"সুবোধ চাকমা নামক ত্রিশ বছরের এক যুবক শোনালো কিছু কথা। তার ভাষায়, ‘আপনাদের সেনাবাহিনী আমাদের কত মা বোনকে ধর্ষণ করেছে, সে হিসেব আপনারা জানেন না । আমরা জানি। কতটা কষ্ট যে এই বুকে–বোঝাতে পারব না। কবে কোথায় কখন, নাম ঠিকানাসহ কমপক্ষে দশটি ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দিতে পারব আমি। কিন্তু তাতে লাভ কী হবে? সেই মেয়েগুলোর পরিচয় জানাজানি হবে শুধু। বিচার কী করতে পারবেন সেনাবাহিনীর?' আমি চুপচাপ তাকিয়ে থাকি তার মুখের দিকে। কোনো জবাব দিতে পারি না । আবার বলতে শুরু করেন সুবোধ চাকমা, ‘সেনাবাহিনীর একটি ধর্ষণের ঘটনা আমি নিজে দেখেছি। জায়গাটির নাম বলছি না। সেখানে একদিন সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী আসলো । যুবক বৃদ্ধরা যে যে দিকে পারলো জঙ্গলে পালাল । বাড়িতে থাকলো শুধু মহিলারা । বৃদ্ধা মাকে লাথি দিয়ে উঠানে ফেলে দিল। ঘরের ভেতরে সেনাবাহিনী পালাক্রমে ধর্ষণ করলো তার মেয়েকে । জঙ্গলের ভেতর থেকে আবছা অন্ধকারে দেখছি, সেনাবাহিনীর এক একজনকে ঘরে যেতে এবং বেরিয়ে আসতে। আর শুনলাম এক মায়ের আকাশ ভাঙা আর্তচিৎকার' "
সাংবাদিক গোলাম মোর্তজা বইটি শান্তিবাহিনীর দৃষ্টিকোণ বোঝাতে লিখেছেন। বঙ্গবন্ধুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সবাইকে 'বাঙালি হয়ে যেতে' বলার মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে এই সংকটের সূচনা করেন। এরপর জিয়াউর রহমান পাহাড়ে সেনাবাহিনী পাঠিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে সাময়িকায়নের ব্যবস্থার মাধ্যমে শান্তিবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতকে অনিবার্য করে তোলেন। একটি রাজনৈতিক সংকটকে সামরিকভাবে মোকাবিলা করতে চাওয়ার পরিণাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে পাহাড়িদের অবস্থান বোঝার জন্য বইটি পড়া যেতে পারে। একেবারেই একপাক্ষিক বই। তবে এক পক্ষের বয়ান মোটামুটি পূর্ণাঙ্গভাবে এসেছে।