"চৈতন্য দেবের বড়ভাই বিশ্বরূপ| তিনি রচনা করেছিলেন এক পুথি| যাতে লেখা ছিল তাঁদের পারিবারিক ইতিহাস| সেই পুথি বিশ্বরূপ নিজে পুড়িয়ে ফেলেছিলেন, নাকি লুকিয়ে রেখেছিলেন---সেটা কাহিনী রন্তর্গত এক রহস্য| বিশ্বরূপ এর ওই পুথির সূত্রে আমরা জানতে পারি শ্রীহত্তে পীর বুরহানউদ্দিন এর দরগায় এক অলৌকিক গর্ভধারণের কাহিনী| তাতেই কি উত্তর পাওয়া যায় সেই বহুচর্চিত প্রশ্নের---নবদ্বীপ অধিবাসী জগন্নাথ মিশ্রের কনিষ্ঠ পুত্রের অমন দীর্ঘ বলিষ্ঠ গৌরবর্ণ চেহারা হলো কি করে?"
-----এক সময়ে সবাই ভাবত, ইংরেজদের হাথ ধরেই বাংলায় আধুনিকতা এসেছিল| তার আগে শুধু মধ্যযুগীয় অন্ধকার| এখন নবীন ঐতিহাসিকরা ক্রমেই বেশি করে বলছেন যে, বহু অর্থে, ভারতীয় আদি-আধুনিকতার জন্ম পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকে| অন্তত বাংলাদেশে নাগরিক সংস্কৃতির বহু লক্ষণ পরিস্ফুট চৈতন্য-পূর্বেই| ঔপনিবেশিক চশমাটা সরিয়ে নিলে গৌরবঙ্গের আদি-আধুনিক মাহাত্ম্য স্পষ্ট ধরা পড়ে| নাগর-চাঞ্চল্য, বণিক-সজীবতা, ভ্রমনপিপাসা, প্রাদেশিকতা থেকে বেরিয়ে বৃহত্তর ভারত-সংযুক্তি, মধ্য-নিম্নবর্গের সামাজিক সচলতা, সামাজিক আনদলনে বৃহৎ-সংখ্যক মানুষের স্তর-নিরপেক্ষ অংশগ্রহন---অনেক কিছু মিলিয়ে চৈতন্যের সময়ে এক ধরনের প্রাক-ঔপনিবেশিকতার উদ্ভোধন ঘটেছিল| একুশ শতকের সেই কালপর্বের অর্গল্মুক্তি ঘটালেন শৈবাল মিত্র| ইতিহাসের নতুন পাঠকে আরো একটু এগিয়ে দেবে এই উপন্যাস| যা নিছক উপন্যাস নয়, চৈতন্যদেবের মতো এক মহাজীবন নিয়ে লেখা এ এক মহা-গ্রন্থ|
ক্যান্সার-আক্রান্ত শরীর নিয়েও শেষ ইনিংসে সেঞ্চুরি করে গেলেন শৈবাল মিত্র। মৃত্যুর পর প্রকাশিত ৬২৩ পৃষ্ঠার এই উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে এক উজ্জ্বল উদ্ধার।
শ্রীচৈতন্যের জীবনকে কেন্দ্র করে উপন্যাস। মধ্যযুগের ‘চৈতন্যভাগবত’ বা ‘চৈতন্যচরিতামৃত’ থেকে শুরু করে আজ অবধি শ্রীচৈতন্যকে নিয়ে বিপুল লেখালেখি হয়েছে। হাল আমলের বাংলা উপন্যাসে শ্রীচৈতন্য এসেছেন তিন ভাবে। প্রথম দল ভক্তিতে আপ্লুত। দ্বিতীয় দল বিদ্রোহী: তাঁরা বাস্তবের আলোয় শ্রীচৈতন্যকে দেখতে চান। তৃতীয় দলের উপজীব্য থ্রিলার। শ্রীচৈতন্য পুরীর সমুদ্রে আত্মহত্যা করেছিলেন? নাকি পাণ্ডারা তাঁকে গুমখুন করেছিল? শৈবাল মিত্র এই তিন রাস্তার বাইরে হেঁটেছেন। তিনি ভাবাবেশকে অস্বীকার করেননি। আবার, ভাবাবেশ কি শুধুই দৈবী প্রেরণা? নাকি চোখের সামনে অত্যাচারে জর্জরিত, গরিব মানুষকে দেখে শ্রীচৈতন্য হাহাকার করেন, ‘হা কৃষ্ণ, পথ দেখাও?’ দু’ ধরনের চোখের জলই কি মিলে যেত? এই উপন্যাস কোনও ধ্রুব সত্যে বিশ্বাস রাখেনি, সব ক’টি সম্ভাবনা পাশাপাশি রয়েছে। মনে পড়তে পারে মিলান কুন্দেরার ‘আর্ট অব দ্য নভেল’ প্রবন্ধের অমোঘ আপ্তবাক্য, ‘উপন্যাস নিশ্চিত কিছুতে বিশ্বাস রাখে না। অনিশ্চিতের প্রজ্ঞা বা ‘উইজডম অব আনসার্টেনটি’-ই তার অবলম্বন।’ শ্রীচৈতন্যকে নিয়ে এই উপন্যাসই কি সেই মহৎ অনিশ্চয়তা নয়? লেখক ষাটের দশকে বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের নেতা। নকশাল আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জন্ম নিয়েছিল তাঁর অজ্ঞাতবাস বা অগ্রবাহিনী-র মতো উপন্যাস! সেই তিনিই কি না শেষ জীবনে লিখলেন গোরা? শৈবালের বন্ধু, সমাজবিজ্ঞানী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই বইয়ের মুখবন্ধে সেই হতবাক হওয়ার কথাও লিখেছেন, ‘বামপন্থী মতবাদে বিশ্বাসী লেখক, হঠাৎ বাঙালির ভক্তিবাদের উৎস নিয়ে টানাটানি করছে!’
শুধু ভক্তিবাদ নয়। তিন ‘গোরা’র কাহিনি মিলেমিশে উপন্যাস। প্রথম ‘গোরা’ একুশ শতকের যুবক। বৈভব, ঐশী-র মতো বন্ধুদের সঙ্গে ‘মন্ত্র’ নামের এক নাইটক্লাবে নাচানাচি করে, তিন পেগ হুইস্কি চাপিয়ে রাতের কলকাতায় হু হু বাইক চালিয়ে ফেরে। ঐশী তাকে রবীন্দ্রনাথের গোরা পড়তে বলে। বিশ শতকের গোরার সঙ্গে এ ভাবেই পরিচয় হয় আজকের গোরার।
বিশ শতকের গোরাকে খুব একটা পছন্দ হয়নি সিডনি শেল্ডন, হেডলি চেজ পড়া একুশ শতকের গোরার। সারাক্ষণ দার্শনিকতার উদ্গার! এই ভাবে লোকে কথা বলে নাকি?
তার পরই তার আলাপ হয় মধ্য যুগের ‘গোরা’র সঙ্গে। তার কাকা, নাসার বিজ্ঞানী ত্রিদিবনাথ শ্রীচৈতন্যের জীবন নিয়ে টিভি-সিরিয়াল তৈরি করতে মায়াপুরে এসেছেন। বব নামে এক মার্কিন তরুণ সেই সিরিয়ালে ‘গোরা’ বা শ্রীগৌরাঙ্গের ভূমিকায়। কয়েকটি এপিসোডে কাজ করার পর সে মাঝপথে ফিরে গিয়েছে। ত্রিদিবনাথ ভাইপোকে দিয়ে কাজটি শেষ করতে চান।
তিন গোরায় আছে কি মিল? লেখক ‘কন্টিনিউয়িটি’র অদৃশ্য এক সুতো নিয়ে আসেন। মধ্যযুগে যবন শাসকদের ফতোয়ায় কৃষ্ণনাম, নাচগান বারণ। কিন্তু নবদ্বীপের সঙ্কীর্তন প্রায় মিছিল। উচ্চবর্গ-নিম্নবর্গের ভেদাভেদ সেখানে নেই। টোলের অধ্যাপক গোরার সঙ্গে সারাক্ষণ নিচু জাতের মেলামেশা। এর কারণ জানতে চাইলে সে বলে, ‘কৃষ্ণ গুরুচণ্ডালী দোষ ধরেন না।’ গুরু শ্রীকেশবভারতীর ‘শ্রী’ অনুষঙ্গটি ভাল লাগে গোরার। নারায়ণের স্ত্রী লক্ষ্মীর আর এক নাম শ্রী, সে না থাকলে জীবন ব্যর্থ। গোরা তাই বেলের নাম দেয় শ্রীফল, পুরীর নাম দেয় শ্রীক্ষেত্র। একুশ শতকের গোরা বুঝতে পারে, বাংলা ভাষার রূপ বদলে দিয়েছিল মধ্যযুগের গোরা।
আইডেন্টিটির কথাও ভেবেছিল নবদ্বীপের গোরা। উত্তরে জ্যোতিষপুর, পূর্বে বঙ্গাল, পশ্চিমে মল্লভূম অবধি সকলে গৌড়ের সুলতানের প্রজা হলেও গৌড়ীয় নয়। তা হলে? ‘বাঙ্গালী’ শব্দটা পছন্দ হয় গোরার। এক কথায়, শ্রীচৈতন্যকে কেন্দ্র করে বাঙালির সাংস্কৃতিক ইতিহাস বুনেছে এই উপন্যাস। সেখানেই তার জিত!
বাঙালির ইতিহাস সাহেবদের শেখানো থাকবন্দি জ্ঞান নয়। সেখানে মিশে থাকে পুরাকথা, গল্প, অনেক কিছু। সুলতানি শাসকেরা হিন্দু পণ্ডিতদের থেকে শুনেছে, দ্বাপর যুগে কৃষ্ণ নামে ধুরন্ধর একটা লোক ছিল। রাষ্ট্রকূটরাজ ধ্রুবের ছেলে গোবিন্দ, তার ছেলে কৃষ্ণ। কৃষ্ণের আর এক নাম গোবিন্দ। তা হলে পিতাপুত্র দু’ জনেই কৃষ্ণ? লোকটা অমর? যবন শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ইন্ধন দেয়? পুরাকথার সঙ্গে মিশে যায় আঞ্চলিক ইতিহাস। কোচবিহারের চিলা রায় বাঁধ কেটে হোসেন শাহের সৈন্যদের জলে ডুবিয়ে ছাড়ে। বিজয়নগরের কৃষ্ণদেব রায়দের আরাধ্য সাক্ষীগোপালকে তুলে আনেন উৎকলরাজ প্রতাপরুদ্রদেব। শ্রীচৈতন্য ভাবেন, ওড়িশার নীলাচলে যে কোনও মুহূর্তে গৌড়ের অধিপতি হোসেন শাহ আক্রমণ হানতে পারেন। ফলে, আর্যাবর্তের মূল পথে, বৃন্দাবনে গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের কেন্দ্র তৈরি করলে কেমন হয়? শৈবাল মিত্রের নায়ক শুধু নবদ্বীপ, শ্রীক্ষেত্রের সীমায় বন্দি নয়। বরং তার মধ্যে ‘ভারতীয়ত্ব’র ইঙ্গিত। বাস্তব আর জাদুবাস্তব এই উপন্যাসে মাখামাখি। শ্রীহট্টের জগন্নাথ মিশ্রের ছেলে এত ফর্সা, লম্বা কেন? শ্রীহট্টের যে মাজারে শচীদেবী হত্যে দেন, ঝড়বৃষ্টির অন্ধকার রাতে সেখানে নেমে আসেন বরুণদেব আর পবনদেব। মাজারের মুজাভিরের পবিত্র শরীরে আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই দুই দেবতা? ছোট ভাইয়ের জন্য একটি পুথি লিখে সন্ন্যাস নিয়েছিল বিশ্বরূপ। বহু দিন পরে সেই পুথি গোরার হাতে পড়ে, নিজের জন্মরহস্য জানতে পারে সে। পরদিন সকালে গয়ার মন্দিরে ভাবাবেশে জ্ঞান হারায় গোরা।
রাজনীতি এই জাদুবাস্তবতার অপরিহার্য অঙ্গ। একডালার সিংহাসনে বসে হোসেন শাহ জানেন, দশ জন হিন্দুকে কচুকাটা করেও তিনি যদি একটি মন্দির গড়ে দেন, লোকে সংস্কৃতিবান শাসক হিসেবে তাঁর নাম করবে। ভারত জুড়ে সবাই জানে, কৃষ্ণনামে মুক্তি। দক্ষিণ ভারতের রামানুজ থেকে রাজস্থানের মীরা, বাংলার চৈতন্য, উত্তর ভারতের কবির সবাই সেই নাম নিয়ে মানুষকে জাতপাত থেকে, শোষণ থেকে মুক্তি দিতে চান। সন-তারিখের হিসাব হয়তো মিলল না। এঁরা চৈতন্যের সমসাময়িক নন। কিন্তু ইতিহাসের সত্য আর উপন্যাসের সত্য এক নয়! দুর্বলতা অবশ্যই আছে। রূপ, সনাতনের দবির খাস, সাকর মল্লিক হওয়ার কাহিনী দু’ বার বলা হয়েছে। শেষ দিকে নানক থেকে তেগবাহাদুর অবধি কয়েকশো বছরকে কয়েক লাইনে ঢুকিয়ে দেন লেখক। এই অংশটি কেমোথেরাপির পর, টেপ রেকর্ডারের সামনে বলা। একটা কথা তবু নির্দ্বিধায় বলা যায়। বাঙালির সাংস্কৃতিক ইতিহাস জানতে হলে এই উপন্যাস পড়তেই হবে। ‘গৌরচন্দ্রিকা’ লিখতে গিয়ে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, উপন্যাসটি প্রতীকী কি না! শৈবাল মিত্রের প্রজন্মও তো একটি নামকে অবলম্বন করে অন্ধ্রের শ্রীকাকুলাম থেকে বাংলার নকশালবাড়ি অবধি সর্বত্র মানুষকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল।
হতে পারে। উপন্যাসের শেষে পুরীর মন্দিরের গর্ভগৃহের গোপন সুড়ঙ্গ বেয়ে বৃন্দাবনে চলে যায় গোরা। সেখান থেকে মক্কা, পশ্চিমে সমুদ্রের ধারে। পাশাপাশি একুশ শতকের গোরা চলে যায় ইরাকে ত্রাণের কাজে। উপন্যাসের শেষ লাইন, ‘পাঁচশো বছর আগের গোরার সঙ্গে কাল থেকে কালান্তরে হেঁটে চলেছে আরও অনেক গোরার মিছিল।’
মাত্র ৪৭ বছরের ব্যাপ্তি হলেও চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন আক্ষরিক অর্থেই “epic”, তাঁর লৌকিক জীবন নিয়ে শৈবাল মিত্রের এই দীর্ঘ উপন্যাসটিও একই রকম ভাবে মহাকাব্যিক।
কাঠামো হিসেবে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের “জাতিস্মর” সিনেমার সাথে কিছু মিল রয়েছে উপন্যাসটির। দুজন গোরার কাহিনী লিপিবদ্ধ করেছেন লেখক। কাহিনীর শুরুতেই পরিচয় হয় আধুনিক যুগের গোরার সঙ্গে। অভিজাত পরিবারের আদরে এবং বাহুল্যে বড় হয়ে ওঠা গোরা। কলেজের বন্ধুদের সাথে তান্ত্রা বা সামপ্লেস এলসের হুল্লোড়বাজ গোরা। তার ছোটকাকা চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন নিয়ে একটি তথ্যভিত্তিক সিরিয়ালের কাজে কলকাতায় আসেন এবং তাঁর হাত দিয়েই আধুনিক সময়ের গোরার পরিচয় ঘটে মধ্যযুগের নিমাই পন্ডিতের।
উপন্যাসটির বেশিভাগ অংশই লেখা হয়েছে চৈতন্যদেবের জীবন নিয়ে। তবে শুধু তাঁর জীবন নয়, তাঁর জন্মের আগে এবং তাঁর সমকালীন বাংলার জীবনযাত্রা এবং সমাজচিত্র নিপুন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। শৈবাল বাবু বইটি লেখার আগে প্রায় দশ বছর পড়াশুনো করেছিলেন চৈতন্যদেবকে নিয়ে, বইয়ের শেষে গ্রন্থপঞ্জিতে একশোর উপর বইয়ের তালিকা রয়েছে।
শৈবাল মিত্র চৈতন্যদেবের উপর দেবত্ত্ব আরোপ করেননি। বরং সাধারণ মানুষের উপর তাঁর ব্যক্তিত্ত্ব এবং শিক্ষার প্রভাবের উপর বেশি জোর দিয়েছেন। সাম্যবাদে বিশ্বাসী লেখকের কলমে অনেক জায়গায় তিনি ধর্মীয় নেতা নন বরং গন অভ্যুত্থানের নায়ক। যিনি সুলতান হোসেন সাহের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে অনায়াসে রাস্তায় সংকীর্তনের দল নামান বা ব্রাহ্মনদের ভ্রূকুটি পাত্তা না দিয়ে বুকে টেনে নেন তথাকথিত নিচু জাতের মানুষদের। চৈতন্যদেবের পাশাপাশি অদ্বৈত আচার্য, ঈশ্বরী পুরী, মাধবেন্দ্র পুরী বা রূপ ও সনাতন গোস্বামীদের নিয়েও গভীর আলোচনা রয়েছে। ষোড়শ শতাব্দীর গৌড় ও বাংলার ইতিহাস সম্বন্ধে আমার বিশেষ ধারণা ছিল না। সেই সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এই উপন্যাসের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে, বিশেষ করে গৌড়ের হোসেন শাহ, উৎকলের প্রতাপরুদ্র দেব ও বিজয়নগরের কৃষ্ণদেব রায়ের ত্রিমুখী সামরিক সমীকরণ। তবে কিছু জায়গায় অবশ্যই ইতিহাস থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে, চৈতন্যদেবের সাথে রামানুজ বা মিরাবাইয়ের সাক্ষাৎকারের কোন প্রমাণ ইতিহাস বা জনশ্রুতিতে নেই।
বইটির একটি বড় সমস্যা একই ঘটনা বা তথ্যের বহুবার পুনারবৃত্তি, যা অত্যন্ত বিরক্তিকর এবং উপন্যাসটির দৈর্ঘ্য বাড়িয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত উপন্যাসে এই জিনিস চোখে পড়ে না, তবে বই আকারে প্রকাশিত হওয়ার আগে প্রকাশকের এই ব্যাপারটি লক্ষ্য করা উচিত। আধুনিক গোরার কাহিনীর ব্যাপারে লেখক আরো একটু যত্নশীল হতে পারতেন, আমার মনে হলো দুটি কাহিনী খুব ভালো ভাবে মিললো না উপন্যাসের শেষে। তবে সেই সময় লেখক মরণাপন্ন ছিলেন, সেটাও কারন হতে পারে।