Jump to ratings and reviews
Rate this book

যোগাযোগ

Rate this book
The protagonists of this classic Tagore novella, never before translated, are the warring families of the Chatterjees and the Ghoshals. Set in early 19th century Bengal, their old rivalry now manifests itself as a historical clash between a landed aristocracy declining under the Permanent Settlement system introduced by the British, and the newly rising comprador bourgeosie patronized by these very colonial masters. Yogayog (1929) is remarkable for its astonishingly strong feminist sentiments, marked by Tagore's insight into the emotions and aspirations of women caged in domesticity and strapped by conventional morality.

173 pages, Hardcover

First published January 1, 1929

26 people are currently reading
323 people want to read

About the author

Rabindranath Tagore

2,574 books4,247 followers
Awarded the Nobel Prize in Literature in 1913 "because of his profoundly sensitive, fresh and beautiful verse, by which, with consummate skill, he has made his poetic thought, expressed in his own English words, a part of the literature of the West."

Tagore modernised Bengali art by spurning rigid classical forms and resisting linguistic strictures. His novels, stories, songs, dance-dramas, and essays spoke to topics political and personal. Gitanjali (Song Offerings), Gora (Fair-Faced), and Ghare-Baire (The Home and the World) are his best-known works, and his verse, short stories, and novels were acclaimed—or panned—for their lyricism, colloquialism, naturalism, and unnatural contemplation. His compositions were chosen by two nations as national anthems: India's Jana Gana Mana and Bangladesh's Amar Shonar Bangla.

The complete works of Rabindranath Tagore (রবীন্দ্র রচনাবলী) in the original Bengali are now available at these third-party websites:
http://www.tagoreweb.in/
http://www.rabindra-rachanabali.nltr....

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
104 (22%)
4 stars
212 (45%)
3 stars
123 (26%)
2 stars
24 (5%)
1 star
7 (1%)
Displaying 1 - 30 of 53 reviews
Profile Image for Arupratan.
235 reviews385 followers
March 11, 2023
"যোগাযোগ" পড়া শেষ হলে মনের ভিতর প্রথম যে অনুভূতিটা জেগে উঠেছিল সেটা হলো অতৃপ্তি এবং হতাশা। কাহিনির পরিণতি কেমন হবে তার উপর পাঠকের হাত নেই। পাঠক হলো লেখকের হাতের পুতুল। কিন্তু লেখক নিজেও কি পুরোপুরি স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে পারেন তাঁর সৃষ্ট চরিত্রদের জীবন এবং মনের অন্দরমহলে?

রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসগুলো দ্বিতীয়বার পড়তে গিয়ে (প্রথমবার পড়েছিলাম একেবারে কাঁচা বয়সে) বারবার অনুভব করেছি, সাহিত্যের যে-আঙ্গিকটাতে রবীন্দ্রনাথের প্রতিভাপ্রদীপ সবচেয়ে কম উজ্জ্বল তা হলো উপন্যাস।

এই দ্বিতীয় দফায় তাঁর সবকটা উপন্যাস এখনও পড়া হয়ে ওঠেনি, তবে অন্তত নৌকাডুবি, শেষের কবিতা এবং চতুরঙ্গ পড়ার পরে মনে মনে নিজেকে নিজে বলেছিলাম : রবীন্দ্রনাথ উপন্যাস লিখতে পারতেন না। আজকে "যোগাযোগ" শেষ করে, তৃপ্ত হয়েছি বলবো না, তবে চিন্তার খোরাক পেয়েছি অনেক। আমার সব চিন্তাভাবনার কথা এখানে লেখার উপায় নেই। একটা-দুটো লিখি।

তৃতীয় বিশ্বের (বিশেষ করে, ধর্মকণ্টকিত আমাদের এই উপমহাদেশে) মেয়েদের জীবনযন্ত্রণা যে অনেকরকম, এই কথাটা নতুন করে বলার আর কিছু নেই। "যোগাযোগ" উপন্যাসের যিনি নায়িকা, কুমুদিনী (ডাকনাম কুমু)— রবীন্দ্রনাথ ইচ্ছে করলেই তাঁকে দরিদ্র কিংবা নিদেনপক্ষে মধ্যবিত্ত ঘরের "সাধারণ মেয়ে" হিসেবে দেখাতে পারতেন।

সেরকম দেখালেই বরং কুমুর জীবনের প্রতিকূল অবস্থার বর্ণনা দেওয়া সহজ হতো। তাঁর প্রতি ঘটে যাওয়া অবমাননাগুলো "স্বাভাবিক" বলে মনে হতো। গরীব ঘরের মেয়ের আবার মান-অপমান কী? গত শতকের প্রথম দিকে সাধারণ বাঙালি পরিবারের মেয়ে হয়ে জন্মানো ছিলো যেন গতজন্মের মহাপাপের ফল। কিন্তু যোগাযোগের কুমুদিনী "সাধারণ ঘরের সাধারণ মেয়ে" ছিলেন না।

তিনি স্বচ্ছল বনেদি জমিদার পরিবারের (যদিও বর্তমানে ক্ষয়িষ্ণু) ইংরিজি-শিক্ষিত "refined" মানসিকতার মেয়ে। তিনি এসরাজ বাজিয়ে ক্লাসিকাল গান গাইতে পারেন। তিনি ছবি তুলতে পারেন। এমনকি বন্দুক চালাতে পারেন। কুমুর দাদা বিপ্রদাস ছিলেন রবীন্দ্রনাথের জমানার ব্রাহ্মসমাজসুলভ সফিস্টিকেশনের আদর্শ উদাহরণ।

বিপ্রদাস অতীব সুদর্শন এবং অতীব ঈশ্বরবিদ্বেষী। তিনি নারীস্বাধীনতার সমর্থক। তিনি মুক্তচিন্তার অধিকারী। এমন enlightened দাদার আদরের বোন ছিলেন কুমু। কিন্তু সময়ের তুলনায় এতটা প্রাগ্রসর হয়ে থাকা সত্ত্বেও, বাঙালি নারী হয়ে জন্মানোর আবশ্যিক পরিণামগুলো এড়িয়ে যেতে পারেননি তিনি। এই একটা বিশেষ ব্যাপারে, এই উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ একটা দারুন চালাকি করেছেন!

ইচ্ছা করেই তিনি কুমু চরিত্রটি "অনন্যসাধারণ" রূপে গড়ে তুলেছেন। এই সত্যটা প্রতিষ্ঠা করার জন্যে যে, সমসাময়িক সমাজ এবং আবহমান সংস্কারের কুদৃষ্টি তোমার উপর পড়বেই (কিছু কিছু সংস্কার তো তুমি নিজেই সযত্নে পুষে রেখেছো)। তুমি ফর্সা হও বা কালো (পলিটিক্যাল কারেক্টনেস বজায় রাখার জন্যে যাদের "শ্যামলা", "চাপা গায়ের রং", "মাজা গায়ের রং", "শ্যামবর্ণা", "উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা" এইসব কাব্যিক নামে ডাকা হয়), তোমার পরিবার ধনী হোক বা হতদরিদ্র, তুমি শিক্ষিত হও বা নিরক্ষর, কুরূপা কিংবা সুরূপা, ছলনাময়ী কিংবা সরলসোজা, বুদ্ধিমতী কিংবা গর্ধব— তুমি যে-ই হও, মেয়ে হয়ে পৃথিবীতে এসেছো মানেই কিছু কিছু আবশ্যিক অপমান এবং অত্যাচার তোমাকে সহ্য করে নিতেই হবে। পালাবার পথ নেই।

কুমুও পালাতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথ ইচ্ছে করলেই, পাঠককে খুশি করার জন্যে, তাঁকে পালাতে দিতে পারতেন। "নারীশক্তির জয়", "নারীচেতনার উদ্বোধন"— এইসব প্রমাণ করে হাততালি কুড়োতে পারতেন। উপন্যাসটা শেষ করে এই কারণেই আমি নিদারুণ হতাশ (এবং কিঞ্চিৎ ক্ষুব্ধ) হয়েছিলাম। কিন্তু খানিকক্ষণ চিন্তা করে দেখলাম, পরিবার, পরিবেশ, সময় এবং সমাজের দ্বারা টেনে দেওয়া গণ্ডিকে মেয়েরা আদৌ প্রত্যাখ্যান করতে পারে? কোনোদিন পেরেছে কি?

তখনকার কথা বাদ দিলাম, আজকের দিনেও কি পারে? কেউ কেউ পারে (গণনায় যারা যৎসামান্য), কিন্তু অধিকাংশ মেয়েরা পারে? আজও কি সবাই সাহসী হতে পারে? সবাই কি নিজের ভিতর জাগ্রত করতে পারে তথাকথিত নারীবাদসম্মত মুক্তিচেতনা? রুখে দাঁড়াতে পারে? হতে পারে নির্ভীক? হতে পারে "ব্যতিক্রমী"? হতে পারে "বেপরোয়া বেহায়া অসভ্য নির্লজ্জ মেয়েছেলে"? দৃঢ় কন্ঠে বলতে পারে, "পরোয়া করিনা!"

নাহ, পারে না। যারা পারে, তারা কয়জন? আপনি বলুন দেখি কয়জন? কয়জন "ব্যতিক্রমী" মেয়েকে চেনেন আপনি?

বেশ কিছু গঠনগত ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও "যোগাযোগ" একটি জরুরি উপন্যাস। অনেক বিখ্যাত নারীবাদী উপন্যাসের চেয়ে বেশি বাস্তবসম্মত। কুমুদিনীর অপমান আমার বুকে এসে বেজেছে। সেই অপমানের নিষ্পত্তি করে কুমুদিনী মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেননি, এটা দেখে আমার মাথা নিচু হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ কুমুদিনীকে জিতিয়ে দেননি, কারণ কুমুদিনীরা তখনকার দিনেও পরাজিত হতো, আজও পরাজিত হয়। আর পাঠক হিসেবে আমরা অতৃপ্ত কণ্ঠে আফসোস করি : ধুর, গল্পের এন্ডিংটা মনের মতো হলো না!

ছোট হয়ে নেমে পড়ুন মশাই
সরু হয়ে নেমে পড়ুন মশাই
চোখ নেই ? চোখে দেখতে পান না ?
সরু হয়ে যান, ছোট হয়ে যান !

আরো কত ছোট হব ঈশ্বর ?
ভিড়ের মধ্যে দাঁড়ালে !
আমি কি নিত্য আমারও সমান
সদরে, বাজারে, আড়ালে ?
Profile Image for BJ Lillis.
331 reviews279 followers
July 14, 2023
The bengali title of this novel, Jogajog, is—at least according to Supriya Chaudhuri’s introduction—untranslatable: “The word might be rendered as contact, connection, or even communication in one meaning,” Chaudhuri writes; “in another it clearly implies coincidence, as in the fortuitous combination of circumstances that might bring about a marriage, for example.” It has been translated as Nexus, Communion, and, here, Relationships. But perhaps the question is not so important. Tagore himself suggested that his slippery title was
so lacking in distinctiveness that it could be applied to any story. Like an official label, it has nothing to impress us with. Let it be so. I’ve seen in Japan how, when the craftsman lavishes the joy of his skill on the blade of a sword, he leaves the scabbard entirely unadorned. May my story have the courage to reveal its nature of itself, not sending its title stridently before it like a herald.
Now that Tagore’s novel has fearlessly revealed its nature to me, the word Jogajog seems an infinitely complex thing, shaded with a thousand meanings.

Jogajog is the story of an ill-fated marriage. Not an arranged marriage—husband and wife absolutely did choose each other, affirmatively and insistently and for their own reasons, although they had never met, and although their positions were profoundly unequal.

Really, though, Jogajog is about so many things. It is elegant and concise, never labored, but filled with double meanings and contradictions that allow it to accomplish so much more than seems possible in so many scenes. It is about faith and reason. It is about God. It is about commerce and money and class. It is about family and politics and senseless violence perpetuating itself from generation to generation. It is about husbands and wives, yes, but also about siblings, and in-laws. It is about art and music—about the peace they can give us and the peace they cannot. It is about power and powerlessness, and “the power of the powerless” (112).

“‘Can’t I do anything?’” our heroine exclaims to her brother. They are discussing the family’s dire financial straits:
“For instance, by signing some deed. Does my signature count for nothing?”
“It counts for a great deal; but to us, not to our creditors.”
“I beg you, Dada, tell me what I can do.”
“Be good, be quiet, wait patiently—remember, in life that too is an enormous task. Keeping a boat steady in a storm is a job that needs doing: so is keeping one’s head. Bring my esraj [a musical instrument] here, play it awhile.”
“Dada, I wish with all my heart that I could do something.”
“Is playing the esraj nothing?”
“I want a really difficult task.”
“It’s much more difficult to play the esraj than it is to sign a deed” (211).
Somehow, Jogajog is endlessly subtle and explosively passionate. Somehow, Jogajog is both a dreamstate and an unflinching gaze on reality. But then, “reality has not the power to dispel by proofs the charm of a dream” (43). Then, “there's no point in wrestling with a moonlit night” (64).
Profile Image for Tamanna Binte Rahman.
184 reviews140 followers
May 12, 2023
রবীঠাকুরের সব লেখাই তো পছন্দের। তবে এই লেখাটা কোথায় যেন লাগে! এতোকাল পরে আবারো পড়লাম তাও ভালোলাগার কোনোরকম পরিবর্তন হলোনা। ঠিক ২৩ বছর আগে যখন পড়েছিলাম তখনো এমনটাই লেগেছিলো। বিপ্রদাস এবং কুমুদিনী চিরকাল পছন্দের চরিত্র রয়ে গেল।
Profile Image for Ahmed Fahmida.
82 reviews2 followers
June 11, 2022
কাদম্বরীকে নিয়ে ভাবতে গিয়েই কোন কুমুদিনীর কথা স্মরণে এল। যদিও কাদম্বরী বাস্তব চরিত্র আর কুমুদিনী কেবলই রবিবাবুর একটি সৃষ্ট চরিত্র।
এবং যদিও এ দুজনের স্বভাব, চরিত্র, বিচার, বিস্তার, প্রভাব সবই একেবারে ভিন্ন ধর্মী তবুও রবি ঠাকুরের কথা চিন্তা করলেই বা কাদম্বরীর কথা এলেই আমার কুমুদিনীকে বেশ মনে পড়ে।

কুমুদিনী হলেন রবি ঠাকুরের “যোগাযোগ” উপন্যাসের নায়িকা।

সংক্ষেপে বলতে গেলে,
কুমুদিনী রাজ্য হারানো রাজার মেয়ে কিন্তু ঘটনাচক্রে বিবাহ করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া এক রাজাকে। তবে তার প্রণয়ে কিন্তু কুমু কোনো জাতভেদ রেখেছিলনা। সে এক সমুদ্র ভালবাসা নিয়েই বসে ছিল স্বামী বরটিকে তার অর্ঘ্য দেবে বলে। কিন্তু রাজা বেচারা ধনে মানে যশ কামালেও, মনে দৈন্যতা দূর করতে পারেনি।
কুমু’র ভালবাসতে চেয়েও ভালবাসার যোগ্য কাউকে না পাওয়ার যে গভীর মর্মবেদনা, এইটা আমাকে বেশ ছুঁয়ে গেছে।
আর তাদের দুইয়ের এই সম্পর্কের টানাপোড়ন ছুঁয়েছে দুই পরিবার ছেড়ে সমাজ, সংসার, সংস্কৃতি আর আশেপাশের সবকিছুকে।

ছোটবেলা থেকেই মারমার কাটকাট একশন, এডভেঞ্চার বা থ্রিলার পড়ার অভ্যাসের কারণে বাংলা সাহিত্যে আমার দখল একেবারেই নস্যির ডিব্বার সমতুল্য। তার মাঝেও যে কিঞ্চিৎ চর্চা হয়েছে সেটাও দৈবচক্রে। ওভাবেই হাতে পেয়েছিলাম রবীন্দ্রনাথের “যোগাযোগ” বইটা।
এবং এত বছর পরও মনে আছে, আমার “নেই কাজতো রবি ঠাকুর পড়” উদ্দ্যেশ্যে শুরু করা বইটার আকর্ষণের মূলে ছিল, বিপ্রদাস (নামটা এইটা বা এরকম কিছু) কৈশোরে তাকে বেশ মনে ধরেছিল। সবই বোধহয় বুদ্ধদেবের রাজর্ষির মায়া!

তো যাহোক, পড়তে পড়তে পরবর্তীতে কুমুদিনীই হয়ে যায় ধ্যান জ্ঞান।
কুমুদিনী যাকে বলে আভিজাত্যের আরেক নাম।
চিন্তায়, জ্ঞানে, নীতিতে, মনের ঐশ্বর্য্যে সে শাশ্বত। আবার তাকে অতিমানবী বা অধরা করার প্রচেষ্টা রবি ঠাকুর করেননি। তার মাঝেও আছে আক্ষেপ, সীমাবদ্ধতা, অপারগতার দায়। কিন্তু ব্যক্তিত্বের প্রখরতা আর নীতির তীব্রতার পেষণে নিষ্কম্প থেকে যে নিদারুণ অবরুদ্ধ যাতনায় বিদীর্ণ হয়েছে প্রতি ক্ষণ, সে ব্যথায় আমি মর্মাহত হয়েছি বারবার।

আবার তায় জন্য আমার যে কুমু’র স্বামী মধুসূদনের প্রতি কোনো ক্ষোভ জন্মেছে তাও না। অনেকটা যেনো তার প্রতি আশাই বা কিসের। কুমুকে ছুঁয়ে দেবার সে সাধ্যই যে মধুসূদনের নেই। আত্ম অহমিকায় ডুবে থাকা, মানসিক দাসত্বের শেকল ভাঙতে না পারার ব্যর্থতা।

এসবই মধুসূদনকে এমন একটা সীমাবদ্ধতায় অনন্তকালের জন্য আটকে ফেলেছে যে, কুমু’র ভালবাসাকে আহ্লাদে কাছে না টেনে, সে অর্ঘ্যকে প্রাপ্য অধিকার ঠাউরে যে অবহেলা, অসম্মানের আঁচড় মধুসূদন কুমু’র স্নিগ্ধ আত্মাভিমানে এনেছে, তার দায় পুরোটাই মধুসূদনের হলেও, সে ব্যর্থতার দায় কেবলই হয়তো ওর না।
সমাজ, লোক চর্চা, চর্চিত চর্বিত ঠুনকো অহম, আর ইতিহাসের নামে বয়ে চলা জাতিভেদকেও কিছুটা দায় নিতেই হবে।

কুমুদিনী আমার কিশোরী মনে এতটাই গভীর আঁচড় কেটেছিলো যে প্রায় এক যুগেরও বেশী সময় পরে এসেও, আজো কুমু’র কথা মনে হলেই কলিজাটা মোচড় দেয়।
কুমু’র অপ্রাপ্তির এই মর্মবেদনা শীতের ঝড়ো হাওয়ার সদৃশ্য সুঁইয়ের মতন বিঁধে।

চন্দ্রানী ব্যানার্জির গানটা মনে পড়ে-

তোমাকে বুঝিনা প্রিয়,
বোঝনা না তুমি আমায়,
দুরত্ব বাড়ে যোগাযোগ নিভে যায়।
Profile Image for Syed Morshed.
52 reviews20 followers
June 25, 2016
অনেকদিন পর আবার পড়তে শুরু করেছি। বন্ধুর সাথে বইয়ের দোকানে গিয়ে অনেক বেঁছে টেছে কিনলাম রবীন্দ্রনাথের ‘যোগাযোগ’। ১২৭ পৃষ্ঠার একটা একটা উপন্যাস তবে আমার পড়তে বেশ সময় লেগেছে। ইদানীং কেন যেন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দাগিয়ে দাগিয়ে পড়ছি। দারুণ লেগেছে উপন্যাসটি। মানুষের সম্পর্কগুলো যে মূলত ভিতরকার বাহিরের জাকজমক নয় এখানে এটিই দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি দুটো মানুষ একসাথে থেকেও অনেক সময় তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয় না। মানুষের সম্পর্ক যেখানে গভীর সেখানে ভাষা ছাড়াও সম্পর্ক ভাষা পায়। আর যেখানে সম্পর্ক স্থূল সেখানে শত চিৎকারেও তা হৃদয়ে প্রবেশ করে না। উপন্যাসের কিছু কিছু লাইন মনে দাগ কেটেছে গভীরভাবে।

#মরিয়া হয়ে যারা পুরোনো ঘর ছাড়তে পারে, তেজের সঙ্গে নূতন ঘর বাঁধার শক্তিও তাদের।

# এইরকম জন্ম-একলা মানুষদের জন্যে দরকার মুক্ত আকাশ, বিস্তৃত নির্জনতা এবং তারেই মধ্যে এমন একজন কেউ, যাকে নিজের সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে ভক্তি করতে পারে।

#গোড়াতেই সকল কথার শেষ পর্যন্ত ভাবতে গেলে ঠকতে হয়। আশু ভাবা উচিত প্রথম কর্তব্যতা কী। সেটা হচ্ছে বিপ্রদাসবাবুকে দাদার দেখতে যাওয়া। দেখতে গিয়ে তার ফলে যা হতে পারে তার উপায় এখনই চিন্তা করতে বসলে তাতে চিন্তাশীলতার পরিচয় দেওয়া হবে, কিন্তু সেটা হবে অতিচিন্তাশীলতা।

# সকালবেলাকার সুরে নিজের ব্যক্তিগত বেদনা বিশ্বের জিনিস হয়ে অসীমরূপে দেখা দেয়। তার বন্ধনমুক্তি ঘটে। সাপগুলো যেমন মহাদেবের জটায় প্রকাশ পায় ভূষণ হয়ে। ব্যথার নদীগুলি ব্যথার সমুদ্রে গিয়ে বৃহৎ বিরাম লাভ করে। তার রূপ বদলে যায়, চঞ্চলতা লুপ্ত হয় গভীরতায়। বিপ্রদাস নিশ্বাস ছেড়ে বললে , “সংসারে ক্ষুদ্র কালটাই সত্য হয়ে দেখা দেয় কুমু। চিরকালটা থাকে আড়ালে; গানে চিরকালটাই আসে সামনে, ক্ষুদ্র কালটা যায় তুচ্ছ হয়ে, তাতেই মন মুক্তি পায়”।


আমার নিজের পছন্দের দুজন চরিত্র হলো বিপ্রদাস আর কুমু। দুই ভাইবোন। এত অনাড়ম্বর জীবনেও একটা কেমন যেন এক charm আছে তাদের মধ্যে। নিরহংকারের মাঝেও কোথায় যেন আলোকিত এক অহংকার আছে। আর মধুসূদন এবং শ্যামাসুন্দরী তাদের ঠিক উলটো। দুই পারের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ কি আদৌ হবে না কি যে যার পথ বেঁছে নেবে। এখানেই কাহিনীর টুইস্ট!
Profile Image for Zarin Haider.
55 reviews40 followers
September 1, 2017
এবং শেষে কুমুদিনী সন্তানের জন্য মধুসূদনকে ছাড়তে গিয়েও ছাড়তে পারল না।
শুধুই বিপ্রদাসের জন্য চার স্টার দিলাম।
Profile Image for Atik Rahman.
31 reviews2 followers
January 3, 2016
সেই আগের প্রবলেম,, শেষের দিকে গিয়ে কোনো কুলকিনারা পাওয়া যায় না। এটা কি রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস লেখার নিজস্ব স্টাইল নাকি কিজানি...
,
দুই জমিদারের ঝগড়া আর একে অন্যের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াই গল্পের উপজীব্য।
,
"ঘা-খাওয়া বংশ, ঘা-খাওয়া নেকড়ে বাঘের মতো, বড়ো ভয়ংকর।"
,
চাটুজ্যে বংশ আর ঘোষাল বংশ ঐতিহ্যগত ভাবে পরস্পরের শত্রু। শত্রুতার জেরে এক মামলায় ঘোষাল পরিবার নিঃস্ব হয়ে এলাকাছাড়া হয়। কিন্তু প্রতিহিংসার জেদ কমেনি। ঘোষাল বংশের পরবর্তি বংশধর মধুসুদন ঘোষাল এই প্রতিহিংসার জেদ সম্পুর্ন করতে প্রবৃত্ত হয়। সে চাটুজ্যে বংশের মেয়ে কুমুদিনী কে বিয়ে করে। চাটুজ্যে বংশের তখন মরমর অবস্থা। মধুসুদন কুমুদিনীর ভালবাসাও পেতে চায় আবার চাটুজ্যে বংশের সাথে শত্রুতা আর টাকার বড়াইও বজায় রাখতে চায়। কুমুদিনী হাজার চেষ্টা করেও তাই মানাতে পারেনি। সমস্ত উপন্যাস জুড়ে ভাই বিপ্রদাসের প্রতি বোন কুমুদিনীর অকৃত্রিম ভালবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ উজ্জলভাবে প্রকাশ পেয়েছে যা মধুসুদন কে আরো বেশি পুড়িয়েছে। তবে আমার ��াছে এটাই সবচেয়ে ভাল লেগেছে।
,
হিংসা দুইপক্ষকে কিভাবে সর্বস্বান্ত করে তার একটা চমৎকার উদাহরণ এই বইটা। কিন্তু সমাধান না টেনে অনেক প্রশ্ন বাকি রেখেই বইটা শেষ হয়ে যায়। তবে পাঠকরা যেন নিজ গুণে কাহিনীর বাকিটা শেষ করতে পারে তার আয়োজনও যথেষ্ট ছিল। যাইহোক সুন্দর আবেগযুক্ত একটি বই।
Profile Image for Sujan.
106 reviews42 followers
May 24, 2018
এমন এক সময়ে বসে রবীন্দ্রনাথ এই উপন্যাস লিখেছেন, যখন আমাদের সমাজ নারীর কোন রকম স্বাধীনতা স্বীকার করতে একেবারেই প্রস্তুত ছিলো না। সেই সময়ে তিনি নারীর অন্দরমহল ঘুরে এমন সব সত্যকে দিনের আলোয় নিয়ে এসেছেন, যার অস্তিত্ব এখনও এ সমাজে থাকলেও তাকে আমরা আজও সত্য বলে চিনতে বা বুঝতে ভুল করছি। দ্রষ্টা সাহিত্যিকেরা কোন সমাধানের পথ বাতলে দেন না, তারা বরং সমস্যাকে তার সবটুকু ব্যাপ্তি নিয়ে প্রকাশ্যে এনে দেন। এরপরের কাজটুকু আর তার নয়, তার পাঠকদেরই, যদিও সে সমাধানের ইঙ্গিত লেখার মধ্য থেকে বুদ্ধিমান পাঠক সহজেই খুঁজে নিতে পারেন।

কেনো এই উপন্যাসের বক্তব্য এখনও মারাত্মকভাবেই প্রাসঙ্গিক? কারণ, যেকোন চিরন্তন সাহিত্যের মতোই এই উপন্যাসেও মানব মনের সেইসব রূপ আর আঙ্গিক ধরা পড়েছে, যারা মানবের চিরকালীন সঙ্গী। এমনকি শুধু কি মানুষ, অবলা কুকুরের যে বিশেষ মনোভঙ্গির চিত্র দিয়ে উপন্যাসটি শেষ হলো, তাও কি চিরাকালীন নয়? আমি আজ হলফ করেই বলতে পারি, এ উপন্যাসের আবেদন, এর শিক্ষা, সর্বোপরি এর সৌন্দর্য খুব নিকট ভবিষ্যতেই অন্তত বড্ড সেকেলে ঠেকছে না। আমার মতো আরও অসংখ্য মানুষকে এ উপন্যাস আরও কিছুকাল তীব্রভাবে মুগ্ধ করে যাবে, নির্দ্বিধায় এ মন্তব্য করে রাখতেই পারি।
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,833 reviews363 followers
November 6, 2025
রবি ঠাকুরের ‘যোগাযোগ’ বাংলা উপন্যাস সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল। এর মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ রোমান্টিক ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে প্রবেশ করেছেন সমাজমনস্তাত্ত্বিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার গভীরে। এটি এমন এক সময়ের সৃষ্টি, যখন ভারতীয় সমাজ ঔপনিবেশিক পুঁজিবাদ, জমিদারতন্ত্রের অবসান এবং নব্য বণিক শ্রেণির উত্থানের দ্বন্দ্বে কাঁপছে।

‘যোগাযোগ’ সেই দ্বন্দ্বেরই শিল্পিত প্রতিফলন — যেখানে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, পারিবারিক ঐতিহ্য, ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে এক জটিল জীবনচিত্র নির্মাণ করেছে।

উপন্যাসটি শুধু এক প্রজন্ম বা এক পরিবারের কাহিনি নয়, বরং একটি সভ্যতার রূপান্তরের দলিল। কুমুদিনী, মধুসূদন, বিপ্রদাস, ও শ্যামাসুন্দরীর মতো চরিত্ররা শ্রেণি, লিঙ্গ, ও মানসিকতার রূপান্তরের প্রতিনিধিত্ব করে। রবীন্দ্রনাথ এখানে কেবল সমাজের বহিরাবরণ নয়, তার গভীর মনস্তত্ত্ব ও অবচেতন দ্বন্দ্ব উন্মোচন করেছেন — যা Freud-এর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের সঙ্গে বিস্ময়করভাবে সাযুজ্যপূর্ণ।

‘যোগাযোগ’-এর রচনাকাল ১৯২৭–২৯। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার ছায়া তখন ভারতে পড়তে শুরু করেছে। ইংরেজ পুঁজিবাদের প্রভাবে জমিদারতন্ত্র ভেঙে পড়ছে, এবং বণিক শ্রেণি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ এই পরিবর্তনকে শুধু অর্থনৈতিক রূপে নয়, নৈতিক ও মানসিক রূপান্তর হিসেবেও দেখেছেন।

চট্টোপাধ্যায় পরিবার (বিপ্রদাস ও কুমুদিনী) অভিজাত কিন্তু অবক্ষয়প্রাপ্ত পুরোনো সংস্কৃতির প্রতীক; অন্যদিকে ঘোষাল পরিবার (মধুসূদন) হলো নব্য ধনীর আগ্রাসী মানসিকতার প্রতিফলন।

এই দুই পরিবারের সংযোগ, যা আসলে ‘যোগাযোগ’-এর সামাজিক প্রতীক, একে অপরের বিপরীতে দাঁড়ানো দুটি মূল্যবোধের সংঘাতকে নির্দেশ করে — একদিকে আত্মিক ঐতিহ্য, অন্যদিকে অর্থলোভী আধুনিকতা।

বিপ্রদাসের ‘অভিজাততা’ হল বুদ্ধিবৃত্তিক, রুচিশীল, মানবিক সংস্কারের প্রতীক; মধুসূদনের ‘আধুনিকতা’ হল আত্মসর্বস্ব ভোগবাদ, যা অর্থকে কেন্দ্র করে সম্পর্ক, নৈতিকতা ও প্রেমকে পরিমাপ করে। রবীন্দ্রনাথ এই সংঘাতকে কেবল পারিবারিক বিবাদ হিসেবে নয়, বরং একটি সমাজের শ্রেণি-পরিবর্তনের নাটকীয়তা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

এখানে রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিভঙ্গি আংশিকভাবে মার্কসীয় — যদিও তিনি কোনও সরাসরি রাজনৈতিক চেতনা প্রকাশ করেননি, কিন্তু শ্রেণি-দ্বন্দ্বের অন্তর্নিহিত নৈতিক সংকট তাঁর শিল্পের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

‘যোগাযোগ’-এর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ চরিত্র নিঃসন্দেহে কুমুদিনী। রবীন্দ্রনাথের পূর্ববর্তী নারীচরিত্র— বিনোদিনী (চোখের বালি), বিমলা (ঘরে বাইরে), দামিনী (রাজর্ষি)—এর ধারাবাহিকতায় কুমুদিনী এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে।

সে শুধু প্রেম বা ভক্তির প্রতিমূর্তি নয়; সে এক স্বাধীনচেতা, অন্তর্মুখী, এবং বৌদ্ধিক নারী, যে নিজেকে পুরুষের আশ্রয়ে নয়, নিজের ভাবনায় সংজ্ঞায়িত করতে চায়। কুমুর শিক্ষালাভ, দাদার (বিপ্রদাস) আধুনিক চিন্তাধারার প্রভাব, এবং তার আধ্যাত্মিক রুচিবোধ তাকে রবীন্দ্রনাথের অন্যান্য নারীচরিত্রের থেকে আলাদা করেছে।

বাল্যকাল থেকেই কুমু যে সতীত্বের পৌরাণিক ধারণায় দীক্ষিত, বিবাহের পরে সেই ধারণা বাস্তব জীবনের সঙ্গে সংঘাতে আসে। মধুসূদনের ‘প্রভুত্ব’-চেতনা, আর্থিক অহংকার, ও নৈতিক শৈথিল্যের সঙ্গে তার মিল হয় না। ফলে তাদের মধ্যে যে মানসিক বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হয়, সেটিই আসলে উপন্যাসের কেন্দ্রীয় “যোগাযোগহীনতা”।

এই বিচ্ছিন্নতা রবীন্দ্রনাথকে নারী-অস্তিত্বের বৃহত্তর প্রশ্নের দিকে নিয়ে যায়। তিনি দেখিয়েছেন, **নারীর আত্মবোধের উন্মেষ তখনই ঘটে যখন সে সমাজের আরোপিত সম্পর্কের বন্ধন ভাঙতে শেখে।

কুমুর নীরব প্রতিরোধ, সংসারের প্রতি বিমুখতা, এবং আত্মসমর্পণের পরেও নিজের মর্যাদাবোধ ধরে রাখার শক্তি তাকে আধুনিকতার এক প্রতীকে পরিণত করেছে।

‘যোগাযোগ’-এর মর্মকথা মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বে নিহিত। মধুসূদন ও কুমুদিনীর মধ্যে সম্পর্কটি শুধু বাহ্যিক বিবাহ নয়, বরং দুই অবচেতনের সংঘাত। মধুসূদনের দমনকৃত ক্ষমতালিপ্সা, যৌন-আকাঙ্ক্ষা ও ঈর্ষা— তার চরিত্রকে ফ্রয়েডীয় “Id”–এর প্রতীক করে তোলে। বিপরীতে কুমুদিনী ‘Superego’–র প্রতীক— নৈতিকতা, সংযম, ও আত্মিক বোধের প্রতিচ্ছবি।

Freud-এর *Civilization and Its Discontents*–এ যেমন বলা হয়েছে, সভ্যতা যত বিকশিত হয়, তত দমন বাড়ে; মানুষের অবচেতনে জমে থাকা তৃষ্ণা সমাজে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। রবীন্দ্রনাথ এই নীতি-অর্থনৈতিক ও মানসিক দমনকে চিত্রিত করেছেন।

কুমুদিনীর অন্তর্জগত “বিরোধী আবেগের সঞ্চিত ক্ষেত্র”— ভালোবাসা ও বিতৃষ্ণা, আস্থা ও হতাশার মিশ্রণ। সে মধুসূদনের প্রতি একদিকে সহানুভূতিশীল, অন্যদিকে বিতৃষ্ণ। এই দ্বৈত বোধই তাকে গভীরতর মানবিক চরিত্রে রূপ দেয়।

রবীন্দ্রনাথ এখানে মনস্তত্ত্বকে শুধুমাত্র মানসিক বিশ্লেষণ হিসেবে নয়, **নৈতিক ও আধ্যাত্মিক তত্ত্বের সঙ্গে মিলিয়ে** উপস্থাপন করেছেন। কুমুর আধ্যাত্মিক মন্ত্র (“হে আমার পূজনীয়… তুমি যেন আমাকে তেমনি করে সইতে পার”) একদিকে ঈশ্বরের প্রতি আত্মসমর্পণ, অন্যদিকে মানসিক স্থিতির অন্বেষণ।

এই দ্বৈততার মধ্যেই ‘যোগাযোগ’-এর গভীর মানবচিন্তা নিহিত।

রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসে অর্থনৈতিক রূপান্তর কেবল প্রেক্ষাপট নয়— এটি চরিত্রদের মানসিক গঠনকেও প্রভাবিত করে।

মধুসূদন ঘোষাল হল নতুন যুগের বণিকতন্ত্রের প্রতিনিধি— যে ‘প্রাপ্তি’র মাধ্যমে সবকিছু মাপতে চায়। তার জন্য সম্পর্কও এক প্রকার বিনিয়োগ। অন্যদিকে বিপ্রদাস হল সেই পুরোনো আদর্শবাহী অভিজাত— যে রুচি, সংস্কার, ও আত্মনিবেদনের প্রতীক। কুমুদিনী এই দুই জগতের সংযোগবিন্দুতে দাঁড়িয়ে — যেন ইতিহাসের এক মেয়ে, যে পুরোনো নীতির ভগ্নাংশ নিয়ে নতুন সমাজে নিজের স্থান খুঁজছে।

এই শ্রেণিসংঘাত শুধু সামাজিক নয়, আত্মিক সংঘাতও। রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন, নতুন সমাজে সম্পর্ক ক্রমে যান্ত্রিক ও স্বার্থনির��ভর হয়ে পড়ছে। বাহ্যিক যোগাযোগ বাড়লেও আত্মিক যোগ কমছে— যা উপন্যাসের নাম ‘যোগাযোগ’-এর অন্তর্নিহিত অর্থ।

এখানে রবীন্দ্রনাথ এক দার্শনিক বক্তব্য রাখেন: “মানুষের মধ্যে যদি আত্মার সংযোগ না ঘটে, তবে সমস্ত সম্পর্কই যান্ত্রিক।” এই বক্তব্য আধুনিক সমাজের বেদনার সারাংশ— যেখানে প্রযুক্তি ও সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অন্তর আরও শূন্য হয়ে উঠছে।

রবীন্দ্রনাথের *‘যোগাযোগ’* কে একান্ত ভারতীয় সামাজিক উপন্যাস বলে সীমিত করা যায় না; এটি বিশ্বের মনস্তাত্ত্বিক ও নারীবাদী সাহিত্যের সঙ্গে গভীর সংলাপে যুক্ত।

(ক) টলস্টয়-এর 'Anna Karenina': অন্না যেমন সমাজের কপট নৈতিকতার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রেম ও স্বাধীনতার অধিকার দাবি করে, কুমুদিনীও তেমনই নিজের মর্যাদা রক্ষা করতে চায়। তবে টলস্টয়ের অন্না সমাজের শাস্তির মুখে আত্মবিনাশ বেছে নেয়; রবীন্দ্রনাথের কুমুদিনী সমাজের মধ্যেই আত্মমর্যাদার স্থান খুঁজে নেয়। তার প্রতিবাদ নীরব, কিন্তু স্থায়ী।

(খ) ফ্লবেয়ার-এর 'Madame Bovary': এমা বোভারির স্বপ্নপ্রবণতা ও কল্পনার জগতে পালিয়ে যাওয়া যেখানে আত্মবিনাশ ডেকে আনে, সেখানে কুমুদিনীর কল্পনা আত্ম-শুদ্ধির পথ নির্দেশ করে। সে বাস্তব থেকে পালায় না, বরং সেই বাস্তবের দগ্ধতায় আত্মমুক্তি খোঁজে।

(গ) ভার্জিনিয়া উলফ-এর 'Mrs Dalloway': উলফের উপন্যাসে যেমন একদিনের মধ্যেই নারীচেতনার বহুমাত্রিকতা প্রকাশ পায়, তেমনি ‘যোগাযোগ’-এ কুমুর মনের দ্বন্দ্ব, অতীতের টানাপোড়েন, ও আত্মিক অনুসন্ধান আধুনিকতার নারীবাদী মনোভাবের সঙ্গে একাত্ম।

(ঘ) ইবসেন-এর 'A Doll’s House': ইবসেনের নোরা স্বামী ও সমাজের শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসে; কুমুদিনী সরাসরি বেরিয়ে আসে না, কিন্তু মানসিকভাবে একই প্রতিরোধ করে। এই দুই নারী চরিত্রই আধুনিক নারীর আত্মপরিচয় নির্মাণের প্রতীক।

এইসব তুলনা দেখায়, রবীন্দ্রনাথের কুমুদিনী কেবল বাঙালি সমাজের নারী নয় — সে বিশ্বসাহিত্যের এক অঙ্গ, যেখানে নারীচেতনা ব্যক্তিগত, সামাজিক ও দার্শনিক স্তরে এক নতুন সংজ্ঞা পায়।

‘যোগাযোগ’-এর শেষে কুমুদিনীর সেই বিখ্যাত উক্তি — “এমন কিছু আছে যা সন্তানের জন্যও খোওয়ানো যায় না।” এই বাক্যটি শুধু এক নারীর স্বর নয়, এটি সমগ্র মানবিক অস্তিত্বের ঘোষণা। রবীন্দ্রনাথ এখানে বলেছেন — প্রেম, সম্পর্ক, বা মাতৃত্ব সবই মহৎ, কিন্তু আত্মসম্মান ও আত্মচেতনা তারও ঊর্ধ্বে।

রবীন্দ্রনাথের আধুনিকতা এই আত্মচেতনার মধ্যেই নিহিত। তিনি পাশ্চাত্যের মনস্তত্ত্ব ও বাস্তবতাবাদকে আত্মীকরণ করেছেন, কিন্তু ভারতীয় আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে মিলিয়ে নিয়েছেন। তাঁর কাছে মানুষের মুক্তি কেবল সামাজিক নয়, **অন্তর্জাগতিক মুক্তি**।

‘যোগাযোগ’ তাই কেবল শ্রেণি-সংঘাত বা দাম্পত্য-কাহিনি নয়; এটি এক দার্শনিক উপাখ্যান — মানুষের অন্তর ও সমাজের মধ্যে সেই সত্যিকার “যোগ” প্রতিষ্ঠার চেষ্টা, যা হারিয়ে গেছে সভ্যতার প্রতিযোগিতা, সম্পদ ও প্রভুত্বের অহংকারে।

রবীন্দ্রনাথের *‘যোগাযোগ’* আজও প্রাসঙ্গিক কারণ এই উপন্যাস প্রশ্ন তোলে —

১) মানুষের সম্পর্ক কি কেবল চুক্তি, না হৃদয়ের সংযোগ?

২) নারীর মর্যাদা কি কেবল সংসারের সীমায়, না আত্মার স্বাধীনতায়?

৩) অর্থনৈতিক উন্নতি কি মানুষের আত্মিক উন্নতির বিকল্প হতে পারে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়েই 'যোগাযোগ' এক অনন্ত কাব্য হয়ে ওঠে।

এর শ্রেণিসংঘাত আমাদের ইতিহাসের,

এর নারীচেতনা আমাদের বর্তমানের,

এর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ আমাদের ভবিষ্যতের —

এবং এর মানবিক দর্শন বিশ্বসাহিত্যের চিরন্তন ঐক্যের প্রতীক।

অলমতি বিস্তরেণ।
Profile Image for Hanif.
159 reviews5 followers
April 26, 2025
"মেয়ের সম্মান মেয়েদের কাছেই সবচেয়ে কম। তারা জানেও না যে, এইজন্যে মেয়েদের ভাগ্যে ঘরে ঘরে অপমানিত হওয়া এত সহজ। তারা আপনার আলো আপনি নিবিয়ে বসে আছে।”

বর্তমানে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এখনো অনেক জায়গায়  বহুলভাবে দেখা যায় যে, বিয়ে বিষয়টিকে স্বামীর ক্ষমতা প্রদর্শনের এক বিশেষ জায়গা হিসেবে। যেখানে স্ত্রী'দের স্বাধীনতা খর্ব করে, হুকুমের দাস হিসেবে, জোর করে সংসার চালিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য (প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে) করা হয়।

গ্রামে যেখানে বেড়ে উঠা আমার, সেই সমাজে এখনো ভয়ংকর ভাবে এটির প্রচলন রয়েছে। প্রায় ১৯২৯ সালের দিকে রবী ঠাকুরের এই লেখা, এখনো সমাজের  মধ্যে প্রচলন দেখে পড়ার সময় একধরনের হতভম্ব আকারে উত্তেজনা কাজ করতেছিল।

কুমু এবং মধুসূদন দু'জনেই সম্পূর্ণ বিপরীত মানসিকতার মানুষ। সামাজিক প্রতিপত্তি এবং প্রতিশোধের মিশ্রণে বয়সোর্ধ্ব মধুসূদনের সাথে কুমুর বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের যাত্রাপথ হতে স্ত্রী কুমুর প্রতি একধরনের খবরদারি/হুকুমজারির শুরু করেন, স্বামী মধুসূদন। 

উপন্যাসের মাঝপথে স্ত্রী'র প্রতি ভালোবাসা সুলভ অনুভূতি জাগলেও, প্রতিপত্তি ভাবের কারণে বিপরীত হয়ে যেত। যার কারণে, সংসারে বিচ্ছেদ নামক শব্দেরও উত্থান দেখা দেয়। 

অন্যদিকে নবীন এবং মতির মা এ চরিত্র দু'টিও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে উপন্যাসটিতে। মতির মা (এর মতো সমাজের হাজারো নারী) ধরেই নিয়েছে যে, সংসারকে টিকিয়ে রাখার জন্য স্ত্রীকে সব ধরনের অন্যায় অপমান সহ্য করে, প্রভুর নিকট মাথা নত করে চালিয়ে যেতে হয়।

উপন্যাসটিতে চার রেটিং(এক কম) দেওয়ার কারণ হল, সামাজিক বাস্তবতা মেনে, অহেতুক অজুহাতে, আবার সংসারে ফিরে যাওয়া। ভেবেছিলাম লেখক হয়তো আরও কঠিনতম একটা সিদ্ধান্ত নিবে কুমুকে নিয়ে।

পড়ুন, জানুন, ভিন্নভাবে ভাবতে শিখুন।
Profile Image for Anjushi.
4 reviews1 follower
January 29, 2015
It is uncanny that a writer of 19th century can have such audacious views on woman liberty. Story of an independent 19th century woman who chooses to live her life according to her wishes.
Profile Image for Lomat Al Noor.
16 reviews
May 3, 2023
সুস্থ-স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবনের জন্য 'যোগাযোগ' যে কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা রবি ঠাকুর বেশ চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন। কাহিনীর মূল বিষয়বস্তু অনতিবিলম্বে উপলব্ধি হলে সংসারের অনেক অপ্রয়োজনীয় কলহ থেকে নিস্তার পেতে পারেন। বইটি ২০ শতকে প্রকাশিত হলেও এর শিক্ষা কাল কাল ধরে মানুষের জীবনের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে।
Profile Image for Mohibullah Khan.
19 reviews1 follower
August 1, 2024
বইটা পড়া শেষে বার বার মনে হয়েছে - এইসমাজে কুমু আর বিপ্রতাসের মতো মানুষের আজ বড়ই আকাল। নিজের সম্মান আর আত্মমর্যাদাকে যারা সবকিছুর উপরে তুলে রাখে, সেসব মানুষ আজ হারিয়ে গেছে। আশপাশে পড়ে আছে কেবল উদরসর্বস্ব, রিপুগ্রস্ত একদল দোপেয়ে।
Profile Image for Kamrunnahar Dipa.
17 reviews13 followers
Read
October 14, 2017
**ভূমিকা**:
যোগাযোগ উপন্যাসটি ১৯২৯ সালে (আষাঢ়, ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়। এটি প্রথমে ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাস থেকে ১৩৩৫ বঙ্গাব্দের চৈত্র মাস পর্যন্ত বিচিত্রা মাসিকপত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। প্রথম দুই সংখ্যায় এই উপন্যাসের শিরোনাম ছিল দুই পুরুষ। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথ এই উপন্যাসের শিরোনাম পরিবর্তন করে নতুন শিরোনাম দেন যোগাযোগ।

**কাহিনী সংক্ষেপ**:
অবিনাশ ঘোষালের ৩২তম জন্মদিনে ভোর থেকেই আসছে অবিরাম টেলিগ্রাম এবং ফুলের তোড়া। গল্পটা এখানেই শুরু।
কিন্তু ঘোষালের পূর্ব ইতিহাস বলে হুগলি জেলার নুরনগরে এসে বসতি স্থাপন করা ঘোষালের একসময় অনেক কিছুই ছিল কিন্তু চাটুজ্যেদের সাথে রেষারেষির জেরে মামলা করে সব খুইয়ে মোটা ভাত কাপড়ের জন্য অন্যের সেরেস্তায় গোমস্তাগিরী করা ছাড়া আর কোনো পথ থাকে না তাদের। ঘা শুকিয়েছে কিন্তু দাগ থেকে যাওয়ায় পুরোনো কথা ভোলেনি ঘোষালরা।
ঘোষালদের এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটে অবিনাশের বাবা মধূসুদনের হাত ধরে। বাবার দারিদ্র্যের কারণে বেশি পড়তে পারেনি। কিন্তু বিষয়বুদ্ধিতে পাকা হওয়ায় এক ধনী বন্ধুর বাবার বদান্যতায় ব্যবসা শুরু করে। দ্রুত উন্নতির একেবারে উচ্চ শিখরে পদার্পণ। একগুয়ে,জেদি এবং দাম্ভিক মধূসুদন উন্নতির নেশায় বিয়ে করার ও ফুসরত পাইনা। যখন ফুসরত হয় তখন তার বেশ বয়স । তবে কন্যার বাজারে তার মূল্য সর্বোচ্চ। কিন্তু সে চায় চাটুজ্যে বাড়ির মেয়ে।

চাটুজ্যেদের অবস্থা এখন পড়তির দিকে। দুই ভাই পাঁচ বোনের মধ্যে এখন সংসার আগলে আছে শুধু বড় ভাই বিপ্রদাস এবং সবচেয়ে ছোট বোন কুমুদিনী। অনিন্দ্য সুন্দর কুমুদিনীর বয়স উনিশ। দাদা বিপ্রদাস বোনের বিয়ে দিতে পারছেনা বলে বোনের কাছে নিজেকে অপরাধী ভাবে, অন্য দিকে কুমুদিনী (কুমু) দাদার গলগ্রহ হয়ে আছে এটা নিয়ে মনঃকষ্টে থাকে। এই অপরাধ বোধই দুই ভাই বোনের বন্ধন আরোও দৃঢ় করে। বিপ্রদাস বোনকে অধিক যত্নে এস্রাজ শেখায়, গান শেখায়। আর বোন সারাদিন দাদার সেবাই অন্তঃপ্রাণ। এমন সময় এলো মধূসুদনের বিয়ের প্রস্তাব। দাদা নাকোচ করে দিল প্রথমেই। কিন্তু কুমুদিনী ভাবলো এ তার এতদিনের ঠাকুর কে ডাকার ফল।
নানা জটিলতা শেষে বিয়ে হলো। সব জটিলতাকেই দুপায়ে ঠেলে কুমুদিনী ভাবলো আমি পারবো একে আপন করে নিতে। কিন্তু মধূসুদনের দাম্ভিকতা, বিপ্রদাসকে কটাক্ষ করে কথা বলাতে কুমুদিনীর একেবারে ভালোবাসার উষর জমি মূহূর্তে অনুর্বর হয়ে যায়। কোনো ভাবেই সহজ হতে পারে না স্বামীর সাথে।
এক সময় কালো, বেঁটে,চুলে পাক ধরা মধূসুদন নিজের অযোগ্যতা বেশি করে অনুভব করে কুমুদিনীর নির্মল সৌন্দর্যের কাছে। এবার সে কঠোরতার বদলে হয়ে ওঠে বিনয়ী। কুমুদিনীর মন তাতে যেন আরও বিরুপ হয়ে ওঠে। নিজের আচরণে নিজেই যে কুমুদিনী বেশি কষ্টে আছে তা ফুটে ওঠে মতির মাকে বলা কথাতে।
মধূসুদন আর কুমুদিনী। দুধারার দুটি মানুষের এক জায়গায় জুড়ে দিয়ে সাংসারিক জটিলতার যে সৃষ্টি হয় তা থেকে উত্তরণের উপায় কি? কুমুদিনী পারবে কি সে জটিলতার প্যাঁচ থেকে মুক্ত হতে? নাকি অন্য কোনো সমাধানের পথ বেছে নেবে কুমু?
জানতে হলে পড়তেই হবে "যোগাযোগ"।

**আমার কথা**:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রায় সব উপন্যাসই আমি পড়েছি। তার মধ্যে "চোখের বালি", "গোরা", "নৌকাডুবি", " শেষের কবিতা" তো এখনকার পাঠকদের মধ্যে ও তুমূল জনপ্রিয়। সে তুলনায় " যোগাযোগ" উপন্যাসটি নিয়ে তেমন আলোচনা অন্তত আমার চোখে পড়েনি। দুটি বিপরীত ধারার নরনারীর মানুষিক দ্বন্দ্বের এমন বাস্তব রুপ আমি খুব কম উপন্যাসেই পেয়েছি।
তবে একটা কথা বলে রাখি তা হলো মনের সমগ্র মাধুরী, সৌন্দর্য দিয়ে লেখক এঁকেছেন কুমুদিনী কে।আর যত অবহেলা যেন মধূসুদন এর বেলায়। বিপ্রদাস চাটুজ্যের উপস্থিতি শশরীরে বেশি না কিন্তু পুরো উপন্যাস জুড়ে সে সবসময়ই ছিল। মতি,মতির মা , মতির ‌বাবার উপস্থিতি যেন কুমুদিনীর প্রয়োজনেই।
তবে কুমুদিনী ও‌ মতির মার অতি উচ্চ স্তরের আলোচনা আমার এ উপন্যাসের জন্য একটু বেমানান লেগেছে। এ‌‌ যেন চরিত্রের তুলনায় লেখকের পান্ডিত্য বেশি জাহির করার চেষ্টা!! ( এটা অবশ্য আমার ও‌ সমস্যা হতে পারে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সমালোচনা করা আমার ধৃষ্টতা। আমি শুধু আমার মতামত জানালাম)। আর সংস্কৃত না ‌জানার কারণে গানের কথা গুলো ভালো ভাবে বুঝিনি।
এটুকু বিচ্যুতি বাদ দিয়ে আমি এ উপন্যাসটিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস মনে করি।
না পড়ে থাকলে পড়তে পারেন। সময়টা নষ্ট হবে না এটুকু বলতে পারি!!!!

**রেটিং**
৪.২৫/৫
Profile Image for Hossain Ahmed.
27 reviews1 follower
June 22, 2022
Relationships / Jogajog (যোগাযোগ) was published in 1929 (Ashar, 1338 BS). It's a conflicting psychology novel written in standard Bengali by Vanu Babu. His everlasting instinctive epoch-making feature of writing - moving the story in a humorous way through it's subtle narrative style - shines in its own glory here too. It was first published continuously in 'Bichitra' monthly from Ashwin 1334 BS to Chaitra 1335 BS. The first two issues were titled "Two Men". In the Agrahayan issue of 1334 BS, Rabindranath changed the title and gave it a new name as "Jogajog".

I didn't see much discussion about this novel from the lists of Rabindranath Tagore. Such a real form of human conflict between two opposing streams of men and women is hardly noticeable here. However, the author has drawn Kumudini with all the sweetness and beauty of the mind. And as much negligence as in the case of Madhusudan. Bipradas's presence isn't much in body but he was always there throughout the novel. The presence of Moti, her mother and her father seems to be the need of Kumudini. I didn't understand the lyrics well because I didn't know Sanskrit. It'll be a worth reading if you've thought to read this.

The introduction of the novel is very amazing! In the conflict of wealth, nobility, honor, etc. between the two conflicting dynasties, which have been at loggerheads since time immemorial, the poet subtly brought about the conflict of love! Mr. Madhusudan forcibly marries Kumudini, the eternal enemy of the house, by force of money. These are the heroes and heroines of our story. The marriage took place, but Bipradas, Kumur's brother had to be humiliated enough. On the one hand, Madhusudan's huge prestige, on the other hand, his ego has given the novel a strange dimension! And Kumu's bond with Bipradas, the owner of the declining zamindari, is not to be let go. Love for her, longing to go home became painful for Madhusudan.

Will the psychological battle between husband and wife take the form of a triangle love story with the help of opportunistic Shyama?
Profile Image for Sanowar Hossain.
281 reviews25 followers
October 31, 2022
'যোগাযোগ' বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দ্বন্দ্বমূলক মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস।

অবিনাশ ঘোষালের বত্রিশ বছরের জন্মদিনের প্রসঙ্গ দিয়ে উপন্যাসের শুরু হয়েছে। আমরা দেখতে পাই ঘোষালদের সমাজে নীচু করতে চাটুজ্যেরা নানা ফন্দি ফিকির করে এবং একসময় সমাজে পতিত করে। ফলে চাটুজ্যেদের প্রতি ঘোষালদের একটি অনুচ্চারিত ক্রোধ সৃষ্টি হয়। উপন্যাসে আমরা দেখতে পাই সামন্ত সমাজের বিপ্রদাস এবং ধনিক শ্রেণীর মধুসূদন এর লড়াই। চাটুজ্যেদের সাথে ঘোষালদের দ্বন্দ্ব থাকার দরুন মধুসূদন ঘোষাল চাটুজ্যেদের বংশ থেকে তার স্ত্রী নির্বাচন করেন। প্রথমে বিপ্রদাসের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও কুমুদিনীর আবেগের কাছে হেরে যান তিনি। অবশেষে কুমুদিনীকে বিবাহ করে মধুসূদন ঘোষালের উদ্দেশ্য চরিতার্থ হয়।

উপন্যাসের সবচেয়ে আকর্ষনীয় ঘটনাগুলো ঘটে বিবাহের সময়। ঘোষাল বংশের পূর্বপূরষরা যেভাবে চাটুজ্যেদের দ্বারা বিতাড়িত হয়েছিল তারই প্রতিশোধ যেন মধুসূদন ঘোষাল নিতে থাকেন বিবাহ করতে এসে। একদিকে মধুসূদন কঠিন মনের মানুষ, অন্যদিকে শান্ত-নরম কুমুর মধ্যে একটি শীতল মান-অভিমানের সম্পর্ক চলতে থাকে।কুমুদিনী অল্প দিনেই বুঝে যায় তার স্বামী বৈষায়িক মানুষ। স্ত্রীর সাথে সাংসারিক সময় কাটানো কিংবা স্ত্রীর প্রতি অত্যাধিক দরদ দেখানোর মত লোক তিনি নন।কুমুদিনীর দাদা বিপ্রদাস তাকে একটি আংটি দিয়েছিল এবং এই আংটি নিয়ে মধুসূদনের সাথে যে মানসিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় তা এই উপন্যাসের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করেছে।কুমু-মধুসূদনের সম্পর্কের টানাপোড়নে মধুসূদন আবার শ্যামাসুন্দরীর দিকে ঝুকে পড়ে এবং কুমুর স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করে যা কুমুদিনী মেনে নিতে পারেনি।

বংশানুক্রমিক ক্রোধ,ধনিক ও সামন্ত শ্রেণির সংঘাত কিংবা সম্পর্কের টানাপোড়েন কোনোটির উপন্যাসে গৌণ হয়নি। বিশ্বকবি সবকিছুকেই ফুটিয়ে তুলেছেন সুচারুভাবে। উপন্যাসের মাঝামাঝি কিছুটা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম।শেষেরটুকু ভালো ছিল। হ্যাপি রিডিং।
Profile Image for Tahsina Syeda.
207 reviews63 followers
December 19, 2015
এই উপন্যাসের মূল শক্তি চরিত্রায়ন। কুমুদিনীর ব্যতিক্রমী সত্ত্বার উপস্থিতি ছাড়াও, মধুসূদনের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ unapologetic নেতিবাচক চরিত্র তৈরি করার যে সাহস দেখিয়েছেন, যেটা খুবই ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে। বইটিকে প্রেমের উপন্যাস বলে ভুল করার সুযোগ রাখেননি, sugarcoat করতে যাননি। মানুষে-মানুষে কিছু সম্পর্ক বিষাক্তই থেকে যায়।
Profile Image for Khulud Binte Harun.
20 reviews22 followers
May 23, 2017
প্রতিশোধ নিতে গিয়ে কুনুদিনীকে মধুসূদন বিয়ে করলেও এক সময় তাকে ভালোবেসে ছিল ।কুমুদিনীর ভালোবাসা ও দাসত্ব উভয়ই চাচ্ছিল ।কিন্তু কুমুদিনীর মনে বিপ্রদাসের আদর্শ।
শেষ পর্যন্ত সে কি পারবে মধুসূদনের দাসত্ব স্বীকার করতে............।
2 reviews1 follower
March 12, 2011
Face of Indian woman...then and NOW
Profile Image for Nurul Huda.
193 reviews5 followers
July 19, 2023
নুরনগর নামক গ্রামে চাটুজ্যে পরিবার আর ঘোষাল পরিবারের মাঝে রেশারেশি লেগেই থাকে৷
পরিস্থিতির কারণে ঘোষাল পরিবার গ্রাম ছেড়ে দেয়।
আনন্দ ঘোষালের মৃত্যুর পর মধুসূদন তার পরিবারের হাল ধরে৷ তৎকালীন আর্থিক সংকটের কারণে তাদের পরিবারের অবস্থা ভালো ছিল না। পুরাতন বই বিক্রি করা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে মধুসূদন, তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ঘোষাল নামে অনেক নামডাক করেছে। মহারাজা উপাধিও পেয়েছে৷
অন্যদিকে চাটুজ্যে পরিবারের মুকুন্দলালের মৃত্যুর পর বিপ্রাদাস হয় পরিবারের প্রধান৷ বিপ্রদাসের বোন কুমুদিনী যে উপন্যাসে কুমু নামেই পরিচিত।

মধুসূদনের ইচ্ছা চাটুজ্যে পরিবারে বিয়ে করবে৷ পূর্বাকার দ্বন্দ্বের প্রতিশোধ নেয়ার মূখ্য উপায় ভেবে এ ইচ্ছে৷ বিপ্রদাসের কাছে কুমুদিনীর জন্য প্রস্তাব পাঠায়৷ বিয়ে হয়।
বিয়ের পর দেখায় যায়, তাদের মাঝে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকে। উল্লেখ উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু ই এটা। কুমুর আলাদা দর্শনের সাথে মধুসূদনের মিল হয় না। মধুসূদন কুমুকে তার বংশকে অনেক ভাবেই ছোট করতে চায় শুধু৷ কলহ চলমান....

উপন্যাসে মধুসূদনের ছোট ভাই নবীন এবং তার স্ত্রী নিস্তারিণী যাকে মোতির মা বলেই সম্বোধন করা হয়েছে৷ এ বাড়িতে কুমুর একমাত্র ভালোলাগার মানুষ তারা। কুমুর পাশে থেকেছে৷ আরেকটি চরিত্র শ্যামা, যে মধু আর কুমুর মাঝে থার্ড পার্সন হিসেবে কাজ করেছে। শ্যামা মধুর কাছে ঘেষতে চেয়েছিল, সে পেড়েছেও।

ভাই বিপ্রসাদের প্রতি কুমুর যে ভালোবাসা ফুটে উঠেছে, তা অসাধারণ ।

পাঠক প্রক্রিয়া : দুইদিনেই শেষ করে ফেলেছি৷ পারিবারিক কলহ যে উপন্যাসের বিষয়বস্তু তা পড়তেও এত ভালো লেগেছে। অসাধারণ অসাধারণ

প্রকাশকাল : বিচিত্র পত্রিকা (১৯২৭) তিনপুরুষ নামে প্রকাশিত হয়েছিল পরে যোগাযোগ নামকরণ করে ১৯২৯ সালে গ্রন্থকারে প্রকাশিত হয়৷ আমি নীলক্ষেত থেকে ৩০ টাকায় কিনেছি।

উপন্যাসের নাম যোগাযোগ রাখা হল কেন?
কুমু সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে আর মধুসূদনের বাড়ি ফিরে যাবে না৷ কিন্তু কুমু যখন জানতে পারে সে গর্ভবতী তখন সে মধুসূদনের বাড়ি ফিরে যায়। এইযে অনাগত সন্তান কুমু আর মধুর মধ্যে আবার সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করেছে,একটা যোগাযোগ তৈরি করেছে। এই যোগাযোগের জন্যই এ নামে নামকরণ করা হয়েছে।

#bookreview2022
#যোগাযোগ
#রবীন্দ্রনাথ_ঠাকুর
Profile Image for Shakib Shahriar.
1 review2 followers
June 13, 2020
"বুক রিভিউ"

যোগাযোগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

পারিবারিক জটিলতা নাকি জমিদার শ্রেণীর উত্থান-পতন, কোনটা রবীন্দ্রনাথের 'যোগাযোগ' উপন্যাসের মূল উপজীব্য, এই বিতর্কটি একশো বছরের।
তবে উপন্যাসে সম্মিলন ঘটেছিল উভয়টির।

উপন্যাসের মূল চরিত্রটি হল এর নায়িকা কুমুদিনী। তার ভাই বিপ্রদাসের অত্যন্ত আদরের বোন। বিপ্রদাস বোনকে ভালোবেসে কখনো বিয়েও করেন নি। বিপ্রদাসের জমিদারি পড়তির দিকে। দেনায় পড়তে লাগল সে।

কুমুর বিয়ের প্রস্তাব আসল রাজাবাহাদুর উপাধি পাওয়া মধুসূদন এর সাথে। যদিও মধুসূদন একটু বয়সী, তবু সামাজিক প্রতিপত্তিতে সে তখন চূড়ায় অবস্থান করছে।

বিয়ে হয় কুমু ও মধুসূদন এর। এদিকে বিপ্রদাসের অবস্থা সম্পর্কে মধুসূদন সবটাই অবগত, এমনকি বিপ্রদাস কর্য করে মধুসূদন এর কাছে। এটা নিয়ে গর্ববোধও করে মধুসূদন।

কুমু আর মধুসূদন এর মনস্তাত্ত্বিক সংঘাত শুরু হতে থাকে তার ভাইকে ঘিরেই। তার ভাই মধুসূদন এর কাছে দেনাগ্রস্থ, এই বিষয়টা মেনে নিতে পারেনি কুমু। দুজনের মানসিক জটিলতা যখন চলছে, এর মাঝে যেন ঘি ঢেলে দেয় শ্যামাসুন্দরী। মধুসূদন এর মৃত ভাইয়ের স্ত্রী। যে সবসময় মধুসূদনকে চেয়ে আসছিল। যদিও মধুসূদন তাকে ওই দৃষ্টিতে কখনো গ্রাহ্য করেনা, তবু কুমুর সাথে সংঘাতে সে মধুসূদনকে ভাত বেড়ে খাওয়ানো আর বাতাস করার আধিক্যেতার সুযোগটি ছাড়ে না।

এদিকে শ্যামাসুন্দরী কুমুর কাছেও বড় বোনসুলভ আচরণ করে। কখনো কুমু বুঝতেও পারে না, শ্যামার লক্ষ্য ও দূরদৃষ্টি।

একদিকে মধুসূদন এর বিপুল প্রতিপত্তি, অন্যদিকে তার অহমিকা - উপন্যাসটিকে দিয়েছে অদ্ভুত মাত্রা!
আর পড়তি জমিদারির অধিকারী বিপ্রদাসের প্রতি কুমুর মায়ার বাঁধন তো ছাড়বার নয়। তার প্রতি ভালোবাসা, বাড়ি যাবার আকুল টান মধুসূদনের জন্য পীড়াদায়ক হয়ে ওঠে।

স্বামী-স্ত্রীর মনস্তাত্ত্বিক লড়াই কি সুযোগসন্ধানী শ্যামার হাত ধরে রূপ নিবে ত্রিভুজ প্রেমের গল্পে?
এদিকে কুমুর ভাই বিপ্রদাসের জমিদারির উত্থান কি ঘটবে আবারও?

উত্তর খুঁজতে হবে একশো বছরের আলোচিত এই উপন্যাসে।
Profile Image for Nuhash.
221 reviews8 followers
March 21, 2022
এত বিশাল আকাশ তবুও আমার বেদনা লুকানোর জন্য কিঞ্চিৎ জায়গা নেই! রবী ঠাকুর যাকে আমার অঘ্য দিতে ইচ্ছে করে। যাকে একরাশ ভালবাসায় নিবদ্ধ চিঠি লিখতে ইচ্ছে করে। "আমারও পরাণে যাহা চায় " বলিবার মত শক্ত অভিবাদন ভরা এক ঝাঁক ভালবাসা দিতে ইচ্ছে করে। দুঃখ লাগলকে তাকে ডাকতে ইচ্ছে করে, আমাকে একটু বুঝিয়ে দাও মনে থাকা দুঃখের তরীর দেব, কোথায় যাব?

"যোগাযোগ" বইটি নিয়ে কি বলব! যেন এক বুক ভরা ভালবাসা, অন্তকুন্দল আর পারিবারিক সম্মান কোলাহল নিয়ে গঠিত একটি মানসতরী! ভূমিকম্প যখন পৃথিবীতে গভীর গর্ত থেকে মাথা নাড়া দিয়ে উঠে তখন যেমন তাকে চাপা দেবার চেষ্টা করা মিছে, নিরুপায় হয়ে তার ভাঙাচোরা সহ্য করতে হয় তেমনি বইটির প্রত্যেক পাতায় থাকা ধাক্কা আমাকে নাড়িয়ে দেয় তার থেকে বেশি! "গুরুদেব তোমার চরনে কুন্দের আর কামিনীর অঘ্য চরণ"!

তিনটি চরিত্র মধুসূদন, কুমু, বিপ্রদাশ! তিনজকে ঘিরে যেন এই পৃথিবী আঁকড়ে আছে! দিগন্তের গহীনে তাকালেও এত শূন্যতা নেয় যতটা শূন্যতা তাদের মাঝে বিরাজমান। সূর্য গেছেন উত্তরায়ণে; মাঘ মাস এল, শুক্ল চতুদশী এল কিন্তু তাদের দুঃখ ঘুচলো না!

তাদের বেদনা আর অর্ন্তকুন্দল এ যেন মস্ত একটা সমুদ্র কিন্তু কোথায় এক ফোঁটার পিপাসার জল!
284 reviews3 followers
February 9, 2025
Yogayog is a novel by Tagore the story of an ill fated marriage and I read Malayalam translation by Megha Sudheer. Not an arranged marriage in the traditional way as husband and wife absolutely did choose each other, affirmatively and insistently and for their own reasons, although they had never met, and although their positions were profoundly unequal.

When a woman challenges the system of husbands have absolute ownership of their wives like any other property, even the other women in the family refuses to support her. Luckily for her, there's a brother (who's unmarried and they lost their parents too) who understands her and supports her. Even in Indian society these days, women find such acceptance to their views and let them live the way they want. So it makes the story of an independent woman who chooses to live her life according to her wishes in 19th century a bit difficult for many to accept as a reality.
Profile Image for Debashis Bhattacharjee.
42 reviews2 followers
July 15, 2025
বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান অত্যন্ত ব্যাপক।।তিনি বিভিন্নভাবে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গিয়েছেন।।

আমার মতে যারা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথকে পড়েনি তারা সাহিত্যের বৃহৎ একটা অংশকে অনুভব করতে পারেনি।।অন্য লেখকরা যেখানে বস্তুনিষ্ঠ লেখাকে প্রাধান্য দিয়ে সাহিত্য রচনা করেছেন, মানুষের মনের চিন্তা,ভাব ও মনের অন্তর্দন্দ্বের যে চিরায়ত প্রতিফলন সেটা নিয়ে খুব কম লেখক তাঁদের লিখনিতে তুলে ধরেছেন।।
রবীন্দ্রনাথ এই অসামান্য কাজটাই তাঁর সাহিত্যে নিয়ে এসেছেন বারবার।।

পৃথিবীতে সবথেকে বেশি জটিল কোন কিছু যদি থেকে থাকে সেটা হচ্ছে মানুষের মন।।রবীন্দ্রনাথের কাজ এই মন কে নিয়েই।।তিনি তাঁর সাহিত্য দর্শন এমনভাবে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেন যাতে পাঠক ক্ষণিকের জন্য হলেও ভাবতে বাধ্য হন, সত্যিকার অর্থেই মন কি তার আয়ত্তে??
একারণেই তিনি আমার অত্যন্ত পছন্দের একজন লেখক।।

যারা বই পড়তে ভালোবাসেন কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে পড়েননি তাদের বলবো,পড়ে দেখুন।।
"যোগাযোগ" আপনাকে নতুন ভাবে ভাবতে বাধ্য করবে।।অসাধারণ একটা উপন্যাস❣️❣️।।
Profile Image for Ahmed Reejvi.
78 reviews5 followers
March 5, 2024
উপন্যাসটি প্রথমে "তিনপুরুষ" নামে বিচিত্রা পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও রবীন্দ্রনাথ নিজেই সেই নামটি আর চালিয়ে যাননি। খুব সম্ভবত দুইপুরুষ পর্যন্ত বর্ণনা দেবার পর রবীন্দ্রনাথ গল্পের থিম পরিবর্তন করেন। উপন্যাসটিতে ঘোষাল এবং চাটুজ্যে নামক দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব, পরবর্তীতে বিয়ের মাধ্যমে একটা সেতুবন্ধন, একটি যোগাযোগ তৈরি হয়। ঘোষাল বংশের ২য় পুরুষ মধূসুদনের সন্তান অবিনাশ ঘোষালের নাম উপন্যাসে পাওয়া গেলেও, বিপ্রদাস চাটুজ্যে বিবাহ করেন নি বলে তার পক্ষের তৃতীয় প্রজন্ম বা পুরুষ পাওয়া যায় না।

প্রধান চরিত্রগুলোর মধ্য বিপ্রদাস চাটুজ্যে, তার ভগ্নি কুমুদিনী এবং কুমুদিনীর স্বামী ঘোষাল বংশের মধূসুদন ঘোষালই প্রধান।
বিপ্রদাস ছিলেন শিক্ষিত, সংস্কৃতিমনস্ক, রুচিশীল। সত্যি বলতে কুমুদিনীর চারিত্রিক দৃঢ়তা ও আত্নমর্যাদাবোধ দাদার কাছ থেকেই শেখা। তবে কুমুদিনী দৈব বিশ্বাসে বিশ্বাসী ছিলো বিধায়, বিবাহকে ললাটের লিখন মনে করে অসম বয়সের এবং প্রতিদ্বন্দ্বী পরিবারের সুযোগসন্ধানী মধূসুদনকে বিয়ে করতে সম্মতি দেয়।
অপরদিকে মধূসুদন অর্থের দিকে ধনী হলেও শিক্ষা এবং সংস্কৃতির দিক থেকে যথেষ্ট গরীব। চেহারায় আটোঁসাটো ধরণের, আচার ব্যবহারে হিসেবি এবং টাকা-পয়সা ছাড়া কিছুই বোঝে না। একদিকে কুমুদিনী আধ্যত্নিক রুচিসম্পন্ন ব্যক্তি, অপরপক্ষে মধূসুদন বিবাহিত স্ত্রীর দৈহিক সুখ ভোগ করা নিজের অধিকার মনে করে স্ত্রীর কাছে আসতো বলেই কুমুদিনীর মধূসুদনের প্রতি বরং ঘৃণাই প্রকাশ পেয়েছে।
তবে রবীন্দ্রনাথ মধূসুদনের মধ্যে এই উপলব্ধি জাগ্রত করেছেন যে অর্থ-প্রতিপত্তির জোরে দবাই তাকে ভয় করে, সম্মান দেখালেও, নিজের ঘরের স্ত্রীকেই নিজের মনের মতো করে পেতে পারছে না।
অপরদিকে মধূর ভাই নবীন এবং নবীনের স্ত্রীর মাধ্যমে দাম্পত্য সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, সে সম্পর্কেও একটা প্রচ্ছন্ন ধারণা পাওয়া যায় উপন্যাসে।
এককথায়, কুমুদিনী আর মধূসুদনের অসম মানসিকতার দাম্পত্য সম্পর্কের কাহিনী এবং প্রায় ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্কের সেতুবন্ধনরূপে আসা সন্তানের মাধ্যমেই "যোগাযোগ" নামটির এবং উপন্যাসটির সার্থকতা।
Profile Image for Srijeeta Banerjee.
8 reviews
January 12, 2025
10/10 for the writing ofcourse!

A deep dive into the superstitious and patriarchal Bengal. The caste system was prevalently shown all throughout the book.

Biprodash has to be the most cultured character in the whole book.
All hates to Madhusudan (sorry not sorry)

I found the ending very pivotal. It also depicted a certain crisis that could otherwise arise. I won't spoil it for y'all but I enjoyed the writing.

It was a sad read for me from the beginning to the end. Loved the outlook but not a fan of the feeling I had while reading the extreme forms of prejudice in the family of this book.
But again, that's what makes it a reading experience.
Profile Image for Ekta Kubba.
229 reviews8 followers
July 10, 2020
It is a story of a 19th century Bengali woman, who tries to live according to her ideals and education. This is all in the time when women education, women empowerment and women opinion were non-existent. The caste rivalry, the monarchy and the illiteracy of women at that times makes it more difficult for Kumudini to create a balance between his married life and the ideals with which she had grown up. It is a powerful feminist story. But it ends in the defeat of Kumudini, and in general, a defeat of a woman.
1 review
Read
January 26, 2021
যোগাযোগ উপন্যাসটিতে কুমুর যেমন ব্যক্তিস্বাধীনতা উচ্চকিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ তেমনি তিনি কুমু, একটি নারী চরিত্রকে অবলা এবং পুরুষতান্ত্রিক দাসত্বের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।যেখানে কুমু নিজস্ব স্বাধীনতায় মধুসূদনের ঘর ছেড়ে বাপের বাড়ী চলে যায় আবার সন্তান হবার কারণে,এক প্রকার বিনা ইচ্ছেতেই দুশ্চরিত্র স্বামীর ঘরে ফিরে যায়।আমি মনে করি এখানে নারীর মর্যাদা তথা কুমুর ব্যক্তি স্বাধীনতা হনন করা হয়েছে।
Profile Image for Aaneela_reads.
65 reviews2 followers
March 14, 2024
বিবাহের সামাজিক মূল্য যে আজও কত বেশি, মনের মানুষ না পেয়েও, কর্তব্য পালনে টিকে থাকার প্রথা এখনো রয়ে গিয়েছে এই সমাজে। কয়জন পারে ভালোবেসে মনের মানুষের সাথে সংসার করতে?
লেখক হয়তো তখনি বুঝেছিলেন, এ প্রথা কতটা প্রকট এবং একদিন সেটা দুর্ভাগ্য এনে দিবে হাজারো নারীর কপালে।
যোগাযোগের নামকরণও সার্থক, সেই অর্থে।
Profile Image for Sabbir Hossain.
60 reviews
April 11, 2025
রবীন্দ্রনাথের লেখাগুলো নিজের ধাঁচে অতুলনীয়।। কিন্তু কেন যেন যোগাযোগে একটা অতৃপ্তি থেকে যায়।। কিন্তু উপন্যাস লেখাটা তো লেখকের হাতে লেখক যেভাবে চরিত্র, উপলক্ষ আনবেন সেভাবেই আমরা পড়বো।। নিজে যতোই ভাবি হয়তোবা অন্যরকম হতে পারতো কিন্তু লেখকের লেখা তার নিজের কাছে যেভাবে বিস্তার পেয়েছে সেভাবেই লিখেছেন।। রবীন্দ্রনাথের সমালোচনা করার মতো আসলে সেরকম যোগ্যও হতে পারবো না।।
Displaying 1 - 30 of 53 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.