Anish Deb (22 October 1951 – 28 April 2021) was an Indian Bengali writer and academic. He was noted for his writings in the science fiction and thriller genre. He received several literary awards including Vidyasagar Award in 2019.
Anish Deb was born in 1951 in Kolkata. He completed his B.Tech. (1974), M.Tech. (1976) and Ph.D. (Tech.) with 1 silver and 2 university gold medals in Applied Physics from the Rajabazar Science College campus of University of Calcutta.
Anish Deb started his writing career in 1968. He also edited a number of collections of popular fictions, novels and detective stories. Some of his notable writings are: Ghaser Sheesh Nei, Saper Chokh, Teerbiddho, Teish Ghanta Shat Minute, Hate Kalome Computer, Bignyaner Dashdiganto, Jibon Jokhon Phuriye Jay.
কমপক্ষে পাঁচ বছর আগে পড়া। তখন বইয়ের গ্রুপগুলোতে এই বই নিয়ে টুকটাক আলোচনা দেখতাম। তাই পড়েছিলাম। খুবই হতাশাজনক অভিজ্ঞতা। কাহিনি ভালো। কিন্তু কেন যেন জমাতে পারেননি। লেখকের গদ্য আমার পছন্দ হয়নি। সময়ের অপচয় মনে হয়েছিল।
হতাশ হলাম। ফিউচারিস্টিক যে প্লট এবং আয়োজন, তাতে নতুনত্বের কিছু ছিলনা বরং খুব সাদামাটা লেগেছে। ফিউচারিস্টিক হবার যে উপযোগ, সেগুলো অনেক বেশি জানা-শোনা ছিল। ডিস্টোপিয়ান অনেক সিনেমা দেখে ফেলেছি এমন। লেখক আলাদা হয়ে নজর কাড়তে সক্ষম হননি।
সবচাইতে হতাশ করেছে, বইয়ের মেদ। প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি ডিটেইলিং সারাক্ষণ, অনবরত। বিইং অনেস্ট, বইটা শেষ করে খুশি হয়েছি। শেষ যে করতে পারলাম, তার জন্যে।
অনীশ দেব একটা ব্র্যান্ড, কিন্তু নিজের বর্যান্ডভ্যালুর ব্যাপারে সচেতন ছিলেননা তিনি এখানে। জিশান পাল চৌধুরী ছাড়া আর কোন চরিত্র দাগ কাটতে পারেনি। জিশানও পেরেছে কেবল স্পেস পেয়ে, অন্য কোন যোগ্যতায় না। বাকী মনোহর কিংবা অন্যান্যরা যেন ইমোশান আদায় করার কাকুতি-মিনতি করে গ্যাছে, তাতে লাভের লাভ কিছু হয়নি।
ডিস্টোপিয়ান প্লটে; ডেথ রেস, মর্টাল কম্ব্যাট, হাঙ্গার গেইমস মুভির টেকনোসাইড বাদ দিয়ে গল্পটুকু একটু পাল্টে যেন বলা হল। সঙ্গে জোর করে মেশানোর চেষ্টা করা হলো উপমহাদেশীয় আবেগ-অনুভূতি।
একটা গেমশো যার প্রতিটা লেভেল এ জিততে পারলে অনেক অনেক টাকা আর হারলেই মৃত্যু। একটার পর একটা রুদ্ধশ্বাস রাউন্ড, এলিমিনেট হলেই মৃত্যু। আপনারা অনেকেই ভাবছেন আমি নেটফ্লিক্স অরিজিনালস স্কুইড গেম অথবা হাঙ্গার গেমস এর কথা বলছি, তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। আমিই বলছি সময় ২০১০ সালের অণীশ দেব এর লেখা তেইশ ঘন্টা ষাট মিনিটস আর ষাট মিনিট তেইশ ঘন্টা উপন্যাস এর। ২০১০ সাল, ইন্টারনেট তখন দুরস্ত, রিয়ালিটি শো কি জিনিস আমরা জানিনা সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এই ধরণ এর দুর্দান্ত ফিউচারিস্টিক থ্রিলার, সত্যিই কল্পনার বাইরে। আজ আমি লিখছি বইটি সম্পর্কে, লেখা উচিত ছিল অনেক আগেই, এখন এই বই ভালো লাগবে কী লাগবে না সেটা একটা তর্কের বিষয়, কারণ এখনকার মতো হাতের মুঠোয় সব আমাদের কাছে ২০১০ সালে ছিল না.
পটভূমি -
শহরের মধ্যে দুটি ভাগ, ওল্ড এবং নিউ সিটি। সাধারণ দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ এর বসবাস ওল্ড সিটি তে, শ্রীহীন রুক্ষ, জরা জীর্ণ, রোগ-ব্যাধিগ্রস্ত। শিক্ষা বা স্বাস্থ্য কোনোটিতেই আধুনিকতার লেশমাত্র নেই। সেই তুলনায় নিউ সিটি অনেক আধুনিক, মানুষেরা অনেক শৌখিন, ব্যবস্থা, প্রযুক্তি সবই যন্ত্রচালিত, মানুষ ও তাদের অনুভূতি, কার্যকলাপ, চিন্তাভাবনা সব কিছুই যেন রিমোট কন্ট্রোল্ড। এই নিউ সিটিতেই হয় সব ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর রিয়ালিটি গেম শো, প্রচুর টাকা প্রাইজ মানি, ঝুঁকিসম্পন্ন গেম, দমবন্ধ করা টানটান উত্তেজনা ব্যাপার। 'স্নেকস অ্যlন্ড জেমস', 'ম্যানিম্যাল রেস', 'ফাইট গেম', 'হাংরি ডলফিন', 'পিট ফাইট', জনপ্রিয়তার শিখরে রয়েছে 'কিল গেম'। বেশিরভাগ খেলোয়াড় ওল্ড সিটির বাসিন্দা। মানুষ এর অভাব বড়োই বিষম বস্তু আর সেই অভাব এর তাড়না থেকে মুক্তি পেতেই নির্ঘাত মৃত্যু জেনেও ওল্ড সিটি এর এই গরিব রাই অংশগ্রহণ করে এই রিয়ালিটি শো গুলোয়। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও শ'কোটি টাকা পুরস্কারের লোভে ২৪ঘন্টা একটানা খেলা চালায় 'সুপার গেমস কর্পোরেশন', যার সর্বেসর্বা মালিক শ্রীধর পাট্টা। জিশান পালচৌধুরী। ২৯ বছরের ওল্ড সিটির এই নায়কের ছোট্ট সংসার স্ত্রী মিনি আর ফুটফুটে অর্কনিশানকে নিয়ে। জিসান কে একরকম ভাবে ব্ল্যাকমেল করে কিল গেম এই পার্টিসিপেট করায় শ্রীধর পাট্টা। যত ভালো প্রতিদ্বন্দ্বী ততো টানটান লড়াই ততটাই উত্তেজনা, আর এইসব এর উপর হলো নির্ভর করছে বিনোদন, এতোটাই নিষ্ঠুর এই দুনিয়া। এই গেম শুধু শারীরিক শক্তি আর দক্ষতার মোকাবিলা নয়, বুদ্ধির উদ্ভাবনী ক্ষমতা আর ধারেরও লড়াই। আর গেম কে আরও উত্তেজনায় ভরপুর রাখতেই জিসান এর সঙ্গে বিপক্ষে রাখা হয় কানোরিয়া, সুখরাম নস্কর, প্রোটন এর মতো পোড়খাওয়া সুপারি কিলারদের জিসান কে শেষ করার জন্য। জিসান কী পারবে এই গেম থেকে বেঁচে ফিরতে? বেঁচে থাকতে হলে জিসান ক নিজেকে তৈরী করতে হবে দক্ষ একজন লড়াকু, জিসান কী পারবে কিল গেম শেষ করতে? কিভাবে একজন খুব সাধারণ দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ সুখী পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পোড়খাওয়া দক্ষ ফাইটারের জীবন শুরু করে সেটা জানতে অবশ্যই বইটি পড়তে হবে।
পাঠ প্রতিক্রিয়া -
বইয়ের ফার্স্ট পার্ট আমিই পড়েছিলাম সেই ২০১০ সালে, তখন একটা আলাদা থ্রিল আলাদা উত্তেজনা অনুভব করেছিলাম, সেই সময় এই প্লট একদম নুতুন, তাই এই উপন্যাস টি ফিউচারিস্টিক থ্রিলার। লেখক হয়তো জানতো যে এই প্লট এর উপর ভিত্তি করেই একের পর এক রিয়ালিটি শো, নেটফ্লিক্স অরিজিনালস তৈরী হতে পারে সুদূর ভবিষ্যতে, তাই এই উপন্যাস টি সত্যি কালজয়ী এবং আন্ডাররেটেড। এখন যারা উপন্যাস টিকে পড়ছেন অথবা পড়বেন বলে ভাবছেন তাদের নাও ভালো লাগতে পারে, কারণ এখন আমাদের কাছে সব কিছুই খুব সহজেই অ্যাভেলাবেল, কিন্তু সেই সময় দাঁড়িয়ে এই উপন্যাস টি নিজের সময়কাল এর থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল।
নব্বই বা একশ বছর আগে যে শহরটা ছিল কলকাতা এখন সেটা হয়েছে ওল্ডসিটি। এখানকার নাগরিকরা দারিদ্র্যসীমার নীচে ধূকে ধূকে টিকে আছে। পুরো শগরটাই যেন আস্তে আস্তে মারা যাচ্ছে। এরপাশেই গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক শহর নিউসিটি।এখানে মানুষ বাস করে চরম বিলাসিতায়। নিউসিটির প্রধান বিনোদন হচ্ছে কিল গেম। যেখানে নানা ধরনের ভয়ঙ্কর সব খেলার আয়োজন করা হয়। এসব খেলায় কোন মধ্যপন্থা নেই। হয় মরো নাহয় মারো। এসব খেলায় প্রতিযোগী আসে ওল্ডসিটি থেকে। খেলায় জয়ী হলে পাবে লাখ লাখ টাকা আর হারলেই বা কি হারাবে। তারা তো অভাব-অনটনে এমনিতেই মরে বেঁচে আছে।
জিশান বউ-বাচ্চা নিয়ে ওল্ডসিটিতে বাস করে। স্বপ্ন দেখে ওল্ডসিটি আবার একদিন ঝলঝল করে উঠবে। ঘটনাচক্রে তাকে নাম লেখাতে হয় কিলগেমে। তাকে নিয়ে আসা হয় গেমসিটিতে। মূল খেলায় অংশ নেয়ার আগে প্রতিযোগীদের আরো কিছু খেলায় কোয়াইলিফাই করতে হয়। এসব খেলায় কোন নিয়ম নেই, নিয়ম শুধু একটা অন্যকে হত্যা করে নিজে বেঁচে থাকো। মূল কিলগেমের আগে বই শেষ হয়েছে। ওটা জানতে হলে পড়তে হবে পরের পর্ব। বইয়ের কাহিনী, বর্ণনা, ভাষা…সব মিলিয়ে বইটা আমার কাছে কিশোর-উপন্যাস মনে হয়েছে। আর অনেকটাই হাঙ্গার গেমের মতন লেগেছে শুধু প্রেক্ষাপট কিছুটা আলাদা।
তেইশ ঘন্টা ষাট মিনিট পড়ে একেবারে ভিন্ন এক ডিস্টোপিয়���ন জগতে পা রাখার অভিজ্ঞতা হলো। ইন্টারনেট সংস্কৃতি বিস্তারের আগে এমন কাহিনি বাঙালি সাহিত্যে লেখা হয়েছিল, যা এখন Squid Game, Alice in Borderland, 3%, Death Parade, Gantz এর মতো জনপ্রিয় সিরিজের থিমের সঙ্গে বেশ মিল খুঁজে পাওয়া যায়। নিউ সিটির বিলাসিতা আর ওল্ড সিটির নিদারুণ দারিদ্র্যের বিভক্তি নিয়ে গড়ে ওঠা এই সমাজে, ক্ষমতার একনায়ক মার্শাল শ্রীধর পাট্টা’র তৈরি “রিয়েলিটি শো” তে লড়াই করে বেঁচে থাকার লড়াই-ই এই কাহিনীর মূল আর্কষণ। আমি সবসময়ই গভীর ও ভাবুক ডিস্টোপিয়ান গল্প পছন্দ করি, তাই অনীশ দেবের সমাজ আর বিনোদনের সীমা নিয়ে এই সাহসী কল্পনাশক্তির প্রয়াসকে শ্রদ্ধা জানাই, যদিও গল্পটি আমাকে প্রত্যাশামতো প্রভাবিত করতে পারেনি।
গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে ওল্ড সিটির এক বাসিন্দা, জিশান পালচৌধুরী, যার জীবনজুড়ে কেবল সংগ্রাম আর দুঃখ। পরিবারের দায়িত্ব পালনে বাধ্য হয়ে সে এই মারাত্মক গেম শো তে অংশ নেয়। নতুন শহরের উচ্চবিত্তরা উপভোগ করে এই নৃশংস খেলা, যেখানে সাধারণ মানুষ মরতে বসে। জিশানের এই ভয়ঙ্কর যাত্রার মধ্য দিয়ে অনীশ দেব সমাজের উদাসীনতা ও অন্যায় সহিষ্ণুতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এই ‘সুপার গেম কর্পোরেশন’ এর আয়োজিত গেমগুলো একেবারে ভয়ঙ্কর – "স্নেক লেক" থেকে শুরু করে "ম্যানিম্যাল রেস", "হাংরি ডলফিন", "পিট ফাইট" সহ হরেক রকমের গেম রয়েছে এবং তাদের সবার মধ্যে সর্বাধিক কুখ্যাত গেম হলো “কিল গেম”। প্রতিটি স্তরে প্রতিযোগীদের শারীরিক ও মানসিক সহনশীলতা চরমভাবে পরীক্ষা করা হয়। নিউ সিটির লোকেরা তাদের সাচ্ছন্দ্যে বসে এসব খেলা দেখে বাজি ধরে, যা আমাদের মানবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এই ভয়ানক প্রেক্ষাপট আমাদের সমাজের ক্রমবর্ধমান অনুভূতি শূন্যতার প্রতিফলন যেন, যা বাস্তব জগতে বিবেকহীন বিচ্ছিন্নতাকে তুলে ধরে।
গল্পের প্রথম দিকে অনীশ দেবের তৈরি করা এই নির্মম জগৎ এবং প্রতিটি খেলায় নিখুঁত বর্ণনা পাঠককে মগ্ন করে তোলে। প্রতিটি খেলা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন প্রতিযোগীদের শারীরিক এবং নৈতিক শক্তি পরীক্ষা হয়। বাংলা সাহিত্যে এমন থিম প্রথমবার লেখার জন্য আনিস দেব সত্যিই অভিনবত্ব দেখিয়েছেন।
তবে, যতই এগোলাম, গল্পটি আমার কাছে তেমন গভীর ভাবে পৌঁছায়নি। হয়তো আমি ইতিমধ্যেই অনেক sci-fi ও life-or-death টাইপ শো ও অ্যানিমে দেখেছি, তাই নতুনত্বের অভাব অনুভব করেছি। চূড়ান্ত অংশটাও আমার কাছে খানিকটা হঠাৎই শেষ মনে হয়েছে। যে শক্তিশালী সমাপ্তির প্রত্যাশা করেছিলাম, তা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে, তেইশ ঘন্টা ষাট মিনিট আমার কাছে একটি গড়পড়তা ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস। হয়তো আমি নিজের অভিজ্ঞতা ও এই ধরণের গল্পের প্রতি আগ্রহের কারণে এটাকে তেমন উপভোগ করতে পারিনি। তবুও আমি গর্বিত যে বাংলায় এমন একটি ভিন্ন ধারার উপন্যাস লেখা হয়েছে, যা ইন্টারনেট বা রিয়েলিটি শো সংস্কৃতি জনপ্রিয় হবার আগে আমাদের সাহিত্যে নতুন এক অধ্যায় রচনা করেছে। অনীশ দেবকে ধন্যবাদ দিতে হয় যে তিনি বাংলা সাহিত্যে এমন এক চিন্তা যোগ করেছেন।
তেইশ ঘন্টা ষাট মিনিট আমাদের মানবিক মূল্যবোধ, সম্পদের বৈষম্য, এবং অন্যের কষ্টকে বিনোদনের রূপে পরিণত করার প্রবণতার ওপর প্রশ্ন তোলে। যদিও গল্পটি আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারেনি, তবুও এর সৃষ্টিশীলতা, এবং পাঠকদের আমাদের সমাজের বর্তমান অবস্থার দিকে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
❛স্কুইড গেম❜ নামক netflix সিরিজের কথা জানে না আজকালকার এমন সিরিজ লাভার খুঁজে পাওয়া যাবে না। মনে আছে বিশাল হাড়ি ভর্তি টাকার জন্য অংশগ্রহণকারীদের খেলতে হতো বিপদজনক সব খেলা? প্রতি রাউন্ড জিতলেই ঝুলিতে চলে যাবে টাকা আর হারলেই? হার বলে এখানে কোনো কথা নাই। মূল স্লোগান ❛Do or Di e❜। শেষতক যে টিকে থাকবে সেই পাবে অগণিত টাকা। স্কুইড গেমের ম্যানেজমেন্ট বেছে বেছে কাদের এই খেলার জন্য বাছাই করতেন? গরীব, দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষদের, মোদ্দাকথা গরীবদের। না, আমি সিরিজের রিভিউ করতে আসিনি। বলছিলাম আজকের ঝকঝকে কলকাতা যেখানে বাস, ট্রাম আর স্বপ্নেরা ঘুরে বেড়ায়। ঘুরে বেড়ায় পানি পুরির সুবাসের সাথে কফি হাউজের কফির মন মাতানো গন্ধ কিংবা কলেজ স্ট্রিটের নতুন পুরোনো মলাটের বইয়ের নেশা করা ঘ্রাণ সেই কলকাতা কয়কেশ বছর পর আর সেই কলকাতা থাকবে না। কলকাতা হয়ে যায় এক ডিস্টোপিয়ান নগরী। ভাগ হয়ে যায় ❛ওল্ড সিটি❜ আর ❛নিউ সিটি❜ নামে। যার একপাশে জৌলুস, টাকা, আলো আর বিলাসিতা তো অন্যপাশে জঞ্জাল,ময়লা, অভাব আর মনুষ্যত্বের বিসর্জন দেয়া অন্ধকার। আর পুরো সিটির সর্বেসর্বা মার্শাল শ্রীধর পাট্টা। যেখানেই পাট্টাই শেষ কথা। এমনই এক কঠিন সময়ে ওল্ড সিটিতে জিশান পাল চৌধুরী বাস করতো তার স্ত্রী মিনি আর ছোট্ট ছেলে অর্কনিশানকে নিয়ে। অভাব ছিল, বস্তির দমবন্ধ করা পরিবেশে দিনাতিপাত করতে হলেও তিনজনের পরিবারে অফুরন্ত ভালোবাসা ছিল। সেই সুখেই ছেদ পড়ল এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মাধ্যমে। রেসলিং গেমে নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রতিদ্বন্দ্বীকে মে রে ফেলেছিল জিশান। যদিও ইচ্ছাকৃত ছিল না কাজটা। বন্ধুর হ ত্যার শোধ আর গায়ে উঠা অসীম রাগকে দমন করতে না পেরেই অঘটন ঘটে যায়। ফলাফল তার জীর্ণ বাড়িতে মার্শাল শ্রীধর পাট্টা নামক কুরুচিপূর্ণ লোকের আবির্ভাব। পাট্টা প্রস্তাব দিলো, হয় ❛সুপার গেম কর্পোরেশন❜ এর ❛কি ল গেম❜ খেলায় নাম দাও নয়তো খু নের সাজা ভোগ করো। উপায়ান্তর না দেখে জিশানকে জীবন ম র ণ সে খেলাতেই নাম লেখাতে হয়।
❛সুপার গেম কর্পোরেশন❜ এর ভয়ানক সেই খেলা কতগুলো ধাপে হয়। যার প্রতিটার মূল কথা জিততে হবে না হয় প্রাণ ভাগাড়ে। জিতলে বিপুল টাকা ম র লে কাঁচ কলা। বাহারি সব খেলা আর তার নাম আছে। এই যেমন, ❛স্নেকস অ্যlন্ড জেমস❜, ❛ম্যানিম্যাল রেস❜, ❛ফাইট গেম❜, ❛হাংরি ডলফিন❜, ❛পিট ফাইট❜, আর ❛কি ল গেম❜। বলাই বাহুল্য এইটাই সবথেকে জনপ্রিয় আর এই খেলা জেতার প্রাইজমানি কল্পনাতীত। জিশানকে খেলতে হবে এই সবগুলো খেলা আর সবশেষে ❛কি ল গেম❜ এ দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টা কিংবা তেইশ ঘন্টা ষাট মিনিট কিংবা ষাট মিনিট তেইশ ঘণ্টা টিকে থাকতে হবে ভয়ঙ্কর তিনজন খু নে র সাথে লড়াই করে। তবেই মুক্তি। ওল্ড সিটির মানুষই কেবল এসব খেলায় অংশ নিতে পারে। নিউ সিটির বাসিন্দারা দর্শক। প্লেট টিভিতে উপভোগ করে ওল্ড সিটির বাসিন্দাদের ম র ণ খেলা। আবার নানারকম বাজি ধরা আর তার থেকে ইনকাম তো আছেই। কী অদ্ভুত এক জগৎ!
জিশান ওল্ড সিটি থেকে নিউ সিটিতে পদার্পণ করলো দীর্ঘ ষোলো বছর পর। একসময় নিউ সিটির জৌলুসের বাসিন্দা ছিল সেও। ভাগ্যের পরিহাসে জায়গা হয় ওল্ড সিটিতে। আবার একই পরিহাসে জীবন ম র ণ খেলা খেলতে নিউ সিটিতে পা দিলো সে। এই খেলার শুরু থেকেই জিশান কেমন একটা ভালো প্রভাব ফেলেছিল সকলের মাঝে। তার উদ্দেশ্য ❛কি ল গেম❜ জেতা থেকেও অনেক বেশি। পোড় খেয়ে খেয়ে শক্ত হলেও জিশান যেন ডাবের মতো। বাইরের শক্ত আবরণের নিচে আছে নরম এক মন। যে প্রয়োজনে মা র তে জানে আবার হাতের শিকারকে প্রাণ ভিক্ষে দিতেও জানে। নিউ সিটির ইতিহাসে এমন কোনো পার্টিসিপেন্ট আসেনি। কেউ এতটা মানবিক সাথে দুর্ধর্ষও ছিল না। এবারের খেলাও আগের সব রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে। জিশানের জনপ্রিয়তা মানেই ❛সুপার গেম কর্পোরেশন❜ এর আয়। কিন্তু ক্ষমতালোভী, নিষ্ঠুর, স্বৈরাচারী পাট্টার জন্য জিশানের এত জনপ্রিয়তা হুমকির। সে নানা ছক কষছে জিশানকে রুখে দেবার। গা জ্বালানো কথা বলছে, অভিনব সব শাস্তি দিচ্ছে কিন্তু জিশান এক পিসই। সব সয়ে নিচ্ছে দাঁতে দাঁত চেপে। লক্ষ্য পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়া। কিন্তু সম্ভব হবে কি? কারণ ❛কি ল গেম❜ এর ফলস সারভাইভাল ফ্যাক্টর ০.০৭ আর আসলটা ০.০০ বা একটু দয়া করে ০.০১! ওল্ড সিটি, নিউ সিটিতে জিশানের জয়জয়কার। একরোখা ২৯ বছরের এই ফ্যমিলি ম্যান সবাইকে অবাক করে দিয়ে জিতে যাচ্ছে কঠিন সব খেলা। আর একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘ ২৪ বা ২২ ঘণ্টার মা র ণ খেলার দিকে। জেতা ভিন্ন অন্য উপায় নেই। নিজের শক্তি সামর্থ্য থাকলেও ভবিষ্যতের পৃথিবীর তথ্য প্রযুক্তি আর তাকে ব্য��হার করে শয় তানি কারবার করা লোকের অভাব নেই। প্রযুক্তিকে একেবারে খাপে খাপ ভাবে ব্যবহার করেছেন পাট্টা মিয়া। তবে কে এই পাট্টা? তার অতীত কী? কারণ কথায় বলে, ❛Villans are made not born❜ । শ্রীধরের শ্রীধর হওয়ার ঘটনা কী? মা র ণ খেলায় জিশান যেমন শত্রু পেয়েছে তার থেকে বেশি পেয়েছে বন্ধু। মনোহর সিং, রিমিয়া, গার্ড, পান্ডা, সুধাসুন্দরী, প্যাসকো কিংবা শেষ মুহূর্তে রউফ। টাকা, জৌলুস, ক্ষমতা আর উপভোগের মাঝে মনুষ্যত্বকে বিকিয়ে দেয়া দুই সিটির জনগণকে এক করে ফেলেছে এক জিশান। সেই একত্ব কি পারবে দুই সিটির এই আকাশ পাতাল তফাতকে গুড়িয়ে দিতে?
সময় বেশি নেই সামনেই শেষ খেলা শুরু। যাকে বলে, ❛খেলার নাম খু ন❜। শেষ কিস্তিতে কারা লড়বে জিশানের সাথে? ইতিহাস বদলে যাবে নাকি মৃ ত্যুর মিছিলে পাল চৌধুরী নামে আরেকটা নাম যোগ হবে?
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
❝তেইশ ঘন্টা ষাট মিনিট❞ এবং ❝ষাট মিনিট তেইশ ঘন্টা❞ অনীশ দেবের ডিস্টোপিয়ান কল্পবিজ্ঞান কাহিনি। ২০০৪ সালে উপন্যাসের প্রথম খণ্ড প্রথম লিখেছিলেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় খন্ড পর্ব আকারে পত্রিকায় প্রকাশ পায়। ২০১০ সালে প্রথম বই এবং ২০১৪ সালে দ্বিতীয় খণ্ড বই আকারে প্রকাশ পায়। আজ থেকে বিশ বছর আগেও তথ্য প্রযুক্তি এতটা উন্নত ছিল না। সে সময় বসে কয়েকশো বছর ভবিষ্যতের পৃথিবীর কল্পনা যেভাবে করেছেন লেখক সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। আর সবথেকে অবাক করা ব্যাপার সে সময় লেখক যে খেলাকে কেন্দ্র করে বা কল্পনা করে পুরো উপন্যাসের অবতারণা করেছেন তার ১৮ বা ১৭ বছর পর একই ধরনের এক সিরিজ এবং রিয়েলিটি শো এসেছিল। যাই হোক খুচরা কথা বাদ। উপন্যাস বিষয়ে বলি। প্লট সে সময়ের হিসেবে ইউনিক কোনো তর্ক নেই। লেখার গতি ছিল বেশ দ্রুত। বইটা পড়তে গিয়ে আমি বেশ অবাক হয়েছি। দিন যত যায়, যাচ্ছে র ক্ত মাংসের মানুষের আবেগ তত কমছে। তারা আবেগহীন, নির্মম হচ্ছে। তাইতো শত শত বছর পরের সেই নিউ সিটির মানুষগুলো খেলার নামে আরেকজনের মৃ ত্যু উপভোগ করে টাকা দিয়ে। আবার বাজিও ধরে। বর্তমানের আমরাও কি সেই পথেই যাচ্ছি না? এখন রাস্তায় কেউ বিপদে পড়লে আমরা এগিয়ে গিয়ে সাহায্য করা থেকে স্মার্ট ফোনে সে চিত্র ধারন করাকেই আসল কর্তব্য বলে মনে করি। এখনো টাকাই আমাদের শেষ কথা। টাকা দিয়ে সুখ কিনে নেই। তবে এই কেনা সুখে কি আমরা আসলেও সুখি? জিশান একটা উদাহরণ মাত্র। নষ্ট জং ধরে যাওয়া ভবিষ্যতে জিশান সবুজ এক আশার আলো। উপন্যাসের শুরু থেকে অর্ধেকের কিছু বেশি ঘটনা জিশান কেন্দ্রিক ছিল। এরপর সেটা ঘুরে অন্য তো চরিত্রের দিকেও লেখক নজর দিয়েছেন। তারই ফলে প্যাসকো, সুধাসুন্দরী, সুখারাম, মনোহর সিং কিংবা রিমিয়ার গল্প জানা গেছে। জানা গেছে চাল চুলোহীন পিলটুর গল্প। গুরুত্বপূর্ণ থেকে গল্পের খাতিরে আসা চরিত্রদের ব্যাক স্টোরি লেখক দারুণভাবে প্রকাশ করেছেন। তবে শুরুটা যেমন ২০০০ সিসি বাইকের মতো ছিল গল্প এগিয়ে দ্বিতীয় খন্ডে আসতে আসতে তার গতি অনেকটাই মিইয়ে গেছিলো। কিছুক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে লেখক ইচ্ছাকৃতভাবে লেখাকে টেনে বড়ো করেছেন। বর্ণনা দরকার না হলেও সেখানে বাড়তি আবেগের মিশেল দিয়ে গল্প বাড়িয়েছেন। যার সিংহভাগ ❝ষাট মিনিট তেইশ ঘন্টা❞ অংশেই পড়েছে। বিধায় দ্বিতীয় খন্ড পড়তে গিয়ে একঘেয়ে ভাব এসেছে কোথাও বিরক্তি ধরেছে। চাইলেই এক এক খন্ডে শেষ করে দেয়া যেতো। দ্বিতীয় বইয়ের সিংহভাগ অতীত ইতিহাস দিয়ে বর্তমানের সাথে সংযোগ করলেও অতীতের কপচানি অনেকটা ছোটো করে দিলেও মূল কাহিনীতে তেমন ফারাক পড়তো না। সাথে পাঠক হিসেবে ধৈর্যহারা হতে হতো না।
কিছু প্রযুক্তির ব্যবহার বর্ণনা বেশ দারুণ ছিল। বিশেষ করে পাখির মুক্তভাবে চলার মাঝেও ❛কন্ট্রোলড ফ্রিডম❜ এর কন্সেপ্টটা দারুণ ছিল সাথে অবশ্যই নির্মম ছিল। গেমের নিয়ম, গেমের বিস্তারিত গুলো নির্মম ছিল যাতে করে এই খেলার নিষ্ঠুরতাই পাঠকের চোখে ধরা দেয়। বারবার এটাই ভাবতে বাধ্য করে কী এক বিবেকহীন সময়ের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ফিকশনে জিশান ছিল কিন্তু বাস্তবের জিশান কে বা কারা?
চরিত্রের কথা বললে মূল দুইজন। একজন নায়ক আরেকজন খলনায়ক। খল নায়ককে লেখক মনের মাধুরী মিশিয়ে নির্মমতা দিয়েছেন। দিয়েছেন বিশ্রী গা জ্বালানো রসিকতার গুন। পাট্টার উত্থান ছিল অবাক করার মতো। জিশান চরিত্রটাও অবশ্যই দারুণ। এছাড়াও সাথে যেসব চরিত্র ছিল সবগুলোই তাদের অবস্থানে ঠিক ছিল।
উপন্যাসের শুরুটা আমার বেশ লাগলেও পরে গিয়ে একঘেয়েমির জন্য ভালো লাগার স্কেল নিচে নেমেছে। তবে সবথেকে বেশি হতাশ হয়েছি আমি সমাপ্তিতে। ওঠ ছেঁড়ি তোর বিয়া স্টাইলে কীভাবে উপন্যাসের লাগাম টেনে দিলেন লেখক বুঝলাম না। এত এত উত্তেজনা তৈরী করে শেষটা যেন হুট করেই দিলেন যেন লিখতে লিখতে হাতে ব্যথা হয়ে গেছে। আর লিখব না বলে সমাপ্তির টান দিয়ে দিলেন। শেষটা আশানুরূপ হয়নি বিধায় পুরো উপন্যাসকে খুব ভালো লেগেছে এই ট্যাগ দিতে পারলাম না।
শেষমেষ জিশান কি পেরেছিল অন্যায়ের এই শিকল ভেঙে দিতে? জানতে হলে তেইশ ঘন্টা ঊনষাট মিনিট ষাট সেকেন্ড অপেক্ষা করতেই হবে!
অনীশ দেবের “তেইশ ঘণ্টা ষাট মিনিট”— বাংলা সাহিত্যের এক futuristic থ্রিলার বা dystopian থ্রিলার । আমরা যারা Squid Game বা Alice in the Borderland দেখে চমকে উঠেছি তাহলে এই বইটিও ভালো লাগবে । তবে অনীশ দেব এর লেখা এই থ্রিলার টি সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে ছিল, ওই সময় তার এই futuristic চিন্তা ভাবনার জন্য প্রণাম ।
এই বইটিতে দুটি পার্ট আছে তেইশ ঘণ্টা ষাট মিনিট ও ষাট মিনিট তেইশ ঘণ্টা । আমি শুধু প্রথম পার্ট টি পরে পাঠ অনুভূতি ব্যক্ত করছি ।
গল্পটিতে দেখানো হয় ভবিষ্যতের কলকাতার দুটি শহর, ওল্ড সিটি যেখানে সবকিছু পুরোনো, ভাঙা চোরা, কোনও সুযোগ সুবিধা নেই । বাজে লোকে শহর টা ভরে গেছে, আসলে অভাবের তাড়নায় সবাই সবাই বাজে হয়ে গেছে হয়েতো। মানুষগুলো যেন হেরে যাওয়ার আগেই মরে গেছে। আর একদিকে আছে নিউ সিটি, উঁচু উঁচু বিল্ডিং আর বিলাসবহুল জীবন, আধুনিকতার আঙ্গিকে মোড়া । অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা ও টেক । তার সাথে আছে নিউ সিটি তে এক সিন্ডিকেট, যে চালায় এক ভয়ঙ্কর গেম শো । আসলে ওল্ড সিটি এর মানুষ গুলো কে পয়সার লোভে এই আদিম বর্বর গেম শো তে নাম দেওয়ায় এবং তার লাইভ টেলিকাস্ট ও বিজ্ঞাপন দিয়ে পয়সা কামায় । গেম গুলো তে ভয়ঙ্কর- কখনও হিংস্র কুকুর এর সাথে লড়াই, বা কখনও বিষাক্ত সাপে ভরা লেক দিয়ে দৌড় বা কখনও আদিম মানুষের মতো একে অপরের সাথে লড়াই । নিউ সিটি আধুনিক হলেও গেম গুলোতে আদিম মানুষের মতো বর্বরতা আছে যা দেখে মজা পায় নিউ সিটি এর মানুষ ।
গল্পের নায়ক জিশান কোনভাবে নিউ সিটির সিন্ডিকেট এর কাছে ফেসে যায় ও তাঁকে নাম দিতে হয় সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কিল গেম এ । ও চায় শুধু নিজের পরিবারকে ভালো রাখতে, একটু “মানুষের মতো” বাঁচতে। কিন্তু বিনিময়ে কী দিতে হবে? তার ভেতরের মানবিকতাকে? এটি জিতলে ও পাবে অনেক অনেক টাকা যা নিয়ে ও নিউ সিটি তে এসে থাকতে পারবে ওর বউ বাচ্চা নিয়ে । কিন্তু এই গেম এ যাওয়ার আগে ওকে খেলতে হবে আরও কিছু ভয়ঙ্কর গেম । এই সমস্ত গেম এর বিবরণ নিয়েই এই গল্পের প্রথম ভাগ ।
ব্যক্তিগত অভিমত- 🔸 লেখার সময়টা মাথায় রাখলে, এই প্লটটা সত্যিই ahead of its time। ভাবো তো, সেই সময়ে একজন বাঙালি লেখক কিভাবে এমন Dystopia ভাবতে পেরেছিলেন! 🔸এই উপন্যাস টা যদি আজ থেকে বছর ১০ আগে পড়তাম হয়েতো আরও বেশি ভালো লাগতো কারণ আজ এই ধরনের একের পর এক শো Netflix এ দেখেছি। 🔸 লেখকের তৈরি করা দুটো জগতের বিবরণ খুব সুন্দর । খেলা গুলোর বর্ণনা পাঠককে মগ্ন করে তোলে, পেজ টার্নার যাকে বলে । 🔸আমি চেয়েছিলাম গল্প যত এগোবে গল্পের depth বাড়বে কিন্তু একটা সমান্তরাল লাইন এই চললো গল্প টা। কোথাও যেন সেই মস্তিষ্কে খোঁচা দেওয়া টুইস্ট টা মিস করলাম। 🔸চরিত্র গঠন এর দিক দিয়ে একমাত্র জিশান কেই ভালো লেগেছে, অন্য ক্যারেক্টার গুলো সেভাবে মনে দাগ কাটেনি । সেই কারণে কিছু পার্শ্ব চরিত্রের অভাব বোধ করেছি । শ্রীধর পাট্টা এর চরিত্রের ব্যাক স্টোরি টা ভালো বাট গল্পে অনেক পরে এসেছে তাই সেভাবে ওই চরিত্র টা মনে দাগ কাটেনি । 🔸 রূপকথা এর চরিত্র টার দারুণ সম্ভবনা ছিলো, কিন্তু কোথায় যেন মিলিয়ে গেল । 🔸 তবে আমি গর্বিত বাংলায়এই ধরনের গল্প লেখা হয়েছে, দ্বিতীয় পার্ট টা কিছুদিন পর আবার পড়বো, ফাইনালি কিল গেম এ কী হলো সেটা তো জানতে হবে ।
Engaging plot. Though it has some flaws in character development, it's a fresh genre in Bengali literature,so i am giving it 4 stars. Actual rating 3.5/5.