Jump to ratings and reviews
Rate this book

শেষ যাত্রা

Rate this book
প্রশ্নটা চিরন্তন, প্রায় এক শতাব্দী থেকে ঘুরপাক খাচ্ছে
রহস্যপ্রেমী লক্ষ-কোটি পাঠকের মনে।
কে সেরা? শার্লক হোমস, নাকি এরকুল পোয়ারো?
গোয়েন্দা হিসেবে দুজনের মাঝে কে এগিয়ে?
এই কঠিন প্রশ্নের জবাব পাবার জন্য
সার আর্থার কোনান ডয়েল ও আগাথা ক্রিস্টির সৃষ্টি করা
দুই বিশ্বসেরা গোয়েন্দাকে বন্দি করা হলো দুই মলাটের মাঝে,
বাছাই করা নানা স্বাদের ছ’টি কাহিনির মাধ্যমে।
এর মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস, বাকিগুলো বড় গল্প।
প্রতিটিতেই রয়েছে মাথাঘোরানো রহস্য,
দমবন্ধ করা উত্তেজনা আর অকল্পনীয় একেকটি সমাধান।
কে সেরা, সে-জবাব পাবেন কি না জানি না,
তবে দুঁদে দুই গোয়েন্দার সান্নিধ্যে সময়টা যে চমৎকার কাটবে,
সে নিশ্চয়তা বোধহয় চোখ বন্ধ করেই দেয়া যায়।
তা হলে চলুন, পাঠক, হোমস আর পোয়ারোর সঙ্গী হই,
ডুব দিই রহস্যের অতল সাগরে।

397 pages, Paperback

First published February 9, 2015

8 people are currently reading
116 people want to read

About the author

Ismail Arman

66 books204 followers

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
78 (62%)
4 stars
38 (30%)
3 stars
4 (3%)
2 stars
2 (1%)
1 star
2 (1%)
Displaying 1 - 23 of 23 reviews
Profile Image for Rizwan Khalil.
374 reviews599 followers
September 1, 2021
চরম! মাথানষ্ট!! উরাধুরা!!! আগাথা ক্রিস্টি যে কী জিনিস সেটা অনেক বছর তার লেখার সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকায় অনেকটাই ভুলে গেছিলাম, আজকে একেবারে হাতেনাতে মাথায় বাড়ি দিয়ে মনে করিয়ে দিলেন নিখাঁদ মহাজটিল রহস্য উপন্যাসে ক্রিস্টির উপরে কেউ নেই, কখনো হবেও না। "মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস"-এর তুমুল প্রশংসা আর নামডাক আমি বহু বহুবছর ধরেই শুনে আসছি, ক্রিস্টির অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে। কিন্তু তাঁর কিছু গল্প-উপন্যাস আমার পড়া হলেও ("অ্যাণ্ড দেন দেয়ার ওয়ার নান" আমার জীবনে পড়া সর্বশ্রেষ্ঠ রহস্যোপন্যাস) এটা পড়া হয়ে ওঠেনি। এখন মনে হচ্ছে বাংলা অনুবাদে অবিসংবাদিত শ্রেষ্ঠ আমার প্রাণপ্রিয় সেবা প্রকাশনী'র অতিপ্রিয় লেখক-অনুবাদক ইসমাইল আরমান ভাইয়ের ঝরঝরে প্রাঞ্জল অপূর্ব মন্ত্রমুগ্ধকর অনুবাদ কপালে ছিল বলে অবশেষে আজকে "শেষ যাত্রা"র মাধ্যমে এটা পড়তে পারলাম, আর যথারীতি ক্রিস্টির লেখা ও আরমান ভাইয়ের তাল মেলানো অনুবাদ একেবারে মাথা আউলায় দিল!

ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস তিনদিনের যাত্রায় ইস্তাম্বুল থেকে লন্ডন যাওয়ার মাঝপথে তুষারপাতে আটকা পড়ে। যদিও বছরের এটা মন্দা সিজন, কিন্তু অদ্ভূতভাবে ট্রেন পুরো ভর্তি, নানা দেশের নানা জাতের বিচিত্র সব মানুষে, যাদের মাঝে আছেন আমাদের অতি পরিচিত বেলজিয়ান গোয়েন্দা এরকুল পোয়ারোও। এর মাঝেই ঘটে যায় এক নৃশংস হত্যাকান্ড, পোয়ারোর ঠিক পাশের বার্থেই, আর চারদিক তুষারে ঢাকা জনমানবহীন এলাকায় বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন অবস্থায় এক-ট্রেন রহস্যময় সাসপেক্টদের মাঝে পোয়ারো শুরু করেন তদন্ত শুধুমাত্র তার মগজের ধুসর কোষগুলোকে ব্যবহার করে। তদন্ত শুরু হতেই একের পর এক দূর্বোধ্য ও অবিশ্বাস্য সব আলামত আর সাক্ষ্য পেয়ে তদন্তকারী পোয়ারো আর তাঁর সহযোগী রেল কর্মকর্তা মসিয়ো বুচের প্রায় পাগল হবার দশা। মৃতদেহ চেক করে দেখা গেল খুন একইসাথে ডান হাতি ও বামহাতি খুনি দ্বারা হয়েছে, আবার নারী ও পুরুষ দু'ধরনের মানুষই খুনটা করেছে। কামরায় একের পর এক "সূত্র" পাওয়া যাচ্ছে যেগুলো আসল না সাজানো সেটা বোঝা যাচ্ছে না। খুন ঠিক কখন হয়েছে সেটাও এক বিশাল ধাঁধা, কোন মতেই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। কোচে উপস্থিত সকল যাত্রীরই নিচ্ছিদ্র অ্যালিবাই আছে। এদিকে জানা গেল খুনের সময় ট্রেনে দুজন রহস্যজনক ব্যক্তির উপস্থিতি, কন্ডাক্টরের ইউনিফর্ম পরা এক ছোটখাট পুরুষ আর লাল কিমানো পরা হালকা পাতলা মহিলা, যাদের বর্ণনা যাত্রীদের কারও সাথেই মেলে না আর তারা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। এদিকে এই তুষারবেষ্টিত নির্জন এলাকায় বাইরে থেকে কেউ ট্রেন উঠেনি, নেমেও যায়নি। তাহলে খুনি ট্রেনেই আছে এখনো। রহস্য আরো জটিল হল যে খুন হয়েছে তার অন্ধকার অতীত জানা যাওয়ার পর, দেখা গেল এমন মানুষরূপী পিশাচকে মারার জন্য পৃথিবীর কারওরই মোটিভের অভাব হবে না বরং যে কেউ তাকে মরতে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাসই ফেলবে। ঘটনাটা আসলে কি দাঁড়াচ্ছে?

সত্যি বলতে কি, বইটা পড়ার সময় আমার মাথার মধ্যে সারাক্ষণ কাজ করছিল সবচেয়ে আনলাইকলি সাসপেক্টকে সন্দেহ করে তার বিরুদ্ধে নিজের হাইপোথেসিস দাঁড় করানোতে... জীবনে তো মার্ডার মিস্ট্রি কম পড়লাম না, দেখিই না বের করতে পারি কি না কালপ্রিটকে। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল নাহ, বইটা মনে হয় শেষ মেষ হতাশই করবে, এত নাম ডাক আজ থেকে প্রায় এক শতক আগে যখন লেখা হয়েছিল তখনকার জন্য হয়তো যুক্তিযুক্ত ছিল কিন্তু এখন ২০১৫সালের আল্ট্রামডার্ণ পাঠকের সাথে তাল মেলাতে পারবে না। ওয়েল, বলতেই হচ্ছে আশি বছর আগেও যা পাঠককে বোকা বানিয়ে দেয়া রহস্য ছিল, আজকের এই একবিংশ শতাব্দীতেও ঠিক তাই আছে। ক্রিস্টি তো আর এমনি এমনি রহস্যের সম্রাজ্ঞী নন আর আমিও তো সাধেই নিজেকে বিশ্ববেয়াক্কেল ভাবছি না এখন... প্লেইন অ্যাণ্ড সিম্পলি বলতে পারি, নিজের মনে যত উদ্ভট আর অকল্পনীয় থিওরিই দাঁড় করাই না কেন পোয়ারো তথা ক্রিস্টি যখন কাহিনীর ক্লাইমেক্সে একে একে সব আপাত-অসম্ভব রহস্য ব্যবচ্ছেদ করতে শুরু করলেন তখন মসিয়ো বুচের পাশাপাশি আমারও চোয়াল ঝুলে প্রায় মেঝে স্পর্শ করল। সেই সাথে আরো একবার প্রমাণ পেলাম রহস্যপ্রেমী হিসেবে ভিন্টেজ আগাথা ক্রিস্টি পড়ার কোন বিকল্প নেই, পোয়ারোর ক্ষুরধার বুদ্ধিমত্তার চোখধাঁধানো দর্শনে আর ক্রিস্টির একমেবাদ্বিতীয়ম কল্পনাশক্তি ও লেখনি উপভোগ শেষে যে পূর্ণ পরিতৃপ্তি পাই তার বুঝি কোন তুলনা নেই।

অনুবাদের কথা আলাদা করে উল্লেখ না করলেই নয়। গত বেশ কয়েক বছর ধরেই ইসমাইল আরমান সেবার অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি, বিশ্বসাহিত্যের একের পর এক ক্লাসিক তার মনোমুগ্ধকর সাবলীল রূপান্তরে বাংলাদেশি পাঠকরা গোগ্রাসে হজম করছেন আর অধীর অপেক্ষায় থাকেন পরের অনুবাদটা কবে পাওয়া যাবে; "শেষ যাত্রা" পড়ে যেন নতুন করে উপলব্ধি করলাম আরমান ভাইয়ের চৌকস অনুবাদের ধার, পোয়ারোর বুদ্ধির ধারের সাথে যেটা সমানে সমান পাল্লা দিতে পারে। নিঃসন্দেহে বলতে পারি বাংলাদেশে এই মুহুর্তে সেবা'র থেকে সুখপাঠ্য অনুবাদ আর কোন প্রকাশনী উপহার দিতে পারে না, আর এই ঈর্ষনীয় কৃতিত্বের অনেকটাই ইসমাইল আরমান ভাইয়ের ঝুলিতে পড়বে। বহুদিন ধরে আমার বাংলা অনুবাদ (অথবা যেকোন বাংলা বইই) সেভাবে পড়া হচ্ছিল না, শুধু ইংরেজি থ্রিলার পড়ছিলাম একের পর এক, কিন্তু অনেক অনেক সময় পরে আজকে নিজ মাতৃভাষায় একটা অনুবাদ পড়ে যে মজাটা পেলাম সেটা প্রকৃতপক্ষেই অন্যরকম। আগাথা ক্রিস্টির এই অসামান্য কালজয়ী ক্লাসিক মিস্ট্রির যথোপযুক্ত মর্যাদা রেখেছেন ইসমাইল আরমান, আর আজন্ম রহস্যপূজারি হিসেবে একটি নিখুঁত বিশ্লেষণী বুদ্ধির খেলার দর্শক হতে পারে (পাঠক বলাটা ভুল হবে, আমি তো সব চোখের সামনে দেখতেই পারছিলাম!) তাঁদের দুজনের কাছেই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।

আমার রেটিংঃ ১০/১০, A+
Profile Image for Bayazid Ahmed.
14 reviews24 followers
January 18, 2023
আচ্ছা আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, কে সেরা?শার্লক হোমস নাকি এরকুল পোয়ারো? কেউ কেউ বলবে শার্লক হোমস, আর কেউ বলবে এরকুল পোয়ারো। আবার কেউ কেউ এর উত্তর দিতে গিয়ে বেশ হিমশিম খাবে৷ যুগ যুগ ধরে এই দুই বিখ্যাত গোয়েন্দা নিয়ে পাঠকদের মাঝে যে লড়াই চলছে তার উত্তর দেওয়ার জন্যেই বিশ্ববিখ্যাত দুই গোয়েন্দাকে একই মলাটে বন্দী করা হয় সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইয়ে৷

এই বইটিতে ৫টি গল্প এবং ১টি উপন্যাস রয়েছে৷ তন্মধ্যে ৩টি গল্প শার্লক হোমসের এবং ২টি গল্প ও ১ টি উপন্যাস এরকুল পোয়ারোর৷ নানা স্বাদের এই ৬টি কাহিনি পাঠকদের মন জয় করে নিবে৷ শার্লক হোমসের তিনটা গল্প এবং এরকুল পোয়ারো দুইটা গল্পের কথা বললে, সবগুলোই ছোট হলেও বেশ উপভোগ্য ছিলো৷ এবার সবশেষে বলতে হয় এরকুল পোয়ারোর উপন্যাসটিকে নিয়ে, যেটির নাম "শেষ যাত্রা", অর্থ্যাৎ এই উপন্যাসের নামকরনে বইটির নাম দেওয়া হয়েছে৷

আমি এর আগে কখনো আগাথা ক্রিস্টি পড়িনি৷ রহস্যের রানী খ্যাত এই লেখিকার লেখার সাথে আমার প্রথম সাক্ষাৎটা যে বেশ রোমাঞ্চকর হয়েছে তা বলায় বাহুল্য৷ সেই সাথে প্রমান পেলাম, রহস্যপ্রেমী হিসেবে আগাথা ক্রিস্টি পড়ার কোনো বিকল্প নেই৷

" শেষ যাত্রা" উপন্যাসে ট্রেন একজায়গায় আটকে থাকলেও লেখিকা আমার মস্তিষ্কে সারাক্ষণ দৌড়ের ওপর রেখেছেন৷ এরকুল পোয়ারোর ক্ষুরদার বুদ্ধিমত্তা এবং লেখিকার দূর্দান্ত লেখনির মাধ্যমে পূর্ন পরিতৃপ্তি এনে দি���়েছে এই উপন্যাসে৷

ইসমাইল আরমানের ঝকঝকে এবং ফকফকে অনুবাদের কথা না বললেই নয়৷ এমন বই পাঠকের মাঝে পরিতৃপ্তি এনে দিতে ভালো অনুবাদের কোনো বিকল্প নেই। সেই কাজটাই ইসমাইল আরমান বেশ ভালোভাবেই করেছেন এবং তার জন্য তার প্রশংসা করতেই হবে৷

বইটি পড়েছি আমি পিডিএফে৷ পিডিএফ পড়তে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক ধৈর্য লাগে। তাছাড়া ৩৯৭ পৃষ্টার একটি বই পিডিএফে পড়া চারটে খানি কথা নয় বরং এ অসাধ্য সাধন করার মতো ব্যাপার৷ কিন্তু এই বইয়ের গল্প-উপন্যাস গুলো এত উপভোগ্য ছিলো যে পিডিএফ পড়তেও কোনোরকমের বিরক্তি অনুভব হয়নি৷

কে সেরা, এই প্রশ্নের উত্তর পাবেন কি না জানি না তবে দুঁদে দুই গোয়েন্দা সান্নিধ্য যে আপনাদের সময়কে চমকপ্রদ করে তুলবে তার নিশ্চয়তা আমি দিতে পারি৷ পড়তে পড়তে আপনি নিজের অজান্তে ডুবে যাবেন টানটান উত্তেজনাকর রহস্যে৷
Profile Image for Ismail.
Author 66 books204 followers
September 18, 2018
প্রতিটা কাহিনিই আমার অত্যন্ত পছন্দের। মূল ইংরেজিতে পড়তে যতটা মজা পেয়েছি, আশা করছি অনুবাদ পড়েও অন্যেরা ততটাই মজা পাবেন।
Profile Image for Md Shariful Islam.
258 reviews84 followers
June 30, 2020
আজ থেকে ক্রিস্টির বইয়ের রহস্য অনুমান করা ছেড়ে দিলাম!
Profile Image for Maruf Hossain.
Author 37 books258 followers
May 4, 2017
ভালো যেকোন খাবার আমি সবার শেষে সময় নিয়ে তারিয়ে তারিয়ে খাই। ভালো বইগুলোর ক্ষেত্রেও একই থিওরি খাটাই আমি। ভালো কোন বই কিনলে প্রথম কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস শুধু উল্টে-পাল্টে দেখি, নতুন কাগজের গন্ধ নেই। কিন্তু পড়ি না। শুধু মনে হয় পড়লেই তো মজাটা শেষ হয়ে গেল, তারচেয়ে থাক না মজাটা রহস্য হয়েই আরও কিছুদিন।

ইসমাইল আরমানের রূপান্তর করা "শেষ যাত্রা" বইটাও এভাবে ৭ মাস ধরে ফেলে রেখে গন্ধ নিচ্ছিলাম। কিন্তু শেষমেশ আর সহ্য হল না। রসগোল্লার লোভে পড়েই ফেললাম। "শেষ যাত্রা" রহস্য সাহিত্যের দুই পথিকৃৎ সার আর্থার কোনান ডয়েল ও আগাথা ক্রিস্টির ৩টি করে মোট ৫টি বড় গল্প ও ১টি পূর্ণাংগ উপন্যাসের সংকলন।

"শেষ যাত্রা"য় সার ডয়েলের ৩টি গল্প রয়েছে 'কালো পিটার', 'রত্নরহস্য' ও 'স্বর্ণসম্রাট' শিরোনামে। প্রথম দুটি গল্পে শার্লক হোমস তার স্বভাবসুলভ পারফরম্যান্স দেখানোর সুযোগ না পেলেও শেষ গল্পে হোমস হাজির হোমসের মতই। একেবারে মাথা ঘোরানো টুইস্ট ও সমাধান দিয়ে সরাসরি ছক্কা।

রহস্য রাণী আগাথা ক্রিস্টি তো এ বইয়ে হাজির হয়েছেন আরও মারাত্মক ফর্মে। তাঁর সেই ফর্মের নমুনা বোঝার জন্য 'শেষ যাত্রা' উপন্যাসটাই যথেষ্ট। একটি ট্রেন, কয়েকজন যাত্রী। সেই ট্রেনে যাত্রী হিসেবে আছে এরকুল পোয়ারোও। আর সেই ট্রেনেই হল খুন। ভিক্টিমকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে ছুরির আঘাতে, মোট বারোটি আঘাত - বিভিন্ন মাপের। পোয়ারোর সামনে অগ্নিপরীক্ষা। কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না আততায়ী কে? কাউকে সন্দেহও করতে পারছে না, কারণ সবারই রয়েছে শক্ত অ্যালিবাই। এবার?

মাথা গরম করে দেয়া এই উপন্যাসের শেষে এসে শক খেয়েছি, ছোটখাট কোন শক না, বেশ বড় ধরনের শকই খেয়েছি। রহস্য উপন্যাসের শেষে এভাবে একটা মানবিক হৃদয়স্পর্শী ব্যাপার এভাবে চলে আসবে তা ভাবতেই পারিনি। বইটা শেষ করার পর কেমন একটা উদাসীনতা ভর করেছিল। বাকি গল্পগুলোর কথা বাদ দিলেও শুধুমাত্র এই উপন্যাসটার জন্যই এই বইটা যে কারও অবশ্যপাঠ্য বইয়ের লিস্টে ঢুকে যাওয়া উচিত।

অনুবাদ যথেষ্ট সাবলীল, প্রাঞ্জল হয়েছে। এরচেয়ে খুব একটা ভালো করার সুযোগ বোধ হয় ছিল না।
Profile Image for Pranta Dastider.
Author 18 books329 followers
November 6, 2022
বইটা পড়া শুরু করেছি অনেকদিন আগেই, তবে শেষ করলাম আজ। এর কারণ অনেকগুলো। সেগুলোর বেশিরভাগই অবশ্য অবান্তর, তাই সেসবে গেলাম না।

এই বইটি কয়েকটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ -

প্রথমত - অনুবাদ আমি সাধারণত পড়ি না। পড়তে ভালো লাগেনা। তার কারণ পাঠক জীবনের শুরুর দিকে কিছু জঘন্য অনুবাদের পাল্লায় পড়াকে ধরা যেতে পারে। সেসবের মান এতই বাজে ছিল যে অনুবাদ বিষয়টা আমাকে কখনো সেভাবে আকৃষ্ট করেনি। যদিও পরবর্তীতে দুই একটি অনুবাদ ভালো লেগেছিল।

দ্বিতীয়ত - ইতিপূর্বে আমি স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের বিখ্যাত গোয়েন্দা শারলক হোমস এর গল্প পড়ার চেষ্টা এর আগে বহুবার করেছি, কিন্তু কোনওবার সফল হতে পারিনি। অনুবাদ পড়ার চেষ্টা করেছি, অরিজিনাল বই কিনে ট্রাই করেছি, অডিও বুক শুনে চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনওভাবেই সফল হতে পারিনি। কিন্তু এবারে আমার প্রিয় অনুবাদকদের একজন এই গোয়েন্দার কয়েকটি গল্প নিজ হাতে রূপান্তর করেছেন, তাই আগ্রহ অত্যাধিক ছিল।

ঠিক একই কথা বলা যায় আগাথা ক্রিস্টি সম্পর্কে। কামিনী প্রকাশনীর তিন খণ্ডের অনুবাদ সমগ্র বহু আগে বগলদাবা করেছি। এবং যখন সেগুলো কিনেছি তখন গোয়েন্দা গল্প পড়ার অগাধ আগ্রহ ছিল বলাই বাহুল্য। কিন্তু তবুও বার কয়েকের চেষ্টাতেও সেই অনুবাদ গিলতে পারিনি। যার কিছু কারণ পুরাতন লেখনীর ধাঁচ, আর দ্বিতীয় কারণ অপ্রাঞ্জল অনুবাদ।

যাই হোক। বইটা শুরু করেছি এবং শুরুতেই অনুবাদের প্রাঞ্জলতা বরাবরের মতোই সাহায্য করেছে, শান্তি দিয়েছে। এবং অবশেষে আমি গর্বিত যে গোয়েন্দা প্রাঙ্গণে কিংবদন্তী চরিত্র শারলক হোমসের অন্তত তিনটি গল্প আমার পড়া হয়েছে।

এই সংকলনটির পেছনে বলা হয়েছে গোয়েন্দা জগতে দুই কিংবদন্তী হোমস এবং পোয়ারর মধ্যে কে সেরা পাঠককে তা বিবেচনার একটা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে (বা এই জাতীয় কিছু।) কিন্তু সত্যি কথা বলতে গেলে পোয়ারর সামনে হোমস উড়ে গেছে। তার একটা কারণ অবশ্যই গল্পের আঁকার আকৃতি, আর দ্বিতীয়টি (আমার চোখে) হোমসের নাটকীয় ব্যাখ্যা এবং ঘটনার সমাপ্তিতে পাঠকের মগজাস্ত্রের নিস্ক্রিয়তার পরিমান।

হোমসের গল্পে পাঠকে মাথা খাটানোর তেমন সুযোগ দেওয়া হয়না, সেদিক থেকে বলা যায় হোমস = ফেলুদা। এবং সত্যজিৎ রায় নিজেও স্বীকার করেছেন সম্ভবত যে ফেলুদা হোমস থেকেই অনুপ্রাণিত। এবং ফেলুদাকে ঠিক যে কারণে আমার কিঞ্চিৎ অন্যায্য মনে হয়, হোমসকেও ঠিক সেই কারণেই অন্যায্য মনে হয়।

অপর দিকে পোয়ার পাঠকে ভাববার সুযোগ দেন। অন্যদের মতামতকে গুরুত্ব দেন, অন্যের মাথাও নিজের মতো খাটানোর পরামর্শ দেন। এবং শেষমেশ সামধানে পৌঁছে পাঠককে তাক লাগিয়ে দেন সফলতার সাথে। নিঃসন্দেহে এরকুল পোয়ারো এই অর্থে একজন ভালো গোয়েন্দা যে তিনি অধিকতর বাস্তব, হোমসের মতো সর্বেসর্বা নন। হ্যাঁ যদি হোমসের একটি উপন্যাস এই সংকলনে থাকতো তাহলে হয়তো সত্যিকার অর্থেই তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা আরও জোরালো হতে পারত, কিন্তু যেহেতু নেই, সেহেতু আমার পছন্দ পোয়ারো সাহেব স্বয়ং।

যা বলছিলাম, পোয়ারো, আর তার এই সংকলনের সর্ববৃহৎ গল্প "শেষ যাত্রা" এই সংকলনের সেরা সংযোজন। এই গল্পটি গোয়েন্দাকে বিচার বিবেচনা করার স্বাধীনতা এনে দিয়েছে পাঠককে।

গল্প শুরু হয় ধীরে ধীরে এবং ক্রমশ গতি পায় যখন তুষার পাতে আটকে যায় ওরিয়েণ্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি। ওদিকে ট্রেণে খুন হয়েছে একজন। যাকে সুতি কাবাব বানানোর চেষ্টা হয়েছে বারোবার ছুরিকাঘাত করে। তার পকেটে মিলেছে ঘড়ি, যার সময় বন্ধ হয়ে আছে মাঝরাতে। আর পাওয়া যায় পোড়া একটা চিরকুট, সেখান থেকে মেলে অপ্রত্যাশিত এক সূত্র, যা ঘোলাটে করে দেয় পুরো পরিস্থিত।

এর পড় এঁকে এঁকে শুরু হয় জেরা, সবাইকে সার্চ করে, যাচাই করে, ঘেঁটে ঘেঁটেও কেউ বের করতে পারেনা রহস্যের ছক, চক্রবুহ্যে আটকে পড়ে সবাই। তারপর স্বয়ং পোয়ারো তার মগাজস্র খাটিয়ে উদ্ধার করেন রহস্যের সমাধান, এবং সেই সমাধান যার পরনায় ধাঁধাঁয় ফেলে দেবে পাঠককে।

ব্যক্তিগত ভাবে আমি যখন কোনও রহস্য গল্প পড়ি তখন নিজে থেকেই অপরাধী নির্ণয়ের চেষ্টা করি, এবং বেশিরভ��গ সময়ে তা মিলেও যায়। এই গল্পে কিছুটা ধোঁকাই খেয়েছি বলা যায়, তবে একদম অসফল হয়েছি সেটা বললে ভুল হবে। গল্পটা পড়ার সময় আমার মাথায় তিন ধরণের সম্ভাবনা উঁকি মেরেছে এবং তার একটাই শেষ পর্যন্ত গিয়ে সফল হয়েছে, যদিও সেটা খুবই দুর্বল ধারণার অংশ ছিল, এবং অন্যান্য সবল ধারণার পরিনাম শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পরিণতিতে তেমন ভূমিকা রাখেনি, যদিও সেগুলোও খুচরো রহস্যের অংশ হিসাবে প্রমানিত হয়েছে।

গল্পটি ইন হাউস সাসপেন্স গোছের। খুনি আছে যাত্রীদের মধ্যেই, অথচ বোঝা যাচ্ছেনা কে। আর লেখিকা এমনভাবে ছক সাজিয়েছেন যে মোটামুটি ফটোগ্রাফিক মেমরি না হলে কেউ সঠিক সমাধানে পৌঁছতে পারবে না। কারণ চরিত্র প্রচুর, ট্রেনের একটা বগির সব লোক! যেখানে কেউ সত্যি বলছে কি মিথ্যা বলছে সেটা যাচাইয়ের কোনও উপায় নেই। বিশ্বাস করবেন কাকে!?

হাহা ... যাই হোক। শেষ পর্যন্ত বলতেই হয় আগাথা ক্রিস্টির দ্য মার্ডার ইন ওরিয়েণ্ট এক্সপ্রেস (ওরফে শেষ যাত্রা) সত্যিকার অর্থেই একটি চমৎকার গল্প, রূপান্তরও চমৎকার। গল্পের সমাপ্তিও যথেষ্ট যৌক্তিক এবং হৃদয়গ্রাহী। লেখক অনুবাদক ইসমাইল আরমান ভাইকে আবার ধন্যবাদ এরকম একটি সুন্দর গল্প সকলকে উপহার দেবার জন্য।
Profile Image for আকাশ আব্দুল্লাহ.
92 reviews29 followers
Read
August 1, 2015
বইটা ধরার আগে ক্রিষ্টির মার্ডার অন দ্যা ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস ধরার চিন্তাভাবনা করছিলাম।হঠাৎই শুনি এবার বইমেলায় আরমানদার হাত থেকে একটা গল্প সংকলন বেরুবে।তাতে শার্লক হোমস (৩টা) আর এরকুল পোয়ারোর(২টা গল্প ও ১টা উপন্যাস) মোট ৫ টা গল্প সহ মার্ডার অন দ্যা ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস থাকবে। ইংরেজিটা ধরার চিন্তা ঝেড়ে ফেলে আরমানদারটাই পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।কারন এই বইয়ের অপেক্ষায় থেকে এর মাঝে নতুন কোন আগাথা ক্রিষ্টি ধরা যাবে।


অনুবাদ সম্পর্কে বলাটা বাতুলতা হবে।যেখানে লেখিকা আগাথা ক্রিস্টি আর অনুবাদক ইসমাইল আরমান,সেখানে আমার মতো নাদান পাঠক সেই বই বিশ্লেষন করবে আমি কোন হরিদাস পাল!

পাচটা গল্পই ভালো লেগেছে।তবে উপন্যাসটা সবগুলোকে ছাপিয়ে গেছে।অসাধারন একটা রহস্য উপন্যাস সেই সাথে মারাত্মক সাবলীল অনুবাদের ককটেল যে কি হতে পারে সেটা সহজেই আন্দাজ করা যায়।

হোমস আর পোয়ারোর মধ্যে কে সেরা সেটা হয়তো অনেক বিশ্লেষণ সাপেক্ষ এবং ব্যক্তি পছন্দ নির্ভর;তবে কেউ যদি শুধুমাত্র এই বইটা পড়ে তুলনা করতে যায় কে সেরা আমার মনে হয় পোয়ারোই বেশি ভোট পাবে।কারন হিসেবে বলা যায় হোমসের গল্প গুলো থেকে পোয়ারোর গল্পগুলো বেশি ভালো এবং রহস্যের সমাধান গুলো বেশি আকর্ষনীয় ছিলো।আর ব্যক্তিগতভাবে পোয়ারোকেই আমার বেশি ভালো লাগে।অনেকের হয়তো হোমসের গল্প তিনটাই বেশি ভালো লাগতে পারে।

আমি গল্পগুলোর রেটিং করলে এরকম হবে -
১ম গল্প-৪/৫
২য় গল্প -৪/৫
৩য় গল্প-৫/৫
৪র্থ গল্প-৫/৫
৫ম গল্প-৫/৫
উপন্যাস-৫/৫
Profile Image for Ishraque Aornob.
Author 29 books403 followers
June 12, 2019
অসাধারন কিছু শার্লক হোমস ও এরকুল পোয়ারোর ছোট গল্প, সেই সাথে শেষ যাত্রা(মার্ডার অন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস) নিয়ে বইটা সাজানো হয়েছে। শার্লক হোমসের ছোটগল্পগুলো মোটামোটি ছিল তবে স্বর্নসম্রাট গল্পটি বেশি ভালো লেগেছে।

এরকুল পোয়ারোর দুটি গল্প মৃত্যুঘন্টা ও অভ্যাসের দাস। দুটোই অসাধারণ। তবে অভ্যাসের দাস সব গল্পকে ছাড়িয়ে গেছে।

এবার আসি কালজয়ী উপন্যাস শেষযাত্রা প্রসঙ্গে।
একটি ট্রেনে তেরোজন যাত্রীর মধ্যে একজন খুন হল। যার আবার ভয়ঙ্কর অতীত আছে। খুন কি বাকি বারোজনের মধ্যে কেউ করেছে নাকি বাইরের কেউ। মহামান্য এরকুল পোয়ারো পাকেচক্রে ট্রেনে উঠে দায়িত্ব নিলেন। কিভাবে নাকানি চুবানি খাওয়ালেন তিনি খুনি কে? আর কে-ই বা খুনি? মোটিভ কি? জানতে পারার পর অবাক হবে।

ইসমাইল আরমান সাহেবের অনুবাদ ছিল অসাধারণ।
Profile Image for Monjur  Morshed  Prottoy .
22 reviews11 followers
January 11, 2019
বই: শেষ যাত্রা
লেখক:আগাথা ক্রিস্টি ও স্যার আর্থার কোনান ডয়েল
অনুবাদক: ইসমাইল আরমান
প্রকাশনী :সেবা প্রকাশনী
জনরা: থ্রিলার, মিস্ট্রি
মূল্য: বইটা সম্ভবত এখন আউট অফ প্রিন্ট। তবে কিছু দিন আগে মিস্ট্রিজ অফ দ্যা ডার্ক জাঙ্গল এর সাথে রিপিন্ট হয়েছিল। সেটা সম্ভবত এখনো পাবেন

বইটি তে শার্লক হোমসের তিনটি ছোট গল্প এবং এরকুল পোয়ারোর দুইটি ছোট গল্প এবং একটি পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস রয়েছে। ছোট গল্প গুলোর মান মোটামুটি ।তবে আসল মজা হচ্ছে আগাথা ক্রিস্টির অন্যতম বেস্ট বই মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস এর অনুবাদ শেষ যাত্রা বইটিতে।

ইস্তাম্বুল থেকে লন্ডন যাওয়ার পথে তুষারপাতে আটকা পড়ে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস। ঘটনাক্রমে আমাদের গোয়েন্দা এরকুল পোয়ারোও ট্রেন টিতে ছিলেন। রহস্যজনক ভাবে পাশের বার্থে ঘটে এক হত্যাকাণ্ড। ট্রেন টি যে জায়গায় আটকে আছে সেখানে বাইরে থেকে উঠে কারোর পক্ষে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আবার পালিয়ে যাওয়া সম্ভব না। অর্থাৎ ট্রেনেই অবস্থান করছে হত্যাকারী । এই খানেই আগাথা ক্রিস্টির জাদু। প্রায় ১০০ বছর আগে এই রকম একটা রহস্যোপন্যাস লেখা যে সম্ভব তা বিশ্বাস করাই কঠিন। খুনী এই ট্রেন এই অবস্থান করছে। কিন্তু আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনি ধারণা ও করতে পারবেন না যে খুনী কে। সব মিলিয়ে আমার পড়া এখন পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ রহস্যোপন্যাস। আর ইসমাইল আরমান ভাই এর অনুবাদ নিয়ে তো বলার কিছু নেই। বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেস্ট অনুবাদকদের একজন তিনি। সব মিলিয়ে অবশ্য পাঠ্য একটা বই।
পার্সোনাল রেটিং :৫/৫
গুডরিডস রেটিং :৪.৪৬/৫
হ্যাপি রিডিং
Profile Image for সুমাইয়া সুমি.
241 reviews2 followers
June 24, 2024
উফফ! কি এক অসাধারণ সময় গেলো এই বই পড়ে। টান টান উত্তেজনা অনেক দিন পরে অনুভব করলাম।
গোয়েন্দা গল্প বরাবরই প্রিয় আর সেটা যদি হয় মাথা খাটিয়ে সমাধান করা তাহলে তো আর কথাই নেই।
"শেষ যাত্রা" এই বইয়ে আছে ৫ টি বড় গল্প আর ১ উপন্যাস। এর মধ্যে তিনটি গল্প শার্লক হোমসের এবং ২ টি গল্প ও ১ টি উপন্যাস এরকুল পোয়ারোর।
আগাথা ক্রিষ্টির লেখা এই প্রথম পড়লাম। শুরুটা দারুণ আর আফসোস কেন আরও আগে পড়ি নাই।
বিশেষ করে উপন্যাসটা যার নামে এই বইয়ের নাম অর্থাৎ "শেষ যাত্রা" (বিখ্যাত Murder on the Orient Express) এক কথায় অসাধারণ। সাধারণত রহস্য গল্প পড়ার সময় আমার অনুমান মিলে যায় কে আসল কালপ্রিট। অথচ এই গল্পে এমন অবস্থা হইছে যে মাথা ঘুরে গেছে পুরা। মানে কি ছিলো এইটা? অসাধারণ ভাই অসাধারণ।

ইসমাইল আরমানের অনুবাদ নিয়ে বলার কিছু নাই। ঝরঝরে সাবলিল এইজন্য পড়ে অনেক আরাম পাইসি।
সবচেয়ে বড় কথা আজকে অনেকদিন বাদে একটানা একটা বই পড়ে শেষ করলাম।
রেটিং দশে দশ। 😁
Profile Image for Nazrul Islam.
Author 8 books228 followers
March 15, 2015
শেষ যাত্রা বইটা পড়া হয়েছে সেই বই মেলার সময় কিন্তু কেন জানি শেষ যাত্রার পাঠ প্রতিক্রিয়া জাতীয় কিছু দেওয়া হয় নি । তাই আজকে চিন্তা করলাম যেহেতু মাত্রই “আর্কন” ধরলাম তাই “আর্কন” শেষ করতে করতে শেষ যাত্রার পাঠ প্রতিক্রিয়া জাতীয় কিছু চানাচুর ভাজা টাইপ কিছু দিয়ে যাই যদিও বইটা গ্রুপের ৭০%ই মনে হয় পড়ে ফেলেছেন । পাঠ প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আরেকটি কারণ এই বই সম্পর্কে কিছু না লিখলে অন্যায়ই হয়ে যাবে ।

শেষ যাত্রা একটি সংকলন। ৫ টি গল্প এবং একটি সুবিশাল উপন্যাস নিয়ে এই সংকলনটি । এতে আছে গোয়েন্দা শার্লোক হোমসের তিনটি এবং রহস্য সম্রাজ্ঞী আগাথা ক্রিস্টির দুইটি গল্প এবং ১ টি উপন্যাস । তবে বইটিতে আগাথা ক্রিস্টির যে একটি উপন্যাস আছে আপনি যদি শুধু এই উপন্যাসটি পড়েন আমি মনে করি আপনার পয়সা উসুল । বাকি পাঁচটি গল্প আপনি পাচ্ছেন বোনাস হিসেবে । আগাথা ক্রিস্টির “মার্ডার ইন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস” বইটির অনুবাদ কামিনী থেকে যেটা প্রকাশিত হয়েছে সেটা বেশ কিছুদিন আগেই পেয়েছিলাম । রহস্য সম্রাজ্ঞী আগাথা ক্রিস্টির সেরা সৃষ্টির একটি হল “মার্ডার ইন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস” শুনে আর ত সইতে না পেরে পড়াও শুরু করেছিলাম কিন্তু কাহিনী বেশ সংক্ষেপিত মনে হওয়াতে এবং অনুবাদ বেশ খটমটে মনে হওয়াতে এক পাতা পড়ে আর আগাতে পারিনি । বুঝে গেলাম এই অধমের পেটে সেবার অনুবাদ ছাড়া কিছুই হজম হবে না ।

আগাথা ক্রিস্টি দাদি যে একটা কি কঠিন চিজ তার আরেকবার প্রমান পেলাম “মার্ডার ইন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস” পড়ে । কোন কিছুকে খুব সহজে জটিল করে তুলতে দাদির কোন তুলনা নেই । কাহিনী সেই আগের নরমাল ওয়েতেই আছে । খুনি খুন করে পালিয়েছে এইবার খুনী কে ? কেন খুন হল ? কীভাবে হল ? কি মোটিভ ? সেই চিরাচারিত কাহিনী খুব স্বাভাবিক ভাবেই বর্ণনা করেছে কিন্তু বিশ্বাস করুন শেষ করার আগ পর্যন্ত আপনি কোনভাবেই কল্পনা করতে পারবেন না আসলে কি হয়েছে । আপনি যতই হাইপোথেসিসের অধিকারী হোন না কেন । আপনার সমস্ত হাইপোথেসিস কে কাঁচকলা দেখাবে ক্রিস্টি দাদি ।

বাকি পাঁচটি গল্প ও অসাধারণ কিন্তু দাদির “মার্ডার ইন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস” নিচেই সব চাপা পড়ে গিয়েছে । আর শার্লোক হোমসের গল্পগুলো আগে পড়া থাকলেও নতুন করে পড়তে একটুও খারাপ লাগে নি ।

গল্পের কাহিনী আর বললাম না ইতোমধ্যে মনে হয় সবাই জেনে গিয়েছন কি আছে বইয়ের পিছনের পাতায় ।

এইবার আসি অনুবাদ প্রসঙ্গে । অনুবাদক ইসমাইল আরমান ভাই দীর্ঘ এক যুগ ধরে লেখক সঙ্কটে ভুগতে থাকা সেবাকে বলতে গেলে প্রায় এক হাতেই টেনে নিয়ে যাচ্ছেন (আরেক হাতে টানতেছে সায়েম সোলায়মান ভাই grin emoticon ) । শুধু টেনে নিয়ে যাচ্ছেন বললে ভুল হবে । সেবার সেই অনুবাদ মান ঠিক রেখে খুব সাফল্যের সাথে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন । যার কারনে আমরা এখনো সেবার যে লেখক সঙ্কট চলছে তা বুঝতেই পারছি না । এই একটা কারনেই সেবাকে আমার এত্ত ভালো লাগে সেবা থেকে যে সব লেখক তৈরি হয় তাদের অনুবাদের কোন তুলনা হয় না । তারা যেখান থেকে যা লিখুক তা সব সময়েই অস্থির লেভেলের অনুবাদ হয় । যার প্রমান এইবার বইমেলায় সেবার কিছু লেখকের বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বই থেকেই বুঝা যায় । বইটিতে ইসমাইল আরমান ভাইয়ের অনুবাদের কথা বলে লাভ নাই । একবারে প্রাঞ্জল ঝরঝরে ভাষায় অনুবাদ বলতে যা বুঝায় সেইটা করেছেন অনুবাদক । তাই এই টানটান উত্তেজনার বইটি আপনি টানটানভাবেই পড়ে ফেলতে পারবেন এতে আমার কোন সন্দেহ নেই । কারণ ভালো বই যদি ভালো অনুবাদকের হাতে না পড়ে আপনিই বুঝে নিন আপনি সেই বইটি কি করবেন ।

সবশেষে কোন হতভাগা যদি এখনো এই অসাধারণ বইটি না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার পড়ার লিস্টে রেখে দিন ।
56 reviews75 followers
January 20, 2018
আগাথা ক্রিস্ট্রি'র এই একটা সমস্যা। পুরো বইয়ের তিন ভাগের প্রথম দু ভাগ দুর্দান্ত। কিন্তু শেষভাগটা বড় রকমের ত্যানা পেচানো।

রেটিং দেবার ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হচ্ছে। কিছু বই থাকে যেগুলিতে ৩ তারকা দিলে অবিচার করা হয়। আবার ৪ তারকা দিলে বেশি মনে হয়। 'শেষ যাত্রা' বইটির ক্ষেত্রেও একই কথা।
Profile Image for Mukid.
149 reviews4 followers
June 16, 2023
কেন আগাথা ক্রিস্টিকে "দ্য কুইন অফ ক্রাইম" বলা হয় এই বইয়ের শেষ উপন্যাসটা পড়লে কিছুটা ধারণা পাওয়া যাবে।
Profile Image for Farhan.
725 reviews12 followers
May 7, 2020
সবক'টা গল্পই নানা জায়গায় পড়া, কিন্তু ঝরঝরে অনুবাদের কারণে আরেকবার পড়া গেল। 'শেষ যাত্রা' উপন্যাসটা ক্রিস্টির লেখা আমার অন্যতম প্রিয় লেখা 'মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস'-এর অনুবাদ, আর অনুবাদটা দারুণ হয়েছে। তবে মূল গল্পগুলোর নাম দিয়ে দিলে ভাল হতো।
April 16, 2016
নিজেকে নির্বোধ মনে হচ্ছে। এখনো হাঁ হয়ে আছে মুখ। শেষ যাত্রার শেষটা যে এমন হবে এটা জানতে হলে বোধহয় একমাত্র আগাথা ক্রিষ্টি হয়েই জন্মাতে হতো আমাকে। এই মহিলা মানুষের মগজে ঝড় চালিয়ে দিতে কতটা সিদ্ধহস্ত ছিলেন(এত বছর পরও এখনো আছেন!) তা জানতে হলেও বইটা পড়া উচিত।

পোয়ারো নাকি হোমস? কে সেরা?
গোয়েন্দা হিসেবে কে বেশি এগিয়ে?
সত্যি কথা বলতে কি, উপরোক্ত প্রশ্নগুলি আমার কাছে হাস্যকর মনে হচ্ছে। সেরা তারা দুজনই, দুজনের তুলনা আমি করতে পারবো না। তারউপর এই দুজনেরই আমি অন্ধভক্ত। তবে কোনান ডয়েল আর আগাথার প্রশ্ন আসলে বলবো, রহস্য সম্রাজ্ঞী উপাধিতেই আছে এর উত্তর। রহস্যের জ্বাল বুননে আগাথার মাথাতেই শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট চড়াতে ন্যানোসেকেন্ড সময়ও লাগবে না আমার।

ইসমাইল আরমান ভাইর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোলাগা আগেও ছিলো, এখনো আছে। তবে দিনদিন পরিমাণে সেসব বাড়ছেই। অনুবাদ কতটা প্রাঞ্জল এবং সুখপাঠ্য করা যায় তার জ্বলন্ত উদাহরণ 'শেষ যাত্রা'।
Read
December 10, 2023
বুক রিভিউ:- শেষ যাত্রা
লেখক:- আগাথা ক্রিস্টি
এবং স্যার আর্থার কোনান ডয়েল
অনুবাদক:- ইসমাইল আরমান
প্রচ্ছদ:- ইসমাইল আরমান
প্রকাশকাল:- বইমেলা ২০১৫
প্রকাশনী:- সেবা

এটা আমার লেখা ইসমাইল আরমান ভাইয়ের প্রথম রিভিউ। [এর আগে একটা লিখেছিলাম অবশ্য, দ্য পিপল অভ দ্য মিস্ট-এর; তবে লেখাটা আমার সংগ্রহে নেই। আর ওটাকে রিভিউ না বলে স্পয়লারে ভরপুর কিছু একটা বললেই ভালো মানায়।]

এর মানে এই নয় যে আমি এই লেখকের কিছু পড়িনি বা আমি তার ফ্যান নই। আমি অবশ্যই তার ফ্যান, এবং বর্তমান সময়ে সেবার সবচেয়ে জনপ্রিয় দুজন অনুবাদকের একজন তিনি। পরিচিত লেখকদের কোন একটা বই পড়লে আমি চেস্টা করি সেটার রিভিউ দিতে, তবে এই লেখকের সাথে পরিচয় হওয়ার পর মনে হয়না তার কোন বই পড়েছি বা প্রকাশ হয়েছে। একারনেই লিখতে লিখতে এত দেরি....

"শেষ যাত্রা" আসলে একটা অনুবাদ সংকলন। এতে আছে আগাথা ক্রিস্টির একটা সম্পুর্ন উপন্যাস, দুটি ��োট গল্প আর স্যার আর্থার কোনান ডয়েল রচিত শার্লোক হোমসের তিনটি কাহিনি।

শার্লোক হোমসের কিছুই পড়তে বাকী নেই আমার। এর মাঝে কয়েকটা পড়েছি সেবার কিছু গল্প সংকলন থেকে, আ স্টাডি ইন স্কারলেট পড়েছি আরমানভাইয়েরই অনুবাদে, সেবা থেকে। বাকীগুলো ফারুক নাওয়াজের অনুবাদে।

তবুও রহস্যপত্রিকায় প্রকাশিত আরমানদা অনুদিত "স্বর্নসম্রাট" গল্পটা পড়েছিলাম। স্মৃতি ঝালাই করে নেওয়া ছাড়া কোন লাভই হয়নি এতে। শার্লোক হোমস আমি শেষ করেছি খুব বেশি দিন আগে না। কাহিনি তাই প্রায় সবই মনে আছে, যেগুলো নাম দেখে মনে করতে পারিনা- আশা করি পড়তে গেলেই সব মনে পড়ে যাবে। তাই একই জিনিস দুইবার পড়ার কোন মানে হয়না, যেহেতু আগে থেকেই সব জানা থাকার জন্য কোন মজাই নিতে পারছি না।

একারনেই বাদ দিয়েছি "কালো পিটার" আর "রত্নরহস্য" গল্পদুটো।

আগাথা ক্রিস্টির গল্প দুটোর মাঝে একটা আগে পড়া; "মৃত্যুঘন্টা"। রহস্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল কয়েকমাস আগে। টিপিক্যাল আগাথা ক্রিস্টি, তার কাছে যা আশা করেন- তাই। প্রত্যাশা রেখেছেন।

"অভ্যাসের দাস" এখনো পড়িনি।

"শেষ যাত্রা" এ বইয়ের টাইটেল উপন্যাস। মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস-এর বঙ্গানুবাদ।

আগাথা ক্রিস্টি সম্পর্কে আমার জ্ঞান সামান্যই। তার জনপ্রিয়তা বা রহস্য সাহিত্যে তার অবস্থান সম্পর্কে আমি অবগতই আছি। তবে ভদ্রমহিলা সম্পর্কে আমার কোন উচু ধারনা ছিল না এতদিন। কারন তার লেখার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে একটা অডিও বুকের মাধ্যমে, অনুবাদক ইন্ডিয়ান। অনুবাদের মানটা আমি ভুক্তভোগীদের আন্দাজের উপরই ছেড়ে দিলাম।

তবে তার সম্পর্কে প্রথম আগ্রহ জন্মে রহস্য পত্রিকায় তার কিছু অনুবাদ গল্প পড়ে। নিজে একটা অনুবাদ করতে তাই বেছে নিয়েছিলাম "দ্য বার্ড উইথ দ্য ব্রোকেন উইং"। একটা গল্প সংকলনে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল গল্পটা। মাঝখানে এসএসসি পরীক্ষা এসে বাগড়া দেওয়ায় অনুবাদ কর্ম স্থগিত করতে হয়েছে আমাকে। নইলে এটা হত আমার দ্বিতীয় প্রকাশিত গল্প।

তখনই প্রথম পরিচয় হয় তার ইংলিশের সাথে। আর সাথে সাথেই তার লেখনির প্রেমে পড়ি, এত আকর্ষনীয় লেখনি খুব অল্প লেখকেরই আছে। আর দুর্ভাগ্যক্রমে আমার "শেষ যাত্রা"র কপিটিতে প্রায় পৃষ্ঠাবিশেক ছাপা ছিল না। ইদানিং কোন বইয়ের ব্যাপারেই লাক আমার ফেভার করছে না, সবকিছুতেই সমস্যা। বাধ্য হয়ে নয় বরং খুশিমনেই পৃষ্ঠাগুলো ইংলিশে পড়েছি আমি।

বাংলা ইংলিশ মিলিয়ে পড়ে যা বুঝলাম আরকি- অনুবাদটা পুর্নাঙ্গ। অহেতুক কাটাছেড়া করা হয়নি, মুল রস রক্ষা করা হয়েছে পুরোপুরি। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার যেটা অনুবাদটা একেবারেই পারফেক্ট, আগাথা ক্রিস্টিও বাঙালী হলে সম্ভবত এই একই ভাষা ইউজ করতেন।

শেষ যাত্রার কাহিনি একটা খুনকে কেন্দ্র করে, এরকুল পোয়ারোকে নিয়ে কাহিনি। খুনটা হয় একটা ওরিয়েন্ট ট্রেনে, একারনেই উক্ত নাম।

আগাথা ক্রিস্টির ফ্যান হওয়ার জন্য এই একটা বইই যথেস্ট, আমার ধারনা অনুবাদক অনেক বেছে টেছেই বইটা অনুবাদ করেছেন। সেক্ষেত্রে ইসমাইল আরমানের রুচির উপর নির্দিধায় নির্ভর করতে পারেন পাঠক।

স্পয়লার দেওয়া ঠিক হবে না, তবে ধারনা দিয়ে রাখি। কাহিনিটা মোটামুটি এরকম:-

সিরিয়ায় একটা রহস্য সমাধান করে ইস্তাম্বুলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন পোয়ারো। উদ্দেশ্য ঘুড়েফিরে দেখবেন শহরটাকে। কিন্তু বিধি বাম, লন্ডন থেকে নির্দেশ আসল যত তারাতারি সম্ভব তাকে ফিরে যেতে হবে- ওপেন করতে হবে একটা পুরোনো কেসের ফাইল।

বন্ধুবর বুচের মাধ্যমে তৎক্ষনাত একটা টিকিটের ব্যাবস্থা করলেন তিনি, মসিয়ে বুচ রেল ওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। কিন্তু, ভাগ্য আবারও বিরুপ তার প্রতি। ইস্তাম্বুল-ক্যালে গামী যে ট্রেন সারাবছরই প্রায় খালি পাওয়া যায় আজ সেটার কোন বার্থই খালি নেই। কি অদ্ভুত ব্যাপার!

যাইহোক, মসিয়ে বুচ তার প্রভাব খাটিয়ে জায়গা করতে সামর্থ্য হলেন। উল্লেখ্য যে তিনি নিজেও এ সফরের সঙ্গী। আর এরপরই ঘটল অঘটনটা। দুই দিন পার হওয়ার আগেই খুন হয়ে গেলেন এক যাত্রি। তারপর.....

কি ভাবছেন? পোয়ারো কি বসে থাকবে?

এরপরের কাহিনি আর বলা উচিৎ হবে না। পড়ে নিলেই সবচেয়ে ভালো করবেন।

তবে এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি প্রথমেই রহস্যটার কোন তল খুজে পাবেন না আপনি। সময় যতই যাবে ততই বিভ্রান্ত হয়ে পড়বেন আমার মত। হয়ত ইচ্ছে করবে পাতা উল্টে শেষ পাতাটা পড়ে ফেলতে। হুট করেই একসময় মনে হবে যে আমি রহস্যটা সমাধান করে ফেলেছি! কিন্তু পরমুহুর্তেই বোকা বনবেন। কাহিনি যেভাবে এগুচ্ছিল সেভাবেই এগোবে। তবে শেষমেষ যখন সব জানতে পারবেন তা যে আপনার এতক্ষনের ধারনার সাথে বিন্দুমাত্রও মিলবে না সেটা হলপ করে বলতে পারি। আমার মত স্বিকার বাধ্য হবেন, ভদ্রমহিলা ঘোল খাওয়ানোয় ওস্তাদ। একটা দুটো নয় বরং অসংখ্য ছোট বড় গল্প উপন্যাসে তিনি কিভাবে তার এই বৈশিষ্ট্যটা বজায় রেখেছেন ভাবতে গিয়ে অবাক হতে হয় বৈ কি।

শার্লোক হোমস আমার অসম্ভব প্রিয়, এখন থেকে এরকুল পোয়ারোও। তাই চিরন্তন প্রশ্নটা চিরন্তনই থেকে যাচ্ছে। এর সুরাহা করা আমার কম্ম না। আসলে কে সেরা? শার্লোক হোমস? নাকি এরকুল পোয়ারো? আগাথা ক্রিস্টি? নাকি কোনান ডয়েল?

প্রশ্নটা আপনার উপরই ছেড়ে দিলাম....

আর আমার বিনম্র শ্রদ্ধা শ্রদ্ধেয় কাজী মায়মুর হোসেন ওরফে রিংকু ভাইয়ের জন্য। ইসমাইল আরমান ভাইয়ের চাইতে কোন অংশে কম ভালোবাসিনা আমি প্রিয় এই লেখককে। মৃত্যু যদি হয় তাহলে লেখার টেবিলেই যেন হয়, লিখতে লিখতে মৃত্যু বরণ করা যে কোনো লেখকের জন্যই অত্যন্ত সৌভাগ্যের। লেখালেখির প্রতি ভদ্রোলোকের ডিভোশন তাকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে আমাদের চোখে। স্যালুট ইউ, বস!

সবশেষে আমার রেটিং:-
-৪.৯/৫ (পুরো বইটা)
-৫/৫ (শুধু শেষ যাত্রা)
Profile Image for Hussain M Farabi.
73 reviews1 follower
January 1, 2020
ক্রিস্টির মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের সাথে চমৎকার কিছু ছোটো গল্পের সংযোজন। প্রতিটি গল্পই অসাধারণ লেগেছে। ইসমাইল আরমান ভাইয়ের অনুবাদ-ও ছিলো খুঁতহীন!
Profile Image for Ikram Ullah Sadman .
72 reviews10 followers
May 3, 2021
একমাত্র ক্রিস্টির বই শেষ করে নিজেকে বেকুব মনে হয়। এরকম টুইস্ট থাকবে ভাবতেও পারি নি।
Profile Image for Zakaria tanzim.
43 reviews4 followers
November 29, 2024
অসাধারণ। শেষ যাত্রা গল্পটি সেরা
Profile Image for Ratul.
70 reviews22 followers
April 7, 2016
তুষারধ্বসে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস আটকা পড়ছে জনবিরল জায়গায়। সাথে ট্রেনের যাত্রীরাও। এর মধ্যে হুট কইরা খুন হয়া গেল একজন। ছুড়ি মাইরা মোরব্বাকেচা করা হইছে তারে। কিছু ক্ষত চিহ্ন বলতেছে খুনী ছিল ডানহাতি, কিছু বলতেছে বাহাতি। কিছু আলামত বলতেছে খুনী ছিল বেটাছেলে, কিছু বলতেছে মেয়েছেলে। কামরার জানালা খোলা কিন্তু খুনী সেইখান দিয়া বাইর হয় নাই! সন্দেহভাজন লিস্টে আছে ট্রেনের স্লিপিং কোচের ডজন খানেক যাত্রী। তাঁরা একেকজন আবার একেক দেশের, একেক বয়সের, একেক কিসিমের। ব্যাটাছেলে মেয়েছেলে দুইরকমই সেম্পলই আছে সন্দেহভাজনের লিস্টে। ডানহাতি এবং বামহাতি দুই রকমই আছে! আর আছে এরকুল পোয়ারো।
যাগো খুন করার মোটিভ আছে, তাগো সুযুগ নাই। যাগো সুযুগ আছে তাগো মোটিভ নাই। আবার যাগো মোটিভ সুযুগ দুইই আছে, তাগো আবার এলিবাইও আছে! কেম্নে কি! ঝামেলা আরো পাকাইলো লাল রঙের একটা কিমানু! কিমানু আইলো কোত্থিকা, আর গেলই বা কোথায়! পুরাই মাথানষ্ট অবস্থা!
পোয়ারো যখন কেসের জটা ছাড়াতে বেস্ত তখনই খুনী তাকে ডাইরেক্ট চেলেঞ্জ ছুড়ে দিল! অবশ্যই আড়ালে থিকা।
তারপর আছে বারো রকম সন্দেহভাজনের তেরো রকম পেচানো কথা!
একসময় মনে হইতেছিল, এই কেসের সমাধান করা একা পোয়ারোর পক্ষে অসম্ভব, শার্লক হোমসরের যুগ দিতে হবে! কিন্তু মসিয়ো পোয়ারো তো পোয়ারোই। সমাধান বাইর কইরা ছাড়লেন! আর সেই সমাধান এমনই যে শেষ করার পর তব্দা খায়া দশ মিনিট বইসা হয়, আর কইতে হয় 'এইটা কি হইলো! এইটা কিছু হইলো!' আমি চেলেঞ্জ দিয়া বলতে পারি কেউ ঘুনাক্ষরেও (এই শব্দটার মানে কি? ) আগে থিকা নিশ্চিত কইরা কইতে পারবেন না খুনী কে! এই হইলো আগাথা দাদীর মসিয়ো এরকুল পোয়ারো!
এইবার আসি অনুবাদে... থুক্কু, রুপান্তরে।
লেখক ইসমাইল আরমান এর অনুবাদ মানে রুপান্তর নিয়া আসলে নতুন করে কিছুই বলার নাই। সেবার পাঠকেরা এবং গ্রুপের প্রায় সবাই অবগত আছেন সে সম্পর্কে।
মুগ্ধতা নতুন মাত্রা পাইলো শেষ যাত্রা শেষ করার পর। ইংলিশ বই মার্ডার ইন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস পড়া হয় নাই, কিন্তু সেইটা পইড়া এইটার মত এত ভাল লাগতো কি না নিশ্চিত না! মধ্যযুগীও ক্লাসিক ইংলিশ অনেকের কাছে উপাদেয় হইলেও আমার হজম হইতে চায় না। অবশ্য ইংলিশ হজমে আমার পাকস্থলী যে তেমন একটা সবল না এটা অস্বীকার করার কিছু নাই। ঝরঝরে এবং প্রাঞ্জল রুপান্তর অতি উপাদেয় বোধ হয়েছে। ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস তুষারধ্বসে লাইনে আটকা পইরা থাকলেও শেষ যাত্রা পড়ার সময় এক লাইনেও কোথাও আটকাই নাই, এক্সপ্রেস গতিতে চলতেছিল যেন। সব কিছুই যেন চোখের সামনে ঘটতেছিল।
বইয়ের বাকি পাঁচটা গল্পের মধ্যে দুইটা এখনও পড়া হয় নাই, দুইটা পড়া হইছে। এক শেষ যাত্রা দিয়াই পয়সা কয়েকগুন উসুল হয়া গেছে, বাকিগুলা না থাকলেও ক্ষতি ছিল না।
Profile Image for H M Al amin.
44 reviews7 followers
November 30, 2015
একই মলাটের ভেতর এত্তগুলো ভালো লাগার কাহিনী । দুই শ্রেষ্ঠ গোয়েন্দা, একই জায়গায় । ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন কেস নিয়ে হাজির । গিলেই ফেললাম এক বসায় । ট্রেন এ করে ব্যাঙ্গালুর থেকে কলকাতায় আসার সময় পড়লাম । 10 out of 10.
Profile Image for Sumaiyah.
118 reviews31 followers
November 6, 2022
আমি এই উপন্যাসেই কেন যে সব বুঝে গেলাম, মিলেও গেল... ধুর। এমন তো আর হয় না :(
Displaying 1 - 23 of 23 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.