গুড়িয়া কে? কেন তার নামে অতগুলো টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে রেখেছিলেন অপরাজিতা?শ্রীময়ী কি খুঁজে পাবে মায়ের সেই অদৃশ্য প্রেমিককে?অমিয় নন্দী কেন থাকেন শিলং পাহাড়ের বৃদ্ধাশ্রমে? রুপোলি পর্দার তারকাদের সঙ্গে কীভাবে তাঁর এমন অন্তরঙ্গ পরিচয়? অর্ণব কি জানে সুমিতার আসল পরিচয়?ডরোথি কেন বারবার সুমিতার প্রশ্ন এড়িয়ে যায়? সম্পর্কের টানাপোড়েন, ভাঙাগড়া।তিন প্রজন্মের ওপর ক্রমশ ঘনিয়ে আসা সন্দেহ আর অবিশ্বাসের বলয় নিয়েই সামাজিক রহস্য উপন্যাস আঁধার বৃত্ত।
দীপান্বিতা রায়ের ছোটবেলা কেটেছে শিল্পশহর বার্নপুরে। স্কুলের পাঠ সেখানেই। তারপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা। দীপান্বিতা লেখেন নিজের চারপাশের জগৎ নিয়ে। দৈনন্দিন জীবনের কঠিন বাস্তব, অভ্যস্ত খুঁটিনাটিই তাঁর উপজীব্য। শিশুদের জন্য লেখায় তিনি পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। এ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী পুরস্কার, গজেন্দ্রকুমার মিত্র সুমথনাথ ঘোষ স্মৃতি পুরস্কার, নীল দিগন্ত পুরস্কার, দশভুজা পুরস্কার এবং সাধনা সেন পুরস্কার।
চাইল্ড অ্যাবিউজের মত ডিস্টার্বিং অপরাধ, অন্তত আমার মতে আর দ্বিতীয়টি নেই। বিকৃতমনা পশুরূপী মানুষজন সবদেশে সবকালেই এই অপরাধটা করে আসছে, তবে আমাদের মত রক্ষণশীল সমাজে এই অপরাধের রূপটা আরো ভয়ঙ্কর। তথাকথিত লোকলজ্জার ভয়ে শিশুর মা-বাবাই এই অপরাধ ধামাচাপা দিয়ে দেয়, কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় শিশুটির কাছের কেউ, হতে পারে পরিবারের বা বন্ধুস্থানীয় কেউই এই অপরাধটির হোতা। যেহেতু একবার অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, এই পশুগুলো এরকম অপরাধ করতেই থাকে। ইদানিংকালে আমাদের দেশে এ ব্যাপারটা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো, এখানে ভিক্টিম ছেলে বা মেয়ে যে কোন শিশুই হতে পারে। এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে লেখার জন্যই লেখিকা এমনিতেই সাধুবাদ পেতে পারেন, সেইসাথে পুরো গল্পটার কোথাও কোন গোঁজামিল নেই, প্রতিটি চরিত্রের আবেগ আর ট্রমাও ফুটে উঠেছে একদম নিখুঁতভাবে। সম্ভবত একটু বেশিই বাস্তব হয়ে গেছে, কারণ এই বই পড়ার পরে একজন বাবা হিসেবে বেশ কিছুদিন দুঃস্বপ্ন দেখবো বলে মনে হচ্ছে। তবে পাঠকের প্রতি অনুরোধ থাকবে, ডিস্টার্বিং লাগলেও বইটা পড়ুন, আপনার-আমার আশেপাশেই যেসব দানব লুকিয়ে আছে তাদেরকে চেনারও চেষ্টা করুন। আর হ্যাঁ, একটু প্যারানয়েড শোনালেও, নিজের সন্তানের ব্যাপারে কারও উপরই অন্ধবিশ্বাস করবেন না, সে যত পেয়ারের লোকই হোক না কেন। সন্তানকে বোঝান, শেখান, অস্বস্তি লাগলেও ভাল বা খারাপ স্পর্শ নিয়ে সচেতন করুন। সন্তান যদি কারো সঙ্গ বা নৈকট্য পছন্দ না করে, সেটা উড়িয়ে না দিয়ে তার অপছন্দ বা অস্বস্তিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব এবং প্রেফারেন্স দিন। তাতে যদি আপনার সন্তানকে কেউ 'বেয়াদব'-ও বলে, আজীবন পস্তানোর চেয়ে সেটা কোটি কোটি গুণে ভাল।