Jump to ratings and reviews
Rate this book
Rate this book
সময়ে অনেক কিছুই বদলে যায়, যেমন বদলে গেছে পেশাদার খুনি বাস্টার্ড। এদিকে ঘটনাচক্রে এমন একটি কেসে জড়িয়ে পড়লো জেফরি বেগ যা তার জীবনটাই ভেঙেচুড়ে আমূল পাল্টে দিলো। এত ক্ষমতাধর কারোর মুখোমুখি হয়নি এর আগে। আইনের উর্ধ্বে আর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা এসব লোকের নাগাল পাওয়া তার পক্ষে অসম্ভব নয় সেজন্যেই নিজের চরিত্রের বাইরে গিয়ে অভূতপূর্ব এক ঘটনার জন্ম দিলো সে—শরণাপন্ন হলো পেশাদার খুনি বাস্টার্ডের! তাকে একটা কন্ট্রাক্ট দিতে চায় সে! তবে কি বেগ-বাস্টার্ডের দ্বৈরথের ইতি ঘটলো? নাকি সূচনা হলো নতুন এক অভিযাত্রার? মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের পাঠকপ্রিয় ‘বেগ-বাস্টার্ড’ সিরিজের সপ্তম আখ্যান ‘কন্ট্রোল’ পাঠকের জন্য ভিন্নমাত্রা নিয়ে উপস্থিত হবে, এটুকু অন্তত বলা যায়।

408 pages, Hardcover

First published February 19, 2024

20 people are currently reading
329 people want to read

About the author

Mohammad Nazim Uddin

65 books1,534 followers
MOHAMMAD NAZIM UDDIN (Bengali: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) is a writer and Translator of more than 26 novels..His original works are NEMESIS, CONTRACT, NEXUS, CONFESSION,JAAL, 1952: nichok kono number noy, KARACHI, RABINDRANATH EKHANE KOKHONO KHETE ASENNI and KEU KEU KATHA RAKHE. These six Thriller novels are highly acclaimed by the readers.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
140 (43%)
4 stars
135 (41%)
3 stars
41 (12%)
2 stars
5 (1%)
1 star
3 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 73 reviews
Profile Image for Shuk Pakhi.
512 reviews306 followers
March 18, 2024
আমার কাছে এই সিরিজের সেরা বই হলো কন্ট্রাক্ট।
কন্ট্রোল পড়ার পর এটাও কন্ট্রাক্ট এর সাথে একই কাতারে চলে আসলো।
বইটা পড়ার সময়ে নানান ঘটনার প্রেক্ষিতে পাঠকের বারবার উগান্ডার কথা মনে পড়বে।
নাজিম ভাই এই বইতে একবারে মন খোলে লিখেছেন।
Profile Image for Rakib Hasan.
459 reviews79 followers
April 10, 2024
কন্ট্রোল বইটা পড়ার আগে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের সেরা বই মনে হতো কন্ট্রাক্ট বইটাকে। কিন্তু এবার সিরিজের সেরা বই কোনটা সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে আছি সিরিজের সপ্তম বই কন্ট্রোল পড়ার পর।

এত সেন্সিটিভ ইস্যু নিয়ে সুন্দরভাবে লেখা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের পক্ষেই সম্ভব৷ সমসাময়িক নানান ইস্যুগুলোও বইয়ে বেশ সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। তুলে ধরেছেন দেশের করুণ পরিনতিও।

যাইহোক, সেসবের মাঝেও শুধুমাত্র থ্রিলার বই হিসেবে এই বইটা আসলেই অনেক বেশি অসাধারণ। দীর্ঘ অনেকদিনের গ্যাপের পর নেক্সট এবং কন্ট্রোল যেভাবে ফিরে এসেছে আশা করি এই সিরিজের সামনের বইগুলো মান অক্ষুণ্ণ রেখে নিয়মিত, একটু বেশিই দ্রুত প্রকাশিত হবে৷

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লেখা থ্রিলার বইগুলো এগিয়ে যাক। আশা করি বইটা সবার ভালো লাগবে।
Profile Image for Aishu Rehman.
1,101 reviews1,079 followers
April 27, 2024
পুরাই আগুন।
নাজিম ভাই এই সিরিজে যত্নের কোন ত্রুটি রাখে না।
Profile Image for Sakib A. Jami.
336 reviews36 followers
February 21, 2024
ক্ষমতা প্রাপ্তি মানুষকে নিষ্ঠুর করে তোলে। একটুখানি ক্ষমতা লাভ আরও অনেক ক্ষমতার লোভ জন্ম দেয়। চাই চাই, আরও চাই। আর এই চাইতে চাইতে কখন যে ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু হয়, সে নিজেও জানে না। এর ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ মানুষকে। যাদের অনেক ক্ষমতা, অঢেল টাকা— তাদের সাথে লড়তে যাওয়া খুব একটা সহজ না। জোর যার, মুল্লুক তার! ক্ষমতার জোরে, হুমকি ধামকি দিয়ে কাজ হাসিল করে নেয় তারা। কেড়ে নেয় জায়গা জমি। মাটি চাপা দেয় সাক্ষ্য প্রমাণ। তারা মনে করে, টাকায় কী না হয়! সবকিছু কিনে নেওয়া যায়। কিন্তু তারা জানে না, কখনো কখনো টাকার ঊর্ধ্বে সততা সবচেয়ে বড় সত্য। কেউ কেউ টাকার কাছে বিক্রি হয় না। আবার কেউ আছে, মানুষের জন্য ভাবনা চিন্তা করে। বদলে যাওয়া সময়ে অন্যায়কে ধূলিসাৎ করে দিতে স্বচেষ্ট হয়। কোনো একজন না থাকলে যদি শতশত মানুষ নিশ্চিন্তে নিঃশ্বাস দিতে পারে, তবে তা-ই হোক!

▪️কাহিনি সংক্ষেপ :

ঢাকার বিলাস বহুল আবাসিক এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া যায় এক তরুণীর ঝুলে থাকা লাশ। গেল রাতে মেয়েটির বোন থানায় বারবার ফোন দিয়ে বোনের কোনো খোঁজ না পাওয়ার কথা বললেও আমলে নেয়নি পুলিশ। ফলাফল, সব শেষ। হয়তো সময় মতো কিছু করা গেলে একটি প্রাণ হয়তো বাঁচানো যেত। ভুল বললাম, একটি নয় দুটি প্রাণ এখানে নিজেদের হারিয়েছে। কেননা মেয়েটি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল।

আপাত দৃষ্টিতে আত্মহত্যার কেস মনে হয় বলেই বনানী পুলিশ কেসের দায়িত্ব বুঝে নেয়। কিন্তু ঘটনাক্রমে হোমিসাইডের চিফ ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ ঘটনাস্থলে উপস্থিত। তার তীক্ষ্ণ চোখকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। ক্রাইম সিনে নজর বুলিয়ে সে সিদ্ধান্তে আসে, এটা কোনোভাবেই আত্মহত্যা নয়। পরিকল্পিত খুন। আর এই খুনের তদন্ত সে নিজে করবে।

কিন্তু বিষয়টা এত সহজ হবে না। একজন তরুণী, যায় বয়স একুশ কী বাইশ! বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে কেবল। এমন বিলাসবহুল এক ফ্ল্যাট কী করে ভাড়া করতে পারে? জানা যায়, দেশের সবচেয়ে ধনী বা প্রভাবশালী মানুষটির সাথে এই মেয়েটির ছিল প্রেমের সম্পর্ক। জাহান গ্রুপের সিইও আলভীর সাথে বছরখানেক প্রেমের সম্পর্ক থাকা কেউ যখন এভাবে অপঘাতে মারা যায়, তখন তোলপাড় শুরু হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আবার এ-ও যদি জানা যায়, যে মেয়েটি মারা গিয়েছে সে নিজের অভ্যন্তরে আরও একটি জীবন ধারণ করছে। আর সেই জীবনের বীজ? সেই ধনীর দুলাল বপন করে গিয়েছে।

ক্ষমতাবানদের সাথে লড়াই করা খুব একটা সহজ নয়। তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রলোভনে থাকে। তারা মনে করে অর্থই সব। টাকা দিয়ে সব কেনা যায়। কিন্তু ওরা জানে না, অর্থই সকল অনর্থের মূল। অর্থ দিয়ে সব কিনে নেওয়া গেলেও, বিবেকের কাছে চিরকাল হেরে যেতে হয়। জেফরি বেগ বুঝছে কোন সাপের গর্তে পা দিয়েছে সে। তার এই তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়ত বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকছে না। যতই ক্ষমতা থাক, টাকাপয়সা থাক; রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে কেউ নয়! আর সেটা প্রমাণ করতে বড্ড পরিকর বেগ।

তাই সে ছুটছে তথ্য প্রমাণ এক করার জন্য। প্রধান সন্দেহভাজনের সাথে দেখাও করে। তর্ক, বাকবিতণ্ডা শেষে এক পর্যায়ে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। বাঘের গুহায় গিয়ে এমন এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মাশুল কী হবে জানে না বেগ। নিজে তো বেঁচে ফিরেছে। কিন্তু এর ফল হবে ভয়াবহ। পিছুটান না থাকা বেগেরও পিছুটান আছে। সবকিছু শেষে সেখানে টান লাগে। হারিয়ে যায় একটু একটু করে গড়ে তোলা স্বপ্নগুলো। বেগ এখানে নিঃস্ব, হারিয়ে ফেলা এক ব্যর্থ-বিধ্বস্ত মানুষ। ক্ষমতাবানদের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া যায় কম্ম নয়। তাই স্মরণাপন্ন এমন একজনের যার পেছনে ছুটতে ছুটতে একদিন থেমে গিয়েছিল।

ওদিকে বাস্টার্ড কী করছে? পালিয়ে, লুকিয়ে আর কতকাল থাকবে। অমূল্যবাবু তাকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। তাই আড়ালে আবডালে থাকতে চায়। তারপর একদিন বাস্টার্ড জানতে পারে, জেফরি বেগ তাকে খুঁজছে। কিন্তু কেন? যাওয়া ঠিক হবে? সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল বাস্টার্ড। বেশ কিছুদিন অখ্যাত এক সংবাদ মাধ্যমে দেশের কিছু খবর সামনে এসেছে, যা বিস্ময়কর!

অস্ত্র জমা দিলেও ট্রেনিং জমা দেয়নি বাস্টার্ড। আবারও পুরনো রূপে ফিরে গিয়েছে। না, এবার কারো কন্ট্রাক্টে না। নিজ স্বেচ্ছায়। যা দেশ পেরিয়ে তাকে নিয়ে গিয়েছে দুবাইতে। বিশ্বের সবচেয়ে জাঁকজমক শহরে। যেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশ্বের সেরা। জিরো ক্রাইম নীতিতে বিশ্বাসী। এমন এক জায়গায় কাজ করতে গেলে দুঃসাহসের প্রয়োজন হয়। বাস্টার্ডের সেটা আছে। তারপরও সবার চোখ এড়িয়ে কাজ হাসিল করতে সচেষ্ট হবে কীভাবে? না-কি প্রথমবারের মতো ব্যর্থ হবে বাস্টার্ড?

এই গল্পটা দেশের রাজনীতির। ক্ষমতার অপব্যবহারে যারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে তোলে। এখানে আছে প্রতিশোধ, ঈর্ষাপরায়ণতা, প্রতিহিংসা, মানুষের জন্য কিছু করার তবে প্রয়াস। তবে সবশেষে গল্পটা বেগ আর বাস্টার্ডের। এখানে কোন ভূমিকায় আবির্ভাব হবে দুইজন? আবারও ইঁদুর-বেড়াল খেলা? না-কি নতুন কোনো অধ্যায়, নতুন ভূমিকা!

▪️পাঠ প্রতিক্রিয়া :

বেগ বাস্টার্ড সিরিজ চলছে। আপন গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ছয়টি বই শেষে সপ্তম বই এখন প্রকাশিত। কেমন অনুভূতি দিলো এই সাত নম্বর বই? পাঠক প্রিয় হওয়া বেগ বাস্টার্ড সিরিজের শেষ কয়েকটি বই ঠিক মন মতো হয়নি। শুরুর বইযগুলোর মতো আবেদন তৈরি করতে পারেনি। সে হিসেবে দেখতে গেলে “কন্ট্রোল” এক অন্যরকম গল্প। যে গল্পের সাথে অধিকাংশ পাঠকই এক ধরনের সংযোগ স্থাপন করতে পারবে। একই সাথে এই গল্পের গতিপ্রকৃতি ভিন্নখাতে প্রবাহিত হয়েছে। যা অনেক পাঠকের মনে বিস্ময়ের জন্ম দিবে। তাদের চাওয়া হয়তো এমন ছিল না। আবার অন্যদিকে কেউ কেউ এমন কিছু চাইলেও চৈত্র পারে। আমি দ্বিতীয় দলের মানুষ।

যে ঘটনার সূত্রপাত দিয়ে লেখক গল্পের শুরু করেছেন, সেই বিষয়টি নিখাদ বাস্তব। পড়তে গেলেই অনেক কিছু অনুধাবন করা যায়। যা আমাদের পরিচিত। চেনা জানা এক গল্প। একসময় এমন এক ঘটনা দিয়েই পুরো দেশ তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল। আমার মনে হয়েছে, লেখক গল্পের আড়ালে অনেক কিছুই বলতে চেয়েছেন। আমরা সাধারণ মানুষ অনেক কিছুই করতে চাই। কিন্তু পারি না। অক্ষম রাগে মাথার চুল ছিঁড়লেও কিছু করার ক্ষমতা থাকে না। লেখকরা এক্ষেত্রে অনেক কিছুই করতে পারেন। নিজের আক্ষেপ, চাওয়া পাওয়া লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন যেন সেই কাজটিই করেছেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লেখক যে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন, কিংবা শেষের দিকে এসে যে পরিণতির আভাস দিয়েছেন; অনেকেই হয়তো সেই ইচ্ছা পোষণ করেন। অনেকের হয়ে কথা বলার দায়িত্ব লেখক একা কাঁধে নিয়ে নিয়েছেন।

“কন্ট্রোল” বইটি যেহেতু হোমিসাইড নিয়ে, সেহেতু তদন্ত প্রক্রিয়া এখানে গুরুত্বপূর্ণ। আর লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এখানে অপ্রতিরোধ্য। একটি তদন্ত প্রক্রিয়া কীভাবে চলে, কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, ঘটনার গতি প্রকৃতি কেমন থাকে— সবকিছু লেখকের লেখা থেকে শেখা যায়। যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তার উপর একটি মানসিক চাপ ফেলতে হয়। আর এক্ষেত্রে সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদ নয়, সহকারীর সাথে আলোচনা মাধ্যমে সেই চাপ তৈরি করা যায়। এই বিষয়টি আমার ভালো লাগে। কিছু বিদেশি বইতে এমন প্রক্রিয়া দেখেছিলাম। ফলে এক ধরনের আগ্রহ তৈরি হয়। সেই সাথে ঘটনাও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

লেখকের লেখা নিয়ে অভিযোগ করার আসলে কোনো জায়গা নেই। এত সাবলীল লেখা যেভাবে গল্পের সাথে সংযোগ স্থাপন করে, তার কারণেই লেখা গতিশীল হয়ে ওঠে। দ্রুত পড়তে পারা কিছু বইয়ের মধ্যে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বইও অন্যতম। আমি তার বর্ণনার অনেক বড়ো ভক্ত। তিনি যেভাবে চরিত্র তৈরি করেন, গল্পের গাঁথুনি স্থাপন করেন— সবকিছু আমার কাছে শতভাগ যথাযথ মনে হয়। এখানেও তিনি সেই কাজ করেছেন। পুরনো বইগুলোর কিছু চরিত্র এনেছেন। আবার বর্তমান চরিত্রগুলোকেও যথাযথ সময় দিয়েছেন। যেহেতু একটি সিরিজ চলমান, অতীত বর্তমান মিলিয়ে অসংখ্য চরিত্র এখানে জায়গা পেয়েছে। পুরনো চরিত্র নিয়ে বেশি কথা বলার প্রয়োজন নেই। তেমনি নতুন সব চরিত্র নিয়ে কাজ করার দরকার ছিল। এখানে লেখক বেশ সফল। কোনোকিছুর যেমন কমতি মনে হয়নি, তেমনই বাহুল্য নজরে আসেনি। যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই।

লেখক তার লেখার মাধ্যমে পাঠকদের দুবাই থেকে ঘুরিয়ে এনেছেন। দুবাইয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য, জমকালো এক শহরের একাংশ খুবই অল্প কথায় যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, এক কথায় অসাধারণ। প্রকৃতি বা পরিস্থিতি বর্ণনায় লেখক বারবার আমাকে মুগ্ধ করে। গল্পের খামতি থাকতে পারে, কিন্তু লেখায় খামতি পাওয়া যায় না। অবশ্য “কন্ট্রোল” গল্পের ক্ষেত্রেও পুরোপুরি সেরা একটা উপাখ্যান। বেশ উপভোগ করেছি।

লেখক তার লেখায় সমাজের অনেক অসঙ্গতি তুলে ধরার চেষ্টা করেন। এখানেও করেছেন। যেমন অর্থের কাছে রাষ্ট্র জিম্মি হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক নেতারা টাকার সুঘ্রাণ পেলে মৌমাছির মতো ছুটে যায়। আর তাদের হাত ধরে অনৈতিক কাজ গুলো করে নেওয়া যায়। সমাজের বিভিন্ন সেক্টর আজকাল অযোগ্যতার সয়লাব। ফলে কলুষিত হয় দেশ। চুনোপুটিরা কখনো কখনো নিজেদের হারালেও, রাঘব বোয়ালরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। লেখক এই সিস্টেম ভাঙার গল্প বলেছেন। থ্রিলারের আদলে তুলে এনেছেন এই অরাজকতা। যা দেশকে নিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর শেষ লগ্নে।

ফ্ল্যাপ পড়ে, গল্পের গতি প্রকৃতিতে একসময় আন্দাজ করতে পারছিলাম কী হবে। কিন্তু কীভাবে হবে, এই জানার জন্য পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টে গিয়েছি। আর গতিশীল লেখায় কোথাও বাধাগ্রস্ত হতে হয়নি। “কন্ট্রোল” বইটি বেশ খোলামেলা। কী হয়েছে, কী হচ্ছে সবই এক পর্যায়ে জানা যায়। অপরাধী দ্রুতই সামনে আসে। তারপরও বইয়ের আকর্ষণ কমে না। কেননা বাস্টার্ডের কর্ম পদ্ধতির সাথে পাঠক বেশ পরিচিত। একই সাথে বেগের তদন্ত প্রক্রিয়া যেভাবে একই বিন্দুতে মিলিত হয়েছে, সেখানে তৃপ্তি পাওয়া যায়। দেখা হয় না, সাক্ষাৎ হয় না; তবুও ওরা এক। যেন একই পথের পথিক।

▪️বানান, সম্পাদনা ও অন্যান্য :

বাতিঘর প্রকাশনীর বানান নিয়ে অভিযোগ করা ছেড়ে দিয়েছি। তারপরও কিছু বিষয় আক্ষেপ লাগে। বিশেষ করে কি/কী এর ভুল ব্যবহার। এছাড়া অসংখ্য জায়গায় ন/ণ এর ভুল ব্যবহার ছিল। ছাপার ভুল, বানান ভুল ছিল। তাছাড়া কিছু ইংরেজি শব্দের বানান ভুলও লক্ষণীয়। যেমন স্টিং অপারেশনকে স্ট্রিঙ্ক অপারেশন লেখা ছিল। এমন আর এক দুইটা বানানো দেখেছি, যা এখন মনে নেই।

বেগ বাস্টার্ড সিরিজের একই ধরার প্রচ্ছদ আমার বেশ লাগে। প্রচ্ছদ আর নামের মূলভাব শেষে এসে বোঝা যাবে। বাঁধাই চমৎকার হয়েছে।

▪️পরিশেষে, সমাজটা আমাদের। দেশটাও আমাদের। কিন্তু আমরা কিছু করতে পারি না। জিম্মি হয়ে থাকি দেশের শীর্ষে থাকা কিছু ক্ষমতাবানদের কাছে। কখনো কখনো এই বাঁধা পেরোতে হয়। আইনের চোখে হয়তো অন্যায়। কিন্তু অন্যায়কে রুখতে অনেক সময় অন্যায়ের পথ বেছে নিতে হয়। বাস্তবিক অর্থে এমন মানুষই দেশ ও সমাজের নায়ক। এরা কখনো অপরাধী হতে পারে না। কখনোই না।

▪️বই : কন্ট্রোল
▪️লেখক : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
▪️প্রকাশনী : বাতিঘর প্রকাশনী
▪️পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৪০৮
▪️মুদ্রিত মূল্য : ৬৫০ টাকা
▪️ব্যক্তিগত রেটিং : ৪.৮/৫
Profile Image for Ishraque Aornob.
Author 29 books403 followers
February 24, 2025
প্রকাশের প্রায় এক বছরের পর পড়লাম। হাতের কাছে কিছু না পেয়ে শুরু করি কন্ট্রোল। এরপর যা হয়েছে সেটা রেটিং দেখেই বোঝা যায়। চারশো পৃষ্ঠার পুরো বই একেবারে উড়ে গেছে। বলাই বাহুল্য, দারুণ পেইজ টার্নার। দেশের এক বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখা কন্ট্রোল। বাস্তব ঘটনার কোনো সুরাহা না হলেও দক্ষ হাতে এই ফিকশনে সেটার সুরাহা করেছেন লেখক। বইয়ের প্রথমার্ধ ছিল পুরোটাই জেফরি বেগের। তার ক্ষুরধার মস্তিষ্কের তদন্ত, শত্রুকে পরাস্ত ভিলেনকে জিজ্ঞাসাবাদ... কিন্তু ক্ষমতার কাছে আটকে যেতে হয় তাকে। এরপর বইয়ের দায়িত্ব নেয় বাস্টার্ড। বাকি অর্ধেক বাস্টার্ডের খেলা। যদিও সিরিজের প্রিয় বই হিসেবে এখনও কন্ট্রাক্টকেই এগিয়ে রাখবো। তবে কন্ট্রোলও থাকবে সেই তালিকায়। নেক্সটও অবশ্য এরকম এঞ্জয় করেছিলাম। সব জনরা সরিয়ে রেখে কন্ট্রোলকে নিয়ে বলতে গেলে বলতে হয় এটা একপ্রকার দারুণ রিভেঞ্জ থ্রিলার। পড়াটা উপভোগ করেছি।
Profile Image for Farhan.
725 reviews12 followers
August 21, 2024
নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না এই কথা লিখছি, কিন্তু নাজিমুদ্দিন সাহেবের এই বই অবশ্যপাঠ্য। কাহিনী বা লেখাভঙ্গির জন্য নয়, সেখানে সেই পুরনো নাজিমুদ্দিনই আছেন, শুরুতে গতিময় কিন্তু শেষে অগোছালো, এবং খানিকটা অবিশ্বাস্য। কিন্তু বিষয়বস্তুর জন্য, এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে, এই বই পড়তেই হবে। বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক ও তার সুপুত্রদের অকাজ-কুকাজই যে এই বইয়ের মূল বিষয়বস্তু, এবং এখানে কল্পনার মিশেল যে খুবই কম, সেটা বুঝতে মোটামুটি নিয়মিত সংবাদপত্রের পাঠক হলেই চলবে। প্রশ্ন শুধু ��কটাই ছিল, কোন দুঃসাহসে এমন একখানা বই লেখক লিখলেন? তার কি কোন খুঁটির জোর ছিল, নাকি গোলেমালে কোন এক সময়ে মেজাজ খারাপ করে লিখে ছাপিয়ে ফেলেছেন? আর এরকম একখানা বই লেখার পরে তিনি হেঁটেচলে বেড়াচ্ছেন কি করে? ঘটনা যা-ই হোক, বসুন্ধরা গ্রুপের গা শিউরে ওঠা কীর্তিকাহিনীর সারসংক্ষেপ জানতে বইখানা পড়া জরুরি। কানাঘুষা এবং ফ্যাক্ট মিলিয়ে বাজারে যা জানা যায়, বইটার সাথে তার তেমন কোন তফাৎ নেই।
Profile Image for Afsan Ahmed .
35 reviews2 followers
June 15, 2025
আশা করি নতুন দেশে নতুন করে বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের বই আসবে...
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews238 followers
June 22, 2024
প্রচন্ড রকমের বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত এই বইটা ব্যতিক্রম তো অবশ্যই! মে বি বেগ-বাস্টার্ড দ্বৈরথে ভিন্ন মোড় নিতে যাচ্ছে সামনে। অনিয়ম যেখানে নিয়মে পরিণত হয়, সেখানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির একজন সদস্য আর কী-ই বা করতে পারে। কিন্তু তাই বলে এই সমাধান? ওয়েল! অনিয়ম দেখতে দেখতে ত্যক্তবিরক্ত হয়ে যাওয়া বিদ্রোহী মন বলবে অবশ্যই অবশ্যই ঠিক আছে। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে ভালো হলেও সুদূর ভবিষ্যতে এর পরিণতি কী হবে তা নিয়ে কিছুটা হলেও শংকিত।

আমি আসলেই কনফিউজড! থ্রিলার বই হিসেবে একদম পারফেক্ট।
Profile Image for Rifat.
501 reviews327 followers
August 8, 2024
বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ এ দেশীয় থ্রিলার পাঠকদের এক আবেগে পরিণত হয়েছে আমার বিশ্বাস। কন্ট্রোলের গল্প অন্য সবগুলোর থেকে আলাদা, কেননা সময়ের আবর্তনে সব কিছুরই পরিবর্তন আসে। একটা হাই প্রোফাইল কেইস পালটে দেয় জেফরি বেগের বর্তমান! ওদিকে গা ঢাকা দিয়ে আড়ালে থাকা বাবলুও বদলে গেছে। সময় আর পরিস্থিতি জেফরিকে দাঁড় করায় বাবলুর দাড়গোড়ায়.. একটি কন্ট্রাক্ট!


"কন্ট্রোল" কবে পড়ে শেষ করেছি মনে নেই। এক অদ্ভুত সময় চলছে..কে যে কাকে কন্ট্রোল করতে চায় সেটা সত্যিকার অর্থে বোঝা মুশকিল। যে যার মতো আছে। নাজিম সাহেব অন্তত কিছু একটাকে কেন্দ্র করে লিখলেন!

১৬ জুলাই, ২০২৪
Profile Image for Junaed Alam Niloy.
86 reviews10 followers
March 10, 2024
বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ অনেকটা হিমু মিসির আলির মত আবেগে পরিনত হয়েছে। ছোট বেলায় হিমু মিসির আলি পড়তে নিলে এমনিতেই মন ভাল হয়ে যেত, একটানা পড়ে যেতাম; পড়ার মাঝে ফোন ধরতে ইচ্ছে হতো না, সোশ্যাল মিডিয়া তে ঢু মারতে ইচ্ছে হতো না! এই সিরিজের বেলায়ও এখন তেমন অবস্থা আমার।
নতুন বই কন্ট্রোল ভালোই লেগেছে, বেগ এবং বাস্টার্ড এর মধ্যে এই নতুন মোর সামনের বই গুলোতে গল্প কই নিয়ে যাবে তা খুবি ইন্টারেস্টিং লাগবে।
লেখক বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া একটা রিয়েল লাইফ ইনসিডেন্ট নিয়েই মূল গল্প লিখেছেন। আমাদের দেশে যারা ক্ষমতার বলে সব কিছু করে বেড়ায় তাদের একজন কে নিয়েই। সাথে আরেক ভাইরাল 'নায়িকা' ও ছিল!! আর নাজিম ভাইয়ের ফেবু তে রিসেন্ট যত পোষ্ট আছে সেইসব পোষ্টের মূল বিষয়বস্তুও এই গল্পে পরিস্কার দেখা গিয়েছে।
সিরিজের আগের বইগুলোর সাথে তুলনা করলে কন্ট্রোল শেষ দিকেই থাকবে, তবুও খারাপ বলার কোনো উপায় নেই, বাজারের অন্যান্য অখাদ্য থ্রিলারের থেকে বহু গুনে ভাল। এই সিরিজ সামনেও কন্টিনিউ করবে তা প্রায় শিওর। লেখকের জন্যে শুভকামনা।
৩.৫ দিব রেটিং। ৪ দেয়া যেত তবে ইদানিং কোনো গল্পেই বেশি বেশি 'কাকতালীয় ঘটনা' দেখলে ভাল লাগেনা।
Profile Image for Subrata Das.
164 reviews19 followers
June 18, 2024
৪.৫/৫
ভাগ্যের খেয়ালে বাঘ আর মহিষ এক ঘাটে জল খেলো।

দেশের কয়েকটি সত্য ঘটনার ছায়া রয়েছে উপন্যাসটিতে। এই ঘটনাগুলোর ভিক্টিমরা বিচার পাইনি। লেখক হয়ত কলমের আঘাতে খুনীদের প্রতীকি শাস্তি দিতে চেয়েছেন।
Profile Image for Safwan  Mahmood.
114 reviews4 followers
March 29, 2024
ব্ল্যাক রঞ্জুর গ্যাং-এর সাথে লড়াইয়ের শেষে আবার নির্ঝঞ্ঝাট জীবনে ফিরে এসেছে প্রফেশনাল কিলার বাস্টার্ড বাবলু। অমূল্যবাবুর নির্দেশে সাধারণভাবে গা-ঢাকা দিয়ে থাকে, আর সেই সাথে খুনের জীবন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার চেষ্টা করে। জেফরি বেগের সাথে তার দ্বৈরথও এখন আর নেই। কিন্তু অভিজাত সিংহকে কি আর শিকার করা থেকে আটকানো যায়?

অন্যদিকে, শীর্ষ সন্ত্রাসী ব্ল্যাক রঞ্জুকে আটক করার পর হোমিসাইড ডিটেকটিভ জেফরি বেগ তার ক্যারিয়ারে বড় সাফল্যের দেখা পাই। এমনই সময় একদিন আপাতদৃষ্টিতে আত্মহত্যা মনে হওয়া একটা কেসে ঘটনাচক্রে জড়িয়ে যাই সে। ভিক্টিম সোনিয়া নামের একজন তরুণী, একা থাকত বনানীর এক বিলাশ বহুল ফ্ল্যাটে, সেখানেই সিলিং-এ তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

ক্রাইম সিনে কিছু আলামতের ভিত্তিতে, ভিক্টিমের বড় বোনের সাক্ষ্য অনুযায়ী এটা খুন হওয়ার সম্ভাবনা বেশী হলেও স্থানীয় থানা কেসটা আত্মহত্যা বলে ক্লোজ করার জন্য জোরাজোরি করলে জেফরি নিজ উদ্যোগে কেসটা হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের অধীনে নিয়ে এসে তদন্ত করে যায়। জানা যায়, ভিক্টিম হলো দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান জাহান গ্রুপের সিইও এর ছেলে আলভীর প্রেমিকা। আলভীর সাথে লম্বা সময় ধরে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক চলছিল তার।

নানা প্রমাণ ও সাক্ষ্য অনুযায়ী আলভীই এই কেসের প্রধান সন্দেহভাজন। কিন্তু সে যেহেতু প্রচন্ড ক্ষমতাবান, তাই কেসটার উপর নানা দিক থেকে আঘাত আসতে লাগলো। এতো চাপের মধ্যেও জেফরি বেগ কেসটা নিয়ে কাজ করে যায়। কিন্তু সাসপেক্ট প্রচুর ক্ষমতাধর, বরাবরই আইনের উর্ধ্বে, ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।

অর্থ আর ক্ষমতার দাপটে অন্ধ এই দৈত্যের বিরুদ্ধে এই অক্ষম সিস্টেমের মধ্যে থেকে কতোটুকু লড়তে পারবে জেফরি বেগ? নাকি এমনটা করতে গিয়ে তার জীবনটা ভেঙেচুরে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে? পেশাদার খুনি বাস্টার্ডও বা কিভাবে এই কেসের সাথে জড়িয়ে যায়? শেষ পর্যন্ত কি আসল অপরাধী শাস্তি পাবে? নাকি রুঢ় বাস্তবতায় আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবাধে বিচরণ করে বেড়াবে? শেষ পর্যন্ত জল গড়িয়ে যাবে-ই বা কত দূরে?

জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের পাঠকপ্রিয় 'বেগ-বাস্টার্ড' সিরিজের লেটেস্ট বই 'কন্ট্রোল'। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন আর তার এই সিরিজটা আমার সবসময়েরই পছন্দের। বেশ কয়েক বছর আগে লেখকের 'নেমেসিস' বইটা দিয়ে বাংলা মৌলিক থ্রিলারের জগতের সন্ধান পাই আমি। তারপর একে একে ওনার প্রায় সব বই পড়ে ফেলি, কিন্তু সেটার মধ্যে এই সিরিজটাই বেশী প্রিয়। 'বেগ-বাস্টার্ড' সিরিজের বইগুলো পড়ার সময় বুদ হয়ে থাকতাম একদম।

সিরিজের শেষ বই 'নেক্সট'ও আমার কাছে উপভোগ্য লেগেছে। যদিও সেটার পরে লেখকের প্রকাশিত নোভেলাগুলো পড়ে খুব বেশী সন্তুষ্ট হতে পারে নি। তাই এবারের বইমেলায় এই বইটা প্রকাশিত হয়েছে শুনে খুব আশা নিয়ে কিনেছিলাম আর পড়তে শুরু করেছিলাম। এবারে আসি প্রতিক্রিয়াতে। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের কোনো বই-ই পড়তে বোরিং লাগে না ওনার সাবলীল গল্পকথন আর মসৃণ লেখনীর জন্য। এই বইয়েও তেমন লেখনী বিদ্যমান, এজন্য একবার পড়া শুরু করলে বইটা পাঠককে তার সাথে বেশ ভালোভাবেই জড়িয়ে ফেলবে।

বইটাকে যদি দুইটা সমান ভাগে ভাগ করি, তাহলে প্রথম ভাগে পাবো, জেফরি বেগের একটা খুনের তদন্ত করতে গিয়ে একদল ক্ষমতাশালী মানুষদের মুখোমুখি হওয়ার কাহিনী। আর দ্বিতীয় ভাগে, বাস্টার্ডের একটা নতুন কিলিং মিশন। প্রথম ভাগটা আমার কাছে চমৎকার লেগেছে। জেফরি বেগ চরিত্রটা অনেক দিন পর যথাযথ ভূমিকা রাখার সুযোগ পেয়েছে। সিরিজের শেষ দুটো বইয়ের একটাতে তো সে ছিলই না, ���ন্যটাতে তার ভূমিকা ছিল বেশ নগন্য। তবে এই বইয়ে চরিত্রটি ভালো স্পেস পেয়েছে, তার চরিত্রায়ন পেয়েছে নতুন মাত্রা।

সোনিয়া হত্যাকান্ডে জেফরি বেগের তদন্তকার্যগুলো সত্যিকার অর্থেই বেশ উপভোগ্য আর চিত্তাকর্ষক ছিল। আর সেই অংশে সত্য ঘটনা অবলম্বনে এদেশের অনিয়ম, দূর্নীতি আর ক্ষমতাশালীদের অত্যাচারের বিষয়গুলোকে লেখক এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে, পাঠক এক অক্ষম রাগে ফুসতে থাকবে। এর আগে এমন অনুভূতি লেখকের 'কেউ কেউ কথা রাখে' পড়ে হয়েছিল।

তবে দ্বিতীয় ভাগ অর্থাৎ বাস্টার্ডের অংশটা পড়ে আমি কিছুটা হতাশই হলাম। কারণ ব্যাখ্যা করছি, এই সিরিজের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথার এই খুনির লড়ে চলার গল্পগুলো। এজন্যই বাস্টার্ডের অভিযানগুলো খুবই উপভোগ্য। বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে লেখক এই ব্যাপারে দারুণ কিছুর আভাস দিলেও সেকেন্ড হাফে সেই কাহিনীটা খুব বেশী জমে নি।

কারণ লেখক অনেকটা জোর করে সব পরিস্থিতিই বাস্টার্ডের অনুকূলে নিয়ে এসেছে। তাই এক পর্যায়ে, বিশেষ করে দুবাইয়ের অংশটাতে বইটা খুবই একঘেয়ে হওয়া শুরু করে। সেইসাথে সেই অংশে লেখকের জোর করে কলেবর বাড়ানো সেই একঘেয়েমির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এন্ডিং গতানুগতিক, খারাপ না, লেখক বাস্টার্ডের চরিত্রেও একটা নতুন মাত্রা দেবার চেষ্টা করেছেন। আমার মতে, সিরিজটা এখানেই শেষ করা উচিত, আর না বাড়ানোই ভালো। সবশেষে বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের 'কন্ট্রোল' বইটা ভালো লাগলেও পুরোপুরি তৃপ্ত হতে পারলাম না।

📚 বইয়ের নাম : কন্ট্রোল

📚 লেখক : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

📚 বইয়ের ধরণ : ক্রাইম থ্রিলার, সাসপেন্স থ্রিলার

📚 ব্যক্তিগত রেটিং : ৩.৫/৫
March 13, 2025
বেশ ভালো ছিলো ।
মো নাজিম উদ্দিন বিশ্বাস যোগ্য ফিকশন লিখতে পারেন দারুন ভাবে । ফিকশনের সাথে ননফিকশন মানে রিয়েল লাইফের অনেক ঘটনা , বিষয়বস্তু এমন সুচারুভাবে ভাবে মিশিয়ে দেন যে মাঝে মাঝে মনে হয়না গল্প পড়ছি। সেই নেমেসিস থেকেই উনার এই ব্যাপারটা বেশ ইউনিক লেগেছে, উনি যেভাবে কোন ভনিতা না করে বাংলাদেশ এর অতীত বর্তমান কে গল্পের সাথে বেঁধে ফেলেন আর কোন লেখককে এমন করতে দেখিনি । গল্পে খুনোখুনি, মারামারি, যৌনতা আর অকথ্য ভাষার ব্যবহার থাকে অনেক কিন্তু ইমপোজড লাগেনা , ন্যাচারালি গল্পের খাতিরেই আসে । আর এই ব্যাপার গুলোই উনার গল্প কে রিয়েলিজমের একটা আলাদা মাত্রা দেয় ।
এবার আসি কন্ট্রোলের গল্পে । কন্ট্রোল এর সেন্ট্রাল প্লট আবর্তিত হয়েছে কয়েক বছর আগে ঘটে যাওয়া একটা সত্যিকারের খুনের ঘটনা কে বেজ করে । সচেতন পাঠকের এই পুরো ব্যাপারটা চট করে ধরে ফেলতে পারার কথা । বাস্তবে এই ঘটনার কোন সুষ্ঠু বিচার হয়নি... গল্পে জেফরি বেগ একটা পুরো এমপায়ারের বিরুদ্ধে প্রায় একাই যুদ্ধে নামে । কিন্তু পরিণামে হারাতে হয় জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান মানুষ টাকে । হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই ট্রাজেডি টা বেশ কষ্টের ছিল , কাছের মানুষ হারানোর যন্ত্রণা যারা হারিয়েছে তারাই ভালো বোঝে।

বেগের অনুরোধে এইসব অন্যায়ের বদলা ন্যায় বাস্টার্ড ওরফে বাবলু । প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠা কাজটা কাকতালীয় ভাবে করে ফেলে । এই হলো মেইন গল্প ।
আমি আরো বেশি কিছু আশা করেছিলাম আসলে , কিন্তু যা ঘটেছে তাতেও হতাশ না , বেগ-বাস্টার্ড দ্বৈরথ এখন আগের মতন আর নেই , এই গল্পে হয়তো খুব বেশি ইন্টার্যাকশন হয়নি কিন্তু শুরুটা হয়েছে এটলিস্ট ।
পরবর্তী গল্পের একটা স্ট্রং টিজ আছে শেষে , এটা বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে । কন্ট্রোল নামকরণ টা স্বার্থক হয়েছে । আগের গল্পের ভিলেনের এই গল্পে রিডেম্পশন আর্ক টা উপভোগ্য ছিল। ওভারল বেশ উপভোগ্য একটা রিড । অল্প কিছু জায়গায় ওভার এক্সপ্লেনেশন এ একটু বিরক্ত লেগেছে কিন্তু সেটা তেমন সিরিয়াস কোন ইস্যু না ।
৮/১০
Profile Image for Abdullah All Noman.
49 reviews3 followers
February 22, 2024
সদ্য প্রকাশিত হওয়া বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের ৭ম বই কন্ট্রোল পড়া শেষে গরম গরম একটু আলোচনা হওয়া দরকার বলে মনে করলাম। তাই এটা লিখা...

প্রথমেই বলা রাখা দরকার স্টোরিটেলিং বরাবরের মতোই অনেক স্মুথ। আমি হাতেগোনা যে কয়জন লেখকের বই একবসায় পড়ে শেষ করতে পারি তাদের মধ্যে নাজিমউদ্দিন ভাই অন্যতম একজন। ৪০৮ পেজের এই বইটি শেষ করতে সময় লেগেছে মাত্র আড়াই ঘণ্টা। আর প্লট তো সেরা🔥 কারণ, মেঘনা-যমুনা যে একে অপরের পরিপূরক হতে পারে সেটা আমার কল্পনার বাহিরে ছিলো..

আর গল্পের স্রোত যে কোনদিক থেকে কীভাবে কোথায় গিয়েছে সেটা তো বলার বাহিরে। কার দোষে কে সাজা পেলো, কী থেকে কী হলো এটা ভাবতে ভাবতে পেজ উল্টোতে হয়েছে। তবে এই পুরো আড়াইঘন্টায় একবারের জন্যেও মনোযোগ ডাইভার্ট হয়নি বা বিরক্ত লাগে নি।

আর বইটার নামকরণ যে যথার্থ সেটা একদম শেষে গিয়ে বুঝতে পেরেছি। তবে কিছু বানান ভুল এবং রিপিটেড ওয়ার্ড ছিলো যেটা বাতিঘরের মতো একটা প্রকাশনীর থেকে কোনোভাবেই কাম্য নয়। তবে সব মিলিয়ে খুবই ভালো লেগেছে।
Profile Image for Dystopian.
434 reviews228 followers
December 16, 2024
প্রথমেই অবাক হতে হয় লেখক এত সেনসিটিভ ইস্যু নিয়ে দারুন ভাবে লিখেছেন বলে। অবাক এর থেকে প্রাউড ফিলই বেশি হয়৷
তবে যদি ❝কন্ট্রোল❞ অর্থাৎ বেগ বাস্টার্ড সিরিজের সপ্তম আর ফিকশন হিসাবে নেই তাহলে বলতে বাধ্য হব, অনেক কিছুই মিসিং। লেখার ধরন কেমন যেন খাপছাড়া গতিতে। যেখানে ইমোশন ফিল করার কথা সেখানে ইমোশন পাই নি, যেখানে থ্রিল পাওয়ার কথা সেটাও অনুভব করতে পারিনি। অনেকটা কেস স্টাডি পড়ার মত লেগেছে।
Profile Image for Rehnuma.
447 reviews21 followers
Read
July 10, 2024
❛ক্ষমতার কেন্দ্রে বা সর্বোচ্চ ক্ষমতায় পৌঁছে গেলে ক্ষমতাসীন মানুষ প্রথমে যেটা হারায় সেটা হলো তার নিজের উপরের ❛নিয়ন্ত্রণ বা কন্ট্রোল❜ যখন দেখে ক্ষমতায় কী না হয় আবার টাকায় কী না হয় তখন ধরা কে সরা জ্ঞান করতে থাকে। আর এমন অবস্থা যখন একটা দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে তখন ছোট্ট মানচিত্রের সেই দেশের কী দশা হয় সেটা আসলে বলার অপেক্ষা রাখে না।❜

তেমনই এক ক্ষমতা দিয়ে দুনিয়া কিনে নেয়া মনোভাবের লোক সেলিম ভূমিদ স্যু। ব ন্দু ক আর ক্ষমতার দাপটে তিতাস পাড়ের বেশিরভাগ জমি দখল করে রেখেছে। হুট করেই পত্রিকার একটা ছোট্ট কোণে সংবাদ ছাপে, নিজ ছায়াতেই কেউ এসে তাকে হ ত্যা করে গেছেন। কে করেছে? ধরনটা বেশ পরিচিত সেই নিঃশব্দে গু লি র।

বনানীর বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে পাওয়া গেছে ভার্সিটি পড়ুয়া এক একুশ-বাইশ বছরের তরুণীর ঝুলন্ত ম র দে হ। স্বাভাবিকভাবে দেখতে আ ত্ম হ ন ন মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছু ব্যাপার রয়ে যায়। বনানীর এসআই কাকতালীয়ভাবে ক্রা ই ম সিনে নিয়ে এসেছে হোমিসাইড চিফ ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগকে। বেগের শ্যেন দৃষ্টিতে ধরা পড়েছে এমন কিছু যা আপাত দৃষ্টিতে সু ই সা ইডা ল এই কেসকে টলিয়ে মা র্ডা র ভাবতেই বেশি সাহায্য করছে।
কিন্তু প্রশ্ন একুশ-বাইশ বছরের ভার্সিটি পড়ুয়া তরুণী একা বনানীর মতো জায়গায় থাকছে কী করে! উত্তর পাওয়া যায়, তরুণীর তথা সোনিয���ার বড়ো বোনের মুখে। জানা যায় দেশ সেরা জাহান গ্রুপের সিইওর সাথে সম্পর্ক আছে তার বোনের। বলতে হবে, ছিল। কদিন ধরেই নাকি ঝামেলা হচ্ছিল। আর সোনিয়া নিজের প্রাণ সঙ্কায় ছিল। তবে কি জাহান গ্রুপের হাত আছে তরুণীর হ ত্যা কা ন্ডে?
জেফরি বুঝেছে এবার তার যাত্রাটা কঠিন। মুখোমুখি হতে হবে দেশের এমন এক গোষ্ঠীর যারা ক্ষমতা মানেই টাকা আর টাকার গরমে কিনে নিচ্ছে সব। যাদের বিরুদ্ধে দেশের সরকার পর্যন্ত কবি নীরব ধরনে থাকেন। সেখানে বেগ কী করবে?
কিন্তু সে জেফরি বেগ। যে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় দেশের কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বড়ো ক্ষমতা, ব্ল্যাংক চেকে যাকে কেনা যায় না। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অকাট্য সব প্রমাণ জোগাড় করে সে।
এদিকে আলভী এক বাপের বখে যাওয়া সন্তান। কাজের কাজ করলেও বাপের ব্যবসার সেই শান শোকাত ধরে রাখার মতো যোগ্যতা তার নেই। সে নারীতে মেতে থাকে। সে যখন জানে, সামান্য এক ইনভেস্টিগেটর আসবে তার সাথে কথা বলতে যারপরনাই রেগে যায় সে। তবুও লিগ্যাল অ্যাডভাইজারের কথায় নিজেকে শান্ত রাখে। বেগের সাথে কথার এক পর্যায়ে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে হাতাহাতির দিকে চায়। স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়ায় দেশ সেরা গ্রুপের সিইওর গালে পাঁচ আঙুলের দাগ বসিয়ে দেয় বেগ।
আলভী যেমন এই ঘটনায় ক্ষেপে আছে, বেগের গুষ্টি উদ্ধার করছে ক্ষেপে আছে বেগও। এর শেষে দেখে ছাড়বে। কিন্তু ক্ষমতার তুঙ্গে থাকা, সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা এদের কী করতে পারবে বেগ?
বেগ বুঝে লড়াইটা সমানে সমানে না। এমন অবস্থায় লড়াই করতে গেলে নিজেকে দাসে পরিণত করতে হবে। এখনই ঘটে সবথেকে অবাক করা ঘটনা!

নিজের চরিত্রের বিপরীতে গিয়ে সে স্মরণাপন্ন তার সাথে এক কালে ইঁদুর-বেড়াল খেলা প্রতিপক্ষ বা স্টা র্ডে র! এবার আর চোর পুলিশ হিসেবে নয় বা স্টা র্ড ওরফে বাবলু ওরফে অমুল্যবাবুর কথিত সন্তান পার্থিব রায় চৌধুরীকে একটা কন্ট্রাক্ট দেয় বেগ। কিসের কন্ট্রাক্ট?

এদিকে বাবলু এতদিন গোপনে ছিল। নিজের সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীর দেয়া কাজ সে করবে?
অনেকটা সমাজসেবা হিসেবেই এবার তার টার্গেট। অনেকদিনের অবসর ভেঙে এবার পুরোনো কায়দায় ফিরছে সে। পাঙ্গাটা এবার দেশের বাইরে। জাগতিক পাপের আখড়া দুবাইতে। কিন্তু জিরো ক্রা ইম সিটি খ্যাত এই দেশে কী করে নিজের স্বার্থ হাসিল করবে বাবলু? কিন্তু বাবলুর কাছে অসম্ভবের মাঝেও সম্ভাবনা তৈরি হয়।

তবে দীর্ঘদিনের এই দ্বৈরথ কি শেষ হচ্ছে বেগ-বা স্টা র্ড খ্যাত নিজের কাজে বিচক্ষণ দুই দুনিয়ার সেরা লোকদের? নাকি শুরু হবে এক যাত্রা যেখানে পাপের বিনাশই মূল কথা?


পাঠ প্রতিক্রিয়া:

নেকনেককনেক সিরিজের সাতটা বই এসেছি এখন পযর্ন্ত। পড়ে শেষ করলাম সিরিজের সপ্তম বই ❝কন্ট্রোল❞। থ্রিলারপ্রেমী যে কারো কাছেই ❛বেগ-বা স্টা র্ড❜ সিরিজ অন্যতম ভালোলাগার জায়গা। কারো পছন্দ বেগকে তো কেউ বা স্টা র্ডে বুদ। এমনই এক থ্রিলার সিরিজ যেখানে আমরা চাই পুলিশ চোর দুইজনেই জিতে যাক। দুজনের সমানে সমান দক্ষতা যার যার ক্ষেত্রে। একজন আইনের মধ্যে কাজ করে তো একজন আইনকে সাইলেন্সার দেখিয়ে সমস্যার সমাধান করে।
এই বইটা ❛বেগ-বা স্টা র্ড❜ সিরিজকে নতুন করে বাঁচিয়ে তোলা একটা বই আমার মতে। সিরিজে মাঝের কিছু বই নিয়ে কিছুটা হতাশা থাকলেও এই বইটা সে সকল হতাশাকে তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। আপন মহিমায় আবার আগমন যাকে বলে।
উপন্যাসের শুরু হয়েছে একটা খু নের ঘটনা দিয়ে। যেখানে মোড় নিয়েছে ক্ষমতার কেন্দ্রে বাসকারী ওইসব পিশাচদের কথা যারা টাকা অর ক্ষমতার বলে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্যের নিয়ন্ত্রণ নেয়া শুরু করেছে।
শুধুই একটা উপন্যাস না বইটা। এতে আছে ক্ষমতাসীনদের লীলা দেখে মুখ বুজে থেকে অতিষ্ঠ হয়ে যাওয়া সেইসব মানুষের আহাজারি যাদের কেউ এই সার্কাস দেখছে, কেউ ভিকটিম হয়েছে। কিন্তু পরিণামে করতে পারেনি কিছুই। কারণ তাদের ব্ল্যাংক চেকের ক্ষমতা নেই। নেই নোটের গরম।
নাজিম উদ্দিনের লেখা যথেষ্ঠ গতিশীল। এই গতিতে বই শুরু করলে কোনদিকে ৪০০-৫০০ পৃষ্ঠা শেষ হয়ে যায় দিশা থাকে না। এই বইটিও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রচুর গতিশীল লেখায় বইটা আমি দুপুরে শুরু করে রাতের মধ্যে শেষ করে ফেলেছি। ভাবতে অবিশ্বাস্য লাগলেও কথা সত্য। লেখকের বর্ণনা করার ধরন আর পাঠককে বইতে অ্যাটাচ করার ক্ষমতা অনস্বীকার্য।
এই বইয়ের সবথেকে দারুণ দিক ❛বেগ-বা স্টা র্ড❜ কে এক অন্যরূপে দেখানো। অবশ্যই দারুণ লেগেছে এই ব্যাপারটা। তাদের দুজনের চোর পুলিশ খেলায় আমিও কিছুটা একঘেয়ে হয়ে গেছিলাম। আর কতো খামচাখামছি করবি? একটু কোলাকুলি কর এবার!
বইটা যেমন ভালো লেগেছে তেমন খারাপ লাগাও কাজ করেছে। যারপরনাই বিস্মিত হবার মতো ব্যাপার ছিল। তবে ভালো লেগেছে এই বইতে বাকি ছয়টা বইয়ের নাম কোনো না কোনো ভাবে লেখক এনেছেন।
উপন্যাসের শেষটাই কি শেষ ছিল না নতুন শুরুর সূচনা ছিল?


প্রচ্ছদ, প্রোডাকশন:

বাতিঘরের প্রোডাকশন নিয়ে নতুন করে বলার নেই।
প্রচ্ছদটা আমার ভালো লেগেছে। লাল কালো থিমের এই সিরিজের প্রতিটা প্রচ্ছদ অনেকটা একই রকম বলে এর আলাদা একটা ইউনিক ভাব বজায় আছে।


❛ক্ষমতা, টাকা আর একে কাজে লাগিয়ে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করা এই ভাইরাসের নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব কে জানে! কেউ নিয়মের মধ্যে থেকে সে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় কেউ নিয়মের তোয়াক্কা করে না। কারণ এই সমাজের উঁচুশ্রেণীর ওইসব মানুষগুলোর পকেটে নিয়ম পঁচে। বাঘের সাথে লড়াই করতে বেড়াল হলে চলে না। এই লড়াইয়ের শেষ কোথায়? কারণ ক্ষমতার তো শেষ নেই!❜
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
543 reviews
June 23, 2024
এতদিন এই সিরিজের সেরা বই মনে হতো কন্ট্রাক্ট-কে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কন্ট্রোলই সেরা।

দুর্দান্ত থ্রিলার! একেবারে টপনচ
Profile Image for Fårzâñã Täzrē.
276 reviews19 followers
October 14, 2025
হোমিসাইট ডিপার্টমেন্টের জেফরি বেগের সামনে এক সমস্যা এসে দাঁড়িয়েছে। যে জেফরি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি সে কী এত সহজে এই সমস্যাকে চুপচাপ চলে যেতে দেবে? দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী পরিবারের বড় ছেলের নামে উঠেছে একটি মেয়েকে খু*নের অভিযোগ। মেয়েটির সাথে উক্ত ব্যবসায়ীর ছেলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। যদিও সে বিবাহিত! আর মৃ*ত্যুর আগে মেয়েটির উপরে নির্যাতন চালানো হয়। সব প্রমাণ জেফরির হাতে আছে কিন্তু প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী রাঘব বোয়াল। এদের সাথে ঝামেলা করলে জেফরির সমস্যা হতেই পারে এটা হোমিসাইটের মহাপরিচালক নিজেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

কিন্তু জেফরি সহজে ছেড়ে দিতে রাজি না। সে চায় শেষ দেখতে। কিন্তু নিজের জীবনে এর পরিণতি কী হতে পারে হয়তো সে ভেবে দেখেনি। এবং ফলাফল তাই হলো। ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেল জেফরির জীবন। তবুও বেশ শক্ত মানুষ সে। এবার নিজেকে সামলে সে একটা বড় পরিকল্পনা করেছে। সেটার জন্য দরকার তার পুরনো এক প্রতিপক্ষকে। কিন্তু কোথায় সে?

ব্ল্যাক রঞ্জুর অধ্যায় শেষ করে জীবনটাকে যেন অন্যরকম ভাবে সাজিয়ে ফেলেছে বাস্টার্ড। এখন সে অনেকটাই এসব থেকে দূরে। এখন তার জীবন পার্থিব রায়চৌধুরী হিসেবে রূপ নিয়েছে। সে অমূল্য বাবুর ছেলে পরিচয়ে বসবাস করছে বেশ নিরিবিলি একটা জায়গায়। সেখানে একঘেয়ে জীবন, মাঝে মাঝে বাস্টার্ড কে বড় পীড়া দেয়। সিংহকে কী খাঁচায় বন্দী করে এভাবে রাখা যায়? অমূল্য বাবুর বোধহয় সেই ধারণা ছিল না। তাই এই সিংহটাও সুযোগ পেয়ে খাঁচা ছেড়ে বেরিয়ে ঘটিয়ে ফেলে তার প্রথম কাজ।

ওদিকে আরো একজন তার খোঁজে আছে। যার সাথে ইঁদুরে দৌড়ে সবসময় বাস্টার্ড বেঁচে গেছে। রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আজকে তবে সেই মানুষটি কেন বাস্টার্ড কে খুঁজছে? কী দরকার তার বাস্টার্ড কে? জেফরি অমূল্য বাবুর সাথে দেখা করে বললো সে বাস্টার্ড কে দিতে চায় একটি কন্ট্রাক্ট!

ক্ষমতার প্রভাবে যখন প্রশাসন হার মানে তখন এই দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী কীসের উদ্দেশ্যে এক হতে চলেছে? গোটা সিস্টেমটাই ক্ষমতার কাছে যখন জিম্মি, কেউ নিতে পারছে না কন্ট্রোল। তখন এই দুইজন মিলে এগিয়ে চলেছে একটি পরিকল্পনা নিয়ে। এবং এই প্রথমবার বেগ বাস্টার্ড মিলিত ভাবে কন্ট্রোল নিতে চলেছে যেন ওইসব ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে। গল্প সবেমাত্র শুরু। শেষটায় আপনি রোমাঞ্চিত হতে বাধ্য।

🧈পাঠ প্রতিক্রিয়া🧈

পড়া শেষ করেছিলাম অনেক আগেই। কিন্তু আলোচনা করা হয়নি যে কেমন লাগলো বেগ বাস্টার্ড সিরিজের সপ্তম বই "কন্ট্রোল"। ভালো লাগলো এটা তো অবশ্যই বলবো। এবং কেন ভালো লাগলো সেটা একটু বিস্তারিত বলি এবার।

প্রথমত ভালো লাগার কারণ বেগ বাস্টার্ডের যুগলবন্দী। এই সিরিজের প্রাণই হচ্ছে এই জুটি। একজন যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে গোটা ঘটনায় যেন মজাটা ঠিক জমে না। এই বইটি সিরিজের অন্যতম সেরা বই। "কন্ট্রাক্ট" যেমন এক বসায় টানা শে�� করতে পেরেছি, এই বইটিও ঠিক তেমন ভালো লেগেছে। কাহিনী এগিয়ে চলেছে টানটান উত্তেজনা নিয়ে। প্রতিটি ছোট ছোট ঘটনা লেখক খুব ডিটেইলিং এ নজর দিয়েছেন। আমার কাছে এই বিষয়টা বেশ ভালো লেগেছে।

গল্পের প্লট পড়তে গিয়ে মনে হয়েছিল খুব চেনা পরিচিত একটি ঘটনা যা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল তখনকার সময়ে। এবং এই ঘটনাটিকে লেখক যেভাবে সাজিয়েছেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে যে বেশ যুক্তিযুক্ত আলোচনা কিংবা কারণ। এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের আড়ালে, ক্ষমতার প্রভাবে কীভাবে অসহায় হয়ে পড়ে আইন লেখক বিষয়টি বেশ ভালোভাবেই তুলে ধরেছেন। যেন আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া ঘটনার একটি অংশই তুলে ধরলেন লেখক। আইনের শাসন সবখানে প্রয়োগ করা যায় না বলেই বোধহয় অপরাধীরা বারবার অপরাধ করার সুযোগ পায়।

এখানে সবচেয়ে করুণ পরিণতি ছিল বেগের জন্য। এবং ওই অংশটুকু পড়ে বেশ মায়াই লাগছিল বেগের জন্য। এখানে লেখকের উপর রাগ রাখতে পারছি না কারন এই পরিণতি বাস্তব ক্ষেত্রে ঘটে। এবং এর থেকেও ভয়াবহ পদক্ষেপ নিয়ে ফেলে অপরাধীরা। তবুও জেফরি বেগ সবসময় দৃঢ়চেতা মানুষ। সহজে ভেঙে পড়া তার স্বভাবসুলভ নয়। ভালো লেগেছে শেষ অবধি নিজের ব্যক্তিত্বকে সে একই রকম রেখেছে।

আর বাস্টার্ডের কথা কী বলি। নাহ বাস্টার্ড নয় এখানে সে পার্থিব রায়চৌধুরী হিসেবে বেশি পরিচিত ছিল। এইটাই বোধহয় আমার পড়া আরেক উল্লেখযোগ্য সিরিজ যেখানে আপাতদৃষ্টিতে ভিলেনকে আমার বেশি পছন্দ হয়েছে পজিটিভ চরিত্রগুলোর থেকে। বাবলু পাখির মতো গু*লি করে মানুষ মা*রে। কিন্তু তবুও আমি ওকে পছন্দ করি। কারণ ওর সবগুলো কাজের পেছনে কারণ ছিল। এবং সত্যি বলতে ওর স্মার্টনেস সবসময় আমাকে মুগ্ধ করেছে। উপস্থিত বুদ্ধি এবং অসম্ভব ঠান্ডা মাথার খু*নীটাকে এই বইয়েও যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে দারুণ লেগেছে বরাবরের মতো।

একটু মন খারাপ লাগছিল বইটা শেষ করে কারণ সিরিজের নতুন বই আবার কবে আসবে কে জানে। আমার কাছে একমাত্র করাচি ছাড়া বাকি সবগুলো বই ভালো লেগেছে। লেখকের কাছে অনুরোধ থাকবে বেগ বাস্টার্ড নিয়ে যতদিন তিনি সক্ষম থাকেন ততদিন যেন লিখে যান। আমার পছন্দের চরিত্র হয়ে উঠেছে এরা। গালিগালাজ কিছু প্রাপ্তবয়স্ক দৃশ্যপট ছিল তবে আমি জানি এই সিরিজ যে প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে তৈরি সেখানে এসব খুবই সাধারণ ব্যাপার। তাই খুব বেশি অস্বাভাবিক লাগেনি।

বেগ বাস্টার্ড সিরিজ আবার ফিরে আসুক জলদি। বাতিঘরের প্রোডাকশন এবং দারুন সব প্রচ্ছদে আবারো থ্রিলার জগতে মোহিত হবার আকাঙ্ক্ষা রাখছি। এই বইটিও দারুন লেগেছে সবমিলিয়ে আমার কাছে।

🧈বইয়ের নাম: "কন্ট্রোল"
🧈লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
🧈 প্রকাশনা: বাতিঘর প্রকাশনী
🧈প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
Profile Image for Ifsad Shadhin.
115 reviews24 followers
July 5, 2024
উপন্যাসের ফিকশনাল জগতে জেফরি বেগ তদন্ত করছেন একটি আত্মহত্যার। বাস্তব জগতের সাথে তুলনা করলে, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (alleged) প্রেমিকা মুনিয়া হত্যার সাথে মিল পাওয়া যাবে বইয়ের ঘটানার।

হাজারো প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন জেফরি। কিন্তু, যেহেতু উপন্যাস, সমাধান তো একটা আসবেই!

ক্রিয়েটিভ ফ্রিডম লেখক নিয়েছেন। এবং নিয়েছেন বলে খুশি হয়েছি বোধ করি। ব্লিক এই জগত থেকে উপন্যাসের পৃথিবী একটু আশাভরা না হলে ভালো লাগে না।

কন্ট্রোল পড়তে পড়তে লেখকের আরেক উপন্যাস, ‘কেউ কেউ কথা রাখে‘-র কথা মনে পড়ে গেল। পঁচাত্তর পূর্ববর্তী ঘটনা (ফিকশনাল, অবশ্যই) নিয়ে লেখা ওই বইটা পড়তে পড়তে সেসময় একটা প্রশ্ন মাথায় এসেছিল। মানুষ টিকতো কিভাবে?

বাচ্চা ছিলাম (বুড়িয়ে যাচ্ছি দেখি!)। পৃথিবীটাকে তখনও রঙিন চশমার আড়াল থেকে দেখার অভ্যাস যায়নি। এতবছর পর দেশের সমসাময়িক অবস্থা ফিকশনাল জগতে দেখে উত্তরটা পেলাম।

চমৎকার উপন্যাস। বিষন্ন করে দিল। বাস্তব জগতে যদি এমন ক্রিয়েটিভ ফ্রিডম নেবার উপায় থাকতো!
Profile Image for Asib Gazi.
87 reviews1 follower
March 5, 2024
নি:সন্দেহে বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের সেরা বই কন্ট্রোল। কন্ট্রাক্ট আর কেউ কেউ কথা রাখে বই দুটোকে একই বিকারে রেখে বিক্রিয়া করালে যে উৎপাদ তৈরি হয় তাই কন্ট্রোল নামক মাস্টারপিস হিসেবে আমার হাতে এসে ধরা দিয়েছে।
Profile Image for পটের দুধের কমরেড.
209 reviews25 followers
May 17, 2024
নাজিম সাব ব্যাক অন ট্র‍্যাক। স্বল্প সময় ব্যবধানে প্রকাশিত নাজিম সাবের গত কয়েকটা বই পড়ে আসা ঝিমুনি ভাবটা নিমিষেই পটল তুলেছে। দেশের বহুত আলোচিত একটা কেসের আদলে সাজানো গল্পটা কাবিলে তারিফ হ্যাঁয় ( একটা অলটারনেট এন্ডিং / রিয়েলিটি? )৷ স্বভাবতই উনার প্রাঞ্জল লেখনী-গুণ অক্ষুন্ন, আরামসে একটানা মনোযোগে থ্রিলার ভাইবটা ধরে রাখে। লাভড ইট অ্যাবসুলেটলি। এ্যাকশন নিয়ে পৃষ্ঠাভর্তি রঙচঙা বর্ণনা নেই৷ সাফসুত্রা ওয়ার্ক৷ শুরু থেকেই গল্পের গতি/মেজাজ আরেকবার প্রমাণ করে দিলো 'থ্রিলার সম্রাট' নামের সার্থকতা৷

কন্ট্রোল নামটা যথার্থই!
Profile Image for Sohana Rahman.
25 reviews
March 16, 2024
Wherever there is power, greed, and money, there is corruption.

ক্ষমতা, লোভ এবং টাকা মানুষকে নিজের চোখে সর্বেসর্বা এবং অন্যের চোখে ধরাছোঁয়ার বাইরের কিছু বানিয়ে দেয়। তাইতেই যখন অপরাধ করে এই ধরণের মানুষ, বিচার না হওয়াটাই রীতি।

তবু কেউ কেউ থাকে যারা এটা মেনে নিতে পারে না। টাকা কী সবাইকে কিনতে পারে? জেফরি বেগ, বাবলু, এরাও ঠিক তেমনই মানুষ।

বিশাল শিল্পপতির মিস্ট্রেস বা রক্ষিতা সোনিয়ার আত্মহত্যা অথবা খুনের ঘটনা কষ্ট কল্পিত ফিকশন না। এটা সাম্প্রতিককালে ঘটা প্রচণ্ড আলোচ��ত এক ঘটনা। তাই এই কাহিনী পড়ার সময় রিলেট করতে পারাটা ছিল খুবই সহজ।

কেমন করে ক্ষমতা গ্রাস করে রাখে সমগ্র সিস্টেমকে এবং টাকার হাতে বিবেক বিসর্জন দেয় রক্ষাকর্তারা, সেটা জানা থাকলেও এরকম চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়াটা হজম করা কঠিন করে তোলে।

কেউ যদি ওদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাহলে তাদের জীবন হয়ে ওঠে ওদের হাতের পুতুলের মতো। তাও বশ না মানলে কেড়ে নেওয়া হয় বেঁচে থাকার কারণ এবং ইচ্ছা। এটাই যখন হয় প্রিয় কোনো চরিত্রের সাথেই, তখন বই রেখে চুপ করে বসে থাকা লাগে কিছুক্ষণ।

বইটা পড়ে বিষন্ন হয়েছি, শঙ্কিত হয়েছি।

জেফরি আর বাবলুকে একসাথে কাজ করতে দেখে ভালোও লেগেছে। একটা ভিলেন কিভাবে হিরো হয়ে ওঠে সেটা লেখক ৭টা বইয়ে সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন।

জেফরি বেগ থেকে বাবলুই আমার বেশি প্রিয় এখন।

তবু রেটিং ৪। এত বানান ভুল মেনে নেওয়া যায় না। নূন্যতম সম্পাদনা কী পাঠক ডিজার্ভ করে না? নাকি বাতিঘর প্রকাশনী এবং মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলে আমরা প্রতিবারই উপেক্ষা করে চলব? ফেড আপ।
Profile Image for Fariha Jabin Bornil.
9 reviews7 followers
September 1, 2024
এক বসায় শেষ করার মতন একটা বই। জানিনা কেন বেগ বাস্টার্ড সিরিজটা বোধহয় উনার লেখা সেরা সিরিজ। ৭ম বইটা শেষ করার পর মনে হচ্ছিল আবার প্রথম থেকে সিরিজটা শুরু করতে পারলে মন্দ হয় না। আমার মনে হয় এই সিরিজের সেরা বই এটা। পেইজে পেইজে টুইস্ট দেখে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন কিছু নয়।
Profile Image for فَرَح.
188 reviews2 followers
July 5, 2024
Iykyk👉👈
আক্ষেপগুলো যখন থ্রিলারের পাতায় পরিপূর্ণতা পায়!
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Amanna Nawshin.
191 reviews57 followers
March 26, 2025
Jefry had started to investigate the case very efficiently. Then Bastard came to the scene and stole the entire show like always. I enjoyed this book. I love this series...
Profile Image for Saima  Taher  Shovon.
523 reviews187 followers
March 9, 2024
বেগ আর বাস্টার্ড পরবর্তীতে দারুণ কিছু নিয়ে হাজির হবে কি?
Profile Image for Eva Mojumder.
73 reviews1 follower
March 26, 2024
❝সিংহকে সিংহের মতোই থাকতে দেয়া উচিত। খাঁচায় ভরে রাখলে নিরাপদে থাকে ঠিকই কিন্তু সমস্ত আভিজাত্য হারিয়ে বড়সড় বেড়াল হয়ে পড়ে থাকে।❞

আমাদের সবারই কিছু নিজস্বতা আছে, আছে কিছুটা বৈচিত্র্যতাও। কেউ কারো মতো নয়, হওয়াও উচিত না। যে যতটুকুর যোগ্য তার ঠিক ততটাই পাওয়া উচিত। যদিও আমাদের অদ্ভুদ এই সমাজের অদ্ভুত সব বেড়াজালে আটকে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে হাজারো মানুষের জীবন, বদলে যাচ্ছে তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য। তবুও প্রতিটা যুগেই কেউ কেউ ফিরে আসে তাদের নিজস্বতা নিয়ে, ফিরে আসে তাদের গন্তব্যের লক্ষ্যে। আর রুখে দাঁড়ায় সমাজের সেইসব অদ্ভুত বেড়াজালের বিরুদ্ধে। ঠিক আমাদের জেফরি বেগের মতন আর অনেকটা হঠাৎই বদলে যাওয়া পার্থিব রায় চৌধুরী ওরফে বাবলুর মতন।

◾দু'র্নীতি! স্বপ্নভঙ্গ! আ'র্তনাদ! হাহা'কার! দু'র্ভোগ!

এ কয়েকটা শব্দ আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বইছে। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে আমাদের সর্বস্ব। দু'র্নীতির করা'লগ্রাসে দিনকে দিন আমরা ডুবেই যাচ্ছি। কিন্তু পরিত্রাণের কোনো উপায় যে নেই!

একটি দেশের খুটিই হলো সে দেশের আইনবিভাগ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যতটা কঠোর হবে দু'র্নীতিও শূন্যের কোঠার দিকে নিজের অগ্রগতি ততটাই জানান দেবে। কিন্তু যদি কোনো দেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতাই হয় সে দেশের আইন? যদি টাকার জোরে বারংবার বাঘা বাঘা অ'পরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায় আর গ'রাদের পেছনে পঁচে ম'রে কেবল সর্বহারা মানুষজন, তবে? যদি রাষ্ট্রের মাথায় থাকা, ক্ষমতার শীর্ষে থাকা নেতারাই হার মেনে যায় প্রভাবশালী, ক্ষমতাবান ও অ'সৎ কিছু লোকের অর্থের সামনে আর ঠাঁই নেয় তাদের পদতলে! তবে আইন কোথায়? সুষ্ঠু বিচার কোথায়? আর কোথায়ই বা সাধারণ জনগণের প্রাপ্য অধিকার? ‘গল্প হলেও সত্যি, স্বপ্ন হলেও মিথ্যে না’— তেমনই এক গল্প নিয়ে হাজির হয়েছেন বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। আর এই বইটি হলো সেই বেগ-বা'স্টার্ড সিরিজের সপ্তম বই ‘কন্ট্রোল’।

◾থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বেগ বা'স্টার্ড সিরিজের ষষ্ঠ বইয়ের সমাপ্তি থেকে সপ্তম বইয়ের সূচনা ঘটেছে। যেখানে ব্ল্যাক রঞ্জুকে পুলিশের আওতায় এনে নিজের জীবনের সবথেকে বড় সাফল্যটা অর্জন করেছে জেফরি বেগ। প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় পদকও পেতে চলেছে যেকোনো সময়। সেই সাথে পুরো দেশজুড়ে এক লহমায় নিজের পরিচিতিও বাড়িয়ে নিয়েছে হোমিসাইডের চিফ ইনভেস্টিগেটর। অন্যদিকে, ব্ল্যাক রঞ্জু ধরাশায়ী হওয়ার পর পরই বা'স্টার্ড ওরফে বাবলুও লাপাত্তা। কারো কারো ধারণা তার পাতানো বাবা অমূল্যবাবুর সহায়তায় সে দেশছাড়া। আবার কেউ কেউ ধারণা করেন সে দেশেই ঘাপটি মে'রে বসে আছে কোথাও।

জনগণের তেমনই সব আজগুবি ভাবনার মাঝে হঠাৎই একদিন কুমিল্লার তিতাস নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠা এক ভবনে ঘটে গেলো অভাবনীয় এক ঘটনা। যা ক্ষমতাবানদের জন্য আ'তঙ্কের শুরু হলেও সাধারণ মানুষদের জন্য নতুন করে জীবন লাভ। আর জেফরি বেগের জন্য সন্দেহের বীজ। কুমিল্লায় ঘটে যাওয়া ঘটনা, আশ্চর্যজনক ও চমকপ্রদ খু'ন, বাঘের ডেরায় ঢুকে বাঘকেই হ'ত্যা, এ যে কেবল একজনের দ্বারাই সম্ভব! তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পেশাদার খু'নী বা'স্টার্ড। তবে কি সে ফিরে এসেছে? এই খু'ন সেদিকেই ইঙ্গিত করছে না তো?

কুমিল্লার ঘটনার পরপরই ঘটে গেলো আরো একটি দু'র্ঘটনা। কুমিল্লার ঘটনাটি দেশকে নাড়া দিতে সক্ষম না হলেও এই ঘটনাটি পুরো দেশকে এক লহমায় নাড়িয়ে দিয়েছে। ঢাকার আবাসিক এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে এক তরুণীর ঝুলন্ত লা'শ পাওয়া গিয়েছে। জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক পার্টি জাহান গ্রুপের সিইও আলভীর সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিগত কিছুদিন যাবৎ তাদের মধ্যকার সম্পর্ক মোটেও ভালো কিছুর ইঙ্গিত করছে না। মেয়েটির বোন জানায়, এই ঘটনা কোনোভাবেই আত্মহ'ত্যা হতে পারে না। বরং এটি ঠান্ডা মাথার খু'ন। তবে স্থানীয় পুলিশ যেন ঘটনাটিকে আত্মহ'ত্যা বলে চালিয়ে দিতে পারলেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। কিন্তু এক্ষেত্রে বাঁধ সাধলো হোমিসাইডের চিফ ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ। ঘটনাচক্রে সেও জড়িয়ে পড়লো কনফিউজিং এই কেসটিতে।

জাঁদরেল ইনভেস্টিগেটর হিসেবে জেফরির বেশ সুনাম রয়েছে চতুর্দিকে। আর এতোকাল পর্যন্ত সাফল্যের সাথেই সেই সুনাম সে ধরেও রেখেছে। তার চোখ ফাঁকি দেওয়া এতো সহজ নয়। তদন্তের শুরুতেই জেফরি ঘোষণা করলো, এই ঘটনাটি আত্মহ'ত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত খু'ন। আর তাই তো সে নিজের ডিপার্টমেন্টের অধীনে নিয়ে নিলো কেসটিকে। ঠিক তখন পর্যন্তও তার বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না, কোন রাঘব বোয়ালের ফাঁ'দে পা দিতে চলেছে সে। যদিও বা জেফরির কাছে দেশের প্রেসিডেন্ট ও একজন সাধারণ মুচি, দুজনেই সমান গুরুত্ব বহন করে।

তদন্তে বেশ অগ্রগতি দেখাচ্ছে হোমিসাইডের চিফ ইনভেস্টিগেটর। প্রতি পদে বাঁধা, মাথার এক ইঞ্চি উপরে ঝুঁলে থাকা বি'প�� কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করেই সে এমন এমন সব প্রমাণ সংগ্রহে নিয়ে এসেছিল যে কোটি কোটি টাকার মালিক ও দেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ির ছেলেরও ঘাম ছুটে গিয়েছে। জেফরির তদন্ত আটকে দেওয়ার জন্য ও নিজের প্রতি'শোধ সম্পূর্ণ করার জন্য জাহান গ্রুপের সিইও আলভী যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত। শুধুমাত্র জেফরির একটি দুর্বলতাই হতে পারে তাদের জন্য সোনার হরিণ। তারা জেফরির মেরুদণ্ডটাই মাঝ বরাবর ভেঙে দিতে চায়। এতে কতটা সফল হতে পারে তারা? আদৌও কি পারবে?

অবশেষে সকল হতাশা, কষ্ট, যন্ত্র'ণাকে সঙ্গী করে জেফরি এক অভাবনীয় কাজ করে ফেললো। নিজের চরিত্রের বাইরে গিয়ে দ্বারস্থ হলো চিরপ্রতি'দ্বন্দ্বী বা'স্টার্ডের। এ ঘটনাকে বা'স্টার্ডই বা কিভাবে নিবে? পেশাদার খু'নী বা'স্টার্ড কোথায় আছে এমূহুর্তে? সে কি জেফরির প্রস্তাব মেনে নেবে? এসকল প্রশ্নের কোনোটারই উত্তর জানা নেই জেফরির। শুধু জানে তার জীবনে শত কোটি হতাশা আর অজস্র যন্ত্র'ণা দেওয়া সেই অপ'রাধী পাড়ি জমাচ্ছে দূরদেশে। চলে যাচ্ছে সুদূর দুবাই। তবে কি এবার সত্যিই খু'নী পার পেয়ে গেলো? জেফরি বেগ কি তার জীবনে প্রথমবারের মতো হারের সম্মুখীন হতে চলেছে? বা'স্টার্ড কি কিছুই করতে পারবে না অপ'রাধীর? কি আছে এ গল্পের শেষটায়? আদৌও কি এ গল্পের শেষ রয়েছে? জানতে হলে পড়তে হবে বেগ-বা'স্টার্ড সিরিজ এবং তার সপ্তম বই ‘কন্ট্রোল’।

◾প্রথমেই বলে রাখা ভালো যদি এই বইটিকে মন থেকে উপভোগ করতে চান তবে বেগ বা'স্টার্ড সিরিজের পূর্বের বইগুলো পড়ে নিবেন আগেই। কেননা, এই গল্পে আমরা যেমন নতুন সব চরিত্রের দেখা পাবো, তেমনই পূর্বের কিছু চরিত্রও ফিরে ফিরে আসবে। সেইসাথে আগের ঘটনাগুলোর সাথেও কিছুটা যোগসাজশ রয়েছে। তাই প্রতিটি বইয়ের গল্পে ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও চরিত্রগুলোকে পুরোপুরি জানা ও চেনার জন্য সিরিজটা পর্যায়ক্রমে পড়াই উত্তম।

এবার আসি সিরিজের সপ্তম বইয়ের পাঠপ্রতিক্রিয়ায়। প্রথমেই যে কথাটা না বললেই নয়। পড়তে গিয়েছি থ্রিলার, পড়ে এসেছি যেন সামাজিক-আবেগপ্রবণ কোনো উপন্যাস। বইয়ের কনসেপ্টটা দারুণ। এ ব্যাপারে কোনো পাঠকেরই দ্বিমত থাকার কথা নয়। তবে আমরা সকলেই জানি, বেগ-বা'স্টার্ড সিরিজের প্রধান উপজীব্য বিষয় হলো থ্রিলিং ভাইব। ভেবেছিলাম এ বইটাও থ্রিলে ভরপুর হবে। তাই ওরকম মানসিকতা নিয়ে পড়া শুরু করায় খানিকটা হতাশই হয়েছি। আরেকটা ব্যাপার আমায় হতাশ করেছে। সেটা হলো টুইস্টের ঘাটতি!

পুরো গল্পকে আমরা দুটো অংশে ভাগ করতে পারি। প্রথম অংশের পুরোটা জুড়েই জেফরি বেগ এবং পরের অংশে আছে আমার কাঙ্ক্ষিত বাবলু। একদম প্রথম থেকে এতোগুলো পৃষ্ঠা জুড়ে বাবলুহীনতায় ভুগছিলাম আমি। তবে একটা বিষয় ভেবে ভালোও লাগছিল। লেখক বিগত কয়েকটা বইয়ে জেফরি বেগকে পাঠকদের সামনে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ একদমই দেননি। তাকে জাঁদ'রেল ইনভেস্টিগেটর বলা হলেও সেরকম স্পেস পাচ্ছিলো না ছেলেটি। কিন্তু এই বইয়ের ক্ষেত্রে ঠিক বিপরীত ঘটনাটিই ঘটেছে। জেফরি বেগ এখানে নিজের জাত চিনিয়েছে। দেখিয়েছে কিভাবে অপ'রাধীকে মানসিক চাপে ফেলে টোপ গেলানো যায়। তার মুখ থেকে সত্যিটা বের করে আনা যায়। এছাড়াও নিজের সাহসের প্রমাণও রেখে গিয়েছে জেফরি বেগ এই বইটিতে।

কিন্তু..কিন্তু..কিন্তু! বা'স্টার্ড আমাকে হতাশ করলো অবশেষে। এতোগুলো বইয়ে সমানতালে সে নিজেকে ছাপিয়ে যাচ্ছিলো। তবে এ বইটায় এসে যেন থমকে গিয়েছে বা'স্টার্ড। ‘গল্পের চরিত্র বলেই কেবল কিছু ঘটনা ঘটিয়ে গিয়েছে, এর বাইরে তেমন কিছুই করেনি’— এমনটাই মনে হচ্ছিল আমার। যেন লেখক বারবার, প্রতিবার জোর করে কাস্টা'ডিটা বা'স্টার্ডকেই পাইয়ে দিচ্ছিল। সে নিজের যোগ্যতায় কিচ্ছুটি করতে পারেনি। এখানটায় এসে বা'স্টার্ডের দুর্বলতা চোখে পড়েছে আমার। বা বলা যায় লেখকের গল্পের গাঁথুনি এখানটায় এসে মজবুত হওয়ার বদলে সুঁতো ছিঁড়ে গিয়েছে যেন!

অনেক তো হলো চরিত্র বিশ্লেষণ, এবার গল্পে ফেরা যাক! এই গল্পের কনসেপ্ট নিয়ে আমার কিছু বলবার সাধ্য নেই। বরং মনে হয়েছে একটুকরো বাস্তবতা যেন বইয়ের পাতায় এসে উঁকি দিচ্ছিলো বারবার। প্রথমবার বইটি ধরার পর উৎসর্গ পাতার উৎসর্গটির মানে ঠিক ধরতে পারিনি আমি। কিন্তু পুরোটা বই পড়া শেষে মনে হচ্ছে লেখক সম্পূর্ণ গল্পটাকে উৎসর্গ পাতায় মাত্র দুই লাইনে ধারণ করে রাখতে চেয়েছেন।

❝ক্ষমতাকে কুর্ণিশ করে না যারা
গণতন্ত্র এবং বাকস্বাধীনতার পক্ষের সেই সব মানুষকে....❞

একটি দেশের চালিকাশক্তি সেই দেশের জনগণ। জনগণের চাওয়া পাওয়াই যেখানে মুখ্য হওয়া উচিত, সেখানে ক্ষমতার শীর্ষে বসা কিছু অ'পশক্তির কারণে প্রতিনিয়ত দেশের প্রতিটি মানুষকে এর ভুক্ত'ভোগী হতে হয়। প্রতিনিয়ত অধিকার ক্ষু'ন্ন হয় তাদের। এই বইয়ে অমূল্যবাবুর একটি অমূল্য বাণী রয়েছে। পুরোপুরি মনে না থাকলেও তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

❝কোনো দেশের আইনই খারাপ নয়, বরং আইন প্রয়োগকারী সেইসকল লোকেগুলো খারাপ, যারা নিজেদের স্বার্থে আইনকে ব্যবহার করে।❞

ছোট এই লাইনটির মর্মার্থ খুবই গভীর। আমরা সাধারণ জনগণ, আমরা আইনকে বদলাতে পারি না। কিন্তু আইনের শীর্ষে থাকা সেই সকল অ'সাধুদের বদলানোর সামর্থ্য আমাদের রয়েছে। আমরা ইচ্ছে করলেই একজোট হয়ে পরিবর্তন করতে পারি আমাদের দেশ, আমাদের মাতৃভূমির ভবিষ্যতকে। লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ গল্পের আলোকে এমন একটি বাস্তবতাকে সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য। অনেককিছু জানার ও বোঝার আছে এই গল্প থেকে। বিশেষ করে সমাপ্তিটা একদমই অন্যরকম ছিল। যদিও আমার মনে হয়েছে লেখক খুবই তাড়াহুড়ো করেছেন এবং বা'স্টার্ড চরিত্রটিতে নতুনত্ব আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই সিরিজের বইগুলোর মধ্যে লিস্টের একদম শেষে থাকবে এই বইটি। আমার অভিমত, এই সিরিজটার সমাপ্তি টানার সময় এসে গেছে। এর বেশি এগোনো উচিত হবে না।

◾এবার আসি বইয়ের প্রোডাকশন ও সম্পাদনায়। লেখকের লেখন নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই, তবে সম্পাদনা নিয়ে আছে। বেশ অনেকগুলো ভুল চোখে পড়েছে আমার। কোনো একটি শব্দ মিসিং, আবার কখনো একই শব্দ দুইবার, বানান ভুল, শব্দের অসাম্যঞ্জস্যতা এমন অনেকগুলো ভুল কখনো কখনো বিরক্তির জন্ম দিচ্ছিলো। প্রচ্ছদটাও খুব একটা পছন্দ হয়নি আমার। সিরিজের বাকি বইগুলোর সাথে মেলালে ঠিকই আছে অবশ্য। প্রোডাকশন আমার বেশ লেগেছে। পড়া শেষে বইটা যেন এখনো নতুনের মতোই ঝকমক করছে।

পরিশেষে, আমাদের দেশকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। তবে খুব বেশি দেরি না হয়ে যায় আবার! কখনো কখনো একজনের এগিয়ে আসাতেই ধীরেধীরে নতুন একটি দলের জন্ম হয়। তাই শুরুটা না-হয় আমার বা আপনার দিক থেকেই হোক!

বই- কন্ট্রোল
সিরিজ- বেগ-বা'স্টার্ড
লেখক- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রকাশনী- বাতিঘর
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৪০৮
মুদ্রিত মূল্য- ৬৫০ টাকা
Profile Image for Eeva Khan.
3 reviews
July 14, 2024
বই: কন্ট্রোল
লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রকাশনী : বাতিঘর
প্রচ্ছদ : সিরাজুল ইসলাম নিউটন
মুদ্রিত মূল্য: ৬৫০৳

#সার_সংক্ষেপ :
কাহিন��র শুরুটা হয় সাধারণ এক তরুণীর আত্মহত্যার মাধ্যমে। ঢাকার বিলাস বহুল আবাসিক এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া যায় সোনিয়া নামের এক তরুণীর ঝুলন্ত লাশ। সোনিয়ার বড়বোন তার খোঁজ না পেয়ে থানায় ফোন দিয়ে বললেও পুলিশ বিষয়টি আমলে নেয়নি। আপাত দৃষ্টিতে আত্মহত্যার কেস মনে করেই বনানী পুলিশের কাছেই কেসের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনাক্রমে হোমিসাইডের চিফ ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে যায়। তার তীক্ষ্ণ চোখ দিয়ে ক্রাইম সিনে নজর বুলিয়ে সে সিদ্ধান্তে আসে, এটা কোনোভাবেই আত্মহত্যা নয় বরং পরিকল্পিত একটি খুন। আর তখনই সে বনানী পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছে এই খুনের তদন্ত সে নিজে করবে মানে হোমিসাইড করবে।

প্রশ্ন উঠে আসে সাধারণ ঘরের এক তরুণী, যায় বাবা মা নেই ,বড় বোনের কাছে মানুষ হওয়া,বয়স একুশ - বাইশ, কলেজ পড়ে।কিন্তু বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কী করে ভাড়া করতে পারে? জানা যায়, দেশের সবচেয়ে ধনী বা প্রভাবশালী জাহান গ্রুপের সিইও আলভীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক।
তদন্তে নেমে জেফরি বেগ বুঝতে পেরেছে; সাপের গর্তে পা দিয়েছে সে। প্রতিনিয়ত বাঁধা দেওয়া হচ্ছে তাকে।কিন্তু জেফরি বেগও থেমে থাকার কেউ না।জেফরি মনে করেন যতই ক্ষমতা থাক, টাকাপয়সা থাক; রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে কেউ নয়! আর সেটা প্রমাণ করবেই। তাই সে ছুটতে থাকে সব তথ্য প্রমাণ এক করতে। প্রধান সন্দেহভাজন আলভীর সাথে দেখা করে; কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে না। তর্ক, বাকবিতণ্ডা এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। কিন্তু জেফরি বেগ জানতো না বাঘের গুহায় গিয়ে এমন এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মাশুল কী হতে পারে ! এ যাত্রায় নিজে তো বেঁচে ফিরেছে; কিন্তু এর ফল যে ভয়াবহ হবে সেটার ধারণার বাইরে ছিল। পিছুটান না থাকা বেগ জানতো না তারও পিছুটান আছে। যেটা বেগকে করে দেয় নিঃস্ব,গড়ে তোলে ব্যর্থ-বিধ্বস্ত ।
ক্ষমতাবানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, আইনের ঊর্ধ্বে আর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা এসব লোকের নাগাল পাওয়া তার পক্ষে অসম্ভব ।আর তখনই নিজের চরিত্রের বাইরে গিয়ে জেফরি শরণাপন্ন হয় তার বিপরীতে থাকা অন্ধকার জগতের একজনের কাছে;পেশাদার খুনি বাস্টার্ড!!যার পিছনে ছুটতে ছুটতে একদিন জেফরি নিজেই থেমে গিয়েছিল।

অন্যদিকে অমূল্য বাবু বাবলুকে নিয়ে কোনো রকমের ঝুঁকি নিতে চায় না তাই সবার দৃষ্টি অগোচরে রেখে দিয়েছেন।
অমূল্য বাবু ;বাবলুকে জানালো জেফরি বেগ তাকে খুঁজছে, তাকে একটা কন্ট্রাক্ট দিতে চায়!
কিছুদিন যাবৎ বাবলু কিছু বিস্ময়কর খবর পড়েছে! এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল দেখা করবে জেফরি বেগের সাথে।


আবারও পুরনো রূপে ফিরেছে বাস্টার্ড তবে জেফরি বেগের সাথে দেখা করলেও ;এটা বাস্টার্ডের জন্য কন্ট্রাক্ট ছিলো না বরং স্বেচ্ছায়। যা দেশ পেরিয়ে তাকে নিয়ে গিয়েছে দুবাইতে। জিরো ক্রাইম নীতিতে বিশ্বাসী,বিশ্বের সবচেয়ে জাঁকজমক শহর, যেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশ্বের সেরা। এতটা দুঃসাহস নিয়ে সবার চোখ এড়িয়ে বাস্টার্ড কি তাহলে তার কাজ হাসিল করতে পারবে !!
তবে কি বেগ - বাস্টার্ডের দ্বৈরথের ইতি ঘটবে! নাকি সূচনা হবে নতুন এক অভিযাত্রার!!!

( পড়ার সময় মনে হবে যেন রোলার কোস্টারে আছেন,বলা বাহুল্য এই বইয়ের রিভিউ ছোট করে দেওয়ার উপায় নেই।)

#নিজস্ব_মতামত: গল্পটা দেশের রাজনীতির ,হ্যাঁ পড়তে পড়তে মনে হবে আরেহ এটা তো আমাদের পরিচিত এক চিত্র। ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষ কি না করতে পারে ! এদের কাছে মনে হয় টাকাই সব। টাকা থাকলে কি না করা যায়! কথায় আছে না, জোর যার মুল্লুক তার!
তবে যাইহোক সবশেষে গল্পটা আমার কাছে কেবল বেগ আর বাস্টার্ডের। 🖤
**
এটা বেগ - বাস্টার্ড সিরিজের সপ্তম বই। "কন্ট্রোল" এক অন্যরকম গল্প। আই থিঙ্ক বেশিরভাগ পাঠকই গল্পের সাথে এক ধরনের সংযোগ স্থাপন করতে পারবে। কারণ লেখক যে ঘটনার সূত্রপাত দিয়ে গল্পের শুরু করেছেন সেটা বাস্তব এক ঘটনা। আমাদের চেনা জানা পরিচিত এক ঘটনা।

( একটা দারুন ব্যাপার খেয়াল করলাম। কল্ট্রোল বইতে বেগ - বাস্টার্ড সিরিজের বাকি ছয়টা বইয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যুক্তির মাধ্যমে। ওয়াও! আসলেই অন্যরকম ছিল! )

**#পছন্দের_লাইন : " পুরুষ মানুষ হয়তো অনেক রকমের হয়, আমার কাছে স্রেফ দুই রকমের... ব্যবহার করে নয়তো অবহেলা করে!"



Displaying 1 - 30 of 73 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.