নির্ঝঞ্ঝাট গ্রাম শ্যামপুরে হঠাৎই খুন হয়ে গেলেন গাঙ্গুলিমশায়। লোকটার সুদি কারবার ছিল। মামার অনুরোধে তদন্তের ভার এসে পড়ল সুশীলের কাছে। তদন্ত করতে গিয়ে সুশীল হঠাৎই খুঁজে পেল একটা কাঠের পাত— মিসমিদের কবচ। এদিকে সন্দেহভাজনও কয়েকজন। খুনটা কে করল? আর সে খুনের সাথে মিসমিদের কবচের সম্পর্কই বা কিসের? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বইয়ের শেষ পাতা পর্যন্ত।
Bibhutibhushan Bandyopadhyay (Bangla: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়) was an Indian Bangali author and one of the leading writers of modern Bangla literature. His best known work is the autobiographical novel, Pather Panchali: Song of the Road which was later adapted (along with Aparajito, the sequel) into the Apu Trilogy films, directed by Satyajit Ray.
The 1951 Rabindra Puraskar, the most prestigious literary award in the West Bengal state of India, was posthumously awarded to Bibhutibhushan for his novel ইছামতী.
অবাক করা ব্যাপার স্যাপার। এটা ডিটেক্টিভ গল্প !!! মানে বিভূতিভূষণের ও ডিটেক্টিভ গল্প আছে! বইটা না পড়লে তো কোনদিন জানতেও পারতাম না যে আমার এই প্রিয় লেখকটা ডিটেক্টিভ গল্পও লিখে গেছেন।যাইহোক আমার কাছে দারুণ লেগেছে গল্পটা। এক নিমিষেই শেষ করে ফেলছি।
ভারী বিপদে পড়েছে সুশীল। কলকাতার বিখ্যাত প্রাইভেট ডিটেক্টিভ মি.নিবারণ সোমের কাছে গোয়েন্দাগিরির হাতেখড়ি নিচ্ছে সে। ইচ্ছা ভবিষ্যতে গোয়েন্দা হবার। হঠাৎ মামাবাড়ি থেকে এলো জরুরি তার। বেশ ক'দিন আগে আলাপ হওয়া এক ভদ্রলোক, সুশীলের মামাবাবুর বন্ধুস্থানীয় ব্যক্তি, মি.গাঙ্গুলি নিজ বাড়িতে বেশ বিভৎসভাবে খুন হয়েছেন। মামার ইচ্ছা গোয়েন্দাগিরিতে শিক্ষানবিশ ভাগ্নে সে খুনের তদন্ত করুক। ওহ! মামাবাবু কিন্তু সুশীলকে একটা প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে রেখেছে। এই তদন্ত হবে তার পরীক্ষা, কলকাতায় থেকে কেমন গোয়েন্দাগিরি শিখছে হাতে কলমে এখন দেখিয়ে দেওয়ার পালা। যদি ব্যর্থ হয় তবে, মি. সোমের কাছ থেকে ছাড়িয়ে এনে সুশীলকে এনে কোন দর্জির কাছে পাঞ্জাবি তৈরির কাজে লাগিয়ে দেবেন। বোঝ ঠ্যালা!
এদিকে গাঙ্গুলিমহাশয় মোটেও সাদাসিধে টাইপের লোকটি নন। গপ্পোবাজ মানুষ (তার গপ্পোগুলোও হতো সেরকম, সে কতো বড়লোক, কতো টাকা আছে, কতো টাকা খাটছে ইত্যাদি ইত্যাদি) হাড়কিপ্টে ও সেই সঙ্গে জুড়ে বসেছেন সুদের ব্যবসা। বেচারা খুনটাও হয়েছে নৃশংসভাবে। রান্নাঘরে কে বা কারা তাকে মেরে চলে গেছে, ধস্তাধস্তির চিহ্ন ছড়িয়ে আছে চারপাশে। ক'দিন গাঙ্গুলির খোঁজখবর না পেয়ে সন্দেহের বশে দরজা ভেঙ্গে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে তার অর্ধপচা লাশ। শিক্ষানবিশ ডিটেক্টিভ সুশীল আসবার আগেই দাহ হয়ে গেছে লাশের। ঔৎসুক দর্শকের ঠেলায় ক্রাইম সিন বলে আর কিছু নেই, সেটা পরিণত হয়েছে গ্রামের হাটে। গাঙ্গুলির হিসাবের খাতাপত্র পর্যন্ত নেই... খালি নেই নেই আর নেই-এর ভিড়ে সুশীল পড়েছে ভারী বিপদে।
ও হ্যা! আরেকটা কথা বলে যাই, কলকাতার অদূরে এই গ্রামের খুনটার সাথে রহস্যজনকভাবে জড়িয়ে পড়েছে সুদূর আসামাঞ্চলের দুর্ধর্ষ উপজাতি মিসমিদের একটা কবচ।
কেন গাঙ্গুলিমহাশয় খুন হলেন আর শিক্ষানবিশ সুশীলের ভাগ্যেই বা কি ঘটলো? সফলভাবে তদন্ত সম্পাদন করে কলকাতায় ফেরত যেতে পারলো নাকি দর্জির সহকারী হয়ে বাকি জীবন কাটাতে হলো আর কবচটার কাহিনিই বা কি-এ সব প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিখিত ছোট্ট একটা নভেলা 'মিসমিদের কবচ' বইটিতে। হালের নামীদামী থ্রিলার পড়ুয়াদের কাছে তদন্তটা একটু 'ইয়ে ইয়ে' লাগলেও নেহায়েত বিভূতিবাবুর নামের জোড়ে পড়ে ফেলাই যায়। যদিও তার জাদুকরী লেখনীর স্টাইল এখানে কিছুটা অনুপস্থিত, তারপরেও সময়টা আশা করি মন্দ যাবে না।
গোয়েন্দাগল্প হিসেবে বোধহয় এই উপন্যাসের অনেক দূর্বলতা রয়েছে। কিন্তু আমি যে বয়সে পড়েছি, সে বয়সে এইসব দূর্বলতা খুব একটা চোখে পড়ে না। মনে পড়ে, বইটা আমার অসাধারণ লেগেছিল, সেজন্যই পাঁচ তারকা।
বিভূতিভূষণের কিশোরপাঠ্য যাবতীয় লেখার সংকলনের মধ্যেই এটি পড়ার সুযোগ হয়েছিল। অকপটে লিখি, ওই বইয়ের অন্যান্য উপন্যাস— বিশেষত 'চাঁদের পাহাড়'— যেখানে সাহিত্যের সম্পদ, আর ছোটোগল্পের প্রতিটি অবিস্মরণীয়, সেখানে এটিকে একেবারেই দুর্বল লেগেছিল। হয়তো আলাদাভাবে পড়লে ভালো লাগত। অথবা... নাহ্, ওই একই ভৌগোলিক পটভূমিতে হেমেন্দ্রকুমারের 'যকের ধন' এখনও লা-জবাব। নিঃসন্দেহে পড়ার মতো লেখা। কিন্তু বিভূতিভূষণেরই অন্যান্য লেখার তুলনায় কমজোরি।
Not good enough. His other novel (The Mountain of Moon) was one of the greatest adventure novels ever written in the Bangla literature. But, this one was a huge let down. It was all dialogues, lame one way guess driven assumptions, and a bad ending. I mean really bad ending.
Its a wonder I give it a two stars. As a detective story it is not good enough.
লেখক ছোট্ট এই রহস্য উপন্যাসটি লিখেছেন ১৯৪২ সালে। তারমানে বইটা হয়তো বাংলা সাহিত্যের প্রথম দিকের একটা রহস্য উপন্যাস। যাহোক, যা বলা দরকার তা হলো বইটা একদমই জমে নি। প্রকৃতিপ্রেমী লেখক ছোট্ট এই উপন্যাসেও প্রকৃতির সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন এমমনকি গোয়েন্দা চরিত্রটাও প্রকৃতিপ্রেমী হিসেবে গড়ে তুলেছেন কিন্তু রহস্যটা ঠিক জমাতে পারেননি। খুবই সাদামাটা প্লট, গোয়েন্দাগিরিও তেমন মুগ্ধ হওয়ার মতো না ( যদিও বইয়ের চরিত্র গোয়েন্দাগিরি দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছে!), শেষটাও তেমন কনভিন্সিং না। এককথায় বলতে গেলে, খুব নিম্নমানের একটা রহস্য উপন্যাস পড়লাম।
৪ তারকা দেওয়ার মত বই একেবারেই না। তবুও দিলাম। কারন এই গল্প টা পড়েছিলাম বিভূতিভূষন এর 'চারটি কিশোর উপন্যাস' বইটি থেকে। বাকি গল্পগুলো এতটাই বাজে লেগেছিল যে এটা পড়ার পর অমৃত বলে মনে হয়েছিল। মনে হয়েছিল কত জনম পর ভাল কিছু পড়লাম। সেই সাময়িক শান্তি দেওয়ার জন্যই এটা কে ৪ তারকা দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম😊
সাদাসিধে নির্ঝঞ্ঝাট এক গ্রাম, যেখানে কারোর ঘটি পর্যন্ত চুরি হয়নি কখনো— সেখানেই এক মাঝরাতে ঘটে গেল নির্মম এক খুনের ঘটনা। সে খুনের কথা লোকে জানতে পারল সাত দিন পর- যখন গাঙ্গুলিমশাইয়ের লাশটা পচে গলে গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে! তাই সাক্ষ্য প্রমাণের অবস্থা বলাই বাহুল্য! এমন খুনের কূলকিনারা করার দায়িত্ব যে পড়বে আমাদের শিক্ষানবিশ গোয়েন্দা সুশীলের কাঁধে, তা তো সে গাঙ্গুলিবাবুর সাথে খুনের হপ্তাখানেক আগে যখন দেখা হয়েছিল তখন ভাবতেও পারেনি। কিন্তু কী আর করা! মামার কঠিন চ্যালেঞ্জ— প্রমাণ করতে হবে, নিবারণ সোমের কেমন যোগ্য ছাত্র হয়েছে সে। তাই অন্ধকারেই রহস্য সমাধার পথে নামতে হল। কয়েকটি অচেনা হাতের লেখা, শ্যাওড়াগাছের একখানা মোচড়ানো ডাল আর গুরুর কৃপায় উন্মীলিত তৃতীয় নয়ন- মানে সতর্ক দৃষ্টি আর কি— এ কটাই তার সম্বল! সেই তৃতীয় চোখ তাকে জুটিয়ে দিল এক অদ্ভুত কাঠের ফলক— মিসমিদের কবচ। সেই কবচই শেষ পর্যন্ত খুনিকে সবার সামনে নিয়ে এলো।
কিন্তু সেই কবচের রহস্য? সেই নক্ষত্র কিংবা সেই শেয়াল? নররক্তপ্রিয় বন্য দেবতার কাঠের মূর্তিটার চোখের মতোই সেটা শেষ পর্যন্ত রয়ে গেল রহস্যের আড়ালে। .........………………………
ছুটির দুপুরে লতাপাতাঢাকা চিলেকোঠায় বসে এমন রহস্যের পেছনে ছুটতে ছুটতে হঠাৎই থেমে যেতে হল। গা ছমছমে বুনো পথটা আরেকটু লম্বা হলে কি খুব ক্ষতি হয়ে যেত?
জানা ছিল না বিভূতিভূষণ ডিটেক্টিভ থ্রিলার লিখেছিলেন। ডিটেক্টিভ, এবং অকাল্ট থ্রিলার! পাড়াগাঁয়ে মামাবাড়ির গ্রামীণ সেটাপে গল্প শুরু, যেমন দুনিয়ায় বিভূতি আমাদের নিয়ে গেছেন অনেকবার। পাড়ার বৃদ্ধা বিধবাদের দৈনন্দিন অভ্যাস, পুকুরে মাছ ধরার শখ, এমনকি কেবল বাঙালিই যে অশ্বত্থের ডাল ভেঙে দাঁতন করে, তা-ও লক্ষ্য করা হয়ে গেল! ছোট ব্যাপ্তির বেশ ভালো কিশোর উপন্যাস। তাকে অল্পকথায় বলার ইচ্ছে ছিল লেখকের... নয়তো প্লটলাইন ভালোই, তদন্ত প্রক্রিয়া আর পেছনের গল্পটুকু সময় নিয়ে করলে পোক্ত একটা উপন্যাস হতে পারতো।
বইয়ের নাম দেখে ভেবেছি কোন অতিপ্রাকৃত গল্প হবে। বই হাতে পাওয়ার পর ফ্ল্যাপ পড়ে জানলাম গোয়েন্দা গল্প। সাদামাটা এক গল্প। সাদামাটা বলছি এই কারণে যে বিভূতিবাবু এর থেকেও চমৎকার সব গল্প লিখে রেখে গেছেন। রহস্যোপন্যাস পড়ে যারা অভস্ত্য তাদের কাছে এই গল্পটা ডালভাত মানে অত টুইস্ট নেই, রহস্য সমাধানও কেমন সহজ সরল তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো। অপরাধী কে সেটাও আগে থেকে বলে দেয়া যাবে।
গল্পের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা সুন্দর এবং শেষে "মিসমিদের কবচ" এটার ইতিহাসটা ভালো লেগেছে বেশ।
এক বসায় শেষ করার মতো বই। না পড়লেও যে ক্ষতি হবে বড়ো তা নয়। তবে কেন পড়বেন? আরেহ বিভূতিবাবুর লেখা তাও আবার বাংলা সাহিত্যের শুরুর দিকের গোয়েন্দা গল্প (১৯৪২) । ভাবা যায়। এই জনরাতে লিখলে এখানেও শাইন করতেন বলে আমার মনে হয়।
বিভূতিবাবু যে গোয়েন্দা কাহিনীও লিখে গেছেন, জানা ছিল না।
মামা বাড়িতে গিয়ে সুশীল পরিচিত হয় শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা হরিশ গাঙ্গুলীর সাথে।বেশ কথাবার্তা হয় তার সাথে। একা বৃদ্ধ মানুষ, ছেলেরা সব শহরে থাকে। কয়েকদিন পর এক রাতে আততায়ীর দ্বারা খুন হন হরিশ গাঙ্গুলী, সাথে তার টাকা পয়সাও চুরি হয়ে যায়। কিন্তু তার ঘরখানা গ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার জন্য সে ঘটনা কেউ টের পায়না। বেশ কয়েক দিন বাদে মৃতদেহ পচে গিয়ে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকলে গ্রামবাসীদের নজরে পড়ে।ডাক পড়ে সুশীলের, মামা তাকে এ খুনের তদন্ত করতে বলেন; গোয়েন্দা নিবারণ সোমের কাছে থেকে সুশীল কতটুকু শিখেছে তারই প্রমাণ চান।
যেহেতু খুন হয়েছে কয়েকদিন আগে কাজেই তদন্ত যখন শুরু হয় তখন লাশ সৎকার করা শেষ, সমস্ত প্রমান লোপাটই বলা যায়।তাহলে কিভাবে কেসের কিনারা করবে শিক্ষানবীশ গোয়েন্দা সুশীল?
শুরুটা ভালোই লেগেছে কিন্তু শেষটা যেন কেমন কেমন লাগলো! :(
পড়তে শুরু করেছিলাম ডিটেকটিভ গল্প শেষ পর্যন্ত তা যেয়ে ঠেকলো মিসমীদের অপদেবতার কবচের অপশক্তির শক্তি বাহার দেখে. নাহ্ অন্য বিভূতিভূষণ সৃষ্টির তুলনায় ঠিক জমলো না রেটিং:২.৭৫
যদিও বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বল্প পরিচিত এই কিশোর উপন্যাসটি তার অন্যান্য ক্লাসিক উপন্যাসের ধারে কাছেও যাবে না, তবুও নিতান্তই সময় কাটাতে বইটি বেশ লাগবে। ক্লাসিক whodunnit টাইপের ডিটেকটিভ উপন্যাস।গল্পটা এমন, লেখ�� বা গল্পের নায়ক কলকাতার বিখ্যাত ডিটেকটিভ সোমের সহকারী হিসেবে কাজ করেন, ছুটি কাটাতে মামা বাড়ি এসে খুনের রহস্যে জড়িয়ে যান। ক্লু হিসেবে তার কাছে আছে গাছের একটা ভাঙ্গা ঢাল আর মিসমি জাতির কাঠের কবচ। এই দুটো ক্লু নিয়েই লেখক বেরিয়ে পড়েন খুনীর সন্ধানে। বেশ ছোটখাট উপন্যাস(উপন্যাস না বলে বড়গল্প/নভেলা বলাই ভাল), বিভূতিভূষণের লেখনীতে খুব একটা খারাপ লাগবে না।
🔹গ্রামের লোকজন সাধারণত শান্তিপ্রিয় ও সরল হয়ে থাকে। যেখানে তারা পরষ্পর সম্প্রীতি বা ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ ও কলহ-বিবাদ থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করে। তেমনই একটি নির্ঝঞ্ঝাট গ্রাম ছিলো শ্যামপুর। কিন্তু সেখানে আচমকা খুন হয়ে গেলো হরিশ গাঙ্গুলি নামের এক লোক। এই ঘটনাটি তখন তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করে। মামার একপ্রকার জোরপূর্বক অনুরোধে রহস্য সমাধানে নামলো সুশীল। শেষ অবধি সুশীল কি রহস্যের কিনারা করতে পেরেছিলো? আর কে এবং কেনোই বা খুন করলো গাঙ্গুলি মশায়কে!
🔹আমরা জানি যে, চিরায়ত ও সামাজিক উপন্যাসে বিভূতি বাবুর জুড়ি মেলা ভাড়। রহস্য ও গোয়েন্দা উপন্যাস ঘরানায়ও তিনি হাত রাঙিয়েছিলেন। রহস্যোপন্যাসেও তিনি তার চিরপরিচিত মুন্সিয়ানা বাদ দেন নি। প্রকৃতির সান্নিধ্যে অত্যন্ত চমৎকার একটি গল্প। এমনকি গোয়েন্দা চরিত্রটিও প্রকৃতিপ্রেমী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। উক্ত উপন্যাসটি এডভেঞ্চার "চাঁদের পাহাড়" ও "হীরে মানিক জ্বলে"-র মতো উঁচুস্তরের না হলেও তৎকালীন সময় হিসেবে দারুণ এবং হালের সস্তা লেখার তুলনায় যোজন খানেক এগিয়ে।
🔹বইটি পড়ার পূর্বে জানতামই না যে বিভূতি বাবুও ডিটেকটিভ উপন্যাস লিখেছেন। পড়ার সময় দারুণ অনুভূতি হয়েছিলো। লেখকের প্রকৃতি বর্ণনা বরাবরের মতোই অনবদ্য। যেনো চোখের সামনে জীবন্ত স্বরুপ। রহস্যোপন্যাস হিসেবে কাহিনি ঘনীভূত হলেও ক্লাইম্যাক্স তেমন চমকপ্রদ ছিলো না। পাশাপাশি গোয়েন্দাগিরিও তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। উপন্যাসের শেষে মিসমি উপজাতির অতিপ্রাকৃত বিষয়টির মিশ্রণ প্রশংসাযোগ্য।
🔹বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় "মিসমিদের কবচ" উপন্যাসটি লিখেছিলেন ১৯৪২ সালে। কাল বিবেচনা করলে সেটি গোয়েন্দা ঘরানার সূচনালগ্ন। দেশ-বিদেশের সিদ্ধহস্ত লেখকদের থ্রিলার পড়ার কারণে বইটি সাদামাটা মনে হলেও নিঃসন্দেহে এটি বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ ও বিভূতি বাবুর লেখার বিভিন্নতার পরিচায়ক।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু চাঁদের পাহাড় কিংবা পথের পাঁচালী'র মতো রচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না; তিনি আমাদের জন্য গোয়েন্দাগল্পও লিখে গেছেন। তারই একটি রোমাঞ্চকর সৃষ্টি হলো মিসমিদের কবচ। কোনো প্রকার স্পয়লার দিলাম না কারণ গল্পটি ছোট। তবে, ছোট হলেও বেশ সহজপাঠ্য।পড়ে খারাপ লাগার কোনো কারণ নেই।একবার পড়েই দেখুন না!
আহামরি কোনো গল্প না। হয়ত গোয়েন্দা গল্প পড়ার বয়স পার করে ফেলেছি বলেই আলাদা কোনো অনুভুতি হচ্ছেনা। সঠিক বয়সে পড়লে হয়ত প্রিয় উপন্যাস হয়েই থাকতো। ছোটবেলায় ফেলুদা, বোমকেশ পড়ে ফেলার কারনেই এই বই খানিকটা গড়পরতা লেগেছে।