নব্বইয়ের দশক ছিল আমার বেড়ে ওঠার কাল। আটপৌরে সেই সময়টা কখনোই ভুলতে পারি না। ইন্টারনেট জিনিসটা কী তখনো সেভাবে জানি না। জীবনযাত্রা এখনকার মতো ‘ছুটে চলা’র নয়, বরং অনেকটাই ধীরলয়ের। স্কুলে যাই, বাড়ি আসি, বিকেলে খেলতে যাই। ক্লান্ত শরীর নিয়ে সন্ধ্যায় পড়তে বসা। কিছুক্ষণ পরই টিভিতে নাটক কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠান। বিনোদন বলতে একটাই মাধ্যম–বিটিভি। যা দেখতে বলে, দেখি সেটিই। এমন একটা জীবনে চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি কত ঘটনা! রাজনীতি, খেলাধুলা থেকে শুরু করে কত জায়গায়। একটা সময় খেয়াল করলাম, বন্ধুবান্ধব কিংবা অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে সেই সময়ের গল্পগুলো বলতে আনন্দ পাচ্ছি। যাঁরা নব্বইয়ের দশক দেখেননি, তাঁরাও খুব আগ্রহ নিয়ে শোনেন আমার বলা গল্পগুলো। সেই গল্পগুলোই একটা সময় লিখে ফেললাম। এক মুঠো নব্বই বইটা সেই গল্পগুলো নিয়েই। আমার দেখা নব্বইয়ের দশকের স্মৃতিকাতরতা নিয়েই। এই বইটি দিয়ে যদি পাঠকের স্মৃতিকাতরতাকে উসকে দিতে পারি, তাদের সেই দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিতে পারি, তবেই পরিশ্রম সার্থক। এই বইটি আসলে স্মৃতিচারণমূলক। যা দেখেছি, যা মনে ছিল সেটিই লিখেছি।
আহারে সোনালী অতীত! বইটা ভর্তি নস্টালজিয়ায়৷ নাইন্টিজ কিডদের জন্য অবশ্যপাঠ্য৷ আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ বাদে বাকি প্রত্যেকটা এলিমেন্টের সাথে নিজেকে অনুভব করেছি৷ তবে লেখক নব্বই দশক নিয়ে লিখলেও নিজে জন্মেছেন আশির ঘরে৷ এ জন্য নব্বইয়ের ছেলেপিলেদের আরও কিছু স্মৃতিচারণ বাকি রয়ে গেছে৷
নামেই এ বইয়ের পরিচয়। আপনি যদি নব্বই-এর দশকটা দেখে থাকেন, তাহলে বইটি আপনার স্মৃতিকে উস্কে দেবে। অন্তত আমার স্মৃতিকে উস্কে দিয়েছে প্রায় প্রতিটি বিষয়েই। যদিও দুই একটি সেকশন আমি এড়িয়ে গেছি, কারণ দুঃখের কথা স্মরণ করার আগ্রহ হয়নি।
যারা নব্বই দশকের নস্টালজিয়ার লেন্সে চোখ রেখে বিগত অতীতকে একটু দেখে আসতে চান, এই বই তাদের সহায়তা করবে। যারা নব্বই দশকের আলোকে লেখালেখি করছেন বইটি তাদের জন্য বেশ চমৎকার একটা রেফারেন্সও হতে পারে।
ছোটবেলার স্মৃতিগুলোকে আরেকজনের চোখ দিয়ে দেখার নিমিত্তে বইটা কেনা। পড়তে খারাপ লাগছিল না; শেষ আর করা হল না। ৩ তারা দেয়ার মত করে পড়া আসলে হয়ে ওঠে নি; দিলাম এজন্য যে ভিন্ন কোন দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠেনি তেমন, বেশ গতানুগতিকই বলা চলে।