চ্যাপলিন কতটুকু বোঝেন তাতে আমার কোন আগ্রহ নেই। তিনি কিভাবে অনুভব করেন তাতেই আমি আগ্রহী। যখন তিনি কোন অনুপ্রেরণার আওতায় যে ঘটনা অনুভব করেন, তাঁর এক সারি চিত্র প্রতিমা কল্পনায় দেখেন, হাস্যরসের মাধ্যমে অনুভূত ধারণাকে যখন কমিক পরিস্থিতি ও কৌশলের মধ্যে রূপ দেন, তখন তিনি কীভাবে তাকান আর দেখেন, তাতেই আমার আগ্রহ। কোন চোখে প্রথিবীর দিকে তাকালে চ্যাপলিন তাকে যেভাবে দেখেছেন সেভাবেই দেখা যাবে-- আমি তাই জানাতে চাই। সবচেয়ে ভয়ানক, সবচেয়ে শোচনীয়, সবচেয়ে ট্রাজেক বস্তু ও বিষয়কে সহাস্য শিশুর দৃষ্টিতে দেখতে পারার ক্ষমতার মধ্যেই চ্যাপলিনের রহস্য এবং তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির গোপনতা নিহিত। এখানেই তিনি অনুকরনীয়-- এতেই তিনি মহৎঃ -- সার্গেই আইজেনস্টাইন
Momtazuddin Ahmed is a Bangladeshi playwright-actor and educationist. He is also active in the field of culture, performance, literature and other socio- political activities. His theatre activities are mostly in the field of satire.
Ahmed has written 25 plays for stage, radio and television and directed several of them. Most of his directions and writings were for his theatre troupe Theatre (Natok Shoroni). Apart from plays, he has written several novels, research papers, essays, newspaper columns, screenplays for cinema, text books for primary and secondary educations of Bangladesh.
Ahmed taught Bengali, Sanskrit, and European drama in several non-government and government colleges for over 32 years. He was a professor in the department of Bengali, at Jagannath University and a part-time lecturer at the department of Music and Dramatics, at Dhaka University. Rabindra Bharati University has included his writings Bibaha and Ki Chaho Shankhachil in its curriculum. Several of his plays are also included in primary, secondary and higher secondary curriculum in Bangladesh.
Ahmed's career as a teacher, writer as well as an actor earned him wide recognition but theatre is the most prolific part of his career. As a man of progressive conviction Ahmed took active role in state language movement of Bangladesh, struggle for freedom during Pakistani era and movement for getting back democracy in post-independence Bangladesh.
Ahmed was a director of the Department of Research and Publications at Bangladesh Shilpakala Academy and as of December 2011 he is serving Bangladesh Permanent Mission to the United Nations as Minister (Cultural).
অভিনেতা হিসাবে মমতাজউদ্দীন আহমেদ কেন যেন আমার বেশ প্রিয়। তার খুব বেশি কাজ দেখসি এমনটা না। যা দেখসি সেগুলাও বেশ বাচ্চা কালে দেখা। তবুও কেন যেন উনি আমার পছন্দের অভিনেতাদের একজন। তবে উনার কোন লেখা আমি আগে পড়ি নাই। এ লেখাটা পড়বার আগে তাই ইকটু আশা নিয়ে বসেছিলাম। বইটা ভালো হলেও শেষতক আশা পূর্ণ হয় নাই। চ্যাপলিনের সংক্ষিপ্ত জীবনী, তার জীবনের দুঃখ কষ্ট, জীবন দর্শন, একজন খুচরো অভিনেতা থেকে ধীরে ধীরে পরিণত হওয়ার গল্প আর তার বিখ্যাত অথবা প্রশংসিত মুভিকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা থেকে লেখা এই বই। একজন কমেডিয়ান হয়েও চ্যাপলিনের মুভির যে অন্তর্নিহিত দর্শন সেটা হয়ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারনের চোখে ধরা পরে না। সবাই হয়ত আটোসাটো কোট,ঢোলা প্যান্ট,গোল টুপি আর টুথব্রাশ গোফের কৌতুকাভিনেতা চ্যাপলিনকেই খুজে বেড়ায়। কিন্তু এর পেছনের লুকোনো দুঃখটা, মনের হাহাকারটা আর কামড়ে ধরা জীবনটা হয়তো চোখের অন্তরালেই থেকে যায়। শব্দহীন অনূভূতির এই কারিগরের নিরবতার পেছনের গল্প নিয়ে এই বই। এবার হতাশার দিকটা বলি। বইটাতে সব উপকরণই ছিল। কিন্তু শুধু যেটার অভাব মনে হয়েছে তা হচ্ছে গভীরতা। সবগুলো টপিক নিয়েই যেন খুব সামান্যই লেখা হয়েছে। চাইলে হয়ত আরো অনেক শব্দের আকরে বাধা যেত লেখাগুলোকে। কি জানি! হয়ত আমার আশা নিয়ে পড়তে বসার কারনেই আশাহত হতে হয়েছে! অথবা হয়ত লেখক অভিনেতা হিসেবেই ভালো, লেখক হিসেবে নয়। তবে হ্যা, একটা লাভ হয়েছে। নতুন করে চ্যাপলিনের মুভিগুলো দেখার ইচ্ছে হচ্ছে বইটা পড়ার পর। খুব বেশি এখনো দেখা হয় নি। দেখে ফেলব আশা রাখি!
পরনে ঢোলা প্যান্ট, গায়ে আঁটোসাটো কোট, পায়ে অতিকায় জুতো, হাতে একটি ছড়ি, নাকের নিচে অল্প একটু মোঁচ- হ্যাঁ চার্লি চ্যাপলিনের কথাই বলছি। আমার খুব প্রিয় একজন অভিনেতা ও পরিচালক তিনি। জীবিত ছিলেন ৮৮ বছর (১৮৮৯-১৯৭৭)। এর বেশিরভাগ সময়ই তিনি ব্যয় করেছেন সেলুলয়েডের জগতে, বিশেষত নির্বাক চলচ্চিত্রে। ছোটবেলা থেকেই দুঃখ, দারিদ্র্য ও বঞ্চনার শিকার চার্লি। সেই চার্লিই এক সময় হয়ে গেলেন সিনেমার ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মোট ৮১টি সিনেমার অংশ ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ৮০টিতে অভিনয় করেছেন, চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা করেছেন ৬৭টিতে। উপহার দিয়েছেন 'সিটি লাইটস', 'দি সার্কাস', 'মর্ডান টাইমস', 'দি গ্রেট ডিকটেটর', 'মঁসিয়ে ভার্দু' প্রভৃতি কালজয়ী সিনেমা। তাঁর সিনেমাগুলো নিছক কমেডি ছিল না, কমেডির অন্তরালে লুকিয়ে ছিল গভীর জীবনবোধ। যারা তা বুঝতে পারেন, তারাই চার্লির প্রকৃত মর্ম বুঝতে পেরেছেন। এজন্য চার্লিকে বিপদেও পড়তে হয়ে, কমিউনিস্ট তকমা নিয়ে ছাড়তে হয়েছে আমেরিকা। তবুও চার্লি কখনো পিছপা হননি।
চার্লির জীবন ও সিনেমা নিয়ে আরেক প্রখ্যাত অভিনেতা মমতাজউদদীন আহমদ লিখেছেন 'চার্লি চ্যাপলিনঃ ভাঁড় নয় ভবঘুরে নয়'। প্রচ্ছদ থেকে শুরু করে পুরো বই চুম্বকের মত আমাকে টেনে রেখেছিল। ১৪টি অধ্যায়ে চার্লিকে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছেন লেখক। এছাড়াও বইটির শেষ দিকে চার্লি চ্যাপলিনের কয়েকটি অবিস্মরণীয় উক্তি, জীবনপঞ্জি ও সিনেমার তালিকা বইটিকে যথেষ্ট রীচ করেছে। তবে ব্যক্তি চার্লি সম্পর্কে জানার আগ্রহটা রয়েই গেছে, তা হয়তো জানতে পারবো অন্য কোন বইয়ে। চার্লিকে সম্পর্কে প্রাথমিক পাঠের জন্য এই বইটি বেশ কার্যকর বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। আগ্রহীরা পড়তে পারেন। বইটি প্রকাশ করেছে 'বিশ্বসাহিত্য ভবন'।
বইটা পড়লাম, দারুণ বই। চার্লি চ্যাপলিন-কে এই বইটা পড়ার পর নতুনভাবে চিনেছি।
বইটার শুরুতে চ্যাপলিনকে নিয়ে সের্গেই আইজেনস্টাইনের কিছু কথা উল্লেখ করা হয়, কথাগুলো হচ্ছে-
চ্যাপলিন কতটুকু বােঝেন তাতে আমার কোনাে আগ্রহ নেই। তিনি কিভাবে অনুভব করেন তাতেই আমি আগ্রহী। যখন তিনি কোন অনুপ্রেরণার আওতায় যে ঘটনা অনুভব করেন, তাঁর এক সারি চিত্র প্রতিমা কল্পনায় দেখেন, হাস্যরসের মাধ্যমে অনুভূত ধারণাকে যখন কমিক পরিস্থিতি ও কৌশলের মধ্যে রূপ দেন, তখন তিনি কীভাবে তাকান আর দেখেন, তাতেই আমার আগ্রহ। কোন চোখে পৃথিবীর দিকে তাকালে চ্যাপলিন তাকে যেভাবে দেখেছেন সেভাবেই দেখা যাবে আমি তাই জানতে চাই। সবচেয়ে ভয়ানক, সবচেয়ে শোচনীয়, সবচেয়ে ট্রাজিক বস্তু ও বিষয়কে সহাস্য শিশুর দৃষ্টিতে দেখতে পারার ক্ষমতার মধ্যেই চ্যাপলিনের রহস্য এবং তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির গােপনতা নিহিত। এখানেই তিনি অননুকরণীয়—এতেই তিনি মহৎ।
সের্গেই আইজেনস্টাইন যেমনভাবে চ্যাপলিনকে অনুভব করেছিলেন, আমার মনে হয় চ্যাপলিন তার থেকেও দূরদর্শী একজন মানুষ।
চ্যাপলিন এবং তার সিনেমাকে জানতে বইটি পড়তে পারেন।
বইঃ চার্লি চ্যাপলিন - ভাঁড় নয়, ভবঘুরে নয় লেখকঃ মমতাজউদ্দিন আহমদ প্রকাশনাঃ বিশ্বসাহিত্য ভবন মুদ্রিত মূল্যঃ ১৩০ টাকা মাত্র
ছোট বেলা থেকেই চার্লির ভিডিও ভাল লাগে, সে থেকেই এ বইটির প্রতি আগ্রহ ছিল, আগ্রহ ছিল চার্লির ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে হয়তো জানব। কিন্তু বইটিতে চার্লির ব্যক্তিগত জীবন বাদ দিয়ে তার কাজ/মুভির কাহিনি সম্পর্কেই বেশি আলোচনা করা হয়েছে। যাই হোক অভার অল একেবারে খারাপ না।