Sunil Gangopadhyay (Bengali: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়) was a famous Indian poet and novelist. Born in Faridpur, Bangladesh, Gangopadhyay obtained his Master's degree in Bengali from the University of Calcutta, In 1953 he started a Bengali poetry magazine Krittibas. Later he wrote for many different publications.
Ganguly created the Bengali fictional character Kakababu and wrote a series of novels on this character which became significant in Indian children's literature. He received Sahitya Academy award in 1985 for his novel Those Days (সেই সময়). Gangopadhyay used the pen names Nil Lohit, Sanatan Pathak, and Nil Upadhyay.
Works: Author of well over 200 books, Sunil was a prolific writer who has excelled in different genres but declares poetry to be his "first love". His Nikhilesh and Neera series of poems (some of which have been translated as For You, Neera and Murmur in the Woods) have been extremely popular.
As in poetry, Sunil was known for his unique style in prose. His first novel was Atmaprakash (আত্মপ্রকাশ) and it was also the first writing from a new comer in literature published in the prestigious magazine- Desh (1965).The novel had inspiration from ' On the road' by Jack Kerouac. His historical fiction Sei Somoy (translated into English by Aruna Chakravorty as Those Days) received the Indian Sahitya Academy award in 1985. Shei Somoy continues to be a best seller more than two decade after its first publication. The same is true for Prothom Alo (প্রথম আলো, also translated recently by Aruna Chakravorty as First Light), another best selling historical fiction and Purbo-Paschim (পূর্ব-পশ্চিম, translated as East-West) a raw depiction of the partition and its aftermath seen through the eyes of three generations of Bengalis in West Bengal, Bangladesh and elsewhere. He is also the winner of the Bankim Puraskar (1982), and the Ananda Puraskar (twice, in 1972 and 1989).
Sunil wrote in many other genres including travelogues, children's fiction, short stories, features, and essays. Though he wrote all types of children's fiction, one character created by him that stands out above the rest, was Kakababu, the crippled adventurer, accompanied by his Teenager nephew Santu, and his friend Jojo. Since 1974, Sunil Gangopadhyay wrote over 35 novels of this wildly popular series.
Death: Sunil Gangopadhyay died at 2:05 AM on 23 October 2012 at his South Kolkata residence, following a heart attack. He was suffering from prostate cancer for some time and went to Mumbai for treatment. Gangopadhyay's body was cremated on 25 October at Keoratola crematorium, Kolkata.
Awards & Honours: He was honored with Ananda Award (1972, 1979) and Sahitya Academy Award (1984).
সেই ছোট বেলায় সেবা প্রকাশনীর মহাভারত এর সহজ অনুবাদ পড়েছিলাম। এরপর গুলে খেয়ে ভুলে গেছি সেই কবেই। তবে মিথলজিক্যাল লেখার আমি আগাগোড়াই ফ্যান। তাই টুকরো টুকরো অনেক পড়েছি। তবে পূর্ণাঙ্গ আর পড়া হয়ে ওঠেনি। হঠাৎ করে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর "আমাদের মহাভারত" পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লাম।
ছোটদের জন্য এত সুন্দর করে গল্প বলার মত করে কি সহজ ভাবে সুনীল বাবু মহাভারত তুলে ধরেছেন যে রেখে ওঠা যায় না। সেবার অনুবাদটাও সহজ ছিল তবে এইটা বেস্ট। শুধু একটাই অপূর্ণতা, বইটা সুনীল বাবু শেষ করে যেতে পারেন নি। প্রায় ৯৫ ভাগ লিখে চলে গেছেন ধরাধামের মায়া ত্যাগ করে। বাকিটা প্রকাশকরা শেষ করেছেন।
যদি কেউ মহাভারত না পড়ে থাকেন কখনো তাহলে পড়ার ইচ্ছে থাকলে এটার থেকে বেস্ট শুরু করার অপশন আছে কিনা আমার জানা নেই। আর বইয়ের ভেতরের ইলাস্ট্রেশন গুলো দুর্দান্ত।
মহাভারত নিয়ে এটি আমার পড়া দ্বিতীয় বই। আমাদের মহাভারত। লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। এই বইটি লেখক লিখতে শুরু করেছিলেন ছোটদের জন্য। পুরো মহাভারতকে সংক্ষিপ্তকারে গল্পের ছলে বলে গেছেন লেখক। এত চমৎকার ছিল লেখার ভঙ্গি একটানা পড়তে বাধ্য হয়েছি।
যারা মহাভারত নিয়ে একদম জানেন না বা যারা ছোটদের মহাভারত সম্পর্কে জানাতে চাচ্ছেন। এ বই তাদের জন্য একদম যথোপযুক্ত। বইয়ে লেখক কিছু কিছু নিজের মতামত দিয়েছেন, প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু দূর্ভাগ্য একটাই,তিনি বইটি শেষ করে যেতে পারেন নি। এমন চমৎকার একটা বই অসমাপ্ত রয়ে গেল। যদি ও আনন্দ প্রকাশনী নিজেদের মত করে শেষের অংশটা সমাপ্ত করেছেন। তাও, সুনীল যদি শেষ করতে পারতেন,বইটা একটা রত্ন হতো নিসন্দেহে।
এই একটা বইয়ের জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করেছি। হাতে পাওয়া মাত্র পড়ে ফেলেছি। যতটুকু আশা করেছিলাম, তার থেকে হাজার গুন বেশি বেশি ভালো একটা বই। সুনীল সব সময় রাজা। উনার সব লেখা ই আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
রাজশেখর বসুর অনুবাদ পড়ার চেষ্টা করছি অনেকদিন যাবত।কিছুক্ষণ পড়ার পর উর্বর মস্তিষ্ক আর সায় দেয় না। তারপর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়েরটা পড়ি।মহাভারতের ছোট ছোট নানা ঘটনা পড়লেও পুরোটা সুনীলবাবুর লেখায় পড়লাম। ঝরঝরে ও সুখপাঠ্য রচনা।
মহাভারত এমনই এক গাঁথা, যেভাবেই লেখা হোক না কেন, এর আবেদন কোনোদিনও কমবে না। শক্ত শক্ত শব্দ এড়িয়ে ছোটদের জন্য সাবলীল ভাষায় মহাভারত লিখলেন সুনীল বাবু। ছোট হোক আর বড় হোক; মহাভারত সবসময়ই সুখপাঠ্য।
তবে কিছু ঘটনার টাইমফ্রেম বা স্ট্রাকচার সুনীল বাবু লিখেছেন একটু অন্যভাবে। এর আগে মহাভারত এবং মহাভারত সম্পর্কিত বই পড়েছি বেশ কিছু, তার সাথে এই বইয়ের বেশ কিছু বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হলো। এই জায়গাগুলোয় ভ্রু কুচকে গেছিলো।
মহাভারতের গল্প এখানে সেখানে অনেকভাবে শুনেছি।অর্জুনের তীর দিয়ে অনেক দূর থেকে পাখিবিদ্ধ করার গল্প হা করে গিলেছি।অতি উৎসাহে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর 'ছেলেদের মহাভারত' শুরু করলাম।যতই জল গড়াতে লাগল,উৎসাহে ভাটা পড়তে লাগল।এ কি রে ভাই!যুদ্ধের এত বিস্তৃত বর্ণনা!ধৈর্য ধরে রাখা মুশকিল!সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর 'আমাদের মহাভারত' সেদিক থেকে প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।সহজ সাবলীল ভাষায় লেখার চেষ্টা করেছেন।অতিপ্রাক ৃত ঘটনাগুলোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন,আবার সমাধান হিসেবে কিছু কিছু জায়গায় অযুহাতও দাঁড় করেছেন।
একটা সময় মহাভারতের প্রিয় ক্যারেক্টার ছিল,অর্জুন।কিন্তু এখন আবার কেন জানি,কর্ণের প্রতি একটা টান সৃষ্টি হয়েছে।
❛মহাভারতের মধ্যে ঢুকেছেন কীট, কে টেকুটে ফুঁড়েছেন এপিঠ-ওপিঠ। পণ্ডিত খুলিয়া দেখি হস্ত হানে শিরে; বলে, ওরে কীট, তুই এ কী করিলি রে! তোর দন্তে শান দেয়, তোর পেট ভরে, হেন খাদ্য কত আছে ধূলির উপরে। কীট বলে, হয়েছে কী, কেন এত রাগ, ওর মধ্যে ছিল কী বা, শুধু কালো দাগ! আমি যেটা নাহি বুঝি সেটা জানি ছার, আগাগোড়া কে টেকুটে করি ছারখার।❜
মহাভারত মহাকাব্যের এক অংশ। পাঁচটি মহাকাব্যের সবথেকে বড় অংশ। সর্বপ্রথম কে রচনা করেছিলেন এই গাঁথা? হাজার হাজার বছর আগে কথা কুরুক্ষেত্রের ময়দানের সেই ঘটনা গুলো বাংলায় বিরচিত করেছিলেন কাশীরাম দাস। সংস্কৃত ভাষায় লেখা ❛মহাভারত❜ বোঝা ভাষা না জানা লোকের পক্ষে কষ্টসাধ্য। খালি বুলি আওড়ে গেলেই তো হয়না, বুঝতে হয় এর মানে, ঢুকতে গিয়ে ঘটনার গভীরে। আগেরকার মানুষ লিখতে পড়তে জানতেন না। তবে এত বিশাল গাঁথা লোকে জানলো কী করে? ব্যসদেব ই বা কী করে লিখে ফেললেন সেটা? আছে এর পিছেও ঘটনা। এরপর এই লেখার অনেক পরের কথা। আগেরকার মানুষ খেত ভালো খাবার। খাঁটি দুধ ঘি আর ফলমূলের গুণে তাদের মেধা স্মৃতিশক্তি ছিল বেজায় ভালো। এজন্যই একজনের মুখে শুনে শুনে মুখস্ত করেন ফেলতেন তারা এসব ঘটনা। ঘটনা পাঁচকান হলেই এর মধ্যে আসে কিছু রদবদল। হয়তো মহাভারতের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল। একদিন একদল মুনি ঋষিরা তাদের যজ্ঞ করছিলেন। সেখানে একসময় এসে হাজির হয় সৌতি নামের একজন। গল্প শুনিয়ে সে রোজগার করে। স্বাধীকার দলকেও সে শুনাবে এমন এক কাহিনি যা যুগে যুগে লোকের মনে গেঁথে যাবে। সৌতির বলা সেই মৌখিক গল্পের লেখ্য রূপই বলা যায় আজকের ❛মহাভারত❜। মহাভারত বললেই ❛পঞ্চ পান্ডব (যুধিষ্ঠির, অর্জুন, ভীম, নকুল এবং সহদেব)❜ এর কথা আসে। আসে দ্রৌপদী, কুন্তি, কর্ণ, দুঃশাসন, দুর্যোধন, ভীষ্মের কথা। আরো আসে কৃষ্ণের কথা। আর মহাভারতের সেই কু রু ক্ষে ত্রের যু দ্ধের কাহিনি তো আসেই। একই বংশের হয়ে ভাই হয়ে কী করে দুই পক্ষ তৈরি হয় এবং কৌরব পান্ডবের যুদ্ধ হয় সেটা বেশ অনেক বছরের ইতিহাস! ভারতবর্ষ জুড়ে বিরাজ করে এই মহাভারত। তাইতো বলে, ❛যা নেই ভারতে, তা নেই ভারতে❜! এরমানে মহাভারত নিয়ে ধারনা আছে মাত্রেই ব্যক্তি বুঝবেন। মহাভারতের পান্ডবদের পর্যন্ত আসতে এক ওয়ার হতে হয়েছে বিশাল এক ইতিহাস। শকুন্তলা, রাজা দুষ্মন্ত, যযাতি, থেকে শুরু করে নানা কাহিনি পেরিয়ে ইতিহাস এসেছে ভীষ্মের কাছে। ভীষ্মের বরপ্রাপ্তি এবং কোনোদিন রাজ সিংহাসনে না বসার প্রতিজ্ঞা এরপর পান্ডু এবং ধৃতরাষ্ট্রের রাজা হয়ে সিংহাসনে বসার পর আসে এক অঘটন। পান্ডু তার স্ত্রীদ্বয়কে নিয়ে ছুটি কাটাতে বনের মধ্যে গেলেন। তখন অন্ধ ভাই ধৃতরাষ্ট্রকে সিংহাসনে আসীন করে গেলেন। যেহেতু সে অন্ধ তার হয়ে ভীষ্মই রাজকার্য পরিচালনা করতে লাগলেন। এদিকে বেশ আছে পান্ডু তার স্ত্রীদের নিয়ে। কিন্তু ঝামেলা ঘটলো পান্ডু এক কর্মে অভিশাপ পেলেন কোনোদিন পিতা হতে পারবেন না। আগেরটার দেবতা, মুনি-ঋষিদের প্রিয় কাজ ছিল একটু নড়বড় হলেই শাপ দিয়ে দেয়া। আবার সেই শাপ মুক্তির পথও নানা সময়ে বাতলে দেন। যায় হোক দুঃখে পান্ডু চায়না আর ফিরে যাবেন রাজ্যে। দুই স্ত্রীও স্বামী ছাড়া যাবেন না। এই দুঃখ থেকে মুক্তির উপায় বের করলেন কুন্তি। তিনি জানালেন দেবতার আশীর্বাদ আছে তার সাথে। সে চাইলে দেবতাদের কাছে প্রার্থনা করে সন্তানের মা হতে পারেন। যেই কথা সেই কাজ। একইভাবে পান্ডুর দুই স্ত্রী এভাবে পাঁচ সন্তানের জননী হলেন। যাদের আমরা ❛পঞ্চ পান্ডব (যুধিষ্ঠির, অর্জুন, ভীম, নকুল এবং সহদেব)❜ নামে চিনি। এরমধ্যে পান্ডু স্বর্গের পথ ধরলেন। ওদিকে ধৃতরাষ্ট্রেরও তার স্বেচ্ছায় অন্ধত্ব বরণ করা স্ত্রীর সন্তান নিয়ে সমস্যা। আশীর্বাদে সেও ১০১ (একশো পুত্র এবং এক কন্যা নাম দুঃশলা) সন্তানের জননী হলেন। যার পুরো ব্যাপারটাই বেশ অবাক করা ধোঁয়াশা। এই সন্তানেরাই কৌরব। এদের মধ্যেই আছে দুঃশাসন, দূর্যোধন সহ আরো অনেকে। এদের মধ্যে ছোটকাল থেকেই মিল কম। পান্ডবদের মধ্যে ভীম পরাক্রমশালী, অর্জুন এর অব্যর্থ তীর আর যুধিষ্ঠিরের সুন্দর স্বভাব নিয়ে বেশ পরিচিত এরা। এরমাঝে নানা ঘটনা ঘটে পাঁচ ভাই তার মাতা সহ ব্রাহ্মণ বেঁধে ভিক্ষে করে খায়। এই কালেই একদিন তারা দ্রৌপদীকে নিয়ে হাজির। ছেলেরা যখন বললো, মা দেখো কী এনেছি! জবাবে না দেখেই তিনি বললেন, ❛যা এনেছ পাঁচজনে ভাগ করে নাও!❜ মায়ের আদেশ শিরোধার্য। তেই দ্রৌপদীকেই স্ত্রী হিসেবে বরণ করলো পাঁচ ভাই। এরপর আরো সময় কাটে এরা নানা পথ ঘুরে। ভীম এবং অর্জুন আবারো বিয়ে করে। ওদিকে দুর্যোধন কোনো ক্রমেই চায়না পান্ডবেরা রাজ্যে থাকুক। ছোটকালে ভীমের খেলাচ্ছলে করা অপমান ভুলেনি। আর তাদের সঙ্গ দেয় দুষ্টু শকুনি মামা। এরকম করতে করতে একদিন দুষ্টু বুদ্ধি বার করে শকুনি। বলে যুধিষ্ঠির পাশা খেলতে ভালোবাসে। যদিও তেমন একটা পারেনা আবার কেউ আহ্বান করলে তাকে ফিরিয়ে দেয় না। দুর্যোধন তাই যুধিষ্ঠির কে পাশা খেলতে ডাকে। পাঁচ ভাই দ্রৌপদী সহ যায় সেখানে। কিন্তু এখানেই তারা চালাকি করে দুর্যোধনের বদলে খেলতে নামে শকুনি মামা। যাকে পাশায় হারানো কার সাধ্যি! স্বাভাবিকভাবেই প্রতি বাজিতে হারতে থাকে পান্ডবদের ধন-সম্পদ, রাজত্ব এবং নিজেদের পাঁচ ভাইকেও! শেষ দানে হারায় দ্রৌপদীকেও! এবার আসে সেই ইতিহাসের কালো দুঃখের অধ্যায়, ❛দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের❜ ঘটনা। রাজসভায় পাঁচ স্বামীর সামনে দুঃশাসন, কর্ণের বাজে আচরণে ইজ্জত হারাতে বসে এক নারী। তবে এক অলৌকিক উপায়ে বেঁচেও যান। নানা ঘটনার পর তাদের রাজ্য ফিরিয়ে দেয় ফিরে যেতে পথেই আবার ডাকে তাদের আরেক দান খেলতে। যথারীতি এবারও হেরে তাদের ভাগ্যে জুটে বারো বছরের বনবাস আর এক বছরের অজ্ঞাতবাস। কিন্তু দুর্যোধন যে এতকিছু করছে তার বাবা কিছু বলে না? বলেন কিন্তু সেও একজন পিতা। অন্যায়ের প্রতিবাদের সাথে পিতৃস্নেহও এসে পড়ে। সব মিলে দুর্যোধনের এমন কাজ অব্যাহত থাকে। দৃশ্যপটে যখন কর্ণের উপস্থিতি হয় কেন কুন্তি অজ্ঞান হয়েছিল জানেন? কারণ দেবতার আশীর্বাদ পরীক্ষা করতে বিবাহের আগেই কুন্তি ডেকেছিল দেবতাকে। সে বর হিসেবেই কুন্তির কোলে এসে কর্ণ। মানে সে পান্ডবদের ভাই! কিন্তু পক্ষ নিয়েছে সে কৌরবদের। এর পিছে অবশ্য যথেষ্ঠ কারণ আছে।
এখন বারো বছর বনবাসের সময়টা কাটতে থাকে নানা ঘটনার মাঝে দিয়ে। এর আগে দুর্যোধন জতুগৃহে মে রে ফেলার চেষ্টাও করে পান্ডবদের। কেটে যায় বারো বছর। আর এক বছর অজ্ঞাতবাস! তারা চলে যায় এক রাজ্যে নিজেদের অস্ত্র লুকিয়ে। সৈরিন্ধ্রি, কঙ্ক, বৃহন্নলা এবং রান্নার লোক বেশে কাটানো এক বছরেও বিপদে পড়ে সৈরিন্ধ্রি। এবারের বিপদের নাম কীচক। সৈরিন্ধ্রি বা দ্রৌপদী যে কিনা এক রাজ্যের রাজকন্যা, পান্ডবদের স্ত্রী সেই বারবার অপমানের শিকার, লাঞ্ছনার শিকার। এর কি বিচার নেই? দ্রৌপদীর এই অপমানের কিছুটা বুঝে ভীম। সেই কষ্ট দুর করতেই হয় কীচক বধ! কীচকের বধের পর রাজ্যের অবস্থা নাজুক। আক্রমণ করতে আসে কৌরবেরা। রাজপুত্র উত্তর যেই ভাব নিয়ে তাদের সম্মুখীন হয়েছিলেন সামনে গিয়ে তার থেকেও বেশি ভয়ে পিছিয়ে আসতে নিলেন। তখনই নিজেকে প্রকাশ করলেন বৃহন্নলা বেশী অর্জুন। ততক্ষণে তাদের অজ্ঞাতবাসের সময় শেষ। কিন্তু কথামতো রাজ্য ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায় দুর্যোধন। অবশ্যম্ভাবী যু দ্ধ ঠেকাতে পান্ডব, থেকে শুরু করে কৌরবদের ভীষ্ম, দ্রোণ, ধৃতরাষ্ট্র এমনকি স্বয়ং কৃষ্ণ পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ❛কুরুক্ষেত্র❜ যেখানে নির্ধারিত নিয়তি সেই নিয়তির খেল কে ঠেকায়? শুরু হলো গদা, খড়গের নিচে কুরুক্ষেত্রের সেই বিশাল যু দ্ধ। এখানেও নানা ঘটনা ঘটে। মা রা পড়ে অনেকেই। দুই পক্ষের ক্ষতি আর প্রাপ্তিতে যু দ্ধের ময়দান সরব। কে জিতবে?
এত বিশাল বংশ ক্ষমতার লড়াইতে নিঃশেষ হয়ে যাবে? ভীষ্মের করা এককালের অপরাধের সাজা শিখণ্ডী দেবে তাকে? কর্ণ বা দুঃশাসন কি পাবে দ্রৌপদীকে বস্ত্রহরণের শাস্তি? বিশাল কুরুক্ষেত্রের সমাপ্তি কি স্বর্গে তাদের আরোহণেই হবে? যুধিষ্ঠিরের কোন পাপে তাকে নরকে পা দিতে হয়েছিল? কুরুক্ষেত্রের ময়দানে সন্ধ্যা থেকেই হঠাৎ করে বিকেল হলো কার ইশারায়?
সব জবাব আছে ❛আমাদের মহাভারত❜ এ।
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
❝আমাদের মহাভারত❞ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা পুরাণের কাহিনি। লেখক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে কাহিনি লিখে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কালের কাছে পেরে উঠেননি। এর আগেই ইহলোক ত্যাগ করেন। বাকিটুকু বই আকারে প্রকাশের জন্য প্রকাশনী ঘটনাটুকু লেখকের ধরনে লিখে রাখার চেষ্টা করেছেন। খুব বেশি বড়ো আকারের বই না। মহাভারতের মতো বিশাল কাহিনি বলতে গেলে এর শাখা-প্রশাখাতে কাহিনি চলে যায়। কিছু ঘটনা আছে বেশ বিস্তারিত, কিছু আছে না জানলেও চলে এরকম। সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই লেখাটুকু সাজিয়েছিলেন অসংখ্যবার মহাভারত পড়ে ফেলা সুনীল। মহাভারতের কাহিনি জানা থাকায় বইটা সহজ সাবলীল স্ট্যাইলে লেখায় পড়তে আরো ভালো লেগেছে। লেখকের লেখার মুন্সিয়ানার কথা বলাই বাহুল্য। এত দারুণভাবে বর্ণনা করেছেন, কোথাও নিজের কিছু ম���ামত ধারনার সাথে বইটা সাজিয়েছেন যে প্রশংসা না করে উপায় নেই। দারুণ লেগেছে। লেখক ঘটোৎকোচের মৃ ত্যু পর্যন্ত লিখে গিয়েছিলেন। বাকি কাহিনি আলাদা সংযোজন হলেও মনে হয়েছিল মেখিনের লেখার ধাঁচ বজায় ছিল। মহাভারতের ঘটনা নিয়ে যেখানে কিছু অসঙ্গতি কিংবা সন্দেহ ছিল লেখক সেসব নিজের মতো বুঝিয়েছেন। এমনটা না এমন হয়েছিল হয়তো। এত বিশাল সময়ের যে ব্যবধান তার মধ্যে আজকের এই যুগে এসে আসলেই সত্য-মিথ্যা যাচাই করা সাজে না। কারণ, ❛বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর❜। পড়ার সময় কিছু ঘটনায় বেশ রাগ উঠছিল। অবশ্যই বস্ত্রহরণের কথা আসবে এতে। ���র এই ঘটনার পরেও তার স্বামী যুধিষ্ঠিরের ওমন ভালো ভালো মনোভাব বেশ বিরক্তির ঠেকছিল। লেখকও বলেছেন যেখানে বারবার হেরে যাওয়ার পরেও তোমার তরে সর্বস্ব বাজি ধরার ব্যাপারটা যাচ্ছেতাই ছিল। আর সব ভাইয়ের এমন নীরব ভূমিকাও ভালো ঠেকেনি। তবে কে হওয়ার তাই তো হয়েছ।
চরিত্র: এত এত চরিত্র এদের কথা আলাদা করে বলার কিছু নেই মূল কারা সবার জানা।
প্রচ্ছদ: প্রচ্ছদটা বেশ সুন্দর। বইয়ের ভেতর কিছু ছবি ছিল ভালো লেগেছে।
পড়া শেষে পাঠ অভিজ্ঞতা বেশ ভালো ছিল। সুনীলের লেখায় মহাভারতকে অনন্য এক রূপে জানা গেছে।
মহাভারতের মূলকাহিনীগুলোর ছোটখাট সংকলন বলা চলে। প্রথমবার পড়ার জন্য পাঠকদের আবহে লেখা। সুনীলের লেখার ধরন বরাবরই অসাধারণ। রাজশেখর বসুর মহাভারত পড়ার পর মাঝে মাঝে রিমাইন্ডার হিসাবে পড়ার জন্য বইখানা উত্তম।
মহাভারত প্রথমবার পড়ার জন্য শুরু করেছিলাম সেবা প্রকাশনীর মানজুরা মকবুলের ' কিশোর মহাভারত ' দিয়ে। কিন্তু এত এত চরিত্রের ভীড় দেখে ক্ষান্ত দেই। অনেক সময় পরে আবার ধরি ' অভাজনের মহাভারত '। পড়তে মন্দ লাগেনি। শশী থারুরের ' আবার মহাভারত ' পড়া শুরুর আগে ঘটনার সারসংক্ষেপ আর চরিত্রগুলোর পরিচয় ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য ' আমাদের মহাভারত ' পড়া। সংক্ষেপে বিশাল ঘটনা জানার জন্য দারুণ।
খুবই সুন্দর, সহজ ভাষায় ছোটদের উপযোগী করে লেখা। কিন্ত সুনীল পুরো বইটা শেষ করে যেতে পারেন নি। আমি এর আগে উপেন্দ্রকিশোর রায়ের ছোটদের মহাভারত পড়েছি, সুনীলের আমাদের মহাভারত পড়লাম, আরো সংস্করণ পড়েছি সম্ভবত,ঠিক মনে নেই। একদিন মূল মহাভারত পড়ার ইচ্ছা আছে। তারপরেও এত চরিত্র, এত নাম, এত ঘটনা কিছুই মনে থাকবে কিনা কে জানে!
মোটামুটি ভালো। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লেখাটি অসমাপ্ত রেখে মারা গিয়েছিলেন, শেষ কয়েক পৃষ্ঠা প্রকাশনী থেকে খুব দ্রুত মূল কথা বলে শেষ করে দেওয়া। তবে আপনার বাড়ির ছোটোদের বইটি পড়তে দিতে পারেন। বইটি একেবারে ছোটদের কথা ভেবেই লেখা।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা "আমাদের মহাভারত" বইটি পড়ে শেষ করলাম। বইটি আমার কাছে একটি অন্যরকম চিন্তার খোরাক হিসেবে কাজ করেছে। মহাভারত হিন্দু ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ হলেও সাহিত্য হিসেবে এর আবেদন সর্বজনীন এবং চিরস্থায়ী। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে, কিন্তু সাবলীল ভাষায় মহাভারতের মূল কাহিনি এবং এর অসংখ্য শাখা-প্রশাখার চিত্র বেশ সুদক্ষ হাতে ফুটিয়ে তুলেছেন।
মহাভারতের মতো জটিল এবং বিস্তৃত এক মহাকাব্যকে কিশোরপাঠ্য হিসেবে সহজভাবে পরিবেশন করার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। তবে লেখক কাহিনির মাঝে তাঁর নিজস্ব মতাদর্শের কিছু মিশ্রণ ঘটিয়েছেন, যার জন্য বেশ কিছু জায়গায় মূল কাহিনির স্বাধ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে বলে মনে হয়েছে। যদিও এটি একধরনের সৃজনশীল স্বাধীনতা, তারপরও মহাভারতের মতো একটি নির্দিষ্ট কাঠামোযুক্ত কাহিনির ক্ষেত্রে এই ধরনের চিন্তার পরিবর্তন প্রশ্ন তৈরি করে।
বইটির একটি বড় দুঃখের জায়গা হলো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বইটি সম্পুর্ন লিখে শেষ করতে পারেননি, তার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দ্রোণ পর্ব পর্যন্ত লিখেছিলেন,এবং বইটির বাকি অংশ সম্পাদনা পর্ষদের তত্ত্বাবধানে শেষ করা হয়। লেখক নিজে পুরো বইটি শেষ করতে পারলে এটি নিঃসন্দেহে একটি সাহিত্য রত্ন হিসেবে পূর্ণতা পেত।
বইটি পড়ার সময় আমার মনে স্টার প্লাসের ২০১৪ সালে প্রচারিত টিভি সিরিয়াল "মহাভারত"-এর স্মৃতি ভেসে উঠেছিল। বিশেষ করে ঐ চরিত্রগুলোর মুখচ্ছবি বারবার মনের সামনে স্পষ্ট হচ্ছিল। সিরিয়ালের সেই বিশাল প্রোডাকশন এবং অনবদ্য অভিনয় এক ভিন্ন মাত্রার আবেদন সৃষ্টি করেছিল, যা এই বই পড়ার সময় পুনরায় অনুভব করেছি। তবে, অভিনয় এবং সাহিত্যের মাঝে যে মৌলিক পার্থক্য থাকে, সেটাও বেশ দৃশ্যমান ছিল।
বইটির ইলাস্ট্রেশন অত্যন্ত চমৎকার এবং এটি বইটির কোয়ালিটি বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। বিশেষ করে কিশোরপাঠকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে এই দিকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
যদিও লেখক ছোটদের জন্য সহজ এবং সাবলীল ভাষায় বইটি লিখেছেন, আমার মনে হয়েছে যদি এই বইটি আর একটু ছোট বয়সে পড়তাম তাহলে আরো বেশি উপভোগ করতে পারতাম। এখন বইটি পড়ার সময় ঐরকম পূর্ণ মুগ্ধতা আসেনি। আর আগেই তো বলেছি, মহাভারতের কিছু ঘটনার টাইমফ্রেম এবং বর্ণনায় লেখকের স্বকীয় ব্যাখ্যা কোথাও কোথাও ভ্রু কুঁচকানোর কারণ হয়েছে। যারা আগে থেকেই মহাভারত পড়েছেন, তাদের কাছে লেখকের এই ধারণাগত পরিবর্তনগুলো একটু অস্বাভাবিক মনে হতে পারে।
যারা মহাভারতের বিশালতায় প্রথমবার প্রবেশ করতে চায়, সেই সমস্থ কিশোরপাঠকদের জন্য লেখা,"আমাদের মহাভারত" নামক এই বইটি। মূলত যারা কখনো মহাভারত পড়েননি বা ছোটদের মহাভারত সম্পর্কে জানতে চান, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ সূচনা হতে পারে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মহাভারতের বিশাল গাঁথাকে ছোটদের জন্য সাবলীলভাবে পরিবেশন করার চেষ্টা করেছেন, যা অনেকাংশে সফল। যদিও বইটি লেখকের অসমাপ্ত সৃষ্টি, তবুও এটি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সৃষ্টির তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হয়ে থাকবে।
এই বইটি আমার এই বছরের পড়া প্রথম বই। এটি আমাকে মহাভারত সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করেছে। মহাভারত এমন একটি গল্প, যা বারবার পড়া যায় এবং প্রতিবার নতুন কিছু শেখা যায়।
একদা শৌনক ঋষি এক মহাযজ্ঞের আয়োজন করেন, যেখানে উপস্থিত হন সৌতি নামক এক গল্পকার।সে জনমেজয়ের সর্পযজ্ঞ থেকে মহাভারতের কাহিনী শুনে এসেছে।বর্তমানে ঋষির শিষ্যদের আগ্রহে তাদের মহাভারতের কাহিনী বলতে থাকেন। অসুরদের গুরু শুক্রাচার্য মৃতসঞ্জীবনী মন্ত্র জানতেন,যা দেবতাদের ভয়ের বিষয় ছিল।তারা তাদের গুরু বৃহস্পতির সাহায্য চান এই ব্যাপারে। বৃহস্পতি তার ছেলে কচকে শুক্রাচার্যের নিকট শিক্ষার্থী হিসেবে পাঠায় যাতে সে মৃতসঞ্জীবনী মন্ত্র শিখে আসতে পারে। এখানে কচের সাথে বন্ধুত্ব হয় শুক্রাচার্যের মেয়ে দেবযানীর সাথে। মন্ত্র শিখে কচ চলে গেলে অপমানিত দেবযানী বিয়ে করে যযাতিকে।এই যযাতির বংশের একজন রাজা দুষ্মন্ত।তার ছেলে ভরতের বংশধররায় মূলত মহাভারতের মূল চরিত্র - পাণ্ডব ও কৌরব। সেই সত্যবতীর রাজপ্রাসাদে প্রবেশ থেকে শুরু,তারপর পাণ্ডু ও ধৃতরাষ্ট্রের সন্তানদের জন্ম, অস্ত্রশিক্ষা, বিবাহ, পাশা খেলায় পরাজিত,বনবাস,অজ্ঞাতবাস এবং সবশেষে কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বইতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ঘটোৎকচের মৃত্যু পর্যন্ত লিখেছিলেন,বাকি অংশ প্রকাশক সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করেছে। লৌকিকতার ধার না ধেরে অলৌকিক বিষয়গুলো একই রেখে ছোটদের উপযোগি করে লিখে গেছেন লেখক।কাজেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা ছোটদের উপযোগি নয় সেইসব বাদ পড়ে গেছে।বই থেকে দার্শনিক দিক কিংবা চরিত্র বিশ্লেষণ আশা করা বোকামি যেহেতু এটা ছোটদের উপযোগি লেখা।যাদের হাতে সময় কম কিন্তু মহাভারত সম্পর্কে কিছুটা ধারণা রাখতে চান তারা পড়তে পারেন।
এই মহাভারত এম্নে অম্নে করে অনেকবার দেখা ও পড়া হয়েছে। কিন্তু কাহিনী সব খন্ডে খন্ডে জানতাম আর গুলিয়ে ফেলতাম। তাছাড়া অত বর্ণনা, বিস্তার পড়তে ভালো লাগতো না। কিন্ত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এই আমাদের মহাভারত একেবারেই অমন না। মূল কাহিনী আর গুরুত্বপূর্ণ সব ঘটনা দিয়েই পাঠকদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছে। কর্ণ-অর্জুন শত্রুতা, শকুনির পাশা খেলা, দ্রোপদীর বস্ত্রহরণ, বনবাস এটা তো দেখাদেখি সবাই জানে। কিন্ত বিস্তারিত এভাবে পড়তে ভালোই লেগেছে। দেখাদেখিতে যতটুকু জেনেছি অর্জুন ভালো ছিল বলে তাকেই পছন্দ হতো, কিন্ত এখন কর্ণ কেও ভালো লাগে।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় 'আমাদের মহাভারত' ৩/৪ লেখার পরই মারা যান, কিন্ত এই বইয়ের বাকি অংশটুকু পরে লিখে প্রকাশ করা হয়। ছোটদের উদ্দ্যেশ্যে লেখা হলেও বড়রাও বরাবর বইটি পছন্দ করবে।
অনেক আগেই ভেবে রেখেছিলাম আমি যদি লিখতে পারতাম তবে চাইতাম সেটা যেন সুনীলের লিখার মত হয়। মহাভারতের প্রতি সুনীলের বিরাট আকর্ষণ ছিল। তাঁর লেখা-সাক্ষাৎকারে সেটা জেনেছিলাম। সেইজন্যেই হয়তো এই বিশাল কাহিনী এত অল্পতে এত সুন্দর করে বলার প্রয়াস নিয়েছিলেন তিনি। গোটা বইটা যে একবাক্যে ভাল লেগে গেছে তা বলব না, তবে ঠিক কী কারণে ভাল লাগায় সেই ফাঁক টুকু রয়ে গেল সেটাও এখনো ধরতে পারছি না। কিন্তু একটা জিনিস ঠিক করে দিতে পেরেছেন। খুব দ্রুতই বইয়ের তাক থেকে রাজশেখর বসুর মহাভারত বের করে হাতে নিতে হবে - এই ভাবটুকু বইটা শেষ করার সাথে সাথে যে মনের ভেতর ঢুকল সেটার কারিগর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নিজে।
ছোটদের জন্য লিখা সুনীলের গঙ্গোপাধ্যায়ের "আমাদের মহাভারত"। মহাভারত যা হিন্দু মিথলজি নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তাদের শুরুর জন্য এটা বেস্ট অপশন বলা যায়। যদিও এটা অতিরিক্ত সংক্ষেপিত সংস্করণ, তবুও সুনীলের গল্প বলার ঢংয়ে সহজ ভাবে মহাভারত কে বর্ননা করেছেন, যা পড়া শুরু করলে তা রেখে উঠে যাওয়াটা মুশকিল।
সুনীল তার মহাভারতের কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি। ৯৫ শতাংশ কাজ সেরে পারি জমিয়েছিলেন পরপারে, বাকি কাজ প্রকাশক চালিয়ে নিয়ে শেষ করেছেন।
অনেকদিন পর একটি সম্পূর্ণ বই পড়ে শেষ করতে পেরে আনন্দ বোধ করছি।
মহাভারতের বিশাল কাহিনী অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় লিখেছেন সুনীল,সেই সাথে বেশ কিছু ব্যাপারে নিজের মতও ব্যক্ত করেছেন।উপেন্দ্রকিশোরের 'আমাদের মহাভারত'- এ যুদ্ধের বর্ণনা একঘেয়ে লাগলেও সুনীলের লিখা এমনই যে এই বইটি একঘেয়ে লাগার কোন সুযোগই নেই।সুনীলের মতে মহাভারত পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাস কিন্তু আফসোসের কথা এটাই যে তিনি বইটি শেষ করে যেতে পারেননি।
আগে টুকরো টুকরোভাবে মহাভারতের কাহিনী পড়েছি- হিন্দু বন্ধুদের ধর্ম বইয়ে যেটুকু লেখা থাকে আর কি। পুরোটা পড়েছি এই-ই প্রথম। পড়ার পর থেকেই পরশুরামের ঘটনা মাথায় ঘুরছে- কি হতো যদি পরশুরামের মা বেঁচে যাওয়ার পরেও হত্যাকাণ্ডের পুরো মেমোরি পরশুরামের মাথায় থেকে যেতো? যাইহোক, এ অন্য আলাপ।
নিঃসন্দেহে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য, সুনীলের মোহময়ী বর্ণনায় আরামে আরামে শেষ করতে পেরেছি আর কি!
The saddest part is - Sunil was not able to finish the story on his own. However, it is still mesmerizing. After quite a long, I finish a fiction within one sitting even though the story is known.
ভাষাটা একটা বড় ব্যাপার। মহাভারতের গল্প সুনীল এত ঝরঝরে ভাষায় শুনিয়েছেন, আকুল হয়ে পড়লাম। অনেক আগে রাজশেখর বসুর মহাভারত পড়েছি। একটু দুঃখ নিয়ে ভাবলাম, সহজ, ঝরঝরে বাংলায় কেউ মহাভারতটা আরেকবার লেখে না কেন?
A well depicted book from Sunil. Told the stories regularly but not sequentially. Getting flashbacks every time & explaining the facts. If you read it with full concentration and if you are a beginner, you can choose this without any second thought!
প্রাচীন ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারত এর একটি শর্ট রিটেলিং হলো এই বইটি। প্রাচীন ভারত এবং হিন্দুধর্মের দুটি প্রধান মহাকাব্যের একটি মহাভারত, পাণ্ডব এবং কৌরবদের গল্প প্রায় সকলের কাছেই সুপরিচিত। রাজশেখর বসুর মহাভারত এর অনুবাদ পড়ার প্রস্তুতির জন্য, বইটি পড়ে নিজের স্মৃতিকে সতেজ করেছি।
"আমাদের মহাভারত" বইটি অসমাপ্ত, যার ফলে পড়ে পূর্ণ তৃপ্তি পাওয়া যায় না। যদিও, প্রকাশকরা সংক্ষিপ্ত সমাপ্তি যোগ অ্যাড করে দিয়েছেন।
Favourite Quote: " যক্ষের একটা প্রশ্ন ছিল, "সুখী কে?" তার উত্তরে যুধিষ্ঠির বললেন :
দিবসস্যাষ্টমে মানে হল দিনের অষ্টম ভাগে, অর্থাৎ সন্ধেবেলা। লাইনের মানে, যার কোনও ঋণ নেই, আর যে বিদেশে থাকে না, তাকেই সুখী বলা যায়। অর্থাৎ, যে মানুষের কোনও ধারটার নেই, যে নিজের দেশে থেকে শুধু সন্ধেবেলা খানিকটা শাক রেঁধে খায়, সেই আসলে সুখী। "
যদিও বইটি অল্প বয়স্কদের জন্যে লেখা তারপরেও সব বয়সের পাঠকদের কাছে বইটি উম্মুক্ত বলা যায়। বইয়ের লেখনী সুন্দর, লেখক কিছু কাহিনী/কাজের ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন, যা বইয়ে ভিন্ন দৃষ্টি যোগ করেছে। তার নিজের দৃষ্টিতে করতে চেয়েছেন।
এটি মহাভারতের একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ, মূল প্লটটি এর একমাত্র ফোকাস এবং গল্পের অন্যান্য উপাদানগুলিতে খুব বেশি তথ্য নেই। যারা মহাভারত পড়তে আগ্রহী কিন্তু সংস্কৃত জানেন না বা বড় অনুবাদ পড়ার ধৈর্য নেই তাদের জন্য, "আমাদের মহাভারত" খুব কাজের। আগ্রহ বাড়ানোর জন্য দুর্দান্ত একটি বই।
Amader Mahabharat By Sunil Gangopadhyay
It is a retelling of the famous Indian epic, Mahabharata. As one of the two main epics in ancient India and Hinduism, the story of the Pandavas and Kauravas is well-known to almost everyone. In preparation for reading Rajshekhor Bosu's translation of the Mahabharata, I decided to refresh my memory by reading this book.
"Amader Mahabharat" is an unfinished work, leaving the reader feeling unsatisfied. To compensate for this, the publisher has added a short ending, which feels rushed and does not do justice to the story.
While the book is technically aimed towards younger audiences, it has enough qualities to appeal to readers of all ages. The writing is beautiful, and the author has made an effort to explain some of the supernatural elements, which adds a unique touch to the story.
It is a shortened version of the Mahabharata. The main plot is the only focus, and there is not much depth to the other elements of the story. For those interested in reading the Mahabharata but do not know Sanskrit or do not have the patience for lengthy translations, "Amader Mahabharat" is a great book to spark your interest.
ছোটবেলায় টেলিভিশনে ভারতের ন্যাশনাল চ্যানেলের অনেকগুলো প্রিয় অনুষ্ঠানের মধ্যে ভারতীয় মিথলজি নিয়ে তৈরি নাটক মহাভারত আমার বেশ প্রিয় একটা অনুষ্ঠান ছিল। পাঁচ হাজার বছর আগের সেই পান্ডব ও কৌরব ভাইয়েদের ক্ষমতার লড়াই তার সাথে দেবদেবী, রাক্ষস, অসুর নিয়ে এক বিশাল মহাকাব্য মহাভারত। এখানে আছে গুরুভক্তিতে আঙ্গুল কেটে ফেলা একলব্য, আছে পাঁচ পান্ডবের এক স্ত্রী দ্রৌপদি, অজেয় বীর অর্জুন ও কর্ণ, কুটকৌশলি শকুনি মামা, দুষ্ট যুবরাজ দুঃশাসন, চিরকুমার পিতামহ ভীষ্ম সহ আরো অনেক ঐতিহাসিক চরিত্র্র। আছে কুরুক্ষেত্রের সেই ধর্মযুদ্ধের কথা।
মূল মহাভারত সংস্কৃতভাষায় পদ্য আকারে লেখা হয়েছিল। পরবর্তিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লেখক এর গদ্য সংস্করন লেখেন। সংক্ষেপে সহজ ভাষায় মহাভারত আমি প্রথম পড়েছিলাম উপেন্দ্রকিশোরের ছোটদের মহাভারত বইটিতে। বইটা সাধু ভাষায় লেখা। লেখক যতটা সম্ভব সহজ ভাবে লেখলেও পারিপার্শ্বিক আরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা থাকায় বইটা তূলনামূলক জটিলই থেকে যায়।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রথমবারের মত সহজ চলিত ভাষায় একদম গল্প বলার মত মহাভারতের মূল ঘটনা লেখা শুরু করেন। তার লেখা কলকাতার আনন্দমেলা পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। তিনি তার লেখা শেষ করে যেতে পারেননি। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন ও কর্ণের মুখোমুখি হওয়া পর্যন্ত লেখার পর তিনি মৃত্যুবরন করেন। তার মৃত্যুর পর তার সেই ধারাবাহিক লেখা বই আকারে বাজারে আসে। মহাভারতের বাকি অংশটুকু প্রকাশনা সংস্থা থেকেই সংক্ষিপ্ত আকারে জুড়ে দেয়া হয়। মহাভারতের মত বিশাল কলেবরের পৌরানিক গল্পের মূলকথা সংক্ষপে সহজ ভাষায় জানতে চাইলে এই বইটির চেয়ে আর ভালো কিছু হয়না। পৌরানিক এই উপাখ্যানে আগ্রহ থাকলে শিশু কিশোর সহ যে কেউ এই বইটা পড়তে পারে। বইটির সহজভাষা ও প্রাঞ্জল্যতায় পাঠকের একটুও ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে না এটা নিশ্চিত।