Jump to ratings and reviews
Rate this book

সায়ানাইড ফুল

Rate this book
মৃত্যু সুন্দর নাকি জীবন? মৃত্যু সুন্দর হওয়ার কথা নয়। তারপরও মানুষ কেন মরে যেতে চায়? কোনো এক কঠিন অসুখে ভুগছে ফ্রিদা। তাকেও কেন যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হবে? এই উপন্যাসে খোঁজা হয়েছে এই সকল প্রশ্নের উত্তর, যে উত্তরে ভেঙে পড়বে জীবনের অনেক চেনা সত্য।

176 pages, Hardcover

Published February 1, 2025

2 people are currently reading
35 people want to read

About the author

মাহবুব ময়ূখ রিশাদের জন্ম ১৯৮৮ সালের ৩০ জুন। ২০০৫ সাল থেকে লেখালেখি শুরু করেন। প্রথম বই প্রকাশিত হয় ২০০৮ সালে। লেখকের পছন্দের জায়গা জাদুবাস্তবতা। প্রিয় লেখক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ও শহীদুল জহির। ব্যক্তিজীবনে চিকিৎসক রিশাদ অর্জন করেছেন ইন্টার্নাল মেডিসিনের সর্বোচ্চ ডিগ্রি এফসিপিএস। পড়াশোনা করেছেন ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, নটর ডেম কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
1 (5%)
4 stars
7 (41%)
3 stars
9 (52%)
2 stars
0 (0%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 9 of 9 reviews
Profile Image for Akhi Asma.
232 reviews464 followers
June 12, 2025
Life and death, two sides of the same coin. One is imposed upon us, the other forbidden. সায়ানাইড ফুল makes me think of this contradiction, how we are thrust into existence without consent yet denied the right to leave on our own terms. It reminds me of Camus’ absurd man, endlessly pushing the boulder uphill, knowing there’s no meaning beyond what he assigns to it. But what if he decides to stop? What if, like Frida, he chooses to step away from the burden rather than carry it? Is that defiance or surrender?

Nietzsche spoke of eternal recurrence, living this life over and over again. If that were true, would we choose to endure the same suffering each time? Or would we, like Kafka’s characters, remain trapped in a system that dictates our fate, unable to escape even when the door is open? সায়ানাইড ফুল doesn't just ask about death, it asks about choice. If life is an absurd theater, are we actors following a script, or can we rewrite the ending? And if we can't, then what is more tragic-dying or continuing to live without the power to decide?

For a decade, I’ve thought a lot about life and death, suffering and endurance. At the same time, I try to enjoy small things; the way sunlight filters through my window in the morning, the quiet comfort of a favorite song, the excitement that fills me when I open a new book, inhaling that fresh scent of pages waiting to be explored, fleeting moments of peace in an otherwise restless mind. I appreciate them, yet there’s always that persistent regret that I’m still here despite everything, despite all the times I thought I wouldn't be. I may not have a chronic physical illness like Frida, but I’ve been carrying the weight of my own battles for so long that sometimes I wonder if there's an end to them. If a day will come when I won’t have to fight myself just to get through it. I saw parts of myself in Frida, not in her disease, but in her exhaustion, in that quiet longing for relief. It’s strange, isn't it? How the body’s suffering is acknowledged while the mind’s suffering is questioned, dismissed?

Euthanasia. I’ve asked my therapist about it, my friends, even researched it on my own, trying to make sense of this one thing. If someone with a physical illness is allowed the dignity of choosing their own end, why is it different for those suffering mentally? Why is pain only considered real when it can be measured in scans and test results? I don't mean to sound hopeless, and I’m not trying to encourage or discourage anything. I just... I know what it feels like to be tired. To feel like you’re running in circles, getting better only to fall apart again, hurting the people you love in the process. It’s a terrible feeling, knowing you don't want to be a burden but still feeling like you are.

But despite it all, I’m still here. Maybe that means something. Maybe it means there are still pages left in my story, even if I don't always see their worth.

This isn't a book review, just my thoughts after reading it. Thank you, Rishad bhaiya, for writing সায়ানাইড ফুল. I really enjoyed your writing style, specially the way you ended the story. The way you told Frida’s journey, how you put yourself into the book, even using your own name, it was actually super cool. But I’ve got to admit, I enjoyed your stories even more than this novel. But hey, your novel’s just the start, you’ve still got miles to go. Wishing you all the best with your next one, I don't know if I’ll be here to read it, or maybe I will, because nothing is certain with me. I also prefer the word স্বেচ্ছামৃত্যু over আত্মহত্যা!

And really, a big thank you for sending me the softcopy. :)

Cracked eggs, dead birds
Scream as they fight for life
I can feel death, can see its beady eyes
All these things into position
All these things we'll one day swallow whole
And fade out again....
Profile Image for Enamul Reza.
Author 5 books174 followers
February 13, 2025
কল্পবিশ্ব শব্দটা আমার ভালো লাগে। একজন লেখক চেনা পৃথিবীর অনুষঙ্গ নিয়েই নিজের মতো করে এক রকমের সাহিত্যিক বাস্তবতা তৈরি করেন। যার কল্পনা যত শক্তিশালী, তার কল্পবিশ্ব তত বিচিত্র হয়, প্রাণবন্ত হয়।

পাঠক এখানে নিজেকে আবিষ্কার করেন অভিযাত্রিক হিসেবে - একটা বই হাতে নিলেই চলছে, ঘুরে আসা যাচ্ছে সেই সব কাল্পনিক পৃথিবীতে যেখানে বাস্তবতার ছায়া থাকে চাঁদ ও সূর্যের মতোই, কিন্তু কখনও আকাশ থেকে ঝরে পড়তে পারে তীক্ষ্ণ কাঁচের বৃষ্টি, একটা ম্যাচের কাঠির অভাবে লুপ্ত হয়ে যেতে পারে আস্ত এক সভ্যতা, হাজির হতে পারে কথা বলা বাঘ - আর এসবের মাঝখানে দেখা দেয় এমন সব চরিত্র, যারা আসলে পাঠকের খুব চেনা, যাদের আনন্দ-বেদনা পাঠক চাইলেই ছুঁয়ে দিতে পারে, যাদের মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনকে নিজেদের অনুভূতি, যাপন ও অসুখের থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না এক পর্যায়ে গিয়ে।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদের সায়ানাইড ফুল উপন্যাসের তৈরি হয়েছে এমনই এক কল্পবিশ্ব। একজন নারী, যে খুঁজে ফিরছে মৃত্যুর উপায় কারণ তীব্র অসুস্থতায় বেঁচে থাকাটা তার কাছে অসহ্য হয়ে ওঠে একদিন, আবার আত্মহত্যাকেও সহজ লাগে না। তার এই যাত্রা যেন এক পূর্বঘোষিত নিয়তির কালপঞ্জি।

এখানে সত্যিই কথা বলা বাঘ আছে, আছে সুখ পাখি - যে ভবিতব্য জানে, আছে হারানো মানুষদের নাম ও অনুভূতি নিয়ে ফিরে আসা নতুন মানুষদের বিভ্রম। আর এইসব যাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, দেখতে পাই ফ্রিদাকে, উত্তম পুরুষের লেখা এই উপন্যাসের মূল চরিত্র। যার জীবন খালি চোখে অনেকটা দাবার ঘুঁটির মতো, খেলছেন ফ্রিদার পরাক্রমশালী দাদা - উপন্যাসের একটি প্রধান চরিত্র রহমিন, আর রহমিনের পরিচিত এক চিকিৎসক যে কিনা লেখকেরই নেমসেক। ফ্রিদা প্রতি চালেই খেলোয়াড়দের ঠিক করে দেওয়া নির্দেশনায় সামনে এগোচ্ছে, কিন্তু আসলেই কি? শেষ অব্দি কার কার জয় হয়? নিয়তি নাকি ফ্রি উইলের?

উপন্যাসটিকে মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করা চলে। প্রথম ভাগে আমরা দেখি ফ্রিদার অসুখ, দ্বিতীয় ভাগে আসে তার আরোগ্যলাভের যাত্রা। এই দুইয়ের মিথস্ক্রিয়া না জমলে বইটা তার উদ্দেশ্য খুঁজে পাবে না পড়তে পড়তে এমন আশঙ্কা জাগছিল। কিন্তু, জমে যায় - সেটা এমনভাবে আকস্মিক উপায়ে জমে যে চমকে উঠতে হয়।

কল্পনার আশ্রয়ে রিশাদের এই উপন্যাস ডিল করে শরীর ও মনের অসুখ, নারী পুরুষের সম্পর্কের বিভিন্ন লেয়ার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যক্তির সংঘর্ষ, মৃত্যু, আকাঙ্ক্ষা ও যৌনতা - যা এই অন্ধকার আশাহীন পৃথিবীতে গল্পটাকে উপনীত করে এক তীব্র দার্শনিক সত্যের সামনে। সব মিলিয়ে এরাই সায়ানাইড ফুলকে বানিয়ে তোলে আমাদের সময়ের এক দরকারি ডার্ক ফেবলে।

আরেকটা বিষয়, বইটা পেজটার্নার। রিশাদের উপন্যাসের ভাষা ও নির্মাণশৈলী আগের চেয়ে বেগবান আর পরিণত লেগেছে। এবং, এ বইয়ের ধরণকে ব্যক্তিগতভাবে আমি বলতে চাইবো দর্শন, ফ্যান্টাসিয়া আর সাইফাইয়ের এক অনায়াস মিশ্রণ।
Profile Image for Shuhan Rizwan.
Author 7 books1,108 followers
March 7, 2025
২০২৫ এর বইমেলায় মাহবুব ময়ূখ রিশাদের বই বেরিয়েছে দুটো। একটি গল্প সংকলনঃ ‘হেলফেরিয়ন’, অন্যটি উপন্যাসঃ ‘সায়ানাইড ফুল’। কাছাকাছি সময়ে পড়লাম বলেই বোধহয়, গল্প সংকলনের নাম-গল্পের যে ভাবনা, তার সাথে বেশ সাযুজ্য খুঁজে পেলাম উপন্যাসটার।

‘সায়ানাইড ফুল’ উপন্যাসের কেন্দ্র ফ্রিদা নামের এক তরুণী। দস্তয়েভস্কির ‘নোটস ফ্রম আন্ডারগ্রাউন্ড’-এ একটা তর্ক আছে যে বেদনাকে মানুষ ভালোবাসে, সে কারণে সে জীবন ত্যাগ করতে চায় না। সেই ভাবনার একটা বর্ধিত আলাপ মনে হয় ফ্রিদাকে, মেয়েটি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। জীবনের দহন নিয়ে সে কি আত্মহত্যা করবে, না বেঁচে থাকবে? সেই উত্তর রিশাদ তার কাহিনিতে দ্যান ফ্যান্টাস্টিক সব এলিমেন্ট নিয়ে (অলস লোকে ইদানিং এই ঘরানার লেখাকে ‘যাদুবাস্তব’ বলেও চালিয়ে দেয়)। ফলে, পাঠকের মনে হয় ‘সায়ানাইড ফুল’ উপন্যাসের আত্মা হলো মানুষের নিয়তি বনাম স্বাধীন ইচ্ছার সেই পুরোনো টানাপোড়েন।

উপন্যাসের কাহিনিকে মোটা দাগে দুটো পর্বে ভাগ করা। একভাগে রয়েছে ফ্রিদার শৈশব আর পরিপার্শ্ব, টুকরো-টুকরো আলাপ। দ্বিতীয়ভাগে রয়েছে ফ্রিদার একরকমের যাত্রা। দুই পর্বের স্বর-ভিন্নতার এই ব্যাপার হয়তো ইচ্ছাকৃত, তবে পাঠক হিসেবে আমি বেশি উপভোগ করেছি প্রথম পর্বটাই।

কাহিনির চমকপ্রদ অংশটা হচ্ছে ফ্রিদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক রিশাদের অংশটুকু। কার্ট ভনেগাটের কিছু কিছু উপন্যাসে লেখক নিজেই ক্যামিও দেয়, রিশাদও তাই করেছেন। তবে এই অংশটার একটা গভীরতর প্রতিকী অর্থ রয়েছে বলেও অনুভব করি। বেদনা থেকে মুক্তির জন্য মানুষের যে তাড়না, মহাবিশ্বের ‘এজেন্ট’ (প্রচলিত ভাষায় যারা দেবদূত)-রাও নিশ্চয়ই তা প্রত্যক্ষ করে বেদনাহত হন। মানুষ মুক্তি না পেলে তাই প্রকৃতির অন্যান্য শক্তিদেরও মুক্তি আসে না। ফিকশনের এই অংশটা-- ভনেগাটের মতোই একটা আশ্চর্য রসবোধের পরিচয় দিয়ে-- ঔপন্যাসিক রিশাদ নিয়ন্ত্রণ করেছেন যথেষ্ট কুশলতায়।

আলাপ শেষ করবো এই কুশলতার প্রসঙ্গ টেনেই। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, প্রথম উপন্যাসের চাইতে দ্বিতীয় উপন্যাস লেখাটাই কঠিন একজন লেখকের জন্য। সেই বিচারে মাহবুব ময়ূখ রিশাদের দ্বিত���য় উপন্যাস ‘সায়ানাইড ফুল’ আমার কাছে ভালোভাবে উতরে গেছে। কারণ, মনে হয়েছে, এই প্রথম স্বতঃস্ফূর্ততার বাইরে রিশাদের কারিগরি দক্ষতার পরিচয় পেলাম লেখায়—বারবার পুনর্লিখন ছাড়া যা সম্ভব হতো না।

ঔপন্যাসিক রিশাদের আরও উপন্যাসের অপেক্ষায় থাকলাম তাই।
Profile Image for নাহিদ  ধ্রুব .
143 reviews27 followers
February 12, 2025
১৯৪২ সালে প্রকাশিত রানএরাউন্ড(Runaround) গল্পে আইজাক আসিমভ রবোটিক্সের তিনটি সূত্র’এর অবতারণা করেন। আক্ষরিকঅর্থে ‘সায়ানাইড ফুল’ উপন্যাসের সাথে রবোটিক্সের এই তিন সূত্রের কোন সম্পর্ক না থাকলেও, তাত্ত্বিক জায়গা থেকে অবশ্যই আছে।

‘সায়ানাইড ফুল’ কী আদৌ প‍্যারালাল কোন জগতে ভ্রমণ করতে করতে ক্লান্ত এক মৃত‍্যুকামী প্রোটাগনিস্টের গল্প নাকি সে’ই বাঘটির গল্প যে ক্ষেত্রবিশেষে রোবোটিক্সের প্রথম সূত্র মানলেও, মূলত যাকে ফিরে যেতে হয় নরমাংসের কাছে, নাকি গল্পটা বার্ডির যে চলে গেলেও ফিরে আসে রিঞ্জনের গল্পে। উপন‍্যাসের পড়তে পড়তে নানান প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসে মনে। কখনও মনে হয়, এ যেন ‘থ্রি ম‍্যান অন অ‍্যা বোর্ড’এর সে’ই গোলকধাঁধা, যেখান থেকে সহজে বের হওয়া যায় না। তবে, এই ভ্রমণের মাঝেই আছে আনন্দ। প্রোটাগনিস্টের ব‍্যক্তিগত বিষন্নতা, কখনও যা নিহিলিজমের মতো গ্রাস করেছে সাপোর্টিং ক‍্যারেক্টারদের, কখনও যা খুলে দিয়েছে ইমোশনাল পোর্টাল, সেখানেই যেন লুকিয়ে আছে অ‍্যাবস্ট্রাক্ট বিউটি।

উপন‍্যাসের ধরণ নিয়ে বলতে গেলে, আবারও একটু দ্বিধায় পড়তে হয়। এক বাক‍্যে বলতে গেলে হয়তো বলবো, ফ‍্যান্টাসি নির্ভর জাদুবাস্তব কোন জগতের গল্প। কিন্তু, তবুও যেন সবটা ঠিক বলা হয়ে ওঠে না। গল্পের আড়ালে থেকে যাওয়া অনেক গল্পের মতো কিংবা অপূর্ব মেটাফোরের স্বাদ নিয়ে স্বাভাবিক কোন ছবি দেখার মতো অনুভূতি হয় এই উপন্যাস পড়ার শেষে। দৃশ‍্য থেকে দৃশ‍্য বদলে যায়, এক লহমায়। তাই, উপন‍্যাসের ধরণকে একটা সিঙ্গেল শটে নিয়ে আসা জটিল বটে!

জটিল এই উপন‍্যাসের প্লটও। ঔপন্যাসিক গল্প বলেছেন, পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো সুনিপুণ পদ্ধতিতে। উপন্যাসের ভাষা এত প্রাঞ্জল, গল্পই খুব সহজে টেনে নিয়ে যাবে পাঠককে। পপ ভাষায় এই উপন‍্যাসকে বলা যেতে পারে, ‘পেজ-টার্নার’। তাই, প্রোটাগনিস্টের পাশাপাশি উন্নাসিক চরিত্র রিশাদ যখন অবতীর্ণ হয় ভাগ‍্য নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়, ঘুণাক্ষরেও চিন্তা না করলেও, উপন‍্যাস পড়তে পড়তে আমাদের মনে হয়, এমনই তো হওয়ার কথা ছিল!

আলাদা আলাদা জগতের মাঝে ‘স্টিম অব কন্সাসনেস’কে দুর্দান্তভাবে নিয়ন্ত্রন করেছেন লেখক। তাই সহজেই পাঠকের মনে তৈরি হয় অসংখ্য কল্পনার সেতু। এই সেতুর উপর দাঁড়িয়ে কোন এক জ‍্যোৎস্নারাতে ‘সায়ানাইড ফুল’ উপন‍্যাস নিয়ে ভাবতে গেলে পাঠক আমি, তাই কখনও নিজেকে আবিষ্কার করি বার্ডির জায়গায়, কখনও কল্পিত কোন জগতে।

সময়হীন জগতে সময়ের সূত্র তৈরি করার মতো জটিল এক ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছেন মাহবুব ময়ূখ রিশাদ। রবোটিক্সের সূত্রের সাথে এই উপন‍্যাসের কোন সম্পর্ক নেই, তবু উপন‍্যাস পড়ার শেষে আমাদের মনে হয়, আহা! সবকিছু যদি শুরুর মতো নিয়ম মেনেই হতো! হাসপাতালে বিষন্ন করিডোর ধরে হাঁটতে হাঁটতে মনে হয়, যদি এখানেই পাওয়া যেত স্বর্গের সিঁড়ি। মনে হয়, এই প্রবল মৃত‍্যুকামী যাত্রার মধ‍্যেও যদি উঠে আসতো শ্বাশত জীবনের বোধ, যদি সুকৌশলে এড়ানো যেত তারে, অর্থ-কীর্তি-স্বচ্ছলতার আড়ালে। কিন্তু, তেমন হয় না। খেদ থাকে, যেমন থাকে মায়া। আমরা অপেক্ষা সে’ই ফুল ফোটার জন‍্য, যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বহুকাল আগে। আমরা এক বিপন্ন চক্রের মধ্যে আটকে পড়ি, যেখান থেকে মুক্তির পথ হয়তো কখনও না ফোটা সায়ানাইড ফুল’ই দেখাতে পারে!
Profile Image for musarboijatra  .
283 reviews357 followers
June 29, 2025
অস্তিত্বের যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন লেখক, তা হয়তো এরকম "যাদুবাস্তব" সেটাপ ছাড়া জাগিয়ে তোলা যেত না। ভনেগাটের স্লটারহাউজ ফাইভ, অথবা মাশুদুল হকের ডায়াসপোরা ব্লুস, সবখানে যেমন বাস্তবতা ভেঙে খানখান হয়ে যাবার ছবি দেখি, এমন প্যারালাল ওয়ার্ল্ড জন্ম নিয়েছে সায়ানাইড ফুলেও। এবং অজস্র বাস্তবতার মাঝে চরিত্র, ফ্রিদা, খুঁজে ফিরেছে একটাই জবাব—অস্তিত্বলাভ যদি ইচ্ছা-সাপেক্ষ না হয়, তাহলে অন্তত অস্তিত্ব-বিলোপ স্বেচ্ছায় হতে পারে না?

না, আত্মহত্যা দিয়ে সমাপ্তি টানা যেত না, কারণ জগতে আত্মহত্যা যে কখনো সমাপ্তি টানে না, রয়ে যাওয়া মানুষেরাই তা ভালো বলতে পারে। তাহলে বেঁচে থাকা কেন, আর তার গন্তব্যই বা কোথায়? সিসিফাসের মতো পাথর ঠেলে তোলা এবং সিসিফাসকে হ্যাপি কল্পনা করা—এটাই?

তারপরও, মানুষ প্রাপ্ত অস্তিত্বে থেকে যায়। this has to mean someting. হয়তো জীবনে চাওয়া-পাওয়া-আকাঙ্ক্ষা'র ঊর্ধ্বে নির্বাণ লাভ, অন্যথায় আবারো সংসারের চক্রে প্রবেশ, অথবা অন্তত নির্বাণ লাভের পথে জীবনাচরণ তৈরী করা।

যেমন বলেছিলাম, লেখক যা ছুঁতে চেয়েছেন তা প্রসেস করা, উপস্থাপন করা সহজ কাজ না। বোধের গভীরতা ছাড়া এই প্রসঙ্গে আলাপ নিতান্ত বালখিল্য শোনাতে পারে। লেখক যেভাবে তা ভেবেছেন, প্রকাশ করেছেন, তা এক আপাত দুষ্পাঠ্য। শেষ অব্দি আপনার মাথায় যা উদ্রেক করবে, আমার বোধয় সেটুকুই 'সায়ানাইড ফুল'।
70 reviews2 followers
March 14, 2025
শুরুটা আর শেষের জগৎ ঘুরার পার্টটা ভালো।মাঝখানটা বোরিং ছিল। অলমোস্ট বইটা শেষ না করেই রেখেই দিয়েছিলাম।
জাদু বাস্তবতা আমার জন্য নয় 😊
Profile Image for Arfaz Uddin.
91 reviews7 followers
February 21, 2025
...তবে আত্মহত্যা থেকে স্বেচ্ছামৃত্যু শব্দটা সুন্দর। যদি নিজে নিজে মরে যেতে হয়, তবে আমি আত্মহত্যা নয়, স্বেচ্ছামৃত্যুকে বেছে নেব। তবে দুটোর মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

সায়ানাইড ফুল, মাহবুব ময়ূখ রিশাদ

জীবন ও মৃত্যু একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ, কথাটা বড্ড গোলমেলে। কেননা জন্মের সময় আমাদের অনুমতি নেয়া হয়না। আমাদের ইচ্ছা থাকুক বা না থাকুক জন্মের মত সিদ্ধান্তে আমরা চাইলেও আমাদের মতামত দিতে পারি না, তবে অনেকেই নিজ হাতে মৃত্যু কে বুকে টেনে নেয়। তবে মৃত্যুকে নিজে টেনে নিয়ে আসাকে নিষিদ্ধ হিসেবে গ্রহন করা হলো। কিন্তু জন্মের ক্ষেত্রে যখন সিদ্ধান্ত আমরা নেইনি, তবে মৃত্যুতে কি আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা উচিত নয়? উচিত নয় কি যদি কেউ মৃত্যুকে স্বাদরে আমন্ত্রন জানাতে চায় তাকে সেই অধিকারটুকু দেয়া? যে জন্ম গ্রহণ করে তার মৃত্যু অনিবার্য কিন্তু জীবন টা তার, সেক্ষেত্রে মরনেও কি তার সায় থাকলে সেটিকে গ্রহন করতে দেয়া উচিত? নাকি মৃত্যুর মত সিদ্ধান্ত প্রকৃতি কর্তৃক গৃহীত হবে? জীবনকে সহ্য করে করে এক সময় অন্ধকারের পথে চলতে শুরু করতে হবে? নাকি মৃত্যুকে ডেকে আনা রয়েই যাবে এক গর্হিত পাপ হিসেবে? প্রতি বছর, প্রতি মাস, প্রতি ঘন্টা, প্রতি মিনিট হাজার হাজার মানুষ নিজেদেরকে পাপিষ্ঠের তালিকায় নাম লিখছে নিষিদ্ধ পাপ মৃত্যুকে কাছে টেনে নিয়ে। নিষিদ্ধ হয়েও স্ববিনষ্ঠিকরন কে কেউ থামিয়ে রাখতে পারছে না। তাহলে সমাধান টা কোথায়? আর জীবন ও মৃত্যুর মেলবন্ধন বা প���থকীকরণ এর রেখাটাই বা কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুজে পাওয়া মুশকিল।

কিন্তু যখন মৃত্যু আমাদের দুয়ারে আসে, আমরা কি আদৌ প্রস্তুত থাকি? নাকি আরো দুই মিনিট বেচে থাকার জন্য হৃদয়ে আকুতি জাগে?



এই গল্পটা ফ্রিদা নামের এক অসহায় মেয়ের, যে নিজের রোগ থেকে মুক্তি পেতে চায়, যে পেতে চায় জীবনের স্বাভাবিকতার স্রোতে ভেসে যেতে চায়, জীবনটাকে উপভোগ করতে চায়। কিন্তু এক অজানা রোগের শেকলে বন্দি ফ্রিদার সময় কাটে বাসায় কিংবা হাসাপাতালের দেয়ালের বন্দিদশায়, এক সময় তার মনে হলো, মৃত্যুতেই হয়ত তার মুক্তি মিলবে। হয়ত মৃত্যুই তাকে তার স��ল যন্ত্রনার অবসান ঘটবে। তবে সে আত্মহত্যা নয়, চায় স্বেচ্ছামৃত্যু। কিন্তু সেটা কি আদৌ সম্ভব? তার অভিযানে কি সে একাই একজন, নাকি সে আসলে এমন কোনো সীমাহীন চক্রের অংশ, যেখানে রয়েছে রিশাদ আর রাহমিন? এই গল্পটা আসলে কি স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে কাছে টেনে নেয়ার নাকি কারো কোনো চক্র থেকে মুক্তি পাবার? এই গল্প আসলে কার? ফ্রিদার? রিশাদের? রাহমিনের? বার্ডির? রিঞ্জনের? তৃনার? নাকি পৃথিবীর রহস্যময় প্যারালাল জগতের যেখানে রয়েছে অজানা চক্রের নিবিড় সম্পর্ক? এই গল্প মৃত্যুকে সন্ধানের এক কল্পনার চাদরে মোড়া সায়ানাইড ঘ্রাণের গল্প, যে ঘ্রাণে মৃত্যু অনিবার্য!



কোনো গল্প পড়ে সেই গল্প নিয়ে লেখা আমার নেশা, তবে নেশায় কিছু ক্ষেত্রে ঘাটতির দেখা দেয় যখন চিন্তাধারা একটি সীমার মধ্যে আবদ্ধ হয়ে যায়। তবে সায়ানাইড ফুল বইটি আমাকে আমার চিন্তার সীমানাকে প্রশস্ত করতে বাধ্য করেছে। জীবন মৃত্যু আর বেচে থাকা নিয়ে অন্যরকম ভাবে ভাবতে বাধ্য করেছে। এটি গল্পের মাধ্যমে বেশ কিছু গভীর চিন্তাধারাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে উপস্থাপন করেছে। গল্পের মধ্যকার দর্শনের স্রোতধারা আমার চিন্তাকে আরো অন্যরকম ভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি ফ্রিদার স্থানে নিজেকে বসিয়ে গল্পটিকে দেখছিলাম, ভাবছিলাম স্বেচ্ছামৃত্যুকে খোজাটা কতটা যুক্তিযুক্ত হতে পারে। এছাড়া গল্পের আকস্মিক মোড় ঘুরে যাওয়া, সত্যকে অন্য আরেক চোখ দিয়ে আরেক ভাবে আবিষ্কার করাটা ছিলো আরো চমকপ্রদ, গল্পটা কল্পনার এরকম খাতে বইতে পারে তা ভাবা সম্ভব ছিলো নাহ। তবুও গল্পটায় যত এগিয়েছি ততই টের পেয়েছি যে গল্পটার গভীরতা অনেক বেশি। স্তরে স্তরে বিভাজিত ১৫৮ পেজের একটি গল্প। গল্পটির কাব্যিক লেখনি মুগ্ধ করার মত। এমন এক গল্প এমন এক ঢং এ বলতে পারা কঠিন, যা লেখক করে দেখিয়েছে। দর্শন, ফ্যান্টাসি এবং সাইন্স এর এক অন্যরকম ফিউশন যা হয়ত সচরাচর দেখা যায় না।
Profile Image for Imran Khan.
2 reviews1 follower
February 22, 2025
মাহবুব ময়ূখ রিশাদ- এর "সায়ানাইড ফুল" পড়া হলো। সমসাময়িক লেখকদের বই সম্পর্কে লিখতে গিয়ে আমি কখনো স্পয়লার দিই না, এক্ষেত্রেও চেষ্টা করব না দিতে।
এটি এমন এক উপন্যাস, যাকে যে কেউ যে কোনো ভাবে দেখতে পারে। কারো কাছে সায়েন্স ফিকশন মনে হতে পারে, কেউ আবার একে আধ্যাত্মিক জার্ণি বলেও ধরে নিতে পারে। অগণিত প্রতীকে ভরা এই উপন্যাসে নানান ধরনের চরিত্র এসে মিশেছে, এক জগত দ্রবীভূত হয়েছে ভিন্ন জগতে। কিছু জায়গায় লেখক নিজেই প্যারালাল জগৎ শব্দটা উল্লেখ করেছেন, সুতরাং হিন্টস আছে যে এই উপন্যাস ফ্রিদা'র (প্রোটাগনিস্ট) আত্মিক ভ্রমণের কথা বলে। মৃত্যুর প্রেক্ষিতে জীবনকে দেখা, বেঁচে থাকার কারণ অনুসন্ধান করা, এবং প্রশ্ন তোলা: মৃত্যু না জীবন, কোনটা আসলে বেছে নেয়া উচিত? জীবনের চেয়ে মৃত্যু ভালো? নাকি মৃত্যুর চেয়ে জীবন? বেঁচে থাকলেই বা কি, মরে গেলেই বা কি? জাদুবাস্তবতায় ভরপুর এই আখ্যানে এক চরিত্রকে ঘিরে অসংখ্য চরিত্র আবার সব চরিত্র মিলে এক চরিত্র।
যাদের সাথেই ফ্রিদার দেখা হয়, সে মানুষ হোক বা বন্য পশুপাখি, তারা সবাই ফ্রিদারই নানান অল্টার ইগো বলে ধরে নেয়ার সুযোগ আছে। জীবন অনির্দেশ্য, এক জীবনেই আছে বহু জীবন আর এই এক জন্মেই হয় বহুজন্ম। পুনর্জন্ম পরকালীন কিছু না, যা হয় এখানেই। মৃত্যুর জানালা দিয়ে জীবনকে না দেখলে যেমন জীবনকে জানা হয় না, সত্যিকার অর্থে সব সীমাবদ্ধতার উর্ধ্বে উঠে জীবনকে দেখতে না শিখলে সফল মৃত্যুও মেলে না। ফ্রিদা কখনো ঘুরে আসে মাতৃগর্ভে, অনুভব করে এক ধরনের নিরাপত্তা; কখনো মুখোমুখি হয় মৃত্যু নামক জীবনের একমাত্র অনিবার্য গন্তব্যের, যেখানে সূচালো কাঁচের বৃষ্টি হয় যখন তখন। তার জীবনে গতানুগতিক প্রেম আসে, আসে স্বর্গীয় প্রেমও। কোনো প্রেমই তাকে স্বস্তি ও নিরাপত্তার অনুভব দেয় না একমাত্র একটি ছাড়া আর সেই একটি প্রেম বলে দেয় এই ভালোবাসা অন্তর্নিহিতভাবে নিজের প্রতি। নার্সিসিজম নয়, নিজেকে চিনে, নিজেকে ক্ষমা করে নিজেকে ভালোবাসতে পারার মধ্যেই আছে মৃত্যুর সার্থকতা।
লেখক নিজেও এক ধরনের চরিত্র হয়ে উপস্থিত হয়েছেন। রিশাদ নামক একজন চিকিৎসক, যিনি ফ্রিদার দাদা রহমিনের পরিচিত সেই অনন্তকাল ধরে। এরা দুজনেই দৈবিক কোনো অস্তিত্ব, যারা মানুষকে, বিশেষ করে ফ্রিদাকে পুনর্জন্ম বা জীবনের জৈবিক চক্র থেকে মুক্ত করতে চান। মানুষের মুক্তি না হলে হয়ত দেবদূতেরও মুক্তি হয় না।
ফ্রিদার আত্মঅন্বেষণ অভিযাত্রা আমাকে বাউল দর্শনের চুরাশি লক্ষ যোনির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।
মাহবুব ময়ূখ রিশাদ- এর লেখা বেশ টানটান, সহজ, অলংকারহীন এবং সুখপাঠ্য। তবু কোথাও কোথাও মনে হয়েছে ন্যারেটিভটা সামান্য ঝুলে গেছে। সেই সাথে, কিছু কিছু জায়গায় অন্তত কিছু অলংকার দরকার ছিল বলে মনে হয়েছে।
যারাই বাংলাদেশের নানান কোণে এবং মানুষের আত্মিক জগতের গভীরে ঢুঁ মারতে চান, মাহবুব ময়ূখ রিশাদ-এর বই পড়লে তারা হতাশ হবেন না।
Profile Image for Jubair Sayeed Linas.
81 reviews9 followers
March 7, 2025
পুরো উপন্যাসটি পড়ার পরে আমার কাছে মনে হয়েছে একটা সুন্দর সুতোয় বাধা যায়নি।

প্রথমদিকে পড়ে নরওয়েজিয়ান উডের মত মনে হচ্ছিল। পরবর্তীতে প্লটের দিক অন্যদিকে ধাবিত হয়। তবে সেটাও খুব একটা গোছানো মনে হয়নি।
Displaying 1 - 9 of 9 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.