সে এক অদ্ভুৎবাড়ি। বিচিত্র সব মানুষজন, মনুষ্যেতর পোষ্য। আততা কুকুর, আঠারটা গোরু, তিনখাঁচা পাখি, ডজনখানেক বেড়াল। ডাক্তার বড়মামা, অধ্যাপক মেজোমামা, সংসারের হাল-ধরা মাসিমা, মিঠুন-ভক্ত কাজের লোক-মুকুন্দ। সে-বাড়িতে প্রায়শই অতিথি হয়ে আসেন ভোজনবিলাসী এক কবি, আসেন বাল্যবন্ধু এক জজসাহেব। আর, যার চোখ দিয়ে এই বাড়ির মানুষজন ও অতিথি-অভ্যাগতদের দিয়ে দম-ফাটা হাসি ও মজা-মেশানো এই গল্প, সে এ-বাড়িরই এক ক্ষুদে সদস্য। প্রদ্যুম্ন, ওরফে বুড়ো। মজা এ-বাড়ির সর্বত্র। প্রতিদিনের কথাবার্তায়, চালচলনে, কাজকর্মে। সে বড়মামার ডাক্তারি নিয়ে কি বাজার করা নিয়ে। মেজোমামার কীর্তনদল-তাড়ানো কি পুলিশ-ভাগানো নিয়ে। কবিপ্রবর শরৎবাবুর ভুলো মন কি ভুল কোটেশন নিয়ে। জজসাহেবের সাইকেল হারানো কি হারানো সাইকেল ফিরে-পাওয়া নিয়ে। গল্প এ বাড়ির আনাচেকানাচে। পূর্বপুরুষের, জমিদারির, ঠাকুরদেবতার, ডাকাতির। সেই অজস্র মজা ও গল্পের সঙ্গে নতুনতর এক বিপদের মজা নিয়েই এই ঠাসবুনন উপন্যাস।
Sanjib Chattopadhyay (Bengali: সঞ্জীব চট্ট্যোপাধ্যায়) (born February 28, 1936 in Kolkata) is a Bengali novelist and writer of short stories. His style is characterised by use of short satirical sentences mixed with very lively language.
Childhood and education: Sanjib Chattopadhyay spent his childhood in the hilly terrain of Chota Nagpur Plateau under the care of his father after his mother died when he was five. They relocated to Calcutta and he was admitted to Victoria Institution school which he joined at grade seven. He later went to Scottish Church College, Calcutta where he studied chemistry.
Work: The subjects of his fiction are mostly families living in Calcutta city. Within the confines of these homes, he challenges the moral values of the fast-changing middle class of the city. Chattopadhyay frequently uses old men as his protagonists. These aged characters create the spiritual and philosophical edge found in his novels Lotakambal (The Blanket and Quilt) and Shakha Prasakha (Branches). His most famous novella Swetpatharer tebil (The Ivory Table) is an example of his characteristic style of story-telling which mixes tension, dilemma, curiosity, pity, humor, and satire. He has written fiction for children and continues to write for magazines and newspapers. Chattopdhyay current writing is related to Ramkrishna Paramhansa, Sarada Devi and Swami Vivekananda. Some of his major works apart from the above mentioned are: পরমপদকমলে (At His Divine Feet) ক্যান্সার (Cancer) দুটি চেয়ার (Two Chairs) রসেবশে রাখিস মা রসেবশে বেশ আছি রসেবশে তুমি আর আমি (You And I) একে একে (One By One) কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই (Calcutta Is In Calcutta) Apart from that his notable juvenile literature includes রুকু-সুকু, বড়মামা-মেজমামা series which are fun-filled and analyse various philosophical aspects of life through the eyes of children.
Awards: Chattopadhyay is the recipient of the Ananda Puraskar in 1981 and the Sahitya Academy Award for his book শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন in 2018.
বিদেশে বসে খালি বাংলা বই পড়তে ইচ্ছা করে। কাগজের বই! পিডিএফ পড়তে কোন আরাম নাই, বাংলায় ইবুক এখনো বেশ দুর্লভ। সেদিন খুঁজে খুঁজে "শিশুকিশোর ডট অর্গ" সাইট থেকে বেশ কিছু বাংলা বই নামালাম যেগুলো ইপাব, মোবি ফরম্যাটে ছিলো। এই বইটা তখন কী মনে করে নামানো।
কী বলবো! আজকে দুপুরে ল্যাবে বসে কিছুক্ষণ পড়বো ভাবছিলাম, কিন্তু শুরু করে দেখি চেপেচুপে ক্ষিক্ষিক করে হেসে পোষাচ্ছে না। তাই বাসায় চলে এসে রোদে বসে কিন্ডেলে পড়তে শুরু করলাম।
হাসতে হাসতে হেঁচকি উঠে গেছে, মাইরি!
কোট করবো কিছু কিছু অংশ ভাবছিলাম, কিন্তু করতে গেলে পুরো বইই কোট করে ফেলতে হয় এমন অবস্থা! তাই বরং বইটাই পড়ে ফেলা ভালো।
কিছুই না, অতি সাধারণ কাহিনি, মা-মরা ভাগ্নে, মানুষ হচ্ছে খামখেয়ালি ডাক্তার বড়মামা আর অহংকারী অধ্যাপক মেজমামা আর পরিবারের একমাত্র কাণ্ডজ্ঞান সম্পন্ন মাসিমার হাতে। এদিকে গ্রীষ্মের এক দিনেই যত কাণ্ড ঘটে যাচ্ছে, তাতে অবস্থা বেগতিক।
আমার বই পড়ার অভ্যাস চলে গিয়েছিল। কিছুদিন যাবত আবার বই পড়া শুরু করেছি অনেকটা প্রয়োজনের খাতিরে। বইগুলো পড়তে ভাল লাগত, আর কিছু জায়গায় খুব ভাল না লাগলে সামনে আরো ভাল জিনিস পাব ভেবে টেনে যেতাম।
"অজ্ঞাতবাস" পড়ার সময় বইটাই আমাকে টেনে রেখেছে। প্রতিটা পাতায় পাতায় নির্মল আনন্দ ছড়িয়ে আছে। বড়মামা, মেজমামার পাগলামি আর মাসিমার দুজনকে সামাল দেয়ার বৃত্তান্ত পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল যেন আমিই সেই ছোটো ছেলে বুড়ো - বড়দের কান্ডকারখানা দেখে মনে মনে মিটিমিটি হাসছি আবার তাদের অতীতের কাহিনী মনে পড়ে তন্ময় হয়ে যাচ্ছি। কোনো কারণে বইটা পড়ায় ক্ষান্ত দিতে হলে আমার মাথায় ঘুরত কখন আবার বুড়োদের বাড়িতে ফিরে যাব। লেখক সবকিছু এত বিস্তারিত, কিন্তু প্রাঞ্জলভাবে তুলে ধরেছেন যে বইটি পড়ার সময় মনে হবে আপনি এই বাড়িরই বাসিন্দা।
"সব বড় বড় মানুষেরই ছোট ছোট একটা শুরু থাকে। সেই হাফপ্যান্ট পরে স্কুলে যাওয়া। পেটাই হওয়া। নিলডাউন। দু’কান ধরে বেঞ্চের ওপর দাড়ানো। অভাব, দুঃখ, কষ্ট কত কী খেতে ইচ্ছে করে, পয়সা নেই। কত কী পরতে ইচ্ছে করে, পয়সা নেই। তারপর টিউশনি করে পড়ার খরচ তোলা। তারপর মা সরস্বতীর কৃপায় সে-কী পরীক্ষার ফল। ফাস্ট, ফ্লাস্টক্লাস, গোল্ড মেডেল। ডব্লু বি সি এস, আই এ এস। জজ, ম্যাজিষ্ট্রেট, ব্যারিস্টার। এই জজসায়েব, মেজমামার মুখে যা শুনেছি, হারিকেনের আলোয়, চালাবাড়িতে রাত জেগে লেখাপড়া করেছেন, আর দিনের বেলায় কলেজ করেছেন, ছাত্র পড়িয়েছেন" - মন খারাপ হলে মামা সিরিজ পড়তে হয়। মন ভালো থাকলেও মামা সিরিজ পড়তে হয়। কারণ, শব্দের মারপ্যাঁচ আর অনাবিল হাস্যরসের আর কোনো বিকল্প নেই। এরকম ভালো রাখার ঠিকানা খুব বেশি নেই। তাই মামা দের এই ফ্যান্টাসির দুনিয়া ছেড়ে যেতেও চাইনা।
ক্রমশ সঞ্জীবের লেখনীর ভক্ত হয়ে পড়ছি। এতো ভালো সেন্স অব হিউমারের সাথে জীবনের গভীর কথাগুলোকে তুলে আনতে খুব কম লেখকই পারেন।
অজ্ঞাতবাস সঞ্জীবের মামা সিরিজের বই, বড়মামা আর মেজোমামা নামের দুটো মজার কারেক্টার এই বইয়ের গল্পকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। সাথে ছিলো ভুলোমনা আর পড়ুয়া শরৎবাবু, স্মার্ট মুকুন্দ। সব মিলিয়ে মন ভালো করে দেয়ার মতো বই।
অজ্ঞাতবাস আমার কাছে আল্টিমেট অনাবিল আনন্দ আর হাসির একটা গল্প। এরকম নিষ্পাপ সহজ সরল হাসির উপন্যাস এই সময়ে বিরল। জোর করে হাসানো নেই, satire নেই, ব্ল্যাক কমেডিও নয়। আদ্যোপান্ত হাসির কাহিনী। রোজনামচার মধ্যে দিয়ে হাসির খোরাক তুলে ধরেছেন, যা উপেক্ষা করা খুব কঠিন।