Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
হুমায়ূনের বিজ্ঞান কল্পগল্পে আসিমভ ঢুকে যায়, খুব ইতিবাচকভাবে। হুমায়ূনের এই ধরনের লেখা পড়লে বোঝা যায়, তার বিশ্বমানের সাই-ফাই লেখক হওয়ার ক্ষমতা ছিলো। কিন্তু এই ক্ষমতা কাজে লাগাতে তিনি খুব একটা উৎসাহিত ছিলেন না। কেন যে ছিলেন না!
২০০৫ সালের মহা ধ্বংসযজ্ঞের পর পৃথিবীকে সাজানো হয়েছে নতুন করে। তিনটি দৃশ্যমান স্তর: প্রথম শহর, দ্বিতীয় শহর, তৃতীয় শহর এবং শহরে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা নয় কোটির কিছু উপরে। তবে বিজ্ঞান চর্চার কোনো সুযোগ নেই পৃথিবীতে কেননা বর্তমান পৃথিবী পরিচালনাকারী চল্লিশ অমর বিজ্ঞানীদের ধারণা বিজ্ঞানের অনিয়ন্ত্রিত চর্চার জন্যই পৃথিবী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছিলো।
হুমায়ূন আহমেদের লেখায় একটা অদ্ভুত সারল্য আছে। পড়লাম সায়েন্স ফিকশন কিন্তু তেমন মনে হয়নি। আসলে আমার দুর্ভাগ্য যে আমি কৈশোর পেরোনোর পর মুজাই'র সাইফাই বই পড়েছিলাম, আপাদমস্তক যান্ত্রিক এবং একঘেয়ে!
“And they lived happily (aside from a few normal disagreements, misunderstandings, pouts, silent treatments, and unexpected calamities) ever after.” ― Jean Ferris
আমার ছোটবেলার আনন্দদায়ক স্মৃতি গুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে আমার বাবা আর আম্মুর সাথে শপিং করতে যাওয়া। না, আমি কোন কালেই শপেহোলিক ছিলাম না। ছোট ছিলাম আর চট্টগ্রামে অন্য কোন আত্মীয় স্বজন না থাকায় বাধ্য হয়েই আম্মু আব্বু আমাকে সাথে নিয়ে শপিং এ বের হতেন আর আমি সারা মার্কেট তাদের কানের পাশে ঘ্যান ঘ্যান করতাম। তো এ সমস্যার সহজ সমাধান হিসেবে আমার বাবা মা আমাকে মিমি সুপার মার্কেটের নীচ তলায় বাবার পরিচিত বই এর দোকানটাতে বসিয়ে রেখে যেতেন আর আমি মনের সুখে ছোট দোকানটার বড় সংগ্রহের বই গুলো পড়তাম। এখনকার সময়ে রেস্টুরেন্ট গুলোর বুফে লাঞ্চ বা ডিনারের অফারগুলোর চেয়ে বোধ করি ঐ বই এর বুফে আমার জন্য সবসময়ই অপেক্ষাকৃত রোমাঞ্চকর ছিলো! দুইটা বই কিনে এক দেড় ঘন্টায় যা খুশি পড়ার সুযোগ! এর কোন তুলনা হয় না কি?! কোন আশ্চর্য নাই যে আমি আমার ছোটবেলাটাকে অনেক মিস করি!
তো ঐ অনেক গুলো বই এর মধ্যে যা কিছু বই আমার মনে সত্যিকার অর্থে দাগ কেটে গিয়েছিল, এবং এখনো মন ভরিয়ে যায়, তার মধ্যে একটা এই ‘ইরিনা’। এ বইটাকে সম্ভবত ডিস্টোপিয়ান সাইন্স ফিকশন জনরায় ফেলা যায়। হুমায়ুন আহমেদ আরও অনেক দিন বেঁচে থেকে আরও অনেক বই যদি লিখতেনও, তারপরেও আমার মনে আফসোস থেকে যেত যে তিনি যদি আরও অনেকদিন লিখে যেতে পারতেন, তবে বেশ হত! আর সেদিন ইরিনা পড়ে ভাবছিলাম, তিনি এত অল্প বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লিখে গেলেন কেন? মুহাম্মদ জাফর ইকবাল সহ অন্য আর যে ক’জন লেখকের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী আমি পড়েছি, সেগুলোর বেশিরভাগের মধ্যেই কেমন যেন একটা ধাতব বা রোবোটিক ভাব থেকে গেছে বলে মনে হয়েছে। কিন্তু হুমায়ুন আহমেদের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পড়ে সবসময়ই মনে হয়েছে, নাহ, মানুষের গল্পই পড়ছি।
ছোট থেকে বড় হতে হতে প্রত্যেক মানুষই সম্ভবত কিছু দার্শনিক প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে। আমরা কোথা থেকে এসেছি, কেন এসেছি, জীবনের উদ্দেশ্য কি এই সব হাবিজাবি। তবে এদের আগে সম্ভবত মৃত্যু সম্পর্কিত চিন্তাটাই মানুষকে সবার আগে, সবচাইতে বেশি নাড়া দেয় স্বাভাবিকভাবেই, যেহেতু, মৃত্যুই জীবনের সবচাইতে বাস্তব বিষয়। আর কাঁচা বয়সে মৃত্যু বিষয়ক ভাবনাটাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর! একসময় আমি মারা যাবো, আমার বাবা, মা, ভাই, বোন মারা যাবে, ভেবে হুমায়ুন আহমেদের মতই বলতে ইচ্ছা করে, কোন মানে হয়!. আশপাশের মৃত্যু দেখে আমার মনে হয়েছিল সবচেয়ে ভাল হত যদি কেউ মারা না যেত। আমরা সবাই চিরকাল ধরে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকতাম। এর চাইতে সহজ সমাধান আর কি থাকতে পারে! কিন্তু আমার সেই চিন্তা একটা নাড়া খেয়েছিল যখন এ বইতে অমর মানুষদের একজন চিঠি লিখে গেলেন,
‘দীর্ঘ জীবন কাটালাম। জীবন এত ক্লান্তিকর কল্পনাও করিনি। কোথাও বিরাট একটা গন্ডগোল হয়েছে। মনে হচ্ছে সমস্তই ভুল। শেষ লাইনটা লাল কালি দিয়ে দাগানো। তিনি বিড়বিড় করে বললেন, মনে হচ্ছে সমস্তই ভুল। এই বাক্যটা তাঁর মাথায় বিঁধে গেল। তিনি বারবার বলতে লাগলেন, মনে হচ্ছে সমস্তই ভুল, মনে হচ্ছে সমস্তই ভুল, মনে হচ্ছে সমস্তই ভুল।‘
তবে বইটার গল্পটা কিন্তু কোন জটিল কিছু নয়। ২০০৫ সালের মহা ধবংসযজ্ঞের পর পুরো পৃথিবীর সমাজব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছেন চল্লিশজন অমর বিজ্ঞানী। চালু করেছেন প্রথম, দ্বিতীয় আর তৃতীয় শহর ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা। এই সমাজে সাধারণের জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চা নিষিদ্ধ। কারণ, প্রাচীন পৃথিবীর উন্মুক্ত জ্ঞা�� ভিত্তিক সমাজ মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। তাই এই নতুন সমাজে জ্ঞানের চর্চা করবেন যোগ্য কিছু মানুষ আর রোবটেরা। কিন্তু তা কি আসলেই মানুষকে রক্ষা করতে পারবে?
হ্যা বইটার কাহিনীটা অনেক সহজ। কিন্তু বইটা আমার ভালো লেগেছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। যেহেতু এটা পড়ে আমি নতুন কিছু ধারণা পেয়েছিলাম, নতুন ভাবে চিন্তা করতে শিখেছিলাম এবং খুব ভালো ভাবে প্রভাবিত হয়েছিলাম তাই এ বই সবসময় আমার প্রিয় বই এর তালিকাতেই থাকবে। এর আগ পর্যন্ত আমার জীবনের লক্ষ্য ছিলো প্রফেসর শঙ্কুর মত টিকটিকির ডিম আর আরো কিছু উদ্ভট জিনিসপাতি মিশিয়ে ততোধিক উদ্ভট কিছু আবিস্কার করা। ‘ইরিনা’ পড়েই সম্ভবত ‘সিরিয়াস’ কিছু পড়া শুরু করেছিলাম। মানুষ যদি হঠাৎ করে অমর হয়ে পড়ে তাহলে কি তার জীবনের আর সব উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যায়? বেঁচে থাকলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়? আপাতঃ দৃষ্টিতে যা ভালো মনে হয় তা কি আসলেই আমাদের জন্য ভালো? এক আজব জীব আমরা, আমরা যে কি চাই সেটা সম্পর্কেই কেন যেন মনে হয় আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি! পড়া শেষ হবার পর ভেবেছিলাম, মানুষের জন্য কোন সমস্যার চিরন্তন সমাধান বলে কোন কিছু থাকা উচিত নয়। একেবারে সংকটহীন জীবন মানুষের কাছে সবসময়ই ক্লান্তিকর ঠেকবে। মানুষের শেষের শুরুটাও হবে ওখান থেকেই। এইচ। জি। ওয়েলস এর ‘দ্য টাইম মেশিন’ পড়েও একই ধরণের চিন্তার উদ্রেক হয়েছিল। আর সে কারণেই রূপকথার চিরসুখী শেষটাও আসলে কোন সমাপ্তি নয়। এরপরই আবার শুরু হয় নতুন কোন সংঘাত আর এভাবেই চলতে থাকে নতুন কোন জীবনের কথকতা।
আসিমভ আমার অসম্ভব প্রিয় লেখক, হুমায়ূনও তাই। এই বইটা আগেও পড়েছি, আবারও পড়লাম নিছক আনন্দের জন্য। আসিমভের কথা বললাম, কারণ হুমায়ূনের সায়েন্স ফিকশন পড়তে গেলে আমি আসিমভের ছায়া দেখতে পাই, এই ছায়াটা অবশ্য পজেটিভ। তবে আসিমভের ছায়াসঙ্গী হয়েও হুমায়ূন আলাদা, কারণ হুমায়ূন সায়েন্স ফিকশনের মধ্যেও তৈরি করতে পারেন এক অদ্ভুত মায়ার জগত। সে জগতে আমাদের সিসিডি'র জন্য খারাপ লাগে এবং 'তাঁর' জন্য আরও একটু সময় প্রার্থনা করতে ইচ্ছে হয় আর পড়তে পড়তে আবারও পাঠক আমার মনে হয়, হুমায়ূন অনবদ্য। হুমায়ূন বড় লেখক।
অমরত্ব আর ত্রুটিহীনতা— যুগে-যুগে এই দুইয়ের সন্ধানে এক অনন্তযাত্রায় শামিল হয়েছে মানবসমাজ। এই উপন্যাসের কাহিনিও তেমন এক সমাজের। বিপর্যয় ও ধ্বংসের পর তাদের নতুন পথচলার একমাত্র লক্ষ্য এই ত্রুটিহীনতায় উত্তরণ— যে পথের শেষে আছে অমরত্ব। কিন্তু এই আপাতদৃষ্টিতে নিয়মতান্ত্রিক, অজস্র নিষেধাজ্ঞার বাঁধনে বন্দি সমাজে একটি উনিশ বছর বয়সী মেয়ে— ইরিনা হঠাৎ ডাক পেল তার গণ্ডির বাইরে কোথাও। তার মাধ্যমেই শুরু হল সমাজটিতে এক অদ্ভুত টানাপোড়েন। চাওয়া আর পাওয়ার সেই দ্বন্দ্ব ক্রমেই গ্রাস করতে লাগল কঠোর নিয়মগুলোকে। তারপর? এই গল্প কল্পবিজ্ঞানের নয়; বরং বিজ্ঞানোত্তর এক সমাজের— যেখানে বিজ্ঞানের স্থান নিয়েছে অভ্যাস আর নিয়ম। এই ডিস্টোপিয়ার সাম্যাবস্থা কীভাবে একটি মেয়ের সহজ উপস্থিতির মাধ্যমে বিপন্ন হল, তাই নিয়েই লেখা হয়েছে উপন্যাসটি। ভালো লেখা— যা আমাদের ভাবতে বাধ্য করে ত্রুটিহীনতা ও অমরত্বের সন্ধানে যাত্রার সার্থকতা নিয়েই। সুযোগ পেলেই পড়ে ফেলুন।
1st read: 12 jan 2017 (3 stars) ডিস্টপিয়ন সায়েন্স ফিকশন। হাঙ্গার গেমস পড়ার আগে যদি এই বইটা পড়তাম তাহলে আরও অনেক বেশি ভাল লাগত নিশ্চিত। তবু এটা স্বীকার করতেই হবে যে মাত্র ৮৮ পৃষ্ঠার এই ছোট্ট বইতে হুমায়ূন আহমেদ, এক বিবর্ণ ভবিষ্যৎ এর যে বিশদ চিত্র তুলে ধরেছেন তা অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
2nd read: 16 jan 2025 (5 stars) আগের বার এর রিভিউ টা দেখে এবার বুঝলাম খুব একটা মনোযোগ দিয়ে পড়া হয় নি তখন । এবার এর অনুভূতি একটু অন্যরকম। এক বসায় গল্পটা শেষ না করে পারলাম না। গল্প পড়ার সময় অর্ধাঙ্গিনীর আগ্রহপুষ্ট কথাবার্তা ও বিরক্তির উদ্রেক করেছে। এতোটাই নিবিষ্ট থাকতে চেয়েছে মন গল্প টা পড়ার সময় ।
ছোট ছোট বেশ কয়েকটা টুইস্টের উপর ভর করে লেখক বড় একটা টুইস্টের নিখুঁত সমাপ্তি টেনেছেন। Hats off to that !!!!
অনেক বছর আগে কলেজের লাইব্রেরীতে বসে বসে শেষ করেছিলাম ইরিনা। মানুষ অমরত্ব লাভ করলে বেঁচে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে, এই ব্যপারটি আমাকে অনেক বেশি অভিভূত করেছিল তখন। হুমায়ূনের সকলের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীগুলোর মাঝে এটিই আমার খুব প্রিয়।
বছরের পর বছর বেচে থাকা হয়তো আসলেই কঠিন। অমরত্বের স্বাদ পাওয়ার পর ক্লান্তি ঘিরে ধরে মানুষকে, মৃত্যু হয় প্রথমে আত্মার, আস্তে আস্তে শরীরের।
অথচ এই স্বল্প জীবনে আমি অসংখ্য বই পড়তে চাই যা হয়ত আমার জন্য বরাদ্দকৃত সংখ্যা থেকেও বেশি। তবুও এর মাঝে হুমায়ূন স্যারের বই বার বার পড়তে চাই! গুনতেও চাই না কতবার রি-রিড হচ্ছে। ইরিনা হয়তো এর আগে আরো গোটা ৫ বার পড়া হয়েছে, তার পরও এখনো যেন একটা বিন্দু পরিমান আরষ্ঠতা অনুভব হয়নার বার বার পড়ছি বলে। উল্টো বেশিই ভালো লাগে!
এই উপন্যাসের একটি আকর্ষণ হতে পারে হুমায়ূন আহমেদের করা Three Men in a Boat বইটির কিছু অংশের অনুবাদ। এটি একটি 'মশলা' জাতীয় বই। বই পড়ে হেসেছি, অবাক হয়েছি এবং মাঝে মাঝে মন খারাপ করেছি।
ডিস্টোপিয়ান পৃথিবীর গল্প পড়তে গেলে সবসময়ই মনে হয় গল্পগুলো খুব দূরের ভিন্ন জগতের, যার সাথে ঠিক কানেক্টেড ফীল করিনা। কিন্তু এ বইটিতে সে সমস্যা হয়নি, কারণটা অবশ্যই হুমায়ূন আহমেদের অতিপরিচিত লেখনী। ভালোই, তবে কিছুবিষয় বেশ বেশ 'কচি কচি' টাইপ লেখা লাগলো৷ যেমন: এক অংশে গল্পের নায়ক মীর, নায়িকা ইরিনাকে ডেকে বললো, "এসো চুমু খাই"। ইরিনা তাকে চড় মারলো, আবার কিছুক্ষণ পরেই ইরিনার মনে হতে লাগলো মীর চুমু খেতে চাইলে সে না করবে না! সায়েন্স ফিকশনের মধ্যে এসব ন্যাকামো কেনো?
Didn't know Humayun Ahmed was such a good sci-fi author. It was an amazing book to read when one is free. The chemistry between the characters Irina and Mir were in fact very thoughtfully written. This deserves to be translated in English and be published worldwide with a few modifications. Loved reading the entire book!
ডিস্টোপিয়া সাহিত্যের কোনো পূর্ণ সমাপ্তি আছে কি না আমার জানা নেই। এটা এমন এক ঘরনা, যেখানে গল্প শেষের পরেও অনেক কারণ-কিন্তু-কেন থেকে যায়। তা হতে পারে মন্দের ভালো অথবা মন্দ কাটিয়ে ভালো। তবে ইরিনা গল্পের সমাপ্তি যেখানে হয়েছে আমি সন্তুষ্ট। সব যদি লেখক বলে দেন, তাহলে পাঠক ভাবনার জায়গাটা কোথায়? গল্প মানুষকে ভাবাবে, তবেই না সেই গল্প পূর্ণতা পাবে। কল্পবিজ্ঞান তেমনই একটি জনরা। যেখানে কল্পনার ডালপালা প্রচুর। ঠিক একটি প্রাচীন গাছের কাণ্ডগুলোর মতো। যেখানে অসংখ্য কাণ্ড, আপনি কোনটায় বেছে নিয়ে বসবেন─তা আপনার নিজস্ব পছন্দ। ডিস্টোপিয়ায় সব ক’টি শূন্যস্থান লেখক পূরণ করেছেন। তবে মানবিকতার গল্প এখানেও বেশি। যে অমরত্ব পেতে মানুষ হন্য হয়ে ঘুরে, তারা জানে না এর পরিণাম কতটা কষ্টদায়ক। যাহোক, কল্পবিজ্ঞানে ডিস্টোপিয়া জগৎ নিয়ে যাদের আগ্রহ, এই গল্পটি তাদের জন্য। সহজ-সরল ছিমছাম গল্প। ভাবনার খোড়াক রয়েছে গল্পে। তবে প্লট অনুযায়ী সহজ। রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ খুব বেশি নেই, এমনকি নেই খুব সংকটপূর্ণ কোনো কিছু।
হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ অমরত্বের সন্ধান খুঁজে চলেছে। কিন্তু অমরত্ব কি আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ? মানুষ বেঁচে আছে অনিশ্চয়তার উপর নির্ভর করে। ভবিষ্যতে ভালো কিছু পাওয়ার আশায় সে অক্লান্ত পরিশ্রম করে। সময় কম। এ জীবনে যা করার জলদি করে যেতে হবে। কিন্তু সময় যখন আর তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে না, তখন কি সে কাজ করার তাগাদা, আনন্দ খুঁজে পাবে? কষ্ট আছে দেখেই আমরা আনন্দ অনুভব করতে পারি। হুমায়ুন আহমেদ এই বিষয়টি খুব স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। মানুষ কৌতূহলী। সে যা দেখে, সেটা থেকেই সে শিখতে চায়। কিন্তু কেমন হতো যদি তাদের জন্য কৌতূহল প্রকাশ নিষিদ্ধ করে দেয়া হতো? কেমন হতো যদি ভালোবাসা কখনও পূর্ণতা না পেতো? উপন্যাসটিতে শেষ দিকে একটি টুইস্ট আছে। আপাতদৃষ্টিতে আমরা এআই বা কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পৃথিবীকে নিয়ে লেখা যেসকল সাইন্স ফিকশন পাই, সেই আন্দাজ করে এই উপন্যাস পড়তে থাকলে ভুল হবে। যুক্তিতর্ক নির্ভর আলোচনা এবং টুইস্টই পেরেছে এটিকে একটি সার্থক সাইন্স ফিকশন হতে পরিপূর্ণতা দান করতে।
চল্লিশজন বিজ্ঞানী অমর হওয়ার ওষুধ আবিষ্কার করে।তারা মাটির নিচে একটি গবেষণাগার তৈরি করে নিজেদের সাধারণ পৃথিবী থেকে আলাদা করে ফেলেন। ঔষধ ব্যবহার করে তারা সবাই অমর হয়ে যান কিন্তু একটি সমস্যা দেখা দেয়। তাদের বংশ বৃদ্ধির ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। একসময় পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা মাটির নিচের বিজ্ঞানীদের গবেষণা সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে পরে, তাদের গবেষণার বিষয় জানতে চায়। তখন অমর বিজ্ঞানীরা তাদের নিয়ন্ত্রিত সুপার কম্পিউটা সিডিসিকে ব্যবহার করে নতুন এক নিয়ন্ত্রিত পৃথিবী তৈরি করার জন্য পুরনো পৃথিবী ধ্বংস করে দেয় পারমানবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে। বিস্ফোরণ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের নিয়ে তারা তিন স্তর বিশিষ্ট নতুন সমাজ ব্যবস্থা চালু করে। প্রথম স্তরের লোক সমস্ত নিয়মকানুন মেনে চলতে পারলে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে দ্বিতীয় স্তরে যেতে পারে। প্রথম স্তরে প্রচুর কাজ করতে হয়, কিন্তু খাদ্যের পরিমাণ কম। দ্বিতীয় স্তরে কাজের পরিমাণ খুবই কম আর আরাম আয়েসের কোন কমতি নেই। তৃতীয় স্তরে চাইবা মাত্র সমস্ত সুযোগ সুবিধা হাজির হয়ে যায়। আরেকটি আছে নিষিদ্ধ স্তর যেখানে অমর বিজ্ঞানীরা থাকে। সেটা সম্পর্কে কোন আলোচনা করা সম্পূর্ণ নিষেধ।বিজ্ঞাবীদের মধ্যে বেঁচে আছে মাত্র ৯ জন। কয়েকশো বছর মাটির নিচে থাকার পর একজন অমর বিজ্ঞানী পৃথিবীর আলোবাতাসের সংস্পর্শে আসার পরেই মারা জান। তারপর নিষিদ্ধ নগরীতে পৃথিবীর আলোবাতাস প্রবেশের সমস্ত ব্যবস্থা সিডিসি বন্ধ করে দেয়। সিডিসি নিজে নিষিদ্ধ নগরীর বাতাস পরিশুদ্ধ রাখার প্রোগ্রাম পরিচালনা করে।সিডিসি প্রথম স্তরের দুজন তরুণ তরুণীকে নিষিদ্ধ নগরীতে নিয়ে এসেছে। তরুণটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানের ছেলে মীর, আর মেয়েটি অতি সাধারণ ইরিনা। এদের আনার পিছনে সিডিসির সূক্ষ্ম একটা চাল আছে। পরে সিডিসি নিরাপত্তা প্রধানকেও নিষিদ্ধ নগরীতে নিয়ে আসে, তার সাথে আছে ভয়ঙ্কর এক ব্লাস্টার। একমাত্র সজাগ অমর বিজ্ঞানী বুঝতে পারেন সিডিসির চক্রান্ত। সিডিসি তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নিরাপত্তা প্রধানের ছেলেকে হত্যা করবে। এতে নিরাপত্তা প্রধান রেগে গিয়ে অমর বিজ্ঞানীদের হত্যা করবে।অমর বিজ্ঞানী নিরাপত্তা প্রধানকে ডেকে কথা বলে সিডিসির চক্রান্ত বুঝিয়ে বলেন। তিনি প্রধানকে বুঝিয়ে বলেন কি করে সিডিসির মূল পাওয়ার সাপ্লাইকে উড়িয়ে দিতে হবে। বিজ্ঞানীর কথা মত নিরাপত্তা প্রধান সিডিসির মূল পাওয়ার সাপলাই উড়িয়ে দেয়। তখন সিডিসি তার সংরক্ষিত শেষ পাওয়ারটুকু ব্যবহার করে বিজ্ঞানীর সাথে কথা বলে। সিডিসি বলে তার চক্রান্ত সফল হয়েছে। আমর বিজ্ঞানীদের নিজে সে মারতে পারতো না। কিন্তু এখন সিডিসি কাজ করতে না পারার কারণে নিষিদ্ধ নগরীর বায়ু শুধন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পরেই বায়ু দুষিত হলে অটোমেটিক মেইন দরজা খুলে যাবে যাতে বাইরে থেকে আলো বাতাস আসতে পারে। আর বাইরের আলো বাতাস পেলেই অমর বিজ্ঞানীরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পরবে। তখন পৃথিবীর মানুষ আবার নতুন করে তাদের বসতি আর জীবন পদ্ধতি পরিবর্তন করে নেয়ার সুযোগ পাবে।
After many days I read a book where robots didn't want to rule over humankind rather risked their life to save humankind. The plot was both unique and interesting. Besides, I noticed that like the science fiction books of MD. Zafor Iqbal Sir , Humayun Ahmed Sir's science fictions don't tell us the same kind of story. I would like to give this book 4 out of 5 stars..
সায়েন্স ফিকশনাল বই খুব বেশি তেমন পড়া হয়নি আগে, সেহেতু বইটি আমার পড়তে কেমন লেগেছে, সেটাই ভাবতেছি!
২০০৫ সালে এক ধ্বংসযজ্ঞের ফলে, পৃথিবীকে নতুনভাবে সাজাতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে নিষিদ্ধ শহরের কিছু রোবট এবং অমরত্ব লাভ করা কিছু বিজ্ঞানি একত্রিত হয়ে।
তারা পৃথিবীকে ৩টি শহরে বিভক্ত করে। যেখানে ১ম শহরটি হতে ২য় এরপর ৩য় শহরে(নিম্ন স্তর হতে উচ্চ স্তরে) যাওয়ার জন্য কিছু নিয়মানুবর্তিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যেমন: ~অবস্থানরত মানুষেরা ��িজ্ঞানচর্চা করতে পারবে না। ~কোন ধরনের প্রশ্ন/জিজ্ঞাসা করতে পারবে না। ~পূর্ব হতে ঠিক করে দেওয়া সঙ্গীকেই বিয়ে করতে হবে ইত্যাদি। আবার, এসব নিয়মভঙ্গ করলে, মাইনাস পয়েন্ট পেয়ে, উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করতে হবে, এবং পরবর্তী শহরের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে। অর্থাৎ কঠোর কিছু নিয়মের মাধ্যমে, এবং পরবর্তী শহরে(ভালো জায়গা) নিয়ে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে, মানুষদের একটা গন্ডির মধ্যে বন্দী/সীমাবদ্ধ করে রাখা হতো।
"কিছুই ভালো লাগছে না। অমরত্ব অসহনীয় বোধ হচ্ছে। একজন মানুষ নির্দিষ্ট কিছু সময় বাঁচে। এটা জানা থাকে বলেই জীবনের প্রতি তার প্রচণ্ড মমতা থাকে। এই মমতা তাঁর নেই। জীবনকে এখন আর তিনি সহ্য করতে পারছেন না। অসহ্য বোধ হচ্ছে।" হুমায়ূন তাঁর চিরায়ত সরল ভাষায়, হাস্যরস মিশিয়ে আপন মনে লিখে গেছেন।
সাধারণত আমি জাফর ইকবাল স্যারের বই পড়ি । তবে এইবার বই মেলায় গিয়ে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সাইন্স ফিকশন সমগ্র কিনে ফেললাম। প্রথম উপন্যাস ইরিনা । পড়া শুরু করলাম । জাফর ইকবাল স্যারের সাইন্স ফিকশন পড়ে আমার অভ্যাস ; এই কারণে হয়তো ইরিনা সাইন্স ফিকশন উপন্যাসটি আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি । খুব আকারে চমকে দেওয়ার ভিতর আমাকে চমকিয়ে দিয়েছে শুধুমাত্র ডি ডি সি নামক কম্পিউটারটির মানব জাতি রক্ষা করার ব্যাপারটি...... তার পরেও দিলাম ৪ তারা 💗
একের ভিতর দুই! সায়েন্স ফিকশন সাথে প্রেমের কাহিনী। শেষটা সুন্দর ছিলো। আমার মনে হয়, হুমায়ূন আহমেদ যে ধরনের বই লিখুক না কেনো তাতে একটা ছাপ থাকবে যে বইটা ওনার লেখা। অন্য কোনো লেখকের লেখা কিনা তা মনেই আসবে না। ছোটখাটো একটা সুন্দর বই!
ভবিষ্যৎ পৃথিবী কেমন হবে সে নিয়ে তো জল্পনার শেষ নেই। লেখক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর বেশ কিছু সায়েন্স ফিকশনে আগামী পৃথিবীর চিত্রায়ন করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার যে ভবিষ্যদ্বাণীটি তিনি করেছেন তা হলো, ভাবী পৃথিবীর নিয়ন্তা হবে শক্তিশালী এক কম্পিউটার যার নাম তিনি রেখেছেন মূল কম্পিউটার বা সিডিসি। না, না এমন কিছু না যে কম্পিউটার ধরনীমাতার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মানুষের উপর কর্তৃত্ব ফলাবে! সিডিসিকে সর্বদা এই সূত্র অনুসরণ করতে হবে “মানুষের জন্য অকল্যাণকর এমন কিছু আমি করতে পারব না”। তবে মজার বিষয় হলো সিডিসির সাথে মানুষের কথোপকথন শুনে বারবার বর্তমান সময়ের চ্যাটজিপিটির কথা মনে পড়ে যায়! কেননা উভয়েরই কথা বলার ভঙ্গিমা যুক্তিনির্ভর এবং বিস্তারিত। সে যাই হোক, এখন একটা প্রশ্ন করি, কেমন হতো যদি মানুষের অমরত্বের কৌশল আবিষ্কার সফল হয়? প্রকারান্তরে কিন্তু সময়কে কব্জা করে ফেলা যাবে। যাচ্ছেতাই করে বেড়ানো যাবে কারণ কেউ কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বলবে না “সময় এবং নদীর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না”। কিন্তু তারপর? অনন্তকাল বেঁচে থাকা যদি এতোই আনন্দদায়ক হবে তবে এই ছোট্ট জীবনে আমরা আত্মহত্যা করি কেন? ইরিনা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী হুমায়ূন আহমেদ রচিত। এর মূল চরিত্র ইরিনা। ইরিনাদের সমাজ ব্যবস্থা আমাদেরই মতো। তবে তাদের পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ ত্রিশজন অমর ব্যক্তির হাতে স্থায়ীভাবে ন্যস্ত। আমাদের সমাজে যেমন তিনটে শ্রেণি রয়েছে- নিম্নবিত্ত শ্রেণী, যারা সারাদিন কলুর বলদের মতো খেটে বেড়ায়, পান থেকে চুন খসলেই লাথি ঝাঁটা খায় এবং বুকে সুদিনের আশার সঞ্চার করে; মধ্যবিত্ত শ্রেণী, নিম্নবিত্তের চেয়ে খুবই ভালো অবস্থানে রয়েছে এবং সর্বদা কিভাবে উচ্চবিত্ত হওয়া যায় সেই চিন্তায় নিমজ্জিত থাকে; উচ্চবিত্ত শ্রেণী, এরা পৃথিবীতেই তাদের জন্য স্বর্গ বানিয়ে নেয়। আর ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে এই তিন শ্রেণীর নাম দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে- প্রথম শহর, দ্বিতীয় শহর এবং তৃতীয় শহর। প্রথম শহরে খাবার-দাবার সীমিত, কর্ম ঘণ্টা ১০ঘণ্টাধিক, কঠিন নিয়ম নীতি মেনে চলতে হয় আর একটু এদিক সেদিক হলেই পদোন্নতি পেয়ে দ্বিতীয় শহরে যাবার রাস্তা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় শহর হলো প্রাচুর্য এবং আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে সর্বদা উৎসবের ঘনঘটা লেগেই রয়েছে। আর তৃতীয় শহর যেন ধরিত্রীর বুকে ছোট্ট এক ফালি অলকা! সবাই স্বপ্ন বুনে মরার আগে একটাবার হলেও তৃতীয় শহরে যাবে। আর একটা কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় কি জানেন? এইসব মানুষদের জন্য হোক না সে যে শহরেরই বাসিন্দা, বিজ্ঞানের চর্চা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এ সম্পর্কে আগ্ৰহ প্রকাশ অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়! তারা সাধারণ বীজ গাণিতিক সূত্র, ইলেক্ট্রন-প্রোটন কি কিচ্ছু জানে না! খটকা লাগছে না, “এই শাসনব্যবস্থা কি আদৌ টেকসই?”। কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ায় জানতে বইটা পড়ে দেখতে পারেন! তবে আগেই বলে রাখি এটা কিন্তু একটা কিশোরোপযোগী বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী।
বেশ অ্যাক্সাইটিং সফট সাইফাই! পোস্ট ইপোক্যালিপ্টীক; বইতে পদে পদে "বইটা ওয়ার্থ রিডীং হবে কিনা" এমন রিডার ধরে রাখার দিক দিয়ে দশে সাত। ওভারঅলেও সাত দেয়া যেতে পারে। সময়ে সময়ে বিভিন্ন সায়েন্টিফিক টুকটাক টার্মের ইউজ্যাইজ ছিলো, এই ব্যাপারটা বেশ রীচ করেছে বইকে! আমরা মানুষেরা শুধু আমাদেরই নয় - বরঞ্চ গোটা বিশ্বের তারইসাথে আমাদের সৃষ্ট আমাদেরকে ভালো রাখার সম্পদ - সভ্যতারও শত্রু। একটাসময় নিজেদের খানিকটা দূর্বল মনেহতে থাকলেই আমাদের নিজেদের ক্ষতি করে হলেও তা ফিরিয়ে আনতে আমরা মানুষজাতি দুইটা পা ভাবছিনা!
তবে একবার মনে হয়েছে, গল্পে সিন্থ আনাগেলে বেশ মজার হতো। তার অবশ্য সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও, টেইস্ট পাওয়া গিয়েছে। বইটা একটানা পড়ে ফেলা গিয়েছে। আফসোস নেই তেমন, শুধু অ্যান্ডিংটা বেমানান হয়ে গিয়েছে ; রেটিং কিছুটা বাড়তে পারতো নয়তো।
ইরিনা গল্পটা পড়ি প্লেন এ বসে। ফ্লোরিডা টু ডেনভার ফ্ল��ইট, প্লেন এ ওয়াইফাই নাই। ইরিনা আর নিশীথিনি এই সময়ে পড়েছিলাম।
হুমায়ুন আহমেদের সায়েন্স ফিকশনের একটা জিনিস বেশ ভাল্লাগে। সাধারন ফিকশনের মতই শুধু সায়েন্টিফিক জিনিসপাতি ঢুকে গেসে। পড়লে মনে হয় হিমু, মিশির আলী বা শহরের কোন মধ্যবিত্ত পরিবারের কাহিনী শুধু সময়টা ভবিষ্যতের। কাহিনীগুলা এই জন্য একইসাথে খুবই স্বাভাবিক আর অসাধারন লাগে। ইরিনা সেইরকমই। প্রায় সব লেখকের এক গল্পের কোন চরিত্রে অন্যান্য গল্পের চরিত্রের ছায়া থাকে। হুমায়ুন আহমেদের গল্পগুলোয় সেই ছায়া প্রবল। মীর চরিত্রের সাথে মিশির আলীর বেশ কিছুটা মিল আছে। ইরিনা চরিত্রটা হুমায়ুন আহমেদের অন্যান্য গল্পের সদ্য যুবতী মেয়ে চরিত্রের মতই। ১৯৮৮ সালের গল্প এইটা। সেই সময়ে এই ধরনের টুইস্ট মনে হয় না কোন বাংলা সায়েন্স ফিকশনে আছে।
সময় টা পোস্ট এপোক্যালিপ্টিক কাল। আণবিক ধ্বংসযজ্ঞের পর বেঁচে থাকা মানুষদের নিয়ে শুরু হয় ১ম শহর, ২য় শহর ও ৩য় শহর। আর তার ও সাথে যুক্ত হয় অবিনশ্বরদের শহর, নিষদ্ধ শহর...
তবে সব শহরে সুখ ও শান্তি সমান ভাবে প্রবাহিত হয় না। শহরের ধাপ যতো বাড়ে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে সুখ ও আনন্দ। সুখের জন্য শহর থেকে শহরে যাবার আশায় কাঠের পুতুলের মতো নিজেদের পরিচালনা করে সবাই। তবে তার ব্যতিক্রম ছিলো কেউ...
কেনো হলো এই আণবিক ধ্বংসযজ্ঞ? কেনো ই বা নিষিদ্ধ শহরের সবাই অক্ষয়, অবিনশ্বর? কে ই বা তারা?
জানতে ইচ্ছে হলে পড়ে ফেলা যায় বইটি৷ সময়ের ভালো ব্যবহার হবে কি না সে পড়তে পড়তে আপনি ই বুঝতে পারবেন। স্তব্ধ যান্ত্রিকতার শহরে দুজন অপরিচিতের প্রেম সবার জন্য খুব একটা অপছন্দের বিষয় হবে না আশা করি...
“কিছুই ভালো লাগছে না। অমরত্ব অসহনীয় বোধ হচ্ছে। এক জন মানুষ নির্দিষ্ট কিছু সময় বাঁচে। এটা জানা থাকে বলেই জীবনের প্রতি তার প্রচণ্ড মমতা থাকে। এই মমতা তাঁর নেই। জীবনকে এখন আর তিনি সহ্য করতে পারছেন না। অসহ্য বোধ হচ্ছে।”