ভুত সুন্দর লেগেছে। ৩ স্টার দেওয়ার কারণ এই গল্প। লেখকের অন্যান্য লেখা পড়ার আগ্রহ রাখি। দিন যত যায় তত ইম্প্রুভ হয়। এটাই আশা রাখি।
লেখক অতীত - ভবিষ্যৎ যে কোন সময় নিয়েই লিখতে পারেন। তবে সবসময় লেখক তাঁর লেখাতে সেই সময়টাকেই বেঁধে রাখেন যে সময়টার মধ্যে দিয়ে তিনি যান। একটা যুগ এবং সেই যুগের সমাজ সামাজিকতা বইয়ের দুই মলাটের আটকে রাখেন। তেমন একটা সময়কে "আফরিন" এ আটকে রেখেছেন লেখক আলভী আহমেদ।
সময়টা এই আমাদের কাল। যেটা আপনি আমি পার করছি, যা এখনও অতীত হয়নি। এই সময়ের কিছু পরিচিত সুন্দর স্থান, চেনাজানা চরিত্র (হয়তো সে চরিত্র আপনার, আমার) এবং আমাদের মানসিক জটিলতা, অস্থির এক ডিপ্রেশনে র অতলে চালিয়ে যাওয়া মানুষ। কিছু কল্প চরিত্র তবে এতো মুগ্ধতায় ভরা যা আটকে রাখবে বইটার মধ্যে।
এটা একটা ছোট গল্প সংকলন। নাম গল্প সহ মোট ৭ টি গল্প আছে। প্রতিটি গল্প তার নিজের জায়গাতে স্বতন্ত্র।
আমার অসাধারণ একটা সময় কেটেছে বইটার সাথে। এটা নিয়ে লেখকর দুইটা গল্প গ্রন্থ পড়লাম। লেখকের লেখার নিজস্ব একটা ধরন আছে যা বেশ স্বতন্ত্র লেগেছে।
আলভী আহমেদের লেখা আফরিন একটি অনুভবনির্ভর গল্পসংকলন, যা পাঠককে প্রেম, বিচ্ছেদ, আত্মঅনুসন্ধান ও পরাবাস্তব অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যাত্রা করায়। বইটিতে রয়েছে সাতটি ছোটগল্প, প্রত্যেকটিই একেকটি সময় ও মনস্তাত্ত্বিক আবহকে তুলে ধরে।
লেখকের লেখার ধরন অসাধারণ। কীভাবে ভাষা দিয়ে পাঠককে আটকে রাখা যায়, তা তিনি জানেন ভালোভাবেই। গল্পগুলোতে ছোট ছোট ডিটেইলের ব্যবহার এত নিখুঁতভাবে করা হয়েছে যে তা সত্যিই মুগ্ধ করে। সাতটি গল্পের মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে ‘ফেরা’।
যে গল্পটি থেকে বইটির নাম এসেছে, সেই ‘আফরিন’ ভালো লাগলেও এর পরের গল্প তেমন ছুঁতে পারেনি। অন্যদিকে, ‘তিওমান’ এবং ‘প্রফেসরস কলোনি’ বেশ উপভোগ্য ছিল।
ভাষা সহজ, সাবলীল, কিন্তু গল্পগুলো গভীর ভাবনার খোরাক জোগায়। কিছু কিছু গল্পে পরাবাস্তবতা আর বাস্তবতার মিশেল পাঠককে গল্পের গভীরে টেনে নিয়ে যায়। লেখকের দৃষ্টিভঙ্গিতে জীবনের ক্ষুদ্র খুঁটিনাটি বিষয়ও আলাদা মাত্রা পায়।
অনেকদিন পরে ছোট গল্প নিয়ে বসা। লেখকের বই পড়েছি কিনা মনে পড়ছে না, তবে ওনার লেখা পড়েছি টুকটাক,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে।প্রথম গল্পটা বাদ দিয়ে অন্যগুলো তেমন নজর কেড়েছে তেমন না। অবশ্য প্রথমটাও যে আহামরি তা না।
"আফরিন" ছোট গল্প সংকলনের একটি বই। বইয়ের গল্পগুলোর দৈর্ঘ্য খুব বেশি বড় না বলে বইটা এক বসায় পড়ে ফেলার মতো। আলভী আহমেদের গল্পের প্লট আমাদের চারপাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। গল্পগুলো পড়তে পড়তে আপনি ভাবতেই পারেন আরে কালকে তো ধানমন্ডির এই রাস্তা দিয়ে আমিও এসেছি। কিংবা বেঙ্গল বুকস এ আমি তো ঐ তাক থেকেই বই নিয়ে পড়লাম আর এসব ভাবতে ভাবতেই আপনার মনে হতে পারে গল্পের চরিত্ররা কী তবে আমার আশেপাশেই ছিল?
ছোট্ট সাইজের এই বইটিতে ৭টি গল্প আছে। লেখক সহজ ও সাবলীলভাবে গল্পগুলো বলেছেন। আলভী আহমেদের লেখায় সুখ,আনন্দ যতটা সুন্দরভাবে ধরা দেয় তারচেয়েও দুঃখ, বিষাদদের অনুভূতিগুলো যেন অসাধারণভাবে ফুটে উঠে গল্পের মধ্যে। কিছু গল্পে সাইন্স ফিকশনের ছোঁয়া থাকলেও বাস্তবতা ও অবাস্তবতার মিশেলে গল্পগুলো আমার খারাপ লাগেনি।
'ফেরা', 'প্রফেসরস কলোনি', 'তেইশ বছর' এই তিনটা গল্প আমার অন্য গল্পগুলো থেকে বেশি ভালো লেগেছে। 'আফরিন' গল্পটা ভালো লাগলেও গল্পের ২য় পর্ব 'লোনার' গল্পটি আমার খুব একটা ভালো লাগেনি। এই গল্পের এন্ডিং এ হয়তো অন্যরকম কিছু আশা করছিলাম। বইয়ের দুইটা গল্পের কিছু অংশ পড়তে যেয়ে আমার নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার এতো মিল পেয়েছি যে গল্পগুলো শেষ করে কিছুক্ষণ ভাবছিলাম যে এত বেশি রিলেটেবল কীভাবে হয়! এখানেই হয়তো লেখকের সার্থকতা। তিনি নিজের মতো করে আমাদের গল্পগুলোকেই বইয়ের পাতায় রূপ দিয়েছেন তাই হয়তো গল্পগুলো শেষ হলে এক মন কেমন করা ব্যাপার থেকে যায়। এই বইয়ের প্রচ্ছদটা খুবই সুন্দর এবং কালার কম্বিনেশনও লেখকের অন্য বইগুলোর প্রচ্ছদের চেয়ে ভালো লেগেছে আমার। হুটহাট এরকম কিউট ক্রাউন সাইজের বই পড়লে বিকালটা ভালো যায়, সে ভেবেই বইটা হাতে নেয়া আরকি!
দুদিন নিয়ে আফরিন পড়ে শেষ করলাম। আসলে এই বইকে কয় তাঁরা দিয়ে জাস্টিস করা যায় সেটা আমি বুঝতে পারছি না। গল্পগুলো ভালো লেগেছে আবার ভালো লাগেওনি। আফরিন গল্পটার আগামাথা কিছুই বুঝলাম না। তারপর ফেরা গল্পটা।শেষটা মনে হইষে ঘোড়ার ডিম। তিওমান গল্পটারে একটু মানুষ মানুষ লাগছে।পড়ে মজা পাইসি।সাইন্স ফিকশন খুব কম পড়েছি।প্রফেসরস কলোনি গল্পটাও ভালোভাবে এগোচ্ছিল। ভেবে ছিলাম এটাকেই সবার ওপরে রাখবো তবে লেখকের মধ্যে মুরাকামির ছাপ স্পষ্ট। আমার এসব বিরক্ত লাগে। অন্যভাবেও লেখা যায়।তবে এই গল্পটায় আমার মিশ্র অনুভূতি আছে।৬০% ভালো লাগেনি, ৪০% লেগেছে বলা যায়।১২ মার্চ ২০১৮ গল্পটা যাচ্ছেতাই।শেষে ট্রাজিক দেয়ার চেষ্টা।ওই সিনটুকু আসার আগেই বুঝে ফেলেছি কি হতে যাচ্ছে।
২৩ বছর গল্পটা নিয়ে আমার চরম অকজেকশন আছে। এই গল্প যেকোনো ডিপ্রেসিং মানুষকে সুইসাইডে উদ্ভুদ্ধ করবে বলে মনে হয়।গল্পের প্রোটাগনিস্ট মেয়ে। সে ডিপ্রেসড তারলাইফ নিয়ে তাই সে সুইসাইড করবে ঠিক করে ২৪ মার্চ। তার আগে ৬ টা টু ডু লিস্ট ডাইরিতে লেখে। টুবি অনেস্ট ৬ নং টা বাদে বাকি সবই ডিপ্রেসিং তবে বাবা মা কে নিয়ে প্রোটাগনিস্ট যেটা ফেস করেছে সেটা যে কারও মানুষের জীবনকে তছনছ করে দিতে যথেষ্ট তাই বলে সুইসাইড সমাধান না। ৬ নং পয়েন্টটা বই উদ্ধার করা নিয়ে।প্রটাগনিস্ট প্রচুর বই পড়তো, কিনতো। এটা তার হবি ছিল। কিন্তু অনেকে ধার নিয়ে আর বই ফেরত দিতো না।সেগুলো উদ্ধার করবে সে ঠিক করে। এটুকুতেই গল্প শেষ।
বইয়ের শেষ গল্প আফরিন গল্পের লাস্ট পার্ট, লোনার। এনাদার ঘোড়ার ডিমের কাহিনি তবে মৃত্যুজগৎ নিয়ে দাড় করানো জগৎ টা একলা বারান্দায় বসে পড়ার ানয় কিছুটা ভয় পেয়েছি।একদিন তো আমাকে মারা যেতে হবে। আমরা সবাই একা থাকতে পছন্দ করি দুনিয়ায় কিন্তু কেউ সেই কাঙ্ক্ষিত স্পেস আমাদের দেয় না তবে সেই ডিজায়ার্ড স্পেসটাই মৃত্যু কিংবা কবর আমাদের দেয়!!! কয়েকবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়েছি ওটুকু পড়ার সময়।
এবছরের প্রথম আলো ঈদ সংখ্যা তে আলভী আহমেদ এর একটা উপন্যাস আছে, "যে পথে পথিক নেই"। পড়া শুরু করেও শেষ করতে পারিনি। তো তার আফরিন পড়তে ইচ্ছা হওয়ার কারণ যে তার লেখা না সেটা আর বলা লাগে না।পড়ার মূল কারণ বইয়ের নাম আর প্রচ্ছদ। ক্রাউন সাইজ এর বইটা আমাকে আকৃষ্ট করেছে মূলত তার বাহ্যিক সৌন্দর্য্য দিয়ে।
আফরিন কোন উপন্যাস না। গল্পগ্রন্থ। যদিও নাম দেখে প্রথমে আমি উপন্যাস ভেবেছিলাম। মোট সাতটা গল্প জায়গা পেয়েছে দুই মলাটের মাঝে।
প্রথম গল্পের নাম "আফরিন"। হয়তো এই গল্পের নাম থেকেই বইয়ের নামকরণ হয়েছে আফরিন। আফরিন নামের একটা বাউন্ডুলে মেয়ের গল্প।
দ্বিতীয় গল্প "ফেরা"। এই গল্পটা পরবাস্তব আঙ্গিকে লেখা। আমি ঠিক মত বুঝতে পারিনি কিভাবে কি হলো আর শেষ টাও আমার বোধগম্য হয়নি।
পরের গল্পটা "তিওমান" একটা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। তিওমান নামের একটা সাম্রাজ্যের অদ্ভুত নিয়ম কানুন , ডিস্টোপিয়ান ধাঁচের। অনেক দিন পর একটা চমৎকার বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পড়লাম।
"প্রফেসরস কলোনি" আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। কৈশোরের স্মৃতি কাতরতা নিয়ে একজন অভিনেতার গল্প।
"১২ মার্চ , ২০১৮" গল্পটা একটু অন্যরকম সুন্দর। সম্পর্কের টানাপোড়েন ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। উপলব্ধির বিষয় আছে অনেক।
"তেইশ বছর" গল্পটায় আত্মহত্যা করতে চাওয়া এক তেইশ বছরের তরুণীর শেষ কিছু ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়েছে।
আর শেষ গল্প "লোনার" একটা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। আফরিন এর দ্বিতীয় পর্ব। গল্পের শেষ টা মজার ছিল।
একেকটা গল্পের ফ্লেভার একেক রকম। এই বিষয় টা আমার ভালো লেগেছে। অনেক গল্প সমগ্রের ক্ষেত্রে দেখা যায় এক ই ধাঁচের গল্প থাকে। এখানে ভিন্ন ভিন্ন ধাঁচের গল্প থাকায় বেশি উপভোগ করেছি। লেখকের গল্প বলার ধরন অসাধারণ। মনে হয় কেউ গল্প শুনাচ্ছে। বইটা শেষ করে ঠিক করেছি " যে পথে পথিক নেই" আরেকবার পড়ার চেষ্টা করবো।
আমি আসলে নন ফিকশান পড়ি । নন ফিকশান বই পড়ে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আমার জন্য একটা রিভিউ লিখা সময়সাপেক্ষ হলেও সহজ। অন্যদিকে যেহেতু সাহিত্য বুঝি না বা এখন পড়া হয় না সেজন্য তার রিভিউ লিখা আমার জন্য প্রায় অসম্ভব । আলভী আহমেদের মৌলিক সবগুলো বই (উপন্যাস, এবং ছোট গল্প) আমার পড়া হয়েছে। উনার লিখায় অবশ্যই একটি টান বা মাদকতা আছে । পড়তে কখনো বিরক্ত লাগে না । আমার কাছে মনে হয় কাফকার ইনফ্লুইয়েন্স আলভী আহমেদের উপরে সিগনিফিক্যান্ট। যাই হোক উনি আমাদের সমাজের নানা রকম চরিত্র এবং ঘটনার সাথে , পরবাস্তবতা মিলিয়ে অদ্ভুত একটা ব্যাপার তৈরি করেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, আফরিনের শেষ গল্প লোনারের কথা। সেখানে মানুষ মরে গেলেও তার ইগো যে গুরুত্তপূর্ন সেইটা সূক্ষ্মভাবে বুঝিয়েছেন । সক্রেটিসও বলেছিলেন যে মানুষের আত্মা কখনো মরে না, মারা যায় শুধু তার দেহ। এরপরে সানিয়াতও তার দুঃখ দুর্দশা , আরেকজনের নামে বই ছাপানোটা আসলে আমাদের সমাজেরই জলজ্যান্ত প্রতিফলন । জীবন যুদ্ধে মানুষের কাছে অন্যায়কে আর অন্যায় মনে হয় না । অন্যান্য গল্পগুলোও খুবই সুখপাঠ্য ।আশা করি ভবিষ্যতে আলভী আহমেদের কাছ থেকে আরো ভালো ভালো লেখা পাঠকের কাছে আসবে । ধন্যবাদ
আফরিন। আমার পড়া লেখক আলভী আহমেদের প্রথম বই। আমি এর আগে লেখকের অনুদিত হারুকি মুরাকামির ‘নরওয়েজিয়ান উড’ এবং ‘সাউথ অব দ্য বর্ডার, ওয়েস্ট অব দ্য সান’ পড়েছি শুধু। আমি তার অনুবাদে মুগ্ধ হয়েছি। এবার তার মৌলিক গল্পেও মুগ্ধ হলাম। সুন্দর সুন্দর কয়েকটি গল্পে সাজানো হয়েছে ‘আফরিন’ বইটি। প্রথম গল্পটি হচ্ছে আফরিন। লেখকের ভাষায় গল্পটি তিনি হারুকি মুরাকামির ‘সাউথ অব দ্য বর্ডার, ওয়েস্ট অব দ্য সান’ বইয়ের শিমামোতো নামের রহস্যময়ীর চরিত্রকে ট্রিবিউট করে লেখেছেন। তার কথা মতো তিনি যথাযথভাবে কাজটা করেছেন। এই বইয়ের অন্যান্য গল্পগুলো থেকে এই গল্পটা আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে। এরপর এই বইয়ে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে ‘তিওমান’ গল্পটি। এইগল্পটি একটু সাইফাই ঘরানার আভাস দিয়েছে। এছাড়া বাকি সবগুলো বইই আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। দুই হাজার চব্বিশ সালে এটা আমার প্রথম পড়া বই!!
নতুন বছরটা তুলনামূলক ভাবে নতুন একজন লেখকের বই দিয়ে শুরু করলাম। ব্যাপারটা নিজের কাছেই ভালো লেগেছে। লেখকের বই এর আগে বেশ কয়েকবার বাতিঘরে দেখেছি। কিন্তু নতুন লেখক, কেমন না কেমন হবে এই ভেবে কেনা হয়ে ওঠেনি। সমসাময়িক বেশ কিছু লেখকের লেখা পড়ে মোটামুটি শিক্ষা হয়ে গিয়েছে। তাই হুটাহাট করে এখন আর এখনকার লেকখদের বই কিনি না। পড়ারই সময় পাই অল্প, আর তাও যদি অপাত্রে দান করি তাহলে তো সমস্যা!আফরিন কিনেছি কিছুদিন আগে রিফাত আপুর রিভিউ দেখে। ছোট খাটো, দেখতে সুন্দর একটা বই। সুন্দর প্রচ্ছদের ব্যাপারে আমার একটু দুর্বলতা আগে থেকেই আছে। তা যাক, বইয়ের কথায় ফিরি! সাতটা ছোট গল্পে সাজানো এই বই। গল্পগুলো একটু অন্যরকম। পড়তে খারাপ লাগেনি। সবচেয়ে ভালো যে জিনিসটা লেগেছে সেটা হলো, প্রথম আর শেষ গল্পের মধ্যে যে যোগসূত্র। যদিও শেষ গল্পটা ঠিক মনে ধরেনি।ওভারঅল, বইটা অ্যাভারেজ লেগেছে। তিন তারার বেশি দেওয়া গেলো না।
যতোটা আশা নিয়ে ধরেছিলাম ততোটা আশাতীত না হলেও, সহজ স্বাভাবিক গল্পের জন্য ভালোই লেগেছে। এক বসাতেই শেষ করতে পারবেন। সাই-ফাই আবার যেন��� সমকালীন। এর মধ্যে "তিওমান" গল্পটি আলভী আহমেদ এর "গোস্ট রাইটার" উপন্যাসে একটা প্লট পেয়েছে। "আফরিন" গল্পটি আরেকটু চমতকার হতে পারতো। অবশ্য আমার মনে হলো, জীবন এমন হুটহাট ই শেষ হয়, চমৎকার এন্ডিং আবার কি!! বাকি সব গল্পই মোটামুটি ছিলো। লেখক মনের মধ্যে পাঠকের নিজের ভাবনার বীজ বুনে দিয়েছে,এখন বাকি কাজ পাঠক নিজ দায়িত্বে করে নিবে।
so i finished reading the book last night. some stories were kind of good but still failed to evoke any emotions out of me for those stories and characters. some stories were experimental, maybe not but that's how i felt. overall, it wasn’t bad but it wasn’t that good either to get a hold of it down the memory lane.
সাতটা গল্প। কী জনরার? বলা কঠিন, আমি বলব আরবান ফোকলোর (শহুরে লোককথা)। তবে অদেশীয় কালচার। লেখক বলেছেন সায়েন্স কম ফিকশন বেশি, তেমনই। যাইহোক লেখকের গল্প বলার ধরনটা সাবলীল, সুন্দর গতিময়তা; সাইফাই, সাইকোলজিকাল একটা টোন ছিল। আমার কাছে লেখকের প্রথম বই হিসেবে ভালো লেগেছে।~4.1/5
What a book to read! Science fiction আমার পছন্দের genre. But science fiction আমি কখনো ছোট গল্প হিসেবে পড়ি নি এর আগে, তাই এই science কম fiction বেশি বইটা আমার খুবই মনে ধরেছে। সব গল্প গুলোই মজার তবে “তিওমান” ও “১২ মার্চ,২০১৮” আমার একটু বেশিই ভালো লেগেছে 🍀
সুন্দর সাবলীল ভাষায় লেখা চমৎকার একটা বই। ছোট ছোট ৭টা গল্পের সংকলন। প্রফেসরস কলোনি গল্পটা সবচেয়ে বেশী ভালো লেগেছে৷ আলভী আহমেদের লেখা আগে কখনো পড়া হয়নি। আজ সকালে বইটা পড়ে শেষ করেই মনে হলো ওঁর সব বই পড়ে ফেলতে হবে অতি দ্রুত। ❤️