Jump to ratings and reviews
Rate this book

ছোট্ট একটা স্কুল

Rate this book

64 pages, Hardcover

First published January 1, 1998

11 people are currently reading
272 people want to read

About the author

Shankha Ghosh

130 books63 followers
Shankha Ghosh (Bengali: শঙ্খ ঘোষ; b. 1932) is a Bengali Indian poet and critic. Ghosh was born on February 6, 1932 at Chandpur of what is now Bangladesh. Shankha Ghosh is regarded one of the most prolific writers in Bengali. He got his undergraduate degree in Arts in Bengali language from the Presidency College, Kolkata in 1951 and subsequently his Master's degree from the University of Calcutta. He taught at many educational institutes, including Bangabasi College, City College (all affiliated to the University of Calcutta) and at Jadavpur University, all in Kolkata. He retired from Jadavpur University in 1992. He joined the Iowa Writer's Workshop, USA in 1960's. He has also taught Delhi University, the Indian Institute of Advanced Studies at Shimla, and at the Visva-Bharati University.
Awards:
Narsingh Das Puraskar (1977, for Muurkha baro, saamaajik nay)
Sahitya Akademi Award (1977, for Baabarer praarthanaa)
Rabindra-Puraskar (1989, for Dhum legechhe hrit kamale)
Saraswati Samman for his anthology Gandharba Kabitaguccha[1]
Sahitya Akademi Award for translation (1999, for translation of raktakalyaan)
Desikottam by Visva-Bharati (1999)
Padma Bhushan by the Government of India (2011)

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
64 (72%)
4 stars
19 (21%)
3 stars
1 (1%)
2 stars
3 (3%)
1 star
1 (1%)
Displaying 1 - 30 of 34 reviews
Profile Image for Akhi Asma.
231 reviews464 followers
April 1, 2021
"ঠিকমতো লিখতে পারলে বাংলাতেও তবে পাওয়া যায় একেবারে পুরো নম্বর।
যায়? যায় না ছাই!

অভিভাবকদের কাছে শিখে এসে কেউ কেউ বলে উঠেঃ 'কুড়ির মধ্যে না-হয় ষোলোই দিতেন! তাই বলে একেবারে কুড়ি? তাহলে রবীন্দ্রনাথ লিখলে কত পেতেন? '

শুনে, হেডমাস্টারমশাই বললেনঃ 'এইবার বোঝা গেল। সচরাচর বাংলায় যে-নম্বরটা কেটে রাখা হয় পরীক্ষায়, সেটা তবে জমা থাকে শুধু রবীন্দ্রনাথের জন্য!' ''

~

এইরকম ভালোমনের একজন হেডমাস্টারমশাইয়ের এইরকম ছোট্ট একটা স্কুলের গল্প এটা।

আমার এখনো মনে আছে যখন তোত্তো-চান বইটা পড়ি, আমি আফসোস করেছিলাম, ওইরকম একটা স্কুল আমাদের দেশে নাই কেন! কিন্তু আসলেই ওইরকম স্কুল ছিল একসময় আমাদের দেশে। যেখানে বাচ্চারা পরীক্ষার হল গার্ড ছাড়াই পরীক্ষা দিতো, হেডমাস্টারের সাথে তারা দেখা শিখতো, নিজেদের ইচ্ছেমত নাটক করতো, হিন্দুছাত্ররা মৌলবীর কাছে পড়তো, মুসলমান ছাত্ররা পন্ডিতমশাইয়ের কাছে,ছিলনা কার রোল কত হবে সেই ভাবনা, যার নামের অক্ষর আগে আসবে সেই হবে ফার্স্ট বয়। যখন ছিল অপু, দূর্গাকে বিভূতিভূষণের মাধ্যমে চেনার সময়। লেখক এটাও বলেছেন যে এখনকার ছেলেমেয়েরা অপুকে চিনে সত্যজিত রায়ের মাধ্যমে, কিন্তু সেটা খারাপ বলেননি।

আমার এখনো মনে আছে স্কুলে থাকতে পথের-পাঁচালী পড়ার কথা। আমাদের স্কুলে যদিও কার রোল এক বা দুই হতো সেটা নিয়ে কম্পিটিশন ছিল, তারপরেও স্কুল জীবন খারাপ ছিলনা। স্কুলেইতো কাজলা দিদির দেখা পেয়েছিলাম। স্কুলে যদিও কবিতা মুখস্থ করে লিখতে হতো, তাও স্কুল থেকেইতো কবিতা কি শিখেছিলাম। আমার মনেহয় স্কুল থেকেই আমার কবিতা প্রীতিটা আসছে।

লেখক এতো সুন্দর করে উনার স্কুলের কথা বলেছেন, রসগোল্লা দিয়েও যে কুল পাড়া যায়, কেউ ভাবতে পারেন?

এইবইটা 'ঘুরে ফিরে অভিযান, বই নিয়ে নাহিয়ান' এর ভিডিও দেখে কেনা হয়েছে। খোয়াবনামা তে অর্ডার করেছিলাম, কিন্তু উনারা বইটা পায়নি, পরে বাতিঘরে নক দিয়ে সুখ আপুকে জিজ্ঞেস করলাম, আপু বললো একটু ডিফেক্ট আছে, আমি প্রথমবারে নিইনি এই কথা শুনার পরে, পরেরবারে কি মনে করে নিয়েই নিলাম। এই বই আমাকে স্কুললাইফে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে, তাই এখন ডিফেক্ট থাকলেও সমস্যা নাই।

তবে আমাদের সময়ও বাংলাতে নম্বর তোলা খুব কষ্টের ছিল। কারণ সব নম্বর রবীন্দ্রনাথ নিয়ে নিত যে!!

আরেকটা কথা বইটার ভেতরে অনেক সুন্দর ছবি আঁকা আছে। আর প্রচ্ছদটাও অনেক সুন্দর!

সুখঞ্জনা আপু ও নাহিয়ান ভাইয়াকে অনেক ধন্যবাদ।

"ভাগ্যটা যেন ঘোলা জলের ডোবা।
দুর্বিষহ মাতালের প্রলাপের মতো।
নিশীথরাত্রের ছিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ।"
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews238 followers
May 19, 2022
একশ পার্সেন্ট নিশ্চিত এই বইটা পড়তে পড়তে আপনার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠবেই! কেন না বলেন তো? যার স্কুল যতো বিচ্ছিরিই হোক না কেন অল্প হলেও স্কুল নিয়ে একটা মধুর স্মৃতি সবার মনেই কাজ করে। কাজেই, লেখক যখন হা বিতং করে নিজের ছেলেবেলার ছোট্ট সুন্দর স্কুলের স্মৃতির বর্ণনা করে তখন নিজের স্কুলের স্মৃতিচারণ করতে করতে কিছু লিখতে না পারা এই আমারও মনে হয়.. আহা! আমার স্মৃতিগুলোও যদি এভাবে শেয়ার করতে পারতাম! লেখকের স্কুলের রাতের ক্লাসের মতো চমকপ্রদ ব্যাপারটা হয়তো আমার জীবনে ঘটেনি কিন্তু ক্লাস এইটের পাঠক্রমে মৃৎশিল্প সম্পর্কিত বিষয় থাকায় সমগ্র ক্লাস এইট বাসে করে বিজয়পুর যাওয়া, কখনও হিস্টোরিক্যাল প্লেস হিসেবে স্কুলের কাছের রাণীর কুঠিতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া এ সব আমাদের কাছে কম আনন্দদায়ক ঘটনা ছিল না! আবার লেখকের স্কুলে যেমন নাটক হত, আমাদের স্কুলেও তাই.. সবাই মজা করে বলতো আমাদের স্কুলে নাকি বার মাসে তের পার্বণ হয়। সবচেয়ে মজার ছিল রিহার্সেলের সময়টুকু। কোনমতে প্রথম চারটা ক্লাস শেষ করে টিফিনের পর থেকে শুরু হতো রিহার্সেল.. গার্হস্থ্য অর্থনীতি ক্লাসের প্রাক্টিকেলের নামে পিকনিক.. আহা! কত ক্লাস ফাঁকি আর কত দুষ্টুমি! স্কুলের স্মৃতি বললে যে কারও চোখ-মুখ ঝলমল করে উঠে হারিয়ে ফেলা অপার্থিব কিছু আনন্দময় মুহূর্তের কথা ভেবে। সেক্ষেত্রে লেখক শঙখ ঘোষ যা.. আমি আপনিও তা।
ও হ্যা! আরেকটা ব্যাপার! আমার অবজারভেশন বলা যায়। একটা স্কুলের হেডমাস্টার/মিস্ট্রেস যতো চমৎকার স্কুলটা ঠিক ততোটাই চমৎকার হতে বাধ্য। এই যেমন তোত্তোচানের কথা যদি বলি.. তোত্তোচানের বইটা পড়তে যেয়ে ওর স্কুলে ভর্তি হতে চায়নি এমন মানুষ বোধ হয় কমই আছে.. কী চমৎকার জীবনমুখী শিক্ষা দেয়া হতো সেখানে! তোত্তোচানের জীবনটা বদলে দেয়ার জন্য ওর মা আর তোমোয়ে গাকুয়েন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোশাকু কোবাইয়াশির অবদান অন্যতম। এই যে লেখক শঙখ ঘোষ.. তার রবীন্দ্র প্রীতি কিংবা রবীন্দ্র সাহিত্য পড়া বা সেদিকে আগ্রহী করে তোলার জন্য তাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কম অবদান নেই! আজকাল এমন শিক্ষক কই? বা বর্তমানের এই প্রতিযোগিতামূলক জীবনে কোন স্কুলে যদি এইরকম অফ ট্র‍্যাক কিছু পড়ানো হয় বা কাজ করানো হয় স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক তো বটেই অভিভাবকেরা পর্যন্ত হায় হায় করে উঠবেন গেলো গেলো.. সন্তানের পড়াশোনা রসাতলে গেলো এই বলে। আজকালকার বাচ্চাদের আর সেই আনন্দময় শৈশবটাই বা কই? সেই রামও নেই, নেই সেই অযোধ্যাও। নিরানন্দ পড়াশোনার চাপে পড়ে কিছু যান্ত্রিক মানুষ বড় হচ্ছে রেসের ঘোড়া হবে বলে... আহারে জীবন!
Profile Image for Harun Ahmed.
1,661 reviews420 followers
May 19, 2022
৪.৫/৫

পদ্মাপারের রেলকলোনির ছোট্ট একটা স্কুল।সময়টা ১৯৪৪-৪৫ সাল।স্কুলের হেডমাস্টারমশাই প্রতি ক্লাসে ছাত্রদের জন্য পার্লামেন্ট করে দিলেন।অর্থাৎ ছাত্রদের নিজেদের দায়িত্ব নিতে হবে নিজেদের।প্রতি ক্লাসে একেক কাজের জন্য আলাদা বিভাগ থাকবে।যেমন-ম্যানার্স এন্ড ডিসিপ্লিন সেকশন,লিটেরারি সেকশন,এথলেটিক্স, ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন,এগ্রিকালচারাল সেকশন।প্রতি বিভাগেই থাকবে মন্ত্রী ও সদস্য।বিভাগ হয়েছে।এখন তো কাজও চাই।ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছেলেরা ঠিক করলো তারা নিজেদের ক্লাস চুনকাম করবে।স্যারদের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে নিজেদের ক্লাস ঝকঝকে করে তুললো ছাত্ররা।এক ক্লাসের ছাত্ররা করেছে।অন্যরা কি বসে থাকবে?সবাই নিজেদের ক্লাস চুনকাম করে ঝা চকচকে করে ফেললো। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এতো কাজ করেছে,অন্য বিভাগরাও বসে নেই।একেক ক্লাসের কৃষি বিভাগ নিজেদের জন্য আলাদা আলাদা বাগান করে ফেললো। কয়েকদিনের মধ্যেই পুরো স্কুলের চেহারাই পাল্টে গেলো।
এখানেই শেষ নয়।হেডমাস্টারমশাইয়ের কল্যাণে নিজের পছন্দসই বিষয়ে পড়ে শান্তিনিকেতনে পরীক্ষা দেওয়া,নাইটস্কুলে আকাশের নক্ষত্র চেনা,স্বেচ্ছায় হিন্দু ছাত্রদের আরবি শেখা আর মুসলিম ছাত্রদের সংস্কৃত শেখা,শিক্ষকবিহীন ক্লাসে পরীক্ষা দেওয়া ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে লেখা অনন্য স্মৃতিগদ্য "ছোট্ট একটা স্কুল।" লেখকের মতো যারা সেই ছোট্ট স্কুলে পড়েছে তাদের ঈর্ষা না করে উপায় নেই।আর বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা হেডমাস্টারমশাইয়ের জন্য।তাঁর মতো পাদপ্রদীপের আলো থেকে দূরে থাকা দলছুট,সৃষ্টিশীল,বর্ণিল,অভিনব চিন্তার মানুষ যুগে যুগে জন্মায় বলেই হয়তো পৃথিবীটা এখনো সুন্দর।
Profile Image for Sohan.
274 reviews74 followers
March 7, 2024
ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে আমরা এক জায়গায় মিলিত হই। গতকাল সন্ধ্যেয় আমাদের একদফা মিটিং হয়ে গেছে—আমরা পাবনা শহর থেকে যাত্রা শুরু করে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে অদূর পাকশী নগরীতে খুঁজে বের করবো কবি শঙ্খ ঘোষের ছোট্ট একটি স্কুল। একেবারে সত্যিকারের, ছবির মতো সুন্দর ছোট ছোট গ্রামের মাঝে ছোট একটি স্কুল। যখন থেকে জানতে পেরেছি মিষ্টি মিষ্টি এই রচনাগুলোর প্রেক্ষাপট আমাদের বাড়ি হতে কয়েক পা দূরে, তখন থেকে ‘চক্ষু মেলিয়া দেখিবার’ খুব সাধ জেগেছে। আরও সাধ জেগেছে, হুড়মুড় করে সিএনজি করে নয় বরং সাইকেলে চেপে প্রকৃতির রূপ-বৈচিত্র্য দেখতে দেখতে, গ্রামের মধ্যে দিয়ে, পাকা সর্ষে ও ধনিয়া ক্ষেতের উৎকট ঘ্রানের মধ্যে দিয়ে, উড়ে যাওয়া ধবল বকের সাথে, টেপাগাড়ি খাল-কলাবাগান পেড়িয়ে, ইউক্যালিপটাসের বনের মধ্য দিয়ে, লাউয়ের মাচা, কাঁচা হলুদ শুকোতে দেয়া গাঁয়ের বধুদের পাশ কাটিয়ে, মেঠো পথের সোঁদা গন্ধের মাঝে বিচরণ করতে করতে এগিয়ে যাবো আমরা। আর হলও তাই।

ভোর ভোর তিনটে সাইকেল কোনমতে যোগার করা গেছে। অতঃপর দেখা গেলো একটির ব্রেক নেই, অপরটির প্যাডেল ভাঙা, অন্যটির চাকা পাংচার টায়ার লিক। সাইকেলগুলো মেরামত করতে করতে হয়ে গেলো বেলা। সব কিছু ঠিক ঠাক করে সবে সাইকেলে উঠতে যাচ্ছি তখন দেখি দূর থেকে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসছে সাধু। সেও আমাদের পাড়ার টীম মেম্বার, আকারে বিশাল, বুদ্ধিতে একেবারে ছেলেমানুষ, পড়ে কলেজে। সে এসে বলল, সেও আমাদের সাথে যাবে। আমরা পরি মুশকিলে, একটা সাইকেলেরও নেই কেরিয়ার যে তাকে তুলে নেব। তাকে জিজ্ঞেস করি—সাইকেল চালাতে পারবে?
সে বলে—আজ্ঞে না।
মানে?
সেই ছেলেবেলায় একবার চালিয়েছিলাম।
এই করে তুমি ত্রিশ কিলোমিটার যেতে চাইছ, জানো আমরা কোথায় যাচ্ছি?
সে জানেও না কোথায় যাচ্ছে, আর শঙ্খ ঘোষেরও নাম শোনেনি। সে অটো-ভ্যান-রিকশা এসবে ভেঙে ভেঙে যাবে, তবুও যাবে। অগত্যা!

আমরা সাইকেলে চড়ে শহর থেকে সবে বেড়িয়ে যাচ্ছি, সেই সময়ে আবার বিপত্তি! কেও মোবাইলে জানিয়ে দিলো, ম্যাক্স মুলার (পাড়ার একটা কুকুর) সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছে। এই খবর শোনার পর আমাদের আবার সাইকেল ঘুরিয়ে পাড়ায় আসতে হয়। আমাদের পাড়ার এই টীম মূলত পথের অসহায় পশুদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে থেকে। অতএব ফিরতে হচ্ছেই। ম্যাক্স মুলারের পায়ের জখম পরিষ্কার করে ওতে নানা রকম ওষুধ লাগিয়ে দিতে দিতে বেলা আরও বেড়ে গেলো। মনে হল, আজ বোধহয় আর যাওয়া হচ্ছে না ছোট্ট একটা স্কুলের সন্ধান করা। কিন্তু পরক্ষনে মনে হল, এও তো আমাদের খুঁজে বেরানোরই গল্প। হোক না শুরুটা এমন। কুকুরের চিকিৎসাসেবা শেষে আমরা এবার সত্যি সত্যি বেরিরে পরি। টানা তিন ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে পৌঁছে যাই নগরী পাকশীতে।

ব্রিটিশ প্রশাসকগণ পাবনা মহকুমায় পদ্মা নদীর তীরে বেশ যত্নের সাথে গড়ে তোলে এই পাকশী নগর। পদ্মার তীরে তারা নিজেদের বসবাসের জন্য দু’ রকমের কলোনি গড়ে তোলে। একটি পরিচিত সাহেব পাড়া কলোনি নামে আর আরেকটি সিনিয়র সাব-অর্ডিনেট কলোনি। লন্ডনের খামারবাড়ির স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এই সব কলোনির বসতবাড়িগুলো দেখতে বেশ চমৎকার। আরও এক ধরণের কলোনি তারা গড়ে তুলেছিল নেটিভদের জন্য। যেটি এখন বাবু পাড়া কলোনি নামে পরিচিত। কবি শঙ্খ ঘোষের অধিকাংশ শিশুতোষ রচনাগুলোর প্রেক্ষাপট, পদ্মাপাড়ের এই সব পাড়া ও আশেপাশের ছোট ছোট গ্রামকে কেন্দ্র করেই।

আমরা প্রাচীন সব বৃক্ষে ঘেরা কলোনির পাশ দিয়ে এগিয়ে চলি। উঁচু উঁচু বৃদ্ধ জীর্ণ ছায়াদানকারী শিরিষ গাছের সারির মাঝ দিয়ে যাবার সময় ভাবি, সাহেবরা এখানে কলোনি গড়তে প্রচুর বৃক্ষ রোপন করেছিলেন, এতো বেশি বৃক্ষ রোপন করেছিলেন যে এই অঞ্চলের জলবায়ুই যেন বদলে গেছে। শুধুমাত্র বনায়নের কারণে এই অঞ্চলটুকু যে বসবাসের বেশ উপযুক্ত ও আরামদায়ক হয়ে ওঠে তার প্রমান মেলে এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোর সাথে তুলনা করলে।

১৯১৫ সালে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ উদ্বোধনের পর এই নগরীটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এখানে নির্মাণ হতে থাকে রেলওয়ে অফিস আর কর্মকর্তা কর্মচারীদের থাকবার জন্য আবাসিক এলাকা। তৈরি হয় ডাকঘর, বাজার, বিদ্যালয়, প্রভৃতি।
ঠিক সেই সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে, রেলওয়ে চাকুরীরত কর্মীদের সন্তান এবং স্থানীয় জনগণের সন্তানদের শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য ১৯২৪ সালে যোগীন্দ্র চন্দ্র দাসগুপ্ত একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর মায়ের নামানুসারে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয়—চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ।

রেলওয়ে কলোনির পাশে ছোট্ট একটা স্কুল চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ। শঙ্খ ঘোষের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিলো এই বিদ্যালয়ে। তখন অবশ্য়ি তাঁর পারিবারিক নাম ছিল চিত্তপ্রিয় ঘোষ। সাত বছর বয়েসে পরিবারের সাথে পাকশী এসেছিলেন তিনি। ১৯৩৯ সালে তাঁর বাবা চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পাকশী অফিসার্স কলোনিতে কাকার বাসায় এসে উঠেছিলেন কবি। অবশ্য তখনি বিদ্যালয়ে ভর্তি হননি। বাড়িতেই চলছিল প্রথমিক বিদ্যার হাতেখড়ি। এরপর ১৯৪২ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠে। এখান থেকে ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা দেন তিনি।

এই যে চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ, এই ছোট্ট স্কুলের স্মৃতি নিয়ে ‘ছোট্ট একটা স্কুল’ ছাড়াও শঙ্খ ঘোষ রচনা করেছেন বেশ কয়েকটা গ্রন্থ—সুপুরিবনের সারি, সকালবেলার আলো, অল্পবয়স কল্পবয়স, রাগ করো না রাগুনি, আমন ধানের ছড়া, বড় হওয়া খুব ভুল, ইত্যাদি। এই সব রচনা মন দিয়ে পড়লে বোঝা যায় এগুলো সব তাঁর বাল্য স্মৃতি বিজড়িত পাকশীর প্রেক্ষাপটে লেখা। শঙ্খ ঘোষের প্রচুর ছড়া ও কবিতা আছে যার মর্ম বুঝতে আমাকে অনুসন্ধান করতে হয় তাঁর মূল কোথায়, নেমে পড়তে হয় শিকড়ের সন্ধানে। আর তাই তো ছুটে আসি দেখতে তাঁর সত্যিকারের স্কুল আর গ্রামটাকে যেখানে তিনি পেয়েছিলেন কবিতা লেখার প্রথম অনুপ্রেরণা।

আমাদের সাইকেলগুলো ক্রিং ক্রিং ঘণ্টা বাজিয়ে শতবর্ষী শিরিষ গাছের সারি পেড়িয়ে যখন বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে থামল তখন আমাদের শুরু হল অবাক হওয়ার পালা। বিদ্যালয়ের সেই মূল ভবনের প্রাচীন অংশ এখনও সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এখনও ব্রিটিশ স্থাপত্যের ছাপ স্পষ্ট। আর সবচেয়ে বড় কথা আজও সেটি গল্পের মতোই ছোট্ট একটি স্কুল। একটুও বর্ধিত হয়নি।

‘পদ্মাপাড়ের সামান্য একটা রেল কলোনি, তিনদিকে তাকে ঘিরে আছে ছোট ছোট গ্রাম, সেই কলোনির ছোট একটা স্কুল। সেই দূর ১৯৪৪-৪৫ সালে কতই-বা তার ছাত্রসংখ্যা হবে তখন, গ্রাম আর কলোনির ছেলেরা মিলে বড়োজোর দুশো-আড়াইশো।’


চন্দ্রপ্রভার বিদ্যাপীঠের ছোট্ট ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে মাঠের উপর যখন দাঁড়িয়েছি, তখন আমার প্রথম অনুভূতি ছিল—যদি এই ছোট্ট ইশকুলটার মাস্টার মশায় হতে পারতুম। ঠিক বইতে লেখা বিএসসি মাস্টারের মতো। ছোট্ট একটা স্কুল বইটার সবচেয়ে প্রিয় অধ্যায় বলব—রাতের ক্লাস। সত্যি বলতে অঙ্কশাস্ত্রবিদ হওয়ার ইচ্ছে আমার কখনই ছিল না। ও জিনিসে আমরও ভীষণ ভয় ছিল (এখনও আছে) আর তাছাড়া ইশকুলে পড়বার সময় থেকে জ্যোতির্বিদ্যার প্রতি প্রবল আকর্ষণ ছিল আমার। আসলে জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শিতার জন্যই মূলত অংকশস্ত্র নিয়ে পড়া। আর কিছুই নয়। আজকাল আমিও জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্প্রসারণ কার্যক্রমের নামে উন্নতমানের সব টেলিস্কোপ দিয়ে মাঠে ঘাটে গণমানুষকে বেশ কিছু মহাজাগতিক বস্তুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিই আর কসমিক সিটিজেনশিপের দর্শন আওড়াই, আর আমার হাতে থাকে কম ফ্রিকুএন্সির লাল আলোর টর্চ আর খালি চোখে নক্ষত্রমণ্ডল দেখানোর জন্য লেজার লাইট। আর সেকারনেই নাইটক্লাস অধ্যায়টা পড়বার সময় প্রান-মন আমার তাই উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। নিজেকে অনেক বেশি সম্পৃক্ত করতে পারি বইটার সাথে। লেখকের সাথে। সময়ের সাথে। অতীতের সাথে।

‘হ্যাঁ, বিজ্ঞান যিনি পড়াতেন আমাদের, তাঁর একটা ব্যক্তিগত নাম নিশ্চয়ই ছিল, কিন্তু ইশকুলসুদ্ধ সবাই তাঁকে বলতাম বি. এসসি. মাস্টারমশাই, কেননা মাস্টারমশাইদের মধ্যে একমাত্র তিনিই ছিল��ন বি. এসসি. পাশ। নাইটক্লাশের ভার ছিল তাঁর উপর। লম্বা একটা পাঁচ-ব্যাটারির টর্চ ছিল তাঁর, ক্লাস এইটের দলবল নিয়ে চলে যেতেন খেলার মাঠের দিকে, আকাশের তারা চেনাবার জন্য। হেডমাস্টারমশাই বলে দিয়েছেন, গ্রহ-নক্ষত্র অধ্যায়ের ক্লাস করতে হবে আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে, ক্লাস ঘরের মধ্যে থেকে নয়।’


এই যে আদর্শ একজন হেডমাস্টারমশাই, তাঁর সম্পর্কে না বললেই না। ছোট্ট একটা স্কুল বইটা পড়লে বোঝা যায় না তিনি স্বয়ং লেখক শঙ্খ ঘোষের পিতা।
মনীন্দ্র কুমার ঘোষের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯২৬ সালে কলকাতার গুপ্ত লেনে কামিনী কুমার ঘোষ প্রতিষ্ঠিত আদর্শ বিদ্যালয়ে। এরপর একমাসের মধ্যে তিনি মহেশতলী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন। সেখান থেকে প্রধান শিক্ষক রূপেই মাতৃভূমি বরিশালের গৌরনদী থানার চন্দ্রহার গ্রামের কৈলাশ চন্দ্র রমেশ চন্দ্র বিদ্যালয়ে চলে আসেন। ত্রিশের দশকে প্রচলিত রীতি লঙ্ঘন করে তিনি এই স্কুলে সহশিক্ষা (Co-education) প্রচলন করেন। ১৯১৯ থেকে ৩০শে’র দশক পর্যন্ত সহ-শিক্ষা নিয়ে টিচার্স জার্নালে বহু প্রবন্ধ লেখা হয়। এ সম্পর্কে তার মত ছিল Co-education is better than no-education. শিক্ষানুসারে এবং ব্যাকরণ চর্চায় তিনি আচার্য সূনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় এবং কালিদাস রায়ের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। চন্দ্রহার থেকে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে পাবনা জেলার পাকশীতে চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠে চলে আসেন। এখানে দেশভাগের পরেও তিনি থেকে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারিবারিক চাপে তাঁকে যেন কতকটা বাধ্য হয়েই চলে যেতে হয় পশ্চিমবঙ্গে।

‘দাঙ্গায় দাঙ্গায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় সমাজ, রাজনীতির কূট খেলায় ভাগ হয়ে যায় দেশ, আনোয়ার বা নুরুলকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে আসে অরুণ বা বিমল। শুধু হেডমাস্টারমশাই থেকে যান তাঁর ইশকুলে আরও কিছুদিন ভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে একেবারে একা, কেননা ভালবাসার ঘের দিয়ে তারা বেঁধে রেখেছে তাঁকে। বছরখানেক পরে তাঁর উদ্বেগকাতর আত্মীয়জনেরা যখন নিতান্ত জোর করেই নিয়ে আসে তাঁকে এপার-বাংলায়, ইস্কুলবাড়ি থেকে কয়েক মাইল দূরে তাঁকে মিছিল করে পৌঁছে দেয় স্টেশনে, জলভরা চোখে নিজেদের হাত থেকে রক্ত নিয়ে তারা লিখে দেয় অভিমানভরা বিদায়বানী। ভাষা বা মন যে বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের গণ্ডিবাঁধা নয়, আরও একবার সেটা বুঝিয়ে দেয় তারা।’


বইটির প্রতিটা গল্পেই এমনটা দেখতে পাই—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে বাংলাদেশের একটা ছোট্ট স্কুলে কীভাবে প্রথাগত শিক্ষাব্যাবস্থার নিয়ম ভেঙে বেড়িয়ে এসে একজন হেডমাস্টার ও কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার মানই কয়েক ধাপ বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এই সব পড়বার পর মনে হয়েছে—ছোটদের নয় শুধু বরং সত্তর বছর আগের সে সব দৃষ্টান্ত আমাদের বড়দেরও পড়তে দেয়া উচিৎ।

স্কুলের চারপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখে মনটা হঠাৎ কেমন উৎফুল্ল হয়ে উঠলো। চন্দ্রপ্রভার পেছনে কিছুটা আবাদি জমি আর একটু জঙ্গলমতো একটা জায়গা, কিছুক্ষণ আমরা সেখানে ঘুরে বেড়ালাম। দূরের ওই আম বাগান, সুপুরিগাছের সারি, জলা-ডোবা কেমন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কেমন জানি মন খারাপ করা একটা মুহূর্তও এসে গেলো হঠাৎ। স্কুল জীবনে যদি আরেকবার ফিরে যেতে পারতাম!

পশ্চিমে হেলে পড়া সূর্যের প্রভায় চন্দ্রপ্রভাকে আরেকবার দেখে নিই আমরা এরপর সাইকেলে ক্রিং ক্রিং ঘণ্টা বাজিয়ে খুঁজতে বেড়াতে হারিয়ে যাই অন্য গল্পের জগতে।

পুনশ্চঃ
এ সবে ভূমিকা রইল কেমন? আর সব আত্মজৈবনিক রচনার প্রেক্ষাপটগুলোও ঘুরে ঘুরে দেখব আর লিখব।

২৩শে ফাল্গুন ১৪৩০


... ও আরেকটা পুনশ্চঃ
বইটা পড়তে সাহায্য করায় হারুন ভাই ও আকাশকে ধন্যবাদ।
Profile Image for Samiur Rashid Abir.
218 reviews43 followers
September 24, 2023
শঙ্খ ঘোষের "ছোট্ট একটা স্কুল" পড়ে অনেকেই হয়ত ভ্রু কুঁচকে উঠবেন, আদৌ কি এমন স্কুল সম্ভব! আমার মতে, আলবৎ সম্ভব। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। বড় বড় স্কুলের দীর্ঘদিনের প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদার খাতিরে প্রিন্সিপাল কিংবা হেডমাস্টার মশাইয়ের নতুনত্ব এক্সপেরিমেন্ট করার সৌভাগ্য হয় না, কিন্তু ছোট্ট স্কুলগুলো যেন এই নিয়মের বাইরে এক মুক্ত পাখি, সেখানে অনেক কিছুই সম্ভব।

বইটি পড়ার সময়ে আমার নিজের হাতেখড়ি যেখানে সেই স্কুলখানার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল বারে বারে। আমারও ছিল ছোট্ট একটা স্কুল। স্কুলের প্রিন্সিপাল স্যারের নামখানা কাব্যিক, নীহাররঞ্জন মিলন। স্যার গান শিখাতেন বাচ্চাদের। কাব্যিক নামের কারণে আমার এক বন্ধু ভুল করে বসেছিল সাধারণ জ্ঞান মৌখিক পরীক্ষায়, তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কে? সে খুব কনফিডেন্সের সাথে জবাব দিয়েছিল, নীহাররঞ্জন মিলন। হা হা!

স্কুলে বিভিন্ন কার্যক্রম হতো। আমাদের বৃহস্পতিবার ছিল হাফ ডে, যেমন খুশি তেমন পোশাক পড়া যেত। ঐদিন আমি বেশ এক্সাইটেড থাকতাম কারণ সেদিন প্রথম পিরিয়ডের পর বাকি পিরিয়ডগুলোতে টিচার আবৃত্তি, গল্প, কবিতা, গানের আয়োজন করতেন। সবার নিজস্ব প্রতিভা দেখানোর সুযোগ হত। আমি যখন ক্লাস টু তে পড়ি, তখনই আমরা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের "সোনালি দুঃখ" উপন্যাসটুকু শুনি। বাংলার শিক্ষিকা "লৌহকানিজ" টিচার আমাদের সোনালি দুঃখ শুনিয়েছিলেন। লৌহকানিজ টিচার নামকরণের কারণ আছে বৈকি। ঐ বয়সে আমাদের সকলের দাঁতই নড়বড় শুরু করত। আমাদের সকলের প্রথম দাঁতের বিসর্জন উনার হাতেই হয়েছিল। তাই আমরা উনাকে এই নামেই ডাকতাম। এক বৃহস্পতিবার তিনি বললেন, আজকে আমি তোমাদের ত্রিস্তানের গল্প শুনাব। এভাবেই সোনালির দুঃখকাঁথা শুরু হলো। কাহিনী সেদিন শেষ হয়নি। না শেষ হওয়াই স্বাভাবিক, গোটা উপন্যাস শেষ করা চাট্টিখানি ব্যাপার না। তাই টিচার রেগুলার বাংলা ক্লাসের শেষের ১০ মিনিট করে শোনানো শুরু করলেন, লুকিয়ে লুকিয়ে। পুরা ক্লাসজুড়ে অপেক্ষা করতাম কখন আসবে গল্পের মাহেন্দ্রক্ষণ, ত্রিস্তান কি জয়ী হবে ,সূচরাজা কি তাকে সারিয়ে তুলতে পারবে? উৎসুক শ্রোতা আমরা, সবচেয়ে দুষ্টু ছেলেটাও মনোযোগ দিয়ে শুনত। কিন্তু একদিন আমরা ধরা পড়া গেলাম, ভাইস প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে। স্যার ম্যাডামকে শুরুতে একটু বকা দিলেও কাহিনীটুকু শেষ কর‍তে দিয়েছিলেন। শিশুমনের উপাখ্যানের প্রতি আকুল আগ্রহ হয়ত বুঝতে পেরেছিলেন।

ভাইস প্রিন্সিপাল জনাব দেলোয়ার হোসেন স্যার উপরের ক্লাসে ইংরেজী পড়াতেন। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম শিক্ষকের তালিকায় খুব সম্ভবত তিনি সবার উপরে থাকবেন। স্যার ইংরেজী এর চেয়ে জীবন শিক্ষা বেশি দিতেন, পড়াশোনা যে শুধু গৎবাঁধা বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকা না, তার শিক্ষা আমরা স্যারের কাছেই পাই। আজ আমার ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ অনেকটাই এসেছে স্যারের অনুপ্রেরণায়। পাঠ্যবইয়ের গতানুগতিক ইতিহাসের বাইরে যে ইতিহাসটুকু রয়েছে সেগুলো তিনি গল্পের মতন শুনাতেন আমাদের। যেমন, ১৭ জন সৈন্য নিয়ে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজি বাংলা জয় করেন - এটা কে না জানে! কিন্তু, আমরা আরোও বেশি জানার সুযোগ পেয়েছিলাম, খিলজি সাহেব ছিলেন তুর্কিদের তুলনায় অনেকটা খর্বাকৃতির, হাত ছিল বেঢপ সাইজের লম্বা। উনার পিতা জন্মের পর মন্তব্য করেছিলেন, একে দিয়ে কিছুই অর্জিত হবে না। কিন্তু, বাংলায় বহিরাগত শাসনের গোড়াপত্তনের সূচনা এই মানুষটাকে ঘিরেই হয়েছিল। যখন বখতিয়ার খিলজি বিনা বাধায় প্রাসাদে ঢুকে যান তখন লক্ষ্মণ সেন দুপুরের খাবার খেতে বসেছিলেন। যখন শুনলেন বখতিয়ার খিলজি অন্তঃপুরে প্রবেশ করে ফেলেছে, খাবার রেখেই পেছনের দরজা দিয়ে পালান তিনি। সুতরাং, দুপুর বেলায় বাংলার ইতিহাস চিরতরে বদলে গেল। আজ হতে ১৩ বছর আগে শোনা, আজও স্মৃতিতে গেঁথে রয়েছে স্যারের জাদুকরী গল্প বলার ক্ষমতায়। সেই থেকেই আমার ইতিহাস মুগ্ধতা শুরু। স্যার বই পড়তেন প্রচুর। ঈদে সব ঈদসংখ্যা কালেক্ট করতেন, নাকের উপর ভারী গ্লাসের চশমা ঠেসে ফাউন্টেন পেন দিয়ে পড়তেন দাগায়ে দাগায়ে। আমিও উনার মতন ভারিক্কি ভাব ধরে পড়ার চেষ্টা করতাম।

ক্লাস ফোরেই প্রতি সপ্তা��ে একদিন বিতর্কের আয়োজন হত। স্যার বিষয় নির্ধারণ করে দিতেন। পক্ষ দল, বিরোধী দল ও নির্ধারিত হতো। তখন বাংলাদেশ টেলিভিশনের আন্তঃস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা দেখে আমরা রিহার্সাল করতাম বাসায়। একবার বিষয় ছিল, "অসুন্দর হাতের লেখা পরীক্ষার খাতায় ভাল নম্বর পাওয়ার অন্তরায়।" সেই বিতর্কে আমার বিপক্ষ দলের বন্ধুরা কোত্থেকে শুনে এসেছিল, রবীন্দ্রনাথের হাতের লেখা এতই বাজে ছিল যে তিনি নিজেই নিজের লেখা মাঝে মাঝে পড়তে পারতেন না। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ যেখানে ব্যর্থ, সেখানে সুন্দর হাতের লেখার যৌক্তিকতা আমরা দেখি না। তাই ব্যবহার করল তারা। পক্ষ দল হেরে গেলাম।

ক্লাস ফাইভে দুর্বোধ্য এক বিষয় ছিল "পরিবেশ পরিচিত-সমাজ"। এই বিষয়ের বেশিরভাগ বিষয়ই আমাদের আত্মস্থ হতো না। তাই ভিন্ন এক তরিকা চালু হয়েছিল, কুইজ পদ্ধতি। প্রতি বৃহস্পতিবার কুইজ হতো, ছেলেরা বইয়ের কোন একটা পূর্বনির্ধারিত চ্যাপ্টার থেকে ৫ টি প্রশ্ন বানিয়ে আনবে, মেয়েরাও। দুইপক্ষ বিপক্ষ দলকে প্রশ্ন করবে, যারা সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে তারাই জয়ী।কাকতালীয়ভাবে, আমাদের ক্লাসে সম সংখ্যক ছেলেমেয়ে ছিল। ১০ জন ছেলে, ১০ জন মেয়ে। তাই সমানে সমানে লড়াইটা জমজমাট হতো। প্রতিযোগিতামূলক হলেও শেখায় সহযোগিতা করেছিল অনেক।

স্কুলে নিজেরা বই দিয়ে আর সিনিয়র ভাই আপুদের থেকে কিছু বই জোগাড় করে
ছোট্ট একটা লাইব্রেরীও তৈরি করেছিলাম। সবাই অল্প স্বল্প টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে পুরানো দোকান থেকে কাঠ কিনে একটা শেল্ফ ও বানানো হয়েছিল। স্কুলের ছোট বড় সবাই এসে পড়তে পারত। কিন্তু, কয়েকদিন পর লাইব্রেরী টা বন্ধ হয়ে যায় জায়গার অভাবে। যেহেতু উপযুক্ত জায়গা নেই তাই পড়তে হতো টিফিন টাইমে আমাদের ক্লাসরুমে এসে, তাই সবার জায়গা হতো না আর টিফিন টাইম ও ছিল স্বল্পসময়ের। এখন স্কুলে লাইব্রেরী আছে কিনা জানি না। তবে লাইব্রেরি বন্ধ হওয়াতে অনেক দুঃখ পেয়েছিলাম।

ছোটস্কুলে ছোটবেলা বড্ড রঙিন ছিল। এত সুন্দর স্কুল পেয়ে নিজেকে শঙ্খ ঘোষের মতন সৌভাগ্যবান দাবী করতেই পারি!
বইয়ের প্রতিটি কাহিনী নিজের স্কুলজীবনকে ভাসিয়ে তুলছিল মনের গহীনে। রিভিউ কম, স্মৃতিকথা বেশি হয়ে গেছে তাই!
Profile Image for Tasnim Taj Abontee.
19 reviews
January 24, 2021
"কুড়ির মধ্যে না-হয় ষোলোই দিতেন!তাই বলে একেবারে কুড়ি?তাহলে রবীন্দ্রনাথ লিখলে কত পেতেন?"

শুনে হেডমাস্টারমশাই বললেনঃ"এইবার বোঝা গেল।সচরাচর বাংলায় যে-নম্বরটা কেটে রাখা হয় পরীক্ষায়,সেটা তবে জমা থাকে শুধু রবীন্দ্রনাথের জন্য!"

~

রেলকলোনির অখ্যাত ছোট্ট একটা স্কুল,বলা হচ্ছে দেশ ভাগেরও আগের কথা। সে স্কুলের হেডমাস্টারমশাই নিয়ম করে দেন গ্রহ-নক্ষত্র অধ্যায়ের ক্লাস করতে হবে আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে,ক্লাসঘরের মধ্যে থেকে নয়।ক্লাস এইটে উঠে ছেলেপুলেরা তাই 'নাইটক্লাসের' মহিমার সাথেচিনতে থাকে কালপুরুষ,অরুন্ধতী,পুলহ,ক্রতু।

মূল পাঠক্রমের পাশাপাশি ব্যবস্থা করে দেন শান্তিনিকেতনের উন্মুক্ত পাঠক্রমে রেলের কর্মী,স্কুলে না পড়া মেয়ে,সবার সাথে মিলেমিশে পরিক্ষা দাওয়ার সুযোগ।পাশ করলে উপাধি মেলে আদ্যতীর্থ,আদ্যভারতী,মধ্যভারতী,সাহিত্যভারতী। এ উপাধির 'অর্থনৈতিক লাভ' লোকে জানতে চাইলে হেডমাস্টারমশাই বলেন,"নিজের খুশিমতো একটা পড়াশোনা তো হলো।তার কি কোনো মানে নেই?"

অজপাড়াগাঁয়ের এই স্কুলেই পড়েছিলেন শঙ্খ ঘোষ।তার টুকরো টুকরো ছেলেমানুষি ছবি ফুটিয়ে তুলতে গিয়েই তিনি লিখে ফেললেন এমন এক মিষ্টি শৈশবের গাথা যা দিয়ে একটা মন অনেকদিনের পুষ্টি পেয়ে যায়।বাইরের বিরাট পটভূমিতে এর দাম হয়তো বেশিনা,কিন্তু হঠাৎ আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে -
"নিশার আকাশ কেমন করিয়া
তাকায় আমার পানে সে,
লক্ষযোজন দূরের তারকা
মোর নাম যেন জানে সে-"
গুনগুনিয়ে উঠতে যে স্বচ্ছতাটা প্রয়োজন,সেটা ভরে দিতে খামতি রাখে না।
এই স্কুলজীবন,নাম না জানা শিক্ষকদের প্রথা ভাঙা এই সাহস,এরাই মনে করিয়ে দেন বেঁচে থাকাটা কত সুন্দর হতে পারে! জীবনে
একটু ভালো থাকতেই তো আমরা চাই?
Profile Image for Rubell.
188 reviews23 followers
June 30, 2023
আমাদের প্রায় সবার কাছেই স্কুলজীবনের স্মৃতি ভীষণ মধুর। তারপরও বলতে হচ্ছে, শঙ্খ ঘোষের স্কুলস্মৃতি আরও বেশিমাত্রায় মধুর।

তাঁদের হেডমাস্টার-মশাই গতানুগতিক চিন্তাধারার মানুষ ছিলেন না। কচি ছেলেদের সাইকোলজি খুব ভালো বুঝতেন। তিনি ছেলেদের সাহিত্য, প্রকৌশল, কৃষি,... ইত্যাদি মন্ত্রী বানিয়ে দিতেন; সেই উৎসাহে ছেলেরা ক্লাসরুম রং করতো, স্কুলের সামনে বাগান করতো, আরও কত কিছু করতো।

তিনি ছেলেদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শিক্ষা দিতেন। স্কুলের বাইরের জগতে তখন হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ ছিল প্রবল, কিন্তু স্কুলের গণ্ডীর ভেতরে সেই বিদ্বেষ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।

স্কুলের ছাত্ররা শান্তিনিকেতনের বিশেষ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে অংশগ্রহণ করেছিল হেডমাস্টারের উৎসাহে। স্কুল থেকেই ছেলেরা সৃজনশীল চিন্তা, লেখালেখির প্রেরণা পেয়েছিল।

গ্রহ-নক্ষত্র চেনার জন্য ছিল নাইট ক্লাসের ব্যবস্থা। মেঘমুক্ত আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে শিক্ষক ছাত্রদের চিনিয়ে দিতেন ধ্রুবতারা, কালপুরুষ, সপ্তর্ষিসহ নানা রকম নক্ষত্র। (এমন নাইট ক্লাসের সৌভাগ্য আমার জীবনে তো হয়ই নি, আমার কোন বন্ধুর হয়েছে বলেও জানিনা।)

একজন শিক্ষক শঙ্খ ঘোষদের মাঝে রবীন্দ্রনাথ পাঠের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়াও স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের নাটক মঞ্চস্থ করার ব্যাপার তো ছিলই- সেখানেও ছেলেদের ডিরেকশন দিতেন হেডমাস্টার। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন লেখকের স্কুল জীবনের অনেকটা জুড়ে। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুসংবাদে বাবার চোখে অশ্রু দেখেছিলেন শঙ্খ ঘোষ, তখন তাঁর বয়স নয় বছর।

স্কুলজীবনের আরও মজার মজার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা লেখা আছে এই বইতে। বইয়ের ছবিগুলো দেখেও প্রাণ জুড়ায়।

হারুন ভাই এ বইটা পড়তে দিয়েছেন। শুকরিয়া ভাই 🤍
Profile Image for Adham Alif.
335 reviews80 followers
April 30, 2023
৪.৫/৫
স্কুলজীবনের মধুর স্মৃতি গুলোর সাবলীল বর্ণনা শঙ্খ ঘোষের লেখায় পড়তে পড়তে নিজের স্কুলজীবনে ফিরে গিয়েছিলাম। স্কুল যে মানুষ গড়ার কারিগর তা আরো একবার মনে পড়ে গেল।
এই বইটা তোত্তোচান এর বাংলা ভার্সনের মতো। ইয়াসিন ভাইয়ের এই কথাটা পুরোপুরি সত্য মনে হয়েছে। বইটা ছেলে-বুড়ো সবার জন্যই রিকমান্ডেড।
Profile Image for Shotabdi.
819 reviews195 followers
May 4, 2023
বড্ড মায়াকাড়া আর ভালো বইটা।
Profile Image for Yeasin Reza.
508 reviews88 followers
December 12, 2021
ভীষণ মিষ্টি একটা বই। শঙ্খ ঘোষের এই স্কুলে পড়তে না পারার জন্য যে কারো আফসোস হবেই। আর কিসব সাংঘাতিক মজার মজার ঘটনার বর্ণনা। রসগোল্লার কি অপূর্ব ব্যবহার! :D আর পুরো বইটাকেই রসগোল্লার মতো উপাদেয় মনে হয়েছে আমার। ��বীন্দ্রনাথের সাথে এমনভাবে আমি ছোট্টবেলায় পরিচিত হতে পারলে এখন হয়তো একটু ভিন্ন মানুষ হতাম আমি।
Profile Image for Akash.
446 reviews150 followers
October 13, 2023
সামান্য ছোট্ট বইটা শান্তি দিয়েছে অসামান্য। কোনো বই পড়ে নস্টালজিক হতে বোধহয় দুনিয়ার সবারই ভাল্লাগে।

আম��র স্কুল জীবনের সত্য একটা গল্প বলতে ইচ্ছে করছে খুব। বলেই ফেলি! না থাক! বলব না।

সুন্দর সুন্দর এই বইগুলো পড়ার জন্যই বেঁচে আছি। এছাড়া বেঁচে থাকার অন্য কোনো কারণ নেই। এমন বই পড়ে পড়ে মরণের পথে যাত্রা হোক আনন্দময়।

৫ তারা দেয়ার মতো আরেকটা বই পড়ে শেষ করলাম।

(২০ মে, ২০২৩)
Profile Image for হাঁটুপানির জলদস্যু.
299 reviews228 followers
October 8, 2021
ছোট্ট একটা বই। স্কুলজীবনের টুকরো স্মৃতিচারণ, কথনের গুণে ভীষণ স্বাদু, সারল্যের গুণে মধুর। মনে দাগ কেটেছে রাত্রিবেলার ক্লাস, না-পাহারার পরীক্ষা, আপনখুশির পড়াশোনা আর চন্দ্রবিন্দুর ব্যবহার

আমার সাধ্য থাকলে এই বইটা পাঠ্যসূচিতে দ্রুতপাঠ হিসেবে রাখতাম।
Profile Image for শাহ্‌ পরাণ.
259 reviews74 followers
January 17, 2024
আহা! এত মিষ্টি লেখা হয়! জসীম উদ্‌দীনের জীবনকথা বইয়ের কথা মনে পড়তেছিল বইটা পড়ার সময়।

মাঝে মাঝে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল, আসলেই ওরকম ছিল নাকি লেখকের শৈশব আর কৈশোর? এতো হিংসে হচ্ছিল বইটা পড়ে! আমার শৈশবে আমি এরকম ইশকুল পাই নাই কেন!?

বইটা শেষ করতে প্রায় এক মাস সময় নিলাম, পড়তে ইচ্ছে করতো না, পড়লেই তো শেষ হয়ে যাবে এই ভেবে। মাঝে মাঝে মন খুব খারাপ থাকলে একটা করে অধ্যায় পড়তাম। অবশেষে শেষ হয়েই গেলো।
Profile Image for Manzila.
167 reviews159 followers
February 6, 2024
দিনম্যান শুধু এসব বইই পড়ব!
Profile Image for Aditya.
37 reviews6 followers
May 26, 2025
আহা স্কুল, আহা ছেলেবেলা!
Profile Image for Chinmoy Biswas.
175 reviews65 followers
March 6, 2022
কোন মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়,"তার শিক্ষা জীবনের সবচে সুন্দর সময় কেটেছে কোথায়? " প্রায় সবাই একবাক্যে উত্তর দিবে, "স্কুলে"। স্কুলের কাটানো সময়গুলো ছিল সোনালি। এই স্মৃতি গুলো সব সময় ই অমলিন থেকে যায় মনে।

তেমনি নিজের স্কুল জীবনের গল্প বলেছেন শ্রদ্ধেয় লেখক শঙ্খ ঘোষ "ছোট্ট একটা স্কুল" বইয়ে। তার ছোট বেলার সময় গুলো কেটেছে " পদ্মা পাড়ের রেল কলোনি" নামক জায়গায়। নিজের কৈশোরের বেশ কয়েকটা বছর পড়াশোনা করেছেন সেখানের একটা স্কুলে। যেখানে প্রধান শিক্ষক ছিলেন অশ্বিনীকুমার দত্ত।

এই গল্পগুলোতে কখনো এসেছে, প্রধান শিক্ষকের চমৎকার উদ্যোগে সায় দেয়া, কখনো বা শিক্ষকের সাথে নাইট ক্লাস করার আনন্দের কথা, কখনোবা বন্ধুদের দুষ্টামির কথা। সব মিলিয়ে মোট বারটি গল্প। প্রত্যকটি গল্পই চমৎকার।

শ্রদ্ধেয় লেখক শঙ্খ ঘোষের লেখা বরাবর আমাকে মুগ্ধ করে, এইটা ও তার ব্যতিক্রম নয়। ছোট্ট একটা বই কিন্তু কি ভীষণ মোহময় এর গল্পগুলো। পড়ার পর আফসোস হবে,বইটা আরেকটু বড় হলেই বা ক্ষতি কি ছিল!
Profile Image for Nabila Tabassum Chowdhury.
374 reviews274 followers
December 5, 2024
ছোট্ট একটা স্কুলের হেডমাস্টারমশাই অনেকটা তোত্তোচানের সোসাকু কোবায়াশির মত। আমার সকল শিক্ষকের উপর সম্মান রেখেই বলি, এমন একজন শিক্ষক না পাবার জন্য তোত্তোচানকে, শঙ্খ ঘোষকে হিংসে হয়। এ সমস্ত বই শিক্ষকদের ট্রেনিং এর অংশ হওয়া উচিত। বাদ যাওয়া একটি তারা রবীন্দ্রনাথের জন্য রাখিনি, রেখেছি এজন্য যে এমন একজন মানুষের গল্প, স্কুলের গল্প আরেকটু বিস্তারিত এবং আরও গুছানো সুন্দর গদ্য পাবার দাবি রাখে।

Profile Image for SH Sanowar.
118 reviews29 followers
March 12, 2024
এমন মায়াকাড়া অপূর্ব সুন্দর কিছুই যদি লেখা হয়, তবে, এত্তো ছোট্ট কেন? এ ভীষণ অন্যায়, ভীষণ!
Profile Image for প্রিয়াক্ষী ঘোষ.
362 reviews34 followers
August 19, 2024
ছোট্ট একটা বই যার পুরোটা স্কুল স্মৃতিতে মোড়া। ছোট্ট বেলার কথা তবে তার সবটা জুড়ে আছে স্কুল। স্কুলের বন্ধু, শিক্ষক ও পাঠ্যবইয়ের সাথে কাটানো মধুর স্মৃতি।

আর এই স্মৃতিকথাটা কবি শঙ্খ ঘোষের। তাঁর স্কুল জীবনের আনন্দ-বেদনার ও মজার ঘটনা নিয়ে লেখা এই বইখানা। কবিদের গদ্য বরাবরই সুন্দর হয়।

📖ছোট্ট একটা স্কুল
🖊️শঙ্খ ঘোষ
Profile Image for Shuk Pakhi.
512 reviews306 followers
August 10, 2024
ছোট্ট একটা বাচ্চার ছোট্টবেলার কথা নিয়ে এই ছোট্টবই। আর এই ছোট্টবাচ্চাটা হচ্ছেন আমাদের প্রিয় কবি শঙ্খ ঘোষ। তিনি তার স্কুল জীবনের নানান সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার ও মজার ঘটনা নিয়ে লিখেছেন বইখানা। গদ্য যেমন সুন্দর তেমনি বইয়ের ইলাস্ট্রেশনও সুন্দর।
রসগোল্লা দিয়ে ঢিল মেরে বড়ই পারা আর টর্চ লাইট জ্বেলে আকাশের তারা দেখার ঘটনা কখনোই ভুলবো না। হিহিহহি
Profile Image for Anik Chowdhury.
175 reviews36 followers
February 26, 2022
শঙ্খ ঘোষের লেখনীতে জাদু আছে। ছোট্ট একটা স্কুল মোটে বায়ান্ন পৃষ্ঠার ছোট্ট একটা বই। যার মধ্যে বারোটি অসাধারণ ছোট ছোট গল্পের সমাহার রয়েছে। এই বারোটি গল্পই অসাধারণ!

বইটি পড়তে পড়তে হারিয়ে গিয়েছি স্কুলের দিনগুলিতে। কী সুন্দর দিন ছিলো আমাদের। তবে পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, ইস্ আমাদের হেডমাস্টারমশাই-ও যদি গল্পের হেডমাস্টারমশাইয়ের মতো হতো তাহলে কতই না মজা হতো। এমন সব দিনের কথা এখন চোখ বন্ধ করে কল্পনা ছাড়া আর কি-ই বা করতে পারি! 'রসগোল্লার উপকারিতা' পড়তে পড়তে স্কুলের সরস্বতী পুজার কথা মনে চলে আসে। গল্পের বিকাশের মতো দুয়েকজন বন্ধুর কথা তখন মনে তোলপাড় করে। 'রবীন্দ্রনাথ কত পেতেন' গল্পটার কথাও বলতে হয়। বাংলায় কুড়িতে কুড়ি পাওয়া অসম্ভব। ষোল হলেই হয়। কারণ বাকি নাম্বার গুলো যে রবীন্দ্রনাথের জন্য বরাদ্দ। আর 'পরীক্ষার বন্ধুর পথ' গল্পের মতো আমিও যে মাঝে মাঝে বেখেয়ালে ভুল লিখেনি তার কথাই বা অস্বীকার করি কেমনে?

ছোট্ট একটা স্কুলের কাণ্ড মূলত পদ্মাপারের সামান্য রেলকলোনির ছোট্র একটা স্কুল। আর সময়কাল হলো, ১৯৪৪-১৯৪৫ সাল। ছোট্ট একটা স্কুল আপনাকে ছোটবেলায় নিয়ে যাবে। আবার ফিরে যেতে চাইবেন শৈশবে। তাছাড়া আবার যদি স্কুলে পড়তেই হয় তবে পড়তে চাইবেন আমাদের গল্পের মতো ছোট্ট একটা স্কুলে।
Profile Image for মোহতাসিম সিফাত.
180 reviews50 followers
April 6, 2023
ছোট্ট একটা স্কুল
ছোট্ট একটা বই
অনেক অনেক নস্টালজিয়া
ঘরের বুড়ো দাদ�� থেকে ছোট্ট বাবু - যেই পড়বে, আনন্দ পাবে। অনেক স্মৃতির পাতা ওল্টানো হবে।
খারাপ লাগবে, এই বই এত ছোট্ট কেন?
পড়ে ফেলেন।
Profile Image for Mukid.
149 reviews4 followers
June 20, 2023
একরাশ মুগ্ধতা
Profile Image for Muhammad Ahsan.
Author 2 books182 followers
February 1, 2022
শঙ্খ ঘোষের ছোট্ট একটা স্কুল। অসম্ভব প্রিয় একটা বই আমার। গত বছর পড়া শুরু করেছিলাম। একেকটা চাপ্টার বারবার পড়েছি! গতবছর পড়ে শেষ করিনি। এই বছর বইটি আবারও শুরু করে আজকে পড়ে শেষ করলাম। আমি অভিভূত আবারও। শঙ্খ ঘোষ আমার খুব প্রিয় লেখকদের একজন এমনিও। ওনার কবিতাও পছন্দ করি। তবে বেশি পড়া হয় গদ্য। ওনার গদ্য পড়তে গেলে বেশ একটা গল্প শোনার আমেজ কাজ করে। কেবল - "ছোট্ট একটা স্কুল" বইটির জন্যেই শঙ্খ ঘোষ জায়গা করে নেবেন আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখকদের তালিয়ায়।
দেশভাগের আগে শঙ্খ ঘোষের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ছিল আমাদের এই বাংলাদেশেই। সেই সময় কে নিয়ে উনি লিখেছেন বহু বই। পড়তে গেলে অবাক হয়ে যেতে হয়। এতোই সুন্দর ছিল তখনকার সমাজ? এতোটাই অসাধারণ ছিল এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা? সবটাই হয়তো ছিল না। কিন্তু শঙ্খ ঘোষের চোখে হয়তো ছিল। অসাধারণ ছিল ওনার সেই স্কুল, স্কুলের শিক্ষক, বন্ধুবান্ধব আর হেডমাস্টারমশাই। অসাধারণ ছিল ওনার দেখার চোখ, উপলব্ধি করবার ক্ষমতা। সেই সব অসাধারণ গল্প উনি তুলে এনেছেন এই বইটির ছোট ছোট অংশে। শিক্ষার প্রকৃত গুরুত্ব, মাহত্ম অনুসন্ধান করা প্রতিটি শিক্ষাবিদের এই বইটি পড়তে ভালো লাগবে বলে আমি মনে করি। আমার মনে হয় সব শিক্ষার্থীদেরকেও পড়তে দেয়া উচিত এই বইটি! পড়াশোনা, জানা শোনার প্রকৃত উদ্দেশ্য যে কেবল পাশ করা নয়, বরং তার চেয়ে অনেক ঊর্ধ্বে সে কথা বইতে না পড়লে আর কোথায় কার থেকে শুনবে আমাদের এই সমাজে বসবাস করা মানুষেরা?
শঙ্খ ঘোষ বলেননি এই বইগুলো নন-ফিকশন কিনা। ফিকশন কিনা তা বলেননি। শুধু আমরা জানি শঙ্খ ঘোষের লেখায় বার বার উঠে এসেছে ওনার শৈশবের কথা, বন্ধুদের কথা, স্কুলের কথা। ছোট্ট একটা স্কুল সত্যিই ছিল। এখনো আছে। বই হয়ে। আর আছে পাঠকদের হৃদয়ে।
আমরা যারা এখন এই লেখাটি পড়ছি ছোটবেলার কথা চিন্তা করলে দেখবেন অন্য সব স্যার ম্যাডাম কে ছাপিয়ে কোন একজন বিশেষ শিক্ষকের কথা মনে পড়ছে। কিংবা হয়তো শিক্ষক না হয়েও অনেক কিছু শিখেছি এমন কেউ। হয়তো কোন আত্মীয়, কিংবা বন্ধু। শেখার কিন্তু শেষ নেই। ছোট্ট একটা স্কুল যারা পড়েছেন, যারা পড়বেন তাঁরা নিজ নিজ জীবনে এমন অনুপ্রেরণার একেকজন মানুষ হবেন, সেই শুভকামনা রইলো।
শেষ করবো এই বইয়ের হেডমাস্টারমশাইয়ের দুইটা লাইন দিয়ে। আমার ভীষণ প্রিয় দুটো লাইন। কোন একটা বিষয়ে ওনাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, এসব করে কী হবে। সে কথার উত্তর দিতে গিয়েই উনি বলেন,
"নিজেদের খুশিমতো একটা পড়াশোনা তো হলো। তার কি কোনো মানে নেই?"
"ছোট্ট একটা স্কুল"
-শঙ্খ ঘোষ
(শিশু সাহিত্য সংসদ)

বিস্তারিত ভিডিও তে বলবোঃ https://www.youtube.com/c/bookswithna...
Profile Image for Blind Alley.
8 reviews36 followers
July 4, 2021
ছোট্ট একটা স্কুল। ৭৫ বছর আগের সে স্কুলে নিজের কাজ নিজে করতে হতো। নিজস্ব পার্লামেন্টে ছাত্ররা নিজেরাই ছিলো মন্ত্রী, আবার নিজেরাই প্রজা। সে স্কুলে রাতে গপ্পো হতো তারার রাজ্য নিয়ে, আকাশভরা তারার নিচে বসে। চেনানো হতো সপ্তর্ষি, অরুন্ধতী, পুলহ আর কালপুরুষ। পাঁচ ব্যাটারির টর্চ নিয়ে জ্ঞানের আলো ছড়াতেন মাষ্টারমশাই। আর নাইটক্লাসের সে দ্যুতি গায়ে লাগিয়ে হেসে খেলে শিখত সে স্কুলের ছেলেরা।

সেখানেও পরীক্ষা হতো, সাথে হতো না পাহারার পরীক্ষা। ছিলো না রোল নম্বর নিয়ে মাথাব্যথা। শান্তিনিকেতনের ওপেন বুক এক্সামের মতো মজার পরীক্ষায় অংশ নিতো তারা। ধুলোমাটি আর আকাশভরা তারা দেখে, উপন্যাস পড়ে, কবিতা ভালোবেসে তাদের কেউ কেউ হয়ে উঠেছিল আদ্যতীর্থ, আদ্যভারতী।

দেশভাগের মত অস্থির সেই সময়েও ছোট্ট সে স্কুলে পণ্ডিত মশায়ের কাছে সংস্কৃত পড়ার সুযোগ ছিল মুসলমান ছাত্রদের। ফারসি শিখতে মৌলবী সাহেবের ক্লাসে উপস্থিত হত হিন্দু ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি চলত নাটকের উৎসব। কখনো মাষ্টারমশাই নির্দেশনা দিচ্ছেন তো কখনও ছাত্ররা। মঞ্চে তারা ভুল করেছে, হেসে গড়িয়ে পড়েছে আবার শিখেছে।

উফ্ফ একেবারে যেনো স্বপ্নের স্কুল। ভাবতে অবাক লাগে আজ থেকে সাত দশক আগে এই বাংলায় এমন একটা স্কুল ছিলো, এমন একজন হেডমাস্টার ছিলেন। এইসব স্কুলের গল্প পড়লে শান্তি শান্তি লাগে, সাথে আফসোস ও হয় বেশ! বইটা এতো সুন্দর করে লেখা! আর টু কালার্ড ইলাস্ট্রেশনগুলোও ভীষণ মিষ্টি লেগেছে! স্বপ্নীল এই যাত্রার গল্প সবার সাথে ভাগ করে নেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ শঙ্খ ঘোষ!
Profile Image for Aadrita.
276 reviews229 followers
August 8, 2022
শঙ্খ ঘোষের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশে। দেশভাগের আগে পর্যন্ত তাঁর ঠিকানা ছিলো পাকশির রেলওয়ে কলোনিতে। সেখানের তাঁর ছোট্ট স্কুলের মজার গল্প নিয়ে বই 'ছোট্ট একটা স্কুল'।

ধরাবাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়েও মজাদার এবং শিক্ষনীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে স্কুল। বইয়ের ছোট্ট এই স্কুলের হেডমাস্টার এই নীতিতেই বিশ্বাসী ছিলেন। ছাত্রদের নীতিবান, আত্মমর্যাদাশীল এবং স্বশিক্ষিত করে তুলতে তিনি আবিষ্কার করতেন অভিনব সব পন্থা। কখনো ক্লাসে পার্লামেন্টের মতো করে বিভিন্ন বিভাগ তৈরি করে ছাত্রদের মধ্য থেকে নিয়োগ করে দিতেন মন্ত্রী। ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের স্কুলে রং করা, এগ্রিকালচার বিভাগের করা বাগান, অ্যাথলেটিকস থেকে আয়োজিত ক্রীড়া, সোশ্যাল সার্ভিসেস থেকে সমাজের বাকিদের সাহায্য করা, ম্যানার্স এন্ড ডিসিপ্লিন সেকশনের কল্যানে নিয়ম শৃঙ্খলা বজায়, অ্যামিউজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে আয়োজিত নাটক সহ বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সুন্দর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্কুল সেজে উঠতো নতুন করে। পড়াশোনার পাশাপাশি এসব কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মননের বিকাশ ঘটতো। কখনোবা মাস্টারমশাইয়ের মনে ধরতো পরীক্ষার হলে গার্ড ছাড়া পরীক্ষা নেওয়ার কথা। শিক্ষার্থীদের পাহারা কেন দিতে হবে, তারা নিজের দায়িত্ব নিজে কেন নিতে পারবে না এভাবে বুঝিয়ে তাদের নীতিবান হয়ে গড়ে উঠতে সাহায্য করতেন। সৌরজগতের ক্লাসের আয়োজন হতো রাতের বেলা খোলা আকাশের নিচে। বাধ্যতামূলকভাবে মুসলিমদের ফারসি এবং হিন্দুদের সংষ্কৃত ভাষা শেখার নিয়ম উঠিয়ে দিয়ে সবাইকে সুযোগ করে দিতেন নিজের পছন্দ ও আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় বেছে নেওয়ার। এতে করে সমাজের কটু কথা শুনতে হতো না তা নয়, তবে দুর্জনের কথা আগ্রাহ্য করে নিজের মতো করে শিশুদের বেড়ে ওঠার সুযোগ ছিলো এই স্কুলে।

৫৬ পৃষ্ঠার ছোট্ট বইটা পড়লাম একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে। আসলেও কী সেই আমলে এতো চমৎকার শিক্ষাব্যাবস্থা ছিলো নাকি লেখকের কল্পনাতেই তাঁর স্কুল এতটা অসাধারণ হয়ে উঠেছে তা ��ানা নেই। তবে পড়তে গিয়ে মনে হলো আসলেই ছোট ছেলেমেয়েদের ব্যক্তি ও মননের সুস্থ বিকাশের জন্য এমন চমৎকার পরিবেশইতো প্রয়োজন।
Profile Image for Trina Sengupta.
56 reviews
November 19, 2021
তোত্তো-চানের তোমোই স্কুলের মতন,আমাদেরও গর্ব করার মত স্কুল ছিল, মাস্টারমশাইরা ছিলেন৷দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমার আঘাতে তোমোই ধ্বংস হয়ে যায়,আমাদের সেইসব স্কুলগুলোরও আর চিহ্ন মাত্র নেই৷কী কী সব কারণে যেন৷
Profile Image for Subah Alam.
8 reviews
July 16, 2022
"ঠিকমতো লিখতে পারলে বাংলাতেও তবে পাওয়া যায় একেবারে পুরো নম্বর।
যায়? যায় না ছাই!
অভিভাবকদের কাছে শিখে এসে কেউ কেউ বলে উঠেঃ 'কুড়ির মধ্যে না-হয় ষোলোই দিতেন! তাই বলে একেবারে কুড়ি? তাহলে রবীন্দ্রনাথ লিখলে কত পেতেন? '
শুনে, হেডমাস্টারমশাই বললেনঃ 'এইবার বোঝা গেল। সচরাচর বাংলায় যে-নম্বরটা কেটে রাখা হয় পরীক্ষায়, সেটা তবে জমা থাকে শুধু রবীন্দ্রনাথের জন্য!' ''
মজার এক স্কুলের গল্প৷ তোত্তো-চানের তোমোই স্কুলের মত আমাদের দেশেও যে এরকম স্কুল ছিল তা একেবারেই অজানা ছিল। বসন্তের রাতে খোলা মাঠে গিয়ে পাঁচ ব্যাটারির টর্চের আলোয় ছাত্রদের কালপুরুষ, সপ্তর্ষি, পুলহ, অরুন্ধতী আর ধ্রুবতারা চেনান এই স্কুলের মাস্টারমশাইরা, সেখানে হত না -পাহারার পরীক্ষা, সিলেবাসের বাইরের পড়াশোনা, আরো নানান মজার কাণ্ড। শঙখ ঘোষ আমার অত্যন্ত পছন্দের কবি। দেশভাগের আগে তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা এ দেশেই। বাংলাদেশের পদ্মাপাড়ের রেলকলোনির তাঁর সেই ছোট্ট স্কুল নিয়ে লেখা 'আমাদের ছোট্ট স্কুল'। চমৎকার ইলাস্ট্রেশন সহ দারুণ মিষ্টি একটা বই!
Profile Image for Arannya.
13 reviews2 followers
September 25, 2021
পদ্মাপারের রেলকলোনির 'ছোট্ট একটা স্কুল'-এ চলে গেলাম কয়েক ঘন্টার জন্য, দেখে এলাম অসাধারণ একজন হেডমাস্টারমশাইকে, চিনলাম শিশু শঙ্খ ঘোষকে, দেখলাম রবীন্দ্রনাথ কেমন করে স্থান করে নিলেন একটি বালকের হৃদয়ে। আহা! এমন স্কুলেও যদি পড়ার সুযোগ পেতাম , তাহলে নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করতাম।
ছোটবেলায় যখন 'পথের পাঁচালী' পড়তাম তখন মনে হত ছোট অপুর সঙ্গে আমার মিল আছে অনেক। সবারই সেটা মনে হয় হয়তো। তাই শেষের লাইনগুলো বড্ড ভালো লাগল, 'গ্রামবাংলার সবারই যেমন মনে হতে পারে, সেও যেন একটুখানি অপুই।'
Displaying 1 - 30 of 34 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.