লালচে ঐ চোখ দুটো কার? কোন খুনির? কেঁপে উঠলাম বাস্তবতা বুঝতে পেরে। সম্বিত ফিরল অঞ্জলি থেকে পানি সিংকে পড়ার আওয়াজে। চোখ দুটো তো আমারই-ডক্টর আশিক সরোয়ারের; যার হাতে আজ রাতে অবসান ঘটবে পক্ষাঘাতগ্রস্থ, অথর্ব এক মানুষের জীবন!
পিতৃসম মানুষটিকে কেন খুন করবে ডক্টর আশিক সরোয়ার? সে কি লোভী, খুনী, নাকি বাধ্য হচ্ছে কাজটা করতে?
রোমেল নিখোঁজ, রিয়া মাদকাসক্ত। তাহলে কে সামলাবে আব্দুর রহমানের বিশাল এই সম্পত্তি?
লোভের বশবর্তী হয়ে বিশ্বাস ঘাতকতা করবে সে? মেরে ফেলবে একজন অচল মানুষকে? নাকি এর পেছনে আরও বড় কোন রহস্য লুকিয়ে আছে?
ও স্বার্থপর, কিন্তু খুনী তো নয়। অথচ কাজটা ওকে করতেই হবে। হ্যাঁ, না চাইলেও করতেই হবে। এছাড়া আর কোন উপায়ও যে নেই। এর উপরই নির্ভর করছে ওর ভবিষ্যৎ- ওর স্বপ্ন, বিশ্বাস আর ভালবাসা।
জন্ম সিরাজগঞ্জে, ১৯৮৮ সালে। এসএসসি. পাশ করেন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে, এইচএসসি-রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ থেকে। এরপর শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সমাপ্ত করে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ থেকে। বর্তমানে কর্মরত আছেন কক্সবাজার জেলায়।
লেখালেখি শখের বসে, অনুবাদ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। প্রথম প্রকাশিত বই আদী প্রকাশন থেকে-ট্রল মাউন্টেন। সেই সাথে রহস্য পত্রিকায় টুকটাক লেখালেখি।
অনুবাদক ফুয়াদ আল ফিদাহ ভাইয়ের সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। একের পর এক নিখুঁত ঝরঝরে প্রাঞ্জল অনুবাদ আমরা ইতোমধ্যেই তার কাছ থেকে পেয়ে এসেছি। সঙ্গত কারণেই অপেক্ষা ছিল তার মৌলিক সাহিত্যে অনুপ্রবেশের। ট্রল মাউন্টেন এবং নিল গেইম্যান এর স্টোরিজ – দু’টি অনুবাদ গ্রন্থের ধারাবাহিকতায় অবশেষে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তার প্রথম মৌলিক থ্রিলার উপন্যাস “রাত এগারটা”। আগেভাগেই পান্ডুলিপি পাঠের সৌভাগ্য হওয়ায়, পাঠ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার লোভ সামলাতে পারছিলামনা।
বিশ্লেষণ ( যা ভাল লেগেছে ) :
#একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী, হবু ডাক্তার এবং থ্রিলার পাঠক হিসেবে মেডিকেল বিষয়ক জিনিসগুলো ভাল লেগেছে। আর যেহেতু ফিদাহ ভাই নিজেও পেশাগত জীবনে একজন চিকিৎসক, তাই বর্ণনাগুলো এসেছে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। বইয়ের শুরুতে চিকিৎসকদের চিরাচরিত শপথনামা “Hippocratic Oath” এর সংযোজন, সহজ স্বাভাবিক ভাষায় গল্পের প্রয়োজনে চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু বিষয়ের অবতারণা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন তরূণ চিকিৎসকের নানাপদে প্রতিকূলতা আর অসঙ্গতি – পরিচিত জগতের এ বিষয়গুলো নাড়া দিয়েছে বারবার।
# আমার মতে মার্ডার মিস্ট্রির স্বার্থকতা হচ্ছে উত্তেজনা সৃষ্টি করে তা ধরে রাখার মধ্যে। বর্ণনার সুতো একটু আলগা হলেই, আকর্ষণ হারিয়ে পাঠকের বিরক্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। রাত এগারটার সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা ছিল। কোথাও কাহিনী এতটুকু ঝুলে পড়েনি, আসেনি কোন অপ্রয়োজনীয় বাক্য। ঠিক সেকারণেই কলেবরে ছোট হয়েও কোনকিছু মিসিং থাকেনি ।
# ছোট ছোট অংশে ভাগ করা অধ্যায়, ক্রমানুসারে এসেছে অতীত এবং বর্তমান হিসেবে। এরকম ভাবে সাজানোর কারণে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে রাত এগারটা।
# সমান্তরাল ভাবে চলে এসেছে চরিত্রগুলোর জটিল মনস্তত্ত্ব। ডাঃ আশিক সরোয়ারের অতীতের স্বার্থপর আচরণ এবং তার ফলে ঘটে যাওয়া অপূরণীয় ক্ষতি, সিলেটের চা বাগানের মালিক রহমান সাহেবের অতীত, তার নেশাগ্রস্থ মেয়ে রিয়ার প্রতিশোধ প্রবণতা – এ বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে গতিশীল ভাবে এগীয়ে গিয়েছে কাহিনী। লোভ,প্রায়শ্চিত্ত,প্রতিশোধ,হতাশা – একেকভাবে প্রভাব ফেলেছে একেক জনের উপর। অপরাধমূলক আচরণের অন্তরালে মনস্তত্বের প্রভাবের দিকগুলো বেশ স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
# গল্পের শুরুতেই উন্মোচিত হয়েছে একটি পরিকল্পিত খুনের ছক।(এই অংশটা খুব সাবধানে লিখছি, বেশি কিছু বলতে গেলেই বড় ধরনের স্পয়লার আসার সম্ভাবনা থাকে)। নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে একটি খুন করিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা, তার খুঁটিনাটি সাজানো এবং অল্পসময়ের মাঝেই তার বাস্তবায়নের অপেক্ষা – মূলত এই তিনটি বিষয় নিয়েই আবর্তিত হয়েছে কাহিনী। কিন্ত এক্ষেত্রে সবচেয়ে ইউনিক ব্যপারটা হচ্ছে, অসাধারণ পর্যায়ের “mind game” । প্রত্যাশিত একটি সমাপ্তির দিকে যেতে যেতে আপনি বারবার আবিস্কার করতে থাকবেন, যা হবার কথা তা হচ্ছেনা। কারো ইশারার পুতুল হয়ে থাকতে গিয়ে তাকেই নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসার দুর্দান্ত planning এর কারণে Protagonist কে তো Mastermind বলতেই হয়। তবে আসল টুইস্ট একেবারেই শেষভাগে। আপনি যখন আবিস্কার করবেন যে, সাজানো একটি পরিকল্পনার আগে থেকেই সাজানো আছে আরো গোছানো পরিকল্পনা, তাও আবার সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত কারো থেকে; তখন নিজের অজান্তেই মুখ হা হয়ে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়।
# যা ভাল লাগেনিঃ
# কিছু কিছু জায়গায় প্রিন্টিং মিস্টেকের কারণে দৃষ্টিকটু ভাবে কিছু বানান ভুল এসেছে, “কাপর পড়া”, “বেয়ারা ঘোড়া” ইত্যাদি ইত্যাদি।
# কয়েকটা জায়গায় তাড়াহুড়া করে লেখার ছাপ থেকে গিয়েছে, যার ফলে কিছুটা হলেও স্বাদ নষ্ট হয়েছে।
# পরপর কয়েকটি লাইনে একইরকম ক্রিয়ার ব্যবহারে জায়গাগুলো কিছুটা খাপছাড়া লেগেছে। যেমন- “ওর দিকে তাকালাম।অবাক হয়ে গেলাম।কি করব বুঝতে পারলামনা”। এক্ষেত্রে বিন্যাস খানিকটা অন্যরকম হলে আকর্ষণ বেড়ে যেত বলে মনে করি আমি।
সব মিলিয়ে বলব, প্রথম মৌলিক থ্রিলার হিসেবে ফিদাহ ভাই অসাধারণ একটি বই উপহার দিচ্ছেন। অনেক অনেক অভিনন্দন আর শুভকামনা থাকল ভাইয়ার জন্য। অপেক্ষায় থাকলাম আরো নতুন বইয়ের জন্য, সাহিত্যজগতে আরো শক্তিশালী অনুপ্রবেশের জন্য।
জীবনের মানে কি সকলের কাছেই একই? না। তেমনি একই না জীবনের মূল্যের দৃষ্টিকোণও। কেউ জীবনের জন্য সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে তো আবার কেউ কষ্টের বোঝা সইতে না পেরে মৃত্যুকেই আপন করে নেয়।
মার্সি কিলিং... বিদেশের অনেক জায়গায় 'ইউথানাশিয়া' বা 'ইথানেশিয়া' নামে প্রচলিত। যদি কোনো ব্যক্তি প্রচন্ড কষ্টের মাঝে থাকেন আর তার রোগ মুক্তির সম্ভাবনা না থাকে - সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির অনুরোধে তাকে বিনা কষ্টে মারা যাবার সুযোগ করে দেয়া হয়। যদি তিনি নিজে সক্ষম হন, তাহলে তার হাতে তুলে দেয়া হয় নিজের অস্তিত্বকে শেষ করে দেয়ার ভার। আর যদি তিনি একেবারে অক্ষম হন তাহলে সেই দায়িত্ব নিয়ে নেন ডাক্তার বা নার্স।
জীবন বাঁচানোর শপথ নিয়ে পথচলা শুরু একজন ডাক্তারের। অনেকের মতেই সৃষ্টিকর্তার প্রতিচ্ছায়া তারা। কিন্তু ডাক্তারই যদি রোগীর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়, তাহলে? সৃষ্টিকর্তার প্রতিচ্ছায়া নাকি পিশাচের...
● আখ্যান —
চাচার মৃত্যুর পর অকূলপাথারে পড়ে আশিক। মা-বাবার মৃত্যুর পর যে চাচাই ছিল তার অভিভাবক। সেই সাথে জানতে পারে তার মেডিকেলের খরচ জোগান দিতে দিনে দিনে চাচার কাঁধে বেড়েছে ঋণের বোঝা, চাচীর অবস্থাও ভালো না কিডনির অপারেশন করতে হবে। এমন বিপদের দিনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন রহমান সাহেব। কিন্তু আজ রাত ঠিক এগারোটাই নিজের ত্রাণকর্তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিবে ডা. আশিক সরোয়ার! কেন?
একের পর এক আপনজন হারানোর আঘাতে ভেঙে পড়েন রহমান সাহেব, ফলাফল পক্ষাঘাতগ্রস্ত। কিন্তু তিনি করেছেন তিনটি রহস্যময় উইল! কেনোই বা রিয়া মাদক নেওয়া শুরু করলো আর রোমেল নিরুদ্দেশ হলো?
● পর্যালোচনা ও প্রতিক্রিয়া —
টানা পড়ে যাওয়ার মতো একটি বই। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ তিন টাইমলাইনে আশিকের জবানিতেই বইয়ের কাহিনি এগিয়ে যায়। বইয়ে বেশ কিছু সাইকোলজিক্যাল ও মেডিক্যাল টার্ম আছে।
শুরুতে মনে হচ্ছিল খুনি আর ভিক্টিম তো আমাদের জানা শুধু খুন হওয়ার পালা। তাই একটু নিরাশই হয়ে ছিলাম। খুনি খোঁজাখুঁজি সুযোগ পাবো না। কিন্তু এখানেই প্লট টুইস্ট। খুনি কে এই নিয়ে শুরু হলো সাসপেন্স আর আদোও কোনো খুন হবে কিনা। কে গল্পের মাস্টারমাইন্ড এটা নিয়েই দ্বন্দ্বে পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আসল ইউটার্ন তো বাকি, পাঠককে চমকে দেওয়ার মতো।
চরিত্রগুলোর সাইকোলজি টার্মগুলো ভালো মতোই দেখানো হয়েছে। বেশি হাইলাইট হয়েছে আশিক আর রিয়ার সাইকোলজি। রিয়ার বিষয়টা বুঝলেও রহস্য থেকে গিয়েছিল আশিকের চরিত্রে। কখন মনে হয় ভিলেন তো আবার কখনও হিরো। চরিত্রগুলোর স্ট্রং উইক দিকেগুলো ফুটে উঠেছে কারো মাইন্ডই তো শতভাগ নিখুঁত নয়। ভদ্রবেশেই যে কেউ কত ভয়ানক হতে পারে, মানবচরিত্রের ডার্কসাইডগুলোর বিশদভাবেই আলোচনা করা হয়েছে। মেডিক্যাল টার্মগুলোর বর্ণনাও সুন্দরভাবে দেওয়া। গল্পের সমাপ্তি তেমনি হয়েছে যেমনটা কল্পনা করেছিলাম কিন্তু লাস্ট টুইস্টটা আনএক্সপেক্টেড, ��মক ছিল।
● লেখনশৈলী —
কল্পপট এককথায় অসাধারণ। রহস্য-টুইস্টে ভরপুর। গল্পের শুরু কিছুটা ধীর গতির ছিল তবে ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে হয় নাই। লেখনী ঝরঝরে। সাবলীলভাবে চিত্রপটগুলোর বর্ণনা করা হয়েছে। তবে কিছু মেডিক্যাল টার্মের বর্ণনা একটু বেশিই হয়ে গিয়েছে বলে মনে হয়েছে।
● প্রডাকশন —
শুরুতেই বলতে হয় বইয়ের সম্পাদনা নিয়ে, বানান ভুল তেমন নেয় বললেই চলে। প্রডাকশন নিয়ে আসলে তেমন কিছু বলার নেই, বিবলিওফাইল প্রকাশনী বরাবরের মতোই প্রোডাকশন দিয়েছে। বই বলতে গেলে আরামে খুলে পড়া যায়,যাকে বলে একদম স্মুথ বাইন্ডিং।বইয়ে ব্যবহৃত ক্রিম কালারের কাগজও যথেষ্ট উন্নতমানের। প্রচ্ছদে ফুটে উঠেছে রাত এগারোটার বিভীষিকা। নামলিপিও দারুণ।
ছোট কলেবরের সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার হিসেবে বেশ ভালোই লেগেছে।
পুরো গল্পটি আমার কাছে সাহিত্যের চেয়ে বেশি কোন খবরের কাগজে পড়া মানুষের জবানবন্দী মনে হয়েছে। আমি কোন ভাবেই পড়ার সময় গল্পের মানুষগুলোর প্রতি বা তাদের জন্য কোন কিছু অনুভব করি নাই। আমি তাদের কাউকে পছন্দ তো করিই নাই, ঘৃণাও করি নাই। প্রধান চরিত্র থেকে শুরু করে প্রতিটি চরিত্র এবং ঘটনাপ্রবাহের প্রতি আমার প্রতিক্রিয়া ইংরেজী ভাষায় বলতে গেলে ছিল, "Whatever! Meh!"
গল্প খারাপ ছিল না। তার জন্যই তিন তারা। গল্পের বিন্যাস একটু খাপছাড়া মনে হয়েছে। কোন কোন জায়গায় লেখক কিছু তথ্য দিয়েছেন যেগুলোকে অযাচিত মনে হয়েছে। চরিত্রের কথা বলতে গেলে প্রধান চরিত্র বাদে সবাই সোজা বাংলায় একমাত্রিক।
সব মিলিয়ে মোটামুটি লেগেছে পাঠক হিসেবে। যেসব বই পড়ে আমি কিছু অনুভবই করতে পারি না সেটা পড়ে আসলে কিছু বলা খুব কঠিন, কারণ আমি "পড়ে আমাকে কী ফীল করালো সে অনুযায়ী বইকে বিচার করা" ধরণের পাঠক।
জমল না।শেষের দিকের টুইস্ট টা প্রেডিক্টেবল ছিল।জানতাম এমন কিছু হবে এবং তাই হল।এছাড়াও কাহিনীর গভীরতা ও তেমন নেই।সম্পত্তি নিয়ে সেই পুরনো বোতলে নতুন মদ ঢালার মত আর কি।প্রথম গল্প হিসেবে এভারেজ(লেখকের)
ছোট্ট এই বইটা পড়া শুরু করেই শেষ করে ফেললাম। থ্রিলার নয়, বরং ভালো নোয়া সাহিত্যের উৎকৃষ্ট নিদর্শন হিসেবে এটিকে তুলে ধরা যায়। সবই বড়ো সহজে, একেবারে ফর্মুলা মেনে হল। তবে পড়তে বেশ লাগল। সুযোগ পেলে পড়ে ফেলুন।
সাবলীল লেখনশৈলী, এক বসাতেই পড়ে শেষ করার মতো বই। গল্পে টুইস্টে ভরপুর ছিলো, টুইস্ট গুলো এতোটা গভীর না আরেকটু শক্তপোক্ত হলে ভালো হতো। আর গল্পে কিছু বাক্য বারবার রিপিট করা হেয়েছিল, যার কোনো প্রোয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।
বইয়ের নামঃ রাত এগারটা ক্যাটাগরিঃ রহস্য রোমাঞ্চ লেখক - মো: ফুয়াদ আল ফিদাহ প্রকাশকাল - ফেব্রুয়ারি ২০১৬ প্রকাশনী - আদী প্রকাশন মূদ্রিত মূল্য - ১৬০ টাকা। পৃষ্ঠা সংখ্যা - ১০৬ রেটিং - ৪.৫/৫
কাহিনী সংক্ষেপঃ
লালচে ঐ চোখ দুটো কার? কোন খুনির? কেঁপে উঠলাম বাস্তবতা বুঝতে পেরে। সম্বিত ফিরল অঞ্জলি থেকে পানি সিংকে পড়ার আওয়াজে। চোখ দুটো তো
আমারই-ডক্টর আশিক সরোয়ারের; যার হাতে আজ রাতে অবসান ঘটবে পক্ষাঘাতগ্রস্থ, অথর্ব এক মানুষের জীবন! পিতৃসম মানুষটিকে কেন খুন করবে ডক্টর আশিক সরোয়ার? সে কি লোভী, খুনী, নাকি বাধ্য হচ্ছে কাজটা করতে? রোমেল নিখোঁজ, রিয়া মাদকাসক্ত। তাহলে কে সামলাবে আব্দুর রহমানের বিশাল এই সম্পত্তি? লোভের বশবর্তী হয়ে বিশ্বাস ঘাতকতা করবে সে? মেরে ফেলবে একজন অচল মানুষকে? নাকি এর পেছনে আরও
বড় কোন রহস্য লুকিয়ে আছে? ও স্বার্থপর, কিন্তু খুনী তো নয়। অথচ কাজটা ওকে করতেই হবে। হ্যাঁ, না চাইলেও করতেই হবে। এছাড়া আর
কোন উপায়ও যে নেই। এর উপরই নির্ভর করছে ওর ভবিষ্যৎ- ওর স্বপ্ন, বিশ্বাস আর ভালবাসা। কি করবে এখন ও? কি ঘটবে রাত এগারোটায়?
ব্যাক্তিগত মতামতঃ
#অসাধারণ লেখনী আর সাথে টানটান উত্তেজনায় ভরপুর একটা বই।প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একটা লাইন ও
অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়নি।ছোট ছোট অংশে বিভক্ত অধ্যায় এবং অতীত ও বর্তমানের সামঞ্জস্যতার সাথে খুব
সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন লেখক যে পড়তে গেলে চোখের সামনে সব ভেসে উঠবে।প্রতিটা লাইন এবং চরিত্রই
ছিল তার নিজস্ব বৈশিষ্ট ও উত্তেজনায় পূর্ন।যার ফলে কাহিনী কোথাও একটুকুও ঝুলে পড়েনি বরং কোন প্যাড়া বা
লাইন বাদ দিলে মনে হবে যে কিছু না কিছু মিসিং হয়েছে।আর এটাই গল্পের স্বার্থকতা।
#গল্পের প্রতিটা টুইস্ট ছিল অকল্পনীয় বা আগে থেকে বুঝার কোন উপায় নেই।আমি ভাবছি এক রকম হয়েছে
আরেক রকম।গল্পের প্রতিটা মোড় আমাকে হতবাক করেছে।আর আসল টুইস্টটাই ছিল গল্পের শেষে।যাকে বলে
মাস্টার মাইন্ড প্ল্যানিং।
#চরিত্র গুলো নিয়ে আরেকবার বলার কিছু নেই।প্রতিটা চরিত্রই ছিল প্রয়োজনীয়।অপ্রোযনীয় কোন চরিত্র এখানে
আমি পাই নি।
#লেখক সম্পর্কে কিছু কথা না বললেই নয়।তার অনুবাদ কম বেশি আমরা প্রায় সবাই পড়েছি।ঝরঝরে প্রাঞ্জল
অনুবাদ।তবে মৌলিক লেখা বই আকারে এই প্রথম ই পড়লাম।নিঃসন্দেহে বলা যায় অসাধারন এবং গুছানো
লেখনীশক্তির অধিকারী তিনি।তার প্রতি রইল শুভ কামনা।অপেক্ষায় রইলাম আরো নতুন কিছু মৌলিক বইয়ের।
#ধন্যবাদ জানাই প্রকাশক সাজিদ ভাই কে এত্তো সুন্দর ও ভালো একটা বই আদী প্রকাশন থেকে বের করার
প্রথম বই হিসাবে লেখক অব্যশই প্রসংসার দাবীদার।টুইস্ট গুলা ভালো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে টেনে হিচড়ে বড় করা হয়নি লেখা। আর লাস্ট এর টুইস্ট এর কথা না ই বললাম সেটা বই টা পড়লেই বুঝবেন।
সিলেটের এক চা বাগান। কাহিনীর শুরু সেখানেই। তারপর সে কাহিনী এগিয়ে চলেছে অতীত, বর্তমানের নানা গলিতে আপন গতিতে। সেই রোমাঞ্চকর পথচলায় সঙ্গী হিসেবে আছে টানটান উত্তেজনা, রহস্যের ধুম্রজাল এবং অভাবনীয় টুইস্ট।
কাহিনী সংক্ষেপ- আশিক সরোয়ার। পেশায় একজন চিকিৎসক। কর্মসূত্রে এখন সিলেটের এক চা বাগানে। এই চা বাগান এর মালিক আব্দুর রহমান তাকে প্রচণ্ড বিশ্বাস করে। পিতৃসম এই মানুষটিই একদিন তাকে তার প্রয়োজনের সময় চাকরি দিয়ে এখানে এনেছিলেন। মানুষটি এখন পক্ষাঘাতগ্রস্থ। হাঁটাচলাসহ সব কাজ বন্ধ, কথাও বলতে পারেন না। সেই অচল মানুষটিকেই কি না তার বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে খুন করতে চলেছে আশিক সরোয়ার। কাহিনী সংক্ষেপে আর কিছু বলছি না। কারণ বইয়ের পরিধি খুবই অল্প। আর কিছু বলতে গেলে স্পয়লার হয়ে যাবার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে! অবশ্য বইয়ের কলেবর না বাড়ার কারণও রয়েছে। বইটিতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন চরিত্র আসেনি, আসেনি কাহিনীর সাথে সম্পর্ক নেই এমন কোন ঘটনাও। তাই বলা যেতে এটি মেদহীন এক বই।
লেখকের সাথে ফেসবুকে পরিচয়। আর সেই ফেসবুকের সূত্রেই পরিচয় তার অনুবাদের সাথে। ধীরে ধীরে তার অনুবাদ বের হতে থাকে ফাউন্টেনপেন পত্রিকা, রহস্য পত্রিকায়। এরপর বের হল তার অনুবাদ গ্রন্থ আদী প্রকাশন থেকে। তারই ধারাবাহিকতায় লেখকের প্রথম মৌলিক থ্রিলার ‘রাত এগারোটা’ বের হয়েছে এই বইমেলায়। তার অনুবাদে আগেই মুগ্ধ হয়েছিলাম, এবার হলাম মৌলিক লেখা পড়েও। আসলেই দারুণ এক লেখা পাঠকদের উপহার দিয়েছেন তিনি। বইটিতে দারুণভাবে তিনি পাঠকদের সামনে তুলে ধরেছেন মূল চরিত্র আশিক সরোয়ারকে। সাথে চরিত্রদের মনস্তত্ত্বও সফলভাবে বর্ণনা করেছেন। কোথাও কাহিনীর বুনট আলগা হয় নি, কমে নি গতিও। কাহিনীর শেষ পর্যন্ত রহস্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। শেষে কি হবে তার কিছুটা আগেই ধারণা করেছিলাম। কিন্তু ঘুনাক্ষরেও টের পাই নি চমক অপেক্ষা করছিল এরপরেও!
তবে বইয়ের সব দিকই যে ভাল তা নয়। কিছু জায়গায় একই ধরণের তথ্যের কথা একাধিক বার চলে এসেছে। বিশেষ করে রোমেল এবং রিয়ার প্রসঙ্গে। সাথে দুই এক জায়গায় মনে হয়েছে একটু তাড়াহুড়োর ছাপ রয়েছে। তবে এসব দিকের উপস্থিতি বইয়ে একেবারেই কম হওয়ায় উপেক্ষা করা যায়। সব মিলিয়ে বলা যায়, এক বসায় পড়ার মত দুর্দান্ত এক বই ‘রাত এগারটা’। যারা এখনো পড়েন নি, পড়ে ফেলতে পারেন। আশা করি মন্দ লাগবে না।
সবশেষে, ফুয়াদ ভাই এবং আদী প্রকাশনকে ধন্যবাদ বইটির জন্য। অপেক্ষায় রইলাম ফুয়াদ ভাইয়ের পরবর্তী মৌলিক বইয়ের জন্য। আশা করি সেটা এবারের মত উপন্যাসিকা না হয়ে সুবিশাল উপন্যাস হবে।
এক নজরে বইয়ের নাম- রাত এগারটা লেখক- মো: ফুয়াদ আল ফিদাহ প্রকাশক- আদী প্রকাশন প্রকাশকাল- বইমেলা, ২০১৬ প্রচ্ছদ- সামিউল ইসলাম অনিক গায়ের মূল্য- ১৬০ টাকা। আমার রেটিং- ৪/৫
আমি আর কাহিনী সংক্ষেপ না লিখে রিভিউ এর দিকে মনোযোগ দেই। লেখকের লেখার সাথে পরিচয় ফেসবুকের অনুবাদ গল্পগুলো থেকে। এর পরে তো নিয়মিত আকারে রহস্য পত্রিকা এবং ফাউন্টেন পেন এ প্রকাশিত লেখাগুলো পড়া হয়েছে । এই লেখকই অনলাইনে নিজের অনুবাদ করা লেখা ইবুক আকারে প্রকাশ করেন “মার্ডার অভ রজার একরয়েড” সেই হিসাবে বলা যায় এটাই লেখকের ১ম বই । তারপরে একে একে বের হয়ছে ম্যাথিউ রাইলী’র 'ট্রল মাউন্টেন' এবং নিল গেইম্যান এর 'স্টোরিজ' । আমি সবগুলোই পড়েছি । অনুবাদ গুলো পড়ে একটা ধারণা জন্মেছে যে এই লেখকের কাছ থেকে অন্তত মানস্মমত অনুবাদ পাবো ।
কিন্তু মৌলিক থ্রিলারেও যে লেখক কম যান না সেটা “রাত এগারটা” বইটা না পড়লে বুঝতে পারবেন না।অন্তত এই নিশ্চয়তা দিতে পারি । শুরু থেকেই লেখার ঢং আমাকে মুগ্ধ করেছে । আমি তো ভাবছিলাম আমি কি ফুয়াদ ভাইয়ের কোন বই পড়ছি নাকি প্রতিষ্ঠিত কোন লেখকের বই পড়ছি । যেভাবে কাহিনী এগিয়ে যাচ্ছিলো তাতে অবাক হওয়া ছাড়া উপায় নাই। লেখা আমার পছন্দের মতোই হয়েছে যে এক বসায় শেষ করে ফেলেছি । প্রথমদিকে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলো তাতে একটা ধারণা হয়েছিলো যে শেষদিকে এমন/অমন হতে পারে কিন্তু একদম শেষের দিকে গিয়ে পুরোই পরিবর্তন হয়েছে । আমার সকল ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে দিলো । কাহিনী টা আমার কাছে ভালোই লেগেছে । এমন লেখা বাংলা সাহিত্যে আরও প্রয়োজন। কিসের কথা বলছি? মেডিকেল ক্রাইম আর কি । লেখকের পরবর্তী বইয়ের অপেক্ষায় থাকলাম অধীর আগ্রহে । রেটিং : ৪.৮/৫
Baa Baa Black sheep, have you any wool, Yes sir yes sir, three bags full; কাল ভেড়াটা হল ফুয়াদ আল ফিদাহ। টাকা নষ্ট গেছে পুরাই। বাংলাদেশে কাক আর কবির নাকি অভাব নাই, এখন লেখক মনে হচ্ছে কাকের থেকে বেড়ে গ্যাছে। ফালতু বই।
নরমালি খুনখারাবি পড়ি না😩... তারপরও বইটা হাতে নিয়ে শুরু করে কিভাবে যেনো শেষ হয়ে। এমনভাবে পুরো বইতে ধরা রাখা হয়েছে গল্পটা একটু সময়ের জন্যও বিরক্ত লাগেনি। সবথেকে ভালো লেগেছে যতটুকু হওয়ার দরকার গল্পটা ঠিক ততটুকুই💞💞।
মূল ক্যারেক্টার টেনশনে পড়ে গেলে নিজেরও টেনশন ফিল হয়,,,এতটা টেনশন ক্রিয়েট হয়েছিলো আমার মধ্যে যে nauseous ফিল করছি।
গল্পটা একজন সদ্য পাশ করা ডাক্তারের....ভাগ্যের ফেঁড়ে পড়ে যাকে বেছে নিতে হয়েছে চা বাগানের জীবন...নাম তার আশিক সরোয়ার। রহমান টি এস্টেটে কমপক্ষে তিনবছরের চুক্তিতে চিকিৎসক হয়ে এসেছে সে। কিন্তু এমনটা তো লক্ষ্য ছিলো না আশিকের... ইন্টার্ন শেষ করেই এফসিপিএসে চান্স পেয়ে যায় আশিক। হঠাৎ করেই সব ছেড়ে চলে আসতে হয় এই চা বাগানে চাকরি নিয়ে...কিন্তু কেনো?
কারণটা জানতে হলে, যেতে হবে একটু ফ্ল্যাশব্যাকে....। তিনবছর বয়সে বাবা-মা কে হারিয়ে নিঃসন্তান চাচা-চাচীর কাছে সন্তানের মতোই বড়ো হয়েছে আশিক। চাচা-চাচীর একমাত্র চোখের মণি হলেও তাদের প্রতি আশিকের দায়বদ্ধতা ছিলোনা কোনোও বরং সর্বদা নিজের ক্যারিয়ার আর স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছে সে। টনক নড়লো যখন বাড়ি বন্ধক রেখে চাচা হঠাৎই মারা গেলেন হার্ট এটাকে। এদিকে চাচীরও দুটো কিডনিই নষ্ট...অনেক অনেক টাকা দরকার আশিকের....
চা বাগানে ফিরে আসি এবার... সব সমস্যা মাথায় নিয়ে আশিকের যখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা ঠিক তখনই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় রহমান টি এস্টেটের মালিক আব্দুর রহমান আর তার স্ত্রী রওশন আরা রহমান। চাকরির পাশাপাশি বিরাট অঙ্কের লোনও পায় আশিক। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল কিন্তু রওশন ম্যাডাম মারা যাওয়ার পরপরই বদলে যায় পরিস্থিতি। অবাধ্য হয়ে ওঠে রহমান সাহেবের দুই ছেলে-মেয়ে রোমেল আর রিয়া। একজন নিখোঁজ হয়ে যায়, আরেকজন হয়ে পড়ে মাদকাসক্ত। সন্তানের দুশ্চিন্তায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন রহমান স���হেব। পাওয়ার অফ এটর্নি তুলে দেন উকিল বন্ধু আবরার চৌধুরীর হাতে।
এবার আসি 'রাত এগারটা' প্রসঙ্গে.... বইয়ের নাম ' রাত এগারটা' কেনো? কি ঘটবে রাত এগারটায়? এসব কিছুর সাথে আশিক সরোয়ারই বা কি সম্পর্ক? অনেকগুলো প্রশ্ন করে ফেললাম...আসেন উত্তরটাও বলে দিই ;) দিনের পর দিন হিসেব কষে কষে একটা খুনের ছক করা হয়েছে....খুন হবে একজন অথর্ব মানুষ আর খুনটা করবে আমাদের পরিচিত ডা: আশিক, ঠিক রাত এগারটায়....কিন্তু কেনো? আশিক স্বার্থপর হতে পারে কিন্তু খুনী তো নয়...! কিন্তু আশিকের চাই অনেক অনেক টাকা....তবে কি লোভের বশবর্তী হয়ে সে খুন করবে? নাকি সবকিছুর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কেউ যে বাধ্য করছে আশিককে খুনী হতে....!
জানতে হলে বইটি পড়ে ফেলুন পাঠকরা....আপনাদের আমন্ত্রণ রইলো খুন, ভালোবাসা, রহস্য আর বিশ্বাসঘাতকতার এক উপাখ্যানে...।
বইয়ের চেয়ে রিভিউ হয়তো বড়ো হয়ে গেলো ^_^। 'রাত এগারাট' লেখক মো: ফুয়াদ আল ফিদাহর প্রথম মৌলিক উপন্যাস। প্রথম হিসেবে তিনি দারুণ লিখেছেন। পুরো গল্পটি প্যারালাল স্টাইলে বর্ণনা করে একদম শেষে রেখেছেন চমকপ্রদ এক টুইস্ট। বেশ উপভোগ করেছি ডিপ্লোম্যাটিক কেন্দ্রীয় চরিত্র আশিক সরোয়ারকে, এন্টাগোনিস্ট চরিত্রের রিয়াকে আর আবরার চৌধুরীর বিশ্বস্ত কর্মচারী তামান্নাকে (যদিও তামান্না সম্পর্কে রিভিউতে কিছুই বলিনি, পাঠকদের জন্য এই চরিত্রটা একটা ধাঁধাঁ)। লেখকের বর্ণনাভঙ্গি বেশ ভালো যদিও কিছু কিছু অপ্রচলিত শব্দ ব্যবহার করেছেন মাঝেমধ্যে তবে তা সংখ্যায় অপ্রতুল হওয়ায় বুঝতে খুব একটা সমস্যা হয়নি।
বইটাকে রহস্যোপন্যাস আর থ্রিলার এর মাঝামাঝি বলা যায়। পড়ার সময় যেমন অসাধারণ রোমাঞ্চ অনুভব করেছি তেমনি অসংখ্যবার হারিয়েছি রহস্যের ধুম্রজালে। যদিও প্রথমদিকে গতি খুবই মন্থর ছিলো। কিন্তু দশম পরিচ্ছেদ থেকে গতি আশানুরূপভাবেই বেড়েছে আর ধরে রেখেছে একদম শেষ পর্যন্ত। যদিও দু'একটা জায়গায় প্রকাশভঙ্গী একটু অন্যরকম হলে ভালো হতো। উদাহরণ দিতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু মনে পড়ছে না। যাই হোক, ট্যুইস্টগুলো অসাধারণ ছিলো, বারবার মুগ্ধ হয়েছি।
এর আগে লেখকের অনুবাদ পড়েছি ২-৩টা।এই প্রথম তাঁর মৌলিক বই পড়লাম।পড়ার সময় মনে হয় নাই যে নতুন কোন লেখকের প্রথম রচনা পড়ছি,বরং হেডলি চেজ এর পরিণত উপন্যাসের স্বাদ পেয়েছি।কিছু জায়গা প্রেডিক্টেবল বলা যায় অবশ্য,তবে প্রথম লেখায় এইটুকু মাফ করাই যায়।ভবিষ্যতেও ইনি এরকম বই উপহার দেবেন বলে আশা রাখি।
সদ্য ডাঃপাশ করেছে আশিক সরোয়ার।বেশ ছোটবেলায় বাবা মাকে হারানোর পর চাচা চাচীর কাছেই মানুষ।চাচার কোন সন্তান ছিলো না বিধায় নিজের সন্তানের মত আদর দিয়েই নিজেফ সর্বস্ব দিয়ে আশিকের সব চাহিদা মিটানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ডাঃ পাশ করার পরেও সংসারের প্রতি অমনোযোগি আশিক।একদিন হার্ট অ্যাটাকে মারা যায় মাথার উপর ছাদ নামক সেই চাচাও।তবে চাচার মৃত্যুর জন্য নিজের অবহেলাকেই দায়ী করে নিজেকে প্রায়শই অভিসম্পাত করে আশিক।
চাচা মারা যাওয়ার পর নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সকল সাংসারিক ভার এসে পড়ে আশিকেরে উপর। তখন টনক নড়ে তার।তার চাচা দেনাগ্রস্থ ছিলেন আর পাশাপাশি নিজের একমাত্র চাচীও ভুগছেন ভয়ানক কিডনী ডিজিসের শেষ অবস্থায়।চাচীর চিকিৎসা আর বাড়ি রক্ষা করতে হলে দরকার অনেক টাকার। কিন্তু এতো টাকা পাবে কোথায় সে?চোখে মুখে উপায় খুঁজে না পাওয়ার হতাশা! ঠিক সেই সময়েই যেনো সৃষ্টিকর্তা তার সাহায্যের জন্য পাঠায় আব্দুর রহমান ও তার স্ত্রী রওশন আরা রহমান।
রহমান টি স্টেটের মালিক রহমান সাহেব চা বাগানের ডাঃ দায়িত্ব টা দেন আশিক কে বিনিময়ে তাকে দেওয়া হবে প্রতিমাসে মোটা অংকের বেতন দুঃসময়ে এমন একটি অফার রীতিমত লুফে নেয় আশিক।আশিকের পরিবারে সুখের ছায়া নামতে শুরু করলেও সেই সময়ে রহমান সাহেবের পরিবারে নেমে আসে দূর্যোগের ঘনঘটা।স্ত্রী রওশন আরা মারা যান। ঘটনা তখন যেনো মোড় নেয়।একমাত্র ছেলে রোমেল নিজের বাসার চাকর রমিজ কে হত্যা করে জেলে যায়।কিন্তু কেন হত্যা? জেল থেকে পালানোর সময় নিখোঁজ হয় একমাত্র ছেলে রোমেল!শকটা নিতে পারেন নি রহমান সাহেব।দ্বিতীয় বারের মত স্ট্রোক করে একেবারে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে বিছানা নিতে হয়। এদিকে রহমান সাহবের এক মাত্র মেয়ে হয়ে যায় নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে!
ঠিক সেই সময়ে রিয়া নিজের বাবাকে খুন করার পরিকল্পনা করে।আর সেই পরিকল্পনায় নিয়ে নেয় ডাঃ আশিক কেও। কি এমন করেছিল আশিক যার জন্য খুনের মত কাজে কারো অংশীদারী হতে বাধ্য হয়? এরই মধ্যে পরিকল্পনা মাফিক রহমান সাহেবকে খুনের ছক আঁকে রিয়া ও আশিক।ঠান্ডা মাথায় খুন করা হবে রহমান সাহেব কে।সময় ঠিক করা হয় রাত এগারটা।চাচীর অপারেশনের জন্য আশিকের টাকার প্রয়োজন,রহমান সাহবে মারা গেলে সে যথেষ্ট টাকা পাবে।কিন্তু নিজের বাবাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করার পিছনে রিয়ার কি স্বার্থ লুকিয়ে আছে?
যে লোকটা বিপদে ত্রাণকর্তার মতো পাশে ছিল তাকে শেষ অবধি কি খুন করতে পারে সে?আশিক স্বার্থপর, কিন্তু খুন করার মত মানু্ষ না। তবে কি শুধু লোভের বশেই এই হত্যা পরিকল্পনা? শুধু লোভ? নাকি এর পিছনে লুকিয়ে আছে অন্য কোন কারন? সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে যারা পাঠককে অবশ্যই বইটি পড়তে হবে।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ মৌলিক গল্প হিসেবে রাত এগারোটা ভালো মানের থ্রিলার বই।যেহেতু একজন ডাঃ কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে গল্পের প্লট তাই আর লেখক ও পেশায় একজন ডাঃ তাই পাঠক বইয়ে চিকিৎসা বিদ্যার বেশ কিছু ব্যাপার সম্পর্কে জানতে পারবে। গল্পের শেষে ছিল চমকপ্রদ সব টুইষ্ট।যা পাঠক আগে থেকে আঁচ ও করতে পারবে না। লেখকের প্রথম লিখা হিসেবে রাত এগার টা নিঃসন্দেহে দারুন একটি বই।কিছু কিছু জায়গায় বইটি পড়ে একটু বিব্রত হলেও তা বইটির অন্য অংশের জন্য বলা বাহুল্য।উপন্যাসের শেষে লেখক যে চমকপ্রদ টুইষ্ট রাখেন তা পাঠক আগে থেকে ধারনা করা দূরে থাক,আঁচ ও করতে পারবে না।নিঃসন্দেহে এজন্য লেখক প্রশংসার দাবিদার। তবে লেখক বর্তমানের পর গল্প বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য অতীতের কাহীনি ঢুকিয়ে দেওয়ায় প্রথম দিকে একটু বিরক্ত হলেও পরে ভালো লাগে।এমন ধরনের লিখা আমার প্রথম পড়া। এছাড়া বইয়ে কোন শব্দ বা বানান ভুল পাইনি।ভূমিকা পড়লেই পাঠক বুঝতে পারবেন লেখক বেশ আন্তরিকতার সাথে বইটি লিখেছেন।লেখকের প্রথম মৌলিক গল্প হিসেবে যথেষ্ট ভালো ছিল।তাই যেকোন থ্রিলার প্রেমি বইটি নিঃসংশয়ে পড়ে ফেলতে পারেন।
বর্তমান সময়ের পাঠকপ্রিয় অনুবাদকদের একজন মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ। বইটই অ্যাপ থেকে উনার প্রথম মৌলিক গ্রন্থ রাত এগারোটা পড়ে শেষ করলাম। ১১২ পৃষ্ঠার একটি থ্রিলার উপন্যাসিকা রাত এগারোটা। মাঝে মধ্যেই বড় বড় বই পড়ার ফাঁকে এরকম উপন্যাসিকা পড়তে আমার বেশ ভালো লাগে। সেই হিসেবেই বইটা পড়া।
রাত এগারোটার প্লট মোটামুটি ছিল। সাধারণত একটি থ্রিলার উপন্যাসিকার খুব জটিল বা গভীর কোন প্লট থাকেও না। প্লট মোটামুটি হলেও বইটি বেশ গতিশীল ও গ্রিপিং ছিল। একদম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ বইটি উত্তেজনা ধরে রাখতে সক্ষম ছিল, যেটা থ্রিলার উপন্যাসিকার ক্ষেত্রে আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। বিশেষ করে বইয়ের শুরুটা বেশ ভালো ছিল, পৃষ্ঠা ��ল্টানোর আগ্রহ জাগাতে পেরেছে প্রথম থেকেই। ছোট ছোট ২৭টি অধ্যায়ে লেখক বইটিকে ভাগ করেছেন। অতীত এবং বর্তমানের অধ্যায় প্রথম থেকেই ক্রামানুসারে এসেছে। ঘটনাপবাহের বর্ণনা সুন্দরভাবে দিয়েছেন লেখক। প্রতি অধ্যায়ে টাইমলাইনও পরিবর্তন করেছেন সুইফটলি । এইভাবে অধ্যায়গুলো সাজানোটা বেশ ভালো লেগেছে, একটা ডিফেরেন্ট ফ্লেভার যোগ হয়েছে বইটিতে।
উপন্যাসিকা হিসেবে চরিত্রায়ন যথাযথ লেগেছে। অতীত ও বর্তমান অংশ ক্রমানুসারে আসায় চরিত্রগুলো ফুটে উঠতে পেরেছে। ১১২ পৃষ্ঠার বইয়ে যার যতটুক ফোকাস দরকার ঠিকভাবেই পেয়েছে।
লেখকের বর্ণনাভঙ্গী এমনিতে সাবলীল লাগলেও মাঝে কয়েকটা বাক্য ও সংলাপ ( বিশেষ করে সংলাপ) কিছুটা বেখাপ্পা মনে হয়েছে। তবে প্রথম মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে বেশ ভালো লেখনী বলব। বইয়ের এন্ডিংয়ে পৌঁছানোর আগেই ধারণা করতে কোন অসুবিধা হয়নি যে এরকম কিছু একটাই হবে। কিন্তু প্রেডিক্টেবল হলেও এন্ডিংটা মোটামুটি ভালোই লেগেছে। তবে এন্ডিংয়ে ( টুইস্টের ডেলিভারীতে) আমার মনে হয়েছে লেখক বেশি তাড়াহুড়ো করে ফেলেছেন । মনে হয়েছে শেষের দিকে অনেক তাড়াতাড়ি সব কিছু গুটিয়ে ফেলতে চেয়েছেন ।
আমি বইটই অ্যাপে খুব কম দামে পড়েছি বইটা। ইবুক পড়ায় বাঁধাই, প্রচ্ছদ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছি না। কিন্তু ছবিতে দেখে প্রচ্ছদটা বেশ ভালোই লেগেছে, কাহিনীর সাথে মানানসই।
সর্বোপরি, রাত এগারোটা মোটামুটি ভালো একটি থ্রিলার উপন্যাসিকা। শর্ট রিড হিসেবে ভালোই উপভোগ করেছি। এক বসায় পড়ার মতো একটি বই। যারা আমার মতো মাঝেমধ্যে এরকম পিচ্চি থ্রিলার পড়তে পছন্দ করেন তারা পড়ে দেখতে পারেন।
মানুষের লোভ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, অবিশ্বাস, মুখে মধু অন্তরে বিষ, প্লানের আড়ালে প্লান এসব নিয়েই এগিয়েছে আখ্যান।
বইঘরের ইবুকটায় বেশ কিছু বানান ভুল। আবার ফন্টের সাইজও দাপাদাপি করে বেড়িয়েছে। লেখকের প্রথম মৌলিক বই আর এতে লেখক মনখুলে টুইস্ট দিয়ে গেছেন প্রতি অধ্যায়ে, যা কিছুটা বিরক্তি ঘটিয়েছে বলাটা ভুল কিছু না।
বেশ ভাল থ্রিল পেয়েছি বইটা পড়ার সময়...একটানা বসে শেষ করেছি মাঝে ২ ঘণ্টা ব্রেক নিয়েছিলাম। তবে একটা নেগেটিভ দিক আছে সেটা আমার ক্ষেত্রে হয়েছে বাকিদের ক্ষেত্রে হবে নাকি জানা নাই, সেটা হল অতিরিক্ত মেডিকেল related বর্ণনা। বারবার এরকম মেডিকেল condition পরতে পরতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম...সেটা বাদ দিলে Overall ভালই লেগেছে।
আমি সবসময় চেষ্টা করি নতুন লেখদের সাপপোর্ট করতে, তাই বইগুলো কিনি। আসলে বইটি লেখার মান কোন লেভেলে ছিলোনা। মনে হচ্ছিল ফেসবুকের কোনো পোষ্ট করা গল্প পড়ছি। আসা করছি লেখক সামনে তার লেখার মানের দিকে যেন একটু দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
খুন হবেন সিলেটের চা বাগানের মালিক, আব্দুর রহমান সাহেব । অগাধ সম্পত্তি তাঁর, কিন্তু পক্ষাঘাতে দিন কাটছে বিছানায়। স্ত্রী গত হওয়ার পর মাদকাসক্ত কন্যা রিয়া আর নিরুদ্দেশ পুত্র রোমেল তাঁকে শান্তি দিতে পারেনি।
চা বাগানের চিকিৎসক আশিক সরোয়ার। চরম বিপদের সময় তাকে উদ্ধার করে এনে এই চাকরিটা দিয়েছিলেন রহমান সাহেব। বাগানের কুলিদের মধ্যেও রহমান সাহেব জনপ্রিয়। অন্য মালিকদের মতো অমানবিক আচরণ করেন না, কুলিদের বাড়তি সুযোগ সুবিধার দিকে নজর রাখেন।
এহেন ত্রানকর্তার কেন আজ অন্তিম মূহুর্ত উপস্থিত? মানুষের লোভ, জিঘাংসা আর স্বার্থপরতার শিকার কি হতেই হবে তাকে?
পছন্দের লেখকদের সব বই পড়ে ফেলার একটা বাতিক আছে আমার। মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ'র অনুবাদ পড়ে তাঁর লেখনীর প্রতি আস্থা ছিল আগেই। পরবর্তীতে 'নীল নক্সা' আর 'চন্দ্রাহত' মৌলিক উপন্যাস দুটি তাঁর অসাধারণ গল্প বলার জাদুতে আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছে। তারপরই রকমারিতে হানা দিলাম, লেখকের কোনো লেখা বাদ দেওয়া যাবে না! সেই ধারাবাহিকতায় পড়লাম মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ'র প্রথম মৌলিক থ্রিলার 'রাত এগারটা'।
'রাত এগারটা'কে উপন্যাস না বলে, ছোট গল্প আর উপন্যাসের মাঝামাঝি উপন্যাসিকা বলা যায়। লেখক কোনো অতিরিক্ত বর্ণনা রাখতে চাননি, তাই গল্পটি ছোট হলেও টানটান। গল্প বলা হয়েছে উত্তম পুরুষে। মূলত ডাক্তার আশিক আর রহমান-তনয়া রিয়ার বয়ানে পুরো কাহিনীটি পাঠক জানতে পারবেন। গল্প শুরুই হয়েছে খুনের ছক দিয়ে, প্ল্যানিং ও পটভূমি জানার মধ্য দিয়ে চরিত্রগুলো রূপ বদলাবে বারবার। কার কী উদ্দেশ্য বুঝে উঠতে উঠতেই গল্প ক্লাইম্যাক্সে মোড় নিবে। তবে পুরো মাস্টার প্ল্যানের কিছু ধাপ মনে হলো কাকতালের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
লেখকের কলম যে শানিয়ে উঠবে পরবর্তীতে, তার আভাস মিলেছে প্রথম উপন্যাসেই। লেখনী ও ভাষা যথেষ্ট সাবলীল। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন টার্ম ব্যবহার করা হয়েছে গল্পে, সেগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে সহজ করে। বইয়ের শুরুতে চিকিৎসকদের শপথ সংযোজন করাটা অর্থবহ ছিল। বইটি কেনার সময় লেখকের পরিচয়ের পাশাপাশি, আরেকটা আকর্ষণ ছিল সিলেটের চা বাগান। অল্প করে হলেও, বাগানের মায়াময় পরিবেশ ও কুলিদের অমানবিক জীবনের একটা চিত্র পাওয়া যায় বইয়ে।
উপন্যাসিকার শেষে কিছু প্রশ্নের উত্তর মিললো না বলে মনে হয়েছে। রহমান সাহেবকে রিয়া যেভাবে উপস্থাপন করেছে, সেটাই সত্যি কিনা বিভ্র��ন্ত ছিলাম। আসলাম চরিত্রটির ব্যাপারে পাঠক জানবেন কেবল রিয়ার বয়ানে, তার কতটা বিশ্বাসযোগ্য কে জানে! রোমেলের পরিণতি নিয়েও আশিক ও রিয়ার মধ্যে বিভ্রান্তি ছিল। রোমেলের কী হয়েছে নিশ্চিত ভাবে না জেনে তো সম্পত্তির বাটোয়ারা করা সম্ভব নয়। তবে এগুলোর উত্তর না পাওয়াটা কিছুটা আমার কাছে লেখকের মুন্সিয়ানাই মনে হয়েছে। সব সমাধান পেতে চাইলে গল্পটি অহেতুক দীর্ঘ হয়ে যেত।
প্রচ্ছদ খুব একটা প্রাসঙ্গিক মনে হয়নি। বাঁধাই ভালো হলেও, মাত্র ১০৭ পৃষ্ঠার খসখসে পাতার একটি বইয়ের মূল্য কেন ১৬০ টাকা ধার্য করা হলো বুঝলাম না। আদী প্রকাশনের কর্ণধাররা ভালো বলতে পারবেন।
প্রিয় লেখকের পরবর্তী নতুন বই হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রইলাম।
ভদ্রলোক ডাক্তার। আবার বই লেখেন এবং অনুবাদ করেন। বইয়ের প্রকাশনার সাথেও জড়িত। আগে অনুবাদ পড়েছি, কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছেন মৌলিক দিয়ে।
সাধারণত থ্রিলার বই বিশাল সাইজের হয়, সে তুলনায় কলেবর অনেক ছোট। কিন্তু তাই বলে ভাববেন না থ্রিলারের কোন উপকরণের কমতি আছে। মন্ত্রমুগ্ধের মত টেনে নিয়েছেন পুরো বই জুড়ে। ছোট ছোট অধ্যায়, অতীত আর বর্তমান কাহিনী চিত্রণ করে গল্প এগিয়েছে। খুব বড়সড় ট্যুইস্ট ছিল না, তবে একদম শেষদিকে অপ্রত্যাশিত চমক দিয়ে পুষিয়ে দিয়েছেন। এতটুকু কাহিনীতে আবার বাঙালি ডাক্তার এর দু:খ-দুর্দশা-হতাশাও ফুটিয়ে তুলেছেন। বই শেষ না করে কোনমতেই গল্প কোনদিকে এগোচ্ছে, কে-কাকে নিয়ন্ত্রণ করছে বুঝে উঠতে পারবেন না। একটাই অভিযোগ, বইটা আরেকটু সাইজে বড় হলে আরো বেশী ভালো লাগত মনে হয়।
ধন্যবাদ মোহাম্মদ ফুয়াদ আল ফিদাহ ভাই অসাধারণ এই বইটি উপহার দেবার জন্য ডাক্তারি করতে থাকেন, সাথে মাঝে মাঝে এরকম ফাটাফাটি মৌলিক থ্রিলার আমাদের উপহার দিয়ে কৃতার্থ করবেন