Jump to ratings and reviews
Rate this book
Rate this book
কৃষ্ণ বিবর মহাকাশের এক বিস্ময়, যা সব কিছু টেনে নেয় নিজের গভীরে, এমন কি আলোও। কি করে জন্ম নেয় কৃষ্ণ বিবর? কি তার প্রকৃতি? কৃষ্ণ বিবর কি চিরস্থায়ী? এই সব প্রশ্ন নিয়ে এ বই।

63 pages, Hardcover

First published December 1, 1985

54 people are currently reading
585 people want to read

About the author

Jamal Nazrul Islam

5 books77 followers
Jamal Nazrul Islam (Bengali : জামাল নজরুল ইসলাম) was a Bangladeshi mathematical physicist and cosmologist. He was a professor at University of Chittagong. He also served as the director of the Research Center for Mathematical and Physical Sciences (RCMPS) at the University of Chittagong.

He received a BSc degree from St. Xavier's College at the University of Calcutta. In 1959, he got his Honors in Functional Mathematics and Theoretical Physics from Cambridge University. He completed his Masters in 1960. A student of the Trinity College, he finished the Mathematical Tripos. Islam obtained his PhD in applied mathematics and theoretical physics from Trinity College, Cambridge in 1968, followed by a DSc in 1982.

Islam worked in the Institute of Theoretical Astronomy (later amalgamated to Institute of Astronomy, Cambridge) from 1967 until 1971. Later he worked as a researcher in California Institute of Technology and University of Washington. During 1973-1974 he served as the faculty of Applied Mathematics of King's College London. In 1978 he then joined the faculty of City University London until he returned to Chittagong in 1984. Until his death he served as Professor Emeritus at the University of Chittagong.

His research areas include Applied Mathematics, Theoretical Physics, Mathematical Physics, theory of Gravitation, General Relativity, Mathematical Cosmology and Quantum Field Theory. Islam authored/coauthored/edited more than 50 scientific articles, books and some popular articles published in various scientific journals. Besides this he has also written books in Bengali. Particularly noteworthy are Black Hole, published from the Bangla Academy, “The Mother Tongue, Scientific Research and other Articles” and “Art, Literature and Society”. The latter two are compilations.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
86 (62%)
4 stars
28 (20%)
3 stars
10 (7%)
2 stars
7 (5%)
1 star
6 (4%)
Displaying 1 - 15 of 15 reviews
Profile Image for Ahmed Sanny.
Author 1 book64 followers
June 27, 2015
বাংলায় লেখা কৃষ্ণ বিবর নিয়ে এখন পর্যন্ত আমার পড়া সবচাইতে চমৎকার বই হচ্ছে এটি। জামাল নজরুল ইসলাম ছিলেন হাইলি টেকনিকাল ঘরনার মানুষ তার লেখায় এই রকম পপুলার সায়েন্স ঘরনার কমপ্লেক্সিটি বিবর্জিত লেখা আসলেই অসাধারণ।
Profile Image for Rifat.
501 reviews330 followers
August 29, 2020
বইটি আসলে অনেক তথ্যবহুল , সেদিক থেকে ৫/৫
জামাল নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত ফিজিসিস্ট একই সাথে কসমোলজিস্টও ছিলেন। এই বইটিতে তিনি কৃষ্ণ বিবর সম্পর্কে একটা বেসিক ধারণা দিয়ে গেছেন - কৃষ্ণ বিবর কি, এটা কিভাবে তৈরি হয় বা শেষে কি হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন।

তবে তিনি বেশ কিছু জায়গায় একটা কথাবারবার উল্লেখ করেছেন। কথাটা এরূপ , 'আসলে এটা কিভাবে হয়েছে তা বিজ্ঞান এখনও জানতে পারে নি।'
সত্যিই কতটুকুই আর জানা সম্ভব হয়েছে! এ মহাবিশ্বের প্রায় ৯৫ ভাগই তো অজানা।

যেহেতু বইটিতে সমীকরণের ব্যবহার হয় নি তাই বুঝতে গিয়ে বেগ পেতে হবে না আশা করি।তবে কলেজের বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের কিছু টপিক বুঝতে একটু বেশি সুবিধা হবে।

আমার কেন জানি এস্ট্রোনমিতে খুব একটা ইন্টারেস্ট আসে না। ভাবলাম বইটা পড়ে ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি। শুরুর দিকে ভালোই আনন্দ নিয়ে শুরু করেছিলাম।
কিন্তু বইটা সেই লেভেলের তথ্যবহুল আর সূত্র বিবর্জিত হওয়ায় শেষে গিয়ে ধৈর্য্য আমাকে পরিত্যাগ করেছে🐸

যাইহোক আগ্রহ নিয়ে সবকিছু জানার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত :)
Profile Image for Ahmed Aziz.
381 reviews69 followers
December 9, 2019
কৃষ্ণ বিবরের উপর বাংলায় লেখা সেরা বই। বইয়ের শুরু পরমাণু, কণিকা, চারটি বল দিয়ে। এরপর একে একে নক্ষত্রের জন্ম-মৃত্যু, লাল দানব, শ্বেত বামন, নিউট্রন তারা, কৃষ্ণ বিবরের সৃষ্টি রহস্য; সবখানেই সহজ ভাষায় কোয়ান্টাম তত্ত্বের মাধ্যমে ব্যাখ্যা। শেষ হয়েছে কোয়ান্টাম তত্ত্বের ব্যাখ্যায় কৃষ্ণবিবরের বিনাশ ও মহাবিশ্বের সম্ভান্য পরিণতির বর্ণনায়।
Profile Image for Fahad Ahammed.
386 reviews44 followers
June 28, 2023
১৯৮৫ সাল এরও আগে লেখা, ঐ সময় এমন মানের বই লেখা নিশ্চয়ই সহজ কথা নয়।
Profile Image for Biju Toha.
6 reviews
March 29, 2018
এটা সেই বই যা স্টিফেন হকিং এর ব্লাক হোল থিওরির অনেক পূর্ব থেকেই প্রাচ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান হত। কিন্তু আফসোস যে, আমরা বাংঙালী হয়েও এ ব্যাপারে অনেক পরে জানতে পারি কিংবা অনেকে তাও জানিনা।
Profile Image for Imran Shorif Shuvo.
86 reviews30 followers
June 9, 2020
জামাল নজরুল ইসলাম কোন স্তরের মানুষ ছিলেন, তাঁর প্রমাণ দিতে এই বইটাই যথেষ্ট!

বাংলা ভাষায় ব্ল্যাক হোল বিষয়ে আমার দেখা সেরা বই। আকারে মার্জিত, খুব ছোটও নয় আবার বেঢপ আকারে বড়ও নয়। সর্বস্তরের লোকের বোধগম্য করে লেখা আছে। বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থীদের তো টেক্সচুয়াল হিসেবে পড়া দরকার এটা! অন্যান্যদেরকেও বিজ্ঞানে আগ্রহী করতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়ক হবে বইটি।
Profile Image for Tanvir KLION.
43 reviews6 followers
May 18, 2018
এক বসায় বইটি শেষ হয়ে গেল। পড়ার পর মনে হলো বইটি অবশ্যই আমাদের স্কুলগুলোতে ৬ষ্ঠ অথবা ৭ম শ্রেণীতে পাঠ্য করা উচিৎ।
Profile Image for Sohan.
274 reviews75 followers
July 16, 2020
প্রাথমিক আলোচনা হিসেবে বেশ ভালো। তবে, একদমই সংক্ষিপ্ত আলোচনা। বাংলা একাডেমী দায়মুক্ত হয়েছে যেন বইটা বের করে। মন্দ বলছি না, জে. এন. ইসলামের বাংলা বই মানেই আমার কাছে বিশাল ব্যাপার।
1 review1 follower
March 31, 2018
আমাদের অবস্থান কোথায় ? অর্থাৎ এই পৃথিবী নামক গ্রহটি মহাবিশ্বের কোথায় অবস্থিত ? এর উত্তর খুজা শুর হয়েছে অনেক পূর্ব থেকেই । কিন্তু শেষ পর্যন্ত— দেখা যাচ্ছে এই বিশাল মহাবিশ্বে পৃথিবী নামক গ্রহ খুঁজে বের করা সম্ভব নয় ।

বৃহৎ বিস্ফোরণ মহাবিশ্বের আরম্ভের অনন্যতা অনুসারে এই বিশাল মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে একটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে । যার বয়স প্রায় তের থেকে পনের হাজার কোটি বছর । মহা বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্টি প্রায় দশ হাজার কোটি গ্যালক্সি নিয়ে মহাবিশ্বের বর্তমান অবস্থান । এসব গ্যালাক্সি আবার হাজার হাজার নক্ষত্রের সমন্বয়ে গঠিত । এ রকমই একটি গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ে বা আকাশ গঙ্গা ।

ধারনা করা হয় এই মিল্কিওয়ে গ্যালক্সিতে প্রায় বিশ হাজার কোটি নক্ষত্র রয়েছে । এই বিশ হাজার কোটি নক্ষত্রের মধ্যে একটি হল সূর্য । যাকে কেন্দ্র করে আমরা বেঁচে আছি । বেঁচে আছে পৃথিবীর প্রাণীকূল এবং উদ্ভিদকূল । প্রতিটি গ্যালাক্সির প্রতিটি নক্ষত্র তাদের নিজস্ব আলোয় আলোকিত । এসব নক্ষত্রের আবার কোনটার আলো রঙিন, কোনটার রয়েছে বিচিত্র বর্ণলী । এই আলো দেখে আমরা মনে করি নক্ষত্রগুলি অর্থাৎ তারা গুলি জ্বলছে-নিভছে । তারা গুলি জ্বলছে-নিভছে মনে করার কারণ এগুলো স্থির নয় । আসলে যেগুলো জ্বলছে-নিভছে বলে মনে হয় সেগুলো তারা বা নক্ষত্র আর যেগুলো স্থির বলে মনে হয় সেগুলো গ্রহ বা উপগ্রহ ।

মহাবিশ্বে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তারার জন্ম হচ্ছে । সুতরাং তারার সঠিক হিসাব পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে সকল বিজ্ঞানীই তারা গুলোকে ফুটবলের মতো গোলক বলে ধারণা করেন।

এখন প্রশ্ন হল এই তারা গুলো কী ? কি উপায়ে তৈরী হয় ? এর শেষই বা কোথায়? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত উত্তর খুঁজে পাব ।

আমাদের কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নটি হল- "ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ বিবর "

ব্ল্যাক হোল হল এমন এক বিবর বা গহ্বর যেখানে কোন মহাকাশযান পড়লে আর বেরিয়ে আসতে পারেনা । অর্থাৎ ব্ল্যাক হোলের সীমানায় কোনোকিছু পড়ে গেলে সেখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব । ব্ল্যাক কহোলের মধ্যাকর্ষণ শক্তি এতই প্রবল যে সেথান থেকে মহাকাশযান বা বস্তু বেরিয়ে আসাতো দূরের কথা আলোকে রশ্মি পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারেনা । ব্ল্যাক হোলের মধ্যে যদি কোনো মানুষ পড়ে তাহলে তাঁর মাথা থেকে পা এই সামান্য ব্যাবধানের মধ্যে এত বেশি মধ্যকর্ষণ শক্তি কাজ করবে যার কারনে মুহূর্তের মধ্যে তাকে ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলবে । তাঁর অবস্থা হবে ছেড়া ছেড়া সেমাইয়ের টুকরোর মত । এই ব্ল্যাক হোলকেই মহাকাশের দানব বলে আখ্যায়িত করা হয় ।

কৃষ্ণ বিবর বা ব্ল্যাক হোল কী বা সেটা কিভাবে তৈরী হয় তা জানতে হলে প্রথমে জানতে হবে তারকার জীবন চক্র অ���্থাৎ তারকা কি উপায়ে তৈরী হয়?

বিভিন্ন রঙের উপর ভিত্তিকরে ন¶ত্রকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ-

১. হলুদ প্রধান সারি

২. কমলা প্রধা�� সারি

৩. সাদাপ্রধান সারি

৪. নীল প্রধান সারি

আবার তারার অবস্থার উপর ভিত্তি করে আরো কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ-

১. লোহিত বামন

২. শ্বেতবামন

৩. লোহিত দানব

৪. শ্বেত দানব

৫. হলুদ দানব

৬. নীল দানব

প্রত্যেকটি তারাই আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী থেকে বহু দূরে। এসব তারার কোনটির আলো অনেক বছর পর পৃথিবীতে এসে পৌছেছে। আবার কোন তারার আলো এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে এসে পৌছায়নি। কয়েক বছর থেকে কয়েক লক্ষ বছর লাগতে পারে এসব তারার আলো পৃথিবীতে পৌছাতে । আবার এমন ও তারার আলো দেখছি যেগুলো অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

এসব নক্ষত্র তারা দেখতে ছোট-বড়, গোলাকার, ত্রিভুজাকার যাই মনে হোক না কেন এদের ভিতরের কার্যকলাপ সম্পূর্ণ রাসায়নিক বিষয়। নক্ষত্র উৎপন্ন হয় নীহারিকা থেকে। এসব নীহারিকা আবার হাইড্রোজেন গ্যাস ও ধূলিকণার বিশাল ভান্ডার। এই হাইড্রোজেন গ্যাসই হচ্ছে নক্ষত্রের গঠন রহস্যর মূল উপাদান। যখন বৃহৎ পরিমান হাইড্রোজেন গ্যাস নিজস্ব মহাকর্ষীয় আকর্ষণের চাপে নিজের উপরেই চুপসে যেতে থাকে তখই সৃষ্টি হয় একটি তারকার। তারকাটি ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হতে থাকে। সঙ্কুচিত হবার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর পরমাণু গুলি খুব নিকটে আসতে শুর করে। ধীরে ধীরে পরমাণু গুলি এত বেশি ঘন হয় এবং এত দ্রুতিতে পারষ্পরিক সংঘর্ষ হতে থাকে, ফলে বায়ু উত্তপ্ত হয়। এমতাবস্থায় চাপ খুব প্রবল থাকে। শেষ পর্যন্ত বায়ু এত বেশী উত্তপ্ত হয় যে, হাইড্রোজেন গ্যাসের সংঘষের্র ফলে পরমাণু গুলি দূরে ছিটকে যাওয়ার কথা। কিন্তু দূরে ছিটকে না গিয়ে সংযুক্ত হয়ে হিলিয়াম গ্যাসে পরিনত হয়। এই প্রক্রিয়াটি একটি নিয়ন্ত্রিত হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণের মত। হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরিত হলে যে রকম তাপ নিগর্ত হয় ঠিক তদ্রুপ হিলিয়াম পরমাণু সৃষ্টির ফলে বিপুল পরিমাণে তাপ নির্গত হয়। আর এই জন্যই তারকাটি আলোক বিকিরণ করে। এই বাড়তি উত্তাপ বায়ুর চাপকে ধীরে ধীরে আরো বাড়িয়ে তোলে। যখন বায়ুর চাপ এবং মহকর্ষীর আকর্ষণ প্রায় সমান হয়ে যায় তখনই বায়ুর সংকোচন বন্ধ হয়। পারমাপবিক প্রক্রিয়া থেকে উদ্ভূত তাপ এবং মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ভারসাম্যের ফলে তারকাগুলি বহুকাল পর্যন্ত সুস্থিত থাকে। শেষ পর্যন্ত কিন্তু তারকাটির হাইড্রোজেন এবং অন্যান্য জ্বালানি ফুরিয়ে ও যায়। এখানে একটি ব্যাপর ঘটে যেটা হল শুরুর পর্যায়ে তারকাটির জ্বালানী যত বেশী থাকে ফুরিয়ে যায় তত তাড়াতাড়ি, এর কারন তারকার ভর যত বেশী হয় মহাকর্ষীয় আকষণের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার জন্য তারকাটিকে তত বেশী উত্তপ্ত হতে হয়।

আর তারকাটি যত বেশী উত্তপ্ত হবে তার জ্বালানী তত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাবে। আর একটি তারকার জ্বালানী ফুরিয়ে গেলে সেটা ধীরে ধীরে শীতল হতে থাকে এবং সঙ্কুচিত হতে থাকে। তখন সেই তারকার কী হয় বা কী ঘটে?

এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গিয়েছিল ঊনিশশো কুড়ির দশকের শেষের দিকে ঊনিশশো আটাশ সালে। এর সমাধান করেছিলেন ভারতের একজন গ্রাজুয়েট ছাত্র যার নাম সুব্রহ্মান্যান চন্দ্রশেখর (Subrahmanyan chandrasekhar) . তিনি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যার আর্থার এডিংটনের কাছে পড়বার জন্য যখন জাহাজ করে ইংল্যন্ডের দিকে রওয়ানা হন তখন তিনি অঙ্ক কষে বের করেছিলেন যে ব্যবহারের ফলে যখন একটি তারকার সমস্ত জ্বালানী ফুরিয়ে যায় তখন নিজের মহাকর্ষের বিরুদ্ধে নিজেকে বহন করতে হলে একটি তারকার ভর কত হতে হবে?

তার চিন্তাটি ছিল এ রকম- তারকা যখন ধীরে ধীরে ক্ষুদ্র হয়ে যায় তখন তারকার সমস্থ পদার্থ কণিকাগুলো খুব কাছাকাছি এসে যায় , সুতরাং পাউলির অপবর্জন তত্ত্ব (একটি পরমাণুতে অবস্থানরত ইলেকট্রনগুলোর নিজেদের মধ্যে অন্তত পক্ষে একটি কোয়ান্টাম সংখ্যার মান ভিন্ন থাকতেই হবে) অনুসারে তাদের বিভিন্ন গতিবেগ হওয়া আবশ্যিক । এজন্য কণিকাগুলো পরস্পর থেকে দুরে চলে যেতে থাকে । যার ফলে তারকাগুলিতে প্রসারণের চেষ্টা দেখা দেয়। ঠিক যেমন তারকাটির জীবনের শুরুতে মহাকর্ষীয় তত্ত্বের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করেছিল উত্তাপ । তেমনি মহাকর্ষীয় আকর্ষণ এবং অপবর্জন তত্ত্ব ভিত্তিক বিকিষর্ণের ভারসাম্য রক্ষিত হলেই তারকাটি তার নিজস্ব ব্যাসার্ধ অপরিবতির্ত রাখতে পারে। কিন্তু চন্দ্রশেখর বুঝাতে পেরেছিলেন অপবর্জন তত্ত্ব ভিত্তিক বিকর্ষণের একটি সীমা আছে । আইনস্টাইনের অপেক্ষবাদ তারকাটির ভিতরকার সমস্ত পদার্থ কণিকাগুলির গতিবেগের পার্থক্যের সীমা বেঁধে দিয়েছে । এই সীমা হল আলোকের দ্রুতি । অর্থাৎ তারকাটি যথেষ্ট ঘন হলে অপবর্জন তত্ত্বভিত্তিক বিকর্ষণ মহাকর্ষীয় আকর্ষণের চাইতে কম হবে । চন্দ্রশেখর হিসাব করে দেখেছিলেন শীতল তারকার ভর অর্থাৎ তারকার জ্বালানী ফুরিয়ে যাওয়ার পর সৃষ্ট শীতল তারকার ভর আমাদের সূর্যের ভরের দেড় গুণের চাইতে বেশী হলে সে নিজের মহাকর্ষের আকর্ষণ হতে নিজেকে রক্ষা করতে পরবেনা । [বলে রাখা আবশ্যক যে , সূর্যের ভর 1.9891×1030 kg ] । যদি তারকাটি নিজের মহাকর্ষ আকর্ষণ হতে নিজেকে রক্ষা করতে না পারে তাহলে তার পরিণতি কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তর একটু পরেই আলোচনা করছি।

উনিশশো কুড়ির দশকের শেষের দিকে চন্দ্রশেখর এবং রুশ বিজ্ঞানী লেভ ডেভিডোভিচ ল্যান্ডো তারকার ভর নিয়ে কাজ করছিলেন । চন্দ্রশেখর দেখালেন শীতল তারকার ভর যদি সূর্যের ভরের দেড় গুণের চাইতে বেশী হয় তাহলে সেটি নিজেই নিজেকে রক্ষা করতে পারবেনা। এই ভরের সীমাকে চন্দ্রশেখর লিমিট বলা হয়। কিন্তু একসময় চন্দ্রশেখরের শিক্ষক আর্থার এডিংটন চন্দ্র শেখর লিমিটকে মানতে নারাজ হন । চন্দ্রশেখর ছিলেন ব্যাপক অপেক্ষবাদ সম্পর্কে একজন বিশেষজ্ঞ। কথিত আছে তাদের সময়ে তিনজন ব্যক্তি অপেক্ষবাদ খুব ভাল করে বুঝাতেন। সেই তিনজন হলেন আইনস্তাইন , আর্থার এডিংটন এবং চন্দ্রশেখর । চন্দ্রশেখরের গবেষণাকে যখন তারাই শিক্ষক মানতে নারাজ হলেন তখন তিনি এই ক্ষেত্র পরিত্যাগ করেন। তারপর জ্যোতিবিজ্ঞানের অন্যক্ষেত্রে গবেষণা শুরু করেন। কিন্তু ১৯৮৩ সালে তাঁর এই গবেষণার জন্যই তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

একটি তারকার ভর যদি চন্দ্রশেখর সীমার চাইতে কম হয় বা সূর্যের ভরের সমান হয় তাহলে সেই তারকাকে অল্পভর সম্পন্ন তারকা বলে। এরূপ তারকার জ্বালানী ফুরিয়ে গেলে কেন্দ্রে মহাকর্ষজনিত সংকোচনের ফলে প্রচন্ড উত্তাপের সৃষ্টি হয়। এ উত্তাপের ফলে বাইরের এলাকা স্ফীত হয়ে এটি একটি রক্তিম দৈত্যে অর্থাৎ রেড জায়ান্টে পরিণত হয় । এক পর্যায়ে রক্তিম দৈত্যের বাইরের আবরণ কেন্দ্রীয় অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অর্থাৎ তখন তারকাটি সম্ভাব্য অন্তিম দশায় পরিণত হয়। এই অন্তিম দশা বা বাইরের আবরণ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর যে কেন্দ্রিয় অংশ থাকে সেই কেন্দ্রিয় অংশকে হোয়াইট ডোয়ারফ বা শ্বেত চামন বলে। শ্বেত বামন বা হোয়াইট ডোয়ার্ফের ব্যসার্ধ হয় কয়েক হাজার মাইল আর ঘনত্ব হয় প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে কয়েকশ টন। শ্বেত বামনের নিজ পদার্থের ভিতরকার ইলেকট্রনগুলির অন্তর্বর্তী অপবর্জন তত্ত্বভিত্তিক বিকর্ষণই একটি শ্বেত বামনকে রক্ষা করে। প্রথম যে কয়টি এই ধরনের তারকা আবিষ্কার হয়েছিল তার ভিতরে একটি হল সিরিয়াস নামক তারকা । সিরিয়াস রাতের আকাশের উজ্জল তারকা ।

আমাদের সূর্যের জ্বালানী ফুরিয়ে যেতে এখনো প্রায় পাঁটশো কোটি বছরের প্রয়োজন। অর্থাৎ আরো পাঁচশো কোটি বছর পর আমাদের এই সূর্য রক্তিম দৈত্যে , তারপর শ্বেত বামনে পরিণত হতে পারে। কিন্তু লেভ ডেভিডোভিচ ল্যান্ডো তারকার সম্ভাব্য আরো একটি অন্তিম দশার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তিনি দেখিয়েছিলেন কিছু কিছু তারকার ভরের সীমা সূর্যের এক কিংবা দুই গুণের ভিতরে কিন্তু আকারে এরা শ্বেত বামনের চাইতেও ছোট। এই তারকা গুলিকেও রক্ষা করে অপবর্জন তত্ত্বভিত্তিক বিকর্ষণ । কিন্তু এই বিকর্ষণ আন্ত নিউট্রন এবং প্রোটনের তবে আন্ত ইলেকট্রনের নয় । সেজন্যে এগুলোকে বলা হয় নিউট্রন তারকা । সেগুলোর ব্যাসার্ধ হয় মাত্র দশ মাইলের মতো। কিন্তু তাদের ঘনত্ব হয় প্রতি ঘন ইঞ্চিতে কোটি কোটি টন।

কোন তারকার ভর যদি চন্দ্রশেখর লিমিটের চাইতে বেশী হয় তাহলে তার পরিণতি এক পর্যায়ে ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ বিবরে পরিণত হবে। এই কৃষ্ণবিবর বা ব্ল্যাক হোল শব্দাটির উৎপত্তি খুব সম্প্রতি । ১৯৬৯ সালে জন হুইলার নামে একজন আমেরিকান বিজ্ঞানী এই শব্দটি ব্যবহার করেন।

সূযের্র চেয়ে অনেকগুণ বেশী ভরসম্পন্ন তারকাকে বেশী ভরসম্পপ্ন তারকা বলা হয়। এ ধরনের তারকার জ্বালানী ফুরিয়ে গেলে তারকা গুলিকে বিরাট সমস্যায় পড়তে হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে জ্বালানি ফুরিয়ে যাবার পর মহাকষর্ণ জনিত সংকোচন খুব বেশী বৃদ্ধি পায়। ফলে প্রচণ্ড উত্তাপের সৃষ্টি হয় এবং তারকাটি বিস্ফোরিত হয়। একেই বলে সুপার লোভ বিস্ফোরণ । আবার কোন কোন ক্ষেত্রে তারা নিজেদের ভর সীমার ভেতরে নিয়ে আসবার মতো যথেষ্ট পদার্থ পরিত্যাগ করতে সক্ষম হয়। এই পদার্থ পরিত্যাগ করার পর অবশিষ্ট যে ভর থাকে তার মান অনুযায়ী দুই রকম ফল পাওয়া যেতে পারে। ভর যদি দুই সৌরভরের চেয়ে বেশী হয় তাহলে সেটি সাধারণত একটি ব্ল্যাকহোলে পরিণত হবে। এই ব্ল্যাকহোলের আয়তন সসীম কিন্তু ভর প্রায় অসীম । এ কারণে ঘনত্ব, অভিকর্ষজ ত্বরণ মুক্তিবেগ ইত্যাদিও প্রায় অসীম। কৃষ্ণ বিবরের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ এত প্রবল যে কোন বস্তু এর মধ্যে প্রবেশ করলে বা নাগালের মধ্যে আসলে আর বাইরে আসতে পারেনা। এমনকি আলোক কণিকা ফোটন ও এই আকর্ষণ থেকে মুক্ত হতে পারে না। কৃষ্ণ বিবর থেকে নির্গত কোন প্রকার ফোটন বা আলোক রশ্মি বেশি দূর যাওয়ার আগেই কৃষ্ণ বিবরের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ তাকে টেনে পেছনে নিয়ে আসবে।

ঘটনাটি এই রকম- তারকার মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র স্থান কাল আলোক রশ্মির গতিপথের পরিবর্তন করে। অর্থাৎ তারকাটি না থাকলে যে গতিপথ হওয়ার কথা ছিল তার তুলনায় অন্য রকম হয়। যে আলোক শঙ্কুগুলি স্থান কালে তাদের অগ্র ভাগ থেকে নির্গত আলোকের গতিপথ নির্দেশ করে তারকার পৃষ্ঠের কাছাকাছি সেগুলো ভেতরদিকে সামান্য বেঁকে যায়। তারকাটি যেমন ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হতে থাকে তার মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রও ধীরে ধীরে শক্তিশালী হতে থাকে। আর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র যত বেশী শক্তিশালী হবে আলোক রশ্মি ততবেশী বেঁকে যাবে। এর ফলে আলোকের নির্গত হওয়া আরো কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকি আলোক কণিকা ফোটন ও এই আকর্ষণ থেকে মুক্ত হতে পারে না।
-More?

-Facebook/faisalhossain23
Profile Image for Ahmed Atif Abrar.
719 reviews12 followers
November 4, 2019
সমীকরণ একেবারেই না দেওয়াটা ঠিক হয় নি। এতে জিনিসটা আরেকটু জটিল হয়েছে। সমীকরণের সাথে একেবারে অপরিচিত কেউ বইটা বুঝতে পারবে না।
বিষয়গুলো উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞানে আমরা পড়েছি। তার সাথে আরেকটু বিশদ জেনেছি।
উৎসর্গপত্রের মধ্য দিয়ে জানলাম আবু সয়ীদ আয়ুবের মতন সাহিত্যিক জামাল নজরুল ইসলামের মামা ছিলেন!
Profile Image for Koushik Ahammed.
150 reviews12 followers
August 31, 2020
এসএসসি র পর বিজ্ঞান শাখা ছেড়ে ব্যবসায় শাখায় চলে আসি। এ নিয়ে আমার কোন ধরনের আক্ষেপ ছিলনা কোন কালেই। অথচ এই বই সেই আক্ষেপ জাগিয়ে দিয়ে গেল। এতো সহজ করে লেখা বইটা পড়তে পড়তে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছিলাম বুঝতে।

কৃষ্ণ গহ্বর সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণাটা পাওয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞানের মজাদার নানান তথ্য রয়েছে ফাঁকে ফাঁকে।

ফিজিক্স জানা মানুষ জনের এই বই দারুণ লাগতে বাধ্য মনে হয় আমার কাছে।
Profile Image for Jesan.
141 reviews5 followers
May 20, 2021
ছোটদের জন্য লেখক অনেক সহজ ভাষায় কৃষ্ণ বিবর সম্পর্কে ধারনা দিয়েছেন।প্রাথমিক পর্যায় এর পাঠকের জন্য বইটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।
Profile Image for Debashish Chakrabarty.
108 reviews94 followers
April 2, 2019

বিজ্ঞানের তথ্য বহুল বইয়ের বিপদ হল সময়ের সাথে সাথে তার প্রাসঙ্গিকতার হের ফের ঘটে । নিত্যনতুন তত্ত্ব আর পরীক্ষা কিছুদিন আগেকার বোঝাপড়াকেও করে ফেলতে পারে প্রশ্নবিদ্ধ অথবা অনেক ক্ষেত্রে বিস্তৃত । কৃষ্ণ বিবরের মত আপাত কৌতূহল উদ্দীপক কিন্তু জটিল বিষয়কে সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন ড.জামাল নজরুল ইসলাম । ড.ইসলাম ছিলেন একাধারে পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, বিশ্বতত্ত্ববিদ ও অর্থনীতিবিদ । মগ্ন চিত্তে তাকে বীণার তারে সুর তুলতেও দেখা গেছে । পাশ্চাত্যের লোভনীয় কর্মজীবন ফেলে চলে এসেছিলেন বাংলাদেশে । নিভৃতে কাজ করে গেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে । ব্যক্তিগত জীবনে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছেন ফ্রিম্যানডাইসন, রিচার্ডফাইনম্যান, সুব্রহ্মনিয়ামচন্দ্রশেখরএবংস্টিফেন হকিং ছিলেন তার বন্ধু, নোবেল বিজয়ী আবদুস সালাম এসে ঘুরে গেছেন তার চট্টগ্রামের বাড়িতে । যদিও তার অসাধারণ ধীশক্তির সাক্ষ্য হিসেবে এসব কোন কিছুরই উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই । আর এমন ধীশক্তি সম্পন্ন একজন মানুষের মানস দীপ্তির ছটা কিছুটা হলেও ঝরে পড়েছে কৃশকায় এই বইটিতে । নক্ষত্রের জন্ম-মৃত্যু-ক্রমবিবর্তন, এমনকি সংক্ষিপ্ত কিন্তু সবল ভাষায় ব্যাখ্যা করেছেন মহাবিশ্বের অতীত এবং ভবিষ্যৎ । ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করেছেন ভৌত বিজ্ঞানের খুঁটি নাটি । পাশাপাশি তুলে ধরেছেন মহাবিশ্বের বর্তমান আর অন্তিম পরিণতির সাথে কৃষ্ণ বিবরের অবধারিত সম্পর্ক । সবটাই একজন নিষ্ঠাবান বিজ্ঞানীর প্রজ্ঞার ছাপ রেখে । আর শেষটায় এসে অল্প কিছু কথায় প্রকাশ পায় ড.ইসলামের বিশ্ববোধ এবং মানব মনের চিরায়ত কৌতূহল । মনে রাখতে হবে বইটি লেখা হয়েছিল গত শতাব্দীর আশির দশকের গোরার দিকে । নির্দিষ্ট সব স্থানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কথা । যাতে নবীন পাঠক ভুল পথে না চলে যান । দুষ্প্রাপ্য বইখানি পুনঃমুদ্রন করে বাংলা একাডেমী যেমন ধন্যবাদের দাবীদার আবার একই সাথে যাচ্ছেতাই বাঁধাই আর অযৌক্তিক মূল্যনির্ধারণের কারণে নিন্দারও দাবীদার ।
Profile Image for Vendetta .
34 reviews1 follower
July 24, 2018
ক্ষুদ্র পরিসরে কিছুটা জ্ঞানের তৃষ্ণা মিটাবে এই বই। বইয়ের ভাষা অসাধারন।
Displaying 1 - 15 of 15 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.