১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট, বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক ভয়াবহ কালরাত্রি। এই দিন ভোর রাতে বাঙলাই জাতির পিতা এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশের বাঙালি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্যকে বিনষ্ট করার জন্য বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহলের সমর্থনে এক সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্রের ফল হিসাবে সংগঠিত হয় এ হত্যাকাণ্ড।
'মুজিবের রক্ত লাল' পুস্তকে এই বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের পটভূমি বর্ণনা করা ছাড়াও কীভাবে হত্যাকাণ্ড সমাধা হয়েছে তার বিবরণ দেয়া হয়েছে এবং পর্দার অন্তরালে যারা অত্যন্ত সঙ্গোপনে জড়িত ছিলেন, প্রকাশ করা হয়েছে তাদের ভূমিকাও।
M. R. Akhtar Mukul (in Bengali: এম. আর. আখতার মুকুল) was a Benaglee author and journalist from Bangladesh; earned fame for Chorompotro, a radio programme from Shwadhin Bangla Betar Kendra.
একাত্তর সালে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ, লড়াই কি কেবল বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল? যারা গড়পড়তার সীমাবদ্ধ চিন্তা করেন তারাই এ সীমাবদ্ধ ভাবনায় ডুবে থাকতে পারেন, ডুবে থাকতে ভালোওবাসেন। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে দুনিয়ার অনেক দেশ, দেশের নেতাও জড়িত হয়েছিল। এমআর আখতার মুকুলের লেখা ‘মুজিবের রক্ত লাল’ পুস্তকের ৪২-৪৩ পৃষ্ঠার মুজিব আর সৌদি বাদশাহ ফয়সলের ইন্টারভিউ থেকে বুঝতে পারা যায় খুব সহজে।একান্ত ইচ্ছা থাকলে সাক্ষাৎকারটি পড়তে পারেন স্পয়লার থেকে । এবং এটাও বুঝতে পারা যায়, ১৯৭৫ সালের পনেরোই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হলে সৌদি আরব কত দ্রুত পরবর্তী খুনি সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পটভূমি কেবল উপমহাদেশের রাজনীতির ঘোরাটোপে বন্দি কোনো অনুষঙ্গ নয়, এ ছিল ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীন পর্যস্ত বিস্তৃত এক জটিল অঙ্কের জাল, কারও কারও ব্যক্তিগত পরাজয়ের শোধ তোলার ঘৃণ্য ইচ্ছার নগ্ন প্রকাশও। কীভাবে কেমন করে কোন কোন দেশের সহায়তায় স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এ নির্মম ও পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেসব অজানা ঘটনার চমৎকার ও সাবলীল বর্ণনার ভেতর দিয়ে এমআর আখতার মুকুল লিখেছেন অনন্য ঐতিহাসিক প্রামাণ্য বই ‘মুজিবের রক্ত লাল’।
গ্রন্থের প্রথম প্রকাশের ভূমিকায় লেখক লিখেছেন- ‘বাংলাদেশের বাঙালি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস এবং একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্যকে বিনষ্ট করার জন্য বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলের সমর্থনে এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে।
বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। গোটা বই আদ্যোপান্ত পাঠ করে আমার মনে হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট মুজিব হত্যা : লন্ডন টিভিতে ফারুক রশিদের প্রকাশ্যে স্বীকারোক্তি’ এই সাক্ষাৎকারটা বাংলাদেশের ইতিহাসের মোচড়ে বড় একটি দাগ। কেননা, এ সাক্ষাৎকারের ভেতর দিয়ে ফারুক ও রশিদের সব কর্মকাণ্ডের একটি নিখুঁত খতিয়ান উঠে এসেছে। নির্মম হত্যার আগে ওরা কোথায় কোথায় কার সঙ্গে কবে এ বিষয়ে কথা বলেছে, সময় তারিখ মিলিয়ে আদ্যোপান্ত জানা যায়- এ দুই খুনির মুখ থেকে। সাক্ষাৎকারের শুরুতে এমআর আখতার মুকুলের ছোট্ট একটা ভূমিকা আছে, যে ভূমিকা পাঠ করার সঙ্গে সঙ্গে এ দেশের মানুষের মনে তথাকথিত ক্লিন রাজনীতির একজন জেনারেল সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। এমআর আখতার মুকুল লিখেছেন- ‘এসব কর্মকাণ্ডের মাত্র নয় মাস পর ১৯৭৬ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে লন্ডনে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের আলোচ্য মেজরদের নেতা ফারুক ও রশিদ এক চাঞ্চল্যকর সাক্ষাৎকার প্রদান করে। এ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করলেন উপমহাদেশের বিতর্কিত সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকার্নহাস। এক পশ্নের জবাবে ফারুক-রশিদ সপরিবারে প্রেসিডেন্ট মুজিব হত্যার কথা স্বীকার করল এবং বলল যে, জেনারেল জিয়াউর রহমান ষড়যন্ত্রের কথা অভিহিত ছিলেন।’ এই জেনারেল কীভাবে কেমন করে নির্মম নিষ্ঠুর হত্যার পেছনের কুশিলব হল, জানতে হলে গোটা সাক্ষাৎকারটাই পাঠকদের পাঠ করা দরক��র। গোটা সাক্ষাৎকার কোথায় আছে? এমআর আখতার মুকুলের বই ‘মুজিবের রক্ত লাল’-এ পাবেন। এ ধরনের আরও অনেক অজানা তথ্য এ বইয়ের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় ছড়িয়ে রেখেছেন মুকুল।
শিরোনামের শুরুতেই এমআর আখতার মুকুল লিখেছেন- ‘পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ব্রিটেনের দু’শ বছর এবং পাকিস্তানের ২৩ বছরের শাসন ও শোষণ এর জন্য দায়ী। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে এত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হওয়া তো দূরের কথা, দিনদিন অবনতি হচ্ছে কেন? এ প্রশ্নের জবাবে নিঃসন্দেহে বলা চলে যে, বাংলাদেশের ব্যুরোক্রেসিই এর জন্য মূলত দায়ী। স্বাধীনতার পর পরই যেদিন অফিসারদের চাকরি অব্যাহত রেখে পাকিস্তানি যুগ থেকে সিনিয়রিটি দেয়ার সিদ্ধান্ত হল সেদিনই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বানচাল করে বঙ্গবন্ধুকে নিশ্চিহ্ন করার বীজ বপন করা হল।’
এম আর আখতার মুকুলের লেখা বরাবরই অসাধারণ,এটাও ব্যতিক্রম নয়।মানুষ বঙ্গবন্ধুর বেশ ভালো একটা বর্ণ্না বইতে পেয়েছি,বঙ্গবন্ধুর কাছের মানুষ ছিলেন বলেই সম্ভবত উপস্থাপনার ফর্মালিটি এড়িয়ে চলেছেন;এটা আনন্দদায়ক।প্রথম দিকের কয়েকটা অনুচ্ছেদে বঙ্গবন্ধুর সাথে অন্যান্য নেতাদের আলাপচারিতা এর অংশ,বিশেষত গাদ্দাফি,বাদশাহ ফয়সাল,ক্যাস্ট্রো এর সাথে কথোপকথন বেশ গুরুত্ববহ।যারা ৭৫ পূর্ববর্তী বাংলাদেশের হিস্ট্রি,বা বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে তার চিন্তাভাবনা/পরিস্থিতি নিয়ে জানতে আগ্রহী,তাদের জন্যে অবশ্যপাঠ্য।
"বটগাছ পইড়া গেলে হাওয়ার দাপট টের পাইবেন-বঙ্গবন্ধু।
The most authentic book relating about the conversion of bangabandhu with world leaders at Nam meeting 1973, further also has shown many major incident such as the famine of 1974 or how instead of putting the collaborators to trial they were released through corrupted awami league leaders, also had shown how helpless bangabandhu was made by them Further has given a brief political history from 1946 uptill the election of 1970 with it where some facts such as Mir Jafar existed even during our liberation war Overall the book is great especially for a person who wants to know max by reading only one volume