আমার চারপাশে ঘন অন্ধকার। নিকষ কালো অন্ধকার। আমি দাঁড়িয়ে আছি। দাঁড়িয়ে আছি একটি আলোকিত বৃত্তের মাঝখানে। পরিক্রমা করে চলেছি একটি উজ্জ্বলতম পটভূমি। আমি জানি, স্থির জানি, এই আলো, উজ্জ্বলতা কিছুই দীর্ঘস্থায়ী নয়। সেই আলো যেকোনও মুহূর্তে নিভে যেতে পারে। আমাকে নিক্ষেপ করতে পারে আরো গভীরে। গভীরতম অন্ধকারে। অথচ আমার চারপাশের এই ঘন অন্ধকারের ওপারেই আছে বিরাট এক আলোর জগৎ। সে আলো মেকী নয়। কৃত্রিম নয়। সেই আলোর জগত থেকেই তো আমার আসা। এসেছিলাম অনেক অন্ধকার পেরিয়ে। কী ভয়ংকর সেই অন্ধকারের মূর্তি!
মনে পড়ছে। আস্তে আস্তে সব মনে পড়ছে। মনে পড়তেই হবে। অতীতকে ভুলে গেলে চলবে না। ... মনে পড়ছে আমার সব।
Uttam Kumar (3 September 1926 – 24 July 1980) (born as Arun Kumar Chatterjee) was an Indian film actor, director, producer, singer and music composer, playback singer who predominantly worked in Indian Cinema. He is widely regarded as the greatest actor of Bengali cinema, and also among the greatest actors ever in India. Through his career he earned commercial as well as critical success, and he remains as an Indian cultural icon.
ঠিকমতো জমলো না। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম ক্যারিশম্যাটিক অভিনেতার আত্মজীবনীতে তার সময়, তার আশেপাশের সমাজ, সেই সময়ের মানুষ, দর্শক অভিব্যক্তি, জীবন দর্শন, ব্যক্তিগত জীবন কিছুই ভালোভাবে পেলাম না। কিরকম যেন পত্রিকার লেখার মত কে কবে মরলো, কবে কোনো মুভি মুক্তি পেল, মাঝেমধ্যে হতাশা, বেনুর প্রশংসা, জনহিতকর কর্মসূচি, পেপার কাটিং, লোডশেডিং, গাদা গাদা অচেনা মানুষের নাম সব মিলিয়ে জগাখিচুড়ি হয়ে গেল। অনুলেখক গৌরাঙ্গপ্রসাদ আবার চান্সে নিজের কলমে উত্তমের মুখ দিয়ে নিজের প্রশংসা করানোর মত হাস্যকর কান্ড করেছেন।
পুরোপুরি সন্তুষ্ট হওয়া গেলোনা। জীবনকাহিনী হলেও মহানায়কের জীবনের অনেক কিছুই আসলে লেখা হয়নি। বিশেষ করে উত্তমকুমারের ব্যক্তিজীবন। নায়ক ছিলেন লেখক নন, তাই প্রত্যাশা তেমন ছিলোনা তবুও উনার জীবনের অনেক বিষয় নিয়েই আগ্রহ ছিলো। অবশ্য সে বিষয়ে বইটিতে মহানায়ক নিজেই সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন যে সময়ের বিচারে জীবনের সব ঘটনা তিনি জানিয়ে দিতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না তাই বইতে সেসব নেই। সব গল্প বা ঘটনা সবাই মেনে নিতে পারবেনা এবং তারকা জীবনে বিরূপ প্রভাব পড়বতে পারে সেটাও কারণ ছিল। ফলাফল অসম্পূর্ণ জীবনকাহিনীর অবতারণা। ২য় সংস্করণে সুপ্রিয়া দেবীকে নিয়ে দুয়েক পাতা লিখলেও তা আসলে পরিপূর্ণ ছিলোনা। সারাজীবন শুনে এসেছি সূচিত্রা সেন আর উত্তমকুমারের রসায়ন আর নানা ঘটনা। তার কিছুই পাওয়া যায়না। অথচ অযথা হাজারো লোকজনের নাম আছে, কাহিনী আছে। বইয়ের নাম উত্তমের সিনেমাজীবন হলে মানাতো।
উত্তমকুমার যখন সিগারেট ধরান (সিনেমায়) আমার কাছে তখন মনে হয়, এই সিগারেট ধরানোটাই বোধহয় জগতের সব থেকে সুন্দর কাজ! মহানায়কের প্রতি আমার মুগ্ধতার মাত্রা এমনই। তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়ে প্রায় কিছুই জানতাম না আমি। তাঁকে নিয়ে সেই অজানা কৌতূহলই আমাকে বইটির শুরু থেকে শেষ অব্দি টেনে নিয়ে গিয়েছে। নইলে বইটি আসলে এত সুখপাঠ্য নয়।
আত্মজীবনীর কোথাও খোলামেলা হওয়ার চেষ্টা করেননি, সেটা অবশ্য তিনি নিজমুখে স্বীকারও করে নিয়েছেন। শৈশবে হারানো বোন পুতুলদিদির জন্য তাঁর আজীবনের হাপিত্যেশ, প্রথম প্রেম এবং বিয়ে, সুপ্রিয়া দেবীর প্রতি আজীবনের কৃতজ্ঞতা, পুত্র গৌতমের প্রতি তাঁর অদম্য স্নেহবাৎসল্য, খ্যাতির চূড়ায় দাঁড়িয়েও কিসের যেন অনিশ্চয়তা ইত্যাদি নিয়ে ব্যক্তি উত্তম খুব ভালোভাবেই বইটিতে উপস্থাপিত। তাই উত্তম-অনুরাগীদের জন্য বইটি নিঃসন্দেহে লুফে নেয়ার মত।
যতটা আগ্রহ নিয়ে পড়া শুরু করেছিলাম, ততটা সুখপাঠ্য নয়। পুরো বইয়ে সুচিত্রা সেনের এত স্বল্প মাত্রার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এত এত হিট ছবি যাঁর সাথে, তাঁর সম্পর্কে নাম ছাড়া প্রায় কিছুই নেই। বিভিন্ন মানুষের গুণগান করতে করতেই বইটি শেষ হয়ে গেল। তবে ব্যক্তি উত্তমকে খানিকটা হলেও চেনা যায়।
কত আগে পড়সি,এই বই। কিছু লিখব ভেবে,এতদিন এড করিনি। লেখার কিছু ই পাচ্ছি না। শুধু এটুকু বুঝলাম,মানুষ সে যত যা–ই হোক আকাশ, বাতাস,সে ভুলের উর্দ্ধে নয়।
আমি এতদিন নায়ক "উত্তম কুমার" কে ভালোবাসতাম। প্রচন্ড ভালো লাগে এই লোককে। এখনও নায়ক উত্তম কে ই ভালোবাসব,মানুষ উত্তম কে নয়।
আমার কাছে উত্তম "মহানায়ক" ছিলেন, আছে,থাকবেন। অভিনেতার জায়গায় উত্তম বাবু আমার কাছে সবার আগে। কোন দিন যদি অখন্ড অবসর পাই,এই বইয়ের কাছে আবারও ফিরব শুধু মহানায়ক উত্তম কে বোঝার লোভে...
"I will go to the top of the top!" সত্যজিৎ রায়ের 'নায়ক'-ছবির কালজয়ী এই সংলাপ কে না জানে? সেই সংলাপের সাথে যে চেহারাটি ভেসে ওঠে সেটি কার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলা চলচ্চিত্রের 'মহানয়ায়ক', উত্তম কুমার...
সাবলীল অভিনয় দিয়ে সবার হৃদয় জয় করে নেয়া এই অভিনেতা সম্পর্কে একটু গভীরভাবে জানার আগ্রহ থেকেই বইটা পড়া। "আমার আমি" নামটা সে আশা পূরণের ইঙ্গিত-ই দেয়। হাস্যোজ্জ্বল রঙিন প্রচ্ছদ আমার ভালোই লেগেছে। এত বড় অভিনেতা, সময়ের অভাবেই হয়তো জবানীতে লিখেছেন। অনুলেখক হিসেবে ছিলেন তার স্নেহভাজন সাংবাদিক গৌরাঙ্গপ্রসাদ ঘোষ। ১৯৭১ এর দিকে "প্রসাদ" পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।
বইয়ের শুরুটা হয়েছে ছেলেবেলা দিয়ে। মায়ের মুখে শোনা কথা দিয়েই চলল বেশীরভাগ। কেন জানি না, তার শৈশবটা আমার বেশ লেগেছে। বাবা ছিলেন মেট্রো সিনেমার সাধারণ এক অপারেটর, সে পরিবেশে অজান্তেই অভিনয়ের বীজ হয়ে জন্মেছিল। স্কুল ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে যাত্রার রিহার্সেল দেখা, ধরা পড়ার ভয় নিয়ে থিয়েটার রুম.. সে-ই তো স্বর্ণালী সময়। বই এর এই অংশ টা ছিল স্বপ্নময়, বাতাসে নতুন কুড়ির নৃত্যের মতো সুন্দর৷ তারপর এলাকার নানান মঞ্চে 'গয়াসুর', 'ব্রজের কানাই' সহ নাটকে সুযোগ পেয়ে যান। তার অন্য প্রতিভাও ছিল কিন্তু। তখন এমন একটা কথা প্রচলিত ছিল যে, গান জানলে সহজে সিনেমায় সুযোগ পাওয়া যায়। কাজেই, দেরী না করে গানের তালিম নিলেন (তিনি অনেকগুলো মুভিতেও গান গেয়েছেন, সুর করেছেন, শ্যামল মিত্র-মান্না দে- হেমন্ত দের মতো শিল্পীদের সাথে এক মঞ্চে গান-ও গেয়েছেন)। সে সাথে সাঁতার, ক্রিকেট, ফুটবল, টেনিস এগুলোতেও সক্রিয় ছিলেন। তারপরের সময়টা সংগ্রামের। সিনেমায় সুযোগের চেষ্টার সময়টা.. কখনো স্টুডিওর গেট-ও পার হতে পারেন নি, কখনো বা খুব ছোট কোন রোল পেয়েছেন- তবে হাল ছাড়েননি। অর্থাভাবে বাধ্য হয়ে পাসপোর্ট অফিসে চাকুরী নেন, একটা সময়ে গান-ও শিখিয়েছেন। কিন্তু, অভিনয় ছাড়েন নি। ভাবতেন নিরাশ হওয়াটা অন্যায়। একটা সময় সুযোগ পেলেও বাজার পাননি৷ নায়ক হিসেবে করা শুরুর সব ছবি (দৃষ্টিদান, কামনা, মর্যাদা, সহযাত্রী..) ফ্লপ করছিল। পারিশ্রমিকের বদলে তখন সিনেমায় সুযোগ পাওয়াটাকে বড় করে দেখেছেন। উপায় না দেখে নাম পরিবর্তন করে অরূপকুমার করে দেয়া হল, কিন্তু লাভ কই? এই অংশে বুঝা যায় একজন সম্ভাবনা তরুণের মানসিক দোলাচল.. তবুও কাজ চালিয়ে গেছেন। তার কথায়ঃ "কাজকে আমি ভয় পাই নি, বরং কাজের মধ্যেই আনন্দ পাই। রিহার্সাল চলাকালীন সময়ে একদিনের জন্য-ও গাফিলতি দেখাইনি। যথাসময়ে হাজিরা দিতাম রিহার্সেলে৷ প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে আমি চরিত্র বুঝে নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করি নি। পরিচালকের নির্দেশ যেখানে মনে ধরে নি, সেখানে সেই মুহূর্তে চুপিচুপি দেবুদার কাছে সাজেশন পেশ করেছি। নিজেকে ঝালাই করে নিয়েছি। এতটুকু ক্লান্তি বোধ করিনি।" অবশেষে স্রষ্টা সহায় হলেন। তারপর আর বলতে? '৫৩-'৫৪ থেকে তো প্রতিবছরে টানা ১০-১২ টি করে চলচ্চিত্র করেছেন। বেশীরভাগ-ই হিট, সুপারহিট তকমা পেল। পাগলের মতো কাজ করেছেন। "আমি যেন দম দেওয়া একটা ঘড়ির কাটা। নিয়মের ব্যতিক্রম নেই। শুধু চলেছি"। এসব তো আপনাদের জানা।
বই থেকে পাওনা বলতে, অভিনয়ের সময় তার প্রস্তুতি বা চিন্তার দিক টা.. একদম বুঁদ হয়ে যেতেন৷ তিনি লিখেছেনঃ "নির্মলবাবু আমাকে সুখেন চরিত্র বুঝিয়ে দিলেন। সেদিন থেকে নিজেকে সুখেনের আসনে বসিয়ে আমি চলতে শুরু করলাম। হয়তো কেউ বিশ্বাস করবে না, অনেকদিন পর্যন্ত আমি নিজেকে সুখেন ছাড়া আর কিছুই ভাবিনি"। আরেক জায়গায় বলেছেন, "ধরা-বাঁধা ছকে অভিনয় করার ইচ্ছে আমার কোনোদিন ই ছিল না। আমি তাই নিজস্ব ধারায় সহজে অভিনয় করতাম- আমরা যেমন করে কথা বলি, রাগ করি তেমনি সহজ অভিনয়। মনে করতাম অভিনয় নয়, ভাবেই চরিত্র রূপায়ণ"৷ যারা ইনার অভিনয় দেখেছেন আশা করি মেলাতে পারবেন।
এর বাইরে স্ত্রী-সন্তান সহ পারিবারিক জীবন নিয়ে কিছুটা লিখেছেন। অনুলেখকের চাপে(!) পড়ে লিখেছেন বিয়ের বাইরে অভিনেত্রী সুপ্রিয়া চৌধুরীর সাথে প্রায় ১৭ বছরের একত্র বাস সম্পর্কে-ও [এ ব্যাপারে ভালো-মন্দ বিচার বইটা পড়ার পরে করার অনুরোধ রইল]। ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে করা অনেকগুলো ছবি বইকে সমৃদ্ধ করেছে। আর অনেকটা অংশজুড়ে ছিল তার বিভিন্ন চলচ্ছিত্রের ছোট ছোট ঘটনা।
আত্মজীবনী থেকে ঠিক কী প্রত্যাশা করা উচিত আমি নিশ্চিত নই (যারা জানেন, একটু জানাবেন)। গোটা জীবনকে এই এতটুকুন পাতায় আটকে ফেলা! চাট্টিখানি কথা তো নয়... প্রত্যাশার চেয়ে আগ্রহটাই তাই বেশী ছিল। অনেকিছু জানলে-ও কয়েকটা কারণে লেখকের উপর অভিমান-ও হয়েছে। প্রথমেই আসবে 'উত্তম-সুচিত্রা' প্রসঙ্গ। এই জুটির কথা কে না জানে.. শান্ত অথচ উন্মনা প্রণয়াতুর এই জুটির চেয়ে রোমান্টিক কিছু বাংলায় কী এসেছে? দুজনে ২২ বছরে ৩১ টা মুভি একসাথে করেছেন, অথচ সুচিত্রা বিষয়ে গোটা বইতে ৩ টা লাইন-ও নেই। তারপর আসবে, গভীরতার কথা। বার বার মনে হয়েছে, লেখক অনেক কিছু ইচ্ছে করে এড়িয়ে যাচ্ছেন, লিখলে-ও খুব অল্প। অবশ্য এ ব্যপারে তিনি নিজে স্বীকারও করেছেন, "জীবনের সব কথা, চরম সত্য কথা বলার সাহস আমাদের নেই।" ভূমিকাসূচক চিঠিতে বলেছেন, "অনেক কথাই বলতে পারলাম না। অবশ্য ঠিক এই সময়ে সবকিছু বলা আমার পক্ষে সম্ভব-ও নয়।" আত্নজীবনীটা যে বেরিয়েছে, সেজন্য অনুলেখকের অবদান আর আগ্রহকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। বইটা যেহেতু একজন অভিনেতার লেখা, কাজেই সাহিত্যিক গুণাগুণ না খুঁজে তার জীবনটাকে খুঁজলে আপনাদের ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস। পড়ার আমন্ত্রণ রইলো...
"I will go to the top of the top!" সত্যজিৎ রায়ের 'নায়ক'-ছবির কালজয়ী এই সংলাপ কে না জানে? সেই সংলাপের সাথে যে চেহারাটি ভেসে ওঠে সেটি কার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলা চলচ্চিত্রের 'মহানয়ায়ক', উত্তম কুমার...
সাবলীল অভিনয় দিয়ে সবার হৃদয় জয় করে নেয়া এই অভিনেতা সম্পর্কে একটু গভীরভাবে জানার আগ্রহ থেকেই বইটা পড়া। "আমার আমি" নামটা সে আশা পূরণের ইঙ্গিত-ই দেয়। হাস্যোজ্জ্বল রঙিন প্রচ্ছদ আমার ভালোই লেগেছে। এত বড় অভিনেতা, সময়ের অভাবেই হয়তো জবানীতে লিখেছেন। অনুলেখক হিসেবে ছিলেন তার স্নেহভাজন সাংবাদিক গৌরাঙ্গপ্রসাদ ঘোষ। ১৯৭১ এর দিকে "প্রসাদ" পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।
বইয়ের শুরুটা হয়েছে ছেলেবেলা দিয়ে। মায়ের মুখে শোনা কথা দিয়েই চলল বেশীরভাগ। কেন জানি না, তার শৈশবটা আমার বেশ লেগেছে। বাবা ছিলেন মেট্রো সিনেমার সাধারণ এক অপারেটর, সে পরিবেশে অজান্তেই অভিনয়ের বীজ হয়ে জন্মেছিল। স্কুল ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে যাত্রার রিহার্সেল দেখা, ধরা পড়ার ভয় নিয়ে থিয়েটার রুম.. সে-ই তো স্বর্ণালী সময়। বই এর এই অংশ টা ছিল স্বপ্নময়, বাতাসে নতুন কুড়ির নৃত্যের মতো সুন্দর৷ তারপর এলাকার নানান মঞ্চে 'গয়াসুর', 'ব্রজের কানাই' সহ নাটকে সুযোগ পেয়ে যান। তার অন্য প্রতিভাও ছিল কিন্তু। তখন এমন একটা কথা প্রচলিত ছিল যে, গান জানলে সহজে সিনেমায় সুযোগ পাওয়া যায়। কাজেই, দেরী না করে গানের তালিম নিলেন (তিনি অনেকগুলো মুভিতেও গান গেয়েছেন, সুর করেছেন, শ্যামল মিত্র-মান্না দে- হেমন্ত দের মতো শিল্পীদের সাথে এক মঞ্চে গান-ও গেয়েছেন)। সে সাথে সাঁতার, ক্রিকেট, ফুটবল, টেনিস এগুলোতেও সক্রিয় ছিলেন। তারপরের সময়টা সংগ্রামের। সিনেমায় সুযোগের চেষ্টার সময়টা.. কখনো স্টুডিওর গেট-ও পার হতে পারেন নি, কখনো বা খুব ছোট কোন রোল পেয়েছেন- তবে হাল ছাড়েননি । একটা সময় সুযোগ পেলেও বাজার পাননি৷ নায়ক হিসেবে করা শুরুর সব ছবি (দৃষ্টিদান, কামনা, মর্যাদা, সহযাত্রী..) ফ্লপ করছিল। উপায় না দেখে নাম পরিবর্তন করে অরূপকুমার করে দেয়া হল, কিন্তু লাভ কই? এই অংশে বুঝা যায় একজন সম্ভাবনা তরুণের মানসিক দোলাচল.. অবশেষে স্রষ্টা সহায় হলেন। তারপর আর বলতে? '৫৩-'৫৪ থেকে তো প্রতিবছরে টানা ১০-১২ টি করে চলচ্চিত্র করেছেন। বেশীরভাগ-ই হিট, সুপারহিট তকমা পেল। চারিদিক জয় করলেন.. এসব আপনাদের জানা।
বই থেকে পাওনা বলতে, অভিনয়ের সময় তার প্রস্তুতি বা চিন্তার দিক টা.. একদম বুঁদ হয়ে যেতেন৷ তিনি লিখেছেনঃ "নির্মলবাবু আমাকে সুখেন চরিত্র বুঝিয়ে দিলেন। সেদিন থেকে নিজেকে সুখেনের আসনে বসিয়ে আমি চলতে শুরু করলাম। হয়তো কেউ বিশ্বাস করবে না, অনেকদিন পর্যন্ত আমি নিজেকে সুখেন ছাড়া আর কিছুই ভাবিনি"। আরেক জায়গায় বলেছেন, "ধরা-বাঁধা ছকে অভিনয় করার ইচ্ছে আমার কোনোদিন ই ছিল না। আমি তাই নিজস্ব ধারায় সহজে অভিনয় করতাম- আমরা যেমন করে কথা বলি, রাগ করি তেমনি সহজ অভিনয়। মনে করতাম অভিনয় নয়, ভাবেই চরিত্র রূপায়ণ"৷ যারা ইনার অভিনয় দেখেছেন আশা করি মেলাতে পারবেন।
এর বাইরে স্ত্রী-সন্তান সহ পারিবারিক জীবন নিয়ে কিছুটা লিখেছেন। অনুলেখকের চাপে(!) পড়ে লিখেছেন বিয়ের বাইরে অভিনেত্রী সুপ্রিয়া চৌধুরীর সাথে প্রায় ১৭ বছরের একত্র বাস সম্পর্কে-ও [এ ব্যাপারে ভালো-মন্দ বিচার বইটা পড়ার পরে করার অনুরোধ রইল]। ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে করা অনেকগুলো ছবি বইকে সমৃদ্ধ করেছে। আর অনেকটা অংশজুড়ে ছিল তার বিভিন্ন চলচ্ছিত্রের ছোট ছোট ঘটনা।
আত্মজীবনী থেকে ঠিক কী প্রত্যাশা করা উচিত আমি নিশ্চিত নই (যারা জানেন, একটু জানাবেন)। গোটা জীবনকে এই এতটুকুন পাতায় আটকে ফেলা! চাট্টিখানি কথা তো নয়... প্রত্যাশার চেয়ে আগ্রহটাই তাই বেশী ছিল। অনেকিছু জানলে-ও কয়েকটা কারণে লেখকের উপর অভিমান-ও হয়েছে। প্রথমেই আসবে 'উত্তম-সুচিত্রা' প্রসঙ্গ। এই জুটির কথা কে না জানে.. শান্ত অথচ উন্মনা প্রণয়াতুর এই জুটির চেয়ে রোমান্টিক কিছু বাংলায় কী এসেছে? দুজনে ২২ বছরে ৩১ টা মুভি একসাথে করেছেন, অথচ সুচিত্রা বিষয়ে গোটা বইতে ৩ টা লাইন-ও নেই। তারপর আসবে, গভীরতার কথা। বার বার মনে হয়েছে, লেখক অনেক কিছু ইচ্ছে করে এড়িয়ে যাচ্ছেন, লিখলে-ও খুব অল্প। অবশ্য এ ব্যপারে তিনি নিজে স্বীকারও করেছেন, "জীবনের সব কথা, চরম সত্য কথা বলার সাহস আমাদের নেই।" ভূমিকাসূচক চিঠিতে বলেছেন, "অনেক কথাই বলতে পারলাম না। অবশ্য ঠিক এই সময়ে সবকিছু বলা আমার পক্ষে সম্ভব-ও নয়।" আত্নজীবনীটা যে বেরিয়েছে, সেজন্য অনুলেখকের অবদান আর আগ্রহকে শ্রদ্ধা জানাতে হয়। বইটা যেহেতু একজন অভিনেতার লেখা, কাজেই সাহিত্যিক গুণাগুণ না খুঁজে তার জীবনটাকে খুঁজলে আপনাদের ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস। পড়ার আমন্ত্রণ রইলো...
This book is mainly reflects the struggle & up-down of the writter himself who is widely regarded as the biggest superstar of bengali cinema... Positive:-The book is really interesting as well as encouraging in its 1st half..When the writer describes his childhood & early struggling days.it's reflects the passion about his work & tells us about to follow towards the dream whatever the circumstance would be.The way he prepared himself for his roles is also a bright & notable point of this biography. Negative:-Well,The pattern of writting is not that much convincing in several points.sometimes u can feel boring because of too much description about title of movies...maybe the writter wants to keep himself above controversy that's why he avoids to express himself openly...& hardly describes his own views about certain things or people surrounding him.. Despite that,i want to suggest this book specillay to the bengali readers because the new generation should know more about Uttam kumar & that era..i think this book is more often a story of an attractive career rather than an individual belief lead by the author himself.
খুব ছোটবেলায় টিভিতে একজন নায়ক কে দেখে ক্রাশ খেয়েছিলাম। সেই আমার প্রথম ক্রাশ। মা কে লজ্জা লজ্জা গলায় জিজ্ঞাসা করেছিলাম ইনি কে এবং কোথায় থাকেন। খুবই দুঃখ পেয়েছিলাম জেনে যে ইনি আমার জন্মের অনেক আগেই মারা গেছেন। ইনিই ছিলেন উত্তমকুমার। বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এত প্রতিভাবান অভিনেতা আর আসেনি ,আর আসবে কি না জানি না। He was a institute himself. উত্তমের প্রতি ভালবাসায় তার প্রায় সব সিনেমাই দেখেছি। তার ব্যক্তিগত জীবনে অনেক বড় বড় প্রশ্নচিহ্ন ছিল। তিনি নিজেই বলেছেন ভাল মন্দ নিয়েই মানুষ। এই অসাধারণ প্রতিভাবান মানুষের সব ভুল তাই ক্ষমা করে দিলাম