Anisul Hoque (Bangla: আনিসুল হক) is a Bangladeshi screenwriter, novelist, dramatist and journalist. He graduated from Bangladesh University of Engineering and Technology, trained as a civil engineer.
His inspiration in journalism and writing started during his student life. After his graduation he joined to serve as a government employee but resigned only after 15 days. Instead he started working as a journalist. He attended the International Writing Program at the University of Iowa in 2010. Currently, Hoque is working as an Associate Editor of a Bengali language daily, Prothom Alo.
His novel মা was translated in English as Freedom's Mother. It was published in Maithili too. He was honored with Bangla Academy Award in 2011.
মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আনিসুল হকের উপন্যাস। এতে উঠে এসেছে আইয়ুবের পতনের পর দুনিয়া কাঁপানো 'প্রেমিক' ইয়াহিয়ার সামরিক শাসন,৭০ সালের নির্বাচনে বাংলার মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জয়ী করার প্রেক্ষিতে ক্ষমতা না দিয়ে পাকিদের বাঙালি নিধনের ভয়াবহ চিত্র, মুক্তিপাগল বাঙালির প্রবল প্রতিরোধ। ইয়াহিয়া ও তৎকালীন মার্কিন প্রশাসনের ভেতরকার নানা ফ্যাক্ট এসেছে নাটকীয়ভাবে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি যা ফুটিয়ে তথা রসিয়ে রসিয়ে তুলে ধরেছেন হক সাহেব তা হচ্ছে (না)পাকিদের পালের গোঁদা ইয়াহিয়াসহ অন্যদের আলুর দোষ এবং এতদসংক্রান্ত নানা ঘটনা আর ঘটনার প্রক্ষিতে প্রকাশ পেয়েছে তথাকথিত ইসলামি (না)পাকি সেনাবাহিনীর আসল রূপ। বইয়ে বর্নিল কাহিনির রেফারেন্স নিয়েছেন বিশদ ঘাঁটাঘাঁটি করে।
আসেন,কিছু নেগেটিভ কথা বলি : আনিসুল হক যিনি যারা ভাষার ভোর এনেছিল, মা কিংবা অন্ধকারের একশো বছর-এর মতো বই লিখেছিলেন তিনি কীভাবে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামকে উপজীব্য করে এমন এমন সস্তা বস্তাপঁচা যৌন সুড়সুড়িদায়ক বই লিখলেন তা বোধগম্য নয়। হয়তো ইদানীং আনিস সাহেব চারিদিকে যৌনতা ছাড়া কিছুই দেখতে পান না। যার প্রতিফলন তার সম্প্রতি লিখিত উপন্যাসগুলোতে মেলে। কুরুচিপূর্ণভাবে যৌনতার উপস্থাপন ছাড়াও বেশ লেখা যায় তার প্রমাণ তিনি পূর্বে দিয়েছেন।কষ্ট করে তাকে আনিসুল গুপ্ত হওয়ার প্রয়োজন নাই।
প্রথমেই স্বীকার করে নেই। আনিসুল হকের ব্যাপারে আমার ধারণা খুব একটা জুতের না। ভার্সিটিতে থাকতে তার বইয়ের সাথে প্রথম মোলাকাত ঘটে। ততদিনে আনিসুল হক বেশ পরিচিত নাম। 'ব্যাচেলর' বেরিয়েছে বছরখানেক আগে, ধারাবাহিক 'একান্নবর্তী'-ও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এনএসইউ লাইব্রেরিতে আনিসুল হকের বই ছিল। নাম ভুলে গেছি। ছোট্ট বই। এক বসায় পড়ে ফেলার মত। বই শেষ করতে সময় লাগেনি এটি সত্যি, কিন্তু সমস্যা হলো একেবারেই ভালো ছিল না বইটা। মোটেও টানেনি।
'স্বপ্নের মানুষ' নামে আরেকটা বই পড়েছিলাম। ওটাও আহামরি কিছু ছিল না। মাঝখানে আনিসুল হকের সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস, মা, পড়ার একটা চেষ্টা চালিয়ে ছিলাম। কিন্তু বেশী দূর আগাতে পারিনি।
তারপর লম্বা বিরতি। 'যারা ভোর এনেছিল' নিয়ে অনেক হাইপ-টাইপ দেখে কিনে পড়ে ফেলি। বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়েছিলাম খেয়াল আছে। অবশ্য বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে যে কোন বই-ই আমি খুব আগ্রহ নিয়েই পড়ি। লেখাটা আমার ভালোই লেগেছিল। তবে তিনটা জিনিস নিয়ে খুঁতখুঁতানি রয়েই যায় - ১. ব্যক্তিপূজা, ২. ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী দিয়ে শুরুর স্টাইলটা পছন্দ না হওয়া এবং ৩. নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গির অভাব।
'জেনারেল ও নারীরা' এদিক দিয়ে বেশ খানিকটা ব্যতিক্রম। এখানে আনিসুল হক অনেক ধারালো, শাণিত ও সাহসী। তিনি কোন রাখডাক না রেখেই তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের নারীপ্রীতির কথা বলেন, অসংকোচে বলে যান তার অসংলগ্ন আচরণের কথা, মাতলামির কথা। তার আমলে প্রেসিডেন্ট হাউস পরিণত হয়েছিল 'পতিতালয়ে', যেখানে নামীদামী গায়িকা/নায়িকা থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের নারীদের আনাগোনা দেখা যেত যারা যে কোন ভাবে আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের নেকনজরে আসতে চান। ইয়াহিয়া খানও এ সব বিষয়ে বেশ দরাজদিল। নারীদের জন্য তার অনুগ্রহের দরজা সবসময়ই খোলা।
তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীদের মনোভাব বোঝার জন্য বইটা বেশ কাজের। স্রেফ ইয়াহিয়াই নন। জুলফিকার আলী ভুট্টো, সেনাপ্রধান হামিদ, একে নিয়াজী - এদের ব্যাপারে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায় বইয়ে।
তবে সমস্যা হলো ইয়াহিয়ার ওপর ফোকাস বেশি থাকায় অন্যদিকে লেখক সে রকম সময় দেননি বা দিতে পারেননি। যুদ্ধের খুঁটিনাটি বইয়ে অনুপস্থিত। যা আছে তা ভাসাভাসা, সেরকম স্পষ্ট নয়। এটা বইয়ের একটা দুর্বলতা।
আমার মতে এখনো পর্যন্ত এটা আনিসুল হকের সেরা কাজ। তার ব্যাপারে যে নেগেটিভ ধ্যান ধারণা ছিল তা কিছুটা হলেও কেটেছে।
এই বইটা দ্বিতীয়বার পড়ার পরে আনিসুল হকের প্রতি আমার রুচি উঠে গেছিলো।
বইটার প্রথম দেখা পাওয়া যায় আমি যখন ক্লাস সেভেন বা এইটে পড়ি। বই কেনার সামর্থ্য ওই বয়সে খুব একটা ছিল না। এক বন্ধু কিনেছিলো, পড়তে শুরু করার পরে বইখানা তার কাছে চটির থেকে বেশি কিছু মনে হয়নি।
খচ্চর বন্ধুটি বইটা নিয়ে এলো ক্লাসে। স্কুল ছুটির পরে মাঠে আমরা গোল হয়ে বসতাম, একজন পড়তো বইটা বাকিরা শুনতাম। হক সাহেব যেভাবে রসিয়ে রসিয়ে যৌন সুড়সুড়ির আলাপ করেছেন, ওরকম করেই রসিয়ে পড়ে শোনাতো খচ্চরের শিরোমণি আরেক বন্ধু।
অথচ আনিসুল হকের গদ্যকার্টুন সমগ্র, একাত্তরের একদল দুষ্টু ছেলে সহ প্রথম আলোয় তার লেখা কলাম, কিশোরআলোয় তার লেখা গল্পগুলো ছিল সুমধুর। অন্তত ওই বয়সে খারাপ লাগেনি।
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক দারুণ একটা উপন্যাস হতে পারতো বইটা, সাথে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর চরিত্রের একটা রূপরেখা পাওয়া যেত অনায়াসেই যদি না যৌনতার এরকম রগরগে বর্ণনা থাকতো।
বইয়ের নামের সাথে মিল রেখে কয়েকপাতা চলছিলো তারমধ্যে চলে আসে পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।লেখক স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বিভিন্ন বই ও পত্রিকা থেকে উপাত্ত নিয়ে লিখেছে তাই মনে হয়েছে তৎকালীন পাকিস্তানের ও '৭১ পরবর্তী পাকিস্তান নিয়ে লিখে দীর্ঘায়িত করতে পারতেন।।
চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলা ২০১৯ থেকে কেনা প্রথমা প্রকাশনীর বইটির প্রথম প্রকাশ ২০১৬। বইটির লেখক সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে বাংলাদেশ এর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এই বইতে তুলে ধরেছেন। তবে বইয়ের শুরুর দিকে লেখক বইয়ের নামের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ইতিহাস ব্যক্ত করেছেন কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় উনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়ে দিয়েছেন; যেটি হয়তো যারা মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিদ্যুৎ বেশি পড়েছেন তাদের একটু একঘেয়ে লাগবে। তবে এই বইয়ে জেনারেল ইয়াহিয়া পশুত্ত্বকে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শেষের দিকে ইয়াহিয়ার শেষ পরিণতি এবং তার প্রেসিডেন্ট ভবনে নিয়মিত যাতায়াত কারী নারীদের পরিনতি বর্ননা করা থাকলে বইয়ের নামটি হয়তো সার্থক হতো। সর্বোপরি বইটি পড়ার পর আপনি সম্পূর্ণ নতুন কিছু তথ্য জানতে বাধ্য হবেন।
আমি ২০১৬ এর বইমেলায় এই বইটার নাম কোথায় যেন শুনেছিলাম । ইচ্ছা ছিল কেনার, কিন্তু তখন কেনা হয়ে উঠেনি । কিন্তু এবার ২০১৭ তে আর মিস করিনি । জেনারেল ও নারীরা - নামেই কিছুটা আভাস পাওয়া যায় এই বই হয়তো সব বয়সী পাঠকের জন্য নয় । কারণ অসংখ্য বার নগ্নতা , যৌনতা ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি করা হয়েছে এতে । লেখক অবশ্য বইয়ের ভূমিকাতে উল্লেখও করেছেন এটা বলে যে, বইটি তরুণতর পাঠকের জন্য উপযোগী নয় । কিন্তু পুরোটা পড়ার পর আমার এটাই মনে হয়েছে , বইটি সকলেরই পড়া উচিৎ । পড়ার জন্য বয়স লাগেনা :) তাইনা ? বইটিতে প্রাধান্য পেয়েছে ,অসংখ্য প্রেমিকার সাথে নোংরা সম্পর্ক রাখা পাকিস্তানী প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কথা , আছে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে সুবিধা পাওয়ার জন্য স্বেচ্ছায় ইয়াহিয়ার বিছানায় আসা সমাজের উচু ঘরের মেয়েদের কথা , আর আছে আইয়ুব খান , ইয়াহিয়া খান আর ভুট্টোর হাজারও ষড়যন্ত্রের পরেও শেখ মুজিবের নেতৃত্বে পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয়া বাংলাদেশের কথা । কিছুটা কাল্পনিক , কিছুটা আগে থেকে জানা গল্পের মাধ্যমে শুরু বইটির প্রথম পাতা । এ্যারাবিয়ান নাইটস্ এর শাহেরজাদি তাঁর সুলতানকে গল্প বলা শুরু করে , গল্প শেষ হলেই সুন্দরী শাহেরজাদিকে মেরে ফেলবে সুলতান , এটা জানে সে , তাও বলতে থাকে গল্প , সুলতানের মতোই নারীভোগী আরেকটা চরিত্র , ইয়াহিয়া খানের গল্প । বঙ্গবন্ধু আর জেনারেল ইয়াহিয়া ছাড়াও এই গল্পের বিশেষ একটা চরিত্র আমার মনে হয়েছে 'আকলিম' অর্থাৎ 'জেনারেল রানী' কে । অনেক আগে এক পুলিশের স্ত্রী ছিলেন তিনি । ঘটনাক্রমে সন্তান নিয়ে সংসার থেকে আলাদা হয়ে যান আকলিম আর তার দেখা হয় জেনারেল ইয়াহিয়ার সাথে । গল্পের অন্যান্য নারী চরিত্রের উপর বলা চলে এক প্রকার প্রভাবই ছিল এই 'জেনারেল রানী'র । ইয়াহিয়া যখন বিভিন্ন মহলে নিন্দিত হচ্ছিলেন তাঁর নারী সঙ্গের কারণে , নিজের অধিনস্ত অফিসারদের স্ত্রীদের সাথে বিকৃত ভাব আদান প্রদানের কারণে , ঠিক সেসময়েই বাহ বাহ পাচ্ছিলেন তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিক্সন ও তাঁর এডভাইজার কিসিঞ্জারের । এমনকি পূর্ব-পশ্চিম পাকিস্তানে নির্বাচনের সময়ে থেকে নিক্সন কর্তৃক অন্যায় ভাবে ইয়াহিয়াকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য ও সমর্থন দেয়ার ঘটনাও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মাধ্যমে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক এই বইয়ে । আমি ইতিহাস টাইপের বই সাধারণত কম পড়ি । আর আমার মনে হয়েছে , আমার মতো যারা আছেন, তাদের জন্য বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের ইতিহাস একেবারে সংক্ষেপে জানার জন্য এই বইটা ভালো । বইয়ের শেষে উল্লেখ করা আছে ৩৩ টা রেফারেন্স এরও তালিকা । যদিও আগেই বললাম যে বইটা সংক্ষেপে বাংলার ইতিহাস জানার জন্য পড়া যেতে পারে , তবুও একটা জিনিস আমার মনের মধ্যে খচখচ করছে । আনিসুল হক অনেক বড় মাপের লেখক ,যার লেখার ব্যাপারে কিছু বলার এখতিয়ার আমার নাই , তবে একজন ছোট পোকা পাঠক হিসেবে মনে হয়েছে , বইটিতে ১৯৭১ এর মার্চের ঘটনার পরের কাহিনী গুলি খুব দ্রুত দেখানো হয়েছে এবং পড়তে না পড়তেই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর কাহিনী চলে এসেছে । তাও ভালো লাগবে আশা করি । আমার এই রিভিউ এখন শেষ করা উচিৎ , নয়তো পুরো গল্পের স্পয়লার হয়ে যেতে পারে :p তবে বইটার শেষের দিকে ১৯৭১ এর সময়কার এক সুইপারের ভাষ্য উল্লেখ করা আছে , তৎকালীন সিটি কর্পোরেশনের এক সুইপারের ভাষ্য । পড়েই দেখুন , নিজের চোখের সামনে ভাসবে অনেক কিছু ...
উপাদানের স্বকীয়তা, লেখনী কোনটির ভিত্তিতেই বইটি খুব মুগ্ধ করেনি। চরিত্রগুলো ফুটে উঠেছে, তবে বিকাশ লক্ষ্য করা যায়নি। নামকরণ যথার্থ মনে হয়নি। 'জেনারেল ও নারীরা' শিরোনামটা - অনেক বিস্তৃত অর্থে ধারনা প্রদান করে সকল জেনারেল দের নিয়ে,যা সঠিক নয়। এই শিরোনাম ও এর বাহক ইয়াহিয়া আর তার জেনারেলরা। এর কালিমা অন্য কোন জেনারেলদের দেওয়া ঠিক হবে না, যা এই নাম সাধারন অর্থে সকল জেনারেলের উপরই বর্তায়। সূচনা শৈল্পিক নয় বা সংশ্লিষ্ট মনে হয়নি মূল গল্পের সাথে। ইতিহাস জানার জন্য ( হোক তা ইয়াহিয়ার আমোদ ফূর্তি) আরো উপাদান বহুল, দৃঢ় ভাষা শৈলী হতে পারত। তবে লেখকের বিস্তর পড়াশোনা আছে বলার অপেক্ষা রাখে না।
This entire review has been hidden because of spoilers.