সিটি ব্যাংকের আ্যসিস্ট্যান্ট ক্যাশিয়ার জনাব আলতাফ হোসেন...ছোটবেলা থেকেই বড় হয়েছেন দূর সম্পর্কের মামা বজলুর রহমানের কাছে...আলতাফ হোসেনকে তিনি ছোটবেলা থেকে খুব ভালোবাসেন বলেই যে তিনি এমনটি করেছেন সেটা ধারণা করার কোন কারন নেই...এক রকম বাধ্য হয়েই কাজটি করেছেন...কিন্তু এখন তার মনে হচ্ছে এটি ছিল মিসটেক অব দি সেঞ্চুরি... বজলুর রহমানের ছোট বোন মিনু অনেক বছর আগে আঠার দিনের জ্বরে মারা যান...মৃত্যুর পর দিন সকালে যখন বজলুর সাহেব মিনুর বাসায় খোঁজ নিতে গেলেন, তখন বাসার বাইরে থেকে শুনলেন কীসের যেন বিজবিজ শব্দ!...মিনুর লাশ যে ঘরে ছিল সে ঘরে গিয়ে দেখলেন ঘরভর্তি তেলাপোকা...হাজার হাজার বললেও কম বলা হবে - লক্ষ লক্ষ পোকা...পোকাদের মাঝখানে শান্তমুখে বসে আছে দু'বছর বয়সী আলতাফ...তার চোখে ভয় বা বিস্ময় কিছুই নেই...
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
এই বইয়ের প্রধান চরিত্র পোকাম্যান (নট পোকেমন) আলতাফ। এছাড়া পার্শ্ব চরিত্র হিসেবে আছেন আলতাফের মামী মনোয়ারা(মাঝখানে সে আবার ফরিদা হয়ে গেছিল, কার ভুল!); মামা বজলুর রহমান যিনি ভাগ্নেকে তেমন সহ্য করতে না পেরে গাধা ডাকেন; আরও আছে মামাতো বোন এবং স্ত্রী দুলারী, যাকে আমি বারবার দুলালী পড়তেছিলাম🙄 এবং দুলারী লেখকের অন্যান্য বইয়ের নায়িকাদের মতোই অতিরিক্ত সুন্দরী যাকে এই হাবাগোবা নির্বোধ পোকাম্যান আলতাফের সাথে মানায় না। তবুও দুলারীরই অতিরিক্ত আগ্রহের কারণে বজলুর সাহেব এই নির্বোধটার সাথে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
বিশেষ সতর্কবার্তা: কারোর তেলাপোকা ভীতি থাকলে এই বই এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়
আলতাফ কেন পোকাম্যান? কারণ আলতাফ সময় পেলেই পোকা পোকা করে। আই মিন পোকা নিয়ে ভাবে। আলতাফ পোকাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে এবং পোকারা ছোটবেলায় আলতাফের মায়ের ডেডবডি খেয়ে ফেলেছিল ¬_¬"
যদিও কুটু মিয়ার কথা প্রথমেই মনে পরে যায় পড়ার শুরুতেই, বা বই এর কথা মনে করতেই কিন্তু "পোকা" অনেক ভিন্নভাবে লেখা কুটু মিয়ার থেকে। কিছুটা সম সাময়িক, কিছুটা পরবাস্তবতা আর বেশিটাই যেন সাইন্স ফিকশন।
এক-এক সময় মনে হয় যে হুমায়ূন আহমেদ আসলে একটি পুরুষ (চাওয়া-পাওয়া নিয়ে চরম উদাস, জগৎ সম্পর্কে অনভিজ্ঞ, সৎ, নির্লোভ, এবং নীরব বিদ্রোহী) ও একটি নারী (নদীর মতো সহজ, প্রাণোচ্ছল, ভালোবাসতে-জানা)-কে নিয়েই সব গল্প লিখতে চেয়েছেন। মোড়কটা কখনও হয়েছে রহস্যের (যেমন মিশির আলী), প্রেমের (যেমন হিমু), বা পরাবাস্তব বিষয়ের (সেটা ফ্যান্টাসি, কল্পবিজ্ঞান, অদ্ভূত রস: যা খুশি হতে পারে)। এই গল্পটাও সেই গোত্রের, তবে পোকা, তায় তেলাপোকা আমার পছন্দের জিনিস নয় বলে তারাবাজি বেশি করা গেল না।
শেষ করলাম হুমায়ূন আহমেদের লিখা আরো একটি উপন্যাস 'পোকা'। এই বইকে হরর ফিকশন বলাটাই মনে হয় ঠিক হবে।
উপন্যাসটা আলতাফ হোসেনকে ঘিরে। যার ধারণা তিনি পোকামাকড়ের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। পোকামাকড় তাকে এই বিশ্বের সকল খবর পৌঁছে দেয়। আলতাফ হোসেন পোকামাকড়ের পাশাপাশি একজন অতি সাধারণ মানুষ। মামাতো বোনকে বিয়ে করে ঘরজামাই থাকেন। পাশাপাশি চাকরিও করেন। কিন্তু তার এই পোকামাকড়ের গল্পে বাড়ি থেকে শুরু করে অফিসের মানুষ পর্যন্ত বিরক্ত সাথে হতবাক। এখন কথা হচ্ছে, আলতাফের কি আসলেও পোকামাকড়ের সাথে যোগাযোগের ক্ষমতা আছে? নাকি তিনি মানসিক রোগী? নাকি ভান করছেন? জানতে হলে পড়ে ফেলুন এই অদ্ভুত উপন্যাসটা।
আমার কাছে ভালো লেগেছে। অনেকের কাছেই এই বই খুব একটা ভালো লাগেনি। তবে, আমার ভালো লেগেছে। হুমায়ূন আহমেদ অদ্ভুত অদ্ভুত বিষয়গুলাকে যেভাবে ফুটিয়ে তোলেন তা যেকোনো পাঠককে অবাক করে দিতে বাধ্য। আমিও অবাক হয়েছি। ভালোও লেগেছে। মোদ্দা কথা, পোকামাকড় নিয়ে ভয় না থাকলে নির্দ্বিধায় পড়ে ফেলুন। আশা করি ভালো লাগবে।
হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাস সমগ্র আছে — 'অদ্ভুত সব উপন্যাস' নামে...উপন্যাসগুলোর নামগুলোও একটু অদ্ভুত — 'পোকা', 'কুহক', 'নি', 'শূন্য' এবং 'পারুল ও তিনটি কুকুর'...কোনটাই এর আগে পড়িনি...তাই ইচ্ছা ছিল এগুলোর ভিতর থেকে একটা অন্তত পড়ার, শুধুমাত্র কেমন অদ্ভুত সেটা দেখার জন্য...আজ 'পোকা' পড়লাম...অদ্ভুত তো বটেই, কিছুটা মজারও...তবে খুব সিরিয়াস একটা উপন্যাস পড়ার প্রস্তুতি থেকে যদি এটা পড়ে ফেলা হয় তাহলে জানি না কেমন লাগবে...মনে হতে পারে এইসব অবাস্তব কাহিনীর হয়তো কোন অর্থই হয় না, শুধু শুধু সময় নষ্ট...কিন্তু সবকিছুরই যে কোন অর্থ থাকতে হবে সেটাই বা কে বলেছে?...অর্থহীন জিনিসও মাঝে মাঝে অসম্ভব ভালো লেগে যায়...আর ভালো লাগার হলে এককভাবেই সেগুলো ভালো লাগে, পোকাদের মত সমষ্টির কোন প্রয়োজন হয় না...
উইয়ার্ড আর হরর ফিকশন জনরায় হুমায়ূন আহমেদের বেশ চমকপ্রদ একটি কাজ... লাভক্রফটিয়ান হররও বলা যায়।
তাঁর মিসির আলির কিছু উপন্যাসও কিন্তু একই জনরায় পড়ে, কিন্তু ওগুলো এই কাজের চাইতে আরও পরিপক্ব মনে হয়েছে।
বেশ ভালোই উপভোগ করেছি, কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় বর্ণ্না আর ডায়লগগুলো বেশ নাটকীয় আর দায়সারা মনে হয়েছে...
সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে, কিন্তু একটা অতৃপ্তি নিয়ে শেষ করেছি বইটা। মনে হচ্ছে লেখক আরেকটু টানতে পারতেন কাহিনী, উপন্যাস যেহেতু (আমি বলতে চাইছি উপন্যাসিকা বা novella)...
হুমায়ূন আহমেদের অনেক উপন্যাসই নাতিদীর্ঘ, কিন্তু এই জনরার উপন্যাস হিসেবে আরও কিছু জিনিস দেখতে চাইছিলাম...
পোকা পড়ে শেষ করলাম। হুমায়ূন আহমেদের অন্য অনেক রচনায় ও পোকা/ইনসেক্টের বিষয় এসেছে। বিশেষ করে হিরোশিমা আর নাগাসাকিতে বোমা ফেলার আগে পোকা ���াকড়দের আগেই টের পাওয়ার ব্যাপারটা।এই রচনাকে কি সায়েন্স ফিকশনে ফেলা যায়? যায় সম্ভবত। অনেকেই বলে হুমায়ূনের লেখা থেকে শিক্ষা নেয়ার উ���াদান থাকে না। আমার মনে হয় তারা সেভাবে তার লেখা পড়েই দেখে না।এই ধরুন যদি আপনি কেবল কয়েকটা প্লেগ মহামারী আর রিসেন্টলি হয়ে যাওয়া করোনা মহামারীর কথাই চিন্তা করেন, তাহলে উপলব্ধি করতে পারবেন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণীদের কাছে এত বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ও কত অসহায়। আমার মনে হয় এমন ভাবনা থেকেই এই লেখা।হ্যাপি রিডিং
এই বইটা পড়ার পর একটা ধন্দে পড়ে গিয়েছিলাম। এটাকে সায়েন্স ফিকশনই বলব নাকি ফ্যান্টাসিই বলব নাকি ভৌতিক গল্প বলব নাকি সাধারণ উপন্যাস বলব। এখনো এই সমস্যার সমাধান পাইনি!
আমি যখন হুমায়ূন আহমেদের লেখা কুটু মিয়া উপন্যাসটা পড়েছিলাম, আমি লিটারেলি গুসবামস ফিল করছিলাম পড়ার সময়। কুটুমিয়ার আচরণ আমার মনে ভয় না জাগালেও একপ্রকার অস্বস্তি জাগাচ্ছিল। আমার কুটু মিয়া উপন্যাসটি দারুন লেগেছিল। পোকা উপন্যাসের নাম শুনি এই কুটু মিয়া শেষ করেই। আমি ভেবেছিলাম এই উপন্যাসটাও হয়ত কুটু মিয়ার মতন হবে। কিন্তু সত্যি বলতে আমি হতাশ হয়েছি। জনরা ঠিক রেখে লেখক বিষয়বস্তু সেভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন নাই বলে মনে হয়েছে। উপন্যাসটা পড়তে পড়তে কয়েকবার ঘুমিয়েছি। স্বপ্নের মধ্যে কোন তেলাপোকা দেখি নাই। আর লেখক বারবার কমোডের মধ্যে তেলাপোকা দেখিয়ে যেভাবে পরিস্থিতি ভীতিকর করার চেষ্টা করছিলেন, বিষয়বস্তু আমার কাছে অতটা লাগে নাই। কেন জানি না -,- আর পোকার মানুষ খেয়ে ফেলা এটা একটু শরীরে মধ্যে গিজগিজ ভাব আনলেও তা ছিল খুবই নগণ্য। যাইহোক, লং ফর্ম শর্ট আহামরি লাগে নাই।
বজলুর রহমানের ছোট বোন মিনু টানা আঠারোদিন জ্বরে ভুগে মারা যায়। মারা যায় তার স্বামীর বাড়িতেই। মিনুর স্বামী আবার অখ্যাত এক ফার্মেসির দোনদার। তার ধারনা সে নানা বিধ ওষুধ পত্র ঘেঁটে ঘেঁটে ডাক্তারের চেয়ে কোনো অংশে কম জানেনা। বরং একটু বেশীই জানে। তার ফার্মেসির প্রায় ওষুধ সে নিজেই খেয়ে শেষ করেছে। এরকম সবজান্তা স্বামী কি করে তার স্ত্রীকে মেডিকেলে নিবে। সে তার আবিষ্কৃত চিকিৎসা পদ্ধতি "ডাবল এন্টিবায়োটিক উইথ খালি পেট" প্রয়োগ করে। তার ধারনা রোগী খালি পেটে থাকলে জীবাণুও না খেয়ে থাকে, আর তখন ডাবল এন্টিবায়োটিক দিলে আর দেখা লাগবে না। সব শেষ। ফলে ১৮ দিন পর তার স্ত্রীও শেষ।
ভগিনীপতির এহেন আচরন বজলুর সাহেব জানতেন। তাই তাকে পছন্দ করেন না তিনি। বোনের মৃত্যু সংবাদ পেয়েও তিনি বোনকে দেখতে গেলেন না। গেলেন পরদিন ভাতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে।
ঘরে ঢুকার কিছু আগেই বজলুর সাহেব বিজ বিজ জাতীয় শব্দ শুনুতে পান। দরজায় দাড়িয়ে ডাক দিতেই ভিতর থেকে ভগিনীপতির ভয়ার্ত মুখ দেখেন। আর তারপরই দেখেন বিভৎস এক দৃশ্য। তার বোনকে পোকায় খেয়ে ফেলেছে। আর এখন সেখানে হাজার হাজার তেলাপোক। তার পাশেই বসে আছে গল্পে প্রধান চরিত্র দুই বছরের শিশু 'আলতাফ'!!!
ভয়, দুঃখ, চিন্তায় পড়ে বজলুর সাহবে আলতাফকে তার কাছে রেখে দেন। আলতাফকে বড় করেন তিনি। তাকে ভালো পড়াশোনাও করান, তবে আলতাফের কপাল মন্দ, সে থার্ড ডিভিশন ছাড়া কখনো কিছু পায় না। সব শেষ এখন চাকরি! আলতাফ চারকিও পায়না। তাই আলতাফের ভাগ্য ফেরাতে বিয়ে কথা বলেন মামা বজলুর রহমান। আমাদের আলতাফ তাতেও রাজী, কারন সে মামার কোনো কথা আজ পর্যন্ত অমান্য করেনি। তাই এবারো করবে কেন? সব কিছুকরে পাত্রী পছন্দ হয় মামার। কিন্তু বাড়িতে এসেই সব দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যায়। তার মেয়ে 'দুলারি' আলতাফ ভাইকে বিয়ে করবে। বিয়ে না দিলেই ইদুর মারার বিষ 'রেটম' খাবে সে। বাধ্য হয়ে বিয়ে দিলেন, আর আলতাফ পেলেন বউ এবং মামার দেয়া সাবর্ক্ষনিক 'গাধা' উপাধি।
গল্পের এই পর্বে এসেই শুরু সব রহস্যর। আলতাফ পোকাদের কথা বুঝতে পারে,!! সে বলে দিতে পারে তার অফিসের জরুরি ফাইল কে চুরি করেছে। ও হ্যা স্ত্রী ভাগ্যের কারনেই নাকি নিজের যোগ্যতায় জানিনা, আলতাফ সিটি ব্যাংকের আ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশিয়ার পদে চারকি পায়।
আলতাফ বলে পোকারাই নাকি মানুষদের নিয়ন্ত্রণ করে। তার ধারণা পোকাদের অনুগ্রহেই মানুষ টিকে আছে পৃথিবীতে।
আলতাফ চাইলেই একটা পোকাকে ডেকে আনতে পারে। পোকাদের সাথে কথা বলতে পারে। কিন্তু কেন? কেন পোকারা তার সাথে যোগাযোগ করে? সেকি মানুষিক ভাবে অসুস্থ, নাকি সত্যিই সে পোকার কথা বুঝে? যদি তাই হয় তাহলে কেন পোকারা আলতাফকে বেছে নিলো? কি এক ভয়াবহ পরিস্থিতির অপেক্ষা করছে আলতাফ?
হুমায়ুন আহমেদ আমার পছন্দের একজন লেখক। তার প্রতিটি লেখা আমি উপভোগ করি। তার বই আমাকে মন্ত্রের মত টানে। সেজন্য তার লেখাতে কোনো ভুল আমার চোখে পড়ে না। আর পড়লেও ধরতে ইচ্ছে করে না। তার মতই আমিও বলি
বইটা পড়ে অদ্ভুত লাগতে পারে পাঠকদের কিংবা ভাবতে পারে লেখক হেয়ালীর বশে একটা লেখা লিখে ফেলেছেন। ব্যপারটা কিন্তু সেরকম নয়। তিনি বুঝে শুনেই গথিক ফিকশন নিয়ে লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যে বিভিন্ন জনরা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা তার মত করে কেউ করেছে কীনা আমার জানা নেই।
গথিক ফিকশনের বৈশিষ্ট্য হল গল্পে আদিভৌতিক ধরণের রহস্য থাকবে, প্যারানলমাল এক্টিভিটি দেখা যাবে, দু:স্বপ্ন থেকে শুরু করে প্রেম-ভালবাসাও থাকবে। গল্প একইসাথে পাঠকের মনে সাসপেন্স, ভয়, ঘৃণা, দ্বিধার অনুভূতি জাগ্রত করবে।
সেই হিসেবে গল্পে এর সবটুকুই ছিল। গল্পের শুরুতেই আলতাফের মায়ের মারা যাবার সময়ের কাহিনী দিয়ে যে সাসপেন্স তৈরি করেছিলেন শেষে মনসুরের কক্ষে এসে সেই সাসপেন্স ধরে রাখতে পেরেছেন।
যেহেতু লেখকের নাম হুমায়ূন আহমেদ তাই স্বভাবতই রোমান্সের বেলায় মামাতো বোন আর ফুফাতো ভাইয়ের প্রেম কাহিনী থাকতে হবে যেটা খুবি অস্বস্তিকর! তাছাড়া গল্প শেষ করবার বেলায়ও চিরায়িত হুমায়ূনীয় সিগনেচার স্টাইলে কোন ‘দ্য এন্ড’ না টেনে যবনিকা পতন করেছেন।
এইসব বিরক্তিকর কাজকর্ম বাদ দিলে গথিক ফিকশন জনরা হিসেবে লেখা ভাল হয়েছে। গল্প বলার যাদুকর সম্মোহনী শক্তিতেই পুরোটা সময় মনেযোগ ধরে রাখতে পেরেছেন। নানারকম স্ট্রেসের মধ্যে থেকে মাঝে মাঝে এরকম কম সিরিয়াস গল্প পড়তে ভাল লাগে।
এইটা দারুন ছিলো। পোকা বিষয়ক অতিপ্রাকৃত গল্প যে এরকম গা ছমছমে হতে পারে তা এই বইটা না পড়লে বলে বোঝানো যাবে না।।
আলতাফ হোসেন ছোটোবেলাটা বড় কষ্টের। কিছু বোঝার আগেই সে এতিম হয়ে যায়। ঠাঁই হয় তার মামা বজলুর রহমানের কাছে। বজলুর সাহেবের আসলে আলতাফ হোসেনকে নিজের কাছে এনে রাখা ছাড়া আর অন্য কোনো উপায় ছিলো না। আলতাফ হোসেন লেখাপড়ায় খুব একটা ভালো না তবে ভালো রেজাল্ট করার জন্য কম চেষ্টা সে করেনি। যা হোক করে সে একটা নিজের চেষ্টায় একটা চাকরি যোগাড় করতে পারে। তবে সে বজলুর সাহেবের অসম্ভব অপ্রিয় পাত্র হয়ে ওঠে তখন যখন আলতাফ হোসেনকে বিয়ের করার জন্য বজলুর সাহেবের মেয়ে দুলারী গো ধরে বসে থাকে। ঘটনা এর ঠিক পর থেকেই শুরু। বিয়েতো হয় ঠিকই তবে আলতাফ হোসেন জানে এটা তার নিজের ইচ্ছাতে হয় নাই। আবার চাকরিটা সে পেয়েছে ঠিকই তবে তাও অন্য কিছুর ইশারায়। পোকারা তার কাছে আসে। কেন আসে? পোকারা তাকে পছন্দ করে। পোকারদের উদ্দেশ্য কি তাও সে জানে তবে সেটা অন্য কারো জন্য না জানাটাই মঙ্গল।।
ভয় এবং আতংকের মিশেলে বইটা আক্ষরিক অর্থেই অসাধারন ছিলো। আর আমি যে ভয় পেয়েছি সে ব্যাপারে মিথ্যা বলিই বা কি করে??
:অভিবাদন মানব সম্প্রদায়। তোমাদের জন্য আছে মঙ্গলময় অন্ধকার। কারণ তোমাদের মঙ্গল অন্ধকারে।মঙ্গলের জন্য তোমাদের সৃষ্টি। তোমরা সৃষ্টিতে ফিরে যাবে।এক বিন্দুতেই আদি ও অন্ত।
এটা পোকাদের ভাষার অনুবাদ মাত্র। সুন্দর না শব্দগুলো ?বইটাও সুন্দর। অসম্ভব ভালো লেগেছে।
পোকা নিয়ে অনেক ভয় দেখিয়ে দিবে, যদি আপনি তেলাপোকা ভয় পেয়ে থাকেন। তেলাপোকায় ভয় পাওয়া মানুষ এই বই থেকে ১০ হাত দূরে থাকবেন। তবে এভারেজ কাহিনী। হুমায়ূন আহমেদ সব জায়গায় একই রকম আজগুবী কাহিনীই লিখে গেছেন। যাদের একবার ভালো লাগে, তাদের সারাজীবন ভালো লাগবে, হুমায়ূনের সব বই ই ভালো লাগবে।
রহস্য আর রোমাঞ্চ বরাবরই সবাইকে আকর্ষণ করে। আর যখন সেই গল্পের প্লট তৈরি হয় হুমায়ূন আহমেদের লেখনীতে তখন পাঠকের মানসপটে ঘোর এসে জমাট বাধবেই ।
"মানবজাতিকে যে জিনিস বার বার অভিভূত করে তার নাম রহস্যময়তা। এই রহস্যময়তা থেকেই এসেছে সুকুমার কলা আর কঠিন বিজ্ঞান।"
-আলবার্ট আইনস্টাইন
গল্পের মূল চরিত্রটি আবর্তিত হয়েছে আলতাফ চরিত্রটিকে ঘিরে আর তার সহযোগী চরিত্র হলো দুলারি। আলতাফ আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো নয়। শান্তশিষ্ট কিন্তু অন্য এক জগতে থাকা মানুষ। আলতাফের মতে তার সাথে প্রাণীজগতের নিম্নবর্গের কিছু প্রাণীর যোগাযোগ রয়েছে। এখন এই যোগাযোগ বন্ধুত্বপূর্ণ নাকি অন্য কিছু তা গল্পটি পড়লেই জানা যাবে।
আলতাফের সাথে পোকাদের এমন যোগাসূত্র নিতান্তই হ্যালুসিনেশন নাকি বাস্তব তা বোঝা দায়। কিন্তু লেখক ঘটনাপ্রবাহকে এমনভাবে সাজিয়েছেন যে একে অবাস্তব বলার কোনো উপায়ও নেই।
প্রথম দিকে আলতাফের অদ্ভুত আচরণ মানসিক বিকারগ্রস্তের মতো মনে হলেও শেষ দিকে এই আচরণ বদ্ধমূল ধারণায় পরিণত হয়েছে যেন বাস্তবে এর অস্তিত্ব অনস্বীকার্য। তার অবশ্য আরো একটি কারণ আছে কারণ কিছু মানুষের আলতাফের মতোই ধারণা হতো। এরকম ধারণা মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষেরই হতে পারে।তবে কি আলতাফের সংস্পর্শে আসার কারণেই বাকিদেরও এমনটা মনে হচ্ছে?
নাকি পোকারাই মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করছে?
গল্পের কিছু কিছু অংশে লেখক কিছু অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা করেছেন। লেখক মনসুর চরিত্রের মাধ্যমে একটি হাইপোথিসিস দিয়েছেন যা আদতে একেবারে অযৌক্তিক। কখনো আবার ভুল বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে গল্পটার দিক ঠিক রাখতে চেয়েছেন।
গল্পে যদিও কিছু অযৌক্তিক বিষয় আছে তারপরও কখনো কখনো অযৌক্তিকতা-ই যেন আয়নার অপর দিকটা নিয়ে ভাবায়। আর লেখকের এই গুণটিই গল্পটির প্রতি পাঠকের আগ্রহ বাড়াবে।
গল্পটির চরিত্রসমূহের আচরণগত বৈশিষ্ট্য চয়নে লেখক সুনিপুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। গল্পের প্রেক্ষাপটটাও ভারসাম্যপূর্ণ । ব্যক্তিগতভাবে কিছু বিষয় খুবই উদ্ভট ঠেকেছে আমার। এই বিষয়গুলির বদলে গল্পটাকে একটু যুক্তিযুক্ত করে তুলে ধরলে পাঠকমনে বেশ একটা পাকাপোক্ত স্থান করে নিতে পারতো এটি।
যাই হোক,গল্পটিতে কিছু অসঙ্গতি থাকলেও গল্পের শেষে পাঠক হতভম্ব হবেনই। আর বলা বাহুল্য,ভীতু ও দুর্বল মনের মানুষের জন্যে গল্পটি পড়া উচিত নয় কারণ গল্পটা শেষ হলেও এর ভয়ানক ঘোরটা সহজে কাটে না।
মানবজাতি। কি জানি আমরা? পৃথিবীর ৯৬% জিনিস ই এখনো আমাদের কাছে অজানা। আমরাই কি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী, মনঃস্থাত্ত্বিক ভাবে উন্নত প্রজাতি? নাকি আমাদের থেকেও বড় কোনো, টিকে থাকার লড়াইয়ে দূর পাল্লা দেবার মত প্রানী আছে? এই প্রশ্নগুলো মনের মধ্যে জাগাটা অস্বাভাবিক কোনোকিছু না। পোকারা কি একজনের ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক দিয়েই চলে? নাকি সবাই মিলে সমষ্টিগত ভাবে মানুষের চেয়েও বড় কোনো নেটওয়ার্ক এ যুক্ত? এমন নানা ���্রশ্ন উত্তর গল্পের ছলে খুজে পাবেন এই "পোকা" গল্পে। লিখেছেন হুমায়ূন আহমেদ। এক পরিবারের এক আপাত হাবাগুবা ভাগনে কে কেন্দ্র করে কাহিনী চলমান। যে কি না আবার পোকাদের সাথে কথা বলায় পারদর্শী। আবার মানুষকে কথা বলে বিভ্রান্ত করতেও তার জুড়ি মেলা ভার। তবে সহজ সরল এই মানুষটার জীবনের সুখ (!) কিংবা দুঃখের এক আখ্যান পড়তে চাইলে পড়ে ফেলুন পোকা শীর্ষক বইখানা। আশা করা যায় পড়ে নিরাশ হবেন না। অতিপ্রাকৃত ঘটনা রটনা ভালো লাগলে এই গল্পটাও ভাল লাগবে বেশ।
বই - পোকা লেখক - হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনী- পার্ল পাব্লিকেশন্স পেইজ - ১০৪ দাম - ২৫০৳