Zahir Raihan (Bangla: জহির রায়হান) was a Bangladeshi novelist, writer and filmmaker. He is perhaps best known for his documentary Stop Genocide made during the Bangladesh Liberation War.
He was an active worker of the Language Movement of 1952. The effect of Language Movement was so high on him that he made his legendary film Jibon Theke Neya based on it. In 1971 he joined in the Liberation War of Bangladesh and created documentary films on this great event.
He disappeared on January 30, 1972 while trying to locate his brother, the famous writer Shahidullah Kaiser, who was captured and killed by the Pakistan army. Evidences have been found that he was killed by some armed Bihari collaborators and disguised soldiers of Pakistan Army.
জহির রায়হানের লেখার সংখ্যা খুব বেশি নয়। এক খন্ডেই এটে গেল সব। তবে এই অল্পকটা গল্প এবং উপন্যাসের মাধ্যমেই তিনি নিজের স্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছেন বাংলা সাহিত্যে। তার সবগুলো লেখা সমানহারে ভালো না হলেও বাজে লেখা চোখেই পড়ে না। সাহিত্যে এই ধারাবাহিকতা অনুসরণ করাটা বেশ দুষ্কর ব্যাপার। তার গদ্য সাদামাটা, রূপকের ব্যবহারও নেই বললেই চলে। কিন্তু নিয়মিতই মনস্তাত্ত্বিক অন্তর্ভেদী বিশ্লেষণ এবং মধ্যবিত্তের টানাপোড়নের গল্প তার লেখায় দেখা গিয়েছে।
এ সমগ্রটা পড়তে পারা একধরণের তৃপ্তির জন্ম দেয়। আক্ষেপ বলতে আরো কটা দিন যদি বাচতেন তিনি, আরো কটা লেখা যদি পাওয়া যেত!
'বরফ গলা নদী' আমার পড়া অন্যতম সেরা বাংলা উপন্যাস। বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের হাসি, কান্না, অভিমান চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন।৫২ এর ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত একটি উপন্যাস 'আরেক ফাল্গুন'। জহির রায়হান শহরের প্রেক্ষাপটে যেমন লিখেছেন, তেমনি গ্রাম বাংলার জীবনের কথা ও সুনিপুণ ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন 'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসে। এছাড়াও তার অন্যান্য উপন্যাসে ও একই ভাবে জীবনের কথাই ফুটে উঠেছে।
• কল্পনাতেই যেরকম গম্ভীর, ভঙ্গুর হয়ে পরি চিন্তাধারায়, যখন জানা হয় কল্পনায় অঙ্গন করা চিত্র এবং চরিত্র গুলো অতীতে ঘটে আসা স্মৃতির অংশ, অর্থাৎ বাস্তবে ঘটেছিল ! সে দৃশ্য পূণরায় স্মৃতিচারণ করতে চোখের কোণায় পানি চলে আসে, পূণরায় ভাবতে সত্তা বাধা দেয় । সে কল্পনা আমি কিভাবে করবো, যেখানে স্বামীর সামনে থেকে তার স্ত্রীকে-কুমারি মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়েছে, ধ'র্ষণ করেছে, উলঙ্গ করে অত্যাচারে মেরে ফেলেছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা ! স্বামী-ভাই-সন্তানদের স্ত্রী-মা-বোন-কন্যার সঙ্গে হওয়া মর্মান্তিক দৃশ্য স্বচক্ষে দেখতে হয়েছে । নয় তো পিশাচ দল তুলে নিয়ে যাওয়া মানে নরপশুর মতো তাদের ভোগ করবে অনেকটাই নিশ্চিত থাকতে হয়েছে ! এই বেদনার অংশীদার আমি মোটেও হতে পারবো না । তাইতো আমার সত্তা আমাকে বাধা দেয় আবারও ভাবতে, কি হয়েছিলো তাদের সঙ্গে । ছেলে হয়েও প্রচন্ড রকম ঘৃণা করি একটা মেয়ের ধ'র্ষণ হওয়াকে । আর যদি জানতে পারি নারী নিজেই কু'কুরের সামনে নিজেকে খাদ্য স্বরূপ লেলিয়ে দেওয়ার মতো চলাফেলা করায় সে কু'কুর গুলো ধরে নিয়ে ধ'র্ষণ করে দিয়েছে, সে ক্ষেত্রে ঐ নারীকেই পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য মনে করি, মনে হয় বিশ্ব থেকে একটা বোজা কমে এসেছে ! • জহির রায়হানের প্রতিটা লেখা, বিশেষ করে উপন্যাস ও গল্প গুলো দারুণ ভাবে মুগ্ধ করেছে আমাকে । আজকাল অনলাইনে অখাদ্যকর বইগুলোই বেশির ভাগ উচ্চা-আলোচনায় উঠার কারণে মানসম্মত বই খুঁজে বের করা খুবই কষ্টকর হয়ে যায়, বিশেষ করে নতুন পাঠক-পাঠিকাদের জন্য । তবে ভাগ্যক্রমে জহির রায়হান সেসব দুর্ভাগা-লেখকদের তুলনায় কিছুটা সৌভাগ্যবান আছে, কারণ অনেকেই জহির রায়হানকে চিনে । সে জন্য এনার লেখালিখি কম-বেশি টুকটাক আলোচনায় আসে । • জহির রায়হানের উপন্যাস 'হাজার বছর ধরে' বইটা প্রথম পড়েছিলাম । বেড়াতে যাওয়া ভাইয়ের বউকে তার বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে আসার সময় নদীতে পানি কমে আসায় বাজারে স্থির হতে হয়েছিলো । সেসময় সার্কাস দেখে নৌকায় ফিরে আসার বেলায় পরিচিত দোকানদার আপ্যায়নের খাতিরে ভুলে যখন উপস্থিত প্রধান দুই-চরিত্রকে মিয়া-বিবি মনে করে ফেলে, সেটার স্বাভাবিক সংশোধন না করে চুপ মেরে থাকাটা বড্ড বিরক্তি লাগে আমার । পরিস্থিতিটা কেমন খাপছাড়া লেগেছিলো আমার কাছে । এ ব্যতীত বাকি কোনো অংশেই আর মন্দ লাগেনি । 'বরফ গলা নদী' উপন্যাসে নারীটার জীবনী... মুক্তিযুদ্ধের সময়কার দুঃখে ভরা হাহাকার ঘটনা গুলো বাস্তব উপলব্ধির মতো মনে দাগ কেটে যাওয়া... । অন্যান্য উপন্যাস এবং গল্পগুলো একে-অপরের সঙ্গে তুলনার কোনো অংশেই কম নয় । সর্বশেষে জহির রায়হানের কবিতাটি ভাবনার স্তরে গভীর ছাপ রেখে যায় ।
যে অল্প কয়জন মানুষ চলচ্চিত্র এবং সাহিত্যকে যুগপৎ অবদানে সমৃদ্ধ করেছেন তাঁদের মধ্যে জহির রায়হানের নাম উপরের সারিতে। তিনি এখনো প্রাসঙ্গিক। পত্রিকার সাহিত্য পাতায় তাঁঁর উপন্যাস বা চলচ্চিত্র কিংবা জীবনী নিয়ে আলোচনা ছাপানো হয়, তাঁর কৃতকর্মের উপর এখনো বই বের হয়। তাঁর বইগুলো এখনো বাঙালি পাঠকদের বুকশেলফে শোভা পায়। সম্প্রতি অনুপম থেকে প্রকাশিত জহির রায়হান রচনাসমগ্র পড়ার সুযোগ হল, সেই সুবাদে তাঁর লেখা নিয়ে দু'টো কথা বলেই ফেলি।
জহির রায়হানের প্রথম উপন্যাস শেষ বিকেলের মেয়ে। তাঁর লেখা অন্যান্য উপন্যাসের তুলনায় এর গাঁথুনি অনেকটাই দুর্বল বলে মনে হয়েছে। কেউ যদি ধারাবাহিকভাবে উপন্যাসগুলো পড়তে থাকে তাহলে সহজেই বুঝতে পারবে যে দিনে দিনে লেখকের লেখায় অনেক ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
হাজার বছর ধরে লেখকের কালজয়ী উপন্যাস। এটি পাঠ্য হিসেবেও ছিল। বরাবরই এর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে এই উপন্যাস পড়ে শিক্ষার্থীরা পরকীয়া শিখবে। কিন্তু যে প্রেক্ষাপটে উপন্যাসের অবতারণা সে আগে বুঝতে হবে। কয়েকটি মৃত্যু খুবই ছোটো একটা উপন্যাস। কিন্তু ব্যাক্তিগতভাবে বেশ মজা পেয়েছি পড়ে।
জহির রায়হানের গল্পগুলোও অনেক অসাধারণ এবং উপন্যাসের তুলনায় বেশ আন্ডাররেটেড। এর মধ্যে '৭১ এ প্রকাশিত কয়েকটি সংলাপ গল্পটির ভাব এখনো প্রাসঙ্গিক। '৭১-এ যে উদ্দেশ্যে একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত হত, এখনো সে উদ্দেশ্যেই হয়। অথচ একুশের উদ্দেশ্য কী এরকম ছিল?
একুশে ফেব্রুয়ারির কথা ঘুরেফিরে বহুবার জহির রায়হানের বিভিন্ন গল্পে-উপন্যাসে এসেছে। কখনো কখনো বাহুলতা লেগেছে, কখনো যৌক্তিক। তাঁর আরেকটি অসাধারণ গল্প হল বাঁধ এবং এই গল্পের প্রাসঙ্গিকতা আজও আমাদের দেশে বিদ্যমান।
সবাই হয়তো বলতে পারে জহির রায়হানের সেরা সাহিত্যকর্ম একুশে ফেব্রুয়ারী। কিন্তু আমার কাছে সেটা আরেক ফাল্গুন। আর আর ফিকশনের মধ্যের সেরা আমার কাছে, হাজার বছর ধরে। এই বইয়ে লেখক যেভাবে গ্রাম-বাংলাকে তুলে ধরেছেন, সেটা সত্যিই অতুলনীয়! আর উনার সব রচনা একসাথে পাওয়ায় আমার মতো অনেকেরই উপকার হবে।
জহির রায়হানের লেখনী সবসময় ভালো লাগে। ভালো লাগে তার জীবনের উপস্থাপন। অনেকদিন ধরেই একটা কথা ভাবছিলাম, এবার আবার জহির রায়হান পড়তে বসে ভাবনাটা পোক্ত হল। জহির রায়হানের লেখায় বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজের জীবনে নারী আর পুরুষ চরিত্র গুলোর কিছু সাধারণ ব্যাপার আছে, যেমন মা শ্রেণীর বয়ষ্কা নারী মানেই আটপৌরে, নিরীহ গোছের, যার জীবন কাটে রান্না ঘরে আর ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করে, বিপদের আশংকায় সর্বদা সংকিত হয়ে। কিন্তু কিছু শিক্ষিতা আধুনিকারও দেখা মেলে, আশ্চর্যজনকভাবে এই শিক্ষিতা তরুণীগুলো যে সাধারণকে প্রতিনিধত্ব করেনা, তা প্রকটভাবে প্রকাশ পায় তাদের কথায় চিন্তায় সমস্ত ভাবে, বিশেষ করে জহির রায়হানের উপস্থাপনে। তারা অন্ধকার আকাশের ধুমকেতু, জ্বলে ওঠে বটে, আশা জাগায়, কিন্তু খুব বেশী কিছু পালটায় না।
আরো আছে, বিপ্লবী মানেই হল তরুণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, একটা কমিউনিটি লাইফে টগবগ করা রক্ত, যারা যুগ বদলের হাতিয়ার। তারা লড়ে শাসকের বিরুদ্ধে আর ভীরু পিতামাতার ভয়কে উপেক্ষা করে। সবচেয়ে নিষ্ঠুর ভাবে তিনি একেছেন বাঙ্গালী পুরুষের মেরুদন্ডহীনতার চরিত্র। বিশ্ববিদ্যালয় উর্ত্তীর্ণ যে পুরুষ চাকরি নামক যন্ত্রে ঢুকেছে, তাদের প্রায় কারোরই মেরুদন্ড বলে কিছু নেই। তারা নির্লজ্জের মত কাপুরুষ, উপরস্থ কর্মকর্তার চাকর অথবা চাটুকার। ভাগ্যের চাকা ছাড়া তাদের জীবনে আর কিছু নেই, না প্রেমে, না আদর্শে। ঘরের মধ্যে দূর্বল নারীর উপর হম্বতম্বি করতে পারে, সেই নারীদের উপর যারা সহস্র বছরেও কোনদিন ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেনি, কিন্তু বাইরে বেরুলেই এই পুরুষেরা ভেজা বেড়াল, গা বাঁচিয়ে চলা মেরুদন্ডহীন কতগুলো প্রাণীর মত কুঁইকুঁই করে ঘুড়ে বেড়ায়। প্রায় ৩০ থেকে ৮০ বছর বয়সী এই পুরুষগুলোর একটাই পরিচয়, তারা মানুষ হিসেবে পরাজিত। ২৫এর টগবে আগুন যেন ৩০ এ এসে পঁচে গেছে, তা থেকে একখন দূর্গন্ধ বেরুচ্ছে, পরাজয়ের দুর্গন্ধ, মেরুদন্ডহীনতার দুর্গন্ধ, এদের সবার যেন কবেই আদর্শিক ম্ররুত্যু হয়ে গেছে।