Ritwik Ghatak (Bengali: ঋত্বিক কুমার ঘটক) was a Bengali Filmmaker and script writer. Along with prominent contemporary Bengali filmmakers Satyajit Ray and Mrinal Sen, his cinema is primarily remembered for its meticulous depiction of social reality. Although their roles were often adversarial, they were ardent admirers of each other's work and, in doing so, the three directors charted the independent trajectory of parallel cinema, as a counterpoint to the mainstream fare of Hindi cinema in India.
Ghatak received many awards in his career, including National Film Award's Rajat Kamal Award for Best Story in 1974 for his Jukti Takko Aar Gappo and Best Director's Award from Bangladesh Cine Journalist's Association for Titash Ekti Nadir Naam. The Government of India honoured him with the Padma Shri for Arts in 1970.
Ghatak was not only a film director, he was a theorist, too. His views and commentaries on films have been parts of scholarly studies and researches. As a filmmaker his main concentration was on men and life and specially the day-to-day struggle of ordinary men. He could never accept the partition of India of 1947 which divided Bengal into two countries. In almost all his film he dealt with this theme.
Filmmaking was not only art for him. In his opinion it was only a means to the end of serving people: It was only a means of expressing his anger at the sorrows and sufferings of his people.
মূলত সম্পাদিত সাক্ষাৎকার সমগ্র, পনেরটি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারের সমন্বয়ে ,সম্পাদকের ভাষায়,'কথা-কোলাজ'। আমূল রাজনৈতিক শিল্পী ঋত্বিক। রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যম হিসেবেই শুধু শিল্পকে বিবেচনা করেন।বইয়ের প্রথম দিকের কথাগুলোতে জীবনের প্রথম দিককার কথা এসেছে।মার্ক্সবাদী রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়া,সাংবাদিকতা, কবিতা-গদ্য লেখা নানা বিচিত্র প্রচেষ্টার কথা।পুরো বইটির পদে পদে শোষকশ্রেণি ও ফিল্মপেশার নানান হর্তাকর্তাদের প্রতি প্রচণ্ড বিবমিষা ও তীব্র ভাষায় শ্লেষোক্তি করেছেন। নিজের ভেতরের প্রচণ্ড সততা ও শিল্পনিষ্ঠতার ঝাঁঝ এই কথাগুলো।নিজের সবকিছুর ব্যাপারেই যুক্তিবোধ ও স্পষ্টতার কথা দেখে ঋত্বিক-চরিত্রের অনুরাগী হয়ে গেলাম। ফিল্মে আসার ব্যাপারে তাঁর সোজাসাপ্টা বক্তব্য, এই শিল্পমাধ্যম দিয়ে অনেক বেশি জনমানুষের কাছে পৌঁছানো যায়,নাটক-কবিতার চাইতে বেশি। "কোনদিন যদি সিনেমার চেয়ে better medium বেরোয় তবে সিনেমাকে লাথি মেরে চলে যাব।" (ভাগ্যিস,তিনি ফেসবুক-যুগে জন্মাননি!)
এবইয়ের অনেক কথাই আগে ঋত্বিকের উক্তি হিসেবে পড়েছি।অরাজনৈতিকতা নিয়ে। যারা সমাজে কোন দায়িত্ব পালন করে না,তারাও কোন না কোন ভাবে দায়িত্ব করে যাচ্ছে,আর তা হল সমাজের ওপরতলার শুয়োরের বাচ্চাদের সাহায্য করা। কী স্পষ্ট,সাহসী কথা! মাঝের দিকে তাঁর ওপর নানা চলচ্চিত্রদর্শনের প্রভাব ও উপমহাদেশের চলচ্চিত্র সম্পর্কে কথা রয়েছে।আইজেনস্টাইন,লুই বুনিয়েলসহ ইতালিয়ান,রুশ,জাপানি চলচ্চিত্র সম্পর্কে দীর্ঘ বিশ্লেষণ ছিল।যেখানে অধিকাংশ চলচ্চিত্র ও পরিচালকের নামই শুনে উঠিনি। বাংলাদেশে এসে করা "তিতাস একটি নদীর নাম" মুভির অনেক কথা উঠে এসেছে।তিতাসের রূপ-জনপদ দেখার জন্য তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অদ্বৈতের বাড়ি গোকর্ণঘাটে এসে ঘুরে যান। খবর নিয়ে জেনেছি,ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয়দের কাছ থেকে অনেক লোকজ শব্দ নোট করে নেন এবং এই উচ্চারণরীতিই প্রয়োগ করেন চলচ্চিত্রে। অবলীলায় স্বীকার করেছে পানাসক্তির কথা।ভদ্রলোকী ন্যাকামী ছিলোনা কোন বক্তব্যেই।ফিল্ম সেন্সর কমিটির উপদেষ্টাদের অবলীয়ায় বাঁদর,পাজী,বদমায়েশ নানান নেতি-উপমা দিয়েছেন যত্রতত্র। বইটি ক্ষ্যাপাটে ঋত্বিক নিয়ে আরো আগ্রহী করে তুলল।
"আমি কোন সময়েই একটা সাধারণ পুতু-পুতু মার্কা গল্প বলি না- একটি ছেলে ও একটি মেয়ে প্রেমে পড়েছে, প্রথমে মিলতে পারছে না, তাই দুঃখ পাচ্ছে, পরে মিলে গেল বা একজন পটল তুলল। এরকম বস্তাপচা সাজানো গল্প লিখে বা ছবি করে নির্বোধ দর্শকদের খুব হাসিয়ে বা কাঁদিয়ে ঐ গল্পের মধ্যে ইনভলব করিয়ে দিলাম, দু মিনিটেই তারা ছবির কধা ভুলে গেল, খুব খুশি হয়ে বাড়ি গিয়ে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। এর মধ্যে আমি নেই। আমি প্রতি মুহূর্তে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে বোঝাবো ইট ইজ নট অ্যান ইমাজিনারি স্টোরি, বা আমি আপনাকে সস্তা আনন্দ দিতে আসিনি। প্রতি মুহূর্তে আপনাকে হ্যামার করে বোঝাবো যে যা দেখছেন তা একটা কল্পিত ঘটনা, কিন্তু এর মধ্য দিয়ে যেটা বুঝাতে চাইছি সেই থিসিসটা বুঝুন, সেটা সম্পূর্ণ সত্যি। সেটার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর জন্যই আমি আপনাকে অ্যালিয়েন্ট করব প্রতি মুহূর্তে।"
"আমি আজ পর্যন্ত কোন ছবি কারও কথা ভেবে করিনি। সে ছবি যদি আপনার ভালো না লাগে তা হলে সত্যি বলতে কী আমার কিছু যায় আসে না। আমি যা করতে চাই তা-ই করব, তার বাইরে আমি যাবো না।"
এটাই ঋত্বিক ঘটক। তার সম্পর্কে মানুষ, বিশেষত আমরা চেতনাধারী প্রজন্মরা কিছুই জানি না। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ আজীবন প্রচার বিমুখ, ডার্টব্যাক-ই ছিলেন এই মানুষটা। খুব বেশি জানার দরকার নেই। তার এই সামান্য পনেরটি সাক্ষাৎকারের বয়ান ভেঙে বানানো কথা-কোলাজটি পড়লেই বুঝা যাবে ঋত্বিক কে। তার জ্ঞানের সীমা-পরিসীমা কতটা গভীর। মানুষটার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ যেন কমেই না।
ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে আমি তেমন জানি না। ভাসা ভাসা জানি। বাংলা চলচ্চিত্রের এই অন্যতম সেরা পরিচালক এর কোন ছবিও এখন পর্যন্ত আমার দেখা হয়নি। যেটা আমার নিজের কাছেই বড্ড বেশি অজ্ঞতার সামিল। সেই অজ্ঞতা ঘুচানোর উদ্দেশ্যে প্রথমেই পড়লাম এই কথার কোলাজটি। ঋত্বিকের সব সাক্ষাৎকারের উত্তরকে এক করে এই বইটি বানানো হয়েছে বলা যায়, লেখার বদলে। কারণ, সব কথাই ঋত্বিকের নিজের মুখে বলা। অনেকটাই মানুষ ঋত্বিক সম্পর্কে জানলাম বইটি পড়ে। যেহেতু সাক্ষাৎকারের সংকলন, তাই কিছু কথার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। মাঝে মাঝে একটু খাপছাড়াও লেগেছে। তবুও বইটি পড়তে খুব আগ্রহ বোধ করছিলাম, কারণ মানুষটি ঋত্বিক ঘটক। অকপট, দৃপ্ত তাঁর সমস্ত কথা, অচঞ্চল, স্থির তাঁর সমস্ত ভাবনা৷ একদম সপাটে চড়ের মতোই তাঁর যেটা মনে হয়েছে ঠিক, মুখের উপর বলে দিতে দ্বিধা করেন নি। মানুষটি আপাদমস্তক রাজনৈতিক। তাঁর ছবি করার একমাত্র উদ্দেশ্য, রাজনীতি এবং মানুষের কাছে তাঁর ভাবনা পৌছানো। যদি তিনি এক সাথে লোকের কাছে পৌঁছানোর আরো বড় কোন প্ল্যাটফর্ম পেতেন, তবে সিনেমা ছেড়ে দিতে দু'বার ভাবতেন না তিনি, কয়েকবারই একথা বলেছেন৷ কথা প্রসঙ্গে এসেছে সমসাময়িক মহান দুই পরিচালক মৃণাল সেন এবং সত্যজিৎ রায়ের কথা। আলোচনা না করলেও, কয়েকবারই তিনি বলেছেন যে পথের পাঁচালী ছবিটার মতো ছবি ছাড়া বাকি যেকোন ছবি দেখতে বসলেই তিনি ছবির চাইতে ছবি বানানোর গ্রামার বেশি ভেবেছেন। আইজেনস্টাইন তাঁর গুরু, বাংলা সিনেমায় প্রমথেশ বড়ুয়াকে তিনি উল্লেখযোগ্য একজন পরিচালক ভাবতেন৷ তাঁর মতে বাংলা সাহিত্যে সেরা উপন্যাস মাত্র ৪টি। রাজসিংহ, চতুরঙ্গ, পুতুল নাচের ইতিকথা এবং গণদেবতা। রবিঠাকুরকে নিয়ে তাঁর উক্তি অসম্মানজনক, এমন একটা অপপ্রচার একবার হয়েছিল। অথচ স্পষ্টতই তিনি বলেছেন রবি ঠাকুর ছাড়া বাংলা সাহিত্য হয় না, বাঙালির জীবন হয় না। হ্যাঁ, তাঁর স্বভাবসুলভ স্পষ্টবাদিতায় তিনি বলেছেন যে রবীন্দ্রনাথ ঔপন্যাসিক হিসেবে তেমন অসাধারণ ছিলেন না। পূর্ববঙ্গের প্রতি ছিল অসাধারণ টান৷ নিজের দেশ ছেড়ে, দেশভাগ নিয়ে তাঁর মতো বিচলিত কেউ বোধহয় ছিলেন না। বারবার তাই তাঁর চলচ্চিত্রের বিষয় হয়েছে দেশভাগ। এছাড়াও তিনি ভালোবাসতেন, প্রাণ দিয়ে, মানুষকে। বিশ্বাস করতেন ভবিষ্যতকে। রবীন্দ্রনাথের একটি কথা তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন, 'মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ।' সরোদ জানতেন। মার্কসিজমে দীক্ষিত ছিলেন৷ সাহিত্য সম্পর্কে সুগভীর জ্ঞান রাখতেন৷ সব মিলিয়ে অকপট, গভীর, সৃষ্টিশীল, খ্যাপাটে এই মানুষটির সম্পর্কে যৎসামান্য জেনে মুগ্ধ হলাম অনেক বেশি৷ শ্রদ্ধা।
অনেকদিন ধরেই কেবল কথাসাহিত্য পড়ছিলাম, এরমাঝে সিরাজ শিকদারকে নিয়ে লেখা মহিউদ্দিন আহমেদ'র 'লাল সন্ত্রাস' বইটি রেফারেন্স সহ বার কয়েক আগাগোড়া পড়তে গিয়ে মাথা বিগড়ে গিয়েছিল, সেই মাথা বিগড়ানো দশা থেকে নিজের ক্ষুদ্র মস্তিষ্ককে বাঁচাতে ভ��ন্নধারার কিছু খুঁজছিলাম, তখন এই বইটির কথা বলেছিল প্রিয় ছোটবোন রাত্রি।
বইটির উপস্থাপনা ভিন্নধর্মী। চলচ্চিত্রের অন্দরমহল থেকে শুরু করে আউটডোর শ্যুটিং পর্যন্ত এই বইয়ের ব্যাপ্তি।
বিভিন্ন মাধ্যমে দেয়া ঋত্বিক ঘটকের ১৫টি সাক্ষাৎকারের কেবল উত্তরপর্ব নিয়ে এই আয়োজন। প্রশ্নগুলো উল্লেখিত নয় বিধায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে আটকে যেতে পারেন অনেক পাঠকই। তবে একটু ঋদ্ধ পাঠক ঠিকই উৎরে যাবেন।
ঋত্বিক ঘটক চলচ্চিত্র অন্তঃপ্রাণ মানুষ। বইটিতে তার চলচ্চিত্র ভাবনা, রাজনৈতিক ভাবনা, বিভিন্ন ছবি সেলুলয়েডে চিত্রিত করার সময় নিজের চোখে দেখা দেশের সমসাময়িক পরিস্থিতি উঠে এসেছে বাহুল্যহীন ভাবে। বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এসেছে তার তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্র ধারণ করার দিনগুলোতে দেখা অভিজ্ঞতার আলোকে। এসেছে মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের তৎকালীন সার্বিক অবস্থা।
ব্যক্তিগত জীবন এসেছে অল্পই, সখেদে জানিয়েছেন নিজের পানাসক্তি নিয়ে উদ্বেগের কথা, কোথাও থিতু হয়ে বসতে না পারার আক্ষেপের কথা, আবার শিল্পীর জীবন, শৈল্পিক জীবনের স্বার্থে এই বোহেমিয়ান জীবনকে মেনেও নিয়েছেন।
সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন সহ চলচ্চিত্র জগতের রথী-মহারথীদের প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে ঘটনার পরম্পরা ও স্বাভাবিকতায়।
একটি প্রসঙ্গ ব্যক্তিগতভাবে ভালো লেগেছে, বঙ্গীয় বামরা রবীন্দ্রনাথকে বুর্জোয়া বলে বাতিল করে দিতে চাইলেও আপাদমস্তক কম্যুনিস্ট ঋত্বিক ঘটক সে পথে হাঁটেননি, এই পথটাকেই তিনি ভ্রান্ত বলেছেন, এই পথের অনুসারীদের প্রতি তার বক্তব্য সোজাসাপ্টা। রবীন্দ্রনাথকে তিনি বলে বাঙালীর সাংস্কৃতিক আত্মা, আত্মাকে অস্বীকার করে সংস্কৃতি এগিয়ে নেয়া যায়না!
সচরাচর পঠিত বইয়ের আমি কোন রেটিং করিনা, তবে এই বইটিকে ৫'র মধ্যে অনায়াসে ৪ দিবো।
চলচ্চিত্র এবং ঋত্বিক ঘটক সম্পর্কে জানতে আগ্রহী পাঠকের জন্য এটা অবশ্যপাঠ্য একটা বই।
যতই উনাকে জানার সু্যগ হয় ততই ওঁর জন্য কস্ট হয় ওঁর প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয় । আমাদের দূর্ভাগ্য উনার জীবদ্দশায় উনাকে ধারন করবার মত, উনাকে বোঝার মত, উনাকে আর একটু সামলাবার মত কেউ ছিলো না