সাম্ভালার খোজে ড: কারসন চলে এসেছেন দিল্লিতে, তার সাথে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে ড: আরেফিন এবং দুই ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক। দিল্লি থেকে যাত্রা শুরু করেছে দলটা, ম্যাকলডগঞ্জ হয়ে নেপাল পাড়ি দিয়ে যাত্রা করেছে তিব্বতের উদ্দেশ্যে। তাদের পিছু নিয়েছে এক অ্যান্টিক শিকারী। সাম্ভালার আসল ম্যাপ নিয়ে আব্দুল মজিদ ব্যাপারী ওরফে লখানিয়া সিংও চলেছে তিব্বতের উদ্দেশ্যে। তার চিরশত্রু অমরত্বের আরেক দাবিদার মিচনারও চলেছে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে। অন্যদিকে রাশেদ জড়িয়ে পড়েছে আরেক অ্যাডভেঞ্চারে। বন্ধুকে বাঁচানোর জন্য পর্তুগীজ জলদস্যু তিবাওয়ের গুপ্তধন উদ্ধারে নেমেছে। সাথে আছে পর্তুগীজ জলদস্যুর বংশধর লরেন্স। পাহাড়ের ত্রাস সঞ্জয় সিংও আছে পেছনে।
সাম্ভালার খোঁজ কি পাওয়া যাবে? কি হবে তিবাওয়ের বিশাল গুপ্তধনের? জানতে হলে পড়ুন "সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা"।
Shariful Hasan hails from Mymensingh, Bangladesh. He has spent his childhood by the banks of Brahmaputra river. He completed his Masters in Sociology from University of Dhaka and is currently working in a renowned private organization.
Shariful's first novel was published on 2012 titled Sambhala. With two other books, this captivating fantasy trilogy has received widespread acclimation both within and beyond the borders of Bangladesh. The Sambhala Trilogy was translated in English and published from India.
Although his inception consisted of fantasy and thriller, he has later worked on a variety of other genres. These works have been received fondly by the Bangladeshi reader community. Lot of his works have also been published from different publications in West Bengal.
Award- Kali O Kalam Puroshkar 2016 for 'অদ্ভুতুড়ে বইঘর'
প্রকৃত রেটিংঃ ৩.৫ আগের যাত্রাতেই বুঝে গেসিলাম যে লেখক দৃশ্যগুলো লেখেন অতিমাত্রায় নাটকীয়ভাবে তাই এবারে সেই ব্যাপারটার সাথে মানিয়েই নিয়েছি বাধ্য হয়ে। ওই ব্যাপারে আর কিছু বলব না।
অনেক লেখকই সিরিজ বা ট্রিলজির ১ম বইটা তে সাফল্য পেয়ে গেলে পরের বইগুলো অকারনে টেনে হিঁচরে বড় করেন। আর তখন বই হয়ে যায় স্লো। শরিফুল হাসানও দেখলাম একেবারেই তার ব্যাতিক্রম নন। এই বইটা আগেরটার থেকে বেশ স্লো ছিল।
কিন্ত একটা বিষয় বুঝলাম না। লেখক সাহেব কি অকারনে বারবার এমন করে রাশেদ এর কোনো বন্ধুকে বিপদে ফেলে রাশেদকে কোনো না কোনো রহস্যের মধ্যে জড়াতেই থাকবেন? মানে এই এক ঘটনা বারবার ভাল লাগে নাকি? ছেলেটাকে একটা সুস্থ জীবন কি দেওয়া যায় না? আর কেউ যদি বলে যে রাশেদ একজন প্রধান চরিত্র তাই তাকে বারবার ঝামেলায় জড়াতেই হবে তাহলে বলব সেক্ষেত্রে রাশেদের এর চরিত্রে পর্যাপ্ত প্রধান চরিত্রসুলভ গুণাবলির ভয়াবহ অভাব। আমার কাছে অন্তত তাকে সাধারন একটা চরিত্রের বেশি কখনোই মনে হয়নি।
যাক অভিযোগ অনেক হল। কিন্তু এটা স্বীকার করতেই হবে যে শরিফুল হাসানের লেখনি অসাধারন। দেশীয় ফ্যান্টাসিকে তিনি অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন বলতে হয়, আর সেইজন্য তার বড় করে একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য।
আগের বইটা যেখান থেকে শেষ হয়েছিল এবারের মূল কাহিনী তার এক বছর পড় থেকে শুরু হয়েছে। কিন্তু এবার লেখার স্টাইল যথেষ্ঠ ভাল লেগেছে আমার। গত বই এর ক্যারেকটাররা সবাই আছে, সাথে শুধু যুক্ত হয়েছে আরেকজন রহস্যময় মানুষ মিচনার । একসাথে চারটা ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয়েছে সমান্তরাল ভাবে। বার বার পয়েন্ট অফ ভিউ পরিবর্তন করা হলেও অতটা চোখে পড়বেনা জিনিসটা। তবে দুইজন ছাড়া এবারও বাকী চরিত্র গুলোর ভিতরে ঢুকতে পারি নাই। সমগ্র বইটা জুড়ে একটা আল্টিমেট অ্যাকশন এর প্রস্তুতি নিলেও শেষ এ গিয়ে সেরকম অ্যাকশন পাই নাই। মস্ত বড় একটা ক্লিফহ্যাঙ্গার এ গিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছে বইটা । কিন্তু রাশেদ এর কাহিনীটা একটু খাপছাড়া লেগেছে । এই খন্ডকাহিনীর শেষটাও অতটা চমকপ্রদ লাগে নাই। হয়ত সামনের বই এ এর কিছু খোলাসা হবে। এই নিয়ে দুইবার তিনতলা থেকে লাফ দিয়েও বেচে গেল ব্যাটা!!!!! আর একটা জিনিস একটু দৃষ্টিকটু লেগেছে যে, অনেক বানান ভুল!!!! একটু বেশীই। কিন্তু সর্বোপরি পড়ে ভালই লেগেছে বইটা, যদিও কি যেন মিসিং মিসিং । হয়ত সেটা ফিনিশিং এর অভাব ই হবে। কিন্তু এখনও যে ট্রিলজির একটা বই বের হওয়া বাদ আছে!!!! আশা করি সেটা এই বইগুলার অপূর্ণতা গুলো পূর্ণ করতে পারবে। সুন্দর একটা ফিনিশিং দেখতে পাব এই অসাধারণ যাত্রার লেখকের কাছে এটুকুই আশা। ৩.৫ স্টার দেয়া যেত বইটা কে :) কিন্তু সেই সুযোগ তো নাই, তাই ৩ স্টার।
বিশাল একখান ক্লিপ হ্যাঙ্গার মনটা বড্ড খারাপ করে দিল। ২৫০ পাতা ধরে যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তার পুরোটুকুই জিইয়ে রাখা হলো শেষ যাত্রার জন্য। একটু ছিটেফোটা অ্যাকশন এ খন্ডে প্রাপ্য ছিল বইকি।
বহু কষ্টে শেষ করলাম। সাম্ভালা ধরেছিলাম পাঠকপ্রিয়তা আর হাইপ দেখে।কিন্তু আমার প্রত্যাশায় রীতিমতো পানি ঢালা হয়েছে, পড়ার পর এমন মনে হচ্ছে।প্রথম খন্ড পড়ার পর যদিও বিরক্তি আসে নি, কিন্তু এই খন্ড পড়ার পর মাঝে মাঝে খুবই বিরক্ত লেগেছে। একেকবার একেক কাহিনীতে ঢুকে পড়া, বিশেষ করে রাশেদের কাহিনীকে বেহুদা মনে হয়েছে। যাইহোক ধরেছি যখন শেষ করবো। হ্যাপি রিডিং💙
খুব একটা ভালো লাগল না। এক মিচনার ছাড়া আর কারো কাহিনি খুব একটা এগিয়েছে বলে মনে হলো না। দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ল, ঘুমিয়ে নিল, ঘুমাতে হবে– এই লাইনগুলো যেন একটু বেশিই।
আরো একটা ভুল খুব চোখে পড়েছে– ১৭১-৭২ পৃষ্ঠায়। প্রথমে বলা হলো, রাশেদ ঘুম থেকে উঠে মোবাইলে সময় দেখেছে। আবার কয়েক লাইন পর বলা হলো, সে গতরাতেই মোবাইল ফেলে এসেছে মাইক্রোবাসে। বর্ণনাটা এমন ছিল যেন লেখক কিছুক্ষণ গুলিয়ে ফেলেছেন সবকিছু!
শেষ পর্যন্ত যে টানটান 'মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতা'র অপেক্ষায় ছিলাম, সেখানেও হতাশ। দেখি, শেষ যাত্রায় কী আছে...
ট্রিলজির দ্বিতীয় বই ভালো হলেও তৃতীয়টা, তথা গোটা গল্পটা ঝুল হতেই পারে: অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ। কিন্তু তবু, প্রথম খণ্ডের মতোই টানটান, কিছু ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি ঘটনাবহুল, এবং কিছু অত্যন্ত রহস্যময় চরিত্রের সৃজণে থ্রিলারের কাঠামোর মধ্যেও একটা অন্য রকম স্পর্শ আনা, এই কারণগুলোর জন্য আমি এই খণ্ডটিকে সশ্রদ্ধ চার তারা দিলাম। কাল শুরু করব তৃতীয় যাত্রা।
গারবেজ! লেখক খুব সম্ভবত গল্পের বিল্ড আপ করতে চেয়েছিলেন এই অংশে। কিন্তু পুরোটা জুড়ে অযথা পৃষ্ঠাবৃদ্ধি ছাড়া কিছুই চোখে পড়লো না। গল্পগুলোও কেমন খাপছাড়া।
এই পার্টটাও ভালো লাগলো । তবে প্রথম পার্টের তুলনায় কিছুটা কম। এখানে থ্রিল এলিমেন্টটা তুলনামূলক কম। এবার তৃতীয় পার্টে ধরতে হবে দেখা যাক সর্বোপরি কেমন লাগে!
ট্রিলজির ধারণাটা এই কারণেই আমার পছন্দ নয়। একটা ট্রিলজি বানাতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, লেখক শুরু আর শেষটা ভালোভাবেই করছেন, কিন্তু মাঝের বইটা একটু হালকা হয়ে যাচ্ছে। সাম্ভালার বেলাতেও ঠিক সে ঘটনাই ঘটেছে। শুধুমাত্র ট্রিলজিটা শেষ করার জন্যই বইটা শেষ পর্যন্ত পড়া।
এই সিরিজটার মূল শুরু আসলে এই উপন্যাস থেকে। ডঃ কারসন ভারতে ফিরে আসেন সাম্ভালার খোজে। সাথে নেন বাংলাদেশের ডঃ আরেফিনকে আর ভারতের দুইজনকে। ঐদিকে রাশেদ আর তার বন্ধু রাজু বান্দরবনে ঘুরতে গিয়ে পেচায় যায় মাদক দলের সাথে যারা কিনা এক লুকানো গুপ্তধনের পেছনে পড়ে যায়। আব্দুল মজিদ ব্যাপারী নিজের ভোল পাল্টে লখানিয়া সিং নাম নিয়ে ঘ���পটি মেরে রয়েছিল ভারতের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সেইখান থেকে খুজতে বের হয় সাম্ভালা। এই বইটা মূলত ঘেটিস। যেহেতু শেষ বইটা পড়ে আমি রিভিউ দি���্ছি তাই এতটুকু জানি যে এটা না লিখেও সিরিজটা শেষ করা যেত। কিন্তু পাঠককুলের কিছু করার নাই। এটা পড়া লাগবেই। লেখকের লেখা চমৎকার। বর্ণনাভংগিমা সুন্দর। কিন্তু অনেক কাহিনি ডেড এন্ড কেন সেটা বুঝলাম না। রাশেদের গ্যাঞ্জামটা আজাইরা দেয়া হয়েছে বলেই মনে হল। প্রথমটা যেমন শেষ হয়ে গিয়েছিল, এটা তেমন নয়। শেষ করেই ইমিডিয়েটলি পরেরটা পড়া লাগবে। লরেন্স ক্যারেক্টরটা বেশ ভাল লাগলেও তার কন্টিনিউয়েশন নাই। যাই হোক, সব মিলিয়ে খারাপ লাগে নাই।
প্রথম বইয়ের তুলনায় মোটামুটি লেগেছে। খুব একটা ভাল না। লেখক ঘটনাকে খুব টেনেছেন অযথাই। কিছু কিছু জায়গা বেশ কনফিউজিং৷ সেসব চরিত্রের কিছু বর্ণনা কেন এনেছেন তা হয়তো পরের বইটা পড়লে বুঝতে পারবো। দেখা যাক।
সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় একটা খন্ড। ৬০ পেজের স্টোরিকে টেনে টেনে ২৯০ পেজ বানানোর কোনো প্রয়োজন ছিল না। তবে বরাবর এর মত শরিফুল হাসানের লেখনশৈলী ছিল দারুন! এই একটা জিনিসই আপনাকে বই শেষ করতে বাধ্য করবে।
আজব ঝামেলা এই বইয়ের পাঠ প্রতিক্রিয়া লেখা। এই বইটা সাম্ভালা সিরিজের একটা ফিলারের মত। পড়ব না বললেও চলবে না, কারণ এত তথ্য আছে যে এই ভাগটা না পড়লে পরেরটার গল্পে খেই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আসি কেমন লেগেছে তাতে - - -
ভালো দিক: 🔹লেখক চারখানা গল্প একসাথে চালিয়ে গেছেন। তারমধ্যে একটাতে আবার মাঝেমধ্যেই সেই বিশাল ইতিহাসের স্মৃতি ভ্রমণ আছে। তো সেই হিসাবে বেশ জমাটি। 🔹গোটা গল্পই অভিযান গোছের এত দিনে বুঝে গেছি। তবে এই বইয়ে দুদিকে দুখানা অভিযান একসাথে জুড়ে দেওয়া হয়ছে। এতে উত্তেজনা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। 🔹আগের ভাগের সর্বশক্তিমান নায়কের একজন যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী নির্মাণ করেছেন লেখক এবার। এটা নাহলে গল্প বেশ বোরিং হয়ে যায়। তো এবার আরও জমবে ব্যাপারটা।
খারাপ লেগেছে যা - - - 🔸মানছি লেখক দারুন জমাটি গল্প বলতে পারেন। কিন্তু এতক্ষণ ধরে ছুটে বেরিয়ে কোন ফলাফল না পেলে কর না খারাপ লাগে? 🔸গল্পের সাধারণ চরিত্রগুলোকে এত stamina দিয়েছেন চিন্তার বাইরে। খাওয়া দাওয়া নেই, দৌড় ঝাঁপ করছে, ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে নিচ্ছে একটু করে বেশ আবার recharged। ইয়ার্কি নাকি?
💠 সব মিলিয়ে বলব। সিরিজটা শুরু করে ফেললে বইটা পড়া ছাড়া আপনার হাতে কোন অপশন নেই। লেখককে নিয়ে মুখ খারাপ করলেও পড়তে হবে। তবে হ্যাঁ একটা জিনিস বলতে পারি কখনোই "প্রচুর হ্যাজাচ্ছে" মনে হবেনা। বর্ননা একদম vivid. আর তার সাথে আপনাকে বইয়ের সাথে চিটিয়ে রাখতেও সক্ষম। পড়াকালীন বিরক্ত হবেন না। শেষে গিয়ে যা বিরক্তি সব পাবেন। আমি তো atleast তাই পেলুম। এবার আপনি বুঝে নিন।
4 stars! It was almost like reading the 1st part, all those recaps were getting tiresome.Too many plot changes,at one point I was having a difficult time remembering who is going where.But in the end everything came together nicely.& I liked the Michner part most,it was a real surprise.All in all a pretty good book.
প্রথম পর্বের তুলনায় অনেক ধীর গতির। রাশেদের অংশ একেবারে ম্যাড়মেড়ে ছিল। কারসন আরেফিনদের অভিযানও চমকহীন। বানান ভুল ১ম পর্বের মতোই চোখে লাগে। বান্দরবানকে বান্দরবন লেখা জাতীয় ভুলগুলো সম্পাদনা করা যেতো।
গত এক সপ্তাহ প্রচুর ব্যস্ত ছিলাম৷ এত ব্যস্ততায় বই ঠিকভাবে পড়া হয়ে উঠেনি৷ আমার TBR লিস্টও কমপ্লিট করা হলো না৷ সাম্ভালা ২য় যাত্রা- বইটি দুদিনে শেষ করতে চেয়েও পারিনি৷ অল্প অল্প করে পড়ে গত রাতে শেষ করেছি।
গল্পটা আগের পর্বের মত অত টানেনি৷ এক কথা বারবার লেখাও ছিল না। তাই পড়তে ভালই লেগেছে। যে পর্যায়ে এসে গল্পটা শেষ হয়েছে তাতে শেষ যাত্রা না পড়ে খুব একটা শান্তি লাগছে না। তবে এর মধ্যে অন্য একটা বই পড়বো আগে৷ তারপর শেষ যাত্রা পড়বো।
শেষ যাত্রা কেউ পড়ে ফেললে আমাকে একটু জানাবেন যে পড়ে ভাল লাগবে কিনা। ভাল হলে ইমিডিয়েট শুরু করবো। 😊
সুখের সন্ধানে কত পথিক হেঁটেছে কত দূর! তবুও কি তারা পেয়েছে সুখ নামক অমৃতের সন্ধান? কবিগুরু বলেছিলেন, মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে,মানবের মাঝে আমি বাচিবার চাই। কিন্তু তিনি কি বাঁচতে পেরেছিলেন? নাহ! তুমি সুখ যদি নাহি পাও তবে সুখেরও সন্ধানে যাও, এই চরণটি পড়ার পরই মনের মাঝে একটা চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। পৃথিবীতে কি আদৌ কোনো জায়গা আছে, যেখানে শুধু সুখ আর সুখ ? মরে যাওয়া যেখানে অসম্ভব ? আছে কি? মৃত্যু প্রতি মুহুর্তে আমাদের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে- উক্তিটি করেছিলেন রেনেসা যুগের দার্শনিক মন্টাগেইন। গিলগামেশের মহাকাব্যে চার হাজার বছর আগে মেসোপটেমিয়ার রাজা গিলগামেশের সবচেয়ে কাছের বন্ধুর মৃত্যুর পর নিজের নশ্বর জীবন নিয়ে প্রশ্ন করেন , "আমাকেও মরতে হবে?" মৃত্যুকে জয় করবার সাহস তারও ছিল, কিন্তু মৃত্যু নামক চরম সত্যের কাছে তিনিও হেরে যান। মানুষ যদি মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে ওঠার চেস্টায় সফল হয় তখন তাঁর মন থেকে মৃত্যুভয় অন্তর্হিত হলে কালের পর কাল ধরে হাজারো অভিজ্ঞতা অর্জন, জন্ম, মৃত্যু, সামাজিক পরিবর্তন, সভ্যতার উত্থান ও পতনের হাজারও দৃশ্যও কিন্তু তার মনে তিক্ততার জন্ম দেয়ার ক্ষমতা রাখে। অনন্তকালব্যাপী ঘটনাসমূহ প্রত্যক্ষ করার পরেও সে বেঁচে থ��কতে চাইবে এই ভুবনে । তার কাছে সময় নির্লিপ্ত, অভিজ্ঞতা অসীম হবার কারনে সে উপলব্ধি করবে এভাবে বেঁচে থাকার মাঝে কোনো সুখ নেই। তখন সে বেঁচে থাকার সাথে সাথে অনাবিল সুখকে অর্জন করতে চাইবে। আজ পর্যন্ত কত সাম্রাজ্যের উত্থান পতন হয়েছে,কত ক্ষমতাধর চেঙ্গিস খান,মিশরীয় ফারাও, রাজাধিরাজ পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি করেছে বিশাল বিশাল সাম্রাজ্য। কত কালো তুফানের মত অগ্রসর হওয়া যোদ্ধাদের কালে কালে দেখেছে পৃথিবীর বাসিন্দা।আজ তারা কোথায়? মানুষ কোথায় আটকায়, জানেন? মানুষ আটকায় মৃত্যুতে।
মৃত্যু আর সুখের সন্ধানের কথা যখন কালো মেঘের মত জমে যায়,তখনই মনে প্রশ্ন জাগে পৃথিবীতে কি এমন জায়গা আছে যেখানে মরে যাওয়াই অসম্ভব? যেখানে মানুষ বাস করে চরম সুখে। কোথায় সে জায়গা, কীভাবেই বা যাওয়া যায় সেখানে? এতগুলো প্রশ্ন যখন মাথায় আসে তখন সকল প্রশ্নের উত্তর দিতেই একটা বইয়ের নামই সবার প্রথমে প্রকাশ পায়। সাম্ভালা !
সাম্ভালা আসলে কি? কোনো মিথ নাকি সত্য। কেনই বা এত মানুষ নিজেদের জীবনকেও বাজি রাখতে পিছু পা হচ্ছে না? উত্তরগুলো জানার জন্য আপনাকে পড়তে হবে শরীফুল হাসানের সাম্ভালা।
সাম্ভালা মূলত একটা ট্রিলজি। সুতরাং আমি পুরো ট্রিলজিকে তিনটি ভাগে বিন্যস্ত করে চরিত্রায়ন এর সাথে গল্পের সারসংক্ষেপ এবং পাঠ প্রতিক্রিয়া উল্লেখ করছি।
★ গল্পের সারসংক্ষেপ :
★ সাম্ভালা :
তিনি পৃথিবীর বুকে বিচরন করছেন হাজার বছর ধরে। তার স্মৃতিতে যুক্ত হয়েছে কত অভিজ্ঞতা। নিজেকেই আবিষ্কার করেন হরেক রুপে। কখনো রাজা সলোমনের বিলাসবহুল প্রাসাদে রানী সেবার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা পরিলক্ষিত করা, নেফারতিতির অপরূপ রূপে মুগ্ধ হওয়া, কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার, ফরাসী বিপ্লব, দুটি বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, ভারতের স্বাধীনতার সংগ্রাম - কতকিছুই দেখলেন এই জীবনে। তবুও তার জ্ঞানপিপাসা সামান্যতমও কমেনি। তার নতুন লক্ষ্য বরফে ঘেরা তিব্বত, সেখানে শিখতে চান লামাদের জাদুবিদ্যার কৌশল। সভ্যতার বয়স বাড়লেও আদৌ তার বয়স বাড়বে কীনা হয়তো তারও জানা নেই। তার কাছে গচ্ছিত আছে কিছু মূল্যবান সম্পদ। তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী। কীভাবে মৃত্যুকে জয় করলেন তিনি ?
ঢাকা শহরে আবির্ভাব ঘটেছে লুসিফারের আনুগত্য করা এক অদ্ভুত ব্যক্তির, যার লুসিফারকে খুশি করার জন্য দরকার রক্তের।নিজের স্বার্থ হাসিল করতে ক্রমে ক্রমে দল ভারী করছে সে। তার লক্ষ্য পৃথিবীর সবচাইতে শক্তিমান ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা।এর জন্য নিজের গুরুকে হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করেনি। তার কাছে রয়েছে অদ্ভুত এক বই !
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বিখ্যাত ব্যবসায়ীর চুপচাপ মায়াময় স্বভাবের ছেলে শামীম, মানসিক যন্ত্রনায় আচ্ছন্ন যার মন। তার অন্তরঙ্গ বন্ধু বলতে আছে শুধু রাশেদ আর লিলি। কোনো এক মাঝরাতে রাশেদের বাড়িতে আশ্রয় নেয় সে। দিন দুয়েক পরেই নিঁখোজ হয়ে যায় ।রাশেদের ঘরে থেকে যায় তার ব্যাগ।সেখানে আছে বিশেষ কিছু ! কিছুদিনের মধ্যে তার মুন্ডুহীন লাশ পাওয়া যায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে। কে মেরেছে তাকে? সন্দেহের তীরে বিদ্ধ হয় রাশেদ। রাশেদ কি পারবে সত্য প্রমান করতে? সে কি পারবে শামীমের খুনিদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে? তার হাতে আছে শামীমের দেয়া মুল্যবান সম্পদ, যার মুল্য সে নিজেও জানে না।
এশিয়া মহাদেশের আনাচে কানাচে ভ্রমণ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করা প্রত্নতাত্ত্বিক ব্রিটিশ গবেষক ড. কারসন বাংলাদেশের অলিগলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কোনো এক রহস্যের খোঁজে। পুরাকীর্তি বিভাগের নিমন্ত্রণে এদেশে আসলেও তার উদ্দেশ্য ভিন্ন। বড় বড় শহরে ছোট ছোট কান্ড ঘটতেই থাকে,এর সব কান্ড মিলে সৃষ্টি হয় মহাকান্ড ! তিনিও খুঁজে চলেছেন এক অব্যক্ত ইতিহাস,যা বদলে দিতে পারে জীবনকে।
★পাঠপ্রতিক্রিয়া :
লোভে পাপ,পাপে সাম্ভালা। কথাটা শুনতে অদ্ভুত লাগলেও সাম্ভালার খোঁজে রয়েছে কিছু লোভী পথিক। তবে সাম্ভালাকে কি লোভীরা খুঁজে পায়? সাম্ভালা বইটা শুরু করার প্রায় ৭০+ পেইজের পরেই পাঠক বুঝে যাবে সাম্ভালা কি? খুনের রহস্য দিয়ে শুরু হওয়া গল্পটির প্রথম দিকে ধীর গতি লাগলেও লেখকের লেখনী আপনাকে আটকিয়ে ফেলতে বাধ্য। সাম্ভালা বিশাল পরিধির কাহীনি আর সাম্ভালা ট্রিলজির প্রথম অংশটাকে বলতে পারেন ট্রেইলার। এই পর্বেই লেখক সাম্ভালার রহস্যকে ঘনীভূত করেছেন। ইতিহাস আর সময়ের পাশাপাশি চলার পরেও কলিশন দেখা না পাওয়ার দিকটা আমার ভালো লেগেছে। মনে হচ্ছিল আমি সময় ভ্রমণ করতে গিয়ে সময় চক্রে ফেঁসে গিয়েছি। কখনো হারিয়ে গিয়েছি ক্রিস্টোফার কলম্বাসের সাথে, চলে গিয়েছি ফ্রান্সের রাজা পঞ্চদশ লুই এর সাম্রাজ্যের অলিতেগলিতে আবার ফিরে এসেছি গ্রামে, গ্রামের চিরায়ত সৌন্দর্য করেছে মুগ্ধ , ফেঁসে গিয়েছি রাজধানীর যান্ত্রিকতায় , কখনো চলে গিয়েছি রাণী শেবার নগরে, গভীর চক্রান্তের অন্তিম পর্যায় স্বচক্ষে দেখতে। হঠাৎ করেই যেনো ফিরে এসেছি আবার চিরচেনা টিএসসিতে। কখনো আবার ঢাকার রাজপথে হেঁটে বেড়িয়েছি একা একা। আলাদা টাইমলাইনের কাহীনিগুলো একই সাথে এগোনোর ফলে দৃশ্যগুলো কল্পনা করতে সুবিধা হলেও কিছু ঘটনা কাকতালীয় লেগেছে।মনে হয়েছে না থাকলেও তেমন অসুবিধা লাগতো না। লেখকের সুন্দর বর্ননার ফলে ছোটখাটো প্লটহোলগুলোকে তেমন চোখে পড়েনি। কিছু জায়গায় মনে হয়েছে ফিজিক্সের সূত্র কাজ করেনি। গল্পের পরিসমাপ্তি পাঠকের মনে সাম্ভালা যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন রেখে যাবে। গল্পটা কয়েকটা টাইম লাইনে এগিয়েছে,ইতিহাস বর্নিত হয়েছে প্রচুর, তবে ইতিহাসগুলো যদি লেখক কল্পনার মিশেলে দারুনভাবে উপস্থাপন না করতেন তবে তা হয়তো কিছুটা বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়াতে পারতো।
পার্সোনাল রেটিং :৪.৫০/৫.০০
★ সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা-
ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরেছে সে,তার ঠাই হয়েছে অজানা এক দ্বীপে। তার নাম মিচনার,পর্তুগিজ শত্রুদের থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়েছে অজানার উদ্দেশ্যে। স্বপ্নে অদ্ভুত কিছু দেখার পরই তার মনে জেগেছে অদ্ভুত কিছুর আশা। নিজের অভ্যন্তরীণ শক্তিকে অনুভব করতে পারে সে। মিচনার খুঁজে চলেছে হাজার বছর ধরে হেঁটে চলা এক পরিব্রাজককে। পাকাপোক্ত প্রতিপক্ষ! কথাটা ভাবতেই আনন্দ লাগে তার। রক্তের নেশায় মাতোয়ারা হয়ে সে ছুটে চলেছে লক্ষ্য পূরনের উদ্দেশ্যে।
ড.আরেফিন যুক্ত হবেন ড. কারসনের সাথে। তাদের সাথে আরও যুক্ত হবেন প্রফেসর সুব্রামানিয়াম প্রভাকর, সন্দীপ চক্রবর্তী। তাদের সাথে গাইড হিসেবে রয়েছে সুরেশ। তাদের লক্ষ্য কি তা তাদের কাছেও ধোঁয়াশার মত। আরেফিন যেনো কোনো রহস্য তার জামার আস্তিনে লুকিয়ে রেখেছেন। তাদের অভিযান পৃথিবীতে কি কোনো প্রভাব ফেলবে? অনিশ্চয়তার মিশনে নেমেছেন তারা। বিপদসংকুল পথে এগোতে হবে তাদের। তাদের অভিযানের শেষ কোথায়?
তার আর কোনো পিছুটান নেই।মায়া বড্ড ভয়ানক জিনিস । তাই এই জগতের মায়া ত্যাগ করেছেন অতিদ্রুত। নিজের নাম পরিবর্তন করে মুছে ফেলেছেন সকল অতীত। তার একমাত্র লক্ষ্য হাজার বছর ধরে পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতাপূর্ন তিক্ত ভ্রমনের ইতি টানা। ভারতবর্ষে আগমণ ঘটেছে তার,এবার জীবন বাজি রেখে হলেও এই ভ্রমনের ইতি টানতে হবে? পারবেন তো?
রাশেদ যেখানে বিপদ সেখানে। এবারেও তার উলটো হলো না। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন শেষ করে পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখার তাগিদে ভ্রমণ সঙ্গী রাজুকে নিয়ে ঘুরতে বের হলো বান্দরবানে।পাহাড়ে আর সবুজ গাছপালায় ঘেরা ভূমিতে ঘুরে বেড়াতে গিয়েই দুর্ভাগ্যের ফসল হিসেবে বন্দি হলো মাদকচোরাকারবারিদের হাতে। সেখান থেকে সে পালালেও বন্দী রয়েছে রাজু। সে দ্বিতীয়বার আর কোন�� বন্ধুকে হারাতে নারাজ। তার হাতে রয়েছে এক গুপ্তধনের নকশা, যার লোভ তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলছে।সে কি গুপ্তধনের লোভের জলাঞ্জলি দিবে নাকি বন্ধুকে বাঁচাবে?
★ পাঠপ্রতিক্রিয়া :
একটি যুদ্ধে জয় অর্জনের জন্য সেনাবাহিনীকে প্রতিটি পদে পদে সাজানোর আগে যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, দ্বিতীয় পর্ব হচ্ছে ঠিক তেমন।থ্রিল ভাবটার চাইতে অভিযান বেশি হওয়ার দিকটি বেশ যুতসই লেগেছে।চারটি কাহিনি একসঙ্গে এগিয়েছে, যা একটি আরেকটির সাথে জড়িত। আগের পর্বের চাইতে এই পর্বে আছে বেশ কিছু ক্লিপহ্যাঙ্গার। তবে রাশেদের সাব প্লটের কাহীনিটা একটু মনে রেশ রেখে গেছে। একটা শক্তিশালী নায়ক ততক্ষণ পর্যন্ত স্বার্থকতা পায় না,যতক্ষণ না পাকাপোক্ত খলচরিত্র তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়ায়। খলচরিত্র সৃষ্টির ক্ষেত্রে লেখক মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন।এই পর্বে হাজার বছর ধরে পরিভ্রমণ করা ব্যক্তির বেশ কিছু ইতিহাস উন্মোচিত হয়েছে। মিচনার চরিত্রটা এই পর্বে সব চাইতে দারুন ছিল তার কাজের জন্য। পুরো দ্বিতীয় পর্ব জুড়ে চরিত্রের উন্নয়নই বেশি ছিল।যার ফলে কিছু অধ্যায়ের গতি মাঝেমধ্যে সামান্য মন্থর হয়ে গেছে আমার কাছে।তবে সবচাইতে দারুন ব্যাপার হলো, লেখক তার লেখনীর জাদুতে আর গল্পের খাতিরে পাঠককে গল্পের শেষে নিয়ে যেতে দারুন মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন।ট্রিলজির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্বগুলোতে গল্পগুলো চরিত্রের আর কাহীনির উন্নয়ন এর খাতিরে সামান্য পানসে হয়ে আসে। তবে এই গল্পে তেমন হলেও ক্লিপহ্যাঙ্গার এর দারুন ব্যবহার এর ফলে পাঠকে অতি সহজেই তৃতীয় পর্ব পড়তে বাধ্য হবে। এই পর্বে আগাম যুদ্ধের জন্য যে ঘুটি সাজানো হয়েছে,তার অপেক্ষাতেই পড়েছি সর্বশেষ পার্ট।
পার্সোনাল রেটিং : ৪.০০/৫.০০
★ সাম্ভালা শেষ যাত্রা :
ড. কারসন ছুটে চলেছেন তিব্বতের পথে। তাকে অসাধ্য সাধন করতেই হবে। হাজারো বাঁধা পেরিয়ে তিনি আজ সেই রহস্যের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। রহস্য উন্মোচন করেই কি তিনি থামবেন? নাকি এখনো অনেক কিছু দেখা বাকি। প্রফেসর সুব্রামানিয়াম প্রভাকর অভিযান থেকে অব্যাহতি নেয়ায় তার স্থলাভিসিক্ত হয়েছে তার কন্যা লতিকা প্রভাকর। এদিকে ড. আরেফিনকেও আর পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় গেলেন তিনি। কেউ কি তাদের অভিযানকে থামাতে চায় নাকি প্রতিশোধের বশে ঘটে যাচ্ছে এমন কর্মকান্ড।
রাশেদও রাজুর সাথে এগিয়ে আসছে হিমালয়ের দেশে, তাকে যেভাবেই হোক বাঁচাতে হবে আরেফিনকে। কিন্তু রাশেদের জীবনে যে বিপদ থেমে থাকে না! কেউ ফিরে এসেছে,যারা চায় তাদের জীবনটাকেই শেষ করে দিতে। কি করবে রাশেদ? ভীতুর মতো পালাবে নাকি যুদ্ধ করবে?
তাদের গন্তব্য এক,কিন্তু উদ্দেশ্য ভিন্ন। তারা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। একজন আলো হলে অন্যজন অন্ধকার। তারা দুজনেই এগিয়ে যাচ্ছেন তিব্বতের দিকে। একজন চায় মুক্তি, অন্যজন রাজত্ব। ভিন্ন ভিন্ন গন্তব্য থেকে তারা এগোচ্ছে একই দিকে। ভালো আর মন্দ শক্তির এ লড়াইয়ে জয় কার? আলো আর অন্ধকারও কিন্তু একে অপরের পরিপূরক! তাদের দুজনের যুদ্ধে জয় কার?
লুসিফারের সাধকও পিছিয়ে নেই। শত্রুকে দমন করতে সেও এগিয়ে চলেছে সাম্ভালার পথে।হিংস্রতার মুখোশ অতিদ্রুতই সে উন্মোচন করবে। নিজের স্বার্থ হাসিল আর প্রতিশোধের আগুন যেনো তাকে দিচ্ছে অতিমানবিক শক্তি। যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে।
★ পাঠপ্রতিক্রিয়া :
সাম্ভালায় শুরু হয়েছিল রহস্যের ঘনীভূত হওয়া,দ্বিতীয় যাত্রায় এসে হলো কেন্দ্রীভূত। শেষ যাত্রায় রহস্যের বিক্রিয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, জানার জন্য প্রথমেই বলব সাম্ভালা বিশাল পরিধির বই। ভালো মন্দ সব মিলিয়েই সাম্ভালা। শেষ পর্বের সবচাইতে বিস্ময়কর দিকটি হলো সাম্ভালা আসলে কি তা শিক্ষা দেয় একবারে শেষের দিকে। পুরোটা বই পড়ার পর আমি উপলব্ধি করেছি,সাম্ভালা আসলেই কি এতটা দূরে অবস্থিত , নাকি মানুষ এর মাঝেই সাম্ভালা বিরাজমান। লেখক সাম্ভালা ওরফে সুখ আর অমরত্বের আসল সন্ধান কোথায় তা যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তা আসলেই দারুণ। ভালোবাসার কাছে অমরত্বও হার মানায়। হয়তো অনেকে বলবেন তার মানে কি সাম্ভালার খোজ পাওয়া যায়নি? এখানেই তো আসল মজা। লেখক গল্পের ইতি টেনেছেন প্রশ্নবিদ্ধভাবে। যেনো শেষ হয়েও হইল না শেষ। প্রথম দিকে যদিও ভেবেছিলাম এত বিশাল পরিসরের বইয়ে আরো কিছু পেইজ বাড়লে কি বা ক্ষতি হতো।এরপর উপলব্ধি করলাম, কিছু অপূর্ণতা থাকুক না। শেষ যাত্রায় প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর পাবে পাঠক। প্রতিটি চরিত্রই ন্যায্য কারনে আসলেও নারী চরিত্রদের আরেকটু ফোকাস করা যেতো। বিশেষ করে যে নতুন খলচরিত্রের সাথে পরিচিত হলাম এই যাত্রায়,তাকে আরো সময় দিলে মন্দ হতো না। পুরো বইটিতে কিছু অধ্যায়ের উপস্থিতি না থাকলেও ভালো লাগতো। জানেন? আমার উন্মোচিত রহস্যের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তার অপরুপ সৌন্দর্য দেখার খুব ইচ্ছে ছিল অনেক সময় ধরে, তবে লেখক তা দেননি। হয়তো একটা শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন আমাদের, যে সব সৌন্দর্য দেখারই বা কি প্রয়োজন! তবে হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট বিষয়টা আরো বিস্তারিত হলে আরো দারুন লাগতো। তবে নামটাই যেখানে, সাম্ভালা,সেখানে নামের প্রকৃত অর্থ খুঁজতে গিয়েই যে এমন হয়েছে তা ভালোই বুঝেছি। গল্পে এটার দরকার ছিল। স্বর্গ আর নরকের মতো সাম্ভালাও তো মানুষের মনেই বিরাজ করে।তবে সাম্ভালাকে খুঁজতে হলে হতে হবে পাপমুক্ত।
পার্সোনাল রেটিং: ৪.৮০/৫.০০
শরীফুল হাসানের সাম্ভালা বাংলাদেশে ফ্যান্টাসি জনরার মাইলফলক। থ্রিলারের মতো এ জনরাও এগিয়ে চলেছে অতিদ্রুত। আমাদের দেশে জনপ্রিয় এই জনরাকে পরিচিত করার জন্য যারা সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন তাদের মাঝে শরীফুল হাসান অন্যতম। বাংলার পাঠকসমাজ তাকে সাম্ভালার জন্যে মনে রাখবে। প্রথম বই হিসেবে এতোটা অভাবনীয় সাফল্য আসলেই দারূন ব্যাপার। যারা বইটা পড়েছেন বা পড়বেন সবাই সাম্ভালার যাত্রাপথেই হারিয়ে যাবেন না,সাম্ভালা আসলে কি, কেন এর প্রয়োজন এর মর্মার্থ উন্মোচন করুন আপনার জীবনে ঘটে যাওয়া সুখ আর অসুখের স্মৃতির কথা ভেবে। বইটা শুরু করার সময় ভেবেছিলাম কখন যে শেষ হবে,আর শেষ করার পর ভাবলাম কেন শেষ হলো এত দ্রুত।
মিচেনার,কারসন,লখানিয়া সিং, আরেফিন,আকবর আলী মৃধাচরিত্রগুলো বেশ মনে ধরেছে। তবে লখানিয়া সিং চরিত্রে আরেকটু গভীরতা থাকলে ভালো হত,অন্তত আমার কাছে এমন মনে হয় কারন চরিত্রটি আমার কাছে বিশেষ কিছু। রাশেদ আর রাজুকে দেখার পর ' রেইনকোট ' গল্পের কলিমদ্দি দফাদারের কথাই প্রথমে মনে পরে,যে প্রথমে ভীতু থাকলেও গল্পের শেষে সাহসী হয়ে ওঠে।রাশেদ আর রাজুকে কখনো মনে হয়েছে ভীতু আবার কখনো সাহসী। লেখকের নাটকীয় উপস্থাপনের জন্য পুরো অভিযানটাই কল্পনা করা গেছে,তবে লাস্টে আরো কিছু তথ্য যদি বিস্তারিত থাকতো তাহলেও মন্দ হতো না। এই গল্পে নির্দিষ্ট কোনো নায়ক নেই,সময়ে অসময়ে চরিত্রগুলোর মাঝে কে নায়ক আর কে খলনায়ক তা মারাত্মক ভাবে ফুটেছে। আমি প্রায় অনেক আগে সাম্ভালা অখন্ড পড়েছিলাম, যেখানে বানানে ভুল বিদ্যমান ছিল। এরপর এলো সাম্ভালা লিমিটেড এডিশন ,আর এখন সাম্ভালার ট্রিলজি প্রকাশ পেয়েছে অন্যধারা থেকে।আশা রাখি নতুন এডিশন অতীতের সকল ভুলকে ফুল হিসেবে তুলে ধরেছে।
অন্যধারার প্রচ্ছদ তিনটির বিশেষ দিক হলো, প্রচ্ছদ দেখেই এটা যে মিথ আর অভিযান এর গল্প তার ধরনা পাওয়া যায় সূচালো ভাবে। বইয়ের দিক তাকালে রাজকীয় ভাব লক্ষণীয়। হিন্দু মিথলজির দারুন একটা ভাইব পাওয়া যায় প্রচ্ছদে।তবে বক্সটায় যদি লাল রঙের স্যাচুরেশন আরেকটু কমানো যেত তবে ভালো লাগত।যতদুর দেখেছি,বলতে হবে প্রোডাকশন টপনোচ।
পরিশেষে, ভালো মন্দ ম���লিয়েই মানুষের জীবন। যা যত জনপ্রিয়, তার থেকে তত মানুষের আশা। মানুষ বাঁচে আশায় আর সাম্ভালাও কিন্তু আশার কথাই বলে। আশা রাখি শরীফুল হাসানের মত লেখকদের হাতে ধরেই আমাদের সমাজ এগিয়ে যাক এই কামনাই করি।
Writing got a bit better but nothing really interesting happened in this book.I think it's just an connector of the 1st and the 3rd book.Just description about what characters are doing or where they are headed.Very little exciting things occur in this book that too only while approaching the ending of the book.
প্রথম পর্ব থেকে দ্বিতীয় পর্বটা আরও ভালো মনে হল। প্রথম পর্বে ক্লিফহ্যাঙ্গার গুলো কেমন যেন জমছিলোনা, কিন্তু 'দ্বিতীয় যাত্রা'য় এক অধ্যায় এর পর আরেক অধ্যায় পড়ার আগ্রহ জাগানোর মত যথেষ্ট উপাদান আছে। মিচনারের চরিত্রটা খুব ভালো ছিলো। একটা আলফা হিরোর জন্য আলফা ভিলেইন না থাকলে কাহিনীটা আসলেই পানসে হয়ে যেত! বিশেষ করে তার চরিত্রটা যেভাবে প্রথম পর্বের সাথে মেলানো হল তা একরকম টুইস্ট-ই ছিলো। লখানিয়া সিং এর অতীত নিয়ে আরো কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে যা তার চরিত্রটি সম্পর্কে জানতে পাঠককে সাহায্য করবে। লেখক ইতিহাসের কাহিনীগুলোকে যেভাবে এ উপন্যাসে মিলেয়েছেন তার উল্লেখ করতেই হয়। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে এই ইতিহাস গুলো পড়ার জন্যই মনে হয় পাতার পর পাতা উলটে গেছি। মানব সমাজের দিক নির্ধারনে কেউ একজন ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলো এমন কল্পনা করতে ভালোই লাগে! প্রথম পর্বে প্রফেসরদের আচরণ আমার কাছে একটু বেখাপ্পা মনে হয়েছিলো কিন্তু এই পর্বে সেরকম কোন কিছু অনুভব করিনি। তবে রাশেদের চরিত্রটা একটু কেমন যেন। বইএর রাশেদ সংক্রান্ত অংশ গুলো পড়ার আগ্রহ পাচ্ছিলাম না। রাশেদ আর কাহিনীটা ট্রিলজির মূল কাহিনী না বরং সাইড স্টোরী হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু, ওই অংশটুকু আমার বাহুল্য বলে মনে হয়েছে। দেশ আর বিদেশের বিভিন্ন জায়গার প্রেক্ষাপটে লেখক এর কল্পনা পাখা মেলেছে সাম্ভালা ট্রিলজিতে। সব মিলিয়ে এটা একটা আনন্দময় পাঠ ছিলো। আমি অত্যান্ত আগ্রহ সহকারে তৃতীয় যাত্রা নিয়ে বসার যোগাড় করছি।
দ্বিতীয় যাত্রা প্রথমটার মতন অতটা থ্রিলিং লাগে নি; সেরকম তেমন কিছু ছিল না বলতে গেলে... কিন্তু তবুও একটানে পড়ে গেছি, প্রথমটার থেকে আরো সুলিখিত আর মসৃণ দ্বিতীয় এই বই...
আগের মতই প্রতিটা অধ্যায় ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত, বর্তমান কাহিনীর পাশাপাশি অতীতের কাহিনীও সমান তালে এগিয়ে গেছে; একসময় সবকিছু কোন এক জায়গায় মিলিত হবে এইরকম একটা অনুভূতি সবসময় কাজ করেছে, ঠিক প্রথম যাত্রার মতন...
প্রথম যাত্রা বই হিসাবে কিছুটা স্বয়ংসম্পূর্ণ লেগেছিল, কিন্তু দ্বিতীয় যাত্রার কাহিনী শেষ হয়নি; সবকিছুর সুরাহা হবে শেষ যাত্রায়...
যাই হোক, বইটার লেখনী সবচাইতে ভালো লেগেছে, প্রথমবারের চাইতে আরো পরিপক্ক; তেমন উত্তেজনাপূর্ণ না হলেও একেবারে শেষ পর্যন্ত টানা পড়ে ফেলা যায়...
এখন শেষ যাত্রার দিকে তাকিয়ে আছি, সাম্ভালার উদ্দেশ্যে এই এডভেঞ্চারের সমাপ্তিটা কিভাবে হয় দেখা যাক...
▪️শেষ করলাম ‘সাম্ভালা : দ্বিতীয় যাত্রা’ । এই পর্বটি প্রথমটির মতো অতটা থ্রিলিং লাগেনি । আসলে একটা তিন পর্বের উপন্যাসের প্রতিটি পর্বই সমান থ্রিলিং হবে এটা আশা করা সত্যিই অন্যায় । পুরো বইটাতে বিশেষ থ্রিল কিছুই ছিল না, কিন্ত লেখকের মসৃণ লেখনী এবং দারুণ বর্ণণার কারণে বইটি একটানে পড়ে ফেলা যায় ।
▪️প্রথম পর্বের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্ররাই ফিরে এসেছে দ্বিতীয় পর্বে । তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে মিচনারের চরিত্রটি । বিশেষ করে তার চরিত্রটি যেভাবে প্রথম পর্বের সাথে মেলানাে হয়েছে সেই ট্যুইস্টটি দারুণ ছিল । লখানিয়া সিং বা আব্দুল মজিদ ব্যাপারী চরিত্রটির অতীত নিয়ে আরাে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে যা তার চরিত্রটি সম্পর্কে জানতে পাঠককে সাহায্য করবে । লেখক ইতিহাসের কাহিনীগুলােকে যেভাবে এ উপন্যাসের সাথে মিলেয়েছেন তা এককথায় অনবদ্য । তবে এই পর্বে রাশেদের গল্পটি তেমন ভালো লাগেনি । এই পর্বে রাশেদের কাহিনীটি ট্রিলজির মূল কাহিনী থেকে সরে গিয়ে সাইড স্টোরি হিসেবে বর্ণিত হয়েছে । তবে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গার প্রেক্ষাপটে লেখা ইতিহাসের ছোট ছোট ঘটনাগুলি লেখকের সুন্দর বর্ণণায় এক অসাধারণ রূপ পেয়েছে ।
▪️আগের বইটির মতোই এই বইটিও ছােট ছােট অধ্যায়ে বিভক্ত । বর্তমান কাহিনীর পাশাপাশি অতীতের কাহিনীও সমান তালে এগিয়ে গেছে, একই সাথে চারটি ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয়েছে সমান্তরাল ভাবে । একসময় সবকিছু গিয়ে এক জায়গায় মিলিত হবে এইরকম একটা অনুভূতি মনের মধ্যে কাজ করেছে গোটা বই জুড়ে, কিন্তু শেষে সেইরকম বিশেষ কোনো ক্লাইম্যাক্স নেই । বরং মস্ত বড় একটা ক্লিফহ্যাঙ্গার দিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছে বইটি ।
প্রথম বই এর মতো দ্বিতীয় যাত্রা ও অগ্রসর হয়েছে একইভাবে- কয়েকটি পৃথক যাত্রা শেষ পর্যন্ত একত্রিত হয়ে। তবে এখানে ভিন্ন যাত্রা গুলা সংযুক্ত ঠিকভাবে করে কাহিনী শেষ হয়নি। বরং এটি কেবল সংযোগের ইঙ্গিত দিয়ে বইটি হঠাৎ শেষ হয়ে যায়। এটি আগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ধীর গতির ছিল। এবং প্লটের প্রকৃত অগ্রগতি না হয়ে শেষ বইয়ের জন্য কাহিনী বিল্ড আপের মতো মনে হয়েছিল। বলা যায়, এটি তৃতীয় বইয়ের সম্প্রসারিত প্রোলগ। নতুন চরিত্রের সাথে প্রথম বইয়ের সংযোগ টা চমৎকার ছিল। তবে আবারো কোনো নারীর ভূমিকা তেমন তাৎপর্যময় ছিল না। এতো কাহিনী আগাচ্ছে অথচো কোনো নারী তেমন কোথাও নেই, একটু বেশ অবাস্তব মনে হয়। বই টা পড়তে একটু ভয় পাচ্ছিলাম কারণ যারা এ পড়েছে তারা রেটিং কম দিয়েছে। তাই শুরুতেই প্রত্যাশা কম ছিল। হয়তো সেজন্য তেমন একটা খারাপ ও লাগেনি। কাহিনী বেশি দূর না আগানোর কারণেই আমি রেটিং দিবো ২.৮।