CHAYAMARICHER PREM A fiction by Nilanjan Chattopadhyay
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ- অগ্নিভ সেন
গণ্ডগ্রামে বিস্কুটের কারখানা চালু করেছিল সুশীল মেহেতা। চালাতে পারে না। কারখানা চিরতরে বন্ধ হওয়ার পরে সুশীল দেশে ফিরে যায়। পরিত্যক্ত জনহীন কারখানা ধীরে-ধীরে পরিণত হয় পোড়োবাড়িতে। সেই পোড়বাড়িতেই একদিন দেখা যায় কিছু অচেনা মানুষের আনাগোনা। কারা ওরা? মাওবাদী! কৌতূহল দেখাতে গিয়ে ধরা পরে যায় হোমগার্ড মহিম। পাওয়া যায় তার লাশ।
সপ্তর্ষি আই.পি.এস. ট্রেনিং -এর পরে এস.ডি.পি.ও. হয়ে ঢুকেছে জেলায়। খবর পেয়ে আসে অকুস্থলে। তারপর?...
সপ্তর্ষির বিয়ে হয় চনমনে তরুণী মন্দ্রার সঙ্গে। ...কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে মন্দ্রার মাথায় বাজ পড়ল। সে বিছানায় আবিষ্কার করল, সুঠাম দেহধারী সপ্তর্ষি ‘নপুংসক’! তারপর?...
মন্দ্রার সঙ্গে হঠাৎ দেখা হয়ে গেল পুরোনো বন্ধু শুভজিৎ-এর। উপোসী মন্দ্রা জড়িয়ে পড়ল শারীরিক সম্পর্কে। তারপর?...
প্রেম-রহস্য-খুন এর টানাপোড়েনে টানটান ছায়ামারীচের প্রেম।
রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যের প্রবল চাহিদা দেখে ঘোলা জলে মাছ ধরতে যেসব লোক তৎপর হয়েছেন তাঁদের মধ্যে আলোচ্য বইটির লেখক অন্যতম| দুর্বল প্লট, জঘন্য চরিত্রায়ণ, অসহনীয় সংলাপ, যাচ্ছেতাই ন্যারেটিভ, ভুলভাল ইংরেজির ঢালাও সমাবেশ, প্রক্ষিপ্ত রাজনীতি, রগরগে শয্যাদৃশ্য, বাজারচলতি ধ্যানধারণার প্রয়োগ: সব মিলিয়ে লেখক যে বস্তুটি নির্মাণ করেছেন তা জাবনা হিসেবে গরুকে খাওয়ালে সম্ভবত দুধের বদলে দই বেরোবে| আমি বইটি আগামী হোলিকা দহনে জ্বালানি হিসেবে দান করব| আপনাকে যাতে নিজের ২০০ টাকা এই রকম ভাবে বরবাদ করতে না হয় সেজন্যেই এই লেখা|
গল্পটি একদমই ভালো লাগল না। গল্পটিতে প্রচুর অপ্রয়োজনীয় উপাদান ব্যবহার করেছেন লেখক মহাশয়। এছাড়া গল্পের কোন ঘটনার পর কোন ঘটনা আনা উচিত সেই অন্তর্দৃষ্টিও লেখক মহাশয়ের একদমই নেই; অন্তত এই গল্পটির ক্ষেত্রে তাহা ছিল না।
গল্পটি লেখক শুরু করেছেন মাওবাদী ও পুলিশের মধ্যে তৈরি হওয়া এক লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়ে। আর গল্পের কাহিনীকে আরও চিত্তাকর্ষক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে লেখক মহাশয় হঠাৎ করেই গল্পের কাহিনীর মোড়, নায়কের বিবাহের বর্ণনা ও তার বৈবাহিক সমস্যার দিকে নিয়ে গেলেন যাহা ছিল একদমই অপ্রয়োজনীয়।
গল্পে লেখক অবিবাহিত-বিবাহিত নর-নারীর শারীরিক মিলনকে (ভদ্র বাংলায় বলে, পরকীয়া) অতি তুচ্ছ ঘটনা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন যা আমাদের সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে কখনোই তুচ্ছ ঘটনা নয়। লেখক মহাশয় মনে হয় কিছুটা ভারতীয় ও কিছুটা পাশ্চাত্য সংস্কৃতি মিলিয়ে গল্পটি লিখতে চেয়েছিলেন। তাই পরকীয়াকে তুচ্ছ করেছেন যা গল্পটিকে অতীব ফালতু গল্পে পরিণত করেছে।
পরিশেষে বলি, ব্যাক্তিত্বহীন চরিত্র, দুর্বল লিখনশৈলী, বিতিকিচ্ছিরি কাহিনীকাঠামো, উদ্যাম শারীরিক মিলন ইত্যাদির সম্বনয়ে গল্প লিখে লেখক জগাখিঁচুড়ি তো বানানই নি বরং লেখক হিসেবে নিজের মানকে নিম্ন থেকে নিম্নতর স্থানে নিয়ে গেছেন।