Jump to ratings and reviews
Rate this book

মহেশ

Rate this book

Unknown Binding

15 people are currently reading
392 people want to read

About the author

Sarat Chandra Chattopadhyay

260 books931 followers
Complete works of Sarat Chandra (শরৎ রচনাবলী) is now available in this third party website:
http://sarat-rachanabali.becs.ac.in/i...

Sarat Chandra Chattopadhyay (also spelt Saratchandra) (Bengali: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) was a legendary Bengali novelist from India. He was one of the most popular Bengali novelists of the early 20th century.

His childhood and youth were spent in dire poverty as his father, Motilal Chattopadhyay, was an idler and dreamer and gave little security to his five children. Saratchandra received very little formal education but inherited something valuable from his father—his imagination and love of literature.

He started writing in his early teens and two stories written then have survived—‘Korel’ and ‘Kashinath’. Saratchandra came to maturity at a time when the national movement was gaining momentum together with an awakening of social consciousness.

Much of his writing bears the mark of the resultant turbulence of society. A prolific writer, he found the novel an apt medium for depicting this and, in his hands, it became a powerful weapon of social and political reform.

Sensitive and daring, his novels captivated the hearts and minds of thousands of readers not only in Bengal but all over India.

Some of his best known novels are Palli Samaj (1916), Charitraheen (1917), Devdas (1917), Nishkriti (1917), Srikanta in four parts (1917, 1918, 1927 and 1933), Griha Daha (1920), Sesh Prasna (1929) and Sesher Parichay published posthumously (1939).

"My literary debt is not limited to my predecessors only. I'm forever indebted to the deprived, ordinary people who give this world everything they have and yet receive nothing in return, to the weak and oppressed people whose tears nobody bothers to notice and to the endlessly hassled, distressed (weighed down by life) and helpless people who don't even have a moment to think that: despite having everything, they have right to nothing. They made me start to speak. They inspired me to take up their case and plead for them. I have witnessed endless injustice to these people, unfair intolerable indiscriminate justice. It's true that springs do come to this world for some - full of beauty and wealth - with its sweet smelling breeze perfumed with newly bloomed flowers and spiced with cuckoo's song, but such good things remained well outside the sphere where my sight remained imprisoned. This poverty abounds in my writings."

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
707 (55%)
4 stars
431 (33%)
3 stars
122 (9%)
2 stars
17 (1%)
1 star
4 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 39 reviews
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,740 reviews355 followers
July 31, 2025
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মহেশ বাংলা সাহিত্যের এমন এক ছোটগল্প, যা আকারে ক্ষুদ্র হলেও প্রভাবে বিশাল। এটি কেবল একটি গরুর মৃত্যু কাহিনি নয়, বরং এক দরিদ্র কৃষকের অস্তিত্বসংকট, সামাজিক নিগ্রহ এবং দারিদ্র্যের নির্মম ছাপ একসঙ্গে মিলে গঠিত এক সামাজিক দলিল। গল্পের কেন্দ্রস্থলে গফুর—এক দরিদ্র মুসলমান কৃষক—আর তার গরু ‘মহেশ’, যার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিছক গৃহপালিত পশুর নয়, বরং গভীর সহানুভূতি, শ্রম ও অস্তিত্বের সেতুবন্ধনে গাঁথা।

মহেশ গফুরের জীবনে শুধুমাত্র একটি উপার্জনের মাধ্যম নয়, বরং একমাত্র সঙ্গী, একমাত্র ভালোবাসার বস্তু। সে মহেশকে খাওয়ানোর জন্য নিজের খাবার ত্যাগ করে, এমনকি নিজের কন্যা আমিনার অনুরোধেও কখনো রূঢ় ব্যবহার করে শুধুমাত্র গরুটিকে বাঁচিয়ে রাখার মরিয়া চেষ্টায়। এই গরুটিই হয়ে ওঠে কৃষকের আত্মমর্যাদা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। কিন্তু দীর্ঘদিনের খরা, অভাব ও সামাজিক ঔদাসীন্য একসময় গফুরের মনস্তাত্ত্বিক ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে, আর সেই মুহূর্তেই ঘটে চূড়ান্ত বিস্ফোরণ—সে মহেশকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। এটি নিছক রাগের বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং এক ধরনের আত্মঘাতী প্রতিবাদ—জীবনের, সমাজের, এবং বিধাতার বিরুদ্ধে।

গফুর চরিত্রটি মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সে এক গভীর দ্বন্দ্বের মধ্যে বাস করছে—একদিকে পিতৃত্ব, মমতা ও দায়িত্ববোধ; অন্যদিকে আর্থিক অনটন, ক্লান্তি এবং সামাজিক নিগ্রহ। গল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে, আমরা দেখি তার এই অন্তর্দ্বন্দ্ব কীভাবে ধ্বংসাত্মক পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়। মহেশকে হত্যা করেই যেন সে নিজের অন্তরের ভালোবাসাকে শেষ করে ফেলে, আর সঙ্গে সঙ্গে জেগে ওঠে গভীর অনুশোচনা। এই অনুশোচনাই তার মানবিকতার প্রমাণ, আর সেটিই চরিত্রটিকে কেবল একজন ‘রাগী দরিদ্র মানুষ’ থেকে এক জটিল, বেদনাবিধুর মানবিক প্রতিমূর্তিতে রূপান্তরিত করে।

গল্পটি শুধুমাত্র গফুরের বা তার গরুর ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়। এটি সেইসব প্রান্তিক মানুষের প্রতিচ্ছবি, যারা রাষ্ট্র, সমাজ বা পঞ্চায়েত থেকে বঞ্চিত, এবং যাদের সামনে প্রতিবাদের কোনো ভাষা নেই, কেবল নিঃশব্দ আত্মবিনাশ। শরৎচন্দ্র এখানে মানবতা ও দারিদ্র্যের সংঘাতকে এমন এক নিটোল সাহিত্যিক ফ্রেমে উপস্থাপন করেন, যা একদিকে পাঠককে কাঁদায়, অন্যদিকে প্রশ্ন তোলে—কেন সমাজ এমন নির্মম হতে বাধ্য করে একজন মানুষকে?

মহেশ এক অনবদ্য ছোটগল্প, যা মানবতা বনাম বাস্তবতার দ্বন্দ্বে চিরন্তন হয়ে উঠেছে। এটি কেবল পাঠ নয়, এক অনুভব, এক আত্মজিজ্ঞাসা।

যে বই প্রত্যেক যুগে পঠিত হয়েও বারেবারে পুনর্বিচারের দাবি রাখে সমকালের কাছে, সেটাই ক্লাসিক। সেই অর্থে মহেশ বিশ্বসাহিত্যের এক চিরন্তন ক্লাসিক গল্প।

পড়ুন ও পড়ান অন্যদের।

অলমতি বিস্তরেণ।
Profile Image for Fahad Ahammed.
386 reviews44 followers
December 31, 2018
আল্লা,
আমাকে যত খুশি সাজা দিয়ো, কিন্তু মহেশ আমার তেষ্টা নিয়ে মরেছে, তার চরে খাবার এতটুকু জমি কেউ রাখেনি, যে তোমার দেওয়া মাঠের ঘাস, তোমার দেওয়া তেষ্টার জল। তাকে খেতে দেয়নি। তার কসুর তুমি যেন কখনো মাপ করো না।
Profile Image for Tusar Abdullah  Rezbi.
Author 11 books55 followers
January 1, 2024
গল্পটা পড়ার সময় কখন যে চোখের কোণ বেয়ে কয়েক ফোঁটা অশ্রু গড়ালো জানি না৷ তবে, মনে দাগ কেটে গেছে।
Profile Image for Nusrat Bhuiyan Nowrin.
22 reviews10 followers
August 17, 2019
এই গল্পটা অনেক আগে পাঠ্যবইয়ে থাকার কারণে পড়া হয়েছিলো। তখন পড়ার সময় চোখে পানি চলে এসেছিলো শরীর শিউরে উঠেছিল। সেদিন একজায়গায় এই বইটির নাম দেখে আবার পড়তে ইচ্ছা করে। এবার বইটি পড়ার সময় আবছা আবছা গল্পের বিষয়বস্তু মনে হচ্ছিল। এটি পড়ার সময় ভূপেন হাজারিকার শরৎবাবু গানটির কথা মনে পড়ে গেলো। আগে যখন পড়েছিলাম তখন এই গানটি জানা ছিলো না কিন্তু এবার অবশ্য গানটি আমার জানা। বইটি পড়ার সময় গানটির কথার মতো আসলেই মনে হচ্ছিল গফুর মহেশ এখন কোথায় কেমন আছে, আমিনা কোথায় হারিয়ে গেছে? এটা আমি এভাবে কখনো ভেবে দেখিনি আসলেইতো কোথায় তারা? এখনো আমার চোখের কোণে পানি জমে আছে। এবার আমি নস্টালজিক হয়ে গেলাম।
Profile Image for سمية .
91 reviews61 followers
January 12, 2021
I believe there are many persons like me who read it in high school as it was included in academic syllabus.
How religionism and classism hatred could affect not only human beings but also a innocent animal, has been portrayed in this soul-stirring short story.
Profile Image for Nasim Bin Jasim.
116 reviews4 followers
June 29, 2023
"মহারানীর রাজত্ব কেউ কারো গোলাম নয় "
শিকল ভাঙার সেই প্রানন্তর চেষ্টা সেই সময় থেকে চলছে ।
Profile Image for Tamanna Tasneem.
24 reviews9 followers
April 3, 2024
দরিদ্রতার পরিনতি কত ভয়াবহ হতে পারে তা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মহেশ গল্প টা পড়লেই অনুধাবন করা যায়। বাস্তবতা কত নিষ্টুর!
Profile Image for Mithun Sarker.
358 reviews2 followers
April 24, 2023
"মহেশ" শরৎচন্দ্রের লেখা একটি ছোট গল্প। যা গফু নামক এক লোক ও তার গরু মহেশ কে নিয়ে। দরিত্রতার জন্যে গফু নিজে খাবার না পেলেও তার গরু কে ঠিকই ঘর থেকে খড় বের করে দিতো। নিজের ছেলের মত ভালোবাসতো। একদিন তার হতেই মারা যায় গরুটি।

মূলত গল্পটি তখনকার জীবন যাত্রা নিয়ে। এর সাথে সমাজের একটা করুন দিক তুলে ধরেছেন লেখক। ঈশ্বরের এ জগতে জীব জন্তুর খাবার বন্ধ করে রাখে মানুষ।

গল্পটি বেশ ভালো লেগেছে। শেষের দিকে খারাপ এই লেগেছিলো। বিশেষ করে শেষের কয়েকটি লাইন পড়ে। যা পুরো গল্পটিকে আরো অর্থপূর্ণ করে তুলে। কিভাবে সমাজে মানুষের লোভের কারণে নির্বাক প্রাণীরা শাস্তি পায় আর কিভাবে দারিদ্র্য রা না খেয়ে কাটায় দিন রাত।
Profile Image for Jenia Juthi .
258 reviews64 followers
September 23, 2020
স্কুল পরীক্ষার বিভিন্ন সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপক থাকতো এই গল্পটি। উদ্দীপক পড়েই অনেকটা আন্দাজ করে ফেলছিলাম। তাই গল্পটা আমার কাছে থাকা স্বত্ত্বেও, এতদিন পড়ি নি।
ছোট একটা গল্পের মাধ্যমে কতো কী যে ফুটে উঠলো। হায়!
Profile Image for Anindita Halder.
10 reviews2 followers
July 22, 2021
আহাহারে,,,,
শেষের দিকটায় জলে চোখ ভিজে গেল। কি অসামান্য সুন্দর ভাবে বর্নিত করেছেন কবি, যাহা ব্যাক্ত করতে হলে ভাষাও কম পড়ে যায়।
Profile Image for Mila Hossain.
70 reviews2 followers
July 27, 2024
This story is close to my heart. আমার সেই ছোট্ট মনে বিশাল একটা ধাক্কা দিয়েছিলে এই ছোট গল্পটা। আবার পড়তে চাই।
Profile Image for Ahmed Reejvi.
78 reviews5 followers
April 19, 2021
     

গল্প বলায় তিনি অতুলনীয়; মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণে অসাধারণ। হ্যাঁ, বলছিলাম একজন অসামান্য কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (১৮৭৬-১৯৩৮) কথা।
কথাসাহিত্য সার্থক হয় ওই দুটি গুণ থাকলে। যে-সাহিত্যে গল্প থাকে; থাকে চরিত্র। সেই সঙ্গে থাকে লেখকের মতাদর্শিক অবস্থান।
কিশোর বয়সে শরৎচন্দ্রের অনেক লেখা পড়ে আমার চোখ সজল হতো। এখন দেখলাম শরৎচন্দ্র ক্ষমতা রাখেন পরিণত বয়সী পাঠকদেরকেও অভিভূত করতে। কারণ মনস্তত্ত্বের খবর তিনি রাখতেন। যেমন তার কাল্পনিক মানুষদের, তেমনি তার পাঠকদেরও। নিজের আবেগকে তিনি অনায়াসে সংক্রমিত করে দেন পাঠকের মধ্যে। একজন শিল্পীর জন্য সেই ক্ষমতাটা সামান্য নয়। কিন্তু কেবল আবেগের ওপর প্রভাবই যে পড়ে, তা নয়। প্রভাব পড়ে চিন্তাধারার ওপরেও। সেই প্রভাবটা সূক্ষ্ম, তাই বলে অবাস্তব নয়। যখন শরৎসাহিত্য ধারাবাহিকভাবে পড়ছিলাম তখন মনে হয়েছিল, সামন্তবাদের সঙ্গে তার সম্পর্কটা অত্যন্ত নিবিড়। সামন্তবাদের সীমাবদ্ধতা তিনি জানেন, তার সংশোধন চেয়েছেন। আবার সঙ্গে সঙ্গে সামন্তবাদের প্রতি তার মমতাও রয়েছে। এই মমতাটা খুবই সত্য। সামন্তবাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক অনেকটা সচেতন পুত্রের সঙ্গে বৃদ্ধ পিতার সম্পর্কের মতো। পুত্র পিতার সমালোচনা করে, দুর্বলতাগুলোর সংশোধন চায়। কিন্তু পিতাকে যে প্রত্যাখ্যান করে, তা নয়। এই গোপন মমতাটা সেকালের শিক্ষিত মধ্যবিত্তের ভেতর ছিল। এখনও যে নেই, তা নয়। শরৎচন্দ্র ওই মমতার প্রতিনিধিত্ব করেন। সেটা একটা কারণ, যে জন্য তিনি অতটা জনপ্রিয় ছিলেন। আবার নেতির দিক থেকে এই মমতা যে সামাজিক অগ্রসরমানতায় প্রতিবন্ধকতাকে অল্প পরিমাণ হলেও শক্তিশালী করেছে, সেটাও স্বীকার করতে হবে। সে জন্য সামন্তবাদের সঙ্গে তার সম্পর্কটাকে নিরীক্ষণ করার সাহিত্যিক মূল্য তো আছেই, থাকবেই; সাংস্কৃতিক মূল্যও রয়েছে। রাজনৈতিক দিক থেকেও বিষয়টা গুরুত্ব বহন করে। কারণ আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে, একবার নয়, দুই দুইবার স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশেও, রাষ্ট্র যদিও পুঁজিবাদী স্বভাব নিয়েছে তবু শাসক শ্রেণির মনোভঙ্গিটা অনেকাংশে সামন্তবাদী। রাষ্ট্রকে তারা বড় একটা জমিদারি মনে করে। তাদের রাজনৈতিক বিরোধ জমিদারে জমিদারে সংঘর্ষের রূপ নেয়। পক্ষ-বিপক্ষ উভয়েরই লাঠিয়াল বাহিনী আছে; আইনি এবং বেআইনি। 
সামন্তবাদ জিনিসটা জমিদারি ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত। সেখান থেকেই উদ্ভূত এবং তার ওপরেই নির্ভরশীল। শরৎচন্দ্রের কথাসাহিত্যে জমিদারি ব্যবস্থার ছবি আছে। আর আছে সামন্তবাদী সাংস্কৃতিক নানা প্রভাব ও বিভিন্ন মূল্যবোধ। বস্তুত এই সাংস্কৃতিক দিকটিই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। শরৎচন্দ্র এ দাবি করতেই পারেন যে, সাহিত্যকে তিনি অভিজাতদের বসতবাড়ি থেকে বের করে নিয়ে এসেছেন। বঙ্কিমচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসে জমিদারদের যে ধরনের রাজবাড়ির সাক্ষাৎ পাওয়া যায়, শরৎচন্দ্রের লেখায় তা অনুপস্থিত। এর একটা কারণ শরৎচন্দ্র ওই দুই সাহিত্যিকের পরবর্তী। দ্বিতীয় কারণ তার নিজের অবস্থান সমাজের সর্বোচ্চ শ্রেণিতে ছিল না। তিনি নিম্ন-মধ্যবিত্তের ছিলেন। বড় আমলা কিংবা বড় জমিদার ছিলেন না। কিন্তু তার অধিকাংশ নায়ক-নায়িকাই জমিদারি ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। এটাই ছিল স্বাভাবিক। সে সময়ে নায়ক-নায়িকা হিসেবে তারাই ছিল উপযুক্ত। পেশাজীবী একটি শ্রেণি গড়ে উঠেছিল, কিন্তু তাদের ভেতর নায়কসুলভ মানুষ তেমন একটা পাওয়া যায়নি। শরৎচন্দ্র তা পেতেও চাননি। কেননা, তিনি সাংস্কৃতিক সামন্তবাদকে ঘৃণা করেননি; তার প্রতি তার অনুরাগ ছিল। আর সামন্তবাদী সংস্কৃতির প্রতি যদি কারও অনুরাগ থাকে, তবে তিনি যে জমিদার-বিদ্বেষী হবেন_ এটা স্বাভাবিক নয়। সামন্তবাদকে শরৎচন্দ্র দেখেছেন মূলত নিম্ন-মধ্যবিত্তের দৃষ্টিতে। নিম্ন-মধ্যবিত্ত জমিদারদের ঈর্ষা করে এবং তাদের মতো হতে চায়। শরৎচন্দ্র এ ধরনের নিম্ন-মধ্যবিত্ত ছিলেন না। তিনি অসামান্য শিল্পী। এবং শিল্পী হিসেবে জমিদারি ব্যবস্থায় কৃষকের ওপর নিপীড়নের বাস্তবতা তার অজানা ছিল না। কিন্তু শিল্পী তো আবার ব্যক্তিও। ব্যক্তি শরৎচন্দ্র শিল্পী শরৎচন্দ্রের ওপর প্রভাব ফেলেছে; শিল্পীর মূল্যবোধকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে চেয়েছে। সামন্তবাদী মূল্যবোধের ভেতর রয়েছে আনুগত্য ও ভক্তি। আনুগত্য ও ভক্তি বিদ্যমান ব্যবস্থা ও তাদের সুবিধাভোগীদের প্রতি। ওই ভক্তি আবার ধর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। পদধূলি গ্রহণ হয়ে দাঁড়ায় সাংস্কৃতিক উচ্চতার নিদর্শন। সামন্তবাদে রয়েছে পুরাতনকে মহৎ ও নতুনকে ছোট করে দেখার মনোভাব। বিশেষভাবে আছে বৈষম্যকে স্বাভাবিক বলে মেনে নেওয়া। বৈষম্যের বিশেষ ভুক্তভোগী হচ্ছে মেয়েরা। তাদের মাতৃত্ব, সেবাপরায়ণতা, রান্নাবান্না, ঘর-সংসার, সতীত্ব, আতিথেয়তা_ এসব সামান্য ও ক্লান্তিকর কাজকে বাধ্যতামূলক করা হয় এবং গুণ হিসেবে চিহ্নিত করা চলতে থাকে। সামন্তবাদ অসংশোধনীয় রূপে পিতৃতান্ত্রিক।

২. 
শরৎচন্দ্রের অবিস্মরণীয় একটি রচনা মহেশ। এটি সামন্তবাদবিরোধী একটি ছোট গল্প। 'মহেশ'-এর (১৯২৬) নায়ক গফুর আগে ছিল তাঁতি, এখন হয়েছে ভাগচাষি (ব্রিটিশ শাসনের প্রত্যক্ষ ফল)। এখন তাকে নানা রকম খাজনা দিতে হয়, এবং না দিতে পারলে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হয়। গ্রীষ্মের খরা পড়ায় গ্রামটিতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পানীয় জলের ভীষণ অভাব। ব্রাহ্মণ শাসিত ছোট্ট গ্রামটিতে গফুর ও তার মাতৃহীন কন্যা আমেনা একটি মুসলমান পরিবার। জল সংগ্রহের সময় পাছে অন্যদের অপবিত্র করে ফেলে- এই ভয়ে আমেনাকে গা বাঁচিয়ে চলতে হয়। অতিকষ্টে সেদিন সে এক কলস জল সংগ্রহ করেছিল। গফুরের তৃষিত বৃদ্ধ ষাঁড় মহেশ, যাকে সে সন্তানের মতো আদর-যত্ন করে এবং উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন হিসেবে জানে, সেই মহেশ জল পিপাসায় ছিল অত্যন্ত কাতর। আমেনার কলসিতে মুখ দিতে গিয়ে মহেশ সেটা ভেঙে ফেলে। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য গফুর তার লাঙলের ফালটি নিয়ে এসে মহেশকে আঘাত করে। মহেশ মারা যায়। হতভাগ্য গফুরের জন্য এবার আসে গো-হত্যার অপরাধে প্রায়শ্চিত্ত করবার পালা। শেষ রাতে গফুর মেয়েকে নিয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। গন্তব্য চটকল, যেখানে মেয়েদের আব্রু থাকবে না বলে সে জানে। জমিদারি শোষণই তাকে বাস্তুচ্যুত করল, এবং ঠেলে দিল কারখানার দিকে। শেয়ালের হাত থেকে বের হয়ে গিয়ে বাপ ও মেয়ে এবার পড়বে গিয়ে নেকড়ের খপ্পড়ে। 
গল্পটি সামন্তবাদের চরিত্র-উন্মোচন করে দেয়। জমিদারি ব্যবস্থার প্রতি ধিক্কার হিসেবে এ গল্প অসাধারণ।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Md. A. M. Tarif.
107 reviews2 followers
August 1, 2025
হাইস্কুলে পড়াকালীন কোনো এক সৃজনশীলের উদ্দীপকে এই গল্পের একাংশ পড়েছিলাম।তখন থেকেই পড���ার ইচ্ছা ছিলো।
আজ পড়ার সময় মহেশ এর পরিণতি পড়ে স্তব্ধ হয়ে গেছিলাম।বাপ-মেয়ে আর এক ষাড়ের মাধ্যমে শরৎচন্দ্র সমাজের ধনী-গরীব বৈষম্যের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন।
Profile Image for সৌরজিৎ বসাক.
284 reviews6 followers
April 28, 2024
সেই ছোটবেলায় স্কুলের পাঠ্যবইতে পড়েছিলাম, তখন পড়তে হয়েছিল ৩-৫-১০ নাম্বারের প্রশ্নের উত্তরের জন্য। ওই পড়া ছদ্ম-পড়া।
আবার পড়লাম আজ। এ পড়া নির্ভেজাল পড়া, কোন স্বার্থের জন্য নয়।
শরৎচন্দ্রের মন-খারাপিয়া কাহিনিগুলির মধ্যে অন্যতম। পড়ার পরে একটা দীর্ঘশ্বাস অবধারিত।
Profile Image for Atonu Saha.
18 reviews
January 20, 2023
শরৎচন্দ্রের বিখ্যাত গল্প, অনেক নাম৷ শুনেছি। পড়া হয় নি কখনো, এইবারে সেটা হলো...
Profile Image for আহসানুল শোভন.
Author 39 books91 followers
January 14, 2019
আমার লেখা একটি ছোট গল্প রয়েছে- 'শেফালী ও দধির গল্প'। গল্পটা ফেসবুকে পোস্ট দিতে না দিতেই অনেকে মহেশ মহেশ কমেন্ট দিতে শুরু করেছিল। তখনও মহেশ গল্পটি পড়িনি। যাই হোক, অত্যন্ত বিরক্তি সহকারে গুগলে সার্চ দিয়ে কোন এক ওয়েবসাইটে মহেশ গল্পটি খুঁজে পেলাম। তেমন মনোযোগ দিয়ে পড়িনি। কেবল এইটুকু বোঝার চেষ্টা করেছি, আমার লেখা গল্পটির সাথে এই গল্পের কোন মিল আছে কিনা। না, নেই। দুটো গল্পের মিল বলতে গল্পে একটা গরু চরিত্রের উপস্থিতি। পাঠকদের এই সীমাবদ্ধতা দেখে যারপরনাই হতাশ এবং বীতশ্রদ্ধবোধ করেছিলাম।

যাই হোক, এতদিন পর মনোযোগ সহকারে গল্পটি আরেকবার পড়লাম। ভাল লাগার সাথে দুঃখবোধ মিশে রইল।
Profile Image for Samuel Mallik.
3 reviews
February 6, 2019
পশু-প্রাণীর প্রতি মমতা ভালোবাসার এক জীবন্ত কাহিনী শরৎচন্দ্রের 'মহেশ'। অনেকবার পড়েছি আজও হৃদয় ভারাক্রান্ত করে।
1 review
September 21, 2021
Read it when I was 14. It brought tears in my eyes. I'm not any animal lover person, but still it got the heart out of me.
Profile Image for Nirnay.
28 reviews4 followers
November 2, 2023
ওরা অসহায় ওরা হতদরিদ্র
তবু ওরা ভালোবাসে, ওরা মায়া করে।
অবলা ওই পশুটা, ওটাও ওদের সন্তান
ওরা এমন ভাবেই তাকে স্নেহ করে।

তবে স্নেহ ভালবাসায় তো হৃদয় ভরে
পেট তো সে অনুভুতি বোঝে না।
ক্ষুধার জ্বালা যে বড়ো জ্বালা
মাথাও ঠিক কাজ করে না।

তখন ওরা অপরাধী,অপরাধ করে
তবে বিশ্বাস করো নিজে থেকে নয়
ক্ষুধা রাক্ষসে তা করায়।
ঈশ্বর এর সবই বোঝেন
তবে এই সমাজকে কে তা বোঝায়?
Profile Image for Ishtiyak Fahmi.
133 reviews24 followers
August 12, 2024
"মহারানীর রাজত্বে কেউ কারো গোলাম নয়"

পড়ার সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে "শোনো মহাজন" গানটি বাজছিলো।
হঠাৎ মনে হলো "আমার বিচার তুমি করো, তোমার বিচার করবে কে?
কবে তোমার দখল থেকে, মুক্তি আমায় দিবে"

লাইনগুলো যেন গফুরই বলছে।


ভালোবাসার জিনিসকে নিজ হাতে শেষ করে দেওয়াটা কতটা কষ্টের তা অনুভব করতে পারলে এই গল্প পড়ে আপনার অশ্রু আর কে আটকে রাখতে পারবে...
Profile Image for Ashish Mahato.
23 reviews1 follower
March 9, 2021
পাষাণেরও হৃদয় গলে যাবে এই গল্পে 🙂❤
Profile Image for Mr Dipu.
1 review
February 20, 2023
শেষটা আরও করুণ যেনো হৃদয়ে শেলের মতোই বাধিল 🥺🥺
Profile Image for Angira Datta Dandapat.
28 reviews5 followers
October 17, 2023
বাংলা সাহিত্যের সেরা মনিমুক্তোর অন্যতম।
Profile Image for mahi.
14 reviews
September 21, 2024
এই ছোটগল্পটা অনেক হৃদয়বিদারক। শেষের দিকে কান্না চলে এসেছিল। মানুষ একটা পশুকে এতো ভালোবাসতে পারে তা এই গল্প না পড়লে বুঝতে পারতাম না।

Profile Image for Aminul Islam Kaicher.
1 review
November 25, 2024
বিদ্যালয়ের পাঠ্যবইয়ে প্রথম পড়া 'মহেশ'। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অসাধারণ সৃষ্টি! 💝
Displaying 1 - 30 of 39 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.