Jump to ratings and reviews
Rate this book

ডায়াসপোরা ব্লুস

Rate this book
জীবন সরলরৈখিক এই ভ্রম থেকে বের হয়ে এহসান উপলব্ধি করে সে আটকে পড়েছে এক বহুমাত্রিক ধাঁধায়, ঢাকার খিলখেত আর সমুদ্রপাড়ের উজানতলী কাছাকাছি হলেও এ দুই স্থানে তার অবস্থান ভিন্ন দুটি উদ্দেশ্যে। অরোরাল্যান্ডের আকাশে কেন তিনটি সূর্য আর ওখানে সবকটি ছেলেমেয়ের বয়স কেন কুড়ি, ইংল্যান্ডের এক শহরতলীতে সতেরো বছরের তরুণী কেন পালিয়ে বেড়াচ্ছে আর মাইলের পর মাইল বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতে এক ভালুক কেন মৌচাক রেখে ওকে বধ করার সংকল্পে নেমেছে; এসব প্রশ্নের সমাধানের জন্য ও দ্বারস্থ হয় মনোজগতের গলি ঘুপচি চেনা এক প্রবীণ প্রজ্ঞাবানের কাছে, যিনি পথের সন্ধান বাৎলে দিলেও বিপজ্জনক দরজাগুলো খুলতে হবে এহসানকেই। ডায়াসপোরা ব্লুস এক তরুণের দ্বিধা, ঔচিত্যবোধ, প্রতিহিংসা, বিসর্জন ও অর্জনকে সমন্বয় করে নিজেকে আবিষ্কারের এক অভূতপূর্ব যাত্রা।

112 pages, Hardcover

First published February 1, 2024

8 people are currently reading
316 people want to read

About the author

মাশুদুল হকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। এক দশকের বেশি সময় ধরে লিখছেন থ্রিলার, সায়েন্সফিকশন ও শিশু-কিশোর সাহিত্য, প্রকাশিত হয়েছে নিয়মিত ভাবে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে।

সাহিত্য-পুরস্কার : এইচএসবিসি-কালিওকলম তরুণ কথাসাহিত্যিক পুরস্কার ২০১৩।

Masudul Haque is a contemporary writer from Bangladesh known for his works on thrillers, Sci-Fi, and children's literature. His works have been published in Bangladesh and India regularly for the last 12 years.
He was awarded the Kali O Kalam Young Writer Award in 2013.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
77 (26%)
4 stars
157 (53%)
3 stars
51 (17%)
2 stars
9 (3%)
1 star
2 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 94 reviews
Profile Image for ORKO.
196 reviews197 followers
March 4, 2024
ডায়াসপোরা শব্দটার গায়ে লেগে আছে বিষাদের নীল রঙ। জন্মভূমিকে ছেড়ে যাবার যে আধ্যাত্মিক কষ্ট,মানসিক কষ্ট তার রঙ চড়তে চড়তে ক্রমশ মিশে গেছে এই মন কেমন করা বিষাদের নীলে। গ্রিক ভাষার শব্দ ‘ডায়াসপোরা’ শুরু শুরুতে শব্দটা ফসলের বীজ চারদিকে ছড়িয়ে পড়া অর্থে ব্যবহার করা হলেও খ্রিস্টপূর্ব ২৫০ শতাব্দীর দিকে এর ভিন্ন ব্যবহার লক্ষ করা যায়। ইসরাইল থেকে নির্বাসিত গৃহহীন মানুষদের কথা বোঝাতে আলেকজান্দ্রিয়ার পণ্ডিতরা তোরাহ অনুবাদ করতে গিয়ে সর্বপ্রথম ‘ডায়াসপোরা’ বিশেষ্য ব্যবহার করেছিলেন। পরবর্তীতে বিশেষ করে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিভিন্ন দেশ থেকে নানা কারণে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের বোঝাতে ডায়াসপোরা শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়। ব্যাপক অর্থে, কেবল নির্বাসিতরা না, জীবিকার জন্য স্বেচ্ছায় দেশান্তরী হয়ে বিভিন্ন স্থানে বসতি গড়েছেন এমন লোকদেরও ডায়াসপোরার পতাকার তলে দাঁড় করানো হচ্ছে। ভারতীয় ইতিহাসের অধ্যাপক বিনয় লাল নির্বাসিততদের বলছেন 'diaspora of labour' এবং স্বেচ্ছায় দেশত্যাগীদের বলছেন 'diaspora of longing'।  অর্থাৎ এই অভিবাসন শুধু সার্ভাইভ্যালের উদ্দেশ্যে না। এই সফর কখনো স্বপ্নের জন্য,কখনো নিজের শরীরের ভেতর ক্রমশ ওজন বাড়াতে থাকা মনটাকে খাঁচা ছাড়া করার জন্য, কখনো বা শুধুই পলায়নপ্রবণতার এক এসকেপ রুট হয়ে ওঠে। আর এই সফর শুধু নিজের জন্মস্থানকে ছাড়া না,হতে পারে বাস্তবতার সিঁড়ি ধরে ধীরে ধীরে  স্বপ্নের জগতে পাড়ি দেয়ার মনোজাগতিক জার্নি। মাশুদুল হকের ‘ডায়াসপোরা ব্লুস’ দাঁড়িয়ে আছে নিজেকে আবিষ্কারের এই ধাঁধাময় দার্শনিক সত্যের উপর।




গল্পটা আর্টিস্ট এহসানের। জীবনের সরলরৈখিক ভ্রম থেকে বের হয়ে সে একদিন বুঝতে পারে, তার অবস্থান আসলে একই সাথে দুই জায়গায়। ঢাকার খিলখেত আর সমুদ্রপাড়ের উজানতলীতে। সম্পূর্ণ দুটো ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে এহসান এই দুই জায়গাতেই একই সময়ে পার করছে নিজের জীবন। গল্প ক্রমশ এগোতে থাকলে ভ্রম হয়, উজানতলী নামের এই শহরটা কাল্পনিক কিনা? উজানতলীর অবস্থান কি আর্টিস্ট এহসানের মাথার ভেতর? আপনার আমার এই  কনফিউশন কাটতে না কাটতেই মাশুদুল হক আমাদের হাজির করেন অরোরাল্যান্ড নামের এক অচিন গ্রহে। সেখানকার আকাশে একসাথে অবস্থান করছে তিনটা সূর্য। পুরোপুরি অন্ধকার কখনোই গিলতে পারে না অরোরল্যান্ডকে। আর সবার বয়স আটকে আছে বিশের ঘরে। সেখানেও এহসান খুঁজে ফিরছে নিজেকে। আবার ইংল্যান্ডের এক শহরতলীতে ঘাতকের চোখ এড়িয়ে এহসান পালিয়ে বেড়াচ্ছে সতেরো বছরের তরুণীর সাথে।
একটু অপেক্ষা করুন। বাকি আছে আরেকটা রিয়েলিটি যেখানে মাইলের পর মাইল বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতে এক ভালুক তাড়া করে ফিরছে এহসানকে। সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে না? আসলে কোনটা বাস্তব?  কোনটা এহসানের স্বপ্ন? নাকি সবই মিথ্যা? বাস্তবটাই একটা ইল্যুশন?




লেখকের স্ট্রেট ফরোয়ার্ড টোনে গল্প বলার কারণে মাল্টিলেয়ারড এই কাহিনীর ভেতরে ঢুকে পড়তে সমস্যা হয় না। খুশখুশে কাশির মতো একটা অস্বস্তিকর কনফিউশন হয়তো কাজ করে। কিন্তু এই কনফিউশনটাই ‘ডায়াসপোরা ব্লুস’ এর ড্রাইভিং ফোর্স। আইডিয়া আক্রান্ত উপন্যাস লেখার একটা সমস্যা হচ্ছে,ঠিকঠাক মতো এক্সিকিউট না করতে পারলে চরিত্রগুলো হয়ে যায় কাঠের পুতুল। সেগুলোকে নাচাতে থাকে পাপেট মাস্টার ‘দি আইডিয়া’। ক্রমশ একটা ভাবনাকে বাড়তে দেয়া, আখ্যান থেকে গল্প হয়ে ওঠার যে জার্নিটা,চরিত্রায়ন,কাহিনীর
মোচড়,লেয়ার, সর্বোপরি স্টোরিটেলিং নিয়ে যে একটা ভালো উপন্যাস ডালপালা মেলে সেইটা শুধু আইডিয়ার শেকড় দিয়ে জল শুষে বেঁচে থাকতে পারে না। আইডিয়ার শেকড় দিয়ে জল শুষে বেঁচে থাকলেও মাশুদুল লেখকের ভাবনার বহুমুখী স্রোত ডায়াসপোরা ব্লুসকে একরকম বাড়তি পুষ্টি দিয়েছে। এহসানের চরিত্রের মাঝে এতো ভ্যারিয়েশন থাকার মাঝেও যত্ন নিয়ে লেখা ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে পাঠক আবিষ্কার করতে থাকেন চরিত্রের গতিপ্রকৃতি। শুরুতেই আর্টিস্ট এহসানের চারপাশকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির মধ্য দিয়ে লেখক স্পষ্ট করে দিয়েছেন কতটা আলাদা এহসান। মানুষের চুল দেখে সে বুঝে ফেলতে পারে সেখানে সাদাকালোর অনুপাত ৫০:৫০। কারো পোর্ট্রেট আঁকতে গেলে কোন বৈশিষ্ট্যের উপর সবথেকে বেশি জোর দিতে হবে। কোন রঙে রাঙালে একটা বাস্তবিক দৃশ্য হয়ে উঠবে জীবন্ত ল্যান্ডস্কেপ।



ডায়াসপোরা ব্লুসের শেষ দিকে এতোগুলো রিয়েলিটিকে এক সুতোয় গাঁথতে গিয়ে ডিউস এক্স ম্যাকিনার ব্যবহার আবশ্যক হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু মাশুদুল হক এতো ক্লেভারলি পুরো স্টোরিবোর্ডটাকে সাজিয়েছেন যে গুটিকয়েক প্রশংসাবাক্য ছুঁড়ে দিতে হচ্ছে। বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বলি। ধরুন আপনি একটা বিশেষ চাকরির জন্য প্রচুর পরিশ্রম করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে সিজিপিএ হাই রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন সব করছেন। কোথাও যাচ্ছেন না,কারো সাথে মিশছেন না,প্রেম করছেন না। সারাদিন নাক ডুবিয়ে পড়ে যাচ্ছেন, তো পড়েই যাচ্ছেন। চাকরির জন্য স্কিল ডেভেলপ করছেন। মাইক্রোসফটের যাবতীয় সফটওয়্যার দক্ষতা বাড়াচ্ছেন। ইংরেজীটাকে ঝালিয়ে নিচ্ছেন। নিজের সমস্ত শখকে লাথি মেরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন গোপন কুঠুরিতে। যখন চাকরির জন্য সার্কুলার দেয়া হলো, আপনি ফর্ম ফিলাপ করতে বসলেন। ঠিক তখনই বেজে উঠলো আপনার মোবাইল ফোন। কর্তৃপক্ষ আপনাকে জানাচ্ছে, আপনার ফর্ম ফিলাপের প্রয়োজন নাই। কারো বিশেষ রিকমেন্ডেশনে আপনাকে তারা কোনো ধরনের যোগ্যতা যাচাই ছাড়া,পরীক্ষা ছাড়া চাকরিটা অফার করছে। এতো ত্যাগের মূল্য কী থাকলো তাহলে? আপনি এদিকে না পারছেন হাসতে, না পারছেন কাঁদতে। আসলে বাস্তবে এমন ঘটে না। কিন্তু এরকম কোনো এক হাইপোথিটিক্যাল সিচুয়েশনে গল্প এমন এক কোণঠাসা পর্যায়ে পৌঁছেছে সেখানে আদৌ কোনো সমাধান নেই। কিন্তু হুট করে গায়েবীভাবে সেটার সমাধান হয়ে গেল। এটা একরকম দুর্বলতম প্লট ডিভাইস হলেও আমাদের মধ্যে ব্যাপক প্রচলিত প্লট হোল। আমাদের লেখকরা “এলিমেন্ট অব সারপ্রাইজ" -এর ভুল ব্যবহার হিসেবে করে থাকেন। আর পাঠকরা এটাকে "মাথানষ্ট টুইস্ট” হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। মাশুদুল হক সেই পথে হাঁটেন নি। হ্যাঁ,সারপ্রাইজ একটা আছে, একটা অনাহূত অদৃশ্য অথচ সবার চেনা পরিচিত হাতের ইশারা আছে। কিন্তু লেখক সমস্যার সমাধান সেই হাতের মালিকের কাঁধে চাপিয়ে দেন নি। প্রধান চরিত্র এহসানকেই চাবি হাতে খুলতে হয়েছে বিপদজনক সব দরজার তালা, পরখ করে নিতে হয়েছে সব সম্ভাবনাকে। এখানেই একটা উড়াধুড়া,অস্থির প্লটের পারফেক্ট এন্ডিংয়ের সার্থকতা। বাস্তবতা আর কল্পনার মাঝের অদৃশ্য দেয়ালটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন লেখক। এক তরুণের দ্বিধা,ঔচিত্যবোধ,প্রতিহিংসা,বিসর্জন আর অর্জনের সমন্বয়ে ‘ডায়াসপোরা ব্লুস’সত্যিকার অর্থেই নিজেকে আবিষ্কারের এক অভূতপূর্ব যাত্রা।
Profile Image for Harun Ahmed.
1,646 reviews418 followers
February 21, 2024
 "ডায়াসপোরা ব্লুস" মোটাদাগে থ্রিলার কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট জনরায় একে আটকানো মুশকিল। গল্পটা এহসানের। উজানপুরের এহসান, লণ্ডনের এহসান, অরোরাল্যান্ড নামক অদ্ভুত এক গ্রহে আটকে পড়া এহসান।এদের মাঝে কে সত্য কে মিথ্যা, কোনটা স্বপ্ন কোনটা বাস্তবতা এহসান জানে না।গল্পের পুরো জগৎটাই খুব বর্ণিল।মানুষের দ্বিধা, সংশয়, পলায়নপরতা, অবদমিত ইচ্ছা ও আত্ম আবিষ্কারের গল্প "ডায়াসপোরা ব্লুস।"গল্পের বহুমাত্রিকতা, দার্শনিক উপলব্ধি ও থ্রিলারের প্রচলিত  পথে না হেঁটে ঝুঁকি নেওয়ার জন্য মা��ুদুল হক ধন্যবাদার্হ।"অসচরাচর" এর প্রতি প্রত্যাশা বেড়ে গেলো এটা পড়ে।
Profile Image for সালমান হক.
Author 66 books1,957 followers
February 26, 2024
কিছু বই থাকে, যেটা পড়ে মনে হয়, এটা কি পড়লাম! ডায়াসপোরা ব্লুস ঠিক সেই ধাঁচের একটা বই। অন্তত আমার কাছে। দীর্ঘদিন বাদে প্রিয় লেখক মাশুদুল হক ফিরলেন উপন্যাস নিয়ে। আমি এটাকে মোটাদাগে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারই বলবো। তবে একই সাথে অনেক জঁরের মিশ্রন ঘটিয়েছেন মাশুদ ভাই।

প্রথম প্রথম কামড় বসাতে একটু কষ্ট হতে পারে। হয়তো মনে হবে ফাস্ট পার্সন ন্যারেটিভে বলে যাওয়া বিক্ষিপ্ত কিছু কথামালা। কিন্তু ঠিক এটাই চাইছিলেন লেখক। আমাদের গল্পকথকের মনের অবস্থা বোঝানোর জন্যে এর চেয়ে ভালো পদ্ধতি আর হয় না। আটার কেওস! একবার গল্প এগোচ্ছে নির্মলা ক্যাটারিংয়ে চাকরি করা এক ছাপোষা কেরানীর ভাষ্যে তো আবার উজানতলীর এক রাজনৈতিক পরিবারের ছেলের বর্ণনে। একটু পরেই দৃশ্যপটে আগমন লন্ডনে বসবাসরত জুই এবং ওখানকার একটা অ্যাপের। যে অ্যাপের ইউজাররা সবাই সুইসাইডাল! তাছাড়া স্বপ্নে ধানক্ষেতের মধ্যে গল্পকথককে একটা ভালুকের তাড়া করার অংশটা তো আছেই! ওহ আরেকটা কথা ভুলেই গেছি! অরোরাল্যান্ড নামের এক গ্রহেও আমরা দেখতে পাই কথককে, যেখানে তিন সূর্যের নিচে বসবাসকারী বাসিন্দাদের সবার বয়স বিশ!

এই যে এতগুলো দৃশ্যকল্প, একই গল্পকথকের এতগুলো রূপ। মাত্র ১১২ পেজের একটা উপন্যাসে সবকিছুর সমাধান হবে? হ্যাঁ এবং না। ডায়াসপোরা ব্লুসের শেষটা যাকে বলে ওপেন এন্ডিং। তবে শেষে কি হতে পারে, তার সূত্র পুরো বইয়েই লুকিয়ে রেখেছেন লেখক। কখনো উইয়ার্ড ফিকশন, কখনো রহস্যোপন্যাসের বা কখনো মনস্তাত্ত্বিক রচনা- এসবের মিশেলে একদম ফ্রেশ কিছু পড়লাম অনেক দিন বাদে।

মাশুদ ভাইকে টুপিখোলা কুর্নিশ।
Profile Image for Shuk Pakhi.
512 reviews305 followers
March 31, 2024
মাঝেমাঝে বেঁচে থাকাটা অসহ্য লাগলে বর্তমান সময় থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে চলে যাই লর্ড অফ দা রিংস এর দুনিয়ায়। সেখানে গ্যান্ডাল্ফ আর এরাগর্নের সাথে এ্যাডভেঞ্চারে বের হয়ে পাড়ি দেই পাহাড়, জঙ্গল, মাঠ-ঘাট, সমুদ্দুর। শেষ গন্তব্য হয় সময়ই এলরন্ডের প্রাসাদের শান্তিময় লাইব্রেরি। এটা যে কল্পনা সেটা আমি জানি কিন্তু কি হতো যদি বাস্তবতা আর কল্পনা আলাদা করতে না পারতাম!

আসা যাক এহসানের কথায়। ডায়াসপোরা ব্লুস পড়তে গেলেই তার দেখা পাবেন। ঢাকায়, উজানপুরে, লন্ডনে এমনকি ভিন্ন একগ্রহেও নানান ঘটনা ঘটে চলেছে সবটায় এহসান হাজির কিন্তু কীভাবে!?
ম্যাজিক?
জুয়েল আইচ হাত উঁচু করে বলবেন না না ম্যাজিক বলে কিছু নেই সব হাত সাফাই।
তবে মাশুদুল হক ভাই কোন সাফাইয়ে এহসানকে নিয়ে এমন কান্ড করলেন! সবগুলো দুশ্যকল্পই কি আসলে বাস্তব নাকি সবগুলোই কল্পনা? সব ঘটনার চাবিকাঠি আছে এহসানের কাছে। পাঠককে শুধু এহসানের পাশেপাশে থাকতে হবে শেষ পর্যন্ত।

অনেকদিন পর মাশুদুল ভাইয়ের নতুন বই। এতদিনের অপেক্ষা সার্থক করে এই হালকা-পাতলা সাইজের বইটা পড়ে দারুন লাগলো। আর প্রচ্ছদটাও হয়েছে অসামমমম।
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
March 3, 2024
গল্পের কয়েকটা পৃষ্ঠা পড়ার পর আমি একটা ব্রেক নিয়ে ভাবতে বসলাম, এটা কি লুসিড ড্রিমের ব্যাপার হতে পারে? লুসিড ড্রিম নিয়ে দুবছর আগে মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পীর ‘শুন্যবিন্দু’ পড়েছিলাম। দারুন লেগেছিল। আমি নিজেও লুসিড ড্রিমের শিকার। স্বপ্নকে কন্ট্রোল করতে পারি (বইটই পড়ে এখন এটাকে আশীর্বাদই মনে হয়) ।

সে যাকগে, বইটি প্রথম থেকেই প্রচন্ড কৌতুহল উদ্দীপক ছিল। নিজেকে এহসানের যায়গাতে বসিয়ে প্রত্যেকটা জগৎকে ভীষণ উপভোগ করেছি। লেখাটাও টপ নচ। বিজ্ঞান, দর্শন, থ্রিলার আর সাইকোলজি সবকিছু মিলিয়ে যেভাবে চার-পাঁচটা জগৎ লেখক মশাই তৈরি করেছেন মাত্র ১১০ পৃষ্ঠার মধ্যে তার জন্য সে অবশ্যই কুর্নিশযোগ্য। তবে শেষটা আপনাকে ঠান্ডা মাথায় ভাবতে বাধ্য করবে।
Profile Image for Aadrita.
276 reviews228 followers
February 21, 2024
১০০ পৃষ্ঠার অদ্ভুত জার্নি। কখনো থ্রিলার, কখনো সাইফাই, কখনো উইয়ার্ড ফিকশন, আর কখনো ধুত্তুরি-ছাই-কিছু-বুঝতেছিনা-কেনো।

বইটা পড়া শুরু করে বেশ কিছুক্ষণ বিভ্রান্ত ছিলাম। ফার্স্ট পার্সন পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে লেখা কিছু অসংলগ্ন চিন্তার সংকলন যেন। ন্যারেটর কখনো ঢাকা শহরে নির্মলা ফুড ক্যাটেরিং সার্ভিসে কাজ করছে, মাঝে মাঝে জীবনের তিক্ত বাস্তবতা থেকে মুক্তি পেতে নিজের কল্পনার উজানতলীতে গিয়ে কিছুক্ষণ কল্পনায় ডুব দিয়ে আসছে৷ আবার কখনো এসব থেকে একদম আলাদা হয়ে লন্ডনের অলিতে গলিতে নিজের মৃত্যুর দিন গুনছে অথবা অরোরাল্যান্ড নামে অদ্ভুত নগরীর খনিতে শ্রমিকের কাজ করছে।

এতো বিশৃঙ্খলার মধ্যে আকর্ষণ ধরে রাখছিলো ছোট ছোট কিছু ডিটেইল, গল্পের এখানে সেখানে ছড়িয়ে দেওয়া কিছু দর্শন। একটা শহর, যেখানে সবার বয়স বিশ এবং সবাই খেটে খাওয়া নাগরিক। একটু দূরের শহরে গেলে বয়স বেড়ে যাবে মুহূর্তেই ষাট বছর তবে অর্থবিত্ত বা আরাম আয়েশের অভাব হবে না, সমস্যা একটাই, যাত্রাটা একমুখী। অথবা একটা মোবাইল অ্যাপ, যার ব্যবহারকারীরা সবাই সুই*সাইডাল। অ্যাপটার উদ্দেশ্য তাদের সাহায্য করা, তাদের মৃ/ত্যু নিশ্চিত করা। তারা ফুলপ্রুফ একটা ডিজাইন দাড়া করিয়ে রেখেছেন যেখানে ব্যাবহারকারীরা একে অন্যকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে সাহায্য করতে পারে।

এমন লাগামবিহীন একগাদা অদ্ভুত বিক্ষিপ্ত চিন্তাভাবনা দিয়ে সাজানো গোছানো ডায়াসপোরা ব্লুস। ইংরেজিতে ডায়াসপোরা অর্থ নিজের স্থান থেকে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়া ব্যক্তিবর্গ। তেমনই এক গোলোকধাঁধায় ছড়িয়ে থাকা বিক্ষিপ্ত সব গল্পের সমন্বয় ডায়াসপোরা ব্লুস।

গল্পের শেষটা কিছুটা ওপেন এন্ডিং। কী হলো, সামনে কী হবে নিজের মতো ভেবে নেওয়ার সুযোগ আছে। উপন্যাসে যেমন টাইম-স্পেস বাউন্ডারি ভেঙে কল্পনার ঘোড়া ছুটিয়েছেন লেখক, তার জের ধরে শেষবেলায় পাঠককেও ভাবার সুযোগ করে দিয়েছেন।

বহুদিন পর লেখক নতুন উপন্যাস নিয়ে এসেছেন। সত্যিকার অর্থেই আনকোরা নতুন কিছু উপহার দিয়েছেন পাঠকদের, গতানুগতিকের বাইরে কিছু।
Profile Image for Dystopian.
434 reviews228 followers
June 16, 2024
ইনসেপশন
বই পড়ার মাঝ থেকে একটা শব্দই ঘুরছিল মাথায়! " ইনসেপশন " আর একটা নাম " নোলান "।

লেখকের কাছে আরো চমকপ্রদ হবার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম!
Profile Image for Ishraque Aornob.
Author 29 books403 followers
March 8, 2024
“ডায়াসপোরা ব্লুস” বইটাতে আসলেই দারুণ একটা ভিন্নধর্মী গল্প বলেছেন লেখক মাশুদুল হক। গল্পটা শুরু থেকেই একেবারে আটকে ফেলেছিল। এরপর আস্তে আস্তে পাঁচটা টাইমলাইনের ঘটনা উঠে আসে। প্রত্যেকটা জগৎ-ই রোমাঞ্চকর। যেন একসাথে পাঁচটা গল্প পড়ছি। শেষে গিয়ে পাঁচটা স্���র একইসূত্রে গাঁথা হয়েছে।
বইটাকে নির্দিষ্ট জনরাতে ফেলা যায় না সেভাবে। একইসাথে সাইফাই, সাইকোলজিক্যাল, রহস্য-রোমঞ্চের ছাপ ছিল। মোটা দাগে থ্রিলারের এক ভিন্নধর্মী আখ্যানও বলা চলে।
ভালো লেগেছে এহসানের সাথে ফ্রয়েডের কথোপকথন ও জগৎগুলোর রহস্য সমাধান। তবে বেশি ভালো লেগেছে এন্ডিং। হ্যাপি এন্ডিংও মাঝেমধ্যে হাহাকার ধরিয়ে দিতে পারে।
মাশুদুল হকের লেখনশৈলী নিয়ে কিচ্ছু বলার নেই। লেখনশৈলী দুর্দান্ত না হলে এমন গল্প পাঠকদের সামনে এত সরলভাবে উপস্থাপন করা অসম্ভব।
Profile Image for Rizwan Khalil.
374 reviews599 followers
December 15, 2024
২.৫-৩ তারা।

কৌতূহলোদ্দীপক একটা উপন্যাস, মাথায় প্যাঁচের উপর ট্রিপল প্যাঁচ লাগিয়ে দেয়ার মতোই জটিল, ইচ্ছাকৃতভাবে পাঠককে বিভ্রান্তির গোলকধাঁধায় ঘুরিয়ে দিশেহারা করার চেষ্টা প্রতিটা নতুন অধ্যায়ে, তবে মাশুদুল হকের সুলেখনিতে ও মসৃণ সুখপাঠ্য গল্পকথনে সেই গোলকধাঁধায় দিকবিদিক হাতড়ে সঠিক পথটা আন্দাজ করার চেষ্টা করাতে খারাপ লাগেনি মোটেও, বাস্তব হোক বা না-বাস্তব প্রতিটা ভিন্ন ঘটনাপ্রবাহেই আগ্রহ বোধ করি সমান ভাবেই.... কিন্তু ক্লাইমেক্সটা জমলো না একদম। এরকম মাল্টিপল ঘটনাক্রমের গোলকধাঁধায় শেষাবধি সুনির্দিষ্ট একটা স্পষ্ট উত্তর খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে এই অপেক্ষাতেই ছিলাম, উল্টো লেখক যেন ইচ্ছা করেই শেষে গিয়ে একাধিক কাহিনির সুতোয় লেগে থাকা জট ছাড়ানোর বদলে আরো বেশি করে গিট্টু লাগিয়ে অসমাপ্তি টেনে পাঠককে বেকুব বানিয়ে দিলেন। সিরিয়াসলি, কী থেকে যে কী হইলো আর কেমনে হইলো আর ক্যানোই বা হইলো কিছুই বুঝলাম না! শেষ কয়েক লাইনে একটা জোড়াতালির আবছা ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা থাকলেও সেটার মেনে নেয়া মানে যা পড়লাম পুরোটাই শতভাগ অর্থহীন হয়ে যাওয়া, তাই সেটা আমার কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় (বিশেষত যখন সেটা চরম যেনতেন ক্লিশে একটা উত্তর!)। হুমায়ূনীয় স্টাইলের পাঠককে ফাঁকি দেয়া ওপেন এন্ডেড ফিনিশিং এমন জটিল একটা গল্পের শেষে পেয়ে বেশ ত্যক্ত হয়েছি। নাহ, একদম হজম হলো না।

যাইহোক, লেখক প্রচুর চিন্তাভাবনা করে, পড়াশুনা করে গল্পটা সাজিয়েছেন, মাত্র ১১২ পৃষ্ঠার একটা নভেলা মনে হলেও কাহিনিবিন্যাস গাঁথুনির দিক থেকে খুবই গহীন, প্যাঁচালো ঘটনাক্রম-পরিস্থিতি ও বিভিন্ন সূক্ষ্ণ রেফারেন্স-ওমাজ বুঝে বুঝে পড়তে সময় লেগেছে। আগেই বলেছি মাশুদুল হকের লেখা দারুন সুখপাঠ্য, উপাদেয় গদ্যে মসৃণ গল্পকথনে সমান্তরালে চলা সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ঘটনার নাটকীয় সব মোড়ে খাবি খেতে খেতে এগুনো আরামদায়ক। মাঝে মধ্যেই কিছু কিছু (দুর্দান্ত) সাইফাই মুভি-টিভি সিরিজের সঙ্গে গল্পের ধাঁচে মিল পেয়েছি - Awake, Matrix, Vanilla Sky, Inception. কিন্তু লেখক কোনকিছুরই ছায়া সহজভাবে অনুসরণ না করে পুরোপুরি নিজস্ব স্বকীয়তার পথে হেঁটেছেন, প্রতিটি পদক্ষেপে যৌক্তিকতার সাথে ব্যাখ্যা করে সমাধান করার চেষ্টা করতে করতে। দু:খজনক যে থার্ড অ্যাক্টে গিয়ে সেই স্টেপ বাই স্টেপ লজিক্যাল থট প্রসেস আর কাজ করেনি, সব এলোমেলো হয়ে গেছে।

বি:দ্র: বইয়ের মুদ্রণ প্রমাদের একেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা! শয়ে শয়ে হাজারে হাজারে ছাপার ভুল, বানান ভুল। আফসার ব্রাদার্সের মতো একটা নামকরা প্রকাশনা এমন জঘন্য প্রুফ রীড করে আর হাস্যকর সব টাইপিং মিস্টেক করে বই কম্পোজ করেছে, তাও এতো চোখ ধাঁধানো সুন্দর প্রচ্ছদ-গেটাপ-মেকাপের একটা বইমেলার উপন্যাসে - দেখে বড় রকম ধাক্কা খেয়েছি, প্রচন্ড মেজাজও খারাপ হয়েছে। প্রায় প্রতি পৃষ্ঠাতেই একাধিক ছাপার ভুলের বেমক্কা স্পিডব্রেকারে গল্পের ভেতরে ঢোকার মজা অর্ধেকটাই মাটি। খালি উপর দিয়ে একটা বই ঝাঁ চকচকে দৃষ্টিনন্দন প্রডাকশন করে লাভ কী, যদি ভেতরের কম্পোজের এই দুরবস্থা থাকে?

শেষাংশ: ১/৫, বাকিটা: ৪/৫,
সবমিলিয়ে: ২.৫-৩/৫।
Profile Image for Dhiman.
177 reviews14 followers
July 19, 2025
৫/৫

Christofer Nolan এর মুভি দেখার পরে যেরকম ফিল হয়। ঠিক সেইরকম একটা অনুভুতি হচ্ছে শেষ করার পর। শুধু একটাই কথা বলব - Dont't try to understand it, Just feel. দেশ বিদেশের সীমানা পেরিয়ে গিয়ে এই বই জানান দিক যে বাংলাদেশেও এরকম লেখক আছে।
টুপিখোলা কুর্নিশ মাশুদুল হক কে।
Profile Image for Musharrat Zahin.
404 reviews490 followers
March 2, 2025
'ডায়াসপোরা ব্লুস' বইটা নিয়ে আলোচনা করতে হলে আমাদের আগে ডায়াসপোরা, লুসিড ড্রিম এবং ড. সিগমুন্ড ফ্রয়েডকে নিয়ে আলোচনা করতে হবে৷
.
.

ইন্টারনেট ঘেঁটেঘুঁটে দেখলাম 'ডায়াসপোরা ব্লুস' অর্থ হচ্ছে মানুষ তার জন্মভূমি ছেড়ে যখন নতুন কোনো এক দেশে বসবাস করে, তখন তার মধ্যে যেই দুঃখের অনুভূতি তৈরি হয়। এটি এক ধরনের দুঃখ, একাকীত্ব বা হারানোর অনুভূতি। কারণ কেউ যখন তার প্রিয়জন বা প্রিয় জায়গা ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যায়, তখন তার মনে কিছুটা শূন্যতা বা দুঃখবোধ থাকাটাই স্বাভাবিক। এই ধরনের মানুষগুলো প্রচণ্ড রকমের অস্তিত্ব সংকটে ভুগে দুটি জায়গার মাঝামাঝি স্থানে আটকে থাকে। যেন তাদের সত্তা নিজের জায়গা খুঁজে না পেয়ে দুইভাগে ভাগ হয়ে গেছে। তারা তাদের জন্মভূমি এবং নতুন দেশে দুই জায়গাতেই নিজেকে অবাঞ্চিত মনে করেন।
.
.
আর লুসিড ড্রিম হল এমন একটি স্বপ্ন যা দেখতে দেখতে আপনি বুঝতে পারেন যে আপনি স্বপ্ন দেখছেন। অর্থাৎ, আপনি বুঝতে পারেন যে যা ঘটছে তা বাস্তব নয়, এটি কেবল একটি স্বপ্ন। এই ধরনের স্বপ্ন যিনি স্বপ্ন দেখছেন, তিনি অনেকসময় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, আবার কখনো শুধু কিছু কিছু অংশে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন। যেমন স্বপ্নের মধ্যকার জায়গা পরিবর্তন করা বা চরিত্রদের সাথে কথা বলা।
.
.
এবার আসি ফ্রয়েডের কথায়৷ সিগমন্ড ফ্রয়েড হলেন প্রখ্যাত অস্ট্রিয়ান স্নায়ুবিজ্ঞানী এবং সাইকোঅ্যানালিসিস প্রতিষ্ঠাতা। তিনি স্বপ্ন নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন। ফ্রয়েডের মতে, স্বপ্ন শুধুমাত্র এলোমেলো ছবি বা ক্ষণিক চিন্তা নয়, বরং এগুলো আমাদের অবচেতন মন থেকে আসা গোপন ইচ্ছা, অমীমাংসিত ঘটনা এবং চেপে রাখা আবেগের গভীর প্রতিফলন।

ফ্রয়েড বিশ্বাস করতেন যে স্বপ্নগুলো আমাদের অবচেতন মনকে বোঝার একটি পথ। এটি আমাদের এমন কিছু গোপন বা চাপা ইচ্ছাকে প্রকাশ করে, যা আমরা সচেতনভাবে জানি না।

ফ্রয়েডের সবচেয়ে বিখ্যাত তত্ত্ব হচ্ছে, স্বপ্ন হল অবচেতন ইচ্ছার পূর্ণ ফুলফিলমেন্ট। তাঁর মতে, স্বপ্নগুলো প্রায়ই আমাদের জীবনে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় এমন ইচ্ছা বা চাহিদা পূর্ণ করে। যেমন ধরা যাক, আপনি খুব করে চাইছেন নেক্সট সেমিস্টারে কোপায় দিবেন। কিন্তু আশেপাশের কাউকে এই কথাটা বলতে পারছেন না। কারণ বললেই হয়তো মানুষ আপনাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে। তখন আপনি স্বপ্নে দেখবেন যে নেক্সট সেমিস্টারে আপনি আসলেই কোপায় আসছেন।

আবার ফ্রয়েড এইটাও বিশ্বাস করতেন যে আমাদের দৈনন্দিন জীবন সামাজিক নিয়ম এবং নৈতিকতা দ্বারা পরিচালিত হয়, যার কারণে অনেক ইচ্ছা, বিশেষ করে যৌন এবং আক্রমণাত্মক ইচ্ছাগুলো চেপে রাখা হয়। আর স্বপ্ন হচ্ছে সেগুলো প্রকাশের একটি নিরাপদ উপায়।
.
.
এতকিছু বলার কারণ হল আমার মতে এই তিনটি বিষয় বইটার খুবই গুরুত্বপূর্ণ এলিমেন্টস। যদি ফ্ল্যাপের লেখাটাই একটু ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলি, তাহলে আমাদের বইয়ের মূল চরিত্র এহসান। যে কিনা জীবন সরলরৈখিক এই ভ্রম থেকে বের হয়ে উপলব্ধি করে সে আটকে পড়েছে এক বহুমাত্রিক ধাঁধায়, ঢাকার খিলক্ষেত আর সমুদ্রপাড়ের উজানতলীর কাছাকাছি কোনো এক জায়গায়। এহসান ঢাকায় বসে থাকলেও সে মনে করে সে মাঝে মাঝে উজানতলীতে চলে যায়। সেখানে তার নিজের একটা গ্রাম আছে। সেই গ্রামে কী থাকবে, কী থাকবে না তার সবকিছুই এহসানের সিদ্ধান্তের উপরেই নির্ভর করে৷ তবে এখা��ে সে কখনোও কোনো জীবিত মানুষকে স্থান দেয় না। কেবল যারা মারা গেছে, তাদেরকেই সে এখানে রাখে। এই যেমন তার মা, বাবা, বন্ধু।

যখনই আপনি খিলক্ষেত আর উজানতলীর মাঝে একটু থিতু হবেন, তখনই লেখক আপনাকে নিয়ে যাবেন ইংল্যান্ডে। সেখানে এহসানের সাথে পরিচয় ঘটবে সতের বছর বয়সী এক সুইসাইডাল তরুণী জুঁইয়ের সাথে। সেই জগতে এহসান নিজেও সুইসাইডাল৷ এক অ্যাপের মাধ্যমে তাদের পরিচয়, যেই অ্যাপের থ্রুতে এক সুইসাইডাল মানুষ আরেক সুইসাইডাল মানুষকে খুন করবে৷

যখনই এই ইউনিভার্সে আপনি একটু থিতু হতে নিবেন, আবার আপনি এহসানের সাথে চলে যাবেন অরোরাল্যান্ড নামে এক উদ্ভট গ্রহে, যেখানের আকাশে তিনটি সূর্য আর ওখানে সবকটি ছেলেমেয়ের বয়স কুড়ি বছর। আবার দেখতে পাবেন মাইলের পর মাইল বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতে এক ভালুক মৌচাক রেখে এহসানকে বধ করার সংকল্পে নেমেছে।

কিন্তু এখন সমস্যা হল এহসান কিভাবে এত জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে আর এসব কেন তার সাথেই ঘটছে?

এসব প্রশ্নের সমাধানের জন্য ও দ্বারস্থ হয় মনোজগতের গলি ঘুপচি চেনা এক প্রবীণ প্রজ্ঞাবানের কাছে, যিনি পথের সন্ধান বাতলে দিলেও বিপজ্জনক দরজাগুলো খুলতে হবে এহসানকেই। এই বইটি এহসানের দ্বিধা, ঔচিত্যবোধ, প্রতিহিংসা, বিসর্জন ও অর্জনকে সমন্বয় করে নিজেকে আবিষ্কারের এক অভূতপূর্ব যাত্রা।
.
.
এতটুকু পড়েই হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে এহসান একসাথে কয়েকটা ইউনিভার্সে বিলং করে। সে যেই জগতেই যাক না কেন, সেটাকেই মনে করে আসল৷ মানুষ তাকে যতই বোঝাক যে পুরো জিনিসটাই তার একটা ভ্রম, সে সেটা বুঝতে নারাজ। অবশ্য সে হয়তো বুঝেও না বোঝার ভান করে৷ একটা সময় আপনিও এহসানের মত ইল্যুশনের গ্যাঁড়াকলে পড়ে যাবেন যে আসলে কোন প্লটটা বাস্তব? নাকি পুরোটাই ভ্রম।
.
.
যদিও লেখকের মতে বইটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার জনরার, তবে এই বইকে আমি থ্রিলার জনরায় ফেলব নাকি, এটা নিয়ে একটু কনফিউজড। বইটায় কিঞ্চিৎ ম্যাজিক রিয়েলিজমেরও আভাস রয়েছে।

বইটা পড়তে যেয়ে মাথায় একটু প্যাঁচই লেগে গিয়েছে। একে তো এতগুলো ইউনিভার্স, তার উপর ফার্স্ট পারসন ন্যারেটিভ। তাই সবকিছুই তালগোল পাকাচ্ছিল। বইয়ের আরেকটা ভালো দিক হল সিগমুন্ড ফ্রয়েডের রেফারেন্স৷ এখানে উনাকে দারুণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে৷ বইয়ে একটা কিউআর কোড আছে, সেটা স্ক্যান করে বেশ চমৎকার একটা জিনিস পেলাম৷ সেটা হচ্ছে চ্যাটজিপিটির একটা প্লাগ-ইন। সেখানে কোনো স্বপ্নের বর্ণনা দিলে আপনাকে ব্যাখ্যা করে দিবে৷

আর মাশুদুল হকের লেখা নিয়ে বলতে হলে বলব যে কিছুই বলব না -.- কারণ উনি বরাবরই ভালোই লেখেন৷ সমসাময়িক লেখকদের মধ্যে উনি আমার পছন্দের তালিকার শুরুতেই আছেন।
.
.
আচ্ছা তো শুরুতে ওই তিনটা টপিক নিয়ে বলার কারণ হচ্ছে আমার মতে বইয়ের নাম 'ডায়াসপোরা ব্লুস' কারণ এহসানও পুরোপুরি কোনো ইউনিভার্সে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি৷ সে সবগুলোর মাঝামাঝি যেয়ে ঝুলে আছে। তবে বোঝা যায় বেশিরভাগ সময়ই উজানতলীর জন্য তার একটা আবেগ কাজ করে। আর তার এই পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে একটা লুসিড ড্রিমের মত। সে জানে যে স্বপ্ন দেখছে, আর সে চাইছেও ওই স্বপ্নটা দেখতে। আর ফ্রয়েড তো ফ্রয়েডই।

বেশ ভালো লাগলো বইটা পড়ে৷ ছোট কলেবরে লেখা কিন্তু বেশ গুছানো৷ পড়তে পারেন। অনেকদিন পর বড় রিভিউ লিখলাম। কী লিখলাম জানি না, প্রায় এক মাস সেমিস্টার ফাইনালের খাতা ছাড়া আর কোথাও লিখি নাই।
Profile Image for Amit Das.
179 reviews117 followers
February 2, 2025
বই পড়ি না প্রায় বছরখানেক হয়ে যাবে। গুডরিডসেও পুরোদস্তুর অনিয়মিত। মাঝেমধ্যে মনে হতো যেন অনন্তকাল হয়ে গেছে। দীর্ঘদিনের এই রিডার্স ব্লক কাটানোর জন্য সাতপাঁচ ভেবে বেছে নিলাম মাশুদুল হকের উপন্যাস 'ডায়াসপোরা ব্লুস'। বাতিঘরের এক কোনায় চুপিসারে পড়ে ফেললাম এক বসাতেই।
মাশুদুল হক পাঠের অযোগ্য কিছু লিখবেন না এইটুকু প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এতটা ভালো লাগবে তা আশা করিনি।
এক শব্দে বলতে গেলে বলবো, মার্ভেলাস!
পাঁচে সাড়ে চার।
Profile Image for নাহিদ  ধ্রুব .
143 reviews27 followers
March 11, 2024
‘Is all that we see or seem
But a dream within a dream?’
.
‘ডায়াসপোরা ব্লুস’ পড়তে পড়তে আমাদের ফিরে যেতে হয় অ্যালোন পো’র করা সে’ই বিখ্যাত প্রশ্নের কাছে। উত্তর খুঁজতে গেলেই আবিষ্কার করি, বাস্তব বলতে আমরা যে জগতে বাস করি, মোটা দাগে তাও একটা বৃহৎ কোন ইল্যুশনের অংশ হয়তো।

ফলে, ঢাকা / উজানতলী / অরোরাল্যান্ড / জুঁইয়ের জগৎ কিংবা ধানক্ষেতে ভাল্লুকের সামনে নত অবস্থায় নয়, আর্টিস্ট এহসানকে আমাদের দেখতে ভালো লাগে কোন এক রহস্যময় ম্যাজিকের এলিমেন্ট হিসেবে, যা সহজে ভাঙা যায় না কিন্তু সহসাই গুঁড়োগুঁড়ো করে সাজিয়ে রাখা যায় আমাদের মনের মধ্যে। একই প্রোটাগনিস্টকে নিয়েই যখন লেখক মাশুদুল হক ৫ টি আলাদা জগৎ প্যারালালি তৈরি করছেন তখন সঙ্গত কারণেই তাঁকে ছাড়তে হয়েছে যথেস্ট সুতো.. ফলে সুতো গোটানোর দায়ও থাকে কিছু। এক্ষেত্রে, লেখক কিছুটা তাড়াহুড়ো করেছেন বলেই মনে হলো উপন্যাসের শেষে। ইন্টারপ্রিটেশন অব ড্রিম থেকে উঠে আসা ফ্রয়েড কিংবা স্লিপিং ট্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করা এহসানও তাই হয়তো ল্যুপহোলগুলোর মুখ পুরোপুরি বন্ধ পারলো না যেন।

গল্পের আইডিয়া নিঃসন্দেহে চমৎকার। ভাষার দিকে লেখক আরেকটু সচেতন হলে হয়তো গল্পটায় আরও বেশি ডায়ভার্সিটি আসতো। এই ক্ষেত্রে ভাষার গাঁথুনি আমার কাছে যথেষ্ট মজবুত মনে হয় নাই। তবু কথা থাকে। থ্রিলার বললেও সাই-ফাই এলিমেন্ট নিয়ে তৈরি করা এই সাইকোলজিক্যাল ডিলেমা নিয়ে লেখা উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে নিঃসন্দেহে একটি নতুন সংযোজন। এই জনরায় লেখক আরও কাজ করবেন.. এবং পরের কাজগুলো আরও ভালো হবে এটুকু প্রত্যাশা তো করাই যায়!
Profile Image for Farzana Reefat  Raha.
39 reviews14 followers
May 14, 2025
এখন বাজে ভোর ৪ টা ২০। ব্যাগগ্রাউন্ডে সিলেটের সিগনেচার বৃষ্টির আওয়াজের সাথে সাথে এলাকার মসজিদের মোয়াজ্জিনের আজান এর ধ্বনি। আর আমি মাত্র বইটা শেষ করলাম।

এই বইটা আজকে শেষ করার মোটেই প্লান ছিল না। বইটা হাতে নিয়েছিলাম SQL ক্যুয়েরি প্র্যাকটিস করতে করতে ব্রেক এ পড়বো বলে। কিন্তু কিসের SQL কিসের প্র্যাকটিস! হাতে যখন এরকম একটা সাইকোথ্রিলার-সায়েন্সফিকশন পড়ে তখন দুনিয়ার তাবৎ ভাবনারা ছুটি নেয়।

এই মুহূর্তে আমি বইটা শেষ করে ভাবছি, "কি পড়লাম বস!"

ছোটবেলায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় পা দেয়ার আগে আমি যখন তিন গোয়েন্দা পড়তাম, তখন পুরো ডুবে যেতাম। পাশের ঘর থেকে আম্মু ডাকলেও জবাব দিতাম না(আসলে শুনতামই না, জবাব কি দিব! এতই ডুব মেরে থাকতাম) দেখে কত্ত বকা যে খেয়েছি। আম্মুকে বোঝানোই যেত না আসলে আমার একটা সত্ত্বা আমার ঘরে আর আরেকটা রকি বীচে তিন গোয়েন্দার সাথে রহস্য উদঘাটনে মহাব্যস্ত। আর এক সত্ত্বা আরেক সত্ত্বার স্থানাঙ্কিক(!)-পরিপূরক। আমি যেমন সিলেটের একটা ছোট ঘরে আসলেই বসে আছি ঠিক তেমনি রকি বীচেও ছুটে চলেছি নিরন্তর - সত্যি সত্যি সিলেটের ঘরে বসে বই হাতে নিলেই আমি অন্য জগতে চলে যাই।
এরপর আর কি! সোশ্যাল মিডিয়া আসলো আর আমার attention span কমতে কমতে শূণ্য পার হয়ে নেগেটিভ এ। বইয়ের সাথেও সম্পর্ক চুটলো বৈকি!

লেখক মাশুদুল হককে ধন্যবাদ অনেকদিন পর এই বুড়ো বয়সে ছোটবেলার সেই ডুব দেয়ার অনুভূতির কাছাকাছি কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য। খুব ভাল্লাগছে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে একসাথে গল্প ফাঁদলেও ভজগট করেন নি - বরং খুবই পরিপাটি পরিচ্ছন্ন লেখা।

আরো অনেককিছু লেখা উচিত কিন্তু আপাতত আমি এইযে খুব্বব্ব ভালো একটা বই পড়ার পর যে একটা স্নিগ্ধ ভালোলাগার আর "কি পড়লাম! একটা মানুষের মাথায় এই আইডিয়া আসলো কেমনে!?" অনুভূতি কাজ করে সেটা ফিল করতে চাই।

৫✨
HIGHLY RECOMMENDED!
.
.
.
সিলেট, বাংলাদেশ | মে ১৪, ২০২৫
Profile Image for Akhi Asma.
230 reviews464 followers
March 28, 2025
“So, here you are
too foreign for home
too foreign for here.
Never enough for both.”



ডায়াসপোরা ব্লুস, seems like a journey through fragmented realities, a story that constantly shifts between the tangible and the imagined. At its core, it's a book about searching for a place, for identity, for meaning while never fully belonging anywhere. The very concept of diaspora is soaked in melancholy, a kind of longing that never quite resolves itself, and that feeling remains over the book like a permanent shadow.

The protagonist, এহসান, isn't just moving through different locations but through layers of reality itself. His existence is stretched thin between ঢাকা, উজানতলী, অরোরাল্যান্ড, and an English town where he is on the run. Each place feels real for a moment, only for doubt to creep in. Are they real, or is it all in his mind? This constant blurring of lines is unsettling but also what makes the book so fascinating. It mirrors the experience of being caught between worlds, never fully at home in one, always longing for another. The way the book plays with multiple dimensions and timelines could have easily felt gimmicky, but the writing keeps it grounded. There is an almost mathematical precision in how these realities interlock. মাশুদুল হক doesn't just throw ideas at the page. He builds a structure where every confusion and every shift in setting feels deliberate. And despite the complexity, the storytelling remains accessible. There is no overindulgence in style or unnecessary philosophical musings. It's straightforward yet layered, making sure that the weight of the book comes from its characters rather than just its concept.

One of the things that made ডায়াসপোরা ব্লুস even more fun for me was the code scanning part. I was so intrigued by it that I actually scanned it myself just to see what would come up. There is something about that interactive element that made the book feel even more immersive, like it was not just a story on a page but something spilling out into reality. And then there is the lucid dreaming aspect. My curiosity about lucid dreams never seems to end. Just a few days ago, I watched 'Waking Life' and even wrote about it, trying to untangle the strange, fluid space between waking and dreaming. This book taps into that same fascination, the blurring of realities, the question of what is real and what is just another version of reality layered on top of itself.

What makes ডায়াসপোরা ব্লুস compelling is that it's not just about physical displacement. It's about mental and emotional displacement, about the way people can exist in multiple places at once, geographically, psychologically, and emotionally. It's about feeling foreign in one's own skin. And in that sense, even without traveling across dimensions, the story feels universally relatable.

The ending, where the different realities merge, could have fallen into the trap of feeling like a forced resolution, a typical twist for the sake of a twist. But it doesn't. Instead of an external force swooping in to fix things, এহসান has to navigate his own path. The resolution isn't a neat answer. It's an acceptance of uncertainty. And maybe that's the whole point. Some questions do not have clear answers, some journeys never really end, and some people remain in transit forever.


"They say that dreams are only real as long as they last. Couldn't you say the same thing about life?"
Profile Image for Gilgamesh .
45 reviews4 followers
August 28, 2025
বই : ডায়াসপোরা ব্লুস
লেখক : মাশুদুল হক

গতানুগতিক ধারার থেকে একদমই ভিন্ন এই বই। কখনো সাইকোলজিক্যাল, কখনো সাই-ফাই, কখনো বা থ্রিলার, কখনো মাথা মুন্ডু কই থেকে কি হচ্ছে না বুঝা।

এহসান, যার একটা সত্ত্বা ঢাকা, কখনো বা উজানতলী, কখনো বা অরোরাল্যান্ডে, কখনো বা ইংল্যান্ড। তার কোন জগৎটা আসল, তা জানতে চায় সে। এভাবেই বইয়ের কাহিনী এগিয়ে চলে।

সিমুলেশন, লুসিড ড্রিম এরকম বিষয় এই বইয়ে দেখতে পাওয়া যায়। আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হইছে। বরাবরই এই বিষয়গুলা ভালোই লাগে।

ওপেন এন্ডিং দেওয়া হইছে বলা যায়। "Hello world" একটা এনিমে আছে, আমার কাছে ওইটার মতো লাগছে শেষটা।

মাশুদুল হকের অন্য বইয়ের থেকে এই বইয়ের লেখনি কিছুটা ভিন্ন লাগছে, হয়তো গল্পের কারনেই তবে ভালো। তবে দুই একটা জায়গায় কেমন জানি লাগছে।

ভিন্ন কিছুর স্বাদ পেতে চাইলে মাত্র ১১০ পৃষ্ঠার বইটা পড়ে দেখতে পারেন।

হ্যাপি রিডিং 📖📚
Profile Image for Adham Alif.
334 reviews80 followers
February 21, 2024
মাত্র একশ পাতার ছোট্ট বইতে সাইন্স ফিকশন, থ্রিলার, দর্শন, মনোস্তত্ব এ সবই অল্প অল্প করে রেখেছেন। ওর মধ্যেই পাঁচটা ভিন্ন জগৎ তৈরী করেছেন লেখক। একেকটা জগৎ আবার নিজস্ব ভঙ্গিতে বেশ স্বতন্ত্র। শুরুর কয়েক পাতাতে তাই জগৎগুলোতে ঠিক কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে তাতে অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় লাগে। কিন্তু এরপরই ঘোরের মতো এক জগৎ থেকে অন্যটায় ভ্রমণ চলতে থাকে। ওই সময়টুকু থেকে শেষ অব্দি পর্যন্ত পড়া আনন্দদায়ক।
Profile Image for musarboijatra  .
283 reviews351 followers
March 12, 2024
মন কতটা ভঙ্গুর হলে ভেঙ্গে পড়তে পারে বাস্তবতা?

Diaspora মানে ছড়িয়ে পড়া। ফসলের বীজ ছড়িয়ে পড়া থেকে তার অর্থ পালটে হয় গ্রিস থেকে স্থানান্তরিত, বাইরে বসবাসরত গ্রীকদের পরিচয়, পরবর্তীতে নিজ ভূমিচ্যুত ইহুদীদের বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহার হতে থাকে। নিজভূম থেকে বিচ্ছিন্ন, ছড়িয়ে পড়া মানুষদের বোঝানো শব্দটা মাশুদুল হকের উপন্যাসে পেয়েছে নতুন অর্থ। এবার ভেঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে মন, শক্তি'র কবিতার মতো—"পথের হদিস পথই জানে, মনের কথা মত্ত / মানুষ বড় সস্তা , কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো"

কার্ট ভনেগাট-এর Slaughterhouse-Five উপন্যাসে পড়েছিলাম, দিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুঃসহ স্মৃতি থেকে মূল চরিত্রের মনে কেমন করে কাল্পনিক স্মৃতি জন্ম নেয়। যেখানে চরিত্র ঘুরে এসেছে ট্র্যালফামাডোর নামের পঞ্চম মাত্রার গ্রহ থেকে, যেখানে সময় স্থির এবং আপনার জীবনের শুরু-শেষ-পরিণতি আপনি দেখতে পাবেন যুগপৎ। তাতে করে ট্র্যালফামাডোরের বাসিন্দাদের মতো, গল্পের চরিত্রেরও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পালটে যায়। যুদ্ধের ট্রমা অথবা জীবনের দুর্ভোগ আর ছোঁয় না তাকে।

ডায়াসপোরা ব্লুস পড়তে গিয়ে আমরা একেক অধ্যায়ে একেক জগতে দেখতে পাই মূল চরিত্রকে। এহসান, ঢাকায় একা থাকে, চাকরি করে কোনোরকম। এহসান জানে না তার উজানতলী'র জীবন সত্য, নাকি ঢাকার জীবন। উজানতলী, যেখানে তার বাবা-মা'র মৃত্যু ঘটেনি, বাবা এলাকার প্রভাবশালী নেতা, ফলে এহসানের কোমড়েও বন্দুক এবং তার চালচলন ঢাকার উলটা। কিন্তু দুটা আলাদা মানুষের মাথায় তো বাস করছে না সে! দুটা একই মানুষ, একই জীবন, কিন্তু ভিন্ন পরিণতির। কোনো একটা কি তবে স্বপ্ন?

তবে তার কাছে ভীষণ সত্য বলে মনে হওয়া কিছু জীবন যে আসলেই স্বপ্ন, অথবা স্মৃতি, তা সে কিছুটা বুঝতে পারে। কোথাও সে বিস্তীর্ণ গমক্ষেতে ভালুকের মুখে পলায়নপর। কোথাও লন্ডনে প্রবাসী ছাত্র। আবার কোথাও অরোরাল্যান্ড নামের এক শহরের বাসিন্দা, যেখানে সবার বয়স বিশ।

এই সব ভিন্ন জীবন চলছে যুগপৎ, যেন কয়েক টুকরো হয়ে নিজ নিজ স্বতন্ত্র গল্প সাজিয়ে নিয়েছে এহসানের মন। এবং এই চ্ছিন্ন-জীবনের মাঝে থেকে নিজেকে খুঁজে নেওয়ার গল্প, ডায়াসপরা ব্লুস।
Profile Image for Anjan Das.
412 reviews15 followers
May 15, 2024
পাঁচ জগতে পাঁচটা এহসান।কি পাঁচটা জগতের নাম শুনে থমকে গেলেন? হ্যাঁ এই পাঁচ জগতের এহসানের কাহিনী নিয়েই বই "ডায়াসপোরা ব্লুস"।

এক জগতের এহসান নিরালা ক্যাটারিং হাউজের ছা পোষা কর্মকতা।আরেক জগতের এহসান উজানবাড়ি নামের এক জগতের বাসিন্দা,আরেক জগতের এহসান জুঁই নামক মেয়েকে সংগী করে লন্ডনের রাস্তায় ছূটছে তো আরেক জগতের এহসান ভাল্লুকের ভয়ে ক্ষেতে খামারে এদিক সেদিক দৌড়াচ্ছে।আচ্ছা আরেকটা জগত ও আছে যেখানে অরল্যান্ড নামক গ্রহে তিনটা সূর্য আছে এবং সেখানেও এহসান আছে যার বয়স বিশ!

যতই এগোছিলাম মনে পড়ছিল ক্রিস্টোফার নোলানের " ইনসেপসন" মুভির কথা। স্বপ্নের মধ্যে স্বপ্ন বা লুসিড ড্রীম এই দুটোর কথাই মনে আসছিল যত পড়ছিলাম তত।কিন্তু শেষ দিকে গিয়ে আবার আমার ভাবনার খোরাক হল যে এটা আসলে কি জনরার মধ্যে ফেলা যায়?অল্প পড়ে ভাবছিলাম মাল্টিভার্স নিয়ে কাহিনী,এরপর একটু আগানোর পর ভাবলাম ইনসেপন মুভির থিম,আবার আগানোর পর ভাবলাম মোটাদাগে সাইকোলজিকাল থ্রিলার!মাত্র ১১০ পেইজের ভিতর এত কিছু আসলেই লেখকের দুর্দান্ত লিখনশৈলীর কারণেই সম্ভব হয়েছে।

মোটের উপর ঘোর লাগা একটা বই।একবার না পড়ে বার বার পড়ার মতো একটা বই অবশ্যই বইয়ের থিম বুঝার জন্য।

পার্সোনাল রেটিং - ৪/৫
Profile Image for Humayra Ta Deen Fabi.
74 reviews8 followers
October 20, 2024
মাশুদুল হ��ের প্রথম বই পড়লাম ডায়াসপোরা ব্লুস। গল্পটা অন্যান্য বই থেকে আলাদা লেগেছে আমার কাছে। গল্পের মূল চরিত্র এহসান একই সাথে বিচরণ করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন জগতে। ঢাকার খিলখেতে এক সত্ত্বার বাস, উজানতলী তে বাস করছে তারই আরেক সত্ত্বা যারা মারা গিয়েছে তারা স্থান পাচ্ছে সেখানে। লন্ডনের এক শহরের গলি ঘুপচিতে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে জুঁই নামের একটি মেয়ের সাথে আবার অন্য দৃশ্যে সে বাস করছে অরোরাল্যান্ড নামক এক ভিনগ্রহে আবার এক ভয়ঙ্কর কালো ভাল্লুক ধাওয়া করছে ধানক্ষেতের বিস্তীর্ণ প্রান্তরে।

চার পাঁচটি সত্ত্বার ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান একের পর এক জানান দিচ্ছিল বাস্তবতা থেকে ভিন্ন এবং সাধারণ থ্রিলার গল্প থেকে আলাদা একটি গল্প।

ডায়াসপোরা মূলত dispersion শব্দ থেকে আগত, যা দিয়ে একটি সত্ত্বার একক স্থানে অবস্থান করা সত্ত্বেও কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান করাকে বোঝানো হয়।

গল্পটায় Inception মুভির সাথে মিল পেয়েছি যেখানে এহসান টের পাচ্ছিল সে একই সাথে কয়েকটি জগত ও কয়েকটি সত্ত্বা বহন করে বেড়াচ্ছে। ঘুমের সাথে স্বপ্নের সম্মিলনে জগৎ গুলোর যোগসূত্রতায় ল্যুসিড ড্রিমিং একদম স্পষ্ট।

একজন অসুস্থ ব্যক্তি অলমোস্ট মৃত্যুর দুয়ারে পতিত হতে গিয়েও হয়নি এরুকম অবস্থায় তার মানসিক শারিরীক অবস্থা প্রচ্ন্ড শোচনীয়। মানসিক এই কঠিন আঘাতের সাথে সহাবস্থান করতে করতে নিজের অস্তিত্বকে খোয়ানোর ভয় থেকেই মূলত তার কল্পনার মানসপটে এত গুলো চরিত্র সে ধারন করেছে।

নিজ অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য এহসান একের পর এক চরিত্র তৈরি করছে, বারবার ধ্বংস হতে গিয়েও নানান কৌশলে নিজেকে রক্ষা করে চলেছে।
মানুষের জীবনে অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার আরেকটি উপায় হচ্ছে হচ্ছে বিস্তার যেমনটা প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে। একদম শুরুর দিকে ধান গাছে গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ বীজ ছিটিয়ে প্রান্তর জুড়ে নতুন করে অস্তিত্ব কে জানান দেয়। বেঁচে থাকার জন্য ঠিক এমনটাই কল্পনার জগৎ বেছে নিয়েছিল গল্পের এহসান। কিন্তু এই মস্তিস্ক প্রসূত এলোমেলো জগৎ কি বাস্তব নাকি শুধুই কল্পনা কিংবা কোনটি বস্তুত সত্যিকার বাস্তব জগৎ? নিছক স্বপ্নময় জগতের ভুল কি ভাঙ্গবেনা?

গল্পে দেখা মিলবে মনো জগতের গলি ঘুপচির অন্তর্নিহিত রহস্য জানা ফ্রয়েড নামক ডাক্তারের। উত্তর মিলবে অনেক প্রশ্নের। ডায়াসপোরা কনসেপ্টের এই বই দিয়ে লেখক পাঠককে একই সাথে সাই ফাই , সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার আর ফ্যান্টাসির জগতে হাঁটিয়েছেন।

ভালো,খারাপ না। মাত্র শ পাতার বইয়ে এত ডিফারেন্ট কনসেপ্ট ফুটিয়ে তোলা এবং বোঝাতে পারা কঠিন তবে মাশুদুল হক এই ক্ষেত্রে স্বার্থক ,বইটি গতানুগতিক থ্রিলার থেকে ভিন্ন।

সবার খুব ভালো লাগবে এমনটা বলছিনা কিন্তু যারা একটু ছোটোর ভেতর ভালো গল্পের বই চান একটু ভিন্ন স্বাদ চান তারা এক বসায় পড়ে শেষ করতে পারবেন। রোমান্টিক বা নন ফিকশন লাভারদের স্কিপ করাই উত্তম।মনোজাগতিক প্লটের বিক্ষিপ্ত সত্ত্বার ডায়াসপোরা ব্লুজ দিয়ে ডিফারেন্ট একটা টেস্ট পেলাম।

বই: ডায়াসপোরা ব্লুস
লেখক: মাশুদুল হক
রেটিং: ৩.৫/৫
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Samsudduha Rifath.
425 reviews22 followers
February 26, 2024
পাঁচ জগতে পাঁচ জন এহসান। কোনটা ওর আসল জগৎ? রিয়েলিটি চেকই বা কিভাবে করবে সে? মাত্র ১০০ পেজে দারুণ এক উপখ্যান গেয়েছেন মাশুদুল হক। প্রথমে অনেক খাপছাড়া মনে হবে হুটহাট এক টাইমলাইন থেকে আরেক টাইমলাইনে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ধৈর্য্য ধরে থাকুন আপনি দারুণ কিছু পরে পাবেন। শেষের দিকেও আছে দারুণ এক রহস্য। ওপেন এন্ডিং যাকে বলে। দারুণ লেগেছে বইটা। অনেক দিন পর মাশুদুল হকের বই পড়া হলো। সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার এ ভিন্নধর্মী বই হয়ে থাকবে এটা।
Profile Image for Rafat Tamim.
73 reviews7 followers
February 21, 2024
অনেকদিন পর রিফ্রেশিং একটা বাংলা থ্রিলার পড়লাম। কোন সিনোপসিস বা রিভিউ না পড়ে, কোন পূর্বনির্ধারিত ধারনা না রেখে পড়ে ফেলা উচিৎ।
Profile Image for Saima  Taher  Shovon.
521 reviews190 followers
December 1, 2024
অনেকদিন পরে এতো মজার বই পড়ে শেষ করলাম! একটানা বই পড়ছিনা অনেককাল। সেই রেকর্ড আজ ভেঙেছে।

ধরো, তুমি এ জগতে দুই জায়গার বাসিন্দা। কিংবা তোমার আরো জগত থাকতে পারে। আর সে তুমিও জানো। কিন্তু কাউকে বললেই তোমাকে পাগল ঠাওরাবে! আবার তুমি জানো না কোন জগতে আসল তুমি।কিংবা এসব কী লুসিড ড্রিম? কি এলোমেলো লাগছে?কিন্তু একবার শুরু করলেই প্রতিটি জগতের বাসিন্দা হতে তুমি বাধ্য!


বই নিয়ে বলি। এতো জগতের ছড়াছড়ি এই বইতে,কিন্তু বর্ণনার কারণে কোনো জগতে চলাফেরা করতে সমস্যা হয়নি। ধুমধাম কক্সবাজারের কথা আসাতে আরো বেশি মজা লাগছিলো। থ্রিলার, কিন্তু কোন ধারার এ ভাবতে ভাবতে বই শেষ! এটাই যেনো একটা আফসোস!

আর এই বই শেষ করে আমি একটা জিনিস ঠিক করেছি। আমি এ মাসে শুধু "ব্লু" রঙের বই পড়বো। পরের বই কী হবে, বলতে পারো? হিন্ট: বইটা হুমায়ূন আহমেদের।
Profile Image for Habiba♡.
352 reviews23 followers
March 15, 2024
এই বইটা পড়ে অদ্ভুত এক ঘোরে আছি যেমনকি উনার অন্যান্য বই না পড়লেই নয়। শুরু থেকে একদম চেপে বসেছে গল্পগুলো যে বই ছেড়ে উঠার জো নেই। এমন ভিন্নধর্মী বই পড়তে পেয়ে সত্যিই ভালো লাগছে। বিশেষ করে ভাবাচ্ছে সাইকোলজিক্যালি মানুষের মস্তিষ্ক কতশত জটিল বিষয় ভাবতে পারে।

লেখকের মোটামুটি ২/৩ টা বই পড়া হয়েছে এবং নিসন্দেহে বলতে পারি খুবই ভালো লেখেন। উনার গল্পের বিল্ড-আপ আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।
Profile Image for  Sikey.
35 reviews1 follower
May 31, 2024
বইটি পড়েছেন???
বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন এলোমেলো ঘটনা দিয়ে সাজানো এই বইটি। বিক্ষিপ্ত ভাবে অনেকগুলো ঘটনা একসাথে চলমান। কোনটা স্বপ্নের জগত কোনটা বা বাস্তব। কোনটি বাস্তবতা আর কোনটি ই বা কাল্পনিক তা নিয়ে বইটির প্রধান চরিত্র নিজেই সন্ধিহান।
বইটা পড়ার সময় এর জনরা নিয়ে আপনি ভাবতে বাধ্য হবেন। কখনো মনে হবে থ্রিলার,কখনো সাইকোলজিক্যাল আবার কখনোবা সাইফাই।
বেশ ভালো একটি ভিন্নধর্মী বই💙
ডায়াসপোরা ব্লুস 💙
Profile Image for Mahbub Mayukh Rishad.
57 reviews15 followers
March 16, 2024
৩.৫/৫

গল্প এমনই হওয়া উচিত। গল্পের ভেতরের গল্প, গল্পের আড়ালের গল্প, এক জগতের ভেতর আরেক জগতের গল্প, এক জীবনের ভেতর আরেক জীবনের গল্প।

কোনটা সত্য? কোনটা মিথ্যা? এইসব ডায়ালেমা আমাদের কোথায় নিয়ে যায়?

৩.৫/৫ দিচ্ছি একটাই কারণে আচমকাই ফ্রয়েডের এসে পড়া এবং গল্পের ভাষা। এত দুর্দান্ত একটা সাইকোলজিক্যাল স্টোরি আরেকটু ভরাট ভাষা আমার কাছে দাবি করে। কিছু কিছু জায়গা আদৌ দরকার ছিল কিনা, গল্পটা একটু দ্রুত শেষ হয়ে গেল কিনা এসব আলাপও তোলা যায়। তবে জরুরি না।

তবে মাশুদুল বা অন্য অনেকেই যেভাবে লিখছে, যেভাবে ভাবছে, সেই ভাবনা, সেই চিন্তা আমাকে অনুপ্রাণিত করছে।

আমার নিজের বর্তমানে লিখতে থাকা সায়ানাইড ফুলেও এরকম প্যারালাল ইউনিভার্সের গল্প আছে। ডায়াসপোরা ব্লুস তাই আমার নিজেরও কাজে লাগবে।
Profile Image for Shotabdi.
818 reviews194 followers
September 25, 2025
নতুন ধরনের একটা জনরা বলা যায়। বা মিশ্রিত জনরা। কিন্তু মিশ্রণটা ঠিকঠাক। বেশ ধাঁধাঁপূর্ণ এহসানের এই জগতে কোনটা বাস্তব আর কোনটা স্বপ্ন বোঝা মুশকিল। কোনটা বিভ্রম আর কোনটা সত্যি এই সত্য আবিষ্কারের চাইতে তাই চিরায়ত কিছু মানববৈশিষ্ট্যের দিকে খেয়াল করলে গল্প আরো উপভোগ্য হয়। মানুষের অন্ধকার মনের নানা দিক এর পাশাপাশি উজানতলীর প্রকৃতির বিস্তৃত বর্ণনা একটা সুন্দর বৈপরীত্যের জন্ম দেয়। ফ্রয়েড আর গিরীন্দ্রশেখরের উপস্থিতি পাঠকদেরকে একটা ধাক্কা দেয়। বেশ নতুন অভিজ্ঞতা। ভালো অভিজ্ঞতা।
8 reviews1 follower
July 23, 2025
বইটা খানিকটা কৌতুহল থেকেই পড়তে শুরু করা... ডায়াসপোরা ব্লুস টার্মটা অনেক আগে পড়েছিলাম, ভেবেছিলাম বইটা হয়তো সেই বিষাদ নিয়েই লেখা হবে। কিন্তু এতটুকু একটা বই যে এভাবে চমকে দিবে তা ভাবিনি। বইয়ের একই চরিত্রের স্বপ্ন, এবং স্বপ্নের মধ্যে স্বপ্ন যেন পেঁয়াজের খোসার মত... প্রথমদিকে একটু বুঝতে বেগ পেতে হয়, কিন্তু গল্পে ঢুকে যাওয়ার পর মনে হয়েছে এত অল্প কথায় এত চমৎকার কিন্তু জটিল কাহিনী বলতে পারাটাই লেখকের মুন্সিয়ানা।

অভিযোগ কেবল কিছু বানান ভুলের, আর উপন্যাসের সংক্ষিপ্ত কলেবরের... যদিও মনে হয় মেদহীন ঝরঝরে লেখা এতটুকুও ভালো!

বাংলা উপন্যাসে বৈচিত্র্য আসছে। মাশুদুল হকের ডায়াসপোরা ব্লুস সেই বৈচিত্র‍্যের একটা চমৎকার উদাহরণ। লেখককে অভিবাদন!
Profile Image for Sumaiya Khair.
24 reviews8 followers
May 3, 2024
আমি থ্রিলার পড়া শুরু করি মূলত একটা নাক সিটকানো ভাব নিয়ে । ‘ডায়াসপোরা ব্লুস’ও সেইম ভাব নিয়ে পড়া শুরু করেছিলাম। লেখকের অসচরাচর বইটা want to read লিস্টে আছে , তবে ডায়াসপোরা ব্লুস ছিলো না। কিন্তু বইটা কয়েক পৃষ্ঠা পড়ার পর ই ইন্টারেস্টিং লাগা শুরু করে। প্লট টা বেশ চমৎকার লেগেছে। অরোরাল্যান্ড/ জুঁই এর জগতের ব্যাপারটা নিয়ে আলাদা একটা বই লেখা যাবে মনে হয়েছে। তবে শেষের দিকে কাহিনী খুব তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গেছে। শেষের দিকে আরো স্পষ্ট করে কাহিনী ব্যাখ্যা দেয়া হলে ভালো হতো।

মাশুদুল হকের লেখা এই প্রথম পড়লাম। ঝরঝরে, আরামদায়ক লেখা। সব মিলিয়ে ভালোই। অন্য বইগুলো পড়ে দেখার আগ্রহ বেড়ে গেলো।
Displaying 1 - 30 of 94 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.