সুন্দরবনের বাঘ আমাদের জাতীয় গর্বের সর্বোচ্চ স্মারক। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর মিথের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বাঘ। বাঘের ক্ষিপ্রতা আর শারীরিক শক্তির কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে বলবান মানুষটির নিতান্ত অসহায়। সুন্দরবনের মতো জঙ্গলে এ রকম একটি প্রাণীর পেছনে লেগে থেকে তার সম্পর্কে জানা খুবই কঠিন কাজ। সেই কাজটি করেছেন লেখক। সুন্দরবনের বাঘের আদ্যন্ত জানতে এ বইটির জুড়ি নেই।
সেবা প্রকাশনীতে অনুবাদ করেছেন দীর্ঘকাল; নিবাস, নওগাঁ।
খসরু চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই দক্ষিণ বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে জীবজন্তুর সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ পান। ১৯৭১ সালের মহান মক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন কলেজ-ছাত্র অবস্থায়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য অনুষদের ছাত্র অবস্থায় ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামা শিকারি আকতারুজ্জামানের হাত ধরে সুন্দরবন গিয়ে ভালোবেসে ফেলেন জল-জঙ্গলার বাঘ। ১৯৮৫ সালে অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক রোববার পত্রিকায় সুন্দরবন সংক্রান্ত লেখা দিয়ে তার লেখার জগতে প্ৰবেশ। তারপর দেশের উল্লেখযোগ্য প্রায় সব কটি পত্রিকায় বাঘ বা সুন্দরবন নিয়ে লিখেছেন। ছাত্র রাজনীতি করেছেন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন, চলচ্চিত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাংবাদিকতা করেছেন। দেশের অগ্রগণ্য বাঘ বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাঘ বাঘ রক্ষায় নিতয় চেষ্টা করে চলেছেন।
ভাষা প্রতিযোগে জেতা আরেকটি বই। এই এক বইয়েই সুন্দরবন আর বাঘমামা নিয়ে এতো জেনেছি যে পুরো স্কুল-কলেজ জীবনে পড়া সবগুলো বই একত্র করে এতটা জানা হয়নি। অনেক তথ্য অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক ভঙ্গিতে লেখা। আর হ্যাঁ, ক্লাস টেন পড়ুয়া আমার কাছে বইটির মলাট খুব ভালো লেগেছিল।
রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়ে অনেক না জানা তথ্য জানতে পারলাম। ফানি বোন, বাঘের লোম খাওয়া, পিঠে শিকার বয়ে নেয়া ও ১১ ফুট বাঘের মিথ, টেনে চামড়া লম্বা করা, ২৪০° দৃষ্টি, টেপেটাম, খাদ্য ও শিকার ধরার বৈশিষ্ট্য, বাঘের জীবনাচরণ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা আছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন মানুষখেকো বাঘ যেমন সুপতি, কাঁটাখালী ও মরা পশরের জটাধারী বাঘের কাহিনীও আছে।
খসরু চৌধুরী দীর্ঘদিন সুন্দরবনে বাঘের পিছনে ঘুরেছেন। তাঁর নানা অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে আছে বইটা জুড়ে। তবে সবচেয়ে বিরক্ত লেগেছে কোনো ম্যাপ না থাকায়। কটকা কই আর কচিখালী কই, চাঁদপাই কোনদিকে আর জয়মনি কোনদিকে, কাটাখালী আর শরণখোলার অবস্থান কোথায় - এসব ভাবতে ভাবতে দেখি কাহিনী শেষ!
বাঘ ছাড়াও সুন্দরবনের চিতল ও মায়াহরিণ, শূকর, বড়গুঁই (ওয়াটার মনিটর), সি ঈগল ইত্যাদি নিয়েও কিছু তথ্য আছে। একগাদা গাছ ও পাখির উল্লেখ আছে। নব্বই ভাগই চিনতে পারিনি।
সুন্দরবনের বাঘ নিয়ে বিশদভাবে জানতে হলে বইটি অবশ্যপাঠ্য। যদিও এখন আউট অব প্রিন্ট। রেটিং ৪/৫।
This a memoir as well as a research book.....This can be called as the 'Bible of the Royal Bengal Tiger'.... Nothing more to write. If you want to know about the Bengal Tiger, This book is a must......