আমি ঘুরে-ফিরে একটা স্বপ্নই দেখি – মামুন এবং আমি পাশাপাশি একটা রিকশা করে যাচ্ছি। রিকশার চাকার সঙ্গে কি করে যেন শাড়ি পেঁচিয়ে গেল। আমি চেঁচিয়ে বলছি – রিকশা থামাতে বল, রিকশা থামাতে বল। মামুন চিৎকার করছে – এই রিকশা, থাম থাম। কিন্তু রিকশাওয়ালা কিছুই শুনছে না – সে সমানে প্যাডেল করে যাচ্ছে। আশেপাশে লােক জমে যাচ্ছে। একজন ট্রাফিক পুলিশ পর্যন্ত রিকশা থামাবার জন্য ছুটে আসছে ... স্বপ্নের এই জায়গায় আমি জেগে উঠি। আমার বুক ধ্বক ধ্বক করতে থাকে। পানির পিপাসা হয়। নিজেকে ধাতস্থ করতে অনেক সময় লাগে। বিছানায় চুপচাপ বসে হাঁপাতে থাকি। এই সময় বাবা এসে আমার দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে বলেন, কি হয়েছে রে মা? কি হয়েছে? বাবার ঘর দোতলার শেষ মাথায়। রাতে তার ঘুম হয় না বললেই হয়। তিনি সামান্য শব্দেই চটি পায়ে বের হয়ে আসেন। আমি দুঃস্বপ্ন দেখতে দেখতে যে শব্দ করি তা নিশ্চয়ই সামান্য না। আমার পাশের ঘরে বাবলু ঘুমায়। তার ঘুম অবশ্যি কখনাে ভাঙে না। আমার মত সেও দুঃস্বপ্ন দেখে। তার দুঃস্বপ্নগুলি বিকট এবং বারবার। সে বিশ্রী ধরনের গােঙানির শব্দ করতে থাকে, হাত-পা ছুঁড়তে থাকে। আমি নিজেই ভয়ে অস্থির হয়ে পড়ি। বাবা ছুটে এসে দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে বলেন – কি হয়েছে? এই বাবলু, এই! দরজা খােল, দরজা খােল। বাবর দুঃস্বপ্নগুলি সহজে ভাঙে না। সে গো গো শব্দ করতে থাকে এবং বিছানায় নড়াচড়া করতে থাকে। এক একবার মনে হয়, বিছানা থেকে গড়িয়ে বােধহয় মেঝেতে পড়ে যাবে। বাবা ভয় পেয়ে আমাকে ডাকেন রাত্রি! রাত্রি মা! আমি বাবার পাশে দাঁড়াই। দুজনে মিলে দরজা ধাক্কাতে থাকি। এক সময় বাবলুর ঘুম ভাঙে কিন্তু চেতনা পুরােপুরি ফিরে আসে না – কারণ সে কঁপা গলায় ডাকতে থাকে - মা ! মা ! বাতি জ্বালাও মা। তার মনে থাকে না যে মা মারা গেছেন আট বছর আগে। ছেলের দুঃস্বপ্নের সময় তিনি এসে বাতি জ্বালাতে পারবেন না। বাবা ব্যস্ত হয়ে ডাকেন - ও বাবলু! বাবলু !
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
ট্র্যাজেডি কখন আঘাত হানবে কেউ বলতে পারে? ধরেন, হাসিখুশি একটা পরিবার।একসাথে সবাই বেড়াতে গেলো। আনন্দ উচ্ছ্বাসে কাটলো দিন। বাসায় ফেরার পথে বাবার বুক ব্যথা শুরু হোলো। হাসপাতালে নিতে নিতেই সব শেষ। হয় না এমন?হয়ে যায়। খুব হয়। ধরেন, মৃত্যুর পর বাবার শোকে বাড়ির লাজুক একটা ছেলে খুব কাঁদছে বা কাঁদতে চাইছে। সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলেটার মনে হচ্ছে, "প্লিজ আমার দিকে এভাবে তাকায়েন না। আমাকে একটু শান্তিতে কাঁদতে দ্যান। আজকের জন্য মাফ করে দ্যান।" কিন্তু কেউ তাকে মাফ করে নাই। ছেলেটার নীরব আকুতি তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছেনি। ঘটে না এমন? ঘটে যায়। অহরহ ঘটে যায়।
হুমায়ূন আহমেদের সংহত, বিস্ময়কর সব মোচড়সম্পন্ন, ট্র্যাজিক "জয়জয়ন্তী"র সাথে উপরের গল্পের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। এমনিতেই বলার ইচ্ছা হোলো। বললাম।
বেঁচে থাকলে এই বইটা হয়তো আরো অনেকবার পড়া হবে। বয়সের সাথে সাথে বইয়ের বিভিন্ন চরিত্রের সাথে নিজেকে মেলাতে চেষ্টা করব। কখনো হয়তো মিলবে, কখনো হয়তো মিলবে না। তাতে বোধহয় আমার তেমন কোনো আফসোসও থাকবে না। আমি আমাকে এই বইয়ের প্রতিটা চরিত্রের সাথে মেলাব। খুব কম বই আছে, যা পাঠকের মনে চিরস্থায়ী একটা দাগ কেটে যায়। আমার ক্ষেত্রে হাতেগোনা কয়েকটা বইয়ের মধ্যে আজকে এটা যোগ হলো। আমি হয়তো এই বইটা নিয়ে পাতার পর পাতা লিখতে পারবো। তবুও আমি যা অনুভব করেছি, করছি। তার এক আনাও প্রকাশ হবেনা। প্রকাশ করতে গিয়ে এই যে অপ্রকাশিত থেকে যাওয়ার, প্রকাশ করতে না পারার তীব্র যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতি, সেটা না হোক। এই বই নিয়ে আমার সব অনুভূতি অপ্রকাশিত থেকে যাক।
চমৎকার একটা উপন্যাস। আমার পড়া হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম সেরা উপন্যাস। ইদানিং তাঁর যেসব লেখাপত্র পড়ছিলাম, বেশিরভাগই ভালো লাগছিলো না। খুব বেশি আশা না-নিয়েই এই উপন্যাসটা শুরু করেছিলাম। একদম ছোটো উপন্যাস। এটা কিন্তু খুব ভালো লেগে গ্যালো।
এই উপন্যাসে হুমায়ূনীয় অনেক কিছুই নেই। "অসম্ভব রূপবতী" এবং "প্রচণ্ড বুদ্ধিমতী" কোনো মেয়ে নেই। সেই বুদ্ধিমতী-রূপবতীকে দূর থেকে ভালোবাসে এমন কোনো নিঃস্বার্থ আলাভোলা প্রেমিক নেই। উপরে ভীষণ কঠিন কিন্তু ভেতরে তুলতুলে নরম হৃদয়ের বাবা নেই। আধপাগল মামা কাকা জ্যাঠা পিসেমশাই মেসোমশাই নেই। অলৌকিক আজগুবি কান্ডকারখানা নেই।
আর একটা আশ্চর্য ব্যাপার। "যার রাগ বেশি সে নীরবে অনেক ভালোবাসতে জানে, যে নীরবে ভালোবাসতে জানে তার ভালোবাসার গভীরতা অনেক বেশি", কিংবা "মেয়েদের স্বভাবই হচ্ছে হালকা জিনিস নিয়ে মাতামাতি করা”, কিংবা "যদি আপনি অন্তর থেকে কাউকে চান, জেনে রাখুন সেই মানুষটিও আপনাকে ভেবেই ঘুমাতে যায়"— এই ধরণের হুমায়ূন-সুলভ "উক্তি" এই বইতে একটাও নেই। বিষয়টা আমাকে খুবই অবাক করেছে। উক্তিবিহীন বই তিনি কীভাবে লিখলেন?!
বাবার সঙ্গে মেয়ের, মেয়ের সঙ্গে মায়ের, বোনের সঙ্গে ভাইয়ের, স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রাক্তন স্বামীর, ইত্যাদি যে-সম্পর্কগুলো আমাদের চারপাশে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকে, আমরা নিজেরাও যে-সম্পর্কগুলোতে প্রায়শ অংশগ্রহণ করি, মধ্যবিত্ত জীবনের তেমন কিছু সম্পর্ককে দারুন পারদর্শিতার সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই কাহিনিতে।
পড়তে পড়তে রমাপদ চৌধুরী কিংবা মতি নন্দী কিংবা গৌরকিশোর ঘোষ কিংবা বিমল করের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। হুমায়ূন আহমেদের রচনার এই বাস্তবসম্মত রূপ আমি খুব বেশি দেখিনি। শুধু একটাই আফসোস। হুমায়ূন তাঁর গল্পে মানসিকভাবে শক্তিশালী নারীদের এতো কষ্ট দেন ক্যানো? এই নারীরা নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করে যদি জিতে যেত জীবনে, তাহলে আরো ভালো লাগতো আমার।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা যতবারই পড়ি, যখনই পড়ি, শুধু মনে হয় তিনি বুঝি আমাকে দেখে দেখে তার উপন্যাসগুলো লেখেন! সাতটি রঙের মাঝে মিল না পেলেও তাঁর উপন্যাসেই এত মিল খুঁজে পাই কেন?
আমি ভেবেছিলাম, হুমায়ূনের সব বই পড়া শেষ। কিন্তু এখন খেয়াল করছি, ২-১টা পড়া হয়নি। ওঁর বইয়ের রিভিউ কিংবা পাঠ-প্রতিক্রিয়া কখনোই লিখিনি; এটা দ্বিতীয়– কারণ তার সাধ্য আমার নেই। কৈশোরে যার বই আমার ধ্যান-জ্ঞান ছিল, যার লেখা পড়ে আমি বইপ্রেমী হয়ে উঠি– তার লেখার সমালোচনা করার দুঃসাহস অন্তত এখন পর্যন্ত নেই!
নির্বাসন, শ্রাবণ মেঘের দিন-এর মতো আরো একটি রোমান্টিক-ট্র্যাজেডি। কিছুক্ষণের জন্য নিজের মন-খারাপ ভুলে গিয়ে রাত্রির জন্য মন খারাপ হয় .....
অনেকদিন পর হুমায়ূন আহমেদের কোনো বই পড়ে এতো ভালো লাগলো। শংকরের জন অরণ্য পড়ার পর লেখককে খুব বেশি নিষ্ঠুর মনে হয়েছিলো, তখন বয়স কম ছিল বলেই হয়তো নিষ্ঠুর মনে হয়েছিলো। এখন মনে হয়, বাস্তবতা এমনই। এই বইটাও দশ বছর আগে পড়লে লেখককে নিষ্ঠুর মনে হতো।
আবারও হুট করে সমাপ্তি। গল্পের মাঝেই আন্দাজ করতে পারছিলাম শেষে পরিণতি কি হবে তাও হুমায়ূনী লেখকের জাদুবলে পড়ে গেছি পুরোটা। হুমায়ূনের এই ইমোশন নিয়ে খেলার তরিকাটা বেশ ক্লিশে। আগেও অনেকবার করেছেন। যে নতুনত্ব আশা করে পড়েছি তা পাই নাই।
শেলফ এ দেখাচ্ছে বইটা আমি আগেও পরেছি অথচ এবার হাতে নিয়ে মনে হলো প্রথম ধরলাম। হুমায়ূন আহমেদ একটা সময় কি যে যত্ন নিয়ে বই লিখতেন। এই যে একটা অলস দুপুরে কাথামুড়ি দিয়ে বসে বই পড়ে চোখের কোল ভিজে যাবে আর কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবো,পেট ব্যাথায় কান্না করছি- ঠিক তেমন একটা বই।
কাহিনীটা এক অভাগিনী মেয়ের। রাত্রি! বিয়ের তিন বছরের মাথায় স্বামী মামুনের খারাপ চরিত্রের কারণে ডিভোর্স দিতে হল।অবশ্য মামুন বলেছিল ওর কাছেই থাকতে।কিন্তু একজন শিক্ষিত মেয়ে হিসেবে রাত্রি স্বামীর কার্যকলাপ জেনেও এভাবে থাকাকে প্রয়োজন মনে করে নি।কিন্তু বাচ্চা ছেলেটার জন্য মায়ের মন কাঁদে যে!! ছেলেটাকে সাথে আনতে দেয় নি মামুন।
দোতলা বাড়িতে থাকে রাত্রি,বাবা আর ছোট ভাই বাবুল।বোকা, আই এ তে ফেলে হ্যাট্রিক করেছে।বলতে গেলে বখে গিয়েছে। মাঝে মাঝে মদ খেয়ে মাঝ রাতে বাড়ি ফেরে। বাড়ির দোতালার একটা অংশ ভাড়া দেওয়া। রাত্রির দিন কাটছে কোনো রকম।স্বামীর বাড়ি ছেড়ে আসার সময় সে প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছিল সে আর কাঁদবে না। বাবার জন্য তার মন কেমন করে। মা মারা গেছে সে অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। সময় এভাবেই যাচ্ছ বাবা আর ভাইয়ের সাথে।
ভাড়াটিয়া পান্না ভাবী প্রায়ই এসে গল্প করেন। বেশিরভাগই স্বামী নাজমুলের চরিত্র নিয়ে! কাজের মেয়ের সাথে নাকি এই সেই!
এদিকে রাত্রি একদিন পান্না ভাবিকে বলে তার ভাইয়ের জন্য পাত্রী দেখতে। সে পাত্রী দেখেও ফেলে, নাম বীনা।বাড়িতে নিয়ে আসে।রাত্রি আর তার বাবাও অনেক পছন্দ করে। বাবুল ও বীনাও শেষে পছন্দ করে বসে। কিন্তু ভাগ্য!!কি জানি বিধাতা কি রাখে কপালে! রাত্রির বাবার চোখের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় অপারেশন করানো হয় কিন্তু তিনি অন্ধ হয়ে যান।এদিকে বাবুল ডিজাইনার ইসতিয়াককে দিয়ে বাড়ির ডিজাইন বানানো সত্ত্বেও বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত বাদ দেয়। এদিকে ইসতিয়াক বীনাকে পছন্দ করে ফেলে বলে সে তার মা বাবাকে বীনার বাড়ি পাঠায়। দরিদ্র মা বাবা এতে রাজি হয়ে যায়। বীনা রাত্রির কাছে আসলে রাত্রিও বলে রাজি হয়ে যেতে,কারণ বাবুল হল বখে যাওয়া ছেলে আর ইসতিয়াক ভদ্র,পড়াশোনা জানা,ভাল চাকরি করবে বিদেশ গিয়ে। অন্যদিকে রাত্রির ছেলে টুকুন হার্টের অসুখ নিয়ে পিজিতে মৃত্যু পদযাত্রী। সংবাদ পেয়ে রাত্রি আর বাবুল যায়। টুকুনের অবস্থা একটু স্টেবল হলে রাত্রি রুম থেকে বের হয়ে আসে দেখতে পায় মামুন আর তার সুন্দরী দ্বিতীয় স্ত্রীকে। ধীরে ধীরে হসপিটালের বাইরে আসে রাত্রি আর বাবুল! একে অপরের অবলম্বন! সুখের কাছাকাছি গিয়েও কেউ সুখ পেল না!! কত অদ্ভুত ভাগ্যের এই লিখন!!
This entire review has been hidden because of spoilers.
সাধে্যর সাথে স্বপ্নের সংযোগে সংসার সুখের সৌভাগ্য স্রষ্টা সবাইকে দেননি।
যাকে দিয়েছেন সে বোঝেনা যে পায়নি সে খোঁজে না যার পাওয়ার কথা ছিল,সে জানেই না।
একই ছাদের নিচে ভাগে্যর বিচিত্র ফেরে রাত্রি পান্না বাবলু যেন মধ্যবিত্তের রোজকার জীবনের অন্তর্দ্বন্দ্বের সাথে অপ্রাপ্তি রংয়ে সাজানো আশার কথা আলো আঁধারির খেলায় বলে যায় হুমায়ূনের হাতের ছোঁয়ায়।
ভাই Don't ask me আমার কেমন লাগছে -,- নিজেও বুঝতেছি না আমার কেমন লাগছে। স্টোরি ৬৯ টাইম পরিচিত হুমায়ূন রাইটিং... নতুন কিছুই না। আর হার্ট টাচিং টা অতটা এবার টাচ হয় নাই, মেবী আমি এক্সামের প্রেসারে ছিলাম তাই হয়ত অতটা লাগে নাই 😞
কিছু গল্প আছে যা মধ্যবিত্ত পরিবারের সুখ-অসুখ আর প্রকাশ করতে না পারা ভালোবাসার গোপন কথা বলে দেয়। এই গল্প তেমনই এক সত্য জীবনের প্রতিচ্ছবি যা মধ্যরাত্রিতে পাঠক পাঠিকাকে হুহু করে কাঁদিয়ে দেয়!
মধ্যবিত্ত পরিবার নিয়ে সবচেয়ে বেশি লেখালেখি করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তিনি মধ্যবিত্ত জীবনের টানাপোড়েন, মানসিক অস্থিতিবস্থা, হাসি-কান্না সহজভাবেই বইয়ের পাতায় তুলে এনেছেন ।
মামুন ও রাত্রির তিন বছরের বিবাহিত জীবন। মামুন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করেছে। তাই সবসময় কাজের মাঝেই ডুবে থাকে। তাদের একটি ছেলে আছে, নাম 'টুকুন'। মামুন স্বাভাবিকের চাইতে বেশিই বাস্তববাদী মানুষ। তাই রাতের বেলা সন্তানের কান্নায় যখন ঘুম নষ্ট হয়, তখন সেটা দিনের কাজের বিঘ্ন ঘটাবে বলে বিরক্তি প্রকাশ করতেও বাদ দেয় না। আরো অন্যান্য বিষয়েও সে অস্বাভাবিক সিদ্ধান্ত নেয়, যা রাত্রির মনঃপূত হয় না। ব্যবসার কাজে মামুন বিদেশ গেলে সাথে মহিলা টাইপিস্ট কেন নিয়ে যায়? এই প্রশ্নের উত্তরে মামুন যা বলে তাতে রাত্রি হতভম্ব হয়ে যায়। তখনই সে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় মামুনের সাথে থাকা আর সম্ভব না। তল্পিতল্পা গুটিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে রাত্রি। ছেলে টুকুনকে সাথে আনতে চাইলেও মামুন রাজি হয় না; এমনকি টুকুনের সাথে রাত্রির সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। কিছুদিন পর তাদের ডিভোর্সও হয়ে যায়।
রাত্রির বাবা ও ভাই বাবলুকে নিয়ে ছোট সংসার। দো'তলা বাড়ির নিচ তলায় রাত্রিরা এবং উপর তলায় শিক্ষক নাজমুল ও তার স্ত্রী পান্না থাকেন। রাত্রির সাথে পান্না'র সম্পর্ক ভালো এবং সে পান্নাকে ভাবী বলে ডাকে। বাবলু তিনবার আইএ পরীক্ষা দিয়েও পাশ করতে পারেনি। বখে যাওয়া সন্তান বলতে যা বোঝায়, বাবলু তাইই। মদ খেয়ে রাত করে বাড়ি ফিরলে রাত্রি রাগ করলেও রাত্রির বাবা সন্তানের ভুলের দোহাই দিয়ে তাকে শান্ত হতে বলেন। বাবলু অল্পতেই যেকোনো বিষয় নিয়ে উত্���েজিত হয়। আবার দ্রুতই সেই আগ্রহ মিইয়ে আসে। কখনো বাড়ি বিক্রি, কখনো ভিডিও স্টুডিওর দোকান আবার কখনো মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিং দেওয়ার চিন্তা করে সে। রাত্রি ও তার বাবা ঠিক করেন বাবলুকে বিয়ে দেবেন; তাতে যদি ঠিক হয়। কিন্তু এমন একজন ছেলের কাছে কে মেয়ে বিয়ে দিবে!
দো'তলার বাসিন্দা পান্না ভাবী প্রচণ্ড সন্দেহবাতিক মানুষ। স্বামী নাজমুলকে মেয়েঘটিত ব্যাপারে প্রায়ই সন্দেহ করেন এবং তিনি মনে করেন নাজমুল সাহেব কাজের মেয়েদের সাথে খারাপ নজরে তাকান। অথচ রাত্রির সাথে যতবারই দেখা হয়েছে নাজমুল সাহেবকে ভদ্র-সভ্য বলেই মনে হয়েছে। পান্না ভাবী রাত্রির কাছে নিজের স্বামী সম্পর্কে এমন সব অভিযোগের কথা বলেন, সে অবাক হয়ে যায়। আসলেই কি লোকটি এমন নাকি পান্না ভাবী মিথ্যা বলেন?
হুমায়ূন আহমেদের এই বইটা অন্যান্য মধ্যবিত্ত জীবন সম্পর্কিত বইয়ের চাইতে ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। দুইটি পরিবারের দুইরকম অবস্থা পাঠককে ভিন্ন অনুভূতি দিবে। বিষন্নতায় ছেয়ে আছে বইটি। সাধারণত আমাদের দেশের নারীরা সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে স্বামীর সকল অপরাধ মুখ বুজে সহ্য করে সংসার করেন। বইটিতে রাত্রি চরিত্রটি সেই প্রথা ভেঙে নিজের আত্মসম্মান বজায় রাখতে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে এসেছে। সন্তানের জন্য কষ্ট হলেও পুনরায় সেখানে যেতে চায়নি। রাত্রি চরিত্রটি বেশ ভালো লেগেছে। একইসাথে পান্না ভাবী ও নাজমুল সাহেবের সমস্যারও সুরাহা লেখক করে দিয়েছেন। হ্যাপি রিডিং।
বইয়ের একেবারে শেষে কয়েকটা লাইন আছে সেটা পড়ে আমার চোখের সামনে আমার ছোট ভাইয়ের ছবি ভেসে উঠেছে এবং তখনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই বইটা অন্তত আমি আমার ভাইকে পড়তে দিবো।সে তার ২১ বছরের জীবনে নিজ উদ্যোগে কোনো গল্পের বই পড়েনি বটে কিন্তু মাঝেমধ্যে জোড় করে আমি তাকে গল্প পড়ে শুনিয়েছি।কিন্তু যেদিন থেকে দুই ভাইবোন পড়াশোনার স্বার্থে দুই শহরের বাসিন্দা সেদিন থেকে সে আমার সমস্ত অনুরোধ রাখার চেষ্টা করে।এই বই কিনে রেখেছি,তার সাথে দেখা হলেই দেবো,আশা করি সে পড়বে।
হুমায়ুন আহমেদের লেখা একটি আন্ডাররেটেড বই এটি! মানতেই হয়, উনি কিছু লেখা আসলে অনেক দরদ দিয়ে লিখে গিয়েছেন। মনে হচ্ছে, রাত্রির মতো আমিও প্রতিজ্ঞা করেছি আর কাঁদবো না। টুকুন ভালো হয়ে উঠুক!
আমার রাত্রির মত হবার খুব ইচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে ঠান্ডা থাকা, প্রতিক্রিয়া না দেখানো। আত্মসম্মানবোধ গুরুত্ব পায় যার কাছে সবার আগে। অন্যান্য উপন্যাসের মতন ছিমছাম এক মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প হলেও বইটি পড়ে যাওয়ার এক আকর্ষণ ছিলো। আমার মনে হয় উপন্যাসের শেষাংশের জন্যই বইটিকে আমি বেশ পছন্দ করেছি। ও হ্যাঁ! টুকুনকেও ভালো লেগেছে
গল্পের মূল চরিত্রের নাম রাত্রি। সে একজন ডিভোর্স প্রাপ্ত মেয়ে। ডিভোর্স প্রাপ্ত বললে ভুল হবে। সে নিজেই তার স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে এসেছে। সেখানে রেখে এসেছে তার একমাত্র সন্তান টুকুনকে। তার স্বামী অর্থাৎ সাবেক স্বামী মামুন একজন বাস্তববাদী মানুষ। তার কাছে আবেগ-অনুভুতির মূল্য নেই। তিনি সব কিছুকে বাস্তবতার আলোকে দেখেন। তিনবছর একসাথে সংসার করেও রাত্রি বাস্তববাদী হয়ে উঠতে পারে নি। রাত্রির সংসারে তার বাবা এবং ২২/২৩ বছরের একটা উশ্রীঙ্ক্ষল ভাই। যে তিনবার আইএ ফেল করেছে। তার একমাত্র সন্তান টুকুনকে তার বাবা দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। মায়ের সাথে সন্তানের কোনো যোগাযোগ তিনি রাখবেন না। তিনি একজন বাস্তববাদী মানুষ। ঝামেলা পছন্দ করেন না। এভাবেই এগিয়ে চলেছে গল্প।
পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ হুমায়ূন আহমেদের গল্পের রিভিউ লেখা একটা কষ্টকর ব্যাপার। পাঠপ্রতিক্রিয়া লেখা তো আরও কঠিন। তারপরেও কিছু লিখতে হয়। গ্রুপের অতিপরিচিত এডমিন নবনী আপুর রিভিউ পড়ে বইটা পড়া শুরু করলাম। শেষ করার পর চমৎকার একটা অনুভুতি। রাত্রি চরিত্রে আবেগ যেমন পাই ঠিক তেমন তার দৃঢ়তা চোখে পড়ার মত। সে মামুনের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলো সে কাঁদবে না; সে কঠিন মুহুর্তেও হেসেছে। অপরদিকে তার মমতাময়ী হৃদয়ের আবেগ মনকে স্পর্শ করে। কিছু স্থানে চোখ থেকে পানি আসছে। সবশেষে বলতে হবে রাত্রির অভিনয়। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে হলে আমাদের অনেকেরই এমন অভিনয় অহরহ করতে হয়। অন্ন চরিত্রগুলোও মন ছুয়েঁ যাবার মত। বিশেষ করে বিনু, বাবলু, ইসতিয়াক।
বইটা আহামরি কাহিনি বা প্লট নিয়ে লেখা নয়। বইটা মূলত একজন আত্মসম্মানবিশিষ্ট খুব সাধারণ ঘরের মেয়ে রাত্রিকে নিয়ে লেখা। রাত্রি গল্পের মূল চরিত্র। একজন বাবাকে নিয়েও লেখা হয়েছে যিনি তার শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন নিজের সন্তানদের সাপোর্ট করতে তাছাড়া নিজের কোনো ব্যাপার, ব্যবহার নিয়ে যাতে সন্তানরা কষ্ট না পাই তিনি সেইটাও চেষ্টা করেছেন শেষ পর্যন্ত। এছাড়াও মধ্যবিত্ত পরিবারের বাস্তবতাকে কিছুটা ফুটিয়ে তুলেছেন হুমায়ুন আহমেদ।
রাত্রি আর মামুন সাহেবের মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না।মামুন সাহেবকে উপন্যাসে বলা হয়েছে সে অত্যন্ত প্র্যাকটিকাল মানুষ, তবে আমার কাছে তাকে খুবই জঘন্য কেউ মনে হয়েছে এবং রাত্রি তাকে ফেলে চলে এসে খুব ভালো করেছে বলে মনে হয়েছে। রাত্রি নিজের বাড়িতে চলে আসে,এখানে তার বাবা আর ভাইয়ের সাথে থাকতে শুরু করে।তাদের মা আট বছর আগে মারা গিয়েছেন।পরিবারে সবচেয়ে হাসিখুশি মানুষটিই ছিলেন তাদের মা।রাত্রির ধারণা মা যাওয়ার সময় সব হাসি সঙ্গে করে নিয়ে চলে গেছেন।অন্য কোনও নতুন সদস্য সেই হাসি ফিরিয়ে আনতে পারবে বলে ধারণা রাত্রির।তবে কে সে,তা জানে না রাত্রি। রাত্রির ভাই বাবলু;যে কিনা ইন্টারে তিন তিন বার ফেইল করেছে।প্রায়ই নেশা করে বাড়ি ফেরে,তবে মাথায় বুদ্ধি খুবই কম।তাই রাত্রি জানে সে ফালতু কিছু বন্ধুবান্ধবের সাথে ঘুরলেও রাতারাতি গুণ্ডা হয়ে যেতে পারবে না।সেজন্য সাহস এবং বুদ্ধি প্রয়োজন, যার কোনটাই নেই বাবলুর মধ্যে। তাদের বাবা রিটায়ার্ড করেছেন, দুই ভাই বোনকেই অসম্ভব ভালোবাসেন।এইযে বাব��ু রাত বিরেতে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে আবোল তাবোল বকে,এ নিয়েও কোনদিন তাকে বকাবকি করেননি। বাড়ির অর্ধেকটায় রাত্রিরা থাকে এবং বাকি অর্ধেকটা ভাড়া দেওয়া।তাদের ভাড়াটে পান্না ভাবী এবং নাজমুল সাহেব।পান্না ভাবী মহিলাটিকে পুরো উপন্যাস জুড়েই বিরক্তিকর লেগেছে।অযথাই তার স্বামীকে সন্দেহ করতে থাকেন। বাসার কাজের বুয়া থেকে রাত্রি, কাউকেই তার সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ রাখতে পারেন না তিনি। তবে সব সন্দেহই যে মিথ্যামিথ্যি ছিল,এমনটা দেখা যায়নি শেষ অবধি।রাত্রির একা থাকতে কষ্ট হয়।মামুন সাহেবের জন্য মোটেই না,তার ছোট্ট আদরের টুকুন সোনার জন্য। সে জানতে পারেনা তার আদরের টুকুন সোনা কেমন আছে,কি করছে।এর কারণ, তাকে না জানিয়ে মামুন সাহেবের টুকুনকে ভিনদেশে পাঠিয়ে দেওয়া এবং তার সাথে টুকুনের অযথা দূরত্ব সৃষ্টি করতে চাওয়া। এই হচ্ছে উপন্যাসের মোটামুটি একটা সারসংক্ষেপ।
প্রিয় চরিত্র - অবশ্যই রাত্রি অপ্রিয় চরিত্র - মামুন সাহেব
‘জয়জয়ন্তি’ আমার পড়া অন্যতম অযৌক্তিক একটি বই। হনুমান আক্ষ্মেদ অবশ্য বরাবরই বস্তাপঁচা লেখা লেখেন। তার বিষ্ঠাতুল্য পাঠকেরা সেই বিষ্ঠার সমান বস্তাপঁচা লেখাগুলো অমৃত মনে করে খেয়ে যান। এই বইটি পারিবারিক সমস্যার বই। সমস্যা থাকলে বেশীরভাগ সময় সেটি সমাধান করাও সম্ভব। তবে গল্পের প্রোটাগনিস্ট রাত্রির (probably INFP) পারিবারিক সমস্যা সমাধান করার মতো যুদ্ধংদেহী মনোভাব ছিলো না। অবশ্য এরকম একটি বড় ট্র্যাজেডির মুখোমুখি পড়ে তার মানসিক অবস্থা একটু খারাপ হবারই কথা। তাই তাকে আমি দোষারোপ করছি না। তবে মামুনকে ছেড়ে সে ঠিক কাজই করেছে। রাত্রির অসাধারণ আত্মসম্মানবোধ কে আমি সম্মান করি। মামুন এক্সট্রা ম্যারিটাল এফেয়ার করে অনৈতিক একটি কাজ করেছে। মামুনকে আমার একজন যুক্তিবাদী মানুষ মনে হয়েছে। এরকম যুক্তিবাদী মানুষ কেন প্রথম জায়গায় বিয়ে করে বাচ্চা পয়দা করতে গেল সেটি বুঝতে পারছি না। মামুনের এই কাজটি অযৌক্তিক হয়েছে। তারপর চিটিং করে আরেকটি অযৌক্তিক কাজ করেছে। রাত্রির বোন বাবলু একজন অত্যন্ত দায়িত্বহীন মানুষ (ENFP)। তার সাথে বীণার বিয়ে না হয়ে ঠিক হয়েছে। বাবলুর মতো অসভ্য মাতাল লোকদের জীবনে ধুঁকে ধুঁকে মরা উচিৎ। ইস্তিয়াক বীণাকে সুখে রাখবে এটা আমার ধারণা। মামুন বাচ্চাটিকে কাছে রেখেই ভালো করেছে। বাচ্চাকে সে রাত্রির চেয়ে ভালো জীবনমান দিতে পারবে। রাত্রী - বাবলুর বাবার ব্যাথায় আমি সমব্যাথী। তাকে অনেক শান্ত মানুষ মনে হলেও তিনি আসলে ভিতরে ভিতরে কষ্টে পুড়ছেন। পুরো পরিবারকে নিজের চোখের সামনে নষ্ট হতে দেখা খুবই দুঃখের ব্যাপার। সমাধান : রাত্রির কোন কাজ/ব্যাবসায় জড়িয়ে যাবার প্রয়োজন ছিলো। সে কাজে ব্যাস্ত থাকলে মনের শোক তাড়াতাড়ি কাটিয়ে উঠতে পারতো এবং টাকাপয়সাও আয় হতো। রাত্রির অর্থনৈতিক মুক্তিই এই সমস্যার সমাধান। রাত্রির টাকাপয়সা ইনকামের রাস্তা থাকলে সে পরিবারের সমস্ত খরচ চালাতে পারতো এবং পরিবার পরিচালনা করতো।
এই বইটি আজ থেকে বছর তিনেক আগে পড়লেও হয়তো ততোটা মর্ম বুঝতাম না যা এখন, এই বয়সে পড়ে বুঝলাম। আমার পুরো মনোযোগটাই রাত্রি চরিত্রের উপরে ছিলো। সমাজের নোংরা কিছু সত্য আমাদের থেকে ছোটবেলা থেকে লুকানো থাকে তাই বড় হয়ে যখন এইসব দেখি বা হয় আমাদের সাথে তখন আমরা নিতে পারি না কিন্তু বুঝতে পারি কেনো বড়রা মেনে নিতে বলে কারন তারা সত্য সয়ে নিয়েছে সাথে লুকাতেও সক্ষম হয়েছে আর এই কাজ ধারাবাহিক পরম্পরা হিসেবে আমরাও করে যাবো। একটি মেয়ের জীবন ও তাদের অনুভূতি ঠিক কতোটা ধারায় আবদ্ধ থাকে তা মেয়ে না হলে ও একটি নির্দিষ্ট বয়সে, অবস্থানে না আসলে টের পাওয়া যায় না। রাত্রি কিংবা পান্না ভাবীদের জীবন এই রকমই কেউ ই সুখে নেই। প্রিয় মানুষের চরিত্র ঠিক না হলে সেই সম্পর্কে থেকে কিংবা বের হয়ে আসলে সেই নারী কোনোভাবেই সুখী হয় না। মানসিক বা সামাজিক নিপীড়ন তাকে সয়েই যেতে হয়! অপরদিকে এই জীবনে আরো কিছু সুখ হতে বঞ্চিত চরিত্র রয়েছে। তবে কিছু সত্য আমাকে বেশ ভাবিয়েছে যারা অনুভূতি শূন্য হয়, যাদের আত্মস্বার্থ প্রখর কেবল তারাই সুখী মানুষ আর বাকিরা দুর্ভাগ্যকে বেতালের মতোন ঘাড়ে নিয়ে বয়ে বেড়ায়।