মিলিটারি থেকে অল্পবয়সে রিটায়ার করে সুবুদ্ধি রায় ভাবলো, এবার নির্জনে কোথাও আস্তানা গেড়ে ছোটমতো একটু দোকান করবে। নন্দপুরের খোঁজ মিলিটারিরই একটা লোক দিয়েছিল। জায়গাটা খারাপও লাগেনি সুবুদ্ধির। আধা শহর, আধা গ্রাম। সঙ্গী হলো ভাগ্নে কার্তিক, সে মামার সঙ্গে থাকবে আর নন্দপুরের স্কুলে পড়ালেখা করবে। পুরোনো একটা বাড়িও কিনে ফেললো সুবুদ্ধি, কিছুটা সারিয়ে নিয়ে থাকা যাবে। কিন্তু বাড়িটায় ওঠার পর একটার পর একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে সুবুদ্ধি আর কার্তিকের মনে হতে লাগলো, বাড়িটা কেনা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক।
তিনি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ময়মনসিংহে (বর্তমানে বাংলাদেশের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন—যেখানে তাঁর জীবনের প্রথম এগারো বছর কাটে। ভারত বিভাজনের সময় তাঁর পরিবার কলকাতা চলে আসে। এই সময় রেলওয়েতে চাকুরিরত পিতার সঙ্গে তিনি অসম, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বিভিন্ন স্থানে তাঁর জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি কোচবিহারের ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। শীর্ষেন্দু একজন বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা ও দেশ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত।
তাঁর প্রথম গল্প জলতরঙ্গ শিরোনামে ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সাত বছর পরে সেই একই পত্রিকার পূজাবার্ষিকীতে তাঁর প্রথম উপন্যাস ঘুণ পোকা প্রকাশিত হয়। ছোটদের জন্য লেখা তাঁর প্রথম উপন্যাসের নাম মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি।
উদভ্রান্ত সেই আদিম যুগে, যখন আমি সত্যিই আঁতেল হতে চেয়েছিলাম, তখন এই অমর সৃষ্টিকে চারটি তারা দিয়েছিলাম। ঈশ্বর, তথা শীর্ষেন্দু, যেন আমায় ক্ষমা করেন। তিনি যেন তাঁদেরও ক্ষমা করেন, যাঁরা বইটি না পড়ে শুধু এই রিভিউ পড়ে ঠিক করার চেষ্টা করছে, এটা পড়া উচিত কি না। তাঁরা জানেন না, তাঁরা কী হারাচ্ছেন। আর এই যে আপনি! এখনও রিভিউয়েই আটকে আছেন? শিগগির বইটা খুলে পড়তে বসুন দেখি। নইলে সনাতনের মুখোমুখি পড়ার চেয়েও বড়ো বিপদ হতে পারে কিন্তু।
কি এক সুন্দর গল্প।এক চিমটি সাই ফাই,এক চিমটি ফ্যান্টাসি আর বাদ বাকি শীর্ষেন্দু স্যারের চমৎকার লেখনীর দরুণ অতি সুন্দর এক উপন্যাস।এই বড়বেলা তে এসেও যা দারুণ লাগলো না বলার বাইরে। অসম্ভব সুন্দর গল্প
দূর্দান্ত একটি বই পড়লাম। ভূত নিয়ে যে এমন মজা করা যায়- তা আগে কখনো কল্পনাই করিনাই। গল্পের চরিত্রগুলো বেশ মজার। একজন নরহরিবাবু। বাড়ি বিক্রি করবেন। কিন্তু তাঁর আক্ষেপ যে পুরোনো বাড়িতে ভুত নেই। ভূত থাকলে বাড়ির দাম বেশি পাওয়া যায়। এরপর আছেন অঘোর বাবু। একজন বিজ্ঞানী। এমন একটি রাসায়নিক যৌগ আবিষ্কার করেছেন যা খেয়ে ঘুমালে ১৫০ বছর পরে ঘুম ভাঙবে। এ কাজে তাঁকে সাহায্য করেছেন হিক নামের এক এলিয়েন। আরেকটি চরিত্র সনাতন বাবু। বিজ্ঞানী সাবেহ এই সনাতন বাবুকে ৫ হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে দেড়শ বছর ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিলেন। ভাবা যায়? ১৫০ বছর! এত বছর পরে তাঁকে খুঁজে পায় সুবুদ্ধি সাহেব। তিনি এই গ্রামে নতুন এসে নরহরিবাবুর থেকে একটি বাড়ি কিনেছেন। কেনার আগে ভালো করে দেখে নিয়েছেন ভূতের বালাই আছে কিনা। ঘটনাচক্রে সুবিদ্ধিই ১৫০ বছর ঘুমিয়ে থাকা সনাতনকে জাগিয়ে তোলে। সবচেয়ে মজার চরিত্র গবিন্দ বিশ্বাস। ভূতের ভয় না থাকলেও তাঁকে সবাই ভয় পায়। গবিন্দ বাবু কিন্তু ডাকাত নয়, আবার গুন্ডাও নয়। তাঁর ব্যবসার কারনেই সবাই তাঁকে ভয় পায়। তাঁর বাড়ির সামনে দিয়ে সবাই চোখ বন্ধ করে হাটে। দুপুর ১২ টার মধ্যে যদি গবিন্দ বাবুর সাথে কারো দেখা হয় তবে তাঁর নিশ্চিত কোন বিপদ হবে। তাহলে ব্যবসাটা কি? সেটা হলো , ধরুন আমচাঙ্গার রাগ আছে জামচাঙ্গার ওপর। আমচাঙ্গা গিয়ে গোবিন্দ বাবুকে হায়ার করবে যাতে গোবিন্দ বাবু জামচাঙ্গার সাথে একটু দেখা করে আসে। গোবিন্দ বাবুর মুখ দেখলেই জামচাঙ্গার সর্বনাশ হয়ে যাবে। এই হলো তাঁর ব্যবসা। আরো কয়েকটি চরিত্র আছে। সেগুলো আপনারাই পড়ে খুঁজে বের করুন। সব বলে দিলে আপনি কি আবিষ্কার করবেন? সবগুলো চরিত্র মিলে দারুণ লেগেছে। ২০০৩ সালে বইটি অবল্বনে একই নামে একটি মুভি করা হয়েছে।
"ভবিষ্যতের মনুষ্য, যদি সনাতনের সন্ধান পাইয়া থাকেন, তাহা হইলে তড়িঘড়ি করিবেন না। বাক্সটির পাশেই ইহা খুলিবার একটি চাবি পাইবেন। বাক্সটি খুব সন্তপর্ণে খুলিবেন। " "জগদীশ্বরের কৃপায় যদি সত্যিই সে চক্ষু মেলিয়া চাহে এবং পুনরুজ্জীবিত হয় তাহা হইলে আমার গবেষণা সার্থক হইয়াছে বলিয়া ধরিতে হইবে।" শীষেন্দু মুখোপাধ্যায় সাহেবের লেখা অদ্ভুততুড়ে সিরিজের বই পাতালঘর। "অদ্ভুততুড়ে", "পাতালঘর" দুটো নামের সাথেই বইয়ের প্লট গলায় গলায় মিলে গেছে! কি নেই এই এই গল্পে?! অসাধারণ বুদ্ধিমান সুবুদ্ধি, বিজ্ঞানী ভূতনাথ, ভূত-বিজ্ঞানী অঘোর সেন, হিক নামের এলিয়েন, অপয়া সনাতন আরও অনেক অদ্ভুত চরিত্র। বইটি নিসন্দেহে সুখাদ্য। এখনও মন খারাপ থাকলে এই বইটা পড়তে বসি; কাজও হয় ম্যাজিকের মতো। গল্পের প্লট তেমন আহামরী নয়। তবে মোদ্দাকথা হল শীষেন্দু বাবুর লেখার মুন্সিয়ানায় বইটা ছোট-বড় সকলের জন্যই অনেক উপভোগ্য। নির্জন ভরদুপুরে বইটি কিন্তু চমৎকার সঙ্গী হতে বাধ্য। Happy reading bibliophiles!
বেশ মজার, কমসেপ্টটা তেমন কিছু নতুন নয় কিন্তু লেখার মুন্সিয়ানা অসাধারন। কি নেই এই বইয়ে?! ভূত, এলিয়েন, ঘোড়েল বৈজ্ঞানিক সবই আছে এবং শেষটাও মজার। চমকটা বেশ নতুন এবং ভাল লেগেছে।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের 'অদ্ভুতুড়ে' সিরিজের অন্যান্য উপন্যাসগুলোর মতোই এই উপন্যাসটিও অসাধারন । এর উপর ভিত্তি করে একটি ফিল্মও হয়েছে 2003 সালে । কল্পবিজ্ঞান, রহস্য এবং সুন্দর উপস্থাপনার দরুন উপন্যাসটি দারুনভাবে উপভোগ্য হয়েছে । অঘোর সেনের অদ্ভুত আবিষ্কার এবং তাকে ঘিরে সুবুদ্ধি এবং তার ভাগ্নের অভিজ্ঞতা পড়তে যেমন দারুন লাগে তেমনি রোমাঞ্চকর । উপন্যাসের প্রতিটা পর্বে হাস্যকৌতুক, রহস্য, কল্পবিজ্ঞান মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে । লেখকের সুচারু লেখনী এবং চরিত্রের বৈচিত্র্য তুলে ধরার অসামান্য দক্ষতা উপন্যাসটি পড়লেই বোঝা যায় । কিশোর উপন্যাস সিরিজের এই উপন্যাসটি পরে অনায়াসে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে দেওয়া যায় । অপয়া গোবিন্দবাবুর চরিত্রটিও যথেষ্ট কৌতুকের । এছাড়াও কল্পবিজ্ঞান এবং রহস্য সুন্দরভাবে উপন্যাসটিকে উপভোগ্য করেছে । সবমিলিয়ে উপন্যাসটি কিশোর পাঠক-পাঠিকা তথা জরকোনো বয়সের জন্যই সমানভাবে আনন্দদায়ক ।
অবিবাহিত সুবুদ্ধি বাবু মিলিটারি থেকে অবসরের পর নন্দপুরে একটি পুরোনো বাড়ি কিনে সেখানে থাকতে শুরু করলেন তার বোনপো কার্তিকের সাথে। সেখানে তাদের আলাপ হয় অপয়া গোবিন্দ বিশ্বাসের সাথে, যাকে দুপুর বারোটার আগে দেখলে দিন খারাপ যায়। নন্দপুরের বিখ্যাত তার্কিক দ্বিজপদ ভট্টাচার্য যিনি কারণে অকারণে সবার সঙ্গে নানা বিষয়ে তর্ক করে থাকেন। তিনি ভূতনাথ নন্দীর বাড়িতে একজনকে দেখতে পান, যিনি অঘোর সেনের বাড়ি খুঁজছেন। দ্বিজপদ ভট্টাচার্য, সমাজ মিত্তির ও বটকেষ্ট ভূতনাথ নন্দীর বাড়িতে গিয়ে দেখেন ভূতনাথ নন্দী ও তার কাজের লোক হারুয়ার উপর কেউ আক্রমণ করেছে। তারপর কি হলো? গল্পের নাম পাতালঘর কেন? পাতালঘর বলে সত্যিই কি কিছু ছিল? কি হয়েছিল সেখানে? প্রখ্যাত সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা অদ্ভুতুড়ে সিরিজের এই পাতালঘর কল্পবিজ্ঞানের গল্পে রয়েছে এক দুর্দান্ত কাহিনী।
এই গল্পটা আমি কৈশোরে এতবার পড়েছি, এতবার পড়েছি যে তার ইয়ত্তা নেই। অথচ এখনও আমাকে পড়তে বলা হলে আমি ঠিক বই নিয়ে বসে যেতে রাজি হবো! এত সাবলীলভাবে লেখা, এত বেশি হাসির, আবার বেশ সুন্দরও! কতবার ভেবেছি, বড় হলে এই গল্পের ওপর একটা সিনেমা বানাবো! খুবই মজার একটা গল্প। এর ওপর একটা সিনেমাও আছে বোধহয়, আমি বানানোর আগেই অন্য কেউ বানিয়ে ফেলেছে, হাহা। পাঁচ তারকা দেয়ার কারণ অনেকটা আবেগও। তবে বেশ মজার বই, তাতে কোনোই সন্দেহ নেই।
আমি বরাবর এ শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর একজন বড়সড় ভক্ত, বলা যায় দী ফেন।পাতালঘর শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর অদ্ভুতুড়ে সিরিজ এর বই, সুবুদ্ধি এবং সনাতন বাবুর কনভারসেশন স্মরণ রাখার মত ছিল। প্রত্যেকটা পাতাএ হাসি আর হাল্কা উত্তেজনায়ে ভরপুর। কৈশোর যেন সুরসুরি কেতে গেল ছিত্তে... ;)
One of my all-time favorite books, it's crazy, it's weird, it's fun and most importantly it is so entertaining. The narrative takes you to a world where nothing seems impossible, the author creates some really adorable characters that are unforgettable.
অসাধারণ স্বাদের একটা বই পড়লাম। বেশ আলাদা, বেশ মজার। টক - ঝাল - মিষ্টি - নোনতা। আলাদা আলাদা স্বাদ পাওয়া যাবে। শুরু করলে শেষ করা না অবধি থামা মুশকিল। বেশ ভালো লাগলো। আমি সকলকে বলবো বইটি একবার পড়তে অসাধারণ অনুভূতি হবে। 🫶🏻 আমি চোখ বন্ধ করে ৫টি তারা দিয়েছি। 🌟🌟🌟🌟🌟