পঞ্চাশের দশকের দিল্লী শহরের এক নাগরিক আখ্যান চাণক্য সেনের "মধ্যপঞ্চাস"। দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু, জাতিগত বিভেদ যায়নি একেবারেই। বাঙালী, তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম, বিহারী, উড়িয়া, পাঞ্জাবী, সিন্ধী, মাড়ওয়ারি, শিখ নানা জাতি নানা ভাবে নিজেদের নিয়ে শঙ্কিত। সেই সাথে যায় নি দাঙ্গার রক্তের দাগ। এরকম একটা বিক্ষিপ্ত সময়ে দিল্লীর একটা এলাকার কিছু মানুষকে নিয়ে ছোট এই উপন্যাস (যদি ও লেখক এটাকে নভেলা হিসেবেই দাবি করেছেন)।
ভারত সরকার এর অধীনে চাকরী করে সূনৃত। বাঙালী ইঞ্জিনিয়ার। পদে ইঞ্জিনিয়ার হলেও সরকারি বাড়ি পেয়েছে গোলমার্কেট নামক এমন এক পাড়ায় যেখানে বাড়ি পায় কেরানিরা। স্ত্রী অনুশিলা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না অমন পাড়ায় গিয়ে কিভাবে মানিয়ে নিবে। ছোটলোকদের সাথে কিভাবে মিশবে? মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরে অনুশিলা।
ফিরোজপুরের চাষী রামচাদের ছেলে ত্রিলোক চাঁদ। জীবনের নানা চড়াই উৎরাই পেড়িয়ে ভারত সরকারের কেরানী পদে উত্তীর্ণ হয়েছে। সেও বাড়ি পেয়েছে গোল মার্কেট এলাকায়। দীর্ঘদিন এক রুমের ছাপ্রা আউট হাউসে থাকা ত্রিলোক চাঁদ ও তাঁর স্ত্রী হরদেঈ এর জন্য এ যেন চাঁদ হাতে পাওয়া।
সূনৃত ও ত্রিলোক চাঁদ'রা একি দিনে নতুন বাসায় ওঠে। সূনৃতের মালামাল আসে লরি বোঝাই করে। ত্রিলোক চাঁদ এর মাল আসে একটা হাড় বেড়িয়ে আসা ঘোড়ায় টানা গাড়িতে। এভাবেই একটা বাঙালী আর একটা পাঞ্জাবী পরিবার এসে ওঠে একি পাড়ায়। সাক্ষী হতে থাকে জীবনের নানা বাঁকের।
বেশ লাগছিল পড়তে। কিন্তু শেষটা যেন হঠাৎ করেই হয়ে গেল যেন পাহাড়ে ঝুপ করে অন্ধকার নেমে যাওয়ার মতো। সামাজিক ও মানসিক বৈষম্য লেখক দারুন ভাবে তুলে ধরেছেন।