সব কিছু কেমন যেন পাল্টে যায় অর্ণকের, হঠাৎই। অবশ্য এই পাল্টে যাওয়াটা এমনি এমনি হয় না, একটা কারণও আছে এর, খুবই সাধারণ কারণ। কিন্তু তার কাছে সেটাই অসাধারণ।
প্রতিবেশী যে ভদ্রলোককে অর্ণক ভাই বলে ডাকত, তাকে সে এখন আঙ্কেল বলে ডাকে; ভার্সিটি থেকে ফির যে বিল্ডিংয়ের সামনে সে এক মুহূর্তের জন্য দাঁড়াত না, সেখানে সে এখন পায়চারি করে; আগে যে চুলগুলো উষ্কোবুষ্কো করে রাখত, সেটা এখন ভদ্রগোছের করে কাটে। আরো কত কি!
কিছুদিন পর অর্ণক খেয়াল করে - না, সে কেবল নিজেই পাল্টে যায়নি, বড় ভাইয়ের মতো তার রুমমেট কিছলু ভাইও পাল্টে গেছেন, পাল্টে গেছে বাড়িওয়ালার মেয়ে শিমুও। এবং সত্যি কথাটা হচ্ছে - এই পাল্টে যাওয়া, এই বদলে যাওয়া, সব কিছুই কেমন যেন মজার।
হ্যাঁ , মজার, আনন্দের এবং উচ্ছলতার।
অর্ণকের সেই অসাধারণ কারণকে নিয়েই এতসব মজার কান্ড? না, আরো অন্য কোনো কারণ আছে? যাই হোক, অদ্ভুত সব মজার কাণ্ড নিয়েই মিস্টার ৪২০।
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো - যার জন্য অর্ণকের এই পাল্টে যাওয়া সেই তাকে নাম দিয়েছে - ৪২০, মিস্টার ৪২০!
Sumanto Aslam ( Bengali: সুমন্ত আসলাম) is a Bangladeshi journalist and novelist. He was the sectional editor of Alpin, the weekly satirical supplement of Prothom Alo and wrote his editorial under the banner "Boundule". Now he is the sectional editor of Pachal.
লেখক সুমন্ত আসলামকে তখন থেকে চিনি, যখন তিনি প্রথম আলো পত্রিকার রম্য-বিদ্রুপাত্মক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন 'আলপিন' সম্পাদনা করতেন৷ সেসময় ম্যাগাজিনের পুরো একটি পৃষ্ঠা তার দখলে থাকতো, যেখানে তিনি সমকালীন বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে নিয়মিত গল্প লিখতেন। গল্পগুলোকে নির্দিষ্ট জনরায় না ফেলা গেলেও, পড়ার সময় উপলদ্ধি করা যেতো- তিনি রম্য ও স্যাটায়ার দুর্দান্ত লেখেন৷ ও হ্যাঁ, যে পাতায় নিয়মিত লিখতেন, তার একটা নির্দিষ্ট নামও ছিল- বাউণ্ডুলে। আশা করি অনেকেই হয়তো এবার চিনতে পেরেছেন৷ কেননা বাউণ্ডুলে সিরিজের জন্যই পাঠকমহলে তিনি অধিক সমাদৃত ও জনপ্রিয়।
সুমন্ত আসলাম যখন বইয়ের বেলায় রম্য বেছে নিলেন, তখনও তিনি সাফল্য অর্জন করেছিলেন৷ টানা কয়েক বছর তার বেশ কয়েকটি রম্য উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। তন্মধ্যে একটি হলো- মিস্টার ৪২০।
কেমন ছিল বইটি? এ ব্যাপারে সরাসরি জবাব দেওয়া কঠিন, কারণ আমার মিশ্র অনুভূতি রয়েছে৷ বাউণ্ডুলে সিরিজের ছোটগল্পে তিনি অনবদ্য, দারুণ লেখেন৷ কিন্তু রম্য উপন্যাসে তার থেকে এক্সপেকটেশন আরও বেশি ছিল৷ যা পূরণ হয়নি৷ যদিও বইটি আমি কয়েকবার পড়েছি শুধুমাত্র লেখকের লেখনশৈলী আর সাবলীল গল্প বলার ঢঙের কারণে৷ কিন্তু কনটেন্ট বিচারে ভীষণ দুর্বল গল্প। মেসে থাকা কয়েকজন ব্যাচেলরের জীবনকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। এখনকার সময়ে মেস লাইফ নিয়ে যে ধরনের নাটক দেখেন, এই উপন্যাস তারই মার্জিত ভার্সন৷
বইয়ের ভূমিকায় লেখা আছে, "মজার একটা উপন্যাস লিখব বলে অনেক দিন ধরে ভাবছিলাম, স্রেফ মজার। কোনো উপদেশ থাকবে না তাতে, থাকবে না কোনো কঠিন কঠিন কথা, এমন কি কোনো নীতি বাক্য। কিন্তু গল্প থাকবে সেখানে আনন্দ, উচ্ছলতা আর দুরন্তপনার গল্প। সেটা হবে একটা নির্ভেজাল মজার উপন্যাস।"
কিন্তু লেখক নিজের কথায় অটল থাকেননি। উপন্যাস মোটামুটি মজার হলেও তাতে উপদেশ ছিল, নীতিবাক্যও ছিল। থাকা নিয়ে অসুবিধা নেই, কিন্তু সেগুলো যেন চাপিয়ে দেওয়া। সংলাপ নির্ভর এই উপন্যাসটিতে ঘটনাই শেষ কথা, দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখবে, এমন কোনো দৃশ্য বা বর্ণনা নেই। সমাপ্তিটাও যেন তাড়াহুড়ো করে লেখা। আরেকটু গুছিয়ে লিখলে এই উপন্যাসও তার বাউণ্ডুলে সিরিজের মতো অনবদ্য হতে পারতো৷
বইটা কি পড়ার মতো? হ্যাঁ, পড়তে পারেন। জাগতিক ব্যস্ততা আর কঠিন সময়টাতে নির্মল আনন্দ পেতে; কিংবা সহজ সাবলীল কিছু পড়তে চাইলে আপনার জন্যই- মিস্টার ৪২০। হ্যাপি রিডিং।
পিসিতে পিডিএফ ফাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে সুমন্ত আসলামের দুটো বই খুঁজে পাই।রোল নাম্বার শূন্য আর মিস্টার ৪২০। রোল নাম্বার শূণ্য আগেই পড়েছিলাম। সেটা কিশোর উপন্যাস হলেও ভালো লেগেছিলো, আর সেটার হাত ধরেই এই বইটা ওপেন করি। আমার পড়ার আগ্রহ জন্মায় বইয়ে লেখকের বলা এই কথায়ঃ “মজার একট উপন্যাস লিখব বলে ভাবছিলাম, স্রেফ মজার।কোন উপদেশ থাকবে না তাতে, থাকবে না কোন কঠিন কথা, এমন কি কোনো নীতি বাক্য। কিন্তু গল্প থাকবে সেখানে- আনন্দ, উচ্ছলতা আর দূরন্তপনার গল্প। সেটা হবে একটা নির্ভেজাল মজার উপন্যাস”।
এই বইটা শুরু করার আগে আমার হাতে ছিল, আমার এক বন্ধু থেকে ধার আনা “ড্যান ব্রাউন” এর “দি লস্ট সিম্বল”। এই বইটা পড়ার ফাঁকেই এটা আমি শেষ করে ফেলি, এই উপন্যাসের মজার দিক গুলো আমাকে টানছিলো বলে। বইয়ের পৃষ্ঠা ১০৯। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় এত হাসিয়েছে যে, মাথা ফ্রেশ হইয়া গেছে। এই বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ আসলে দিতেও চাই না; কারণ, এরকম বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ বললে হয়ত পাঠক পরে মজা না পেয়ে বলবেন, রিভিউদাতা তো বললেন বইটা ভালো লাগবে, এখন দেখি...। আসলে, বইটা চারজন ব্যাচেলর, তথা রুমমেট দের নিয়ে কাহিনী।
এবার বলি, এই বইয়ের যে যে দিক আমার কাছে ভালো লাগে নাই- 1. অর্ণকের কথা রিন্টুর সম্পর্ক বলা যায়- হিমু আর বাদলের চরিত্রের অনুরূপ। হিমুতে এরকম সম্পর্ক দেখায়; এখানে ভালো লাগে নি। তবে তাদের অংশ বেশি নয়। 2. শেষের দিকে কাহিনী একটু দ্রুত এগোয়। আর লেখক গল্পটা একেবারেই পরিণতি দেননি। একটু রেশ রেখে দিয়েছেন, অতৃপ্তি লাগছে। মনে হচ্ছে আরও ২০/৩০ পৃষ্ঠা বাড়িয়ে অর্ণকের সমস্যার সমাধান করা যেত যদি লেখক ভেবেই থাকেন যে উনি অর্ণক কে নিয়ে আর সিকুয়েল লেখবেন না, আসলে আমার মত পাঠকেরা কাহিনী এর একটা পরিণতি চায়; এটাই সমস্যা। অবশ্য শেষের অর্ণকের অস্থিরতা আমিও অনুভব করতে পারছি; কারণ, উনি সেভাবেই তুলে ধরেছেন।
সর্বোপরি, গল্পটা আসলে মজার, তাই আপনার সময় ভালোই কাটবে এটার সাথে কাটালে। হ্যাপি রিডিং :)
কিছু কিছু বই পড়লে বই এর চরিত্র গুলোর সাথে এক রকম বন্ধন তৈরি হয়। বইটা পড়েও এমন লেগেছে। নিজের জীবনের সাথে, আশে পাশের ঘটনার সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায় সহজেই উপন্যাস এর নানা ঘটনায়।
লেখক যেমন শুরুতেই বলে দিয়েছিলেন বইটা শুধুই মজার। হ্যাঁ, বইটা নিখাদ মজার বই।
পড়তে পড়তে অর্ণকের প্রতি এক রকম টান তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক না। লেখক রুহিনা এবং শিমুর মনের উপর খুব একটা আলোকপাত করেন নি।তবে শেষ পর্যন্ত অর্ণকের সাথে কিছু একটা হলে বেশ ভালো লাগত। এ দিক থেকে বলতে পারি খানিকটা অতৃপ্ত হয়েছি বইটা শেষ করে।
বইটার সম্পর্কে প্রথমেই বলি, খুব একটা ভালো লাগেনি। বইটা ব্যাচেলর ছেলেদের জীবন, হাসি ঠাট্টা তুলে ধরেছে। মজার দিক থেকে কিছু কিছু জায়গা বেশ মজার ছিলো বটে তবুও খাপছাড়া লেগেছে। লাস্টে লেখক গল্প শেষ করার জন্য ব্যকুল হয়ে ছিলেন৷ আর অর্ণক আর রুন্টুর সম্পর্কে কিছুটা হিমু আর বাদলের সম্পর্কের মতো লাগছে। লাস্টে অর্ণকের হতাশা নিয়ে আরো একটু লিখতো, কেমন যে তাড়াহুড়ো করেছে লেগেছে! আর এমনিতে হাস্যরসাতক হিসেবে বেশ কিছু জায়গায় সেটা ছিলো। সুন্দর সাবলীল গল্প। রেটিং : ৩/৫
ব্যাচেলরদের নিয়ে লেখা একটা দারুন বই। হাস্য রসাত্মক ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সবগুলো চরিত্র। অনেকটা বর্তমানে চলা ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটক এর মত। দুইবার পড়লে বইটা সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায় এবং খুব ভালো লাগে।
P.R: 3/5 It feels good to read a light-hearted & humorous book after reading a number of dark, horror, & thriller books. This is a fun story that a lot of us can easily connect with.
আমাদের একজন বাউন্ডুলে লেখক আছেন। লেখক বাউন্ডুলে কি না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না অবশ্য, তবে তিনি বাউন্ডুলে নামে একটা সিরিজ লিখতেন। প্রতি সোমবারে তা ছাপা হতো পত্রিকার পাতায়। আমরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে থাকতাম। পড়তে পড়তে আমাদের মনে হত এই লেখকের কাঁধে নিশ্চিতভাবেই একটি ঝোলা আছে। তিনি খালি পায়ে পথে পথে ঘুরে বেড়ান, আর মানুষ দেখেন। তিনি মানুষের যন্ত্রণাকে ধারণ করতে পারেন, মানুষের দৈনন্দিন কথাবার্তা তার চাবুক কলাম লাগতো স্লোগানের মত। লেখকের নামটা অনেকেই হয়তো অনুমান করতে পারছেন।
তার নাম সুমন্ত আসলাম। তিনি এখনো বাউন্ডুলে লিখেন। প্রতি বছর বইমেলায় তা প্রকাশিত হয়। সুমন্ত আসলামকে শুধুমাত্র বাউন্ডুলে সিরিজ দিয়ে মূল্যায়ন করা অনুচিত কাজ হবে। কারণ এছাড়াও তার বইয়ের সংখ্যা কম না। তিনি লিখছেন কিশোর উপন্যাস, লিখেছেন প্রেমের গল্প, লিখেছেন রম্য রচনা।
আমি লেখক সুমন্ত আসলামের ভক্ত। গল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা সব মিলিয়ে প্রায় ১০০টি বই প্রকাশিত হয়েছে সুমন্ত আসলামের। বাংলাদেশে তার ভক্ত সংখ্যা অনেক। দু’চোখ ভরা স্বপ্ন তার। দেশ, জাতি, সমাজ, মানুষ সবাইকে নিয়েই তিনি স্বপ্ন দেখেন। সবার ভালো থাকার স্বপ্ন দেখেন। অনেক ভালোবাসা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আর, সে সব স্বপ্নের বীজ তিনি বপন করেন পাঠকের মনেও। তাইতো কাছের বন্ধুরা তাকে বলে স্বপ্নবাজ। এই লেখক অনেক দূর যাবেন। উনি কখনও ঝরে পড়বেন না। এই লেখক খুব সহজ সরলভাবে জীবন যাপন করেন। একদম মাটির মানুষ। কোনো অহংকার নেই। সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলেন। বইমেলায় তাকে দূর থেকে খুব সুন্দর পাঞ্জাবী পড়ে আসতে দেখেছি। উচা, লম্বা প্রানবন্ত একজন মানুষ। চোখে ভারী চশমা।
আমার অত্যন্ত পছন্দের একজন লেখক। যাই হোক, সুমন্ত আসলামের সব বই পড়া না হলেও আমি তার বেশির ভাগ বইই পড়ে ফেলেছি। প্রতিটা লিখাই আমি খুব মজা করে পড়ি। ভালো লাগে খুব, পড়ে তৃপ্তি পাই। ঠিক তেমনি এই লিখটাও ব্যতিক্রম নয়, ভালো লেগেছে বইটা।
This entire review has been hidden because of spoilers.
সুমন্ত আসলাম, এই নিয়ে দুইটি বই পড়েছি তার। খুবই ভালো লেগেছে দুটুই। লেখক বই এর ভূমিকায় বলেছিল শুধু মজার জন্য লিখেছেন বইটি। কোন উপদেশ থাকবে না । থাকবে না কোন কঠিন কঠিন কথা, থাকবে না নীতিবাক্য। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেন নি। যাই হোক গল্পটা ৪ ব্যাচেলরের। তাদের কিছু দিন পরপর বাসা পাল্টানো, বুয়া নিয়ে মজার সব ঝামেলা নিয়ে এগুতে থাকে গল্প। প্রতিটা ঝামেলা আপনাকে হাসাতে বাধ্য করবো। এক আপু আমাকে বলেছিল বইটি পরে নাকি হাসতে হাসতে তার পেট ব্যথা হয়ে গিয়েছিল। যদিও আমার পেট ব্যাথা করেনি তবে আমি হেসেছি। গল্পটা শুধু রম্যই না রোমান্টিক ও। ৪ জনের একজন প্রেমে পড়েছে পাশের ফ্লেটের এক মেয়ের আবার বাড়ি ওয়ালার মেয়ে প্রেমে পড়েছে তার। এ নিয়ে মজার মজার কান্ড হয়েছে। সব মিলে একটা কথা বলা যায় এই ছোট্ট বই নিয়ে আপনার কিছুটা সময় বেশ ভাল ভাবে কেটে যাবে।বইটি ২০০৮ সালের বই মেলায় ৭ বার মুদ্রণ করা হয়েছে। আশা করে বুঝতে পারছেন কতটা জনপ্রিয় একটি বই। হ্যাপি রিডিং.... 😊