বাবলু, বিলু আর ভোম্বল—এই তিন বন্ধু। বাচ্চু আর বিচ্ছু, এই দুই বোন। এই হল পাণ্ডবগোয়েন্দার পাঁচ জন। অবশ্য আরও একজনের কথাও বলতে হয়, এই পাঁচজনের যে কিনা নিত্যসঙ্গী। সে হল পঞ্চু, এক কালো কুকুর। এদের সবাইকে নিয়েই দারুণরকমের জনপ্রিয় রহস্যভেদী দল—পাণ্ডবগোয়েন্দা। ক্ষুদে এই গোয়েন্দাদলের বুকে দুর্জয় সাহস, বাহুতে দুর্দম শক্তি। দু-ঘা খেলে চার ঘা কী করে ফিরিয়ে দিতে হয়, তা এরা বিলক্ষণ জানে। আর তাই এদের অভিযান মানেই ঘটনার ঘনঘটা। নিত্যনতুন পটভূমি। পদে-পদে বিপদ। ক্ষণে-ক্ষণে চমক। এহেন পাণ্ডবগোয়েন্দারই বারো নম্বর অভিযানের কাহিনী এই বইতে। এ-অভিযানের সূচনা এই দলেরই অন্যতম বিলুর হঠাৎ-অন্তর্ধানকে কেন্দ্র করে। তাকে নাকি জয়রামপুরের মন্দিরের দিকে যেতে দেখা গেছে। কেন গেল বিলু? দলের কাউকে না জানিয়েই বা এমন একা গেল কেন?
বহু নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহে রোমাঞ্চকর পাণ্ডবগোয়েন্দা ১২।
Sasthipada Chattopadhyay (born 9 March 1941) was an Indian novelist and short story writer predominantly in the Bengali language. He was a well-known figure, famous for his juvenile detective stories, namely, the 'Pandob Goenda' series, as well as his contribution to children's fiction in general.
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়-এর জন্ম ২৫ ফাল্গুন ১৩৪৭। ইংরাজি ১৯৪১। মধ্য হাওড়া খুরুট ষষ্ঠীতলায়।
কিশোর বয়স থেকেই সাহিত্য সাধনার শুরু। ১৯৬১ সাল থেকে আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয় আলোচনীর সঙ্গে লেখালেখি সূত্রে যুক্ত থাকলেও ১৯৮১ সালে প্রকাশিত ছোটদের জন্য লেখা ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ই লেখককে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র জনপ্রিয়তার পর থেকে বিরামহীনভাবে লিখে চলেছেন একটির পর একটি বই। মূলত অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়, তাই দেশে দেশে ঘুরে যে-সব দুর্লভ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন, তারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তাঁর প্রতিটি লেখার ক্ষেত্রে।
২৪৭ পাতার পাণ্ডব গোয়েন্দা অভিযান কাহিনি! এ নিশ্চয়ই শারদীয়া আনন্দমেলার অবদান নয়, কোন পাক্ষিক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল হয়তো। ২৪৭ পাতা অবধি স্রেফ টানা হয়েছে কাহিনি। স্রেফ টানা। গোড়ার দিকের ৭০-৮০ পাতার মতোন টানটানভাবে এগোলেও তারপর এদিক-ওদিকের চক্করে কাহিনি টেনে রাবারব্যান্ড।
ভিলেনের নাম মি. এক্স শুনে প্রথমেই মেজাজ বিগড়ে গেছিল। এ যে পুরো ফিল্মি দুড়ুমদাড়াম হওয়ার দিকে এগোচ্ছে! সেই এক্সক্লুসিভ ব্যাপার ক্রমেই হারিয়ে চলেছে।
যে ক'জন খলনায়ক ও তাদের শাগরেদ এসেছে গল্পে সবই তারক মেহতা কা উল্টা চশমা সিরিয়ালের রুপান্তর এফেক্টে ভুগেছে। অর্থাৎ বাপুজি-রুপী বাবলুর কথায় সবাই একটু কাহিল হয়েই ভালোমানুষ হয়ে যাচ্ছে।
শেষে মি. এক্সের আবির্ভাব, পুনরায় গায়েব হওয়া এবং শেষ পরিণতির অংশটি যাচ্ছেতাই রকমের গুলগল্প ফাঁদার পরিণাম। মাত্রাতিরিক্ত টেনে টেনে শেষে গিয়ে ফ্লপ। পাণ্ডব গোয়েন্দার কাহিনি গোড়া থেকেই হু ডান ইট বা ক্লু ধরে মিস্ট্রি সলভের গল্প ছিল না। দুষ্টু লোককে ধাওয়া এবং শায়েস্তা করাই ছিল আগাগোড়ার প্লট সামারি। সেটা উতরে যেত মসৃণ গতিময়তার কারণে। অকারণে (সম্ভবত পত্রিকার ক্ষুধানিবৃত্তির জন্য) কলেবর বৃদ্ধির কারণে গতিও হারিয়ে গেল, চার্মটুকুও ভ্যানিশ। কিশোর উপন্যাস শেষ করতে ৩দিন লেগে গেল এইটুকুই বড় দুঃখের।
রকিব হাসানের তিন গোয়েন্দা, এনিড ব্লাইটনের ফেমাস ফাইভ, আলফ্রেড হিচককের থ্রি ইনভেস্টিগেটর বা ষষ্ঠীপদ মশাইয়ের পান্ডব গোয়েন্দা সবই এক। তবে স্কুলে থাকতে পড়তে পারলে ভালই লাগতো। বুড়াদের জন্য অবশ্যই না বইটি। তবু ভারী কিছু পড়ার ফাঁকে হালকা কিছু চাইলে পড়াই যায়।