Jump to ratings and reviews
Rate this book

বিএনপি : সময়-অসময়

Rate this book
বিএনপির জন্ম সেনাছাউনিতে, একজন সেনানায়কের হাতে, যখন তিনি ছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রে । এ ধরণের রাজনৈতিক দল ক্ষমতার বৃত্ত থেকে ছিটকে পড়লে সাধারণত হারিয়ে যায় । বিএনপি এ দিক থেকে ব্যতিক্রম । দলটি শুধু টিকেও যায়নি, ভোটের রাজনীতিতে বিকল্প শক্তি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। দেশে গণতন্ত্র আছে কিনা, বিএনপিতেও গনতন্ত্রের চর্চা হয় কিনা তা নিয়ে চায়ের পেয়ালায় ঝড় তোলা যায় । কিন্তু দলটি দেশের
জনগোষ্ঠীর বড় একটা অংশের প্রতিনিধিত্ব করে, এটা অস্বীকার করার জো নেই । বিএনপির সুলুক সন্ধান করতে হলে আমাদের যেতে হবে একাত্তরে । জানতে হবে মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাদের মনস্তত্ত্ব। পচাত্তরের বিয়োগান্ত ঘটনা প্রবাহকে এড়িয়ে গিয়েও বিএনপি কি ষড়যন্ত্রের ফসল নাকি এর উত্থান ছিল অনিবার্য । লেখক-গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ এই বইয়ে দলটির একটি সুরতহালের প্রচেষ্টা করেছেন । প্রথমবারের মতো এই বইয়ে উঠে এসেছে জানা-অজানা নানা প্রসঙ্গ, যা একদিন ইতিহাসের উপাদান হবে।

368 pages, Hardcover

First published February 1, 2016

22 people are currently reading
325 people want to read

About the author

জন্ম ১৯৫২, ঢাকায়। পড়াশোনা গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে। ১৯৭০ সালের ডাকসু নির্বাচনে মুহসীন হল ছাত্র সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বিএলএফের সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দৈনিক গণকণ্ঠ-এ কাজ করেছেন প্রতিবেদক ও সহকারী সম্পাদক হিসেবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সুংকোংহে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মাস্টার্স ইন এনজিও স্টাডিজ’ কোর্সের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও অধ্যাপক। তাঁর লেখা ও সম্পাদনায় দেশ ও বিদেশ থেকে বেরিয়েছে বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা অনেক বই।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
42 (24%)
4 stars
95 (54%)
3 stars
33 (18%)
2 stars
4 (2%)
1 star
1 (<1%)
Displaying 1 - 28 of 28 reviews
Profile Image for Ifsad Shadhin.
115 reviews24 followers
June 26, 2021
জিয়া বাংলা লিখতে-পড়তে জানতেন না। প্রথম দিকে তিনি বাংলায় যে বক্তৃতা দিতেন, সেগুলো উর্দুতে লিখতেন। লিখে তারপর তা-ই দেখে ভাষণ দিতেন... ভালো করে বক্তৃতা দিতে পারতেন না দিতে গেলে খালি হাত-পা ছুড়তেন। এসব দেখেটেখে যাদু একদিন আমাকে বলল যে, এরকম হলে কী করে তাঁকে আমি চালিয়ে নেব?”

আমি বললাম, 'দেখো, জিয়া বক্তব্য দিতে পারেন না ঠিক আছে। তিনি সবচেয়ে ভালোভাবে কী করতে পারেন, সেটা খুঁজে বের করো।'

জবাবে যাদু বললেন, 'হাঁটতে পারেন একনাগাড়ে ২০ থেকে ৩০ মাইল পর্যন্ত।'

আমি বললাম, এই তো পাওয়া গেল সবচেয়ে ভালো একটা উপায়, তুমি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে পাড়াগাঁয়ে হাঁটাও। হাঁটাও আর যেটা পারে তাঁকে দিয়ে সেটাই করাও। গাঁও-গেরামের রাস্তা দিয়ে যাবে আর মানুষজনকে জিজ্ঞেস করবে, 'কেমন আছেন?'

প্রেসিডেন্ট দেশের মিলিটারি লিডার, তিনি গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে, কানাকানচি দিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন আর লোকজনের ভালোমন্দের খোঁজখবর করছেন, তাতেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন।

এভাবে দেখতে দেখতে তিনি বক্তব্য দেওয়াটাও রপ্ত করে ফেললেন। কিন্তু এ তো ঘটনার এক দিক। অন্য দিকটা হলো, যেখানে কোনো দিন যাননি ইউনিয়ন বোর্ডের একজন চেয়ারম্যানও, সেখানে খোদ দেশের প্রেসিডেন্ট যাচ্ছেন এবং তাঁর সঙ্গে অন্য আরও অনেকেই যাচ্ছেন। সেটা একটা বিশাল ব্যাপার। এসব দেখেটেখে গ্রামের লোকজন ভাবল, জিয়াউর রহমান এমন লোক, যিনি আমাদের খোঁজখবর রাখেন।


বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে একটা ওয়েব সিরিজ হওয়া উচিত। নেটফ্লিক্সের হাউজ অব কার্ডস শেষ সিজনে মুখ থুবড়ে পড়েছিল না? আমাদের দেশের ধারাবাহিক বরং প্রত্যেক মরশুম উত্তরোত্তর টিআরপি নিয়ে রাজত্ব করতো বক্স অফিসে। সংগ্রাম সহিংসতার রাজনীতি আমাদের, কোনো দলই নিষ্কলুষ থাকেনি শেষ পর্যন্ত।

সল্প পুঁথিগত বিদ্যা কিন্তু চোখের সামনে দেখা কিছু বাস্তব ঘটনা থেকে বলতে পারি, এই বইতে অনেক কিছুই শুধু স্পর্শ করে গিয়েছেন লেখক। নির্মোহ ছিলেন না তো, তাহলে কেন এই অপরাগতা– কে জানে?

বর্তমান তরুণরা কেন রাজনীতি অপছন্দ করে, সেটা বুঝতে আইনস্টাইন হওয়া লাগে না। কিন্তু রাজনীতির এই রোমাঞ্চকর দুনিয়ায় একবারের জন্যও আকর্ষিত হয়নি– এমন কেউ কি সত্যিই আছে?
Profile Image for Mosharof Zitu.
24 reviews3 followers
April 28, 2016
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির গত ৩৭ বছরের উঠা-নামাই শুধু নয়, বিএনপি গঠনের প্রেক্ষাপট আর মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বিএনপি প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত জিয়াউর রহমানের কার্যকলাপ নিয়ে বিস্তারিত লেখা আছে এ বইয়ে। দশটি ভাগে ভাগ করে বিএনপির সম্পূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরার প্রয়াসটা চমৎকার ছিলো।

'বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ'কে সরিয়ে 'বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ'কে সামনে এনে একদম ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু থেকে গড়ে উঠে বিএনপি বা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, যদিও প্রথমে 'জাগদল' আর পরে 'বিএনএফ' থেকে 'বিএনপি'তে পরিণত হয় দলটি। লেখক প্রথমেই জিয়ার মেজর থেকে প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠার বর্ণনাটা খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।

একজন সামরিক ব্যাক্তিত্ব হিসেবে জিয়ার দুর্বল আর সবল দিকগুলো তুলে ধরে কিভাবে রাজনৈতিকদের মতো বক্তিতা দিয়ে মানুষ পটানোর ক্ষমতা না থাকার স্বত্তেও খালকাটাসহ মাইলের পর মাইল হেঁটে বিভিন্ন কর্মসূচী দিয়ে জনপ্রিয় হয়েছেন তারও বিস্তারিত বর্ণনা বেশ আকর্ষণীয় দিক এই বইয়ের। একজন সেনাপতি থেকে একজন রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার বর্ণনটা পূর্ণাঙ্গ ক্যানভাসেই ফুটে উঠেছে মনে হয়েছে। জিয়ার মৃত্যুর পর সাত্তারের বিএনপি এবং তারপর হাতবদল হয়ে খালেদা জিয়ার বিএনপির হালধরার বর্ণনাটাও যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বর্ণনা করেছেন লেখক। একই ক্যানভাসে উঠে এসেছে এরশাদের সামরিক শাসন আর তৎকালীন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি-আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য বিরোধী দলের ভূমিকা। এরপর নব্বইয়ের দশকে বিএনপির নবজাগরণ, ক্ষমতাসীন হয়ে তাদের নেতাদের কর্মকান্ড আর ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচন নিয়ে বিএনপির বিতর্কিত কার্যকলাপ নিয়ে বর্ণনাও অনেক তথ্যবহুল। তবে ছিয়ানব্বইয়ের পর থেকে বিরোধী দলে বিএনপির কর্মকান্ড, ২০০১-০৬ এর বিএনপির কর্মকান্ড কিংবা পরবর্তীতে বিএনপির কর্মকান্ড অত বড় পরিসরে আসেনি যদিও যতটুকু লেখক তুলে ধরেছেন তাতেই স্পষ্টতই বিএনপির নেতৃত্বের সংকট, ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রবণতা আর একক নেতৃত্বের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ার কথা বেশ নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরেছেন।

এদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নিজস্ব ইতিহাস সংরক্ষণের প্র্যাকটিস খুব একটা নেই। সেই দিক বিবেচনায় এই বইটি বেশ ভাল একটি নমুনা হতে পারে। প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন বইয়ের আর পত্রিকার রেফারেন্স ব্যবহৃত হয়েছে এ বইয়ে, বইটি লিখতে নেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপির সাথে জড়িত অনেকেরই সাক্ষাৎকার। মুখের কথা শুনে শুনে মিথ বিশ্বাস না করে বরং এমন গ্রন্থ পড়ে যে কোন সাধারণ মানুষ কিংবা রাজনৈতিক কর্মীরই একটি দলের আদর্শ আর অতীত কর্মকান্ড তথা ইতিহাস জানতে সহায়ক হতে পারে। সংগ্রহে রাখার মতো একটি বই।
Profile Image for Mahmudur Rahman.
Author 13 books357 followers
June 14, 2018
বাংলাদেশের তিনটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল, আওয়ামী লীগ, জাসদ এবং বিএনপি-র ইতিহাস নিয়ে লিখেছেন মহিউদ্দিন আহমদ।

বিএনপি নিয়ে লিখতে গিয়ে এ বই শুরু হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ থেকে। এরপর যথাক্রমে স্বাধীনতা, '৭৫, জিয়াউর রহমানের উত্থান থেকে বিএনপি-র বর্তমান অস্তিত্ব সংকট, সবকিছু নিয়ে আলোচনা করেছেন লেখক। তবে জাসদ কিংবা আওয়ামী লীগ নিয়ে লেখা মোট তিনটি বইয়ে যেভাবে 'দলের ইতিহাস এবং বিশ্লেষণ' এসেছে, এ বইতে বিএনপি দল হিসেবে বিশ্লেষিত হওয়ার চেয়ে সময়ের সাথে দলটির অবস্থা অভিযোজনের কথাই বেশি এসেছে।

প্রচুর তথ্য, উদ্ধৃতি, সাক্ষাৎকার দিয়ে লেখা সাজানো মহিউদ্দিন আহমদের স্টাইল। এ বইও ব্যতিক্রম না। বিএনপি সহ এ বই থেকে অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে '৭১-'১৪ পর্যন্ত দেশের রাজনীতি এবং নেতা ও দলের চরিত্র।
Profile Image for Priyanto (প্রিয়ান্ত).
27 reviews25 followers
January 1, 2023
মহিউদ্দিন আহমেদের অন্যান্য বেশকিছু বইয়ের মতোন, ক্রমানুসারে শুরু করবার জন্য জাসদ বিষয়কটার পর এটা অন্যতম সেরা বই, যা আমার ২০২২ সালে পড়া শেষ বই।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-এর বিশাল বৈচিত্রময় জার্নির সাবলীল পরিক্রমা— সংক্ষিপ্তসারে রিভিউ করতে চাইলে, এবং বই ও দল: উভয়ের বিষয়ে বলতে গেলে, বর্তমান রাজনৈতিক পর্যুদস্তবস্থায় বিএনপি বিগত যেকোনো সময়ের চাইতে এখন অধিকভাবে দেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করছে সন্দেহ নেই; ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের এই সময়েও সম্ভবত ইহা উপলব্ধি করা কষ্টকর, কেননা শহুরে মধ্যবিত্ত সার্কল পূর্বেকার ন্যায় চিরাচরিত বাঙালির রোল প্লে করে
একটি গণমানুষের আন্দোলনেও অংশ নেয়নি। বিশ-পঁচিশ বছর পরেও এটা, অর্থাৎ এখনকার জনসাধারণের পালস্ অনুধাবন করাটা টাফ হবে, কেননা মেইনস্ট্রিম কোনো গণমাধ্যমই এই সময়কে ধারণ করেনা পুরোটা, মনে হয় যেন সবাই এক আশ্চর্য দ্বৈত ভূখন্ডে বাস করছি যেখানের জনমানুষ আর ঐ জ��মানুষের অধিকাংশ বুদ্ধিজীবী, শিল্পি, মিডিয়া আর রাজনীতিবিদদের মুখের বয়ান আর চোখের ভাষা সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী।
ঐতিহাসিকভাবেই স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙলাদেশে বিএনপি তুলনামূলক ইসলামপন্থী এবং ভারতের প্রতি বীতশ্রদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রধান আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করেছে; আর সাধারণভাবে পাকিস্তান বিভক্তি-উত্তর বাঙালিদের মনোজাগতিকভাবে পাকিস্তান সমর্থনকারী উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যাও (বাঙলাদেশের ন্যূনতম ২০ শতাংশ জনগণ) বিএনপির ভোটব্যাংক হিসেবে কাজ করেছে। অর্থাৎ বিএনপির রাজনীতি পুরোপুরি এন্টি-আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিক নয়; যদি অদূর ভবিষ্যতে কখনো দলটির কাঠামো ভেঙ্গেও যায়, অনিবার্যভাবেই সম-আদর্শের সমমানের আরেকটি দল দাঁড়িয়ে যাবে; কেননা "এক-পাকিস্তান" আইডিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীলতা, বাঙলাদেশী জাতীয়তাবাদ, রাস্ট্রে ইসলাম-ধর্ম কেন্দ্রীকতা, ভারতবিরোধীতা—এই অাদর্শগুলোর বিলুপ্তি বাঙলাদেশে কখনো ঘটবে না; বরং ক্রমান্বয়ে বাড়বে এবং সম্ভবত আরোও উগ্রধর্মী নেতৃত্ব দাঁড়াবে যদিনা বর্তমান রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ফ্যাসিজম বন্ধ না হয়।
অতীতের ক্ষমতাসীন দল হিসেবে বিএনপির মারাত্মক কিছু কুলষতা, প্রতিহিংসাপরায়নতা ও দুর্নীতির ফলস্বরূপ এর ইমেজের অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে; সেইসাথে দেশের সংখ্যালঘু- নিরপেক্ষ জনগোষ্ঠীর বিরাট অংশকে তাঁদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ করে তুলেছে সব সময়ের জন্য।
তবু বিএনপি তুলনামূলক একটি লিবারাল প্ল্যাটফর্ম; ভারতবিদ্বেষী, পাকিস্তানপন্থী হতে শুরু করে সেক্যুলার, সংস্কারপন্থী শাহবাগী সবার জায়গার সংমিশ্রণ ঘটেছে এখানে; ফলে প্রায়শই পার্টির মূলধারায় কোনো অংশের মতামতের প্রতিনিধিত্ব ঘটেনি, আবার কোনো অংশকে করেছে বিপদের সম্মুখীন। সেইসাথে আদর্শগত মিত্রদের চিনতে ভুল করার পরিনামে এবং রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবজনিত নিদর্শনের ফলস্বরূপ দলটিকে মাশুল দিতে হয়েছে অনেক বেশি; রক্ত আর গুমের হিসেবের মধ্য দিয়ে।

PS. বইয়ের প্রসঙ্গের বাইরে, দেশের এখনকার পরিস্থিতিতে, আমার মনেহয় বিএনপির এই দুর্দশার কারণ, প্রথমত: বিএনপির কৌশলগত অদূরদর্শীতা এবং রাজনৈতিক মিত্রদের প্রতি স্বার্থপরতা; সঙ্গে দ্বিতীয়ত: আদর্শগত শত্রু-মিত্র বিবেচনায় বিএনপি প্রকৃতপক্ষে এর রুট লেভেলের সমর্থকগোষ্ঠীকে ঔন করেনা; আসলে বিএনপির শক্তির জায়গা ইসলামপন্থী-তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী, শাহবাগ-কেন্দ্রীকতা নয়। বিএনপির চরিত্র শাপলা এবং জামায়াতের সদৃশ্য নয়, কিন্তু মিত্রতা বিবেচনায় বিএনপির পেছনে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে পারে কার্যত এই অংশই।
তৃতীয়ত: উপরোক্ত দুটি বিএনপির নীতিগত ভুল, এসব ভুল নিয়েও দলটির নিজস্ব সমর্থনেই আন্দোলন চালিয়ে কেয়ারটেকারের দাবি আদায় করতে পারার কথা; কিন্তু বিএনপির জন্য জার্নিটা কঠিন আর হতাশাব্যাঞ্জক। সত্যি বলতে আপনি কখনোই এমন শ্রেণীর মানুষদের সাথে ফাইট দিয়ে টিকে থাকতে পারবেন না, যারা আপনার বাজারের ব্যাগে কাঁচা মাংস দেখলেও খাবলে খেয়ে ফেলবে শুধু ক্ষুধা লাগছে বলে।

জানুয়ারি ১, ২০২৩।
Profile Image for লোচন.
207 reviews56 followers
April 18, 2021
বইটা পড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল জিয়াকে আবিষ্কার করা। লেখক শুরু থেকে শুরু করেছেন, জিয়ার ভালোমন্দ দুই দিকেই আলোকপাত করেছেন। জিয়া কে? একজন সাহসী দেশপ্রেমিক, যিনি সশস্ত্র বিদ্রোহ করেছেন পাকি আর্মির বিরুদ্ধে, নির্দ্বিধায়। তার অধীনে থাকা খালিকুজ্জামান সেদিনের স্মৃতিচারণ করছেন:
‘…বললেন, ‘ইয়েস খালিক, হোয়াট হ্যাপেনড?’ আই সেইড, ফায়ারিং হ্যাজ স্টার্টেড। ইপিআর ক্যাম্প হ্যাজ বিন অ্যাটাকড, ব্লা ব্লা ব্লা। উনি তখন চিন্তা করলেন। ‘খালিকুজ্জামান, খালিকুজ্জামান’। উনি শাউট করলে আমি আস্তে কথা বলি। সেম টোনে কথা বলি না। বললাম, ‘স্যার, স্যার’।
জিয়া: ‘হোয়াট শ্যাল উই ডু?’
আমি: ‘ইউ নো বেটার’।
জিয়া: ‘ইন দ্যাট কেইস উই রিভোল্ট অ্যান্ড শো আওয়ার এলিজিয়েন্স টু দ্য গভর্নমেন্ট অফ বাংলাদেশ’।

জিয়া কে? বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেক্টর কমান্ডারদের মাঝে অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। একই সাথে জিয়া সেই শীতল মস্তিষ্কের লোক, যিনি সবাইকে কথা দেন, আশায় রাখেন, কিন্তু একেবারে চরম মুহূর্তের আগে কখনোই সিদ্ধান্ত নেন না। এই দর্শনে ভর করে তিনি মুজিব-হত্যায় আগ্রহী জুনিয়র অফিসারদের নিরুৎসাহিত করেননি, মুক্তিদাতা তাহেরকে কোর্ট-মার্শালে মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানা জারি করেছেন, দমন করেছেন অসংখ্য ক্যু, এবং পরবর্তীতে আইয়ুব খানের মডেল অনুসরণ করে সৈনিক থেকে স্টেটসম্যানে রূপান্তরিত হওয়ার একটা সম্ভামনাময় প্রচেষ্টা শুরু করেছিলেন।

জিয়া বাংলায় লিখতে-পড়তে পারতেন না। ভালো বক্তা ছিলেন না। কিন্তু তিনি চমৎকার কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যেটা জাতীয়তাবাদ-কেন্দ্রিক মনোভাবের জন্ম দেয়, তার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। মুজিবের মতন ভুল তিনি করেননি, ’৭৯ নির্বাচনে অপজিশন পার্টিকে আসতে, কথা বলতে দিয়েছেন, স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছেন। সামরিক-বেসামরিকের মিশ্রণে প্রশাসন গঠন, আমলাতন্ত্রের রাজনীতিকরণ – এসব সিদ্ধান্তও বাহবা পেয়েছে।

অপরদিকে এই জিয়াই আবার পাকিস্তান, সৌদি এবং চীনের সাথে মাখামাখি সম্পর্কে গেছেন, মন্ত্রীদের দিয়ে চাঁদাবাজি করিয়েছেন, জামাতের রাজনীতির পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, সংবিধানে নিয়ে এসেছেন ধর্ম। তার চরিত্রের দ্বিত্ব-তত্ত্ব দারুণ কৌতূহলোদ্দীপক।

মদ্যপ কর্নেল যেদিন জিয়ার মুখের ওপরে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে স্টেনগানের এক ম্যাগাজিন খালি করে ফেলল, তারপরের কাহিনি, বিএনপির কাহিনি তেমন আগ্রহ জাগায়নি আর। বেগম জিয়া বা তারেক জিয়া — দুজনের ব্যক্তিত্ব শক্তিশালী না হওয়ায় অতোটা টানেনি। তবুও এরশাদ পতনের গল্প, বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের সততা, এক-এগারোর নাটকীয় বিবরণ — এসব পড়তে পড়তে কখন ফুরিয়ে এলো পাতা, টের পাইনি।

ভালোই।
Profile Image for Meem Arafat Manab.
377 reviews258 followers
August 20, 2019
বিএনপি যতটা না দল, তার চেয়ে অনেক বেশি সে একটা প্রবণতা - এই সত্যভাষণের জন্য মহিউদ্দিন সাহেব ধন্যবাদ পাবেন। কিন্তু বইয়ের কিছু জায়গা যথেষ্ট গভীরে যায় নাই। শুধু জিয়ার আমল নিয়ে লিখলেই ইনি ভালো করতেন, ঐ সময়ের ইতিহাস আলাপ করতে গিয়ে অনেক উৎসের ব্যবহার হইছে এইখানে, চলে আসছে জাদু মিয়ার মতো লোকের বৃত্তান্ত। এরশাদ পরবর্তী বিবরণ সেই তুলনায় অনেক বেশি হালকা, অনেক বেশি তাড়াহুড়া।
Profile Image for Asib Gazi.
87 reviews1 follower
September 1, 2024
বইয়ের নাম: বিএনপি সময়-অসময়
লেখক: মহিউদ্দিন আহমদ
জনরা: রাজনীতি,ইতিহাস
প্রকাশনী: প্রথমা
মূল্য: ৭৫০ টাকা
পেইজ: ৩৬৮

পটভূমি : ৭২ এর নির্বাচনে এদেশে স্বাধীনতার কান্ডারি দল হিসেবে পরিচিত আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ আসে। এদেশের প্রথম বিরোধী দল জাসদের আবির্ভাব হয়েছে অগ্নিশিখার মতো। কিন্তু আওয়ামীলীগের দমন-পীড়নের রাজনীতির সামনে জাসদের উত্থানটা ঠিক হয়ে উঠছিলো না। এরপর মিলিটারি ক্যু এ শেখ মুজিবের মৃত্যু হলে জাসদ স্পটলাইটে চলে আসে। কিন্তু খালেদ মোশাররফ এর অভ্যুত্থান এবং তাহেরের বেহাত হয়ে যাওয়া সিপাহী বিপ্লব রাজনীতির মোর সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দেয়। কুশীলব হিসেবে আগমন হয় সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষনা দেওয়ার পর থেকে সবচেয়ে জনপ্রিয় অরাজনৈতিক সামরিক ব্যাক্তিটি ক্ষমতার চূড়ায় আহরনের পর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি রাজনীতি করবেন। এরকম ই উথাল-পাতাল সময়ে ১৯৭৮ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর নাটকীয়ভাবে জন্ম নেয় "বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।"

ভালো দিক: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা দেওয়ার পর থেকেই স্পটলাইটে চলে আসেন। জিয়া ছিলেন তৎকালিন সেনাবাহিনী অফিসারদের মধ্যে তুলনামূলক সৎ এবং তুমুল জনপ্রিয়। তাই সিপাহী বিপ্লবের পর জিয়া যখন ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন, দেশের মানুষ তার উপর আস্থা রাখতে দ্বিধা করেনি। একটা উত্তাল এবং পতনশীল দেশের লাগাম টেনে ধরেন তিনি। স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন,দেশের উন্নয়নে আপসহীনভাবে কাজ করে যান। জিয়া রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তার কাছে কেউ তদবীরের জন্য যেতে পারেনি, এমনমি তার স্ত্রী খালেদা জিয়াকেও কখনো তার অফিশিয়াল কাজে দেখা যায়নি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিয়া সামরিক মনোভাব জারি রেখে সরাসরি রুখে দাড়িয়েছেন। ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে যে চাঁদা তোলা হতো তার সম্পূর্ণটাই তিনি পার্টি অফিসে পাঠিয়ে দিতেন। নিজে ৩৫০০-৪০০০ টাকা বেতনে সংসার চালাতেন। তার মৃত্যুর পরে দেখা গেলো জিয়ার তেমন কোনো সহায়-সম্পত্তি নেই। জিয়ার মৃ*ত্যুতে দেশের মানুষ স্তব্ধ হয়ে পড়ে। এই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ হয়েছিলো জিয়ার জানাযায়।

খারাপ দিক: সিপাহী বিপ্লবের নেতা তাহেরের করুন পরিণতি এবং বিপ্লব বেহাত হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই জিয়াকে দায়ী করেন। জিয়া তাহেরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন সন্দেহ নেই, তবে পরবর্তী সময়ে তিনি জানিয়েছিলেন তিনি চাপে পড়ে তাহেরকে ফাসি দিয়েছেন। এর প্রায়শ্চিত্ত তিনি তাহেরের পরিবারকে পুনর্বাসন,চাকরীর ব্যাবস্থা করে দেওয়া, জাসদের নেতাকর্মীদের মুক্তি, চিকিৎসা দেওয়ার মাধ্যমে হয়তো করতে চেয়েছেন। এছাড়া সরকারি ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিএনপি প্রতিষ্ঠার অভিযোগ ও পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানকারীদের সরাসরি মৃ*ত্যুদন্ড প্রদান ও প্রশ্নবিদ্ধ। এরশাদের পতনের পর দেশের প্রথম অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচনে জিয়ার জনপ্রিয়তা ও জনগণের আস্থার ফলস্বরূপ বিএনপি জয়লাভ করে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর তারা আস্থার প্রতিদান দিতে পারেনি। খালেদা জিয়া সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও এর সত্যতা পাওয়া যায়। এছাড়া তারেক জিয়ার নজিরবিহীন দুর্নীতি এই দেশের মানুষের চোখে জিয়ার মতাদর্শকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।

জিয়া হ*ত্যা রহস্য: জিয়া রাষ্ট্রপ্রধান থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে ১৯ টি অভ্যুত্থান সংগঠিত হয় এবং এর মধ্যে ১৮ টি তিনি কঠোর হস্তে প্রতিরোধ করেন। চরম দুর্নীতিবাজ এবং লম্পট হিসেবে পরিচিত তৎকালীন সেনাবাহিনীর উপপ্রধান এরশাদ দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার মাধ্যমে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে জিয়াকে হ*ত্যা করে। এরপর জিয়া হত্যার অভিযোগে মঞ্জুর সহ অন্যান্যদের বিচার করে হয়, তবে জিয়া হ*ত্যার সাথে মঞ্জুরের কোনো যোগসাজশ পাওয়া যায়না।

শেষ কথা: সময়ের চাকা ঘুরেফিরে এদেশের রাজনীতি থেকে প্রায় হারিয়ে যেতে থাকা এক দল চলমান অভ্যুত্থান এরপর আবার স্পটলাইটে চলে এসেছে। জিয়া যেই মতাদর্শ এবং উদ্দেশ্য নিয়ে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার কতটুকু তিনি এবং তার পরিবার পূরন করতে পেরেছেন তা আজও প্রশ্নবিদ্ধ। তবে স্বাধীনতার পর থেকেই বিএনপির মতো একটি দলের আবির্ভাব অবশ্যম্ভাবী ছিলো।
Profile Image for Tanvir KLION.
43 reviews6 followers
February 6, 2017
'১৯৭৮ সাল থেকে ২০১৫, বিএনপির বয়স এখন ৩৭। জিয়াউর রহমানের উত্থানের সময়টুকু বিবেচনা করলে, এর বয়স দাঁড়াবে ৪০। এত দিনে একটা রাজনৈতিক দলের টিকে যাওয়ার কথা । কোটি টাকার প্রশ্ন হলো, বিএনপি কি টিকে থাকবে?

জিয়া বিএনপি তৈরি করেছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকে। ওই সময় যারা বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা যে বিএনপির আদর্শের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন, তা হয়তো বলা যাবে না। প্রাপ্তিযোগের ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, সন্দেহ নেই। তবে আদর্শের ব্যাপারটা যে একেবারে ছিল না, তা নয়। যারা আওয়ামী লীগ বা কমিউনিস্ট রাজনীতি পছন্দ করেন না, তাঁদের তো একটা অবলম্বন দরকার। বিএনপি হয়ে দাঁড়াল ওই রকমের একটা প্ল্যাটফর্ম। বিএনপি না থাকলেও আওয়ামী লীগের বিপরীতে এ ধরনের একটা দল থাকবে। এবং এই দল অবধারিতভাবেই ‘মুসলিম বাঙালি জাতীয়তাবাদের' কথা বলবে । 'বিএনপি’ নামের দলটা যদি একদিন ধ্বংসও হয়ে যায়, তর্কের খাতিরেও যদি এমন সম্ভাবনার কথা ভাবা হয়, তাহলেও দেখা যাবে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আরেকটি দল দাঁড়িয়ে গেছে। এই অর্থেই বলা যায় বিএনপি রাজনীতিতে টিকে গেছে।'

বইটি কয়েকদিন টানা পড়লাম। আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা বলে, ১৯৭৫ এবং ৭৫ পরবর্তি সময় থেকে শুরু করে একেবারে বর্তমান সময় পর্জন্ত এতো বিস্তৃত সময় এবং পড়িসরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস নিয়ে এঁর চেয়ে নির্ভরযোগ্য কোন গ্রন্থ রচিত হয় নাই। সবচেয়ে বড় কথা হল লেখকের মাঝে নিজের মতামত চাপিয়ে দেয়ার চাইতে রেফারেন্স দিয়ে প্রমাণ দেয়ার প্রবণতাটা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। যেটি এধরণের বিষয়ে লেখা বইয়ে বিরল। অনেকটা থিসিস টাইপের লেখা হলেও পড়তে ক্লান্তি লাগে না।
Profile Image for প্রিয়াক্ষী ঘোষ.
362 reviews34 followers
April 16, 2023
লেখক মহিউদ্দিন আহমদ এর লেখা বেশ কিছু রাজনৈতিক বই এর মাঝে "বিএনপিঃ সময়-অসময়" বইটি অন্যতম। এটা বাংলাদেশের বৃহত্তর একটা রাজনৈতিক দল নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক বই।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের একটি বড় দল বিএনপি। কোন রাজনৈতিক দলই হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয় না। এর পেছনে থাকে নানান কাহিনী ত্যাগ আর পরিশ্রম।

বিএনপির জন্ম সেনাছাউনিতে,একজন সেনানায়কের হাতে, যখন তিনি ছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রে।
সাধারণত এই ধরনের রাজনৈতিক দল ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে ছিটকে পড়ে হারিয়ে যায়।

বিএনপি এদিক থেকে একেবারেই আলাদা।
এই দলটি শুধু টিকেই থাকেনি। ভোটের রাজনীতিতে বিকল্প শক্তি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

আমাদের এই দেশে গণতন্ত্র আছে কি না, বিএনপিতে গণতন্ত্রের চর্চা হয় কি না। তা নিয়ে চায়ের পেয়ালায় ঝড় তোলা যায়।
কিন্তু দলটি দেশের জনগোষ্ঠীর এক বড় অংশকে প্রতিনিধিত্ব করে, এটা অস্বীকার করার জো নাই।

বিএনপির শুরুটা সন্ধান করতে হলে আমাদের যেতে হবে একান্তরে। জানতে হবে মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাদের মনস্তত্ত্বকে।

১৯৭৫ সালের বিয়োগান্তক ঘটনাপ্রবাহকে এড়িয়ে গিয়েও বিএনপি সম্পর্কে আলোচনা হবে সম্পূর্ণ অসম্পূর্ণ।

তাহলে বিএনপি কি ষড়যন্ত্রের ফসল?
না কি এর উত্থান ছিলো অনিবার্য?

লেখক মহিউদ্দিন আহমদ এই বইটিতে বিএনপি দলের একটা ছক কেটে বর্ণনা করেছেন। তুলে এনেছেন দলটির ভালো- মন্দ, জয়-পরাজয় সব কিছু।
উঠে এসেছে জানা অজানা নানান দিক।
যাই বলা হোক না কেন, কোন কিছুকে একদিক থেকে বিচার কথা ঠিক নয়, তাই লেখক এর বিশ্লেষণ করেছেন চারদিক থেকেই।
Profile Image for Nasif Anwar.
14 reviews4 followers
May 9, 2021
রাজনৈতিক ইতিহাস লেখার কাজ অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ এবং শ্রম লন্ধ একটা কাজ। পাশাপাশি সমসাময়িক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে সেই সময় অবলোকন করা এক ব্যক্তির পক্ষে নিজস্ব মতাদর্শ এবং ভাবনার বাইরে যাওয়া অত্যন্ত দূরহ একটা কাজ৷ এই দুইটি কঠিন কাজকেই মহিউদ্দিন আহমেদ কতটা সফলতার সাথে করেছেন সেটিকে মূল্যায়ন করা আমার মত অল্প জ্ঞানের একজনের পক্ষে করা অত্যন্ত অনুচিত বলে মনে করি৷ তবে সফল ভাবে উনি যেটি করতে পেরেছেন রাজনৈতিক ইতিহাসের পপ জনরাটা এদেশে তৈরী করতে পেরেছেন৷ সমসাময়িক কালে রাজনৈতিক ইতিহাসে জনপ্রিয়তার তার সমকক্ষ কেউ নেই বললেই চলে। নিঃসন্দেহে দেশের বৃহৎ একটা অংশের পাঠকের রাজনৈতিক ইতিহাস সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা উনি অত্যন্ত প্রাঞ্জল ও সহজ ভাষায় দিতে পেরেছেন। সেক্ষেত্রে এই বইটিও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷
জাসদের উত্থান পতনের পর আমার পড়া এটি তার দ্বিতীয় বই৷ পড়ার অনুভূতি চমৎকার। অনেক অজানা জিনিসের ব্যপারে জানতে পেরেছি৷ বাংলাদেশের রাজনীতির গতি প্রকৃতি বোঝার জন্য এটি একটি অত্যন্ত পাঠক উপযোগী বই বলে মনে করি৷
লেখক বই এ লিখিত দলিলের বাইরে খুব বেশী কিছু লেখেননি, এটি অত্যন্ত কঠিন কাজ৷ প্রায় পুরো বই এই অসংখ্য রেফারেন্স, অসংখ্য ফুটনোট লেখকের মূলধারার ইতিহাস চর্চার আগ্রহকেই ফুটিয়ে তোলে৷
অসম্ভব যত্ন নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে একটি রাজনৈতিক দলের উত্থান পতন তুলে ধরেছেন৷ চোখের সামনে চলতে থাকা একটা সিনেমার মতই দৃশ্যমান লেগেছে।
সবশেষে এই রিভিউ দেখে পড়তে ইচ্ছুক যে কারো জন্যই সাজেশান হিসেবে- এটি একটি মাস্ট রিড তালিকাতেই থাকবে বলে মনে করি। ❤️
Profile Image for Arafat Prodhan.
11 reviews
January 27, 2023
We revolt!এই শব্দটাই মেজর জিয়ার পরিচিতির জন্য যথেষ্ট। ব্যারাকের সৈনিক থেকে রাষ্ট্রপতি, পথযাত্রা তুলে ধরে হয়েছে বই খানায়। জিয়ার উত্থান যেমন নাটকীয়তায় শুরু তেমনি তার সেনাপ্রধান হওয়ার ঘটনাও এই দেশের অন্যতম একটি ঘটনা।সেনাপ্রধান না হওয়ার হতাশায় যিনি চাকুরী থেকে রিজাইন করতে চাইছিলাম সেই তিনি হয়ে গেলেন সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রপ্রধান।

"যারা মনে করতেন ভারতের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব জিম্মি হয়ে পড়ছে,তারা আদর্শগত কারণেই বিএনপির ছাতার তলায় আছেন এবং থাকবেন। এদের সংখ্যা কয়েক কোটি এবং এটাই বাস্তবতা। "
Profile Image for Nurul Huda.
193 reviews5 followers
October 23, 2024
১৯৭১ থেকে ২০১৪ পর্যন্তের ইতিহাস। বিএনপি তৈরির প্রেক্ষাপট থেকে তার উত্থান পতন সুসময় দুঃসময় সব কিছু লেখকের দৃষ্টিতে তুলে ধরেছেন৷
কতটা নিরপেক্ষভাবে লিখেছেন তা জানি না!

সেপ্টেম্বর মাসে পড়া শুরু করেছিলাম। আজকে শেষ করেছি। পাঠক ধরে রাখার মতো বই৷ ইতিহাস ভিত্তিক লেখকদের মধ্যে 'মহিউদ্দিন আহমদ' অন্যতম ।

pdf পড়েছি

-
বই : বিএনপি: সময়- অসময়
লেখক : মহিউদ্দিন আহমদ
প্রথমা প্রকাশন
পৃষ্ঠা : ৩৬৮
মূল্য : ৬০০৳
13 reviews
January 19, 2025
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিক্রমায় বিএনপিই প্রথম দল (পরবর্তীতে বিএনপির পদাঙ্ক অনুসরণ করে লেজেহোমো এরশাদ জাতীয় পার্টি গঠন করেছিলেন) যেটি ক্ষমতার সর্বোচ্চ আনুকূল্য নিয়ে গঠিত ও পরিপুষ্ঠ হয়েছে। সচরাচর ক্ষমতার বাইরে থেকে একটি দল গঠিত হয়, রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত করে, ক্ষমতায় আরোহণ করে। বিএনপির বেলায় পুরোপুরি উল্টোটা ঘটেছে।

সেনাছাউনিতে জন্ম নেয়া জন্ম নেয়া অধিকাংশ দল সাধারণত প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যু হলে কিংবা শাসকের আনুকূল্য হারালে একসময় রাজনীতিতে ব্রাত্য হয়ে পরে, অনেকটাই স্বাধীন বাংলাদেশে মুসলিমলীগের মত বিলিন হয়ে যায়! কিন্তু বিস্ময়করভাবে বিএনপি বাংলাদেসের রাজনীতিতে টিকে গেছে এবং জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর দুই-দুইবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়ও আরোহণ করেছে। বিএনপির এই টিকে যাওয়ার পেছনে দুটি প্রভাবক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে।

প্রথমত বিএনপি কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি রাজনৈতিক ভাবাদর্শ! আওয়ামীলীগকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার জন্য যে মতাদর্শ প্রয়োজন ছিল, বাংলাদেশে তার অনুপস্থিতি এবং ধর্ম্ভিত্তিক দলগুলো রাজনিতিতে অপাঙতেয় হওয়ায় সেই শূন্যস্থান বিএনপি পূরণ করেছে সহজেই। এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, বিএনপি গঠিত না হলে অন্য যেকোন দল গঠিত হয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির ডানপন্থী ধারাকে বেগবান করত এবং এগিয়ে নিত। বিএনপি দারুণভাবে সময়টা কাজে লাগিয়েছে।

দ্বিতীয়ত, জিয়ার মৃত্যুর পর বিভিন্ন টালমাটাল অবস্থায় ধুকতে থাকা বিএনপি নবজীবন পায় ৯০ দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করে। এবং বিস্ময়করভাবে এই নবজীবন দান করে দলটির প্রধান প্রতিদ্বন্ধী আওয়ামিলীগ! রাজনীতি সচেতন মানুষমাত্রই এটা স্বীকার করবেন যে সেসময় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন না করলে বিএনপি আস্তে আস্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়তো। এই আন্দোলন বেগম জিয়াকে একজন সাধারণ গৃহবধু থেকে আপোষহীন দেশনেত্রীর ইমেজ গড়ে দিয়েছে। এই উপমহাদেশে রাজনীতিতে ব্যক্তিইমেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিএনপিকে নিয়ে জোটবদ্ধ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দলটিকে আবার প্রাসঙ্গিক করে তোলে আওয়ামীলীগই! পরবর্তীতে আওয়ামিলীগের একাধিক সিনিয়র নেতা এটা স্বীকার করেছেন যে বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করা তাদের একটি বিশাল রাজনৈতিক ভুল ছিল!

বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে কতটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল বা এখনো পর্যন্ত দলটি রাজনীতিতে কি গুণগত পরিবর্তন এনেছে তা বিরাত পরিসরে গবেষণার দাবী রাখে। এটা হয়তো ভবিষতে আমরা দেখবো।

ধান ভানতে শিবের গীত গেয়ে ফেললাম বিস্তর, এখন বইয়ে আসা যাক, বিএনপির সময় অসময় বিএনপি ঘঠনের প্রেক্ষাপত থেকে শুরু করে ২০১৪’র নির্বাচন পর্যন্ত একটা বিশাল প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে লেখা। বিএনপি গঠনের প্রেক্ষাপত থেকে শুরু করে বিশদ গঠনপর্ব, উত্থান, বিস্তার, জিয়ানামা থেকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, দুইবার ক্ষমতায় আরোহণ, বিরোধীদলে অবতরণ, ১/১১ কালীন ও পরবর্তী অবস্থা ও বিরুদ্ধযাত্রা থেকে শুরু করে ২০১৪ এর নির্বাচন পর্যন্ত সমকালকে ধরতে চেয়েছেন লেখক। বইটি আমার চোখে মোটাদাগে দুইটি পর্বে বিভক্ত হয়ে ধরা দিয়েছে। প্রেক্ষাপট থেক জিয়ানামা পর্যন্ত লেখক খুব যত্ন সহকারে বিস্তারিত লিখেছেন। তবে এই ফেজে বিস্তারিত লিখতে গিয়ে যতটা না তিনি বিএনপির সময়-অসময় ও চালচিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তারচেয়ে বরং বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক ইতিহাসই বেশি লিখেছেন। এখানে বেশকিছু প্রসঙ্গ বাদ দেয়র সুযোগ ছিল।
দ্বিতীয় ফেজে লেখকের তাড়াহুড়ো খুব দৃষ্টিকটু লেগেছে। অনেক বিষয় তিনি এড়িয়ে গেছেন। বেশ কিছু টপিক আরো বিস্তারিত আলোচনার দাবী রাখে, বিশেষ করে ২১শে আগস্টের গ্রেনেদ হামলা ও এরসাথে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা এবং ২০১৪’ নির্বাচনী সন্ত্রাস ও আগুণ সন্ত্রাস যা বিএনপি ও এর রাজনীতিকে কালিমালিপ্ত করেছে। এই দুটি প্রসঙ্গ তিনি প্রায় পুরোপুরি এড়িয়ে গেছেন। প্রাথমিক ফেজের অপ্রাসঙ্গিক আলাপ বাদ দিয়ে এই দিকটাতে দৃষ্টিপাত করতে পারতেন।

বইটিতে ইতিহাসের যেসব বড় বড় প্রসঙ্গ এবং বাঁকবদল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, সচেতন পাঠকমাত্রই সেসব বিষয়ে সম্যক ধারণা রাখেন। আমাকে যে বিষয়টা মুগ্ধ করেছে সেটি হচ্ছে এই বইয়ে সন্নিবেষ্টিত এমন কিছু সূক্ষ্ম তথ্য ও পাঞ্চলাইন, (যা হয়তো লেখকের কাছে আরো বেশি মনোযোগ এবং বিশ্লেষণ দাবী করে কিন্তু তিনি এড়িয়ে গেছেন) যা অনেকটাই আমার জন্য ‘ফুড ফর থট’ হিসেবে কাজ করেছে এবং নতুন করে ভাবতে ও আরো গভীরভাবে বিষয়গুলো নিয়ে পড়তে উৎসাহিত করেছে।

যারা বাংলাদেশের রাজনীতির খোঁজখবর রাখেন এবং রাজনীতির একনিষ্ঠ, বিদগ্ধ পাঠক, লেখকের কলাম নিয়মিত পড়েন বা অই সময়কালে পড়েছেন তাদের জন্য বইটিতে নতুন কিছু নেই। তবে নতুন করে যারা রাজনীতির পাঠ নিতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এটি অবশ্যই একটি অবশ্যপাঠ্য বই।

রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির সাফল্য-ব্যর্থতা মহাকাল বিচার করবে। তবে এটি এখন নির্দ্বিধায় বলা যায় যে বিএনপির রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। বিএনপি সময়কালে কালের দাবী মেনে বিলুপ্ত হলেও বিএনপির রাজনৈতিক মতাদর্শ টিকে থাকবে, এখানেই বিএনপির স্বার্থকতা।

হ্যাপী রিডিং।
Profile Image for Parvez Alam.
306 reviews12 followers
February 19, 2021
বইটা গত বছর কেনা কিন্তু পড়া হয়নি। হুট করে মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়াকে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া বীর উত্তম উপাধিতে কেরে নেওয়ার কথা ওঠে। ভাবলাম এখন সময় পড়ে দেখি কি আছে এই বই। এই বই নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেক কিছু বলা হয়ে যাবে আমি শুধু কিছু লাইন তুলে ধরি মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়ার সেই সময়ের কাজ নিয়ে-
* ইন দ্যাট কেইস উই রিভোল্ট অ্যান্ড শো আওয়ার এলিজিয়েন্স টু দ্য গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ। (মেজর জিয়ার)
বাংলাদশের তখন কোনো খবর নাই। লীডার হ্যাজ টু টেক লিডারশিপ।
* ২৫ মার্চের মধ্যরাতে জিয়ার নেতৃত্ব অষ্টম বেঙ্গলের বাঙালি সদস্যরা বিদ্রোহ করলেন।
* একটা চরম মুহূর্তে জিয়াউর রহমান সিন্ধান্তটি নিতে পারেছিলেন। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে মেজর মীর শওকত আলী, ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান, ক্যাপ্টেন অলি আহমদ, ক্যাপ্টেন সাদেক হোসেন, লে. সমশের মুবিন চৌধুরী, লে. মাহফুজর রহমান এবং অষ্টম বেঙ্গলের অন্যান্য বাঙালি সদস্য ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন।
* জিয়ার রণকুশলতা সম্পর্কে ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল অরোরা যথেষ্ট প্রশংসা করেছেন।
* বাংলাদেশে বিভাজনের রাজলীতির বিয়োগান্ত শিকার হয়েছেন যে কয়কজন, জিয়াউর রাহমান তাঁদের একজন। জিয়া শেখ মুজিবকে নেতা মানতেন এবং সব সময় তাঁর সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক পতিপক্ষ তাঁদের যথেষ্ট সম্মান দেয়নি। 'আমরা বীরের সম্মান দিতে জানি না। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে বাংলাদেশের একজন মাত্র মুক্তিযোদ্ধা ছবি আছে, বুকের ওপর দু-হাত আড়াআড়ি করে দাঁড়ানো। তিনি জিয়াউর রাহমান।
১৯৭৪ সালে স্বাধীনতা দিবসে বিচিত্রা পত্রিকাতে " একটি জাতির জন্ম" নামে মেজর জিয়ার একটা লেখা প্রকাশ হয়। এই বই সবাই না পড়লেও এই লেখাটা সবার পড়া উচিৎ। সব শেষে নিজের ইতিহাস জানুন, বিকৃত ইতিহাস বর্জন করুন।
Profile Image for Shahmun Naqib.
7 reviews9 followers
June 6, 2023
আমি প্রথমেই বলে নেই, আমি বিএনপির সমর্থক নই। এমনকি আমি প্রেসিডেন্ট জিয়ারও গুনমুদ্ধ নই। আমি একজন সাধারণ ইতিহাস পাঠক। কিন্তু বইটা পড়তে গিয়ে বার বার মনে হয়েছে, জিয়াউর রহমানের প্রতি লেখকের প্রচন্ড ঘৃণা ও বিদ্বেষ রয়েছে। যার কারণে বইটাকে কোনোভাবেই নির্মোহ মনে হয়নি। এমনকি বিদ্বেষের কারণে প্রেসিডেন্ট জিয়ার ভালো কাজগুলোকেও লেখক ইতিবাচক অর্থে প্রকাশ না করে, অনেকটা নেতিবাচক ঢংয়েই তুলে ধরেছেন। যেমন লেখক বলেছেন, তৎকালীণ সময়ে বাংলাদেশ সরকারের একটি জাহাজ ছিল, যে জাহাজটিতে করে হজ যাত্রীদের হজে নিয়ে যাওয়া হতো। হজ মওসুম ছাড়া এমনি সময় সেই জাহাজটা পড়েই থাকত। প্রেসিডেন্ট জিয়া করলেন কি, সে বছর সারা দেশে যারা ভালো রেজাল্ট করেছে এরকম ১৫০০ শিক্ষার্থী নিয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়া তিন দিনের একটি একটি নৌ বিহারের আয়োজন করলেন। সেই নৌ বিহারে প্রেসিডেন্ট জিয়া পুরো একটা দিন শিক্ষার্থীদের সাথে অতিবাহিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট জিয়ার এতো দারুণ একটা কাজকে লেখক অনেকটা মতলবাজি হিসেবে তুলে ধরেছেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট জিয়া বাংলাদেশ টেলিভিশনে শিশু ও কিশোরদের প্রতিভা অন্বেষণে যে ‘নতুন কুঁড়ি’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন, লেখক সেই অনুষ্ঠানটাকেও অনেকটা মতলবাজি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। অথচ জোট সরকারের আমলেও আমরা দেখেছি, ‘নতুন ‍কুঁড়ি’ কি দারুণ একটি আয়োজন ছিল!

লেখক সম্ভবত তারা সেই ‘জাসদ-ছাত্রলীগ’ স্বত্ত্বা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। জাসদের বিপ্লবকে জিয়া যেভাবে বেহাত করেছিল, সেই রাগ হয়তো লেখক জাসদের প্রাক্তন কর্মী হিসেবে মনের মধ্যে পুঁজে রেখেছেন। না হলে এরকম এক পেশে বই লেখার কথা না।
Profile Image for SR Shahin.
4 reviews
January 9, 2025
"বিএনপি: সময়-অসময়"
লেখকঃ মহিউদ্দিন আহমদ
প্রকাশনীঃ প্রথমা

"বিএনপির জন্ম সেনাছাউনিতে,একজন সেনানায়কের হাতে,যখন তিনি ছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রে।
এ ধরনের রাজনৈতিক দল ক্ষমতার বৃত্ত থেকে ছিটকে পড়লে সাধারণত হারিয়ে যায়। বিএনপি এদিক থেকে ব্যতিক্রম। দলটি শুধু টিকেই যায়নি,ভোটের রাজনীতিতে বিকল্প শক্তি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
দেশে গণতন্ত্র আছে কি না,বিএনপিতেও গণতন্ত্রের চর্চা হয় কি না,তা নিয়ে চায়ের পেয়ালায় ঝড় তোলা যায়।
কিন্তু দলটি দেশের জনগোষ্ঠীর এক বড় অংশের প্রতিনিধিত্ব করে,এটা অস্বীকার করার জো নেই।"

লেখক মহিউদ্দিন আহমদ 'বিএনপি: সময়-অসময়' বইটিতে দলটির জন্মের প্রেক্ষাপট,উত্থান,বিস্তার,ভিত্তি,সরকার-বিরোধী দলে থাকাকালীন দলের ভালো মন্দের দিক,ভাঙ্গন ও রাজনীতির মধ্যে টিকে থাকার লড়াই সহ বইটিতে উঠে এসেছে বিএনপির জানা অজানা বিভিন্ন দিক।

বিএনপি বাদেও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর মনোভাব,১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড,সিপাহ জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় জিয়াউর রহমানের আগমনের ইতিহাসও স্থান পেয়েছে।
জিয়াউর রহমানের ভালো মন্দের বিভিন্ন অজানা দিক,হত্যাকাণ্ড,জেনারেল এরশাদের উত্থান-পতন,রাজনৈতিক মাঠে খালেদা জিয়ার আগমন,ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামিলীগ,জামায়াতের পুনঃ আবির্ভাব সহ রাজনৈতিক সমসাময়িক বিভিন্ন দিক লেখক বিশ্লেষণ করেছেন প্রায় নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে।

ইতিহাস ভিত্তিক বই হলেও বইটি পড়তে কোন বিরক্তি আসেনি,ঘটনা প্রবাহকে লেখক এগিয়ে নিয়ে গেছেন চমৎকারভাবে।
Profile Image for Rifat Rohan.
17 reviews
April 28, 2024
একজন সমর নায়ক থেকে সেনা নায়ক, সেনা নায়ক থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠা জিয়াউর রহমানের হাতে গড়ে উঠে বিএনপি নামক একটা ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল। নানা প্রতিকূলতায় বিএনপি আজ টিকে আছে। দলটি পার করেছে নানা সময় অসময়। দলের নীতিনির্ধারকদের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত কখনো দলকে ডুবিয়েছে কখনো ভাসিয়েছে।

লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ তার এই বইটিতে সেই চিত্রই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তবে প্রয়োজনের তাগিদে বিএনপি ছাড়াও এই বইটিতে বিভিন্ন দল,মত, সময় উঠে এসেছে। লেখক বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে বিএনপি'র উত্থান-পতন ব্যাখ্যা করেছেন। তবে লেখক যে জিনিসটা বেশি বোঝাতে চেয়েছেন বিএনপি শুধু 'বিএনপি' নয় বরং একটি বিপরীত আওয়ামী পন্থা। তাই এই দলটি নিশ্চিহ্ন হলেও একটা বিপরীত আওয়ামী পন্থা জেগে উঠবেই। কথাটি মিথ্যে নয়। তবে যেদিন আওয়ামীলীগ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব�� সেদিন এই কথাটি মিথ্যে হলেও হতে পারে।

বইটিতে বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমনাকে বিশ্লেষণ করেছেন। ভালো মন্দ তুলে ধরেছেন। জিয়া-মুজিব সম্পর্ক ও কিছুটা উল্লেখ করেছেন। তবে খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থানই যে জিয়াকে রাজনীতির নায়ক বানিয়েছে লেখকের সেই উপলব্ধি চমৎকার লেগেছে। লেখকের অন্য দুইটি বই (আওয়ামী লীগ উত্থান পর্ব ১৯৪৮-১৯৭০, জাসদের উত্থান পতন:অস্থির সময়ের রাজনীতি) থেকে এই বইটি তুলনামূলক ভালো লেগেছে।
Profile Image for Ariful Islam.
3 reviews
October 19, 2018
Starting was good with proper analysis of the party but after half of the book it turned out to be criticising or discussing about other parties without proper analytical judgement how they caused damage for them
Profile Image for Nasim Bin Jasim.
116 reviews4 followers
February 21, 2023
স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের তৎকালীন রাজনীতির অবস্থা সামাজিক অবস্থা এবং সামরিক অবস্থানের সাথে সাথে সে সময়ের বিভিন্ন কাহিনী তথা ইতিহাসের বিষয় মহিউদ্দিন আহমেদ তুলে ধরেছেন। জিয়াউর রহমানের উত্থান তার সামরিক জীবন এবং পরবর্তীতে রাজনৈতিক জীবন এর রেফারেন্স ভিত্তিক বর্ণনা দিয়েছেন।
Profile Image for Sakib Chowdhury.
59 reviews
October 11, 2024
"বাংলাদেশকে জানি" #৮
মহিউদ্দিন আহমেদের পড়া প্রথম বই। বই না বলে রিভিউ পেপার বলা আরো মানানসই। যেকোন প্রেক্ষাপট নিয়ে এত বই না পড়ে ভদ্রলোকের একটা বই পড়লেই হয়। জানতে পারসি অনেক কিছু, কিন্তু পড়ে মজা লাগে নাই। বিএনপির ইতিহাস নিয়ে এর থেকে কম্প্রিহেনসিভ বই খুব সম্ভবত নাই।
Profile Image for Kripasindhu  Joy.
543 reviews
April 14, 2025
বিএনপির রাজনীতি বোঝার চেষ্টা করতে গেলে এই বইটা পড়া যায়। জিয়াউর রহমানের সেনাশাসন ও রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়, এবং দল গঠন নিয়ে বেশ গভীরে আলোচনা আছে। এই অংশটা সবচেয়ে ভাল করে লেখা মনে হয়েছে। জিয়ার মৃত্যুর পরের সময় থেকে করা লেখা অংশ হালকা লেগেছে।
2 reviews
June 22, 2019
It is a vey important book. This is must be recommended for me.
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Imran Helal.
151 reviews57 followers
June 22, 2024
বইটি লেখার সময়কাল যদিও ২০১৫ সাল, অদ্ভুত হলেও সত্য যে ২০২৪ এর মাঝামাঝি এসেও অবস্থা ঠিক একই রকমই আছে!
15 reviews
September 2, 2025
ফোর্ট উইলিয়াম এ এক জন মুক্তিযুদ্ধার ছবি সংরক্ষিত আছে
তিনি জিয়াউর রহমান...

তার সৃষ্টি করা দল বিএনপি এর ইতিহাস,ভাংগা গড়া,নেতৃতব সব কিছু দেখানোর চেষ্টা করছে লেখক।
এক কথায় তথ্যবহুল লেখা।
Profile Image for Partha Pritom.
138 reviews6 followers
April 3, 2017
বাংলাদেশের ইতিহাসের বিবরনী পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায় 1971 পর্যন্ত যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত সংবলিত সুপাঠ্য বই আছে. কিন্তু এর পরবর্তী ইতিহাস ধোয়াচ্ছন্ন. যে যার মন মত কথা বলে বেড়ায়. কেউ জাতির পিতাকে তুলনা করে ফেরাউনের সাথে, আর কেউ বলে থাকে সম্পূর্ণ নির্দোষ. এই সময়ে গড়ে উঠে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিকদল বিএনপি. সুতরাং এর উত্থান পতনের কাহিনি পড়তে গেলে অনেক কাহিনীই জানা যায়. কিভাবে বাংলা না জানা এক উর্দি পরা সামরিক শাসক মুসলিম জাতীয়তাবাদ এর পতাকার আড়ালে তৈরী করলেন এই দল. কিন্তু জিয়া পরবর্তী সময়ে তারা এন্টি আওয়ামীলীগ হিসেবেই প্রতিভাত হয়েছে এবং হচ্ছে. নিকটবর্তি সময়ে সব চেয়ে বড় ভুল ছিল নির্বাচনে না যাওয়া, যুদ্ধাপরাধী দের বিচারে জামায়াত কে সমর্থন করা. তাই বিএনপি সত্যিকার অর্থেই আবার কবে নিজেদের এজেন্ডায় মাথা তুলে দাড়াবে, সেটা সময় ই জানে.
তবে ইতিহাসের বিবরণী হলেও মহিউউদিন আহমেদের প্রাঞ্জল বর্ননায় পরটে খারাপ
লাগে নি। জিয়ার মৃত্যুর পরের সময় টুকু খুব তড়িঘড়ি করে শেষ করেছেন। এখান্টায় আরো একটু বিশদ আলোচনা প্রয়োজন ছিল।
Profile Image for Sadman Imran.
10 reviews4 followers
August 18, 2019
বি এন পি কে তুলে ধরার জন্য বইটা আমার কাছে মোটামুটি নিরপেক্ষ ধরণের মনে হয়েছে। তারপর ও প্রতিটা মানুষের ই পক্ষপাত প্রবণতা থাকবে এইটাই প্রকৃতির নিয়ম। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধর্ম আর বাঙালিত্বের প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই। দেশের স্বাধীনতার পর আওয়ামীলীগ হয়ে ওঠে একমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। কিন্তু আওয়ামীলীগ দলটি গড়ে উঠেছিল পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের শোষণ আর নিপীড়নের বিরুদ্ধে। তাদের কাছে বাঙালির কালচার আর অধিকারই ছিল প্রধান বিষয়। ইসলাম ধর্ম আর বাঙ্গালিপনা অনেক খানেই সাংঘার্ষিক। সুতরাং বাংলাদেশে যারা ধর্মের গুরুত্ব দিয়ে রাজনীতি করতে চায় তাদের কাছে আওয়ামীলীগের বিপরীতে একটা অবলম্বন দরকার। এই অবলম্বন এক সময় ছিল বিভিন্ন ডানপন্থি দল। কোন রাজনৈতিক দলের জন্মের ইতিহাস সাধারণত থাকে রাজপথের আন্দোলনের ভেতরে। কিন্তু বি এন পি এর জন্ম ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে। জন্ম তাদের খুব সংগ্রাম মুখর না হলে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের অবদান অনেক।
Profile Image for Topu Roy.
2 reviews35 followers
August 17, 2019
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস নিয়ে আমার আগ্রহ সাম্প্রতিক। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির উত্থান এবং এর সাম্প্রতিকতম সংকটকাল নিয়ে একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে এই বইটাতে। শেষের দিকে একটু তাড়াহুড়ো করে ইতি টেনেছেন বলে মনে হলো। যেহেতু এই ধরণের ইতিহাস নিয়ে আমার পূর্ব পড়াশুনা নাই, তাই লেখকের বায়াসড হয়ে বইটা লিখেছেন কিনা জানিনা।
Profile Image for Jaber Ahamed.
10 reviews3 followers
September 25, 2018
একটা দেশের সকল স্বপ্ন কিভাবে একজন নষ্ট করে দিলেন তা জানতে এই বইটা পড়া দরকার
Displaying 1 - 28 of 28 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.