এক প্লেবয় ব্যারিস্টার খুনের অভিযোগে হাতেনাতে গ্রেফতার হলো পুলিশের কাছে কিন্তু তার দাবি খুনটা করেছে মানসিক বিকারগ্রস্ত একজন। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সাবেক ইনভেস্টিগেটর কে.এস. খানের দ্বারস্থ হয় সে। অদ্ভুত এই লোক, তারচেয়েও অদ্ভুত এই হত্যাকাণ্ডটি। যার ক্যারিয়ারে কোন অমীমাংসিত কেস নেই সে কি পারবে রহস্যের জাল ছিন্ন করতে?
নেমেসিস, কন্ট্রাক্ট, নেক্সাস আর কনফেশন-এর পর মোহাম্মদ নাজিম ঊদ্দীন সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি চরিত্র নিয়ে এসেছেন জাল-এ।
MOHAMMAD NAZIM UDDIN (Bengali: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) is a writer and Translator of more than 26 novels..His original works are NEMESIS, CONTRACT, NEXUS, CONFESSION,JAAL, 1952: nichok kono number noy, KARACHI, RABINDRANATH EKHANE KOKHONO KHETE ASENNI and KEU KEU KATHA RAKHE. These six Thriller novels are highly acclaimed by the readers.
গতানুগতিক ধারার বাইরে লেখায় অবশ্যই বইটা প্রশংসনীয়। howdunit ক্যাগরিতে বাংলায় মৌলিক ক্রাইম থ্রিলার এর সংখ্যা বলা যায় অতি নগন্য। বেশ কিছু ভালো লাগার যায়গার ভেতরে ছিল ফাস্ট পেসড ক্যারেক্টার ডেভলপমেন্ট আর অন্য সিরিজের চরিত্র এখানে তুলে আনায়৷ তবে বেশ কিছু যায়গায় লেখকের তাড়াহুড়ো চোখে পরার মত ছিল। অনেকটা মনে হয়েছে তিনি বইটাকে কোনো ভাবেই ২৫০ পেজের উপরে যেতে দিবেন না, যার কারনে মূল প্লট এর ডেপথ যতটা গভীর আশা করেছিলাম ততটা পাই নি। তবুও বলব এটি লেখকের অন্যতম আন্ডাররেটেড একটি বই। আর অবশ্যই রিকমেন্ডেশন থাকবে থ্রিলার প্রেমীদের জন্য।
নিজের বিছানায় শোয়ার বা পুরোনো জিনস পরার সুযোগ পেলে আপনার কেমন লাগবে? ভালো-মন্দ ছেড়ে দিন। প্রথমেই যে অনুভূতিটি জাগবে তা হল স্বস্তি আর আরামের। 'রবীন্দ্রনাথ এখানে...'-র সিকুয়েল পড়ে ইস্তক চিন্তায় ছিলাম। নাজিম উদ্দিন সাহেব গেলেন কই? তাঁর নাম ভাঁড়িয়ে অন্য কেউ কি ফিল্ডে নেমেছে? এই বইটা পড়ে মনে স্বস্তি আর আরামের ভাবটা হইহই করে ফিরে এল। বিশ্বাস হল, এ বই কোনো গোস্ট রাইটার নয়, তিনিই লিখেছেন। গল্পে কোনো মারপ্যাঁচ নেই। ক্রাইম থ্রিলার পড়ে মাথায় গিঁট পাকানো জনতা সহজেই বুঝে ফেলবে কত ধানে কত চাল, মানে অ্যালিবাই কীভাবে সাজানো হয়েছে। কিন্তু এই বই পুরো 'আহা!' হয়ে গেছে লেখকের অনন্য চরিত্রচিত্রণ, সংলাপ, ছোট্ট-ছোট্ট হাস্যপরিহাস আর বৈপরীত্য সৃজনের দক্ষতায়। জাল নয়, এ একেবারে আসল নাজিমুদ্দিন ম্যাজিক। সুযোগ পেলেই পড়ে ফেলুন।
একজন খুনী। একজন ভিক্টিম। একজন পার্সন অফ ইন্টারেস্ট।
একটি অ্যালিবাই। একটি মোটিভ। একটি অপরচুনিটি।
কে খুনী আর কে ভিক্টিম তা বোঝার জন্য এই ছয়টা জিনিসের রক-সলিড উত্তর থাকাটাই ছিল যথেষ্ট। কিন্তু এখানে তেমনটা হল না। এখানে ... ছিল একজন পোড়খাওয়া গোয়েন্দাও!
কেএসকে নিয়ে আপনার প্রথম বই কি না জানি না, তবে চরিত্রটি ইউনিক। অসাধারণ লেগেছে আপনার আগে জন্ম দেওয়া আর সব চরিত্রের (বয়েসে ছোট হলেও তারা কেএসকের বড় ভাই এই সূত্রে :P ) মতই।
কিন্তু আমরা কি করে নিশ্চিত হব তিন আর দুইয়ে পাঁচ, নাকি দুই আর তিনে পাঁচ? :) "জাল" বইটি শুরু করে শেষ পর্যন্ত না এসে এটা নিশ্চিত করে বোঝার উপায় ছিল না।
তারপরও আরও একটা প্রশ্ন ছিলঃ কিভাবে? :)
একদম শেষ পাতা পর্যন্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজে যেতে হয় এমন একটি বই পড়ার মজাই আলাদা। কেএসকে বেচারার সাথে নাম-ঘটিত জটিল মনস্তত্ব আমারও আছে অবশ্য। বেশ মজা পেয়েছি বেচারার আচরণে। ওই অনুভূতিগুলো আবার আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও কি না :P
এমন একটা বই পাঠকদের উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদিও অনেক দেরী করে পড়া হল :(
ব্যারিস্টার রুহিন মালিক আটকে গেছেন। কয়েকদিন আগেই ফেসবুকে ট্রেন্ডিং ছিলো একটি কথা। মানুষ কীসে আটকায়?
জাল। অন্তর্জাল থেকে শুরু করে আরো বহুকিছুতে মানুষ আটকায়। তবে প্লেবয় রুহিন আটকে গেছেন এমন এক সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রের জালে যা থেকে ছুটতে না পারলে তাঁর মৃত্যুদন্ড অথবা যাবজ্জীবন নিশ্চিত।
রফিকের মার্ডারের সময় কিছুটা মাতাল কিংবা ইংলিশে যাকে বলে টিপসি, এরকম অবস্থায় ছিলেন রুহিন। গুলি চলেছে তার-ই লাইসেন্সকৃত পিস্তল থেকে।
অতীত তিক্ততাপূর্ণ সম্পর্কের ঘটনাপ্রবাহ থেকেই রুহিনকে জালে আটকেছেন মাহবুব। এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন।
তবে সমস্যা হলো মাহবুবের আছে কঠিন অ্যালিবাই। ঘটনা ঘটার সময় তাঁর অ্যাপেডিক্সের অপারেশন চলছিলো। এ অবস্থায় ব্যারিস্টার রুহিনের বয়ানই বা কেন বিশ্বাস করতে যাবে পুলিশ কিংবা ডিবি?
কেএস খান। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লিখা বিখ্যাত 'রবীন্দ্রনাথ সিরিজ' এ তদন্ত কর্মকর্তা নুরে ছফার গুরুর ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে তাকে। এ উপন্যাস আরেকটু আগের টাইমলাইনের। যখন 'বাংলাদেশের শার্লক হোমস' নামে খ্যাত মিস্টার খানের বয়স প্রায় মধ্য চল্লিশের ঘরে।
অদ্ভুত এই কেএস খানের সরনাপন্ন হতে হয় রুহিনকে। বর্তমানে অপরাধবিজ্ঞান পড়ান ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের অধিকারি এক সময়ের জাদরেল ডিবি কর্মকর্তা কিন্তু এক ধরণের নির্লিপ্ততায় ভুগা এ চরিত্র। উপন্যাসে ইন্টারেস্টিং এই ডিটেক্টিভ জড়িয়ে পড়েন সত্যানুসন্ধানের কাজে।
প্রথমে ব্যারিস্টারকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে 'না' করে দেয়া খান সাহেব কেন আবার এই কেইসে সহযোগিতা করছেন? কারণ এরকম জটিল রহস্যের তদন্ত আগে কখনো কেএস খান পর্যন্ত করেন নি।
অপারেশন কিন্তু ঠিকই হয়েছিলো মাহবুবের। শারিরীকভাবে তাঁর সম্ভবই না এরকম ঘটনা ঘটানোর। কেএস খান অবশ্য ব্যারিস্টার রুহিনের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেলে তদন্ত কর্মকর্তা আমিনুরকে সব তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে সেই রুহিনকেই অ্যারেস্ট করানোর কর্মে।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অন্যতম সেরা লেখা 'জাল' আমার মতে। ক্রাইম ফিকশন পড়ার সময়ে যেরকম প্রত্যাশা থাকে একজন পাঠকের তা আমার ক্ষেত্রে পূরণ হয়েছে এ উপন্যাস পাঠে। পুরো নভেলে প্রথম থেকে রিডারকে গ্রিপ করে রাখার বিষয় তো ছিলোই, তাছাড়া কেএস খান সহ কয়েকজন বেশ ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টারের দেখা পাওয়া যায়। বিশেষ করে সাইকো চরিত্রটি মনে খানিকটা অস্বস্তি জাগানিয়া ছিলো।
রবীন্দ্রনাথ সিরিজের তৃতীয় বইয়ে আশা করছি কেএস খান থাকবেন। ঢাকার কথ্য ভাষায় কথাবার্তা বলা, নির্লিপ্ত, অত্যন্ত তীক্ষ্ম দৃষ্টির অধিকারি এবং পড়ুয়া এ গোয়েন্দার উপস্থিতি আমার কাছে দারুন লেগেছে।
বই রিভিউ
নাম : জাল লেখক : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০১৩ দশম মুদ্রণ : ফেব্রুয়ারি ২০২৩ প্রকাশক : বাতিঘর প্রকাশনী প্রচ্ছদ : ডিলান জনরা : থ্রিলার রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ
❝ জাল ❞ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের থ্রিলার ঘরানার একটি উপন্যাস। রুহিন মালিক। তরুণ ব্যারিস্টার।এক আসন্ন গোধূলি বেলায় তার মোবাইল ফোনে অপরিচিত নাম্বার থেকে একটা কল আসে। বরাবরের মতোই এই কলকারীও তার ক্লায়েন্ট। তবে কলকারী ক্লায়েন্ট তাকে তার চেম্বারে দেখা না করে নিকটস্থ একটা কফি শপে দেখা করতে বললে রুহিনের প্রথম প্রথম একটু খটকা লাগলেও তা আমলে না নিয়েই রাজি হয়ে যায়। নির্দিষ্টি সময়ে কফি��পে ক্লায়েন্টের জন্য অপেক্ষা করে তরুণ ব্যারিস্টার। কিন্তু কলকারী নির্দিষ্ট সময়ে আসেন না। পরবর্তীতে তাকে পুনরায় কল করে ডাকা হয় কফিশপের পিছনের একটা নির্জন, পরিত্যক্ত, সরকারি পার্কে। সেখানে যেতেই তার উপর অতর্কিতে হামলা করে বসেন আগন্তুক ক্লায়েন্ট। তারই বন্দুক দিয়ে তাকে বার বার মাথায় আঘাত করা হয়। এক পর্যায়ে ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠে তিনি মাটিতে বসে পড়েন। জ্ঞান হারানোর আগে যাকে দেখতে পান, তাকে দেখার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না তরুণ ব্যারিস্টার।
এদিকে পর পর তিনটে গুলির শব্দ শুনে টহলদার গাড়ির এসআই শরিফ শব্দের উৎসের খোঁজ করে পৌঁছে যাব সেই পার্কে। ওয়াকিটকির মাধ্যমে বনানী থানার ওসি মোয়াজ্জেম সাহেবকে খবরটা পৌঁছে দেন এসআই শরিফ। সবাই এলে জানা যায় লাশটা ব্যবসায়ী রফিক হাওলাদারের। ঘটনাস্থল থেকে মাতাল অবস্থায় পাওয়া যায় ব্যারিস্টার রুহিনকে। তারই বন্দুক থেকে দুটো গুলি করা হয় রফিককে।কিন্তু রুহিনের দাবি খুনটা সে করেনি। খুনটা কে করেছে তাকে সে চিনে।রুহিনের দাবি খুনটা করেছে তাদের পুরনো শত্রু মাহবুব চৌধুরী।খোঁজ নিয়ে জানা যায় যখন খুনটা হয় তখন মাহবুব সাহেবের অ্যাপেনডিক্সের অপারেশন হচ্ছিল। মাহবুব চৌধুরীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়ায় রুহিনকে অ্যারেস্ট করা হয়।
পরেরদিনই রুহিন জামিন নিয়ে জেলের বাইরে আসে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে। তার দৃঢ় বিশ্বাস খুনটা মাহবুব সাহেবই করেছেন।এটা তাকে প্রমাণ করতে হবে, কিন্তু কিভাবে!!!
নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে, কোনো উপায় না দেখে, পুরনো এক পুলিশ বন্ধুর থেকে পুলিশের সাবেক ইনভেস্টিগেটরের ব্যাপারে জানতে পারে রুহিন।নিরূপায় হয়ে ভদ্রলোকের শরণাপন্ন হন তিনি। ভদ্রলোকের নাম কেএস খান। তার ক্যারিয়ারে এমনকি রিটায়ার্ডের পরে ও নাকি কোনে অমীমাংসিত কেস নেই। কেসের ব্যাপারে সব শুনে কেএসকের কেমন যেন গোলকধাঁধা লাগে!!
প্রথমে রাজি না হলেও পরবর্তীতে কেসটির ব্যাপারে কৌতুহলী হয়ে তরুণ ব্যারিস্টারের কনসালটেন্ট হিসাবে কেসটা হাতে নেন পুলিশের সাবেক ইনভেস্টিগেটর। তদন্ত শুরু হলে বেরিয়ে আসে কিছু অতীত,অতীতের শত্রুতা,অতীতের জয়—পরাজয় আর অপূর্ণ প্রতিশোধের এক কাহিনি। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ নেই মাহবুব সাহেবের বিরুদ্ধে।
শেষ পর্যন্ত কী রুহিন নির্দোষ প্রমাণিত হয়,নাকি সে খুনের দায় থেকে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে মিথ্যার আশ্রয় নেয়? কেএসকে কী কেসটার সত্যতা জানতে পেরেছিলেন,নাকি কেসটার গোলকধাঁধায় হারিয়ে ফেলেন নিজেকে?এই কেসটা কী কেএসকের জীবনের অমীমাংসিত একটা কেস হিসাবে থেকে যায়,নাকি সে শেষ পর্যায়ে জানতে পারে আসল খুনির ব্যাপারে?
মার্ডার মিস্ট্রি ভালো লাগে আমার সবসময়ই। হোক সেটা নাটক, সিনেমা, কিংবা বই। কাহিনি হিসাবে পছন্দ হয়নি খুব একটা। একেবারেই সোজাসাপ্টা কাহিনি। অযথাই টানা। অনেক নামডাক-এ যে এক্সপেকটেশন ছিল তার তুলনায় বেশ কম পেয়েছি। পড়তে মজা লেগেছে যদিও কেএসকে ক্যারেক্টার টার জন্য। এত ফাস্ট কিভাবে আলমোস্ট ২৪০ পেইজ পড়া শেষ বুঝলাম না!
আর কেএসকে কে ভালো লাগলেও এরকম ক্যারেক্টার ইদানীং অনেক পাই আসলে। গোয়েন্দা/সাইকিয়াট্রিস্ট রা কি এমনই উদাসীন, ফিলোসফার হন নাকি সবসময়? উনি ক্রিমিনলজি পড়ান, প্রায়সময়ই অসুস্থ থাকেন, ওনার কুড়িয়ে আনা কাজের ছেলে আছে, উনি ফিলোসোফিক্যাল কথাবার্তা বলেন, ওনার অবজারভেশন পাওয়ার সেই, উনি অনেক কেইস এই টাকা নেন না...
টেনে আনার জন্য দুঃখিত, কিন্তু একটু মিসির আলী মিসির আলী গন্ধ লাগেনা? 😉
বাংলাদেশের বই নিয়ে আমার বেশি লেখা নেই । এই অভ্যেসের পেছনে আমার যা দোষ তা আমার পছন্দের বইয়ের সংখ্যার চেয়েও কম । হ্যাঁ, আমি মূলত থ্রিলার পড়তে পছন্দ করি । ঐটাই আমার পছন্দের সাহিত্য শাখা(genre, এটার উচ্চারণ যনরা ), কবিতা বাদ দিয়ে ধরুন । তবে বাতিঘর প্রকাশনী আমার মত ইংরেজি না জানা ছেলেদের জন্য ভালো ব্যবস্থা করেছে । যে কোন ভালো বইয়েরই আজকাল বাংলা অনুবাদের সংস্করণ পাওয়া যায় । রকমারি ডট কম এ গেলে সার্চ দিলেই হয় । আমাদের স্কুলে থাকতে কত কষ্ট করে ইংরেজি গুলো পড়তে হত । অনুবাদক হিসেবে শুরু করলেও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এখন পুরোদস্তুর লেখক । এ পর্যন্ত ছয়টা থ্রিলার লিখেছেন । 'জাল' তার পাঁচ নম্বর বই । আগের চারটি একই সিরিজের, এটি আলাদা । নতুন কোন সিরিজ শুরু হল কিনা বলতে পারছি না এখনই । তবে শুরুটা একেবারে মন্দ হয়নি এটা বলাই যায় ।
গল্পটা ঘুরে রুহিন মালিক নামে এক তরুণ, লেখকের ভাষায় "প্লেবয়" ব্যারিস্টারকে কেন্দ্র করে । ভদ্রলোক এক ক্লায়েন্টকে সাহায্য করতে গিয়ে নিজেই খুনের দায়ে ফেঁসে যায় । আধা মাতাল অবস্থায় পুলিশের ( উচ্চারণ পোলিস ) কাছে আটকা পড়ে যায় । কিন্তু এতবড় একজনকে ধরতে পুলিশের বাধে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা ঠিকই আছে । কিন্তু সিনে অন্য কারো থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় তাকেই মূল আসামী ধরে পুলিশ আগানোর কথা চিন্তা করে । এ অবস্থায় ব্যারিস্টার মালিক শরণাপন্ন হন খোদাদাদ শাহবাজ খান বা কে এস খানের । এই ভদ্রলোক একজন অবসরপ্রাপ্ত ডিবি কর্মকর্তা । সারা বছর তার কোন না কোন অসুখ লেগে থাকে, বই থেকে বোঝা যায় তার সাথে তার বউয়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে, যদিও এখনো প্রতিদিন কথা হয় তাদের মধ্যে । তার ফাইলে কোন অসমাপ্ত কেইস নেই। এজন্যই মালিক তার কাছে যায় । এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এখন পুলিশে ক্রিমিনলজি পড়ান । তার ছাত্র আমিনুলের কাছেই এই কেইসটা শেষ পর্যন্ত যায় । যা হোক, খান এই কেইস টা নেয় ।
প্রথম থেকেই মালিক বলতে থাকে খুনটা করেছে মাহবুব নামে তার একটা পুরনো শত্রু, ঠিক তার শত্রু নয় যাকে খুন করেছে, রফিক সাহেব যিনি মালিকের বন্ধু, তার শত্রু । কিন্তু পুলিশের কাছে এইটা বিশ্বাসযোগ্য হয় না কারণ ঐ সময় মাহবুব হাসপাতালে অপারেশনের জন্য ভর্তি ছিল । এই প্রেক্ষাপটে উপন্যাস শুরু হয় । ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব বা উত্তরা ক্লাবের বর্ণনা দেয়া হয়েছে । আমি জানি না এটা সঠিক কিনা, যাওয়া হয় নি ওদিকটায় কখনও । যা হোক থ্রিলার হিসেবে মূল্যায়ন করতে গেলে এটা ভালো নম্বর পেয়েই পাশ করবে, যদিও এ প্লাস পাবে না ।
খুনের ঘটনাটার বর্ণনা শেষ দিকে বড্ড একপেশে মনে হয়েছে । অনেক ক্ষেত্রেই কিন্তু অনুমান করা গেছে ঘটনা প্রবাহ । এটা হতে পারে আমার অনেক থ্রিলার পড়ার কারণেও । আর কিছু ভুল তথ্য দেয়া আছে । একটার উদাহরণ দিচ্ছিঃ নিক কার্টার নামে একজন লেখকের কথা বলা হয়েছে এই গল্পের একটা কথোপকথনে । আসলে নিক কার্টার কোন নির্দিষ্ট লেখকের নাম নয় । এটা একটা ছদ্মনাম । কম করে হলেও ২৬১ টা বই প্রকাশিত হয়েছে এই নামে । আমিও দু একটা পড়েছি, ওতটা খারাপ নয় যেভাবে বলা হয়েছে । উদ্দিনের মত থ্রিলার লেখকের কাছে এসব ছোটখাটো ভুলও গ্রহণযোগ্য না । বাতিঘর কোন লেখাই বোধ করি সম্পাদনা করেনা । না হলে এত বানান ভুল থাকতে পারে না । এটা শুধ্রানর সময় এসে গেছে ।
থ্রিলার লিখতে গিয়ে তিনি মালিককে দেখিয়েছেন "প্লেবয়" হিসেবে, কিন্তু উনি রোমান্সের বর��ণনা দিতে গিয়ে কার্পণ্য করেছেন, ভয় পান নি এটা বলাই যায় যেহেতু উনার অনুবাদ (যেমনঃ [si]গডফাদার[/si] ) বইগুলোতে উনি ঠিক অনুবাদই করেছেন । এটার ক্ষেত্রে আরও একটু মনোযোগি হতে পারতেন লেখক । আগের বইগুলোতে পুরনো ঢাকা বা দিল্লির বর্ণনা যেভাবে দিয়েছেন এই বইয়ে নতুন ঢাকার কথা ওভাবে বলেন নি । হয়ত উনি নিজের কমফোর্ট জায়গা থেকে বের হয়েছেন । খানের কথাগুলো অনেক জায়গাতেই ঠিক হয়নি । মানে এভাবে আমাদের কেউ চলিত ভাষা বলে না, তবে উনি এটা আমাদের সাহিত্যে আনার সাহস দেখিয়েছেন এটার জন্য প্রশংসা পেতেই পারেন ।
কাহিনিতে নতুনত্ব খুব আছে বলা যাবে না। একজনের খুনের দায় আরেকজনের উপর চাপান পুরনো কথা । কিন্তু পড়তে গেলে ভালই লাগবে । আমাদের দেশের খুব বেশি বই এই ক্ষেত্রে লেখা হয়নি । উনি একাই লিখছেন মোটামুটি, এবং বেশ ভালই লিখছেন । সাহসি হতেই গিয়েও হন নি, যেমন উনা লেখায় সরকারি কেউ কখনোই দোষী থাকেন না । এই কথাটা এই বইয়ের জন্য নয়, বরং উনার আগের চারটি বইয়ের জন্যেও প্রজোয্য । লেখকের কৃতিত্ব হচ্ছে ছোট একটা ঘটনা নিয়ে এত বড় বই লিখলেও কখনোই পড়তে খারাপ লাগবে না। আমি এক রাতেই শেষ করেছি । উনার সব বইয়েই নারী চরিত্র গুলো একদম সাদামাটা কেন জানি । অন্তত তাদের উপস্থাপন আরেকটু আকর্ষণীয় হতেই পারত । অনেক বইয়েই আছে । তবে একটা কথা না বললেই না, মাহবুব যেভাবে ব্যারিস্টারকে ফাঁসিয়েছেন তা উপভোগ্যই । লেখকের কৃতিত্ব দিতেই হবে, কোন উপায় নেই । তাছাড়া খানের চরিত্রটা লেখক ইচ্ছে করেই পুরোটা বিকশিত করেন নি মনে হয় । পরের বইয়ের জন্য রেখে দিয়েছেন । ডাক্তার লুবনার চরিত্রটা বিশ্বাসযোগ্য করা যেত আরও । তবে আবারো সবাইকে বলে দেই আমি তুলনা করছি মারিও পুজো, ডেভিড বালদাশি বা ফ্রেডরিক ফরসাইথদের মত লেখকদের সাথে । উদ্দিনকে আরও সময় দিতে হবে । যদি আমাকে কেউ বলত তুমি উদ্দিনকে একটা সাজেশন দাওঃ তাহলে আমি বলতাম এবার সময় হয়েছে প্রেক্ষাপট আরও বড় করার । লেখার সময় আরেক্তু বেশি সময় নিয়ে রিসার্চ করার । অনুবাদের থেকে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে এখন নিজের আলাদা অভিজ্ঞতা করার সময় হয়েছে ।
'জাল' বইটি ভালো লাগার মত বই । কাহিনি ভালো, প্রেক্ষাপট ভালো, তবে নতুন মোড় নেয়ার কথা খুব কম ভেবেছেন এবার লেখক । একটা বইয়ে এটা হতেই পারে । হাজার হোক নতুন সিরিজ । অপরাধের মত লেখাতেও একটা কথা প্রজোয্য ঃ ভুল সব চেয়ে বেশি প্রথম বারেই হয় । চরিত্র চিত্রায়ণও ভালো । পৃষ্ঠা গুলো উল্লেখ করার মত ভালো । বইটির মলাটের পিছন দিক ভালো, সামনের দিকে আরও ভাবার সুযোগ ছিল । দাম সাধ্যের মধ্যেই । ভাষা সাবলীল, ঢাকার বাইরের লোকদের কয়েকটি জায়গায় দুবার পড়তে হতে পারে, নাও পারে । সব মিলিয়ে এক কথায় বইটি উপভোগ্য । পড়তে পারেন দ্বিতীয়বার না ভেবেই । খারাপ লাগবে না একথা বলে দিতে পারি ।
এই থ্রিলার পড়া শুরু করে সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলাম কেএস খান কে দেখে। রবীন্দ্রনাথ সিরিজের বাইরেও তার অস্তিত্বের কথা জানা ছিল না। এই গল্পের প্লটটা বেশ সলিড বলতে হবে, ফাঁক ফোকর খুবই কম। ঢিমেতালে কাহিনী এগিয়ে গিয়েছে, জট পাকিয়েছে সময়মত। শুধু উপসংহারটা বড্ড অনুমেয় লেগেছে। ওভারঅল, বেশ ভালো একটা থ্রিলার। ব্যক্তিগতভাবে, কেএস খান কে আমার বেশ ক্যারিশম্যাটিক লেগেছে। এটার সিকুয়াল বের হলে ভালো হবে।
খারাপ না(আবার তেমন ভালোউ না)।খুব যে থ্রিল পেয়েছি তা বলা যায় না।সাধারণ একটি কাহিনি(ফ্ল্যাপ থেকে পড়ে নিতে পারেন)।গল্পে চরিত্রও হাতে গোনা কয়েকটা।কিছু কিছু জায়গায় মনে হয়েছে জোর করে লম্বা করা হয়েছে কাহিনি। যাই বলেন,কেস্কে চরিত্রটাকে মনে ধরেছে!আরেকটা বই এই চরিত্রটা ছিল।খুব সম্ভবত "কেও কেও কথা রাখে"।(কেও জানলে ভুল শুধরে দিবেন)
জটিল থ্রিলার এর বাইরে হাল্কা কিছু পড়ার ইচ্ছা হলে বইটি রেকমেন্ড করবো।(অবশ্য থ্রিলার বই পড়ার উদ্দেশ্য থাকলে হাল্কা কিছু কেনই বা পড়বেন 😉)
মোটামুটি, সেরকম থ্রিল পেলাম না। তাছাড়া খুনির কথা তো বইয়ের শুরুতেই বলে দেওয়া হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ সিরিজ পড়ার পর নাজিমউদ্দীনকে নিয়ে যেই আশার পারদটা উঠে গিয়েছিলো, সেটা নামতে বেশি সময় লাগেনি৷ তবে কে.এস.খান চরিত্রটা বেশ ভালো লেগেছে!
খোদাদাদ শাহ্বাজ খান ওরফে কেএস খান ডিবির একজন অকাল অবসরপ্রাপ্ত অফিসার। শরীরটা বেচারার ভাল থাকেনা দেখে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু ঢেঁকি যেমন স্বর্গে গেলেও ধান ভানে ঠিক তেমনি অবসরের পরেও কেএস খান পুলিসদের আর ডিবি ডিটেকটিভদের সাহায্য করেন। তা ব্যাপার হইল কেএস খানের কাছে অদ্ভুত এক কেস আসে। স্বনামধন্য ব্যারিস্টার রুহিন মালিককে পাওয়া গেল এক মৃতদেহের পাশে। মৃত ব্যক্তি রুহিনের সাবেক বন্ধু। রুহিনের দাবী সে খুন করে নাই। কিন্তু সে খুনীকে চেনে। সমস্যা হচ্ছে যাকে সে খুনী হিসেবে চিহ্নিত করেছে সেই লোক আবার খুনের সময় ছিল অপারেশন থিয়েটারে। তাইলে রুহিন কি খুনী?
কথা হচ্ছে লেখকের বরাত খারাপ। ঠিক এই মোডাস অপারেন্ডির একটা বই সদ্য পড়ে শেষ করেছি। তাই আগেই বুঝে ফেলেছি কিভাবে আকামটা হয়েছে। কেএস খান ক্যারেক্টারটা ভালই। যদিও উনার সম্পর্কে অনেক কিছুই খোলতাই করে জানা যায় নাই। এই ক্যারেকটারটাকে আরেকটু ভাল করে ডেভেলপ করলে ভাল হত। বরং রুহিন মালিকের ক্যারেকটারকে ভাল করে গড়ে তোলা হয়েছে। অন্যান্য চরিত্রের অবস্থাও তথৈবচ। মনে হল লেখক বইটা আর বড় করতে চাননি দেখেই এই অবস্থা। সে যাই হোক, টিনএজ পাঠকদের জন্য হয়ত বইটা অনেক ভাল। আমি ক্যাজুয়াল ভঙ্গিতে পড়ে শেষ করে ফেলেছি।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন এর বই যেমনই হোক পড়তে বসলে শেষ করে আর উঠা যায় না, জাল বইটি এটিও তেমন একটি বই। বইটির গল্পটা সাদামাটা, কয়েক পৃষ্ঠা পড়ার পর বুঝে যাবে কে খুন করেছে, কেনো খুন করেছে, খুনের মোটিভ কি? সবই বুঝা যাবে। কিন্তু কিভাবে খুন করেছে সেটা বের করাই বইটির আসল গল্প। সবমিলিয়ে কে.এস.খান কে ভালো লেগেছে, এটার আরো কয়েকটি বই বের করা যেতেই পারত...
রিভিউঃ তুখোড় ব্যারিস্টার রুহান মালিক দেশের বাহিরে থেকে পড়াশুনা শেষ করে বনানীতে চেম্বার দেন। এক পড়ন্ত বিকেলে তাঁর মক্কেল মামলার ব্যাপারে চেম্বারের বাহিরে দেখা করতে চাইলে উনি রাজি হন, এবং সেটাই তাঁর জীবনে কাল হয়ে দ��ঁড়ায়। তিনি ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি, তাকে আহত করে, তারই রিভেলবার দিয়ে খুনি মাহবুব খুন করে তাঁর আরেক বন্ধু ব্যারিস্টার রফিককে। কিন্তু যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে রুহান সাহেবকে মদ্যপ অবস্থায় এবং তারই পিস্তলের গুলিতে রফিক সাহেব খুন হন বলে স্বভাবতই পুলিশের সন্দেহভাজন তালিকায় নাম উঠে যায় রুহান সাহেবের। কিন্তু তিনি দমবার পাত্র নন। জীবনের কোন মামলায় ব্যর্থ না হওয়া অবসরপ্রাপ্ত ডিটেকটিভ কে এস খান এর সাহায্য প্রার্থনা করেন। মামলাটি একটু অন্যরকম হওয়ায় এবং এই মামলায় নিজের আগ্রহ তৈরি হওয়ায়, এই মামলায় কে এস খান নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। এবং কাজ করতে গিয়ে তিনি অদ্ভুত সব তথ্য পেতে থাকেন। নিজের ছাত্র আমিনুলও এই মামলায় কাজ করতে ছিল। দুজনই সমান্তরালে কাজ করতে থাকেন। ক্রসচেক করেন নিজেদের মধ্যে পাওয়া তথ্যগুলো। কিন্তু কোন কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছিলো না।
এদিকে কে এস খানের বাসায় আশ্রিত আইনস্টাইন আর তিনি, সদ্য হারানো মোবাইল ফোনের চিন্তাতেও বিভোর ছিলেন। কোন ক্লু মিলাতে পারতেছিলেন না। হঠাৎ এক সকালে আইনস্টাইনেরএকটা কাজ, দারুণভাবে নাড়া দেয় তাকে। আস্তে আস্তে খোলাসা হতে থাকে ভিতরের কাহিনী।
কেন একজন মানসিক রোগী, আরেকজন মানুষের সাহায্য নিয়ে, কিভাবে একটা খুনের মাস্টারপ্ল্যান বানান এবং আপাতদৃষ্টিতে সকল লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে, সন্দেহের উপরে থাকেন! কিন্তু কিছু সূক্ষ্ম ভুল, আর কে এস খানের চুলছেড়া বিশ্লেষণ, অভিজ্ঞতার কাছে খুনির সকল চেষ্টা ভেস্তে যায়...
আবারও লেখকের গল্পে একদম ডুবে গিয়েছিলাম। পুরো 222 পাতার গল্প একদিনেই সেরে ফেলেছি। এই গল্প থ্রিলার হলেও প্রথম থেকে শেষ অব্দি দৌড়াদৌড়ি নেই। মানে এ ওকে তাড়া করছে, সে পালাচ্ছে, এমন না। এই গল্প সম্পূর্ণই এক মস্তিষ্ক যুদ্ধের গল্প। একটি ইনভেস্টিগেশনের অঙ্ক না মেলার ঝামেলা। এবং শেষ অব্দি সেই ফাঁকটা ভরাট করা, এই নিয়েই গোটা বই। রুদ্ধশ্বাস সাসপেন্স থ্রিলার না হলেও এই বই ক্রাইম থ্রিলার হিসাবে খুবই সফল। এই বইয়ের পিছনে ঢালা সময় নিয়ে কক্ষনো আফসোস হবে না এটা দাবি করতে পারি। বেশ মন ভালো হয়ে গেল পড়ে। 🥰
PS: বন্ধু মৃন্ময়কে ধন্যবাদ বইটি পড়তে দেওয়ার জন্য।
চরিত্র বর্ণনা কয়েক জায়গায় খাপছাড়া মনে হয়েছে। পাঠকের পক্ষে ক্লাইম্যাক্স আঁচ করে ফেলার সম্ভাবনা থাকায় কিছুদূর গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। বাক্যে কর্তার অনুপস্থিতি থাকায় যখন একাধিক চরিত্র থাকে তখন কে কী করছে সেটা বোঝা দুষ্কর হয়ে যায়। প্লটটা ছোটোগল্পের, টেনে উপন্যাস বানাতে গিয়ে কয়েক জায়গায় ঝুলে গেছে। টুইস্টটা ইন্টারেস্টিং ছিলো। গোয়েন্দাকে আর দশজনের চেয়ে আলাদা করতে গিয়ে যা বানানো হয়েছে, সেটা অস্বস্তিকর আর অনাবশ্যক মনে হয়েছে।
এটা সত্যিই ভালো লাগে নি। কোনো টুইস্টই পেলাম না।দুর্বল প্লটে লেখা। সহজ সরল কাহিনীকে শুধু শুধুই টেনে লম্বা করা হয়েছে। শুরুটা আশানুরূপই ছিল কিন্তু এই ফ্লো আর শেষে গিয়ে ঠিক থাকে নি। আমি শক্ত কোনো টুইস্টই আশা করেছিলাম, আশাহত হলাম।
জাল নামের বইটা পড়লাম। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের। তার বেশীরভাগ বই-ই কোন না কোন সিরিজের অন্তর্ভুক্ত। এটা সেরকম নয়। তাই আলাদা আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। শেষ করার আগেই শুনলাম এটারও নাকি সিকুয়াল বের করতে চান তিনি। হাহ!
গল্পটার আলাদা একটা বৈশিষ্ট আছে। সেটা হলো থ্রিলার গল্পে সাসপেন্স বাড়ানোর জন্য প্রচুর অ্যাঙ্গেজমেন্টের দরকার হয়। মানে বহুত চরিত্র আর দৃশ্যের সংমিশ্রন। অনেকসময় পাঠকেরই মনে রাখা দায় হয়ে দাঁড়ায় যে কী ঘটলো? আমি দেখতাম আমার থেকে বয়সে বড় এক ভাইয়া (আসলে আঙ্কেল) ছোট নোট করতেন বই লেখার সময়। জিজ্ঞেস করলে বলতেন, ‘আরে বইলোনা এত প্যাঁচঘোচ যে ভুইল্যা যাই।‘ তো এই বইতে এরকম ‘প্যাঁচঘোচ’ নেই যে আপনি ভুইল্যা যাইবেন। বরং এখানে খুবই সাধারণ ভাবে কয়েকজন চরিত্র নিয়েই পুরো গল্প শেষ হয়েছে। এটা এখন অনেক সাসপেন্স থ্রিলার সিনেমায় দেখা যায়। খুবই সীমিত চরিত্র কিংবা দৃশ্য দিয়ে পুরো সিনেমা শেষ হয়ে যায়। এরকম ঘরনার আমার পছন্দের সিনেমা হলো ‘দ্য এক্সাম।‘ এখানে পুরো এক রুমেই সিনেমা শেষ। এক্সট্রা ক্যারেক্টার তো নাই-ই। কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কম চরিত্র থাকলে সেগুলো সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে রূপ নেয়। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লেখা ‘জাল’ বইটা সেরকম নয়।
তবে এই বইতে একটা চরিত্র আছে কেএসকে। এই চরিত্রটা তার অন্য কিছু বইতেও আছে। এই চরিত্রেরও আলাদা কিছু বৈশিষ্টও আছে। উনি ডিবির একজন অবসর নেয়া সদস্য। উনি আলাভোলাও না আবার ছয় ফুটের স্মার্ট ডিটেকটিভও না। একজন বাস্তবিক গোয়েন্দা বলা যেতে পারে। তাও আবার অবসরে। তো যাইহোক, এই চরিত্র ছাড়াও গল্পের আরেকটা সুন্দর বৈশিষ্ট্য আছে।
সেটা হলো, বরাবরের মতই গল্পের প্রায় শুরুতে একটা খুন হয়। এই ব্যাপারটা খুবই নাটকীয়। গল্পকে মজবুত করেছে। কিন্তু গল্প যেভাবে আগাচ্ছিলো আর আগেই বলেছি ক্যারেক্টারের কমতিতে একজনের বেশী সাসপেক্ট ছিলোনা। এরকম গল্পের ক্ষেত্রে দুটো অপশনই থাকে। হয় টিভি সিরিয়ালের মত উড়ে এসে জুড়ে বসার মত কোন কিছু ঘটবে। আর নয়তো শেষে গুবলেট পাকিয়ে যাবে। কারণ অন্য ক্যারেক্টারে মুভ করার সুযোগ নেই। কিন্তু নাজিম উদ্দিন মশাই এমন কিছু করেছেন না গুবলেট পাকিয়েছেন, না আকাশ থেকে কিছু ফেলে সমাধান করেছেন।
সিম্পলের উপর গর্জিয়াস এই থ্রিলারটি পড়তে বাতিঘর প্রকাশনী থেকে সংগ্রহ করুন। ২৪০ পৃষ্ঠার বই মাত্র ২৬০ টাকা। একদাম না; বরং দামাদামি চলবে। আজই কিনুন।
************* *********
I read the book called ‘Jaal’ (Net) by Mohammad Nazim Uddin. Most of his books belong to under any series. It's not like that. So I read with different interest. Before I finished, I heard that he also wants to make a sequel. Huh!
The story has a different feature. That is a lot of engagement is needed to increase the suspense in a thriller story. It means a combination of many characters and scenes. It is often the responsibility of the reader to remember what happened. I saw a brother older than me (actually Uncle) making small notes while writing a book. When asked, he would say, ‘Hey, So many intricate that I forget everything’. So there is no such ‘panchghoch’ (Bengali word of ‘intricate’) in this book that you will go to forgot everything. Rather, the whole story ends with a few characters in a very simple way. It is now seen in many suspense thriller movies. The whole movie ends with a very limited character or scene. My favourite movie in this genre is ‘The Exam.’ The movie ends here in the whole room. There is no extra character. But in most cases, if there are fewer characters, they turn into psychological thrillers. The book 'Jaal' written by Mohammad Nazim Uddin is not like that.
However, KSK has a character in this book. This character is also in some of his other books. This character also has some different features. He is a retired member of the DB. He is neither artless nor a six-foot smart detective. Can be called a real detective. When the retirement period. So anyway, there is another nice feature of the story besides this character.
That is, as always, there is a murder almost at the beginning of the story. This matter is very dramatic. Has strengthened the story. But as the story unfolded and as I said before, there was not more than one suspect in the lack of characters. In the case of such stories, there are two options. Either something ‘To be quick to occupy’ like TV serial. Or at the end story will flub. Because there is no opportunity to move to another character. But Mr Nazim Uddin has not done anything like that, he has not made gossip, nor has he solved anything by throwing something from the sky.
Gorgeous on Simple (Bangla local proverb) Collect from Batighar Prakashani to read this thriller. A 240-page book costs only 280 BDT. Not a fixed price; Rather, Bargaining will continue. Buy today.
হাসপাতালের করিডোর ধরে হেঁটে চলেছে দু জোড়া পা। তরুন সার্জন মামুন হাতঘড়িতে সময়টা দেখে নিলেন, তারপর ঢুকে পড়লেন রোগীর কেবিনে। তাকে অনুসরণ করলো নার্স মেয়েটি। একটু পরেই রোগীর অপারেশন, প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন নার্সকে ডক্টর মামুন।
বনানীর এক অভিজাত ক্যাফেতে প্রায় মিনিট বিশেক হলো বসে আছে রুহিন মালিক। তার মতো বিখ্যাত ব্যারিস্টারের পক্ষে ক্লায়েন্টের জন্য এভাবে অপেক্ষা করাটা একেবারেই সাজে না। কিন্তু ভদ্রলোক ফোনে এমন করে অনুরোধ করলেন, গোপনে দেখা করতে চান। বোঝাই যায় জটিল কেসে ফেঁসে গেছেন। এধরণের মক্কেলরা বেশ সাঁশালোও হয়, রাজি হয়ে যাওয়ার সেটাও একটা কারণ।
জায়গাটা পরিত্যক্ত, ময়লা আবর্জনা আর বন্ধ হয়ে যাওয়া একটা পার্কের নিভু নিভু সোডিয়াম আলো পরিবেশ ভুতুড়ে করে তুলেছে। ব্যারিস্টার আবছা অন্ধকারে এগিয়ে যাচ্ছিলো পার্কের গেটের দিকে, পেছন থেকে কে যেন কলার চেপে ধরলো। 'একদম নড়বি না!' বললো ফ্যাসফ্যাসে উন্মাদের মতো কন্ঠস্বর। ঘাড়ের পেছনে পিস্তলের নলের ছোঁয়া পেল রুহিন মালিক, কন্ঠস্বর বলে উঠলো 'তোকে নিয়ে একটা খেলা খেলবো আজ!'
মাথার পেছনে প্রচন্ড দুটো আঘাত করা হলো, জ্ঞান হারিয়ে টলে পড়ার আগ মূহুর্তে ব্যারিস্টার এক ঝলক দেখতে পেল কন্ঠস্বরের মালিককে। প্রবল বিষ্ময়ে কেবল বলতে পারলো 'আপনি..!'
পরপর তিনটে গুলির আওয়াজে প্রকম্পিত হলো বদ্ধ গলি।
খুনের দায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাকে ধরলো, সে দাবি করলো খুনটা করেছে এক মানসিক রোগী৷ কিন্তু সেই অভিযুক্ত রোগীর রয়েছে শক্ত অ্যালিবাই। অদ্ভুত হত্যাকান্ডের রহস্যভেদ করার জন্য মাঠে নামলেন ডিবির পাক্তন ইনভেস্টিগেটর কেএস খান। যাঁর ঝুলিতে এখনো একটিও অমীমাংসিত কেস নেই। তিনি কি পারবেন এই রহস্যের কিনারা করতে?
খোদাদাদ শাহবাজ খান ওরফে কেএস খানকে পেয়েছিলাম লেখকের রবীন্দ্রনাথ সিরিজে। সেখানে তার চরিত্রটি ক্ষুদ্র পরিসরে পরামর্শদাতা বড়ভাইয়ের। 'জাল' উপন্যাসে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ছিলেন কেএস খানই। চল্লিশ পেরিয়েছেন, প্রায় বারো মাসই অসুস্থ থাকেন। স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ ঘটেছে, শারীরিক কারণে ডিবির চাকরিটাও ছেড়েছেন, তবে সত্যান্বেষণ তাকে ছাড়েনি। ছোটখাটো প্রতিটি বিষয়ের ব্যাখা করেন কেএসকে যুক্তির সাহায্যে। চলিত ভাষায় কথা বলা উদাসীন মানুষটার দিন কাটে বই পড়ে, পাশাপাশি ডিবির নতুন রিক্রুটদের ক্লাস নেন। মাঝেমধ্যে ছাত্ররা আসে কেসের ব্যাপারে পরামর্শ নিতে। কেএসকের চরিত্রটির মাঝে অনেকটাই মিসির আলির ধাঁচ পাওয়া যায়।
রুহিন মালিকের চরিত্রটি ছিল অভিজাত সমাজের নীতিবিবর্জিত মানুষের। 'প্লেবয় ব্যারিস্টার' যার তকমা, সেই সুদর্শন ব্যক্তিটি অল্পবয়সেই সাফল্যের মুখ দেখেছে। বয়স তার সাঁইত্রিশ, তবে জিম করা সুগঠিত দেহের মানুষটার প্রতি মেয়েরা সহজেই আকৃষ্ট হয়। রুহিন মালিকও তার সদ্ব্যবহার করতে ছাড়ে না, বয়স্কা বিবাহিতা কি তরুণী ছাত্রী কোনোটাতেই অরুচি নেই। নিজের সাফল্য আর চেহারা নিয়ে বেশ আত্মতুষ্টিতে ভুগলেও, কেএসকের জীবনদর্শন একসময় কিছুটা দোলা যায় আপন নীতিতে চলা ব্যারিস্টারকে।
লেখকের অন্যান্য উপন্যাসের মতো এখানেও ছিল মদ্যপানের ছড়াছড়ি। সেটা বিদেশী থ্রিলারের অনুকরণ নাকি ঢাকার অভিজাত শ্রেণী দুইবেলা বিয়ার - হুইস্কি পানে অভ্যস্ত, আমার জানা নেই। স্বস্তির বিষয় এই যে, এ গল্পে অপ্রাসঙ্গিক গালিগালাজ অনেকটা কম ছিল।
'জাল' উপন্যাসে লেখক রহস্যটাকে জমিয়ে তুলতে চেয়েছেন একটু ভিন্নভাবে৷ সন্দেহভাজন চরিত্র ও খুনীকে শুরু থেকেই সনাক্ত করে, খুনটা কিভাবে হয়েছে সেই দিক থেকে পাঠককে ভাবিয়েছেন। কিন্তু কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রথমেই পাঠকের সামনে এনে দেওয়াতে রহস্যটা জমাতে লেখক ব্যর্থ হয়েছেন অনেকাংশেই। খুনীর কর্মকান্ড অতিমাত্রায় অবশ্যম্ভাবী, যে চমকগুলো আনার চেষ্টা করেছেন সেগুলোও নিয়মিত রহস্য গল্পের পাঠকদের কাছে পানসে লাগবে।
কেএসখানের চরিত্রটি সাধারণভাবে ভালো লাগলেও, তাঁর বুদ্ধির ঝলকানি গল্পে সেভাবে ফুটে ওঠেনি। মোবাইল চুরির যে পার্শ্ব-রহস্যের অবতারণা লেখক করেছেন, তা-ও তেমন জোরদার ছিল না। খান কেন যে সেটার সমাধান করতে পারছিলেন না সেটাই আশ্চর্য। লেখক উপন্যাস সাজাতে চেয়েছেন 'হু-ডান-ইট' ঘরানার বাইরে, তাই পাঠককে জানিয়ে দিয়েছেন কে খুনী। কিন্তু গল্পে কেএসকের মতো তুখোড় গোয়েন্দা যদি অন্যসব সন্দেহভাজন এবং সম্ভাবনাকে বাদ দিয়ে একগুঁয়ে ভাবে চিন্তা করেন, সেটা তাঁর বুদ্ধিমত্তা বলা যায় না।
বাতিঘর প্রকাশনীর বইয়ের মুদ্রণপ্রমাদের যে কুখ্যাতি, তার থেকে 'জাল' ছিল মুক্ত। বাঁধাই ও পৃষ্ঠার মান সন্তোষজনক। ছোটখাটো কিছু খটকা বাদে, গল্পের প্লট সাজিয়ে ছিলেন লেখক চমৎকার ভাবে। শুরুটা দারুন রোমাঞ্চকর ছিল। শেষ পর্যন্ত রহস্যটাকে সেভাবে জমাতে পারেননি, তবে এই প্লটে আরো ভালো কিছু পাঠককে উপহার দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
কাহীনী সংক্ষেপঃ তরুন "রুহিন মালিক" উদীয়মান ব্যারিস্টার। মোটামুটি ভাবে অল্প বয়সেই বেশ খ্যাতি পেয়ে গেছেন ব্যারিস্টার। তার হাতে কেস মানেই সে কেস জিতার সম্ভাবনা অধিকাংশ তার হাতেই।
সাধারনত এমন নামী ব্যারিস্টার নিজের চেম্বারের বাইরে কনসালট্যান্ট না হলেও এবার একটা অদ্ভুত কারনে এক ক্লায়েন্ট এর আবদারে বাইরে দেখা করতে রাজি হলেন।সালেহিন নামক একজন ক্লায়েন্ট তাকে বাইরে দেখা করতে বলেছেন।প্রথমে রাজি না হলেও দারুন কোন কে��� হাতে পাবেন ভেবে রাজি হয়ে গেলেন।
ক্লায়েন্ট এর সাথে দেখা করতে গিয়ে পড়েন মহা বিপদে।বনানীর একটা পার্কে তার বন্ধু রফিক সাহেবের খুনি হিসেবে তাকে সাব্যস্ত করা হয়।কারন খুবই সাদাসিদে,খুনের জায়গায় তাকে ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায়নি,এছাড়া খুবই ক্লোজ রেঞ্জে তার ই পিস্তল থেকে গুলি করে খুন করা হয় তার বন্ধু ব্যবসায়ী রফিক সাহেব কে। এদিকে পুলিশ তাকে লাশসহ উদ্ধার করার তিনি "মাহবুব"নামের এক লোককে দোষী সাব্যস্ত করেন।কিন্তু তদন্ত করে দেখা গেলো খুনের সময় মাহবুব ছিলো অপারেশন থিয়েটারে তার এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করাতে। একজন অপারেশন এর রোগি কিভাবে খুনি হতে পারে? তাহলে কি মদ্যপ অবস্থায় "রুহিন মালিক" অন্যকিছু দেখেছেন? জামিনে পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে "রুহিন মালিক" সাবেক ইনিভেস্টিগেটর "কেএস খানের" শরনাপন্ন হোন নিজেকে নির্দোষ প্রমান করতে।"কেএস খান" সাবেক ডিবি অফিসার যার কোন অমিমাংসিত কেস নেই। এদিকে তদন্তের ভার পড়েছে "কেএস খানের" ছাত্র আমিনুল ইসলামের হাতে।ছাত্র শিক্ষক দুজনের মধ্যে আসল সত্য কে উন্মোচন করেন আগে তাই দেখার বিষয়।
পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ বইটি পড়তে গিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন জেগেছে যা লেখক লিখেনি।পাঠক হিসেবে কয়েকটা ধারনা করা গেলেও সব পরিষ্কার নয়।যেমন: ১।সালেহীন নামক লোকটা কে গল্পে আনা হলেও খুনের পর আর সালেহীন নামক ব্যাক্তিটাকে পাওয়া যায়নি।কিংবা কে সালেহীন সেজেছিলো,আর কিভাবে তাও পরিষ্কার না। ২।ডাক্তার মামুন খুনিকে সাহায্য করেছে কিন্তু তাকে সন্দেহ করে তার বিয়ে ভেংগে গেছে কিংবা তার ঢাকাতে বাড়ি নেই এমন তথ্য কিভাবে পেলো তাও পরিষ্কার নয়। ৩।শেষের দিকে খুনি জানায় "রফিক" কে অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে।কিন্তু এর বিস্তারিত আর জানা যায় নি। ৪।খুনিকে ধরার পর শেষ করে দেওয়াটা বিরক্তিকর। কারন কিছু ব্যাপার পাঠকের মনে জানতে চাওয়ার উদগ্রিব আনে। আরো অনেক ছোট বড় লুপ পেয়েছি।স্পয়লার দিতে চাইনাই তাই সেগুলা এখানে উল্লেখ্য করতে পারিনি।আমি যে বইটি পড়ছি তা বইটির নবম মুদ্রন। বাতিঘরের বই হিসেবে ভুল থাকাটা পাঠকমহল মেনে নিয়েছি।কিন্তু থ্রিলার সম্রাটের বইয়ে নয়টা মুদ্রনেও এতো ভুল!
এছাড়াও কয়েকটা জায়গায় কিছু কিছু কাহীনি কেমন যেনো শুধু শুধু ই এসেছে।খারাপ লাগলেও বলতে হচ্ছে লেখক চাইলেই এই অযাচিত ব্যাপারগুলো না এনে তার বইয়ের ঘাটতিগুলো পূরন করতে পারতো।কিন্তু অযাচিত ব্যাপারগুলোর কারনে মনে হয়েছে কেবলই ইচ্ছাকৃত ভাবে পৃষ্ঠা বাড়ানো হয়েছে। এই ব্যাপারগুলোয় বেশ আশাহত হয়েছি। বইটি টান টান উত্তেজনার না হলেও,বইয়ের গল্প টা আর একটু ঘষামাজা করলে সুন্দর হতো আরো। বইটি পড়তে গিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া হয়েছে।পাঠক অতিমাত্রায় থ্রিল আশা করবেন না,তবেই বইটি সুখপাঠ্য হবে।
একটি খুন। পাওয়া গেল লাশ। তার সাথে পাওয়া গেল সম্ভাব্য খুনি প্রখ্যাত ব্যারিস্টার রুহিন মালিককে। কিন্তু তার দাবি খুন করেছেন অন্য একজন, যিনি তাকে ফ্রেম করতে চাইছেন। তদন্ত করে জানা গেল, রুহিন মালিক যাকে খুনি বলছেন, খুনের সময় তার অপারেশন হচ্ছিল। কেসটি চলে আসে ডিবির কাছে। আর কৌতুহলবশত এই কেসের সাথে জড়িয়ে পড়লেন সাবেক ডিবি ইনভেস্টিগেটর কেএস খান। তিনি কি পারবেন এই রহস্যের জাল ছিন্ন করতে?
কেএস খান নামটা পরিচিত মনে হচ্ছে না। কোথায় যেন শুনেছি... হ্যাঁ, মনে পড়েছে, নূরে ছফার গুরু, যার কাছ থেকে সে বিভিন্ন কেসে সাহায্য নেয়। নূরে ছফাকে চেনেন না? আরে সেই লোকটা যে মুসকান জুবেরিকে এখনও ধরতে পারেনি। মুসকান জুবেরিকেও চেনেন না? আরে মিয়া মুসকান জুবেরি হইলো রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি হোটেলের মালকিন। আপনে দেহি মিয়া দিন-দুনিয়ার কোন খবরই রাখেন না! যাক হোক আপনে এবার বুঝছেন? ধুর মিয়া,বুঝলে বুঝপাতা না বুঝলে তেজপাতা-এইটা মনে রাখেন আর আসেন আমরা জাল উপন্যাসে ফিরি।
যদিও এই উপন্যাসে কেএস খানকে ভালো লেগেছে, কিন্তু সমস্যা হইলো গিয়া এরকম চরিত্র ইদানীং অনেক পাওয়া যায়। তিনি ক্রিমিনোলজি পড়ান, প্রায়ই অসুস্থ থাকেন, তার কুড়িয়ে আনা কাজের ছেলে আছে, তিনি দার্শনিক কথাবার্তা বলেন, তার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা অসাধারণ, তিনি কেসের জন্য টাকা নেন না..... মনে হচ্ছিল যেন মিসির আলীর গোয়েন্দা ভার্সন-ই হলেন কেএস খান। আমার সরল মনের একটি প্রশ্ন, গোয়েন্দা বা সাইকিয়াট্রিস্টরা কি সবসময় এত উদাসীন এবং দার্শনিক হন?
প্রথমত, লেখক নাজিম উদ্দিন সাহেবকে ক্লাসিক হু ডান ইট থেকেজাল উপন্যাসকে হাউ ডিড ইট পদ্ধতিতে লিখেছেন এর জন্য তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বাংলা সাহিত্যে থ্রিলার জনরায় একটি নতুন দিকে লেখার চেষ্টা করার জন্য তাকে সাধুবাদ জানাই।
এবার আসি গল্পের মূল আকর্ষণ হাউ ডিড ইট, অর্থাৎ অপরাধটি কীভাবে সংঘটিত হয়েছে তার ব্যাপারে। সেটি একেবারেই সহজ-সরল। আমার মতো বোকাও গল্পটি অর্ধেক পড়ার আগেই তা ধরতে পেরেছে, এটি বড়ই হতাশার। এছাড়া কেএস খানের মোবাইল চুরি যাওয়ার সাবপ্লটটি একেবারেই অপ্রয়োজনীয় ছিল। গল্পের চরিত্রগুলোর তেমন গভীরতা ছিল না। এছাড়া লেখক বারবার একই কথা ভিন্নভাবে বলেছেন, যার ফলে বইয়ের পৃষ্ঠা বেড়েছে আর বেড়েছে গল্পটি পড়ার সময় আমার বিরক্ত।
সবশেষে, কেএস খানের ভাষায় গল্পটি পুরাই ভোগাস, একেবারে শিশার মতো, তাই না রুহিন মালিক?
সার-সংক্ষেপ: স্বনামধন্য ব্যারিস্টার রুহিন মালিক খুনের অভিযোগে হাতেনাতে গ্রেফতার হলো পুলিশের কাছে। লাশের পাশেই থাকে মদ্যপ অবস্থায় পাওয়া যায়। তার গুলি দিয়েই খুন করা হয়। কিন্তু তার দাবি খুনটা সে করেনি বরং করেছে মানসিক বিকারগ্রস্ত মাহবুব নামের একজন। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সে দ্বারস্থ হয় অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দা কে এস খান এর কাছে। ঘটনা যতই এগোতে থাকে ততই সন্দেহ যায় ব্যারিস্টার এর উপর, নাহয় সবেমাত্র অপারেশন করা মাহবুব কী করে খুনটা করে। খুন করার সময়ে সে ছিল হাসপাতালে। তবে কী রুহিন মালিক নিজেকে বাচাঁতে রহস্যের জাল বুনছে?
পাঠপ্রতিক্রিয়া: সবার আগেই! কে এস খান চরিত্রটি রবীন্দ্রনাথ সিরিজ এর বাইরে কোনো বইয়ে আছে এটা জেনে খুব খুশি হলাম! এই চরিত্রটি খুব প্রিয় আমার। এখানে কে খুনী,কার খুন হয়েছে সব স্বাভাবিকভাবেই বলা। তারপরেও খুব ভালোভাবেই থ্রিলটা ধরে রেখেছে।বেশী এক্সপেক্ট করলে হতাশ হবেন কারণ এটি 'হু-ডান-ইট নয়, হাউ-ডান-ইট জনরার বই।আসল থিমটা সেখানেই।আর প্বার্শ মোবাইল চুরির কাহিনীটা বেশ মজার ছিল।😄
এর আগে কোনো বইয়ের টুইস্ট এত্তো দ্রুত ধরে ফেলতে সক্ষম হইনি...🗿
কাহিনীতে কে এস খানের উপস্থিতির কারণে বেশ উপভোগ করেছি, তবে থ্রিলার বই হলেও ঐরকম থ্রিলিং লাগলো না। এভাবে কাহিনীতে কোনো প্লটহোল চোখে পরেনি, কাহিনী এগিয়ে গেছে আপন গতিতে।
এন্ডিংয়ের টুইস্ট সম্প��্কে আগে থেকে একেবারে নিশ্চিত থাকায় কোনো থ্রিলই অনুভব করিনি। এছাড়া বাকি দিকগুলো নিয়ে বললে, গল্পে কোনো মারপ্যাঁচ নেই। ক্রাইম থ্রিলার পড়ে ঝাঁঝরা হওয়া পাঠক সহজেই বুঝে ফেলবে আলু কিভাবে ভর্তা হলো।
তবে থ্রিলার সম্রাটের অনন্য ক্যারেক্টার ডেভেলমেন্ট, সংলাপ, ছোট ছোট হাস্যপরিহাস মিলে বইটাকে করে তুলেছে সুপাঠ্য।