Satyajit Ray (Bengali: সত্যজিৎ রায়) was an Indian filmmaker and author of Bengali fiction and regarded as one of the greatest auteurs of world cinema. Ray was born in the city of Calcutta into a Bengali family prominent in the world of arts and literature. Starting his career as a commercial artist, Ray was drawn into independent filmmaking after meeting French filmmaker Jean Renoir and watching Vittorio De Sica's Italian neorealist 1948 film, Bicycle Thieves.
Ray directed 36 films, including feature films, documentaries and shorts. He was also a fiction writer, publisher, illustrator, calligrapher, graphic designer and film critic. He authored several short stories and novels, primarily aimed at children and adolescents.
Ray's first film, Pather Panchali (1955), won eleven international prizes, including Best Human Documentary at the Cannes Film Festival. This film, Aparajito (1956) and Apur Sansar (1959) form The Apu Trilogy. Ray did the scripting, casting, scoring, and editing, and designed his own credit titles and publicity material. Ray received many major awards in his career, including 32 Indian National Film Awards, a number of awards at international film festivals and award ceremonies, and an Academy Award in 1992. The Government of India honoured him with the Bharat Ratna in 1992.
Early Life and Background: Ray's grandfather, Upendrakishore Ray Chowdhury was a writer, illustrator, philosopher, publisher, amateur astronomer and a leader of the Brahmo Samaj, a religious and social movement in nineteenth century Bengal. Sukumar Ray, Upendrakishore's son and father of Satyajit, was a pioneering Bengali author and poet of nonsense rhyme and children's literature, an illustrator and a critic. Ray was born to Sukumar and Suprabha Ray in Calcutta.
Ray completed his B.A. (Hons.) in Economics at Presidency College of the University of Calcutta, though his interest was always in Fine Arts. In 1940, he went to study in Santiniketan where Ray came to appreciate Oriental Art. In 1949, Ray married Bijoya Das and the couple had a son, Sandip ray, who is now a famous film director.
Literary Works: Ray created two of the most famous fictional characters ever in Bengali children's literature—Feluda, a sleuth in Holmesian tradition, and Professor Shonku, a genius scientist. Ray also wrote many short stories mostly centered on Macabre, Thriller and Paranormal which were published as collections of 12 stories. Ray wrote an autobiography about his childhood years, Jakhan Choto Chilam (1982). He also wrote essays on film, published as the collections: Our Films, Their Films (1976), Bishoy Chalachchitra (1976), and Ekei Bole Shooting (1979).
Awards, Honors and Recognitions: Ray received many awards, including 32 National Film Awards by the Government of India. At the Moscow Film Festival in 1979, he was awarded for the contribution to cinema. At the Berlin Film Festival, he was one of only three to win the Silver Bear for Best Director more than once and holds the record for the most Golden Bear nominations, with seven. At the Venice Film Festival, he won a Golden Lion for Aparajito(1956), and awarded the Golden Lion Honorary Award in 1982. In 1992 he was posthumously awarded the Akira Kurosawa Award for Lifetime Achievement in Directing at the San Francisco International Film Festival.
ভেবে দেখলে একটা কথা সত্যি। যে-লেখাগুলোর জন্যে সত্যজিৎ পরবর্তীকালে লেখক হিসেবে খ্যাতি এবং জনপ্রিয়তালাভ করেছিলেন, ফেলুদা কিংবা প্রোফেসর শঙ্কু কিংবা তাঁর ছোটোগল্পগুলো, এই সবকিছুই তিনি লিখেছিলেন প্রয়োজনের খাতিরে। পারিবারিক পত্রিকা "সন্দেশ" যখন পুনরায় বের হওয়া শুরু হয়, সেই পত্রিকার পৃষ্ঠা ভরাবার উদ্দেশ্যে রায়পরিবারের অনেক সদস্যকেই দুহাত খুলে লিখতে হয়েছিলো। প্রধান-সম্পাদক সত্যজিৎকে একটু বেশিই লিখতে হয়েছিলো। আরো পরে, তাঁর স্ত্রীর আত্মজীবনী "আমাদের কথা"-তে দেখতে পাই সত্যজিতের অকপট স্বীকারোক্তি : সিনেমা থেকে উপার্জন নয়, তাঁদের সংসার চলতো সত্যজিতের লেখা বইগুলোর রয়ালটির টাকায়।
ভেবে দেখলে, তাঁর লেখা প্রবন্ধগুলো কিন্তু পুরোপুরি এই গোত্রের নয়। অর্থাৎ গল্প-উপন্যাসের মতো ফরমায়েশি নয়। সিনেমা (এবং পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সংগীত) ছিলো সত্যজিতের সবচেয়ে আগ্রহের বিষয়। অথচ সিনেমা বিষয়ে খুব বেশি লেখার সুযোগ তিনি পাননি। সিনেমা নির্মাণ করতেন সৃজনশীল সৃষ্টির উদ্দীপনায়। গল্প লিখতেন কিছুটা কর্তব্যের ডাকে, কিছুটা জীবিকার প্রয়োজনে। গুরুগম্ভীর সিরিয়াস প্রবন্ধ লেখার সময় কই? কিন্তু সত্যজিতের সৃষ্টিভাণ্ডারের দিকে চোখ বোলালে আমরা টের পাবো, খুব সামান্য কোনো কাজে হাত দিলেও তিনি সেই কাজটা দায়সারাভাবে করতেন না। "দায়সারা" শব্দটা তাঁর অভিধানে ছিলোই না। উদাহরণস্বরূপ, অনামা অখ্যাত "শারদীয় সোভিয়েত বিপ্লব পরিচয়" নামের পত্রিকাতে তিনি যখন "সোভিয়েত চলচ্চিত্র" নামের প্রবন্ধটি লিখেছেন, নিজের অভিজ্ঞানের পুরোটা ঢেলে দিয়েছেন। অথচ এই প্রবন্ধটি তাঁকে পরিচিতি দ্যায়নি, পয়সা দ্যায়নি, কিছুই দ্যায়নি।
ঠিক এই কারণেই সত্যজিতের প্রবন্ধগুলো আমার কাছে একটা বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। অল্পবয়েসে "বিষয় চলচ্চিত্র" পড়েছিলাম। সিনেমার তখন কিছুই বুঝতাম না (এখনও বুঝিনা যদিও)। কিন্তু জটিল বিষয় নিয়ে যিনি ইচ্ছে করলেই পাণ্ডিত্য ফলাতে পারতেন, লম্বা লম্বা তত্ত্বকথা লিখতে পারতেন সহজেই, সেই মানুষটা সযত্নে পরিহার করেছেন পণ্ডিতি করার লোভ। সারাজীবন। আজীবন। তাই "চলচ্চিত্রের সংলাপ প্রসঙ্গে" নামক মাত্র দুইপৃষ্ঠার রচনাতে তিনি আমার মতো গণ্ডমূর্খকে এমন অনেককিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন যেটা হয়তো এই বিষয়ের একটা গোটা বই পড়লেও আমি বুঝতে পারতাম না। "সংলাপ যদি স্বাভাবিক না হয় তাহলে অভিনয় স্বাভাবিক হওয়া মুশকিল"— হঠাৎ শুনতে খুব সামান্য মনে হলেও, সিনেমার নির্মাণগত দিকটা নিয়ে যারা বিন্দুমাত্রও আগ্রহী, তারা এই কথাটার মূল্য বুঝতে পারবেন! এরকম মূল্যবান উদাহরণ আমি ভুরি ভুরি দিয়ে যেতে পারি।
অথচ মানুষটা একটু সময় নিয়ে, একটু যত্ন নিয়ে, একটু আরাম করে, প্রবন্ধ লেখার সুযোগ পেলেন না। এটা একটা বড় আফসোস। তাঁর প্রবন্ধগুলো পড়লেই বোঝা যায়, হাজাররকম কাজের ফাঁকে চটজলদি সময় বের করে নিয়ে লেখা হয়েছে সেগুলো। তাই সিংহভাগ প্রবন্ধই দৈর্ঘ্যে যৎসামান্য। প্রবন্ধের ভাষাতে যদিও সত্যজিতের ট্রেডমার্ক সহজতা এবং মিতবাচনের চিহ্ন আছে। প্রতিটা রচনাতেই কিছু-না-কিছু নতুন অন্তর্দৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়। এমনকি তাঁর নিজের তৈরি সিনেমাগুলো নিয়ে ছোটো ছোটো যে লেখাগুলো লিখেছেন, সেখানেও তিনি পাঠকের সময় ফালতু নষ্ট করেননি। নতুন কোনো আঙ্গিকে চিনিয়েছেন তাঁর চিরচেনা ছবিকে। "অপুর সংসার" তৈরির সময় অপু চরিত্র এবং অপু-অপর্ণার পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে দেড়পৃষ্ঠার একটা নোট লিখে দিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে। এই নোটটি যেন সত্যজিতের পুরো জীবনকে, পুরো প্রতিভাকে, পুরো মানুষটাকে, এক লহমায় চিনিয়ে দ্যায়। সহজ, মিতবাক, স্পষ্ট, প্রাঞ্জল, কিন্তু চিন্তার গভীরতায় ও বক্তব্যের বিশ্লেষণে ভীষণভাবে উদ্দীপ্ত। অনন্য!
তাঁর প্রবন্ধ নিয়ে আরো অনেক কথা বলে ফেলা যায়। আমার বিশেষভাবে ভালোলাগা প্রবন্ধগুলো নিয়ে আরো কিছু কথা বলতে ইচ্ছে করে। তাঁকে নিয়ে আমার কথার শেষ নেই। চারশোর কিছু বেশি পৃষ্ঠার এই বইটিতে তাঁর লেখা শুধু বাংলা প্রবন্ধগুলোই স্থান পেয়েছে। তাঁর ইংরিজি মৌলিক প্রবন্ধগুলো, যা আপাতত দুটো আলাদা আলাদা বইতে সংকলিত হয়েছে, Our Films, Their Films এবং Deep Focus— সেগুলোও অসামান্য, অসাধারণ— বলাই বাহুল্য! ইংরিজি এবং বাংলা এই প্রবন্ধগুলোর মধ্যে দিয়ে সত্যজিতের একটা ভিন্ন, অপরিচিত রূপ আমাদের সামনে প্রকাশিত হয়। একজন চিন্তাশীল সত্যজিৎ। ভাবুক সত্যজিৎ। যে-বিষয়টা আমরা সবচেয়ে ভালোবাসি, আমাদের প্রাণের সবচেয়ে কাছাকাছি, সেই বিষয়ে কথা বললেই তো সবচেয়ে ভালো চিনতে পারা যায় আমাদের, তাইনা?
একেক সময় মনে হয় যদি সময় পাই, অবকাশ আসে, তখন শুধু বাখ মোৎজার্ট বেটোফেন শুনবো!
মাত্রই "অপুর পাঁচালি " পড়েছি। এখানেও বইয়ের প্রথমার্ধ জুড়ে বারবার ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে পথের পাঁচালির গল্প আসায় বিরক্ত হতে হয়েছে। সত্যজিৎ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপলক্ষ্যে প্রবন্ধগুলো লিখেছেন বলে এই পুনরাবৃত্তি। কিন্তু সম্পাদনা করার সময় এ ব্যাপারে খেয়াল করা যেতো। বইয়ের এই একটিই নেতিবাচক দিক। সত্যজিৎ রায় প্রাবন্ধিক হিসেবে নির্মোহ, মিতবাক ও স্পষ্টভাষী। বাড়তি বুলি কপচানো নেই, সমালোচনা করতেও ঢাকঢাক গুড়গুড় নেই - প্রতিটা লেখার মধ্যে যত্নের ছাপ উপস্থিত। চলচ্চিত্র বিষয়ে জানতে চাইলে তার লেখা অবশ্যপাঠ্য। খুবই সহজ ভাষায় চলচ্চিত্রের খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন সত্যজিৎ। বইতে আমার সবচেয়ে পছন্দের প্রবন্ধ "রবীন্দ্রসংগীতে ভাববার কথা।" রবীন্দ্রসংগীত ও সংগীত বিষয়ে লেখকের জ্ঞানের পরিধি সমীহ জাগায়।
একটাই আফসোস, কর্মব্যস্ত এই মানুষটি প্রবন্ধ লেখার খুব বেশি সময় ও সুযোগ পাননি। অথচ তার লেখা পড়লে বোঝা যায়, বিবিধ বিষয়ে কতো চমৎকারভাবে লিখতে পারতেন তিনি!
চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে, গল্পকার হিসেবে কিংবা ছবি আঁকিয়ে হিসেবেও সত্যজিতের যে খ্যাতি আছে, তার কাছে প্রাবন্ধিক সত্যজিতের কথা মনেই আসে না। কিন্তু, তার প্রবন্ধ অত্যন্ত সুপাঠ্য ও সুলিখিত।
এই সংকলনে যেসব প্রবন্ধ জায়গা পেয়েছে তার বেশিরভাগই সিনেমা সম্পর্কিত। বিষয় চলচ্চিত্র, একেই বলে শুটিং পড়ে ফেলার কারণে একেবারে নতুন করে পড়ার সুযোগ খুব বেশি যে পাওয়া গেল তা নয়।
সঙ্গীত বিষয়ে যে অল্প কয়েকটি প্রবন্ধ আছে সেগুলো পড়তে গিয়ে আক্ষেপ হলো এই ভেবে যে, সত্যজিৎ যদি আরও নানা বিষয়ে লেখার সুযোগ পেতেন তবে আরও মহামূল্যবান কত লেখা জন্ম দিতে পারতেন।
'বিষয় চলচ্চিত্র' আর 'একেই বলে শুটিং' বই দুটোর লেখাগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সত্যজিৎ রায়ের বহু ছোট/বড় প্রবন্ধ (যেগুল��� আগে গ্রন্থভুক্ত হয়নি)। সত্যজিৎ রায়ের লেখনী, জীবনদর্শন আর সিনেমা ভাবনা, কোনোটারই তুলনা পাওয়া মুশকিল, সমালোচনা অনেক দূরের কথা। অতএব বইটা অবশ্যপাঠ্য। যদিও সম্পাদনা আরেকটু ভালো হতে পারতো... কয়েকটা লেখার একটু প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যা প্রয়োজন ছিলো, কয়েকটা লেখার ক্রমিক বিন্যাস একটু খাপছাড়া লাগলো। আর ৪০০ পাতার বইয়ে গোটাকয়েক ছবি হলে মন্দ হতনা।
সিনেমা, চিত্রনাট্য, শুটিং, গান নিয়ে সত্যজিৎ রায়ের ভাষায় চমৎকার সুখপাঠ্য সব প্রবন্ধের সংকলন। ভাবলে অবাক লাগে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মত এত বড় একটা ঘটনা এরকম একজন সৃষ্টিশীল মানুষের উপরে কোনো ছাপ ফেলেনি। কেন ???
মুভি, চলচ্চিত্র, সিনেমা, ছবি, বই- একেকজন একেক নামে ডাকে। কিন্তু পর্দায় আবেদন একই- হোক সেটা ছোট পর্দা কিংবা বড়। আমরা পর্দায় অভিনেতা, অভিনেত্রীদের অভিনয় দেখে আপ্লূত হই; তাঁদের সাথে একাত্মবোধ করি। কিন্তু একটা সিনেমার পিছনের গল্প জানতে কয়জনেরই বা আগ্রহ হয়।
১৯৫৫ সালে পথের পাঁচালী সিনেমার মাধ্যমে সত্যজিৎ রায় বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে এক নতুন ধারা প্রণয়ন করেন। কিছু অপেশাদার আর্টিস্ট, প্রায় অপেশাদার টেকনিশিয়ান, সাথে প্রচুর সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করলেন সত্যজিৎ রায়। তাঁর এই ছবিটি দেশ-বিদেশে ভূয়সী প্রশংসা পায়। এরপরেই তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ফুল টাইম সিনেমার জগতে চলে এলেন। পরিচালক হিসেবে প্রায় চার দশকের অভিজ্ঞতার কথা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লিখেছেন। সেগুলোর সংগ্রহ নিয়েই প্রকাশিত বই প্রবন্ধ সংগ্রহ।
সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এর বাস্তবধর্মিতা। এমনকি যেখানে মেকাপ ছাড়া অভিনয় কল্পনাও করা যায় না সেখানেও তিনি উল্টোপথে হাঁটলেন। তাঁর সিনেমার বড় একটা অংশ জুড়ে অপেশাদার আর্টিস্টদের প্রাধান্য রয়েছে। এজন্যই যখন নায়ক সিনেমায় প্রথমবারের মতো উত্তম কুমারের সঙ্গে কাজ করলেন তখনও অনেক সমালোচনা হয়েছিল। তবে সত্যজিৎ রায় সে সমালোচনার মোক্ষম জবাবও দিয়েছিলেন।
সমালোচনার প্রসঙ্গে চারুলতা'র কথা বলা যায়। রবীন্দ্রনাথের নষ্টনীড় গল্প অবলম্বনে এই সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৬৪ সালে। তখন এ নিয়ে পরিচয়-এ একটি সমালোচনা বের হয়। সত্যজিৎ রায় এর যৌক্তিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জবাব দিয়েছিলেন বিশাল এক প্রবন্ধ লিখে। সেখানে তিনি গল্প থেকে সিনেমা বানানোর চ্যালেঞ্জ এবং তা থেকে উত্তরণের বিষয়ে বিশদে আলোচনা করেন। সেই সাথে গল্প থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে সিনেমায় কী কী পরিবর্তন এনেছেন এবং আনতে বাধ্য হয়েছেন তাও বলেন। যেকোনো চলচ্চিত্র বোদ্ধাই বেশ ভালো করেই জানেন যে গল্প থেকে সিনেমা বানানোর ক্ষেত্রে গল্পের প্লটে অনেক পরিবর্তন আনতেই হয় সিনেমার খাতিরেই, বরং সিনেমাটি যথার্থভাবে হৃদয়গ্রাহী হলো কি না তাই মূখ্য।
এছাড়াও সিনেমায় রঙের ব্যবহার, আবহসংগীত, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো, ক্যামেরা, চিত্রনাট্য, দর্শকের মনোজগৎ, এবং তৎকালীন বাংলা সিনেমার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও বিশ্বচলচ্চিত্র সম্পর্কে লিখিত প্রবন্ধগুলো পড়লেই বুঝা যায় সত্যজিৎ রায় কত বড় মাপের পরিচালক। এছাড়াও বিভিন্ন প্রবন্ধে তাঁর সংগীত জ্ঞানের পরিচয় পাওয়া যায়। মোট পাঁচটি ভাগে বিভক্ত প্রবন্ধ সংগ্রহ বইতে একেই বলে শুটিং এবং বিষয় চলচ্চিত্র বইদুটির সব প্রবন্ধই স্থান পেয়েছে। বইটি পড়ার আগে সত্যজিৎ রায়ের মাত্র একটা সিনেমা দেখেছিলাম, পথের পাঁচালী। কিন্তু বই পড়তে পড়তেই চারুলতা, মহানগর, নায়ক, আগন্তুকসহ বেশ কিছু সিনেমা দেখে ফেলি! সব মিলিয়ে ফেলুদা আর শঙ্কুর বাইরে এক নতুন সত্যজিতের সাথে পরিচয় হলো।
সেই গত বছর শতাব্দী আপু এই বইয়ের খোঁজ দিয়েছিলেন। কয়েকটা লাইব্রেরি ঘুরেফিরে বই না পেয়ে চলে এসেছিলাম। রিসেন্টলি সত্যজিতের অপুর পাঁচালী পড়ে মুগ্ধ হয়ে যাই এবং প্রবন্ধ সংগ্রহও কালেক্ট করে ফেলি। প্রসঙ্গত আরেকটা কথা বলা যায়। প্রবন্ধ সংগ্রহ পড়ার পরেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা মানিকদার সঙ্গে পড়ি। এই বইতে পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে কিভাবে একজন গুণী শিল্পীর জন্ম হলো তার অসাধারণ স্মৃতিচারণায় মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই!
. প্রবন্ধ সংগ্রহ সত্যজিৎ রায় আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড প্রথম সংস্করণ ২০১৫; ৬০০ রুপি।
আমরা যারা কিছুমাত্র সত্যজিৎ পড়েছি তারা সকলেই জানি তিনি গল্প উপন্যাস লেখা শুরু করেন সন্দেশের পুনঃপ্রকাশনের প্রয়োজনে, তখন তাঁর বয়স প্রায় চল্লিশ। তিনি নিজেকে কোনোদিন সাহিত্যিক হিসেবে পরিচয় দেন নি। এমনকি বই লিখে যে পয়সা পাওয়া যেতে পারে তা তিনি বিশ্বাস করতেন না। তার প্রথম শঙ্কুর গল্প সন্দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও তার লেখনীর আভাস পাওয়া যায় তারও আগে লেখা সিনেমা বিষয়ক প্রবন্ধ থেকে। পরে অবশ্য তিনি অগণিত প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস লিখেছেন।
সংগ্রহ মাত্রেই সমগ্র নয়, তাই সত্যজিৎ রায়ের লেখা সব কটি প্রবন্ধ এখানে স্থান পায় নি। এই বইতে নানান সময়ে নানান ছবি করার সময় হাসি দুঃখ কষ্ট মেশানো সুন্দর বেশ কয়েক অভিজ্ঞতার কথা যেমন ফুটে উঠেছে তেমনি রয়েছে বেশ কয়েক সমলাচনার উত্তর অথবা প্রতিসমালোচনা। আমার সব থেকে ভালো লেগেছে যেখানে বহু আন্তর্জাতিক ছবির চুলচেরা বিশ্লেষণ করে এক একটি শটের মাধুর্য বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমি ইদানিংকালে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ছবি দেখেছি এবং তার সাথে তার কথাগুলির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছি। তিনি একাধারে যেমন হলিউডের টেকনিকের প্রশংসা করেছেন তেমনি ইউরোপিয়ান ছবিগুলোর অভিনবত্ব তুলে ধরেছেন।
বইয়ের দ্বিতীয় অংশে নানান মনীষীদের স্মরণে তিনি কিছু কথা লিখেছেন। তার মধ্যে যেমন রয়েছে তার পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর কাজের ব্যাপারে তার উৎসাহের কথা, তেমনি রয়েছে শান্তিনিকেতনে তার শিক্ষক বিনোদবিহারি মুখোপাধ্যায়ের নানান খুঁটিনাটি আলাপচারিতার কথা। আমি বার বার পড়তে পড়তে অবাক হয়ে গেছি একজন মানুষ কি করে সংগীত, চিত্রকলা, রচনা, চলচ্চিত্র সমস্তদিকে সমানভাবে বিচরণ করেন। একটি রবীন্দ্রসংগীতের আলোচনা রয়েছে বেশ খানিকটা জুড়ে কিন্তু আমি নিতান্ত তালজ্ঞানহীন হওয়ার তার রসাস্বাদন আমার পক্ষে সম্ভব হয় নি। তার লেখায় তিনি তার ছবির বাণিজ্যিক বিফলতার কথা জোর গলায় বলেছেন। তারপরে তিনি ভালো চলবে এমন ছবি করতে চেয়েছেন, কিন্তু কোনোটাই তার ভাবনার থেকে পৃথক হয়ে যায় নি। আদ্যন্ত তার লেখায় কখনো হতাশা খুঁজে পাইনি, তিনি জানেন এই পরিবেশ অনুকূল নয়। তবু তিনি আশা করছেন এর নিশ্চয় পরিবর্তন হবে। তিনি সামগ্রিকভাবে আমাদের দেশের তথা বাংলার সিনেমার জগতে আমূল পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। ইউরোপিয়ান নিউ ওয়েভ বা নিও রিয়ালিজমকে আমাদের ঘরে নিয়ে এসে তিনি দেখিয়েছিলেন সিনেমা মানেই অতিরঞ্জন নয়, পেশাদারি অভিনেতা কিংবা স্টারডম নয়। সিনেমা জীবনেরই এক প্রতিবিম্ব, এক রীতির 'সিরিয়াস আর���ট'।
Ei boita tader jonyo jara cinema bhalobashe. Satyajit Ray osamanyo bohumukhi protibhar odhikari holeo gota dunia take chenen ek kinbodonti porichalok hisebe, ebong ei boi sei porichalok o cholocchitro somalochok Satyajiter kichu probondher sonkolon. Echarao ache shooting cholakalin prochur mojar mojar ghotona. Reveiw ami debo na ete, khali onekkotar modhye duto ghotana dilam ja amake mugdho koreche.
1. Porichalok Godard cholocchitrer sontonpontha guli bhangte bhalobasten. Orthabhaber jonyo tini sarboprothom Trolley ba Track shot er badole Hadheld Camera byabohar koren. Echara scene transition er jonyo muloto agekar dine dissolve technique byabohar kora hoto jar jonyo film chemical lab e pathano hoto ja chilo byaysapekkho. Tini sekhane prothom suchona koren Jump Cut er.
2. Cinema shoot korar somoy katha record korar jonyo ekhonkar dine Boom Mike (Lomba Donder upor lagano ekti microphone) byabohar kora hoi. Joy Baba Felunath e Kashir golite dur theke shooting korte giye porichalok porlen somosyay, Shobdo jini record korchen tini chole aschen shot e. Boom Mike sei samoy chilona, Kintu songlap to record korte lagbei jate bhobishyot e lip miliye dub kora jai. Tai Santhosh Duttar shantiniketani tholer modhye dhukiye deowa holo tape recorder ebong tatei record holo songlap.
সত্যজিৎ রায়কে সম্ভবত অনেকখানিই জানা গিয়েছে এই বইতে। তার জীবনদর্শন, সিনেমা ভাবনা চমৎকার উঠে এসেছে একের পর এক প্রবন্ধতে। সাধারণত যেটা হয় কেউ চলচ্চিত্রের সমালোচনা করলে তাকে জবাবটা অনেকসময়ই ঠিকমত দিতে পারেন না পরিচালক। কিন্তু সত্যজিৎ এখানেও অনন্য। তিনি একেবারে হাতে কলমে সমালোচনার জবাব দিয়েছেন। বোঝাই যায় তিনি কী পরিমাণ তথ্য আর জ্ঞান রাখেন নিজের কাজ এবং আশেপাশের পরিবেশ সম্পর্কে।
যারা সিনেমার কাজ সম্পর্কে হাতে কলমে কিছু জানতে চায় তাঁদের জন্য এই বই অবশ্য পাঠ্য। তিনি অনেকগুলো প্রবন্ধেই ক্যামেরার কাজ, পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গী, শিল্পের গুণগত মান এসব নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেছেন।
আর সবচেয়ে স্বস্তির বিষয় যেটা সেটা হলো সত্যজিতের লেখনী। সুখপাঠ্য যাকে বলা যায়।