Pramathanath Chaudhuri (Bengali: প্রমথনাথ চৌধুরী), known as Pramatha Chaudhuri, alias Birbal, is an exceptionally illuminating persona in modern Bengali literature. It is astounding how he kept hold of his uniqueness in all-pervasive era of Rabindranath Tagore. As the editor of Sabuj Patra ("Green Leaves",1914) and the mentor of the group that gathered around this journal, Chaudhuri left a lasting legacy to the literature of Bengal.
Profoundly patriotic and a stated cosmopolitan, aficionado of Sanskrit, Pramatha Chaudhuri had immense faith in the native genius of the Bengali. “Today if the traditional high Bengali with its stilted Sanskritic elements makes place, more and more, for a form of spoken Bengali, if ‘current’ Bengali is considered an effective medium of literature of Bengal (including the part that is now Bangladesh)- much of the credit must go to Pramatha Chaudhuri and his magazine Sabuj Patra,” says Arun Kumar Mukhopadhyay. Rabindranath Tagore evoked, “He (Chaudhuri) gave this magazine (Sabuj Patra) its distinctive character and paved the way for my literary activities to brunch out in new directions.”
Pramatha Chaudhuri was not only a pioneer; he was also a creative author of exceptional abilities in writing essays and fiction in specific. According to Arun Kumar Mukhopadhyay, “He is undoubtedly one of the most influential makers of the Bengali language and literature in the twentieth century.”
বাংলা সাহিত্যের বীরবলের আত্মকথা অনেকটা প্রত্যাশা নিয়েই শুরু করি। কিন্তু মাত্র ১০৪ পাতায় প্রমথ চৌধুরীর সুদীর্ঘ জীবনকে বন্দি করা সম্ভব নয়। এবং তা সম্ভব হয়ওনি। ১৯৪৬ এ বইটি প্রকাশিত হয়। কথা ছিল কলেবরে আরো বাড়বে। কিন্তু যিনি পৃষ্ঠাসংখ্যা বাড়াবেন, তিনিই সেবছর গত হন।
পাবনায় পেতৃক নিবাস। জন্মেছিলেন যশোরে। শতবর্ষের পূর্বের যশোরকে অনেকটা হেলার সাথেই দেখেছেন। বেশিদিন পূর্ববঙ্গে ছিলেনও না। পাঁচবছর বয়সেই পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর চলে যান। ২০ শতকের কৃষ্ণনগরের ঠিক চিত্রময়রূপ বর্ণনা দিয়েছেন প্রমথ চৌধুরী। তাঁর সাহিত্যিক হয়ে ওঠার পেছনে এই জায়গাটির মাহাত্ম্য বয়ানের পাশাপাশি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পুত্র প্রমথ তার পারিবারিক আবহের কথা লিখেছেন।
বাবা দুর্গাদাস ইংরেজি পাশ করা লোক ছিলেন। ইংরেজি ভক্ত বললে অত্যুক্তি হবে না। বাড়িতে সংস্কৃতির চর্চা ছিল। গানবাজনা হতো। বাবার ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে অনেক ক্লাসিক বই ছিল। সেসব পড়ার মধ্য দিয়েই রুচিশীল মানসিকতার বিকাশ প্রমথ চৌধুরীর। একইসাথে ইংরেজ আমলে মাঝারি চাকরিজীবী বাঙালি হিন্দু পরিবারগুলোর আভ্যন্তরীণ পরিবেশ, মেজাজ-মর্জির একটা চিত্র এঁকেছেন প্রমথ চৌধুরী।
বাংলায় তখন কলেরা,প্লেগ আর ম্যালেরিয়ার প্রকোপের কথাও কয়েকবার লিখেছেন৷ লিখেছেন শহুরে স্কুল-কলে আর মফস্বলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার পার্থক্য। এই ফারাকের কথা সরাসরি লিখেন নি। কৃষ্ণনগর থেকে যখন কলকাতা এলেন হেয়ার স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়তে এলেন তখন বুঝতে পারলেন।
ক্রমশ পরিচিতের গন্ডি বাড়তে লাগলো। তবে লক্ষণীয় এই গন্ডিতে ধনাঢ্য পরিবারের ছেলেপেলেই বেশি। তারাও বকা নয়; বরং সাহিত্যের প্রতি ঝোঁকওয়ালা, নানা গুণের সমঝদার।
প্রমথ চৌধুরীর বড় ভাইয়ের সাথে রবীন্দ্রনাথের সুসম্পর্ক ছিল। তাই রবিঠাকুর আসতেন চৌধুরীদের বাড়ি। প্রমথ চৌধুরী স্বীকার করেছেন রবীন্দ্রনাথের সাথে সরাসরি সাক্ষাতের আগে তাঁর লেখা নিয়ে আগ্রহ জাগেনি প্রমথ চৌধুরীর মনে৷ এমনকি রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতুষ্পুত্রী কথা শুনে একদা কলেজপড়ুয়া প্রমথ মুখ বাঁকিয়ে বলেছিলেন,
" পরের বাড়ির খুকি দেখবার লোভ আমার নেই। "
সেই খুকিই জীবনসঙ্গিনী হয়েছিল প্রমথ চৌধুরীর। ঠাকুর পরিবারের সাথে সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্টতর করেছিল। সে অবশ্য আরো পরের কথা।
দর্শনে স্নাতক ও ইংরেজিতে স্নাতক আর স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন প্রমথ চৌধুরী। সেই খবরে খুশি হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথও। এতো ভালো ফলাফলের কারণে চাকরি নিশ্চিত ছিল। কিন্তু পরের অধীনে খাটতে রাজি হলেন না তিনি। পিতাও পুত্রকে জোর করেন নি। করলে হয়তো শেষ জীবনে অর্থকষ্টে ভুগতে হতো না প্রমথ চৌধুরীকে। বাড়ি বিক্রি করতে হতো না৷
লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়তে এলেন৷ শুধু পড়লেনই না, যতদূর সম্ভব ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরেও দেখলেন। যেমনটি দেখার সুযোগ হলো জাহাজে লন্ডনে আসবার পথে।
ব্যারিস্টারি পাশ পর্যন্তই গুছিয়ে লেখা। এরপর দ্রুত, তাড়াহুড়া করে টেনে লিখেছেন বাকি জীবনের কথা। ব্যারিস্টার হিসেবে সাফল্য আসেনি। ল কলেজে অধ্যাপনা করেছেন, অন্যের জমিদারি দেখাশোনার কাজ করেই দীর্ঘজীবন পার করতে হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথের অকৃত্রিম অনুরাগী প্রমথ চৌধুরী। রবিঠাকুরের জন্মদিবসেই ১৯১৪ সালে "সবুজপত্র" র আত্মপ্রকাশ। বার কয়েক অর্থাভাবে প্রকাশনায় ছেদ পড়ে। চল্লিশের দশকের শুরুতে তো মহাযুদ্ধের কারণে কাগজের উচ্চমূল্য আর দুষ্প্রাপ্যতার হেতু বন্ধই হয়ে গেল "সবুজপত্র"।
শেষজীবনে দুঃখকষ্ট যেন সঙ্গী হয়েছিল নিঃসন্তান প্রমথ চৌধুরীর। ঠাকুর পরিবারের আর্থিক অবস্থার পতনের ইঙ্গিত করেই সমাপ্তি৷ হঠাৎই শেষ রেখা টেনেছেন প্রমথ চৌধুরী।
আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি এই আত্মজীবনী নিয়ে। রসবোধ আর দেশকাল সচেতন প্রমথের সিগনেচার স্টাইলের লেখার ছাপ বইতে নেই। যেন নিরুপায় হয়ে কলম নিয়ে বসেছেন - এমনই এক নিরাসক্তিতে ভরা এই আত্মকথা। খাপছাড়াভাব তো আছেই। প্রমথ চৌধুরীর আত্মকথা পড়লে মনে হবে তিনি এক মধ্যবিত্ত বাঙালি, যার মেলামেশা শুধুই বাঙালি উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালির সাথে । অথচ আত্মজীবনী বাদে প্রমথ চৌধুরী তো একেবারে ভিন জগতের বাসিন্দা!
নির্বাচিত প্রবন্ধ টা পড়ছিলাম , সেই সুবাদে মাঝে দিয়ে এইটাও পড়ে নিলাম । রবীন্দ্রনাথের জীবন স্মৃতি'র মতন সেইরকম লাগে নি, আত্মজীবনী লেখার উদ্দেশ্যেই লেখা । সে সময়ের বিভিন্ন অঞ্চলের ভৌগলিক পরিবেশ, পারিবারিক শিক্ষা - সংস্কৃতি - সঙ্গীত চর্চা - শিক্ষা দীক্ষার ব্যাপার উঠে এসেছে । ঠাকুর বাড়ি বা সে সময়ের তৎকালীন সংস্কৃতি সচেতন পরিবারগুলোতে বই পড়া , সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল কে যেইভাবে প্রশ্র্য় দেওয়া হত , যতবার পড়ি , ততবারই ভালো লাগে ।
কৃষ্ণনগরের নাগরিকদের মনে সেইসময়ে যে সহজ হাস্য রসিকতার স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল তা পড়ে মানুষের সরল জীবনের কথা চিন্তা করে মন্দ লাগে না । লেখকের সাহিত্য জীবনে ক্রমপ্রবেশ , বিভিন্ন স্থানে তাদের বসতি , বিলাত ভ্রমণের কতিপয় দিক উঠে এসেছে।
শেষের দিকে এই যে সংসার জীবন পরিবার আত্মীয় বন্ধুদের নিয়ে একসময় যে দূরত্ব তৈরি হয় , এক এক করে চলে যায় তার একটা মৃদু ছবি জীবনের পরিপক্ব থিতু দিনগুলোরও পরিণতি ~
প্রমথ চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন যশোর, তবে একটি বাড়ি ও দু-একটি ঘটনা ছাড়া শৈশবস্মৃতিতে কোথাও যশোরের স্থান নাই। কৃষ্ণনগরে কেটেছে শৈশব ও কৈশোর তাই বাল্যস্মৃতিতে মিশে আছে কৃষ্ণনগর। আর এই কৃষ্ণনগরের বাড়িতেই প্রথম দেখা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে।
লেখক প্রমথ চৌধুরী'র যুবক বয়সের বন্ধু রা-- বুদ্ধদেব বসু, অজিত চক্রবর্তী, বিমলাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি বেশ কিছু বন্ধু আত্মজীবনী লেখার জন্য পীড়াপীড়ি করেন। প্রথমত লেখক রাজি হন নাই, কারণ তিনি মনে করতেন তাঁর জীবনে এমন কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি যা পাঠকদের কাছে অসাধারণ মনে হবে। তাছাড়া তখনকার সময়ে সাহিত্যে আত্মকথা লেখার রেওয়াজ ছিলো না। সেই সময় লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নববঙ্গসাহিত্যে নানা বিষয়ে পথপ্রদর্শক , কিন্তু তিনি আত্মজীবনী লেখেননি। সর্বপ্রথম চোখে পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি আর এর পরই নবীন সেনের "আমার জীবন" প্রকাশিত হয়"। তবে ছেলে বেলাতে লেখক একটি বৃদ্ধার আত্মজীবনী।
শেষে বাধ্য হয়ে শ্রীযুক্ত ফণীন্দ্রনাথ ঘোষের নবপ্রকাশিত "রূপ ও রীতি" পত্রিকায় আত্মকথা লিখতে শুরু করেন লেখক।
যে বয়সে এসে আত্মকথা লিখতে শুরু করেন তখন শৈশবের অনেক স্মৃতি হারিয়ে গেলেও লেখক চেষ্টা করেছেন ছেঁড়া ছেঁড়া অংশকে জুড়ে নিয়ে নিজেক তুলে ধ���ার। আর এই নিজের কথা বলতে গিয়ে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অনেকেই চলে এসেছেন। তাঁদের সাথে লেখকর সম্পর্ক এবং ঘটে যাওয়া ঘটনার চমৎকার ভাবে তুলে এনেছেন। "আত্মকথা " বড়ই প্রাঞ্জল ও সাবলীল।
চর্ম চক্ষে দেখা যায় যে রূপ, যে সৌন্দর্য ছোঁয়া যায়, তার অনেক বেশি ভক্ত ছিলেন প্রমথ চৌধুরী ওরফে বীরবল, এ তথ্য স্বমুখে একাধিকবার উল্লেখিত। লাইক দিজ অনেস্টি, আই মাস্ট সে। ঠাকুরবাড়ির যে তরুণীটিকে বিয়ে করেছিলেন, গুণের মতো তার রূপের সুনামও তুঙ্গস্পর্শী ছিলো বলাই বাহুল্য। যদিও নামধাম জানিয়ে সহধর্মিনীর প্রসঙ্গ সরাসরি একবারও টানেননি। তবে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে ইন্দিরা ওরফে বিবিকে কে না চিনতো সে কালে।
কৈশোরের শহর কৃষ্ণনগর, সে গল্পে অকৃপণ। বলেছেন, আমার মন গড়ে দিয়েছিলো কৃষ্ণনগর। সঙ্গীতরসিক ও বিশেষজ্ঞ ছিলেন, জানা গেলো ফরাসী ভাষায় দক্ষতার কথাও। প্রবল এবং প্রচণ্ড ভক্তি রবীন্দ্রনাথে। (একই উচ্ছাস দেখেছি অবন ঠাকুরের আত্মকথায় , সুতরাং খুড়ো-ভাইপোর বনিবনায় খামতি ছিলো, সে কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি।)
আকারে আদতেই বৃহদাকার না হলেও ধারে আনা বই কিনা, তাড়াহুড়োয় শেষ করা। তবে যে বই পড়ে ঠিকঠাক আরাম পাই না, সেটা পুনঃপাঠের তালিকায় সহজে আসে না, সে যার লেখাই হোক।
এই অতি সংক্ষিপ্ত অটোবায়োগ্রাফিটিকে পাঁচে দুই দেওয়াই প্রশস্থ।