উত্তর কলকাতার পুরনো পাড়াটা হঠাৎই সুদীপ্তর জীবন থেকে হারিয়ে গেল একদিন। হারিয়ে গেল স্বপ্নের মতো নার্সারি স্কুল। বাসা বদলে সোজা দমদম। আর বদলে যাওয়া স্কুল, শ্যামবাজারে। ঠিক এই সময়টাতেই আগুনে নিশ্বাস ছাড়তে শুরু করেছে শহর। দেয়ালে লেখা হচ্ছে ‘সত্তর দশককে মুক্তির দশকে পরিণত করুন’। সুদীপ্ত বা তার বাবা, বড়দা, বন্ধুরা, প্রায় কেউই নিজেকে দ্রোহাগ্নির এই আঁচ থেকে বাঁচাতে পারেনি অথবা চায়নি। বয়ে চলা ফুটন্ত লাভাস্রোতের মতো সময়। বোমা, গুলি, বন্দুক, এনকাউন্টার, এ্যামবুশ। এখানে ওখানে পড়ে থাকা লাশ। অনেক প্রাণ আর ক্ষয়ক্ষতির বিনিময়ে বিদায় সত্তর। অতঃপর শ্মশানের শান্তি। তবু কোথাও কি জ্বলতেই থাকল ধিকিধিকি, পুনরারম্ভের চাপা আগুন?
সুপ্রিয় চৌধুরীর জন্ম উত্তর কলকাতার সাবেকি পাড়ায়। কৈশোরের অনেকটাই কেটেছে রেললাইন আর উদ্বাস্তু কলোনি ঘেঁষা শহরতলিতে। যৌবন, প্রৌঢ়ত্বের ঠিকানা মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার সীমান্তবর্তী সংখ্যালঘু মহল্লা। পুঁথিগত শিক্ষার গণ্ডি পেরোলেও নানাধরনের পাঠে প্রবল আগ্রহ। শখ: ফুটবল, ফিল্ম আর পশুপাখি পোষা।
দ্রোহের গর্ভে জন্ম নেয়া আগুন ঝরা এক দশকের গল্প বলে‘দ্রোহজ’। সেই দ্রোহেরই সন্তান ‘দ্রোহজ’সুপ্রিয় চৌধুরীর লেখা এক উপন্যাস, যা শুধু একটি রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস নয়, বরং সেই আন্দোলনের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া, ভুলে যাওয়া, উপেক্ষিত এক প্রজন্মের আত্মকথন।
উত্তাল সত্তরের দশকের শেষভাগে ছড়িয়ে পড়েছিল নকশাল আন্দোলনের দাবানল। প্রেসিডেন্সি কলেজ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা সার্টিফিকেট পুড়িয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের মায়া ত্যাগ করে যোগ দিয়েছিলো সেই আন্দোলনে। বিভিন্ন উপন্যাস এবং পত্রিকার অজস্র কলামে ঠাঁই পেয়েছে এই মেধাবী ছেলেগুলোর কথা। ঠিক একইভাবে উপেক্ষিত হয়েছে পাড়া, স্কুল ও কলেজের অখ্যাত স্বপ্নবাজ ছেলেদের কথা। যাদেরকে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীরা ‘লুম্পেন প্রলেতারিয়েত’ বলে অবজ্ঞা করে থাকেন। প্রেসিডেন্সি আর যাদবপুরের পাশে এদের ঠাঁই দিতে বিব্রতবোধ করেন লেখকরা। সেই ফুটসোলজারদের ত্যাগ, আদর্শের প্রতি দৃঢ়বিশ্বাস, চরম পুলিশি নির্যাতনের মুখেও মুখ না খোলা, নিশ্চিত মৃত্যুকে হাসিমুখে আলিঙ্গনের মতো রোমহর্ষক ঘটনার সাবলীল বর্ণনা আছে সুপ্রিয় চৌধুরীর লেখা ‘দ্রোহজ’ উপন্যাসে। ইতিহাসের পাতায় স্থান না পাওয়া ছেলেগুলো বারুদের গন্ধে স্বপ্নজাল বোনার অসম যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নির্ভয়ে। সেই গল্পই লেখক বলে গেছেন সুদীপ্ত নামের এক পঞ্চদশী কিশোরের চোখের ভাষায়।
সুদীপ্ত একদিকে কিশোর বয়সের স্বপ্ন ও বিভ্রমে ভরা, অন্যদিকে তার মধ্যে আছে অচেনা এক প্রাপ্তবয়স্ক ত্যাগের পরিপক্বতা। তার চোখে ফুটে ওঠে প্রতিবাদের প্রতিটি চিহ্ন, আবার মায়ের মুখে ফুটে ওঠে হারানোর শোকের অনন্ত ছায়া।‘দ্রোহজ’ কেবল রক্ত,আগুন আর গোপন রাজনীতির গল্প নয়। ‘দ্রোহজ’ বিশ্বাসের গল্প—যে বিশ্বাস মৃত্যুর চেয়েও বড়। ‘দ্রোহজ’ বন্ধুত্বের গল্প। লেখক অবলীলায় তুলে ধরেছেন নির্মম পুলিশি নির্যাতন, গোপন আস্তানায় লুকিয়ে দিনের পর দিন পার করে রাতভর অপেক্ষার বর্ণনা। আর বলেছেন,সেইসব মুখগুলোর গল্প যারা জানতো তাদের ফিরে আসা আর হবে না, তবুও হাসিমুখে গিয়েছিল মৃত্যুর মিছিলে।
সুপ্রিয় চৌধুরীর ভাষা কোথাও ডকুমেন্টারির মতো সংযত, নিরাবেগ, কোথাও বা আগুনের মতো বিস্ফোরক। পাঠক হিসেবে মনে হয়, আমরা ইতিহাসের পাতা নয়, বরং রক্তমাখা কোনো পুরনো ডায়েরি উল্টে পড়ছে বুঝি। শব্দের গন্ধ মিশে আছে বারুদের সঙ্গে। নকশাল আন্দোলন নিয়ে রোম্যান্টিসিজমের ভারে নুয়ে না পড়ে গতানুগতিক ধারার বাইরে আনপুটডাউনেবল একটা বই লিখেছেন লেখক। বিশেষ করে পুনের চরিত্রটার জন্য হলেও এই বইয়ের পরবর্তী কিস্তি ‘কেতজেল পাখি’ পড়তে ইচ্ছা করবে। পুনে আসলে সেই সমাজের প্রতিনিধি যাকে শুদ্ধাচারীরা ‘লুম্পেন প্রলেতারিয়েত’ বলে দেগে দিতে চায়। স্কুলের মিটিংয়ে প্রতীপদার এহেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুনে বলেছিল,‘শোনো গুরু, তোমাদের এই আগুনের গোলার মতো শক্ত শক্ত কথা আমি বুঝি না, আমি বিশ্বাস করি আমার বন্ধুরা যে লড়াইয়ের সাথে যুক্ত তা কখনোই খারাপ কাজ হতে পারে না। এখন তুমি আময় দলে নাও বা না নাও লড়াই আমি লড়বোই।’সেদিন মিটিংয়ে উপস্থিত সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছিল পুনের কথা। সেই পুনেই পরে হয়ে ওঠে একমেবাদ্বিতীয়ম কমরেড।
‘দ্রোহজ’ শুধু নকশাল আন্দোলনের সেই টালমাটাল সময়ের দলিল নয়, বিস্মৃতির প্রত্নসন্ধান,এক হারানো প্রজন্মের প্রতি নীরব শ্রদ্ধাঞ্জলি। এই উপন্যাস সেই নামহীন তরুণদের আনা প্রভাতের আলোয় দাঁড়িয়ে আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, দ্রোহ কখনো শেষ হয় না, কেবল সময় বদলায়, মুখ বদলায়, কিন্তু প্রশ্নগুলো রয়ে যায় আগের মতোই তীক্ষ্ণ, জ্বলন্ত।
উফ! সত্তর দশকের নকশাল আন্দোলন নিয়ে চমৎকার একটা। টানা দুই দিন এই বইটা আমার সব সময়ের সঙ্গী ছিল। ট্রেনে যেতে পড়েছি, পার্কে বসে পড়েছি এমনকি রক্তদান করতে গিয়ে তাও সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছি বই।
আমি এখন গত দুইমাস ধরে দমদমে আছি, আর বইটির ঘটনা তাও দমদম থেকে শুরু হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন চোখের সামনে সত্তরের নকশাল আন্দোলন দেখছি - এত সুন্দর বর্ণনা। ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সুদীপ্তকে লেখক সত্তর দশকের কলকাতাকে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। স্কুলে পড়া সুদীপ্তর জীবন হঠাৎ করে পরিবর্তন হয়ে গেল। সেই সময়তেই আগুনে নিশ্বাস ছাড়তে শুরু করেছে শহর। দেয়ালে দেয়ালে 'মাকু' দের উদ্দেশ্য দেওয়াল লিখন চলছে। সিপিএম ও 'নাকু' অর্থাৎ নকশালদের উদ্দেশ্য দেওয়া দেওয়াল লিখছে। আস্তে আস্তে এলাকায় দখল। যেখানে সিপিএম ও কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে নকশালদের লাশ আর যেখানে নকশালরা শক্তিশালী সেখানে সিপিএমের লাশ। বোমা, গুলি, বন্দুক, এনকাউন্টার, এ্যামবুশ। মতাদর্শ নিয়ে দলের মধ্যে, নিজেদের মধ্যে ঝামেলা। পুলিশ অত্যাচার। এখানে ওখানে পড়ে থাকা লাশ। অবশেষে চারু মজুমদার গ্রেফতার। অনেক প্রাণ আর ক্ষয়ক্ষতির বিনিময়ে বিদায় সত্তর। তবুও কোথাও কি জ্বলতেই থাকল ধিকিধিকি, পুনরারম্ভের চাপা আগুন?
🍂 নকশাল আন্দোলন ব্যাপারটা নিয়ে কৌতূহল বেশ অনেকদিন থেকেই। বাবার কাছে সেই সময়ের গল্প খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করতাম। বাবা দেওয়ালের পোস্টার, নকশালপন্থীদের লুকিয়ে থাকা, তাদের ধর-পাকড় সবই খাপছাড়া খাপছাড়া করে বলতো। আর এই বাবার খাপছাড়া কথাগুলোই কৌতূহল কে তুলে দিল তুঙ্গে। প্রথম নকশাল নিয়ে পড়লাম 'কালবেলা' উপন্যাসে।
🍂 ২০২০ তে আমার পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলির মধ্যে দ্রোহজ নিজের স্থান নিয়ে নিয়েছে ইতিমধ্যেই। সম্পূর্ণ নকশাল আন্দোলনকে পটভূমি করে অসাধারণ দক্ষতায় লেখক গড়ে তুলেছেন সেই সময়ের যুব শক্তিদের জীবনকাহিনী। এ এক অদ্ভূত সময়। আগুনের গোলার নাম 'নকশাল আন্দোলন' জেনেও হাজারে হাজারে তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী সেই আগুনেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে। শুধুমাত্র নিজেদের পড়াশুনা, বা মূল্যবান পেশা নয় এমনকি নিজেদের জীবনও তুচ্ছ করে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। কেউ কাউকে আটকাচ্ছে না।
🍂 সেরকমই উপন্যাসের মূল চরিত্র সুদীপ্তকেও আটকায়নি কেউ। বাবা বামপন্থী বহুকাল, পার্টির জন্য চাকরী ছেড়েছেন অনায়াসে। মাও বামপন্থী, তবে চাকরী করে সংসার চালানোর দায়িত্ব ওনার কাঁধেই। সাথে আছে ছোট বোন। এছাড়া যেঠুর পরিবার। যেঠুর ছেলে অর্থাৎ সুদীপ্তর দাদা মৃন্ময়ও নকশাল। স্কুলে পড়তে পড়তেই রাজনীতির আগ্নেয়গিরিতে ঝাঁপ দেয় সুদীপ্ত। এরপর যখন পার্টির বিভেদ হল তখন সুদীপ্তর বাবাও সমর্থন করলেন নকশালপন্থীদের, পার্টি ছাড়লেন।
🍂 উত্তর কলকাতার পুরোনো পাড়া চোখের পলকেই বদলে গেল সুদীপ্তর সামনে, সেই উত্তপ্ত সময়ে। বদলালো তাদের পরিবারের দশাও। তবু তাদের আটকালো না কেউ। সুদীপ্ত, তার বাবা, বড়দা, বন্ধুরা, প্রায় কেউই নিজেকে দ্রোহাগ্নির এই আঁচ থেকে বাঁচাতে পারেনি অথবা চায়নি। বয়ে চলা ফুটন্ত লাভা স্রোতের মতো সময়। বোমা, গুলি, বন্দুক, এনকাউন্টার, এ্যামবুশ এটাই ওদের জীবন হয়ে উঠলো। এখানে ওখানে লাশ। গুলিতে ঝাঁঝরা বড়দা, তবু শেষ নিঃশ্বাসে 'ইনকিলাব জিন্দাবাদ'। প্রাণের চেয়েও প্রিয় বন্ধুদের গ্রেফতার, অমানুষিক অত্যাচার কিংবা রাস্তায় পড়ে থাকা নিথর দেহ তখনও জানান দিচ্ছে, "বিপ্লবের কোনো শেষ নেই"। জ��লের অমানুষিক অত্যাচার ভোগ করে যখন মুক্তি পেলো সুদীপ্ত তখনও আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে আদিবাসী কোনো এক গ্রামে, আর যে জ্বালিয়ে রেখেছে সে এই ফুটবল মাঠ ছেড়ে বেরোনোর কোনো ইচ্ছা নিয়ে আসেনি।
🍂 বইটিতে সুদীপ্তর চরিত্রের থেকেও পুনের চরিত্রটা ছাপ ফেলে যাওয়ার মতো। এছাড়াও, রুস্তম চাচার চরিত্র আমি চিরকাল মনে রাখবো। হয়তো রুস্তম চাচার চরিত্রটা ছিল বলেই এই বই অন্য নকশাল বইদের থেকে এত আলাদা। এখানে কোনো একটি আদর্শকেই মূল হিসেবে দেখানো হয়নি বরং ওই সময়ে গড়ে ওঠা প্রত্যেকটি আদর্শ এই বইতে আছে, যা সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য লেখক প্রশংসার দাবী রাখেন। যেমন, সুদীপ্তর বাবা নকশালপন্থাকে বেছে নিলেও, নকশালপন্থায় গুণ্ডা বদমাশদের দীক্ষিত করার এই আদর্শ মেনে নিতে পারেননি। তেমনি সুদীপ্তর দাদা এবং সুদীপ্ত দু'জনেই এ বিষয়ে সুদীপ্তর বাবার বিরুদ্ধেই যায়। আবার অন্যদিকে রুস্তম চাচা যে কিনা পুরোনো বামপন্থী পার্টিতেই বিরাজমান। যিনি কোনোদিন নকশালপন্থার আদর্শ কে গ্রহণ করেননি, তিনি আশ্রয় দিলেন এক নকশালপন্থীকে লুকিয়ে থাকার জন্য, যুক্তি হিসেবে বললেন, "বন্ধু শত্রু বিভেদ করবো? কেন? দিনের শেষে ও লাল ঝান্ডা ধরে, আমিও তাই। ওরা ঘর ছেড়েছিলোও তো ইনকিলাব বলেই। তাই ওকে বাঁচানো আমার দায়িত্ব।" তেমনই বাচ্চু দা, প্রভাত দা এবং বাবু দা যারা আদতে কংগ্রেস কর্মী অথচ শুধুমাত্র একসময় তাদের একজনের পিসিকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর সৌজন্যে তারা নিজেদের সমস্ত রাজনীতি ভুলে এক নকশালপন্থীকে ঠাঁই দিলো লুকিয়ে থাকার জন্য। এ হেন অনেক উদাহরণের জন্যই এই বই ছাপ ছেড়ে যায়।
🍂এছাড়াও এত সুন্দর করে যত্ন নিয়ে লেখক লিখেছেন যে পড়তে পড়তে মনে হতেই পারে যে লেখকই আসলে সুদীপ্ত (এটা যদি সত্যিও হয় আমি আশ্চর্য হবো না)। এখানে কিছু ঘটনা, চরিত্রের নাম বদলে সত্যি ঘটনাই রেখেছেন লেখক, যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এই যেমন, কবি-সাংবাদিক সরোজ দত্তকে আরিয়ান ক্লাবে ময়দানে খুন করে রঞ্জিত গুপ্তর পুলিশবাহিনী, ৭১সালে, যা দেখে ফেলেন স্বয়ং মহানায়ক উত্তম কুমার। এই ঘটনা এখানে নাম পরিবর্তন করে সম্পূর্ণটাই আছে। এমনই আরো অনেক সত্য ঘটনাও নাম বদলে রয়েছে এখানে।
🍂 নকশাল আন্দোলন নিয়ে পড়ার কৌতূহল না থাকলেও এই বই যে কারুর মনে ছাপ ছেড়ে যেতে বাধ্য। শুনেছি, এর একটি দ্বিতীয় পার্টও আছে। সেটিও পড়ব ঠিক করেছি।
সত্তরের দশকের কলকাতা তখন নকশালপন্থীদের দখলে.. আক্রমণ, পাল্টা-আক্রমণে টালমাটাল অবস্থা চারিদিকে.. এই চরম আদর্শগত দ্বন্ধের আবহেই বেড়ে ওঠে এই উপন্যাসের নায়ক সুদীপ্ত.. পাল্টানো এই সময়টা গলার কাছে দলা পাকিয়ে আসে কিশোর ছাত্র সুদীপ্তর.. একসাথে বড়ো হওয়া বন্ধুদের অচেনা চাউনি, স্কুলব্যাগে বইয়ের বদলে বোমা, পরীক্ষার বদলে প্ল্যাকার্ড, পুলিশের তাড়া, আত্মগোপন, প্রিয়জনের মৃত্যু- না চাইতেই যেন এসবের সাক্ষী হয়ে যেতে হয় সুদীপ্তকে.. নিজের অজান্তেই যেন এই সমস্তকিছু অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে যায় তার হঠাৎ করে পাল্টে যাওয়া জীবনের সঙ্গে.. অনিচ্ছাকৃত জড়িয়ে যাওয়া এই জীবনের দমবন্ধ করা ফাঁস থেকে আদৌ কি মুক্তি পেলো সুদীপ্ত? লেখক সুপ্রিয় চৌধুরীর কলমে ধরা দেয় শহর কলকাতার এক অচেনা ছবি.. যে ছবিতে সত্তরের কলকাতা হয়ে ওঠে নকশাল কলকাতা...