কাল্পনিক কিছু নয় । আটলান্টিকের একটা বিশেষ এলাকা পৌঁছলেই আশ্চর্য সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছেন নাবিকেরা, সেই কলম্বাসের আমল থেকে, আজও । স্রেফ উধাও হয়ে যায় । গোটা জাহাজ, সাবমেরিন বা বিমানের কোন চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায় না আর । সবাই জানতে চায়, কি রহস্য লুকিয়ে আছে ঐ ত্রিভুজে । ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ফীল্ড, নাকি গ্রহান্তরের বা সাগর গর্ভের কোন বুদ্ধিমান জীবের কারসাজি, নাকি টাইম ডিসটরশন?
Qazi Anwar Hussain (born 19 July 1936) is a well known and very famous Bangladeshi writer who mainly writes detective and adventure based novels most of which are adaptation translation from or heavily influenced by foreign literature.
আমার বাচ্চাকালের সবচাইতে রোমাঞ্চকর নামগুলির একটি "বারমুডা ট্রায়াঙ্গল"। গল্প শোনা ছাড়া ভাত মুখে না দেওয়ার এক বদভ্যাস অনেক বদশিশুর থাকে। আমারও ছিল। আম্মার মুখে কত আজগুবি কাহিনিই শুনেছি এই বারমুডা নিয়ে তার হিসাব নেই। এই বয়সে এসে এখন সন্দেহ বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য কিছু রোমহর্ষক ঘটনা আম্মা নিজেই তৈরি করেছিলেন!
আমার কিশোরকালের এক অনবদ্য সম্পদ এই বই। পরে বুঝেছি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নিয়ে নানা গাঁজাখুরি গল্পের সমাহার এই গ্রন্থ।
এখন পড়লে হয়তো বইটি শেষ করতে পারতাম না। রেটিং দিতে কার্পণ্য করতাম। কিন্তু এই বইয়ের সঙ্গে এক খুদে পাঠকের অনেক স্মৃতি জড়িত। তাই রেটিং দেওয়ার সাহস দেখাচ্ছি না।
আটলান্টিক মহাসাগরের বিশেষ একটা এলাকায় গেলে নানা রকম আশ্চার্য ঘটনা ঘটে। জাহাজ, বিমান বা সাবমেরিন হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায়। ত্রিভুজ আকৃতির সে এলকায় কি এমন রহস্য আছে যার জন্য এমনটা হয়। এটা কি কোন ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ফীল্ড নাকি ডাইমেশন নাকি ইউ এফ ও এর প্রভাব? নাকি সবই গল্প। এর সত্যতা কতটুকু। পৃথিবীতে এমন স্থান কি আরো আছে?
এ বইয়ে এ নিয়ে অনেক আলোচনা করা হয়েছে। ও হ্যাঁ বইটিতে ইউ এফ ও সম্পর্কে অনেক ধারণা দেওয়া হয়েছে যা আছে জানতাম না।
মূলত আসলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল বলতে কিছু নাই। এটা মানুষের কল্পনা। অনেকটা ভূতের গল্পের মত।
সাবলীল ভাবে লিখা হয়েছে পুরো বই। অনেকগুলো ঘটনা সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণনা করা। পানিতে সহ আকাশে হওয়া অনেক অলৈকিক দুর্ঘটনার স্বাক্ষী বইটাতে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু ঘটনার বর্ণণা পর্যাপ্ত হলেও তৃপ্তিদায়ক না, মনে হচ্ছিলো আরেকটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা হলে কৌতুহল মিটতো। মোটামুটি ভালোই লিখেছে অবশ্য। ঘটনার তালিকা ভিত্তিতে গল্পগুলো-গুছানোটা সুন্দর হয়েছে। বৈজ্ঞানিক সামর্থ্য এবং বিভিন্ন অনুমানের তত্ত্ব থেকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের ওপর যে গবেষণা করা হয়েছে, তার তুলনামূলক বর্ণনা বইটাতে লিখা হয়েছে।
কিশোর বয়সে পড়া। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নিয়ে তখন আগ্রহও ছিল প্রবল। আর জুলভার্নের বদৌলতে শামসুদ্দিন নওয়াব ছিলেন প্রিয় অনুবাদক। (শামসুদ্দিন নওয়াব নামের আড়ালে বইটা আসলে লিখেছেন রকিব হাসান, এই তথ্য অনেক পরে জানতে পারছি) প্রিয় প্রকাশনী, প্রিয় অনুবাদক, প্রিয় টপিক! পারফেক্ট কম্বিনেশন! ভাল না লাগার কোন কারণই নাই! কিন্তু লাগে নাই। :( কেন লাগে নাই, সেইটাও স্পস্ট না। হয়তো কিশোর থ্রিলারের দুনিয়ায় ডুবে থাকার কারণে 'কাঠখোট্টা' নন-ফিকশন হজম হয় নাই। কিন্তু নন-ফিকশন হইলেও টপিক তো ইন্টারেস্টিং ছিল। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের উপর অসংখ্য ফিচার কত আগ্রহ নিয়ে গিলছি! সেইখানে একই বিষয় নিয়ে আস্ত একটা বই! পুরা রসগোল্লার মত লাগার কথা! লাগে নাই। :( যাই হোক, যদ্দুর জানি, এইটা হইতেছে সেবার ইতিহাসের সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের একটা। কাজেই আমার না লাগলেও, অসংখ্য পাঠকের যে ভাল লাগছে তাতে কোন সন্দেহ নাই।