‘মৌনব্রত’ নামে দৈনিক বাংলায় একটা ধারাবাহিক লেখা শুরু করেছিলাম। সেখানে হঠাৎ 'তিথি’ নামের একটি চরিত্র চলে এল। নিশিকন্যা। লক্ষ্য করলাম, তার কথা লিখতে বড় ভাল লাগছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে এই জাতীয় মেয়েদের আমি চিনি না। শুধুমাত্র কল্পনার আশ্রয় করে তাে আর একটি লেখা দাঁড় করান যায় না। আমি নানান জনের কাছে যাই, কেউ তেমন সাহায্য করেন না। মজার ব্যাপার হল সাহায্য পেয়ে গেলাম অকল্পনীয় একটি সূত্র থেকে। এই ভূমিকায় গভীর মমতা ও ভালবাসায় সেই সূত্রের ঋণ স্বীকার করছি। বইটি শুরুতে 'রাত্রি' নামে ছাপা হচ্ছিল। একদিনের কথা, উপন্যাস লিখছি, আমার স্ত্রী রেকর্ড প্লেয়ারে গান বাজাচ্ছেন—হঠাৎ সমস্ত ইন্দ্রিয় চলে গেল গানে- 'জনম জনম তব তরে কাঁদিব'। গান শুনতে শুনতে নিজে খানিকক্ষণ কাঁদলাম এবং পরে উপন্যাসের নাম পাল্টে দিলাম, 'রাত্রি' থেকে তা হয়ে গেল 'জনম জনম'। আমার প্রকাশক খুব বিরক্ত হলেন। রাগী-গলায় বললেন, এসব কি করছেন- 'রাত্রি' নামে ফর্মা ছাপা হয়ে গেছে। আমি বললাম, হােক। প্রকাশক চোখের দৃষ্টিতে আমাকে ভস্ম করতে চাইলেন-পারলেন না। যে কম্পােজিটর এই বই কম্পােজ করত, সে আমার কাটাকাটির বহর দেখে চাকরি ছেড়ে পালিয়ে গেল—নানান যন্ত্রণা। তবু সব যন্ত্রণার পরেও বইটি বের হচ্ছে—এই আমার আনন্দ।
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
যার নাম পাল্টে যায় জায়গাভেদে,মানুষভেদে কিংবা এই গল্পটা এক নিন্মমধ্যবিত্ত পরিবারের সদ্য একুশে পা দেওয়া এক তরুনীর,এমন এক মেয়ে যে তার এই বয়সে বেনী দুলিয়ে কলেজে যেতে যেতে বান্ধবীদের সাথে হঠাৎ কোনো স্বাভাবিক কথাই হেসে লুটোপুটি খেয়ে বিষম উঠার মাঝখানেই মুরব্বী কাউকে দেখে সামলে নিয়ে মুখে টিপে হাসতে হাসতে,পথে চলতে চলতে রাস্তার কোনে তার জন্য অপেক্ষায় থাকা কোনো তরুনের মনে ঝড় তুলে যাওয়ার সময় আড়চোখে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে যেন কিছুই হয়নি এমন ভান করে যাওয়ার কথা,প্রথম কারো হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা মাখা ভরা চিঠি পেয়ে স্বপ্নালু চোখে ভাবতে থাকা এ কি সত্যি না কি ভুল!
কিন্তু তিথির বেলায় হয়নি এসব কিছুই,সংসারে অভাব তাকে দাড় করিয়ে দেয় এক ভয়াবহ বাস্তবতার সামনে, কৈশোরে হারিয়ে ফেলে তার এই স্বপ্ন গুলো, ফেরেশতা মনে করে যার কাছে যেতে সাহায্যের জন্য ভদ্রতার মুখোশটা একদিন খুলে ফেলে কড়ায় গন্ডায় আদায় করে নেয় তার এই উপকারের প্রতিদান,ক্ষতি বেশি কিছু হয়নি তিথির, শুধু তার অনুভূতি গুলো ভোঁতা হয়ে যায়,এরপর পেটের দায়ে যখনই কারো স্পর্শ পেয়েছি ততবারই তার মনে হয়েছে কিছু পোকা যেন কিলবিল করছে তার গায়ে,মায়ের হাতের ছোঁয়া যা কিনা শত কষ্টেও প্রশান্তি এনে দেয় মনে সেই স্পর্শ কেই তার অবাঞ্চিত মনে হতে থাকে.
এতটা নির্মম পরিহাস বোধহয় কারো সাথেই হয়না,বড় ভাই যে ভ্যাগাবন্ডের এক আদর্শ উদাহরণ,মায়ের গয়না নিয়ে বাড়ির সবাইকে উপোস রেখে পালিয়ে যায় যে বারবার, হতভাগ্য বড় বোন অরু তারো ঐ ভাইয়ের জন্য সংসারে স্বামীর অনাদর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়িতে পালিয়ে এসে দিনকয়েক পরে নিজেই যে এখানে গলগ্ৰহ বুঝতে পেরে চাকরি নিয়ে পালিয়ে যাওয়া কিংবা এই গল্পটা টুকুর রূপকথার রাজে্য যার বাস,বাড়ি থেকে সময় সময় পালিয়ে জীবনকে খোঁজার যার চেষ্টা অথবা এই গল্পটা রুগ্ন ফরিদা তার স্বামী দবিরের.বা গল্পটা সংসারের চাপে পিষ্ঠ তিথির মার, চোখের জ্যোতি হারানো বাবার যার একমাত্র চিন্তা উদরপূর্তি আর চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়া.
এত গুলো চরিত্রের মাঝে গল্পটা যে ঠিক কার তা বোধহয় শুধুমাত্র পাঠক নির্ভর.যার কাছে যাকে ভালো লাগে তার জন্যই বোধহয় গল্পটা এই এত সুন্দর কাহিনী নিয়ে একটা ছবি আছে,প্রায় বারো বছর আগে সাদাকালো বিটিভির পর্দায় শাবনূর ছিল তিথি .আজকের শাবনূর কে দেখে হয়ত বোঝাই যাবে না এরকম একটা চরিত্র সে এমন নিপুণ ভাবে করতে পারে যেন তিথি আর সে আলাদা কেউ না.
পড়তে পড়তে ঝাপসা স্মৃতিরমাঝখান দিয়ে উঁকি দিচ্ছিলো কয়েকটা দৃশ্য.মাঝেসাঝে পড়তে পড়তে এসব দৃশ্য মনে পড়াটা মন্দ নয় একদমই.ইচ্ছে হলে সময় থাকলে পড়ে ফেলুন.
একটা বিপদে পড়া ছেলেকে আমাদের সমাজ যেভাবে সাহায্য করে বা অবহেলা করে একটা মেয়েকে সেভাবে করে না।
গল্পটাতে অনেকগুলো চরিত্র, প্রতিটা চরিত্রের মাঝেই একটা করে গল্প রেখেছেন লেখক। মনে হবে প্রতিটা চরিত্রের একটা করে গল্প সংযোজন করে বইটা গড়ে তোলা। একজন অসহায় বাবা, একজন অসহায় মা, পরিবারের দায় কাধে নিয়ে একা দাঁড়ানো তিথি, ভবঘুরে বড়ো ভাই আর উদাসীন ছোটো ভাই সবাইকে নিয়ে একটা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের দুর্দশাগ্রস্ত সময়ের কষ্ট মাখা কাহিনী। একটা সময় পরে সবার জীবনেই স্থিতিশীলতা আসে, বড়ো ভাইয়ের জীবনে অস্বাভাবিক প্রাপ্তি তাকে করে তুলে সংসারমুখী, বাবা-মার জীবনে আর্থিক স্বচ্ছলতার কারণে আসে সুখ, বড়ো বোনের বিচ্ছদের পর সেও খুঁজে পায় তার সুখের ঠিকানা। কিন্তু দিন শেষে তিথি থাকে একা। সে তার ঘরে থাকে একা, বাইরে থাকে একা, রাস্তায় থাকে একা। জীবনে অনেককিছু পেয়েও যেনো কোনোকিছু না পাওয়ার একাকীত্বের সমুদ্র সে ডুবে গেছে, সেখানে তার মৃত্যু নেই, কিন্তু বেচে থাকার কোনো স্বাদও নেই। পরিবারকে, পরিবারের মানুষদেরকে আমরা ভালোবাসি, কিন্তু ভালোবাসতে গিয়ে প্রায় সময়ই আমরা বুঝতে পারি না আমরা নিজেদের সাথে কতটা অন্যায় করছি, নিজেকে কতটা ঘৃনা করে ফেলতেছি নিজেরই অজান্তে। একটা সময় দেখা যায় নিজেরই অজান্তে নিজেকে আমরা চিনতে পারি না, নিজের ঠিকানা হারিয়ে ফেলি, যেমনটা হয়েছে তিথির ক্ষেত্রে। অবশেষে এক সমুদ্র কষ্ট বুকে নিয়ে এতো বিশাল পৃথিবীতেও ঠায় পাওয়ার ছোট্ট একটা জায়গা পাওয়া যায় না। ভালো থাকুক সকল বাবা, সকল ভাই, সকল বোন যারা পরিবারের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে বেহিসেবীভাবে। কোথায় যেনো পড়েছিলাম, পরিবার হলো ঘুড়ির লাটাই এর মতো, লাটাই এর বিশেষত্ব হলো সে ঘুড়িকে আটকে রাখে। লাটাই এর কারণে ঘুড়ি চাইলেও অসীম উপরে উঠতে পারে না, অবার লাটাই না থাকলেও ঘুড়ি আকাশে উড়তে পারবে না। লাটাইয়ের সাথে সংযুক্ত থেকেই ঘুড়ির সর্বোচ্চ উচ্চতায় উড়তে পারাই যেমন ঘুড়ির সার্থকতা, পরিবারের সাথে নিজেকে সংযুক্ত রেখে, পরিবারের মানুষগুলোকে নিজের মতো করে ভালোবেসে, নিজেকে যতটুকু দিতে পারা যায় ততটুকু দিতে পারাটাও আমাদের জীবনের স্বার্থকতা। কিন্তু আমরা অনেকেই এ দুটোর মাঝে সামঞ্জস্য রাখতে পারি না, আমাদের মাঝে কেউ কেউ শুধু নিজেদের নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকি, কেউ কেউ আবার নিজদের ভুলে যাই।
বইয়ের কিছু ভালো লাগা লাইন: যে সুন্দর না তাকে সুন্দর বললে তার খুব খারাপ লাগে।
নার্ভাস এবং ভীতু মানুষ চট করে মিথ্যা বলতে পারে না।
সবচেয়ে সুখী মানুষ তারাই যারা সবচেয়ে কম জানে।
জীবিত মানুষের কথা আমরা অগ্রাহ্য করতে পারি মৃত মানুষের কথা পারিনা।
যাবার কোন বিশেষ জায়গা না থাকার মানেই হচ্ছে সব জায়গায় যাওয়া যায়।
" জোছনা ও জননীর গল্প " বইটা বেশ কয়দিন থেকে পড়ব ভাবছি। গুডরিডসে ঢুঁ মেরেছিলাম রিভিউগুলোয় একটু চোখ বুলাতে । দেখলাম,৯০% রিভিউ ই পজিটিভ।
কিন্তু একটা তে গিয়ে চোখ আটকে গেল,জননীর গল্প এবং হুমায়ূন দুজন কে মোটামুটি ভালো ভাবেই ওয়াশ করে দিয়েছে। রিভিউ টা পড়ে মন বেশ খারাপ হয়ে আছে। জননীর গল্প পড়ার আগ্রহ ও কমে গেছে অনেকটা।
তখন ভাবলাম,অন্য বই পড়ি। চোখে পড়ল "জনম জনম"। কালকে রাতে ত্রিশ পৃষ্ঠা পড়েছি,বাকিটা সকালে শেষ করছি। " জনম জনম" শেষ করে বুঝলাম,"জননীর গল্প " পড়তে পারব। মনে যে মেঘ এসেছিল,পুরোপুরি কেটে গেছে। এমন না যে "জনম জনম" নতুন কিছু বা নতুন ভঙ্গিতে লেখা। সেই চিরায়ত হুমায়ূন কে ই পাওয়া যাবে,পরিচিত ঢঙে। তাও, কোথায় যেন গল্পটা মনে একটা ছাপ ফেলে যায়,অন্য রকম একটা ভালো লাগা অনুভূত হয়। এটাই হুমায়ূনের ম্যাজিক। যত ই ক্লিশে হোক,আমি হুমায়ূন পড়ব, এমন সুন্দর সব অনুভূতি গুলো থেকে বঞ্চিত হতে চাই না বলে।
যে অনন্ত আকাশ সবার জন্য অপেক্ষা করে,সেই আকাশের কোথাও এখন আপনার বাস। সেখানে নিশ্চয়ই জোছনা হয়, অবিরাম বৃষ্টি তে ভিজে অপার্থিব সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয় নীপ বনে,সেসব সৌন্দর্য উপভোগের ফাঁকে আপনি হয়ত ভাবছেন কোন গল্পের ছক। কিন্তু, হায়! সেই গল্প আমি পড়তে পারব না! এই অনিঃশেষ দুঃখ আমি কোথায় বিসর্জন দিব? ক্ষুণ্ণ হৃদয়ে আপনাকে স্বরণ করি। হে জাদুকর,আপনি ��ালো থাকবেন অনন্ত অম্বরে।
কিছু কিছু বই আবার পড়তে হয় অনুভূতি বদলানোর জন্য । আগে যখন হ্যাপি এন্ডিং পেতাম তখন খুশি লাগত, দুঃখজনক পরিণতির জন্য হুমায়ূনের উপর রাগ উঠত। কিন্তু এখন মনে হয় যে দুঃখজনক পরিণতিই যেন সত্য, হ্যাপি এন্ডিং ফেয়ারি টেলের মতন শোনায়।
ঘরে সর্ষে আছে মা?যদি থাকে,সর্ষে বাটা লাগিয়ে দাও।কুমড়ো পাতা খোঁজ করছিলাম।পাইনি।পেলে পাতুরি করা যেতো।বর্ষা-বাদলার দিনে পাতুরির মতো জিনিস হয়না।
হুমায়ূন আহমেদের বইয়ে মাঝেমধ্যে ই অদ্ভুত সুন্দর রান্নার কথা বলা থাকে।এবং প্রত্যেকবার ই সেই ছোট ছোট রান্নার রেসিপি পড়ে আমার সেগুলো খেতে ইচ্ছে করে কিন্তু বিধি বাম। সর্ষে বাটা দিয়ে পাতুরির কথা চিন্তা করে করে আমাকে আলু দিয়ে গাজর ভাজি খেতে হয়(আমাদের মেডিকেলের হোস্টেলের সিগনেচার খাবার বোধহয় 😐)
পড়তে পড়তে ভাবি,এবার ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে 'জনম জনম'র হীরুর মতো করে বলবো " ঘরে সর্ষে আছে মা,থাকলে সর্ষে বাটা লাগিয়ে দাও,কুমড়ো পাতা পেলে পাতুরি করা যেতো"
জনম জনম একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প। মধ্যবিত্ত পরিবারের বেশ কিছু ধরণ থাকে। যেমন উচ্চ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত। এর পাশাপাশি আরেকটি ধরণ হচ্ছে দুঃখ মধ্যবিত্ত। মধ্যবিত্তের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এদেরকেই দুঃখ ঘিরে রাখে। জনম জনম তেমনি এক দুঃখে ঘিরে রাখা পরিবারের গল্প।
বেশ কিছুদিন ধরেই বইয়ের সান্নিধ্য থেকে দূরে ছিলাম। সেমিস্টার ফাইনাল এর জন্য। লাভ হয়নি, ভরাডুবি হয়েছে। সেই দুঃখেই হয়তো জনম জনম তুলে নেয়া। বইটি পড়ে এখন বেশ ভালো লাগছে, মাইনাসে মাইনাসে প্লাসের মত দুঃখে দুঃখে ভালো লাগা তৈরি হয়েছে , বিষাদময় এক ভালো লাগা।
বইটা পড়তে পড়তে ভালোভাবে ভাবলে বোঝা যাবে বইয়ের প্রতিটা অংশ কি গভীর! আমি লাইনের পর লাইন বোধহয় লিখতে পারবো বিশ্লেষণ করে। গভীর ভাবে চিন্তা না করলে বইটা বিরক্তিকর লাগবে। আমারো প্রথম ৩০-৪০ পৃষ্ঠা পড়ে মনে হয়েছিলো এইটা বইটা পড়া কন্টিটিউ করবো কিনা। পরে দেখলাম নিজেই এক বসায় শেষ করেছি। কি নির্মম সুন্দর গল্প যেন বাস্তব!
চিরায়ত হুমায়ূনীয় মধ্যবিত্ত টানাপোড়েন। আপন গতিতে কাহিনী এগুতে এবং চরিত্রগুলো বেড়ে উঠতে থাকলেও শেষে হুড়মুড় করে বাংলা সিনেমাটিক ধাঁচে সুস্পষ্ট ঘটনাপ্রবাহের অভাব আর তার ফলাফলজনিত একগাদা তথ্যের যোগান দিয়ে একটা সুখী সমাপ্তি টানার চেষ্টা বেশ চোখে লাগার মতো। যত্নের অভাবটা নজরে আসে। কিসের এত তাড়াহুড়ো? ফর্মার বাধ্যবাধকতা নাকি বইমেলার ডেডলাইন? যথেষ্ট বিরক্তির উদ্রেক ঘটতে ঘটতে মনে হয় হুমায়ূন তার জীবনে অনেক অনুরোধে ঢেঁকি গেলা টাইপ বই লিখেছেন প্রকাশকদের চাপে পড়ে। জনম জনম ও কি তাই?
'আমাকে মনে আছে চাচা? ওইযে অভাবের সময় আপনার বাড়িতে টাকা নিতে যেতাম? আপনি আমাকে কতই না আদর করতেন?' জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা নিয়ে বলা এই লাইন গুলো 🥀 মন খারাপের গল্প বলব নাকি ভাগ্যে পরিবর্তনের গল্প বলব? প্রথমটাই বেশি যুতসই কেননা তিথির ভাগ্য কিংবা জীবনের তো কোনো পরিবর্তন আসেনি।আসবে কি করে, হিরুর মতো দিশেহারা, অগোছালো ছেলেদের জীবন গোছানোর জন্য 'অ্যানা'-রা এগিয়ে আসে কিন্তু তিথিদের জন্য কেউ নেই........
বিষন্নময় সুন্দর বই। অনেক বছর আগে পড়েছিলাম, আবারও পড়লাম।
হুমায়ূন আহমেদের কিছু বই এমন হয় যে সারা বই পড়ে তেমন ভাল না লাগলেও শেষটা এত বেশি সুন্দর হয় যে তখন পুরো বইটাই ভীষণ ভাল লেগে যায়! এরকম জাদু বোধহয় হুমায়ূন আহমেদের দ্বারাই শুধু সম্ভব!
হুমায়ূন স্যারের নিম্ন-মধ্যবিত্তদের নিয়ে লেখা যে কয়েকটি বই পড়েছি তার মধ্যে এই বইটি আমার কাছে শ্রেষ্ঠ বই। জালালুদ্দিন সাহেব যিনি চোখে দেখতে পান না সম্পুর্ণ অচল।উনার কাজ সারদিন খাই খাই করা।এই মুহুর্তে তিনি পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। হিরু জালালুদ্দিন সাহেবের বড় ছেলে। কথায় কথায় হাস্যকর ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে।এনা নামের একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে সে এবং সে একজন পীর সাহেবের একনিষ্ঠ ভক্ত।কিছু হলেই সে পীর সাহেবের নিকট এক প্যাকেট ফাইভ ফাইভ সিগারেট নিয়ে দেখা করে। অরু সংসারের বড় মেয়ে।দুই সন্তানের জননী এবং গর্ভবতী। স্বামীর অসহনীয় অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সে বাপের বাড়ি চলে আসে।অভাবী পরিবারে অরুর স্বামীর বাড়�� ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে আসায় সবাই বিরক্ত। সে চাকরি খুঁজছে। টুকু এই সংসারের সবচেয়ে অবহেলিত ছোট ছেলে।টুকু রাগ করে বাড়ি থেকে আট-দশদিন বাইরে থাকলেও কেউ তেমন চিন্তা করে না। তিথি জালালুদ্দিন সাহেবের ছোট মেয়ে।দারিদ্রতার জন্য তাকে এক অসহনীয় পথে চলতে হয়েছে (বেশ্যাবৃত্তি)। হয়ে যায় সে নিশিকন্যা।একসময় তার অনুভুতি গুলো ভোঁতা হয়ে যায়।এরপর যখনই সে কারো স্পর্শ পেয়েছে তখনই মনে হয়েছে কিছু পোকা যেনো কিলবিল করছে তার গায়ে।মায়ের হাতের স্পর্শ ও বিষ লাগতে লাগে তার।এতোটা নির্মম পরিহাস বোধহয় কারো সাথেই হয় না।
দারিদ্রতা মানুষকে কতোটুকু অসহায় করতে পারে তা এই বইটি পরে উপলব্ধি করা যায়।
আমি ইদানিং অনেক হাটি। একদম নিয়ম করে অন্তত ১০,০০০ কদম হাটি প্রতিদিন। নিয়মের হাটা হলেও আমার কখনই কোন গন্তব্য থাকে না, তিথির মতই। সবদিন যে খুবই ভাল লাগে তা না, তবে বেশিরভাগ দিনই লাগে। বই শেষ করে মনে হলো, তিথির সাথে যদি দেখা হয়ে যেত একদিন হাটতে হাটতে!
এই শ্রেণীর মানুষগুলোর প্রতি আমার কেন যেন কখনোই কোন নেগেটিভ ফিলিংস ছিল না। এদের কথা চিন্তা করলেই খুব করুণ একটি চিত্র ভেসে ওঠে মনে। আজকে সেই চিত্রটা আপডেট হয়ে আরো করুন-তর একটি চিত্রে রূপ নিল।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা কেন আমার কাছে স্পেশাল জানেন? হুমায়ূন আহমেদের লেখা, আমাকে এমন সব জিনিস সম্পর্কে ভাবায় যা নিয়ে কখনো আমার মনে কোন চিন্তার বিস্তার ঘটে নাই। হুমায়ূন আহমেদ এককককককাধিক বই লিখেছেন। স্বাভাবিক ভাবে তিনি সব লেখায় নিজের অসাধারণ চিন্তাশক্তির প্রতিফলন ফুটিয়ে তুলতে পারেন নাই। লাস্ট কিছুদিন আমি হুমায়ূন স্যারের যে কয়টা বই পড়েছি, সবগুলো শেষ করেই হতাশ হয়েছি। কিন্তু এই বইটা... এই বইটা পড়ে মনে অন্য রকমের এক ভাল লাগা বোধ কাজ করছে।
দিনটি ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, এই বইটা আমি প্রথম আমার ভার্সীটির লাইব্রেরিতে পাই। জীর্ণশীর্ণ এক হুমায়ূন সমগ্র, সেখানের একটি উপন্যাস ছিল এটি। দিনটা আমার জন্য এবছরের সবচেয়ে অন্ধকার দিনগুলির একটি, তবে এই অন্ধকার দিনে এমন অসাধারণ উপন্যাস যে শুরু করতে পেড়েছিলাম এটা আবার হাজার কাঁটার মাঝে একটা গোলাপের মতন। অনেক উল্টাপাল্টা বকছি আসল রিভিউ না লিখে। বইটা মূলত এক পতিতা এবং তার পরিবারকে নিয়ে লেখা। এটুক পড়েই হয়ত মোটামুটি উপন্যাসের জনরা বুঝতে পেরেছেন। জ্বী, এটি আমার ব্যক্তিগত প্রিয়, হুমায়ূন আহমেদের পারিবারিক ঘরনার উপন্যাস। এই জনরার বিশেষত্ব হচ্ছে, আমি এসব উপন্যাসে দারিদ্র্যতা, মানুষের কষ্ট, জীবনের নির্মমতা গুলাকে অনুভব করতে পারি। এজন্যই এই জনরাটা আমার সবচেয়ে প্রিয়। এই উপন্যাসে লেখক, দেখিয়েছেন একটা দারিদ্র্য পরিবারের বড় ছেলের দায়িত্বহীনতায় পরিবারের দুর্বিষহ অবস্থা, অসুস্থ বাবার যন্ত্রণা, এবং বোনদের জীবনের পরিণতি। কোন কিছুই পারফেক্ট হয় না, এই উপন্যাসটাও পারফেক্ট না। উপন্যাসটা পড়তে গিয়ে বেশ কিছু জায়গায় আমার উদ্ভট লেগেছে। অতিরঞ্জিত লেগেছে। কিন্তু তবুও, প্রধান চরিত্রগুলোর দুঃখ কষ্ট আমাকে যথেষ্টই তাড়িত করেছে, এবং আমি এটাকেই উপন্যাসের সার্থকতা হিসেবে ধরবো।
রেটিং কম ছিল Goodreads এ। কিন্তু আমার কেন জানি পড়তে ইচ্ছে হয়েছে। পড়ে মোটেও খারাপ লাগেনি।
তিথি কি কাজ করে কেউ বুঝতে পারে না। ঘর খরচের জন্যে অর্থ প্রধান করে। লোক মুখে অনেক কথা প্রচলন আছে কিন্তু তাতে পরিবার বুঝে উঠে না কি করে।
তিথির বাবা জালালুদ্দিন অন্ধত্ব বরণ করেছেন সারাদিন বিছানায় গা এলিয়ে পড়ে থাকেন।
ছোট ভাই টুকু ভবঘুরে হয়ে উধাও হয়ে যায় মাঝে মধ্যে। কখনো কখনো তিন চার মাস পর্যন্ত কোন খবর থাকে না।
তিথির বড় বোন অরু স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলে এসেছেন।
একটা সময় হিরু ভব গুরের মত সারাদিন ঘুরে বেড়াতো এনার সাথে বিয়ে হওয়ার পর এখন নিয়মিত হোটেল পরিচালনা করে। তিথির কর্মসূত্রে পরিচিত দবির সাহেব স্ত্রী মারা যাওয়ার আগে তিথির জন্য কিছু টাকা রেখে যান।
গল্পের বচন ভঙ্গি ভাল লেগেছে। কিন্তু সময় হাসি, কিছু সময় কান্না। পুরো গল্প বিষন্নতায় গেলেও বলা যায় হেপি এন্ডিং।
৪.৫ সম্প্রতি হুমায়ূন এর যতগুলো গল্প পড়েছি, তাদের মাঝে এটা সবচেয়ে ভালো।
গল্পটা পড়ে শুরু করার পর মনটা গুমোট হয়ে যায়। এতো ডার্ক...
চরিত্রগুলো দেখলেই ধারনা পাওয়া যায়। ১. চোখে দেখতে না পাওয়া বাবা, উপার্জন অক্ষম। ২. টো টো করে ঘুরে বেরানো মেঝ ভাই ৩. মেট্রিকে পাশ করতে না পারা ছোটভাই ৪. পরিস্থিতিতে পরে নিশিকন্যা বনে যাওয়া বোন ৫. স্বামীর সাথে ঝামেলা চলা বড়বোন ৬. সব কিছু নিয়ে মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকা মা, যে আর কিছু কেয়ার করে না।
চূড়ান্ত এক রিয়ালিটি।
তবে শেষদিকটায় সবকিছু কেমন তাড়াহুড়ো করে শেষ করা। ড্রামা বেড়েছে, রিয়েলিজম কমেছে। তাই ০.৫ স্টার কেটে দিলাম।
বুকটা ভার হয়ে গেল। মিনুর কড়া মেজাজ শান্ত হয়ে গেল দরিদ্র ঘোচায়। জালালুদ্দিন চায়ের বদলে এখন কফি খেতে পারেন। অথচ এক কাপ চায়ের জন্য মিনুর হাতে কত ধমক খেয়েছেন। হিরুও সংসারী হয়ে গেল। এন্যাকে নিয়ে সুখ-শান্তির সংসার। অরুও স্বামী নিয়ে ভালো থাকতে শুরু করলো। অথচ তিথির জীবন বদলালো না। ওর জন্য কেউ অপেক্ষা করে না। আহা এক সমুদ্র বেদনা রাখব আমি কই?
The story explores how social neglect, moral hypocrisy, and gendered double standards trap women in endless cycles of pain across generations and lifetimes. The title symbolizes an eternal wait for love, dignity, and freedom as Tithi walks under a sky that waits for everyone, yet belongs to no one.
এ যেনো এক অদ্ভুত কথার মালা যেথায় জীবন এক বড় হেয়ালি। জীবন যেখানে যেমনি হোক, শেষটা সুন্দর। জীবনের কালিমাটাকে বড় তুচ্ছ করে দেখা হয়, সুখটাই বড়। জীবন বড় কঠিন। তবে ভাগ্য ফেরতে সময় লাগেনা। এইরকম হাজারো গল্প নিশির মাঝে লুকিয়ে থাকে।
The writer wittily displayed the characters like tithi,hiru,tuku,ena. The sudden turn in the end was easily predictable.So, readers it will meet your expectations don't worry. And tithi character played a very important role in the story though her love is still uncertain like the sky.
This entire review has been hidden because of spoilers.
this is one of the most realistic and beautiful representation of how life actually is for people at the bottom of the chain in bangladesh. all time fave