অধিরাজ কিশোর বয়স থেকেই অনুসন্ধিৎসু মনের অধিকারী। তার মানসিক গঠনই তাকে অবশেষে নিয়ে এল গোয়েন্দাগিরির পেশায়, বলা উচিত গোয়েন্দা পুলিশের ভূমিকায়। যেখানে বিপদ, যেখানে হত্যাকাণ্ডের সমাধান ঘন ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন সেখানেই অধিরাজ ঝাঁপিয়ে পড়ে, নিজের জীবন বিপন্ন করেও।
অধিরাজ-কেন্দ্রিক রহস্য অমনিবাসের প্রতিটি কাহিনীই এমনই রুদ্ধশ্বাস যে শেষ না করে পাঠক ছাড়তে পারবেন না। সায়ন্তনী পূততুণ্ডের লেখনীতে যে সার্থক চরিত্রচিত্রণ ঘটেছে, কী গোয়েন্দা কী অপরাধীর, তা দীর্ঘকাল দাগ কেটে রাখবে বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্যের ইতিহাসে।
গোয়েন্দা অফিসার অধিরাজের চারটি রহস্যউপন্যাসিকা ও একটি রহস্যগল্প এই সঙ্কলনে স্থান পেয়েছে -
সায়ন্তনীর গড়িয়ায় বাস। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির শখ। কবিতা ও গদ্য দুইই চর্চার বস্তু।ক্লাস সেভেনে প্রথম প্রকাশ সংবাদ প্রতিদিনের শনিবাসরীয় পাতায়'চশমা' ছোট গল্প। তারপর প্রতিদিন, বর্তমান, সুখী গৃহকোণ, আর ছোটদের পত্রিকা সাহানা আর বাংলা দেশের পত্রিকা ভোরের কাগজে লাগাতার লিখে যাওয়া।
বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় সায়ন্তনী পূততুণ্ড খুব বেশিদিন হল পদার্পণ করেননি| কিন্তু ভাষার বলিষ্ঠতা দিয়ে, আর নির্মম-অথচ-সাবলীল গল্প বলে পাঠকের শ্রদ্ধা ও কৌতূহল (পরের লেখাটা কী নিয়ে?) আকর্ষণ করতে তিনি সক্ষম হয়েছেন| তাঁরই পাঁচটি রহস্য গল্প/বড়োগল্প-র সংকলন এই সুমুদ্রিত ও সুসম্পাদিত বইটি| সি.আই.ডি অফিসার অধিরাজ-এর রহস্যভেদের এই পাঁচটি উপাখ্যান হল:
(১) ত্রিমূর্তি যখন ভয়ঙ্কর: বাংলাদেশের “অমর একুশে” বইমেলায় ২০১১ সালে আত্মপ্রকাশ করা এই নভেল্লাটি (লেখিকার প্রথম বই ছিল এটি) দিয়েই বই শুরু| রহস্যভেদী অধিরাজের সঙ্গে আমাদের পরিচয়ও হয় এটি দিয়েই| দুর্বল গল্প, দুর্বলতর রহস্য, প্রচুর অসঙ্গতি, এবং দুর্বল চরিত্রায়ণ| তবে এটি পড়ে হতাশ হয়ে লেখা থামালে ঠকতে হবে|
(২) এবং...আত্মহত্যা?: চেনা প্লট-এও নিজস্ব মোচড়, অধিরাজের সঙ্গে তার দুই সঙ্গী অর্ণব আর ডক্টর চ্যাটার্জি-র দারুণ উপভোগ্য কম্বিনেশন তৈরি হওয়া, আর গল্পের একেবারে শেষে একটা টুইস্ট: এত কিছু ভালো থাকা সত্বেও গল্পটা কেমন যেন আজগুবি রয়ে গেল কিছু জালি (সর্বার্থে) উপাদানের উপস্থিতির ফলে|
(৩) সলোমন উবাচ: ছোট্টর মধ্যে এই গল্পটা, বেশ কিছু আজগুবি ব্যাপার সত্ত্বেও, পড়তে বেশ লাগে|
(৪) হাসে অন্তর্যামী: আনন্দমেলায় প্রকাশিত এই রহস্য উপন্যাসটি পড়তে অত্যন্ত ভালো লাগে, তবে যুক্তির ফাঁক-ফোকড় কি আর শুধু সুখপাঠ্য লেখা দিয়ে ঢাকা যায়? তবুও, রহস্য-হাস্যরস-সাসপেন্স এই তিনের কম্বিনেশনে এটিই আলোচ্য বই-এর সেরা লেখা বলে আমার মনে হয়েছে|
(৫) বহুরূপী: যে বিষয় নিয়ে এই নভেল্লা, সেটি নিয়ে ছোটোদের জন্যে না লিখে বড়োদের জন্যে লিখলেই বোধহয় ভালো হত, কারণ রচনাকার সেক্ষেত্রে অপরাধীকে নির্মাণ করার জায়গায় অনেক বেশি স্বাধীনতা পেতেন| তাছাড়া ড্যান ব্রাউন গোছের জিনিস বাংলা রহস্যে আগ্রহ বা উদ্দীপনা না জাগিয়ে হাই তোলায় (নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি)|
তাহলে শেষ বিচারে কী দাঁড়াল? বইটা পড়ার যোগ্য? উত্তর: হ্যাঁ, অবশ্যই পড়ার যোগ্য| সাহিত্যিকের রসবোধ লেখাগুলোতে যে অত্রিরিক্ত মাত্রা দিয়েছে সেটা যুক্তির গর্তগুলো ভরাট করতে না পারলেও অন্তত ঢেকে দেবে| আর বইটা আপনারা না কিনলে এবং না পড়লে লেখক নিরুৎসাহিত হবেন| তাহলে পরের রহস্য-কাহিনি আমরা পাব কীভাবে?
এই বইটা বেশ ভালো। অতিরঞ্জন কম। তবে ক্রাইমের মারাত্মক বা নৃশংস বিষয় আশয় ও কম। তবুও অর্ণব বা অধিরাজের সম্পর্ক নিয়ে অযথা জলঘোলা, অধিরাজের অতিমানবীয় গুণগান এসব কম থাকায় এবং গল্পগুলোতে বেশ একটা পারিবারিক ভাব থাকায় ভালো লেগেছে।
বহুরূপী পড়লাম। প্রথম গল্পটা এক প্রকার। দ্বিতীয়টা মারাত্বক টেনেছে। চার নম্বর হাফ পড়ে রেখে দিলাম। যা খুশি হচ্ছে। তিন আর পাঁচ পড়ার ইচ্ছায় জল গড়াচ্ছে। এখানেই ইতি।
বাংলা থ্রিলার জগতে অধিরাজ ব্যানার্জী খুবই জনপ্রিয় একটা নাম। তার আত্মপ্রকাশ হয়েছিল বহুরূপী বইটির মাধ্যমে। এই বইটি পাঁচটি বড়ো গল্পের সংকলন।
*ত্রিমূর্তি যখন ভয়ঙ্কর:-*
অধিরাজের ছোট মামা বিখ্যাত চিত্রকর তন্ময় চৌধুরী মৃত্যুর কিছুদিন আগে বারাসাতের বাগানবাড়ি তে গিয়েছিলেন। সেখানে কোনো কারণে তিনি প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলেন যার প্রতিফলন হয়েছে তার পরবর্তী ছবি গুলিতে। এমনকি মৃত্যুর আগেও তিনি একটি অর্ধসমাপ্ত ত্রিমূর্তি ছবির দিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কি রহস্য লুকিয়ে আছে ঐ ছবিতে? তবে ওনার মৃত্যুর কারণ কি হার্ট অ্যাটাক নয়? মামার মৃত্যু রহস্য কি উদঘাটন করতে পারবে অধিরাজ?
*এবং আত্মহত্যা:-*
সাতদিন ধরে তনিমা দেবী দেখছেন তাদের উল্টোদিকের অ্যাপার্টমেন্টের বারোতলা নিবাসী অন্ধ সুমিতা রাতে কালো চশমা পরে ব্যালকোনির রেলিং এর ধারে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। এভাবেই একদিন ব্যালকোনি থেকে পরে আত্মহত্যা করে সে। কিন্তু আত্মহত্যা করার জন্য একজন মেয়েকে কেনো সাতদিন আগে থেকে রিহার্সাল দিতে হয়? এটা কি সত্যিই আত্মহত্যা নাকি খুন? রহস্য উন্মোচনে ময়দানে নামে অধিরাজ ও তার টিম।
*সলোমন উবাচ:-*
লিটল অ্যাঞ্জেলস অনাথ আশ্রমের আশ্রিত দশ বছর বয়সী বালক জিকো মেলায় গিয়ে লটারিতে হঠাৎই জিতে যায় দশ লক্ষ টাকা। এরপরই দুজন মহিলা প্রমাণ সমেত অনাথ আশ্রমে এসে নিজেদের জিকোর মামী বলে দাবি করেন। কে আসল মামী? জিকোর পরীবন্ধুটিই বা কে? রহস্য উন্মোচনে অবতীর্ণ হয় অধিরাজ।
*হাসে অন্তর্যামী:-*
অধিরাজের পলাপিসি বর্তমানে পুরী নিবাসী। পিসির কাছে বেড়াতে এসে অধিরাজ জানতে পারে পিসিদের প্রতিবেশী পেশায় ক্রাইম রিপোর্টার তিমির বাবুর গায়ে আগুন ধরে গিয়েছে সমুদ্রে স্নান করতে গিয়ে। সমুদ্রের জল থেকে আগুন? কিভাবে সম্ভব? অন্যদিকে পুরীর হাইওয়েতে এক ভুতুড়ে ট্রাক ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছে মিল্ক ট্রাকদের। সেই ভুতুড়ে ট্রাক এর কোনো অস্তিত্ব ফরেনসিক টিম খুঁজে পায় না। কিন্তু সোনা, রূপা ছেড়ে কেনো ঐ ট্রাকটি মিল্ক ট্রাক কেই আক্রমণ করে? এই ঘটনারই তদন্ত করছিলেন তিমির বাবু। তার জন্যই কি তার এই পরিণতি? অধিরাজ কি পারবে এই রহস্যের সমাধান করতে?
*বহুরূপী:-*
শহরে আবার আবির্ভাব ঘটেছে মি: নো বডির যিনি মূলত হিউম্যান ফটোকপিয়ার নামে পরিচিত অর্থাৎ তিনি যে কোনো সময়ে যে কোনো মানুষের রূপ ধরতে পারে। অনেকবার তিনি সিআইডির বজ্র আঁটুনি কেও বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। সেকারণেই পুরো সিআইডি ডিপার্টমেন্টের গলদঘর্ম অবস্থা এই ব্যক্তির আসার খবরে। কিন্তু কেনো আবার এলেন তিনি? অতীতে ড: শীতল সিংহের কিডনি পাচার চক্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছবি ফটোগ্রাফার সন্দীপন মিত্রের হাতে উঠে আসে। কিন্তু সেই সব ছবি পুলিশের হাতে পৌঁছাবার আগেই সন্দীপন বাবু অ্যাকসিডেন্টে পঙ্গু হয়ে পরে। তার ক্যামেরা খুঁজে পাওয়া গেলেও পাওয়া যায়নি ক্যামেরার সি এফ কার্ড। কোথায় আছে সেই কার্ড? সেই কার্ড উদ্ধারের জন্যই কি মি: নো বডিকে ভাড়া করেছেন ঐ ডাক্তার? অধিরাজ কি পারবে বহুরূপী কে ধরতে?
অধিরাজ সিরিজ আমার বরাবরই ভীষণ প্রিয়। এই গল্প সংকলন টিও পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। প্রতিটি গল্পেই প্রতি মুহূর্তে উত্তেজনা অনুভব করেছি। এবার বহুরূপী ২ পড়ে ফেলার পালা। তাহলেই অধিরাজ সিরিজ প���়া সম্পূর্ণ হবে।
অধীরাজ সিরিজ এর সাথে প্রথম পরিচিতি। সায়ন্তনী পুততুন্ড ম্যামের সৃষ্ট একটি অনবন্ধ চরিত্র, যার প্রেমে না পরে থাকা যায়না। তবে প্রেম বললাম বলে কিন্তু টিপিকাল লাভ এফেকশন ভাববেন না। প্রেম তার চারিত্রিক বৈশিষ্টর প্রতি, প্রেম তার বুদ্ধির প্রতি, প্রেম তার কাজের জন্য ডেডিকেশনের প্রতি, এবং সর্বশেষে প্রেম তার প্রকৃত মানুষ হওয়ার প্রতি। তাই বলবো এই সিরিজ টা একবার হলেও পড়বেন। নিরাশ হবেননা।
It felt a bit random. I mean I was expecting something dramatic. I did like the other mystery. Just not the revelation of the killer. Hence the rating.
আগেও পড়েছি। এবছরে দ্বিতীয় বার পড়লাম। এ বই অধিরাজ সিরিজের অন্তর্গত। মোট পাঁচটি গল্প আছে । সবগুলিই চমৎকার। তবে এই বইটিতে আমার সবচেয়ে প্রিয় গল্প 'হাসে অন্তর্যামী' এবং 'বহুরূপী'।