সাম্ভালার খোঁজে ড: কারসন দলবল নিয়ে চলে এসেছেন তিব্বতে, তার সত্যিকার উদ্দেশ্য কি কেউ জানে না। ওদিকে অপহৃত হলেন ড: আরেফিন, সুদূর ঢাকা থেকে রাশেদ তার বন্ধুকে নিয়ে ড: আরেফিনকে উদ্ধার করতে চলে এল তিব্বতে কিন্তু তাদের পেছনে লাগল একদল লোক।
লখানিয়া সিং ওরফে মজিদ ব্যাপারীও আছেন সাম্ভালার পথে, সঙ্গী যজ্ঞেশ্বর আর বিনোদ চোপড়া, তাদের দুজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ আলাদা, মিচনার ও পিছিয়ে নেই , প্রতিপক্ষ লখানিয়া সিং থেকে সে কেবল এক পা দূরে। অন্যদিকে পিশাচ সাধক আকবর আলী মৃধা আছে পেছনে, তার উদ্দেশ্য একটাই, প্রতিশোধ। দুই চিরশত্রু কি মুখোমুখি হবে একে অপরের? অবশেষে সাম্ভালার সন্ধান কি তারা করতে পেরেছিলো - যেতে পেরেছিল কেউ ওখানে? এরকম আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে সাম্ভালা ট্রিলজির শেষপর্ব সাম্ভালা: শেষ যাত্রা'য় বাকি দুটি পর্বের মতই টানটান উত্তেজনায় আপনাকে ধরে রাখবে একদম শেষ পর্যন্ত।
Shariful Hasan hails from Mymensingh, Bangladesh. He has spent his childhood by the banks of Brahmaputra river. He completed his Masters in Sociology from University of Dhaka and is currently working in a renowned private organization.
Shariful's first novel was published on 2012 titled Sambhala. With two other books, this captivating fantasy trilogy has received widespread acclimation both within and beyond the borders of Bangladesh. The Sambhala Trilogy was translated in English and published from India.
Although his inception consisted of fantasy and thriller, he has later worked on a variety of other genres. These works have been received fondly by the Bangladeshi reader community. Lot of his works have also been published from different publications in West Bengal.
Award- Kali O Kalam Puroshkar 2016 for 'অদ্ভুতুড়ে বইঘর'
শরীফুল হাসানের সাম্ভালা প্রকাশের প্রায় এক দশক হতে চললো। কালের পরিক্রমায় কেমন টিকে আছে পাঠকপ্রিয় উপন্যাস-ত্রয়ী?
একজন নতুন পাঠক ২০২০ সালে এসে যখন সাম্ভালা পড়তে যাবেন, তখন বেশ কয়েকটা ব্যাপার তার চোখে পড়বে। প্রথমে রেটিংস। গুডরিডসে সিরিজের তিনটা বইয়ের গড় রেটিং হলো ৪.০৪/৫। প্রথম প্রকাশ থেকেই ফিডব্যাক খুব পজিটিভ। প্রথম খন্ডের তো আবার ইংরেজি অনুবাদও আছে, কলকাতা থেকে বেরিয়েছে!
"I honestly didn't expect a Bangladeshi writer to have the guts to write a novel of it's (this) unique genre"
গুডরিডস থেকে নেয়া, আমার উক্তি না। পরিতৃপ্ত এক পাঠকের ‘তৃপ্তির ঢেকুর’ বলা যেতে পারে।
এতো কিছু দেখে এক্সপেক্টেশন বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু সাম্ভালা কি আসলেই এতোটা রোমাঞ্চকর অভিযাত্রা?
সাম্ভালার প্রধান চরিত্র দু'জন। প্রথমজন হলো রাশেদ। অপরজন, ফ্লাপের ভাষায় বলতে গেলে ‘সহস্রাব্দ প্রাচীন রহস্যময় পরিব্রাজক’। আলোচনার সুবিধার্থে পরেরজনকে আমরা ‘পথিক’ বলে ডাকবো।
গল্পের শুরু, একটা বইয়ের জন্য রাশেদের রুমমেট/জিগরি দোস্ত খুন হওযা নিয়ে। কি মনে হয়, পেপারে বন্ধু হত্যার খবর পেয়ে আমাদের রাশেদ কি করবে? অবশ্যই, প্লটের প্রয়োজনে তল্লিতল্পা গুটিয়ে পালাবে! কিন্তু ও তো কিছু করেনি, তাহলে? (হে হে..) নাহলে যে প্রথম কয়েক পাতায় উপন্যাস শেষ হয়ে যায়!
রাশেদ পালায়, পিছনে পুলিশ লাগে। বন্ধু খুনের পরপরই কেউ দৌড়ানো শুরু করলো– সন্দেহ অবশ্যই পাশের বাসার ভাবির ঘাড়ে পড়বে না।
পুলিশ ছাড়া রাশেদকে খুঁজতে দেখা যাবে তার বন্ধু-হন্তরককে।
রাশেদের এই দৌড়াদৌড়ির ফাঁকে আমরা পরিচিত হবো ব্রিটিশ ড. নিকোলাস কারসনের সাথে। মানে ইতিহাস বেজড উপন্যাসে দুয়েকটা নার্ড না থাকলে চলে? পাঠককে ইতিহাস গেলাতে হবে তো!
আর এসবের মধ্যে মাঝে মাঝেই লেখক আমাদেরকে নিয়ে যাবেন ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে, সেই পথিকের সাথে। খুবই গণ্যমান্য লোক সে। যদিও লোকচক্ষুর আড়ালে থাকে। অবশ্যই, হোয়াই নট?
আর এসব সবকিছু ধীরে ধীরে এগুতে থাকে সাম্ভালার দিকে। সাম্ভালা, পৃথিবীর বুকে স্বর্গ।
প্রথমেই বলবো প্লট নিয়ে। গল্প-উপন্যাসে অমরত্ব নতুন কিছু না। তবে দেশীয় প্রেক্ষাপটে এটা অবশ্যই অন্যকিছু। সেই হিসেবে প্লটটা কমন হয়েও আনকমন থাকে সবসময়। এবং পাঠককে চুম্বকের মতো টেনে রাখে। যদিও প্লট হোলের অভাব নেই পুরো বই জুড়ে। প্রটাগনিস্ট ১০০ তলার উপর থেকে লাফ দিলেও কিছু হয় না তার, কিন্তু আরেকজন দুই তলার উপর থেকে পড়ে মারা যাচ্ছে। (আসলে এক্স্যাক্ট সেইম জিনিস হয় না, তবে কাছাকাছি অনেক কিছুই ঘটে।)
লেখনী। যেকোনো উপন্যাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রথম উপন্যাসের লেখনী খুব একটা স্মুধ না। ক্লিশে টাইপ অ্যাপ্রোচ। প্লটের কারণে পড়ে যাবেন, কিন্তু লেখনী আপনাকে ‘হইহই’ করে আটকে ধরবে, ব্যর্থ হবে যদিও। লেখনী দ্বিতীয় খন্ডে যথেষ্ট উন্নতি হবে, তৃতীয়টাতে গিয়ে লেখকের অভিজ্ঞতার ঝুলি দেখতে পাই আমরা।
ক্যারেক্টারাইজেশন খুবই প্লট কন্ভিনিয়েন্ট। স্পয়লার দিব না বলে বেশি গভীরে যাচ্ছি না, তবে কিছু কিছু জায়গায় চরিত্রের জন্য গল্প নাকি গল্পের জন্য চরিত্র কাজ করছে– বুঝতে অসুবিধা হবে। তাছাড়া, গল্প টেনে বড় করা হয়েছে দ্বিতীয় খন্ডে। দরকার ছিলো না কোনো এটার। গতি স্লথ করা ছাড়া আর খুব একটা কাজে আসেনি। বরং তৃতীয় আর দ্বিতীয় এক করে ফেললে আরো সুপাঠ্য উপন্যাস পাওয়া যেত।
ফিনিশিং টা মনমতো হবে না। এন্টাগনিস্টের সাথে হ্যান্ড-টু-হ্যান্ড কমব্যাট হলো চাইল্ডিশ অ্যাট বেস্ট। বাট, ওয়েল...
২০১২ সালে সালে যখন সাম্ভালা প্রকাশিত হয়, বাঙালি তখন হুমায়ুন আহমেদে মজে ছিল। একদিকে উদ্ভট হিমু, অপরদিকে যুক্তিবাদী মিসির আলি। মাঝখান দিয়ে যখন সাম্ভালার মতো উচ্চাভিলাসী এক ফ্যান্টাসি-অ্যাডভেঞ্চার-থ্রিলার গোছের উপন্যাস হুট করে চলে আসলো, তখন তারা এমন কিছুর জন্য আসলে তৈরি ছিল না। বাংলাদেশ কেন, দুই বাংলাতেই এমন কিছু কেউ আগে দেখেনি। বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া, তিব্বত থেকে প্রাচীন গ্রিস, ফ্রান্স থেকে জর্জটাউন– কোথায় কিংবা কোন সময়ে পদচারণা নেই এই উপন্যাসের? তাই নতুন এই স্বাদ নিতেই হতো তাদের। নিয়েছেও বৈকি।
এই মিডিয়োকোর উপন্যাসের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার পিছনে কারণ বোধহয় সেটাই। আর আমাদের বর্তমান সময়ের চমৎকার উপন্যাসগুলো-ও বোধহয় এজন্যই সাম্ভালার কাছে কৃতজ্ঞ। সাম্ভালা বেস্ট না, কখনোই হবে না। তবে সাম্ভালা দেখিয়েছে, সাহিত্য কি হতে পারে বাংলার।
এখনকার সময়ে প্রকাশিত হলে কি অবস্থা হতো সাম্ভালার? মনে হয় না এতটা পাঠকপ্রিয়তা পেত।
টু সাম আপ, হয়তো একসময় অভিনব ছিল, হয়তো অনেকের নস্টালজিয়া-আদরের সাথে স্মরণ করা নাম সাম্ভালা। সত্যিকার অর্থেই এক রোমাঞ্চকর অভিযাত্রা, তবে আপ-টু-মার্ক সে মোটেও না। এবং সেটা হওয়া লাগবে না আসলে। Because, when it was good it was really good, and it was bad it was often even better.
পড়া হয়ে গেছে সেই গত বছরই অথচ রিভিউ দিতে কি যে আলসেমি লাগতেসিল। সে যাই হোক বইটা নিয়ে আমি স্যাটিসফাইড। আগের দুটোর তুলনায় এটা অনেক ভাল লেগেছে। অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেছে আবার অনেক গিট্টু খুলে গেছে। সবকিছু একটু ওভার ড্রামাটিক ছিল ঠিকই তবে আগের ২ টা বই পড়ে সেই ব্যাপারটার সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলাম। তাই এবার আর বেমানান লাগেনি।
শরীফুল হাসান এর তারিফ করতে হয় বটে। বাংলায় এত উন্নত ফ্যান্টাসি খুব বেশি নেই। আরেকটা জিনিস যেটা ভালো লেগেছে সেটা হল খুব সুন্দর দক্ষতার সাথে তিনি প্রায় ৬ টা আলাদা আলাদা দৃশ্যপট একসাথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। আবার সময় মত সবাইকে একত্র করে ফেলেছেন। সবথেকে ভালো লাগার চরিত্রগুলোর মধ্যে ডঃ লতিকা প্রিয় হয়ে থাকবেন। এই মহিলার প্রতি আমি একদম ইমপ্রেসড। আর যজ্ঞেশ্বর ও কম যায় না। ওনার চরিত্রটাও বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে আমার।
আগের বই দুটোর প্রতি যা বিরক্তি ছিল সেটা কেটে গেছে বলা যায়। তবে হ্যাঁ অকারনে পেঁচিয়ে কিভাবে লেখা বড় করা যায় সেটা পারলে শরীফুল হাসান এর কাছ থেকে শিখে নিতাম। পরীক্ষার হলে এই বিদ্যাই কাজে দিত।
সুন্দর বিস্তৃত প্লট।একটা কালজয়ী থ্রিলার হওয়ার জন্য প্লটের ভেতর যথেষ্ট মাল-মশলা ছিলো। যেই জিনিসটা পীড়া দিয়েছে তা হচ্ছে লেখনশৈলী। কী সংলাপ, কী চরিত্রের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন সবকিছু খুবই মেকি লেগেছে। এতে পুরো সিরিজের সৌন্দর্য অনেকটুকু ম্লান হয়ে গেছে বলে মনে করি।
শেষ হলো সাম্ভালার সাথে চলা দীর্ঘ ৫ মাসের পথ। ট্রিলোজির প্রথম খন্ড পড়��� ব্রেক নিই ৩ তারপর অবশেষে শেষ যাত্রা। তবে পুরো যাত্রাটা কি প্রথম আর শেষের মত ছিল? এটলিস্ট আমার কাছে লাগেনি।
বই এর প্রথম প্রকাশ এর সময় এর কথা ভাবলে বেশ অবাক লাগবে। সাল ২০১২, রাজত্ব করছেন হুমায়ূন আহমেদ। পাঠক মহলে হিমু, মিসির আলির জয়জকার। ঠিক সেই সময় এমন একটা জনরা নিয়ে লেখক এলেন যেটা নিয়ে আগে লেখা হলেও পূর্নতা দিতে পারেনি দুই বাংলার কোথাও।
আজ ১১ বছর পর এসে হয়তো কনসেপ্ট গুলা আমাদের কাছে আর নতুন নেই। তবুও শরীফুল হাসান স্বার্থক তার সাম্ভালার প্রভাব বিস্তারে।
আমার যা যা বলার ছিল এই রিভিউ টাই তার সব বলে দিয়েছে , তাই আর কষ্ট করে লিখলাম না।
জীবন ক্ষণস্থায়ী। মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। মৃত্যুকে কেউই জয় করতে পারবে না!!! সাম্ভালা! কেবলই নাম! মোহ! জাদু! রহস্য! মিথ!!! সুদর্শন এক যুবক। পেশীবহুল এক শরীর। দানবের মত শক্তি তার দেহে। রক্ত তার নেশা। পৃথিবীর হাজার মাইল পথ সে পাড়ি দিয়েছে পদব্রজে। কোন কিছুই তার বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এখন তার লক্ষ্য একটাই। তার একমাত্র প্রতিপক্ষ, একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে দেয়া এই পৃথিবীর বুক থেকে। সে নির্ডর, সে নির্ভীক। নাম তার মিচনার। আরেক যাত্রী। নাম লখানিয়া সিং। সেও এক পথিক। সে সাধারন নয়। তাঁর লক্ষ্য সাম্ভালা। এগিয়ে চলেছে সাম্ভালা নামক মোহের দিকে। ডঃ কারসন প্রথম থেকেই পড়ে আছেন সাম্ভালার পিছে। তাঁকে এবং তাঁর অভিযান দলকে খুঁজে বের করতেই হবে এ নামের পিছে কী আছে। তাঁরা এগিয়েও চলেছেন সাম্ভালার দিকে। কিন্তু পদে পদে বিপদ এবং নতুন চমক। নতুন শত্রু সামনে। এদিকে পুরানো ভয়ঙ্কর শত্রুও পিছে নেই। সিক্রেট সোসাইটিরাও মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। রাশেদ কীভাবে যুক্ত হবে এই অভিযানে? আসলেই কী সাম্ভালা আছে? নাকি কেবলই এক মিথ? রহস্য? কেউ কি পারবে এই রহস্যের কোন কিনারা করতে?? মুহুর্মুহু চেজ, নাটকীয় অপহরন ও নিস্রংসতায় ভরপুর হত্যাকান্ড সম্বলিত এক অসাধারন ট্রিলজির শেষ পর্ব সাম্ভালা শেষ যাত্রা। লেখক শরীফুল হাসানের এক অসামান্য সৃষ্টি এই সাম্ভালা ট্রিলজি। প্রথম দুটি পর্ব পড়েই এই ফ্যান্টাসি এডভেঞ্চার থ্রিলার ট্রিলজিটির বেশ প্রশংসা করেই পজিটিভ রিভিউ লিখেছিলাম। কিন্তু তৃতীয় বই শুরু করার আগে মনে একটু সংশয় ছিল মনে লেখক কী প্রথম দুই পর্বের মত অসামান্য দুর্দান্ত ভাবে ফিনিশিং দিতে পারবেন? এই সংশয়ের পিছে প্রথম দুই পর্বের কোন কারন নেই। এর আগে অনেক বিশ্বখ্যাত সিরিজেও দেখা গেছে যে শুরুর চমকের সাথে শেষটা অতটা দুর্দান্ত হয় না। কিন্তু লেখকের অপুর্ব দুর্দান্ত প্লট এবং প্লট ডেভেলপমেন্ট এই পর্বেও আমাকেও মুগ্ধ করেছে। তিনি পুরো সিরিজটিতেই চমকের পর চমক রেখেছেন। যে কোন চলমান সিরিজের শেষ বই নিয়ে রিভিউ লেখা সহজ নয়। কারন স্বাভাবিক ভাবেই কাহিনী নিয়ে কথা বলতে গেলে পুরো সিরিজের কাহিনীকে বিচার করেই কথা বলতে হয়। আমি আগেই বলেছি এই ট্রিলজির প্লট দুর্দান্ত। এমন প্লট নিয়ে বাংলাদেশে আগে কোন ফ্যান্টাসি-এডভেঞ্চার থ্রিলার লেখা হয়নি। এই শেষ যাত্রায় এসে প্লটটি যখন ধীরে ধীরে সামনে পরিষ্কার হতে থাকে তখনই লেখকের বিচক্ষণতার প্রকাশ পেতে থাকে আরও ভালভাবে। কাহিনীর ডেভেলপমেন্টকেই আমি এই সিরিজকে বেশী ভালো লাগার পিছনের মূল কারন বলব। লেখক প্রথম ও দ্বিতীয় যাত্রায় কিছু চরিত্র হঠাৎ করেই নিয়ে আসেন, যাদেরকে শুরুতে মনে হয় কি দরকার এই চরিত্রের? শেষ যাত্রায় এসে এর উত্তর মিলবে। কাহিনীর গতিশীলতা প্রথম দুই পর্বের চেয়ে শেষ যাত্রায় বেশ ভালই। কিছু কিছু অধ্যায় কাহিনীর গতি বেশ মুগ্ধ করার মত। লেখকের লেখনীর কথা বলতে গেলে আমি প্রথম দুই পর্বের রেফারেন্স নিয়ে আসব। প্রথম পর্বের লেখনীর কারনেই একটু ধীরগতিতে পড়তে হয়েছিলো আমাকে। কিন্তু লেখকের প্রথম মৌলিক লেখা বলেই আমি এ বিষয়কে অতটা প্রাধান্য দিই নাই। দ্বিতীয় যাত্রায় এসে লেখকের লেখনী অনেক ভালো হয়েছে এবং আমার পড়ার গতিও অনেক বেড়ে গিয়েছিল এই পর্বে এসে। আর শেষ যাত্রায় লেখকের লেখনী আগের দুই পর্বকে ছাড়িয়ে অনেক পরিপক্ক হয়েছে। আসলে এটাই স্বাভাবিক একজন লেখক যতই লিখবেন ততই অভিজ্ঞতার ঝুলি বেড়ে পরিপক্কতা আসবে। এই পরিপক্কতা কেবলমাত্র লেখনীতেই ফুটে উঠেনি। এই পরিপক্কতা কাহিনীর ডেভেলপমেন্ট, গতিশীলতা এবং সিকোয়েন্স ডিটেইলিংসে পরিলক্ষিত হয়েছে। আগের দুই পর্বে সিকোয়েন্স ডিটেইলিংসে ঘাটতি ছিল যা এই পর্বে এসে অনেক ভালো হয়েছে। আমার কাছে এই দুর্দান্ত ট্রিলজির শেষ যাত্রার একমাত্র দুর্বলতা লেগেছে কিছু কিছু অধ্যায়ের সংযোজন। কিছু কিছু অধ্যায়/অংশ আমার কাছে অতিরিক্ত লেগেছে যা না থাকলেও কাহিনীর ডেভেলপমেন্টে কোন ক্ষতি হত না। এবং ফিনিশিংটাও আরেকটু প্রলম্বিত হলে খারাপ লাগতো না। সর্বোপরি এক দুর্দান্ত ট্রিলজির দুর্দান্ত শেষ পর্বের অসাধারন এন্ডিং। লেখক একেকটি পর্ব লেখার জন্য সময় নিয়েছেন এক বছর করে। তিন পর্বের জন্য তিন বছর কষ্ট করেছেন। আর আমরা পাঠকরা লেখকের তিন বছরের কষ্টের ফসল তিন দিনে পড়ে মহা আনন্দ নিয়েছি। লেখক শরিফুল হাসানকে আবারও সাধুবাদ জানাচ্ছি আমাদের এত দারুন একটি ফ্যান্টাসি-এডভেঞ্চার থ্রিলার ট্রিলজি দেয়ার জন্য। সাম্ভালা শেষ যাত্রার জন্য লেখকের প্রতি শুভকামনা রইল। একইসাথে আমাদের প্রত্যাশাও অনেক বেড়ে গেল লেখকের কাছে। আশা করছি সন্নিকটেই লেখকের পরবর্তী বই পড়ার সুযোগ পাব আমরা।
যতোটা আগ্রহ প্রথম পর্ব জাগিয়েছিল, দ্বিতীয় যাত্রা তা ম্লান করেছে। কাহিনী বিন্যাসে অগোছালো ছাপের কারণেই এমন হয়েছে। শেষ যাত্রা অনেকটা জোর করে পড়ে যেতে হয়েছে। শেষ যাত্রার শেষ পরিণতি ঠিক রেখেও অনেক স্লিম এবং ধারালো গল্প হতে পারতো এটি। কেন জানিনা লেখক তাড়াহুড়ো করে নাকি অমনোযোগিতায় এমন করলেন! শেষ যাত্রাকে 2.5/5 দিতে গিয়ে 3 দিলাম।
তবুও লেখককে শুভেচ্ছা। অনেক পরিশ্রম করে সাম্ভালা লিখেছেন। আগামীতে আরো ভালো থ্রিলার তিনি লিখবেন। তবে বানান এবং বিন্যাসে সম্পাদকীয় সাহায্য নেয়ার পরামর্শ জানিয়ে রাখছি। শরীফুল হাসানের আগামী বইটি কেনার এবং পড়ার সিদ্ধান্ত এখনই নিয়ে রাখলাম :)
যাক, শেষটা আসলেই শেষের মতো হয়েছে। দ্বিতীয় ভাগ পড়ে আশা ছেড়ে ছেড়ে দিচ্ছিলাম এমন অবস্থা, কিন্তু প্রশ্নের সব উত্তর নিয়ে তৃতীয় ভাগের জমজমাট যাত্রা আশা পূরণ করেছে।
দু-একটা অসঙ্গতি চোখে পড়লেও তেমন ধর্তব্যের মধ্যে আনিনি সেসব। ফ্যান্টাসির সাথে অ্যাডভেঞ্চার দারুণ ছিল। সবমিলিয়ে 'সাম্ভালা' টানা শেষ করে ফেলার মতো বই।
বিরক্ত এবং হতাশ! গঠনমূলক সমালোচনা লিখবো ভেবেছিলাম বইটা নিয়ে। কিন্তু এতোই হতাশ হয়েছি যে তা লিখাও অনর্থক লাগছে। হাজার পৃষ্ঠার এই ফাপা ট্রিলজি এতো পরিচিতি এবং রেটিং কী করে পেলো মাথায় আসতেছেনা 😐
পৃথিবীর পথ ধরে হাজার বছর ধরে ছুটে চলেছে প্রাচীন এক পথিক, সভ্যতার নানা ঘাত সংঘাত পেরিয়ে ক্লান্ত পথিক তার সর্বশেষ গন্তব্য সাম্ভালার খোঁজে বেরিয়েছে অবশেষে। কিন্তু তার এই চলার পথটা কি আসলে এত সরল? ওদিকে বিশ��ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ রাশেদ। তার বন্ধু শামীম হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যাবার আগে রাশেদের কাছে রেখে গেল অনেকগুলো টাকা আর রহস্যময় এক বই। পরে জানা গেল শতাব্দী প্রাচীন এই বইতে হদিস দেয়া আছে সাম্ভালার। মরিচীকা সদৃশ এই সাম্ভালার খোঁজে বছরের পর বছর ধরে ছুটেছে মানুষ। ড. আরেফিন আর ড. কারসনের সাহায্য নিয়ে এই বই এর রহস্যের সমাধান করার জন্য নামলো রাশেদ। পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো আকবর আলী মৃধা নামের এক অমানুষ, প্রেতসাধনা করে নিজেকে শয়তানের কাছে বিলিয়ে দিয়েছে এই লোক। নিজের হারিয়ে যাওয়া সম্পত্তি আবার নিজের অধিকারে ফিরিয়ে আনবার ব্যাপারে কোন ছাড় না দেবার প্রতিজ্ঞা করেছে সে।
সংক্ষেপে এই হল সাম্ভালা সিরিজের কাহিনী। যথেষ্ট কৌতূহলদ্দীপক, সন্দেহ নেই। একজন থৃলারপ্রেমী হওয়া স্বত্ত্বেও বইটা নানা কারণে অনেকদিন পড়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তু যখন একদিন পত্রিকায় খবরে দেখলাম পাশের দেশ ভারতে এই বই ইংরেজীতে অনুবাদ হচ্ছে, তখন আর দেরী করা গেলনা। ঝটপট বই তিনটা কিনে পড়া শুরু করে দিলাম।
বইটা পড়ে ভালো লেগেছে কারণ, বাংলাদেশে এমন সিরিয়াস ধরণের মৌলিক থ্রিলার এর আগে আমার চোখে পড়েনি। থ্রিলার ঘরানার লেখা পড়ার জন্য আমাদেরকে সবসময়ই বাইরের লেখকদের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়। শরীফুল হাসানের মত নতুন লেখকেরা যদি চালিয়ে যান তবে সেই দিন আশা করি শেষ হতে চলেছে। আপনার পরিচিত পরিবেশে যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা অথবা ধানমন্ডিতে যখন বই এর কোন ঘটনা ঘটে এবং তার সাথে আপনি যখন রিলেট (relate) করতে পারেন তখন তা আসলেই এক আনন্দদায়ক অনুভূতির জন্ম দেয়। ভিনদেশি বিভিন্ন বই পড়েতো আমার ধারণাই হয়ে গিয়েছিলো যে জমজমাট একটা গল্প ফাঁদতে হলে তার ঘটনা গুলো অবশ্যই ইটালির ফ্লোরেন্সে কিংবা প্যারিসের কোন কানাগলিতে অথবা নিউইয়র্কের রাজপথে ঘটাতে হবে, নয়তো বিষয়টা ঠিক যুঁতসই হয়না। ভ্রান্ত ধারণা গুলো ভেঙ্গে দেয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ! সাম্ভালার পড়ার পর আপনি লেখকের কল্পনাশক্তি আর বর্ণণার ক্ষমতার প্রশংসা করতে বাধ্য হবেন। বই এর কাহিনী বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ছাড়িয়ে নেপাল আর তিব্বত অঞ্চলে বিস্তৃত হয়েছে। এই ধরণের একটা এ্যাডভেঞ্চার কাহিনীর জন্য যেটা প্রয়োজন তা হল বই এর কাহিনী এবং পরিবেশটা এমন ভাবে বর্ণণা করা যাতে পাঠকের মনে হয় বইতে যা ঘটছে তা যেন একদম তার চোখের সামনেই ঘটছে। এই দিক থেকে ‘সাম্ভালা’ কোন অংশে দুর্বল নয়। বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত অনেক গুলো গল্পকে লেখক সফলতার সাথেই একীভূত করেছেন। বিশেষ করে আমার প্রিয় অংশটুকু হল বই এর ইতিহাস ভিত্তিক অংশটা। প্রাচীন কাহিনী গুলো দিয়ে একটি চরিত্র দাঁড় করানোর ব্যাপারটাই অসাধারণ ছিলো!
তবে কিছু হতাশার জায়গাও আছে। বইটা শুরু করার আগে এর কাহিনী সংক্ষেপ আর অন্তর্জালে অন্যান্য রিভিউ গুলো পড়ে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এখানে এমন একটি চরিত্র আছে যে অমর অর্থাৎ এই চরিত্রটি বেঁচে ছিলো সেই প্রাচীন কাল থেকে, সে দেখেছে পৃথিবীর অনেক সভ্যতার উত্থান আর তাদের পতন। চলার পথে তার পরিচয় হয়েছে হাজার রকমের মানুষের সাথে। তো এই ধরণের একটি চরিত্রে আমি যে ধরণের গভীরতা আশা করেছিলাম তা আমি বইতে পাইনি। বরং অনেক জায়গাতে তাকে আর দশজন সাধারণ মানুষের মতই মনে হয়েছে। এই অমর চরিত্রটি বাদেও তিন খন্ডের বইটিতে আরও কিছু চরিত্র এসেছে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার এত বড় একটা সময় এদেরকে নিয়ে পড়ার পরেও বই শেষে আমি চরিত্র গুলোর সাথে কোন ধরণের বন্ধন অনুভব করিনি। আমার মনে হয়েছে লেখক কাহিনী বর্ণনা করতে যত সময় দিয়েছেন চরিত্র গুলো ঠিকভাবে গড়ে তুলতে অতটা মনযোগ দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। খলচরিত্র গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি চরিত্র ছিল আকবর আলী মৃধা। কিন্তু তার চরিত্রটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার মত শক্তিশালী না। মিচনার চরিত্রটি তার অধীনে কাজ করছে বা তাকে ভক্তি করছে, শেষ পর্যন্ত গুরু বলে মানছে এ বিষয়গুলো বিশ্বাসসযোগ্য মনে হয়নি। সংলাপ এড়িয়ে অনেক জায়গাতেই সাধারণভাবে কাহিনী বর্ণণা করে যাওয়া হয়েছে যা অনেকসময় একঘেয়েমির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিরিজটা তিন খন্ডের, মানে পরিধিটা বেশ বড়। কিন্তু এমন অনেক জায়গা ছিলো যেখানে হয়তো বই এর পাতার পর পাতা এগিয়ে গেছে কিন্তু কাহিনী সেই অনুপাতে এগোয়নি। এ অবস্থায় একজন সাধারণ পাঠকের মনযোগ ধরে রাখাটা একটু কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। কাহিনীটা আরেকটু আঁটসাট হলে বইটা আরো ভালোভাবে উপভোগ করতে পারতাম বলে মনে হয়েছে। এ ধরণের একটা বইতে লেখকেরা সাধারণত পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্লিফহ্যাঙ্গার ব্যবহার করেন। কিন্তু, সাম্ভালায় ক্লিফহ্যাঙ্গারের ব্যবহার কম। সিরিজের শেষ বই ‘শেষ যাত্রা’য় আহমদ কবির নামের একটি চরিত্রের সাথে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেয়া হল এবং তার কিছুক্ষন পরেই জানিয়ে দেয়া হল, চরিত্রটা খলচরিত্র। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, আহমদ কবীর এর আসল রূপটি তখনই উন্মোচিত না করে যদি তাকে ঘিরে আরো কিছু রহস্যের জাল বিছানো যেত তাহলে তা ক্লিফহ্যাঙ্গার হিসেবে বেশ ভালো কাজ করতো। তবে তারপরেও আমি কোন লেখক নই। এবং একজন লেখক তার সৃষ্টি তার পরিকল্পনা মতনই সাজাবেন, তাতে তো আর কারো কোন বাঁধ সাধবার অধিকার নেই! এখানে আমি একজন পাঠক হিসেবে আমার যা ভালো লেগেছে আর যে জিনিসগুলোর অভাব বোধ করেছি তারই একটা বর্ননা দিলাম। কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে বলতে গেলে, বাংলা থৃলার ঘরানার সাহিত্যের ক্ষেত্রে সাম্ভালা বেশ ভালো একটি সংযোজন।
সাম্ভালার শেষ যাত্রায় কি সাম্ভালার খোজ পাওয়া যাবে? বললে তোহ স্পয়লার হয়ে যাবে। শরিফুল হাসান ব্যাপক একটা বই লিখে ফেলেছেন সেটা আমি নিশ্চিত। এডভেঞ্চার, ফ্যান্টাসি, মিথ কি নাই এ গল্পে। এখানেই আব্দুল মজিদ ব্যাপারী ওরফে লখানিয়া সিং এর আসল পরিচয় পাওয়া যাবে। আর সাম্ভালার ব্যাপারটা তোহ বইটা পড়লেই পাবেন। তবে এটুকু বলতে পারি এ বই পড়তে আমার কষ্ট হয় নাই। স্মুদলি টেনে পড়তে পেরেছি৷ লেখকের প্রথম দুটা বইয়ের তুলনায় এটা অনেক বেশি উপভোগ্য। মজার ব্যাপার হচ্ছে লেখক অনেকগুলা টাইমলাইন একসাথে টেনে নিয়ে একটা সুন্দর করে মিলিয়ে ফেলেছেন। মোটকথা হইল অংকটা মিলাইতে পেরেছেন। এবার আসি সমালোচনাতে। সাম্ভালা একটা ভারতীয় মিথ। এটা নিয়ে লেখকের পড়াশোনা কম নাকি উনি বিস্তারিত লেখেন নাই সেটা আমার একটা প্রশ্ন। আর উনি কিছু জিনিস নিয়ে গভীরে যান নাই। সাম্ভলা নিয়ে আসলে ধারনাটি কোথা থেকে এসেছে, সেরকম কিছু পাইনি। কালচক্র মন্ত্রটা নিয়েও কিছু হিস্ট্রি দিলে ভাল করতেন। আসলে খটমট বই থেকে পড়ে জানার থেকে গল্পের মধ্য থেকে জানলে ভাল লাগে বেশি। শেষ যুদ্ধটাও খুব একটা জমে নাই। কেন জানি মনে হল একটু তাড়াহুড়ো হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে বলা যায় বাংলা সাহিত্য এমন সিরিজ বেশ দুর্লভ।
১. ট্রিলজির সমাপ্তি এভাবেই হওয়া উচিত। ২. নিছক রহস্য, রোমাঞ্চ, বা অ্যাডভেঞ্চার নয়, বরং ফ্যান্টাসি যে আরো অনেক বড়ো, অনেক ব্যাপক হতে পারে, তা এভাবেই বোঝানো উচিত। ৩. অমরত্ব হোক বা সব-পেয়েছির-দেশ, ফিলজফার্স স্টোন হোক বা গুপ্তজ্ঞান, এসবের খোঁজ যে নিজের ভেতরেই পাওয়া যায়, তা এমন করেই দেখানো উচিত।
সংক্ষেপে বললে, ছুটির দিনটা এমন বই পড়ে�� কাটানো উচিত। পড়ে ফেলুন!
প্রথম পার্ট পড়ে যেরকম উত্তেজনা কাজ করছিলো দ্বিতীয় পার্ট পড়ে হতাশা ভর করলো। কিন্তু শেষ পার্ট পড়ে সন্তুষ্ট হলাম। ফিনিংশটা খুব ভালো লেগেছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় খুব নাটকীয় লেগেছে। লেখার পরিসর আরেকটু ছোট করা যেত। সবমিলিয়ে শেষ পার্ট ভালো লেগেছে।
হ্যাঁ দৌড়ই বলা জেতে পারে। এই দৌড়ের শুরু গতবছর হয়েছিলো, শেষ হল এবছর। নাকি শেষ হয়েও হলনা শেষ!? ... বলা মুশকিল।
গ্রুপের সাম্ভালা সিরিজের সাথে পরিচতি হয়েছে প্রায় এক বছর। বইমেলা ২০১৩ র সেরা আবিস্কার আমার জন্য এটাই। সাম্ভালা সিরিজের সবথেকে ইউনিক কিংবা অনন্য বিষয়টি হচ্ছে ইতিহাসের প্রয়োগ। যেভাবে সুন্দর করে ইতিহাসের পাতায় একটি সম্পূর্ণ ফিকশনাল চরিত্রকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে তা আসলেই প্রশংসার দাবি রাখে। বস্তুত এই কারনেই সিরিজটিকে আমার এতো ভালো লেগেছিল।
আনুশাঙ্গিক দিকগুলো দেখতে গেলে এই সিরিজের গল্পগুলোতে রয়েছে গোলাগুলি, কাটাকাটি, মারামারি, এবং সেইসাথে যথেষ্ট ফ্যান্টাসি এলিমেণ্ট। অনেকে এই সিরিজকে কেবল থ্রিলার বলে চালিয়ে দিতে চাইলেও আমি নারাজ, সাম্ভালা প্রথমে ফ্যান্টাসি তারপরে থ্রিলার। অন্তত আমি তাই ভাবি। এবং এই জিনিশ খুব ভালোভাবেই প্রমাণ হয়ে যাবে সাম্ভালা তৃতীয় যাত্রা শেষ হতে হতে।
একটি ট্রিলজির কিংবা একাধিক বই সিরিজের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে কাহিনীর ধারাবাহিকতা এবং পুরাতন জিনিশগুলোর মধ্যে থেকেই নতুন চমক খুঁজে বের করা। যা এই শেষ উপন্যাসে এসে খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
গল্পের শুরুতেই একগাদা চরিত্রের আগমনে আমি একটি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম যদিও, তবে পঞ্চাশ ষাট পাতা পার হতে হতে সেটাতে অভ্যাস হয়ে এসেছিলো, তারপরে কেবল দৌড়েছি পাতার পর পাতা, বিরতিহীন।
একাধারে অনেকগুলো টুকরো টুকরো দৌড় উঠে এসেছে এই গল্পের মধ্যেও, এ ওর পিছে ছুটছে, ও আবার তার পিছে ছুটছে, তারা আবার অন্য কারো পিছে ছুটছে। এদের এক জনের লক্ষ্য আবার অন্যজনের অজানা, আর সকলেই পরস্পরের অধরা। পুরো উপন্যাস ধরে চলেছে এই দৌড়, এবং সম্ভবত সেই কারনেই শেষের প্রায় ৭০ পৃষ্ঠার মতো তীব্র গতিতে আমি তাদের ঊর্ধ্বশ্বাসে অনুসরণ করেছি মাত্র আগে পিছে কিছু না ভেবেই।
যদিও কিছু চরিত্রের ক্ষেত্রে আমার পূর্বে করা ধারণা মোটামুটিভাবে বাস্তবায়ন হতে লক্ষ্য করেছি এবং সেটাই যুক্তিযুক্ত, তবুও তা গল্পের সামগ্রিক আবেদনে এতটুকু ঘাটতি এনেছে বলে আমার মনে হয়না।
তবে কিছু বিষয় নিয়ে অসন্তোষ ছিল, যদিও সেটা প্রকাশনাগত, ১ - সাম্ভালা শেষ যাত্রার প্রচ্ছদ একটু ভিন্ন হলে ভালো হতো। শেষ পর্যন্ত পড়ে এটা খুব বেশি মনে হয়েছে। ২ - ভেতরের অক্ষরগুলো একটু বড় হতে পারতো এবং লাইনের স্পেসিং আরও একটু বাড়লে ভালো হতো। এতো আঁটসাঁট করে লেখা পড়তে একটু সমস্যা হয়েছে। হয়তো পৃষ্ঠা একটু বারতো শেষ পর্যন্ত, তবুও এইরকম একটা বই আরও কয়েক পৃষ্ঠা বেশি হলেও আমি ঠিক কিনে ফেলতাম সঠিক মূল্য পরিশোধ করে।
যাই হোক, অনেক কথা বলে ফেললাম। যদি সাম্ভালা ট্রিলজির বইগুলো আপনারা না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই পড়ুন। বাংলাদেশের বুকে এরকম একটি দারুণ ফ্যান্টাসি অ্যাডভেঞ্চার বই লেখার সাহস কয়জন করবেন সেটাই ভবিষ্যতের কাছে একটা জলন্ত প্রশ্ন। তবে আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবো লেখক আমাদের এরকম আরও সুন্দর উপন্যাস উপহার দিয়ে যাবেন নিরলস। :D
অবশেষে শেষ হইলো প্রায় হাজার পেজের বিশাল সাম্ভালা ট্রিলজি। প্রায় এক দশক হতে চলা ট্রিলজিটা নিয়ে আমার তেমন কিছু বলার নেই। কিন্তু বলতেই হয় শরীফুল হাসান খুব শক্ত হাতে পাঠককে ধরে রাখবেন এই ট্রিলজি দিয়ে। এক অনিশ্চিত ও অক্ষয় জীবন নিয়ে খুব দারুণ ভাবেই শুরু গল্পের প্লট শুরু করেছেন লেখক। জীবন বৈচিত্রের সাথে সাথে ঘটনা প্রবাহ ও রোমাঞ্চকর সমাপ্তি দেখিয়েছেন প্রথম পর্বে। কি নেই এতে, সমাজ, ইতিহাস, ট্র্যাজেডি, কালের বৈচিত্র সহ সভ্যতার দারুণ এক মিশেল সাম্ভালা ট্রিলজির প্রথম পর্ব। কিন্তু চলমান গল্পের সাথে তাল রাখতে গিয়ে বেশ খাপছাড়া ভাবে গল্প এগিয়েছে ২য় পর্বে। কিন্তু শেষ পর্ব পড়লেই যেনো বুঝা যায় রোমাঞ্চকর গল্পের ধাক্কা দেয়ার জন্য পাঠকদের ২য় পর্বে তৈরি করেছেন লেখক। লেখক অমরত্ব খোঁজার এক অলিক কল্পনায় বেড়ে উঠার এই গল্প খুব দারুণ ভাবে অর্থবহ করতে পেরেছেন। তবে শেষ পর্বে এসে মূল গল্পের বাইরে বেশ কিছু ডালাপালা সংযুক্ত করে লেখাটাকে দীর্ঘ করতে কৃপণতা করেননি। অঢেল সময় থাকলে এবং এডেভেঞ্জার, মিস্ট্রি ও ট্র্যাজেডি এক সাথে পেতে চাইলে বাংলা সাহিত্যে সাম্ভালা ট্রিলজি অনন্য।
তিনটা পার্টই দারুণ লাগলো। বলতেই হয় মনের মতো একটা বই পড়ে শেষ করেছি। কী নেই এই বইয়ে! রহস্য, মিথ, রোমাঞ্চ, এডভেঞ্চার সবই আছে। "সাম্ভালা" কে অনেকদিন মনে থাকবে।
ছোট খাটো কিছু জিনিস ওভারলুক করলে লেখাটা অসম্ভব ভালো ছিলো। মাঝে মাঝে কিছু গল্প ভালো লেগে গেলে সেখানে ভুলগুলো ওভারলুক করতে ইচ্ছে হয়। সত্যি বলতে আমার এখন ওগুলার কথা মনেও নাই। আমি ভাবছি এরপর রাশেদ সেখানে গিয়ে কি করলো আর যা সে সেখানে পাবে তা দিয়ে কি করবে। dammit, but I want to KNOW!!!!!!!
গত দুটো বইয়ের মতই অনেকগুলো ব্যাপার নিয়ে আমি বেশ অসন্তুষ্ট ই বলা চলে। একটা বই কে প্রয়োজন ছাড়া এতটা টানার মানে কি কে জানে। লেখক চেষ্টা করেছেন,তবে আরো অনেক ভাল কিছুর আশা ছিল। প্লট, ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট, টুইস্ট সব মিলিয়ে মোটামুটি লাগলো।
(তিন পর্বের পাঠ প্রতিক্রিয়া একত্রে) বইয��ের উপরে লেখা আছে, "এক রোমাঞ্চকর অভিযাত্রা"! এই ব্যাপারে দ্বিমত নাই। আসলেই রোমাঞ্চকর অভিযাত্রা। বিশ্বাস করেন বা না-ই করেন এক দিনে শেষ করেছি এটা পড়ে। প্রায় ১৪ ঘন্টার মতো লেগেছে শেষ করতে। এবার আসি কাহিনী পর্যালোচনায়। যাত্রা শুরু হলো এক শয়তানের উপাসকের হাত থেকে অতি প্রাচীন এক বই রক্ষা করা নিয়ে। যেই বইয়ে আছে কিভাবে অমৃতের সন্ধান পাওয়া যাবে। শেষে জানানো হলো এরসাথেই শুরু হচ্ছে সাম্ভালার খোঁজে যাত্রা। দ্বিতীয় যাত্রায় ছিলো প্রিপারেশন। চরিত্রগুলোকে শেষ যাত্রার জন্য প্রস্তুত করে তোলা হলো। শেষ যাত্রা মানে তো বুঝাই যাচ্ছে এখানে যাত্রা শেষ হবে। নানা চরাই উৎরাই পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত সেই যাত্রা শুরু থেকে সব চরিত্রগুলোকে একসাথে একজায়গায় নিয়ে আসা হলো। কার কি পরিণতি হয়েছে সেটা নিজে নিজে পড়ে জেনে নিবেন।
প্রধান চরিত্র গুলো হচ্ছে দুইজন অমর ব্যক্তি যারা একজন আরেকজনের শত্রু (নাম বললে স্পয়লার হয়ে যাবে তাই বলতেসিনা), রাশেদ, ড. আরেফিন, ড. কারসন, পিশাচ সাধক আকবর আলী মৃধা। পার্শ্বচরিত্রের মধ্যে যারা উল্লেখযোগ্য তারা হচ্ছেন রাজু, ড. সুব্রামানিয়াম, ড. সন্দীপ, লতিকা, সুরেশ, যজ্ঞেশ্বর, চ্যাঙ এবং একজন লামা।
তিন পর্বের মধ্যে দ্বিতীয় পর্ব অত জমে নাই। বাকি দুই পর্বও যে খুব জমে গেছে এমন না। এটা বললাম কারণ প্রেডিক্ট করা যাচ্ছিলো কি হবে। দ্বিতীয় পর্বে একটা গুপ্তধন খোঁজার কাহিনী আছে যেটা আসলে না থাকলেও চলতো বলে আমার মনে হয়েছে।
বেশকিছু ব্যাপার আসলে কেন আছে তার কোন যথাযথ ব্যাখ্যা নাই। যেমন. ড. আরেফিনকে কেন ড. কারসন অভিযানের জন্য চুজ করলেন আমি বুঝতে পারি নাই। কারণ প্রথম পর্বে আরেফিনকে তিনি পছন্দ করেন নাই বুঝাই যাচ্ছিলো। হুট করে লতিকা প্রভাকর কেন অভিযানে যুক্ত হলেন সেটার আরেকটু শক্তিশালী একটা কারণ থাকার দরকার ছিলো। রাশেদ চরিত্রটার উপরে খুবই বিরক্ত হয়েছি আমি। মনে হচ্ছিলো তার জীবনের একমাত্র কাজ যে কোন সিচুয়েশনে ঘুমায়ে থাকা আর ধূমপান করা। বলা হয়েছে সে প্রচুর বই পড়ে অথচ তার বুদ্ধির দৌড় দেখে মনে হবে এত বই পড়ে কোন লাভ হয় নাই। তার বন্ধু রাজু তাকে বুঝায়ে বললে তার দিমাগের বাত্তি জ্বলে। তাকে আরেকটু বুদ্ধিমান দেখালে ভালো হতো সহজ সরল দেখানোর পাশাপাশি।
অতীতের অনেক ঘটনা এবং মিথ নিয়ে কাহিনী এগিয়েছে বর্তমানের প্রেক্ষাপটে। শেষটা সবার ভাল্লাগবে। গল্প বলার ধরন ঝরঝরে ও প্রাণবন্ত। একঘেয়ে লাগে নাই। সেজন্যই একটানা পড়ে শেষ করতে পেরেছি।
অবিশ্বাস্য! শ্বাসরুদ্ধকর! পরিপূর্ণ! অনেকদিন পর বাংলায় কোনো উপন্যাস পড়ে এমন অনুভূতি হলো। গল্পের প্রথম দুই খণ্ড পড়ে আগেই প্রচণ্ড কুতূহলী হয়ে ছিলাম, তাই বেশি দেরি করি নি পড়া শুরু করতে। সময় কিভাবে পার হলো বুঝলাম না, মনে হচ্ছিলো আমিও এই অভিযাত্রার এক যাত্রী। এই খণ্ডে লেখক শরিফুল হাসানের লেখনী অনেক বেশি পরিপক্ক মনে হয়েছে। তাছাড়া এমনিতেই তিনি অনেক গুছিয়ে লিখতেন। কিন্তু এই খণ্ডে তিনি সত্যিই তার গুনের পরিচয় দিলেন। গত রাতে শুরু করেছিলাম, মাঝে ঘুম আর কাজকর্ম ছাড়া বাকিটা সময় তার লেখায় মোহমান্বিত হয়ে ছিলাম। তাছাড়া এমন তৃপ্তিদায়ক সমাপ্তি আসলেই প্রশংসনীয়। এমন নয় যে আগেই অনুমান করে ছিলাম কি হবে, হয়ত আশা করে ছিলাম, কিন্তু কিভাবে হবে বা আদৌ হবে কি না তা বোঝার অবস্থা ছিলো না মোটেও। প্রথম খন্ড থেকে লেখক চরিত্রগুলো খুব যত্ন নিয়ে গড়েছেন, এবং সমাপ্তিতে সবগুলো চরিত্র একধরনের ন্যায্যতা পেয়েছে। বিশেষ করে প্রধান চরিত্র মিনোস বা লাখানিয়া সিং এর ইতিহাস, উত্থান এবং তার সর্বশেষ গন্তব্য বেশ তৃপ্তিদায়ক। দ্বিতীয় খণ্ডে লেখক পার্বত্য চট্টগ্রামে গুপ্তধনের খোঁজে রাশেদ এবং রাজুর একটি অভিযানের গল্প বলেছিলেন যার সাথে সাম্ভালার কোনো সম্পৃক্ততা পাই নি। ভেবেছিলাম এই খণ্ডে পাবো, কিন্তু পাই নি। যাই হোক সেটা হয়ত দ্বিতীয় খন্ডের অপরিপূর্ণতা, শেষ খন্ডের গল্পের প্লট নিয়ে কোন অভিযোগ নেই। তাছাড়া লেখক এমনভাবে সমাপ্তি টেনেছেন যেন চাইলেই রাশেদকে নিয়ে পরবর্তীতে নতুন গল্প বলতে পারেন, হয়ত তখনো কাজে লাগবে। দাদার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে সেও কি অমর জীবন বেছে নেবে নাকি সাধারন মানুষের মত মরণশীল জীবনে রয়ে যাবে তা হয়ত পরবর্তীতে জানা যাবে। বাতিঘর প্রকাশনীর উচিত বানান, প্রিন্টিং এর ভুল শুধরানর ব্যবস্থা করা। এমন ভালো গল্পে এত বানান ভুল দৃষ্টিকটু।
সাম্ভালার খোজে ড. কারসন দলবল নিয়ে চলে এসেছেন তিব্বতে, তার সত্যিকার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে কেউ জানেনা| ওদিকে অপহৃত হলেন ড. আরেফিন, সুদূর ঢাকা থেকে রাশেদ তার বন্ধুকে নিয়ে ড. আরেফিন কে উদ্ধার করতে চলে তিব্বতে কিন্তু তাদের পিছনে লাগলো শয়তানের উপাসক আকবর আলী মৃধা |
অন্যদিকে লখানিয়া সিং ওরফে আব্দুল মজিদ ব্যাপারী ও আছেন সাম্ভালার পথে| বিপদ হিসেবে এক ই পথ যাত্রী মিচনার , তার প্রতিদ্বন্দ্বী ও আছে এক ই পথে | মুখোমুখি হতে হবে দুজন কে | তাদের যেকোনো একজন বেচে থাকবেন , পৃথিবী দুজন এক ই ধরণের অমর মানুষ কে মেনে নিবেনা | অমর দুজন মানুষের মধ্যে একজনের যাত্রা মহা শান্তিময় স্থানের লক্ষ্যে,অন্যজনের যাত্রা তার প্রতিদ্বন্দ্বী কে চিরতরে মুছে দিতে |
কার লক্ষ্য পূরণ হবে?
টান টান উত্তেজনায় ঠাসা এই ফ্যান্টাসি নি:স্বন্দেহে দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা পুস্তক!!
না পড়লে পড়ে ফেলুন শরীফুল ভাই এর সাম্ভালা সিরিজটি!!!
খুচরা আলাপ:
- বই টা 300 পেইজের কিছু কম বেশি হলে বোধয় ভাল হত | - একশন সিনের বর্ণনায় কিছুটা দূর্বল চিত্রায়ন নজরে পড়েছে | - শেষে এসে কিছুটা হতাশ হয়েছি কোনো এক কারণে | সম্ভবত প্রথম বই এ যে মাস্টারপিস এর স্বাদ অনুভব হয়েছিলো তা হয়ত 19-20 আকারে পূর্ণ হয়নি বিধায় | তবে মাস্ট রিড হবে সবার জন্য 🖤
অবশেষে বইয়ের নামকরণের সার্থকতা প্রকাশ পেয়ে গেল। আগের বার চারখানা গল্প চলছিল একসাথে, এবারে পাঁচ খানা। একটাও কেউ কারোর থেকে কম যায়না। সুন্দর ভাবে সবকটাকে বুনে অবশেষে এক জায়গায় এনে মিলিয়েছেন।
🍉 গোটা saga টার সব থেকে ভালো যা লেগেছে তা হল। গল্পের কোন একছত্র নায়ক নেই। কখনো কলেজ পড়ুয়া রাশেদ এর সাহস আপনাকে মুগ্ধ করবে, কখনও বা ড: আরেফিন এর স্থিতধি ও বিচক্ষণতা, আর সবার উপর আমাদের অমর অক্ষয় সুপারহিরো লখানিয়া সিং তো আছেনই।
😋 অদ্ভুত এক যাত্রা। প্রথম থেকে শেষ যে নির্মেদ তা একবারেই বলবনা। বইয়ের শুরুর দুই তৃতীয়াংশ তো শুধু সবাই হেঁটেই চলেছেন। কোন Riddle solve নেই, এক জায়গায় clue পেয়ে অন্য জায়গায় যাওয়াও নেই। আছে শুধুই এ ওর পিছনে যাচ্ছে, সে তার পিছনে, আর সবার পিছনে আরেকজন। আরেকজন তো হাওয়ায় গন্ধ শুঁকে বেড়াচ্ছে একা একাই। (Trust me, it will make sense. 🤪)
কিন্তু এই সমস্ত বিরক্তি শেষে গিয়ে লেখক একদম সুদে আসলে পুষিয়ে দেবেন, তাই পড়া থামাবেন না। শেষটা একদম সত্যিই খুব সুন্দর। আরও ক��়েকটা পার্ট এলে ক্ষতি নেই অবশ্য। লেখক তো বলেছেন "সাম্ভালার পথে যাত্রা শেষ।" তো অন্য কোন অভিযাত্রা তো হতেই পারে। তাই না? 🥺
অবশেষে এত্ত ব্যস্ততা কাটিয়ে বইটা পড়ে শেষ করলাম। এই মাসে এখন পর্যন্ত এই একটা-ই বই পড়তে পেরেছি। 🤷🏾♀️
আগের দুই যাত্রার চেয়ে এই যাত্রার পাল্লা ভারী। এইবার ড. কারসন থেকে শুরু করে রাশেদ, লখানিয়া সিং, এমনকি চায়নিজ কিছু রক্ষীরও গন্তব্য ছিল একটাই! কেউ জেনে সেইটা গন্তব্য বানিয়েছে, কেউ না জেনে৷
বইটার শেষ অংশ পড়ে অনেক ইমোশনাল হয়ে গেছিলাম। লখানিয়া সিংয়ের থেকে রাশেদের বিচ্ছেদের সেই অংশটুকু আমার দাদার সাথে আমার দূরত্বের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল। ভাবছিলাম, এমন প্রশান্তিতে আমার দাদা আছেন জেনে যদি নিশ্চিত হতে পারতাম। প্রচন্ড ভালবাসি তাকে। সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে জান্নাত-ই নসীব করেন। ❤️
সাম্ভালা একটা জায়গা, শান্তির নীড়। পার্থিব জগতে থেকেও কিন্তু নিজের মন আর আত্মাকে শান্ত রাখা যায়। এই বার্তাটা-ও দিয়েছে বইটা। অনেক মিশ্র অনুভূতির একটা বই। পড়ে বেশ খুশি হয়েছি। শরীফুল হাসানের পড়া বইগুলো সত্যিই আমার কাছে চমৎকার লেগেছে। অন্ধ জাদুকর এরপরের টার্গেট। 😁
সাম্ভালার প্রথম দুই কিস্তি পড়ে তেমন একটা ভালো না লাগলেও, খারাপ লেগেছে বলব না। তবে শেষ যাত্রায় লেখক বেশ ভালোই মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। বলতে গেলে এটা পড়ে আমার অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করছে!
সাম্ভালা ট্রিলোজির প্রথম বইয়ে লেখক পরিচয় পর্ব সেরেছেন। দ্বিতীয় পর্ব জুড়ে ছিল সাব্ভালার দিকে যাত্রার প্রস্তুতি। আর অবধারিতভাবেই শেষ পর্বে সমাপ্তি আর যা খুব ভালোভাবেই করেছেন তিনি।
ড. কারসন, সুরেশ, ড. আরেফিনের পেছনে লেগেছে চীনা ইন্টেলিজেন্স! ড. আরেফিনকে বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ থেকে উড়াল দেয় রাশেদ আর রাজু। তাদের পেছনে জোঁকের মতো লেগে আছে পুরোনো এক শত্রু! এদিকে হাজার বছরের পরিব্রাজককে চিরতরে শেষ করার উদ্দেশ্যে লেগে আছে মিচবার!
সাম্ভালার দিকে যাত্রার প্রতি পদে পদে বিপদ। মিথ নাকি সত্যিই এর অস্তিত্ব আছে এই পৃথিবীর বুকে? বাঁধা অতিক্রম করে এর সত্যতা যাচাই করতে পারবে তাঁরা?
বইয়ের ব্যাপারে বলতে হলে প্রথমেই বলতে হয় লেখনী আগের দুটির থেকে বেশ ঝরঝরে। আমি শরীফুল হাসানের খুব বেশি বই পড়িনি। কিন্তু সাম্ভালার প্রথম দুই পর্বের লেখনী আমাকে বেশ ভুগিয়েছে। দ্বিতীয়ত, কাহনীর শেষাংশ। এককথায় অসাধারণ! পুরোটা পড়ার সময় মাঝে বিরক্তি লাগলেও শেষটা মুগ্ধ করে ফেলেছে। ট্রিলোজির এন্ডিং-টা সত্যি বলতে এমনই হওয়া উচিত।
তবে কিছু 'কিন্তু' আছে। সাম্ভালার দিকে যাত্রা যতটা রোমহর্ষক হওয়া উচিত ছিল ততটা মনে হয়নি। সবকিছুই কেমন সাজনো মঞ্চ নাটকের সেটের মতো লাগল! এটা একান্তই ব্যক্তিগত মতামত। কারো ভালোও লাগতে পারে।
যদি কেউ এখনো পর্যন্ত পড়ে না থাকেন, তাহলে শুরু করতে পারেন। নিঃসন্দেহে রোমাঞ্চকর এক অভিযাত্রাই হবে..
সাম্ভালা! তৃতীয় এবং সর্বশেষ বইটাও পড়া শেষ হয়ে গেছে। তিনটা বইকেই যদিও রেটিং - ৪/৫ দিয়েছি, তারপরও এই ট্রিলজিটা আমার অন্য রকম ভাল লেগেছে। ফেভারিট বইয়ের লিস্টে আশ্চর্যজনক ভাবে জায়গা করে নিয়েছে তিনটা বই ই । শেষ করে এখন মনে হচ্ছে, ' ধূর! কেন পড়ে শেষ করে ফেললাম! না পড়ে বরং রেখে দিতাম, তাহলে ভবিষ্যতে পড়ার জন্য এই অসাধারণ তিনটা বই জমা থাকতো। আহা!!!!!!! I also made a fan of your writing "SHARIFUL HASAN " bhaiya..... Oh! These three books are just awesome.