বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর গ্রন্থটি মূলত বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে সংঘটির হওয়া ঘটনাবলির একটি সংকলন। বিংশ শতাব্দীর যে বিষয়গুলো বিশ্ব রাজনীতিতে আলোড়ণ তুলেছিল, তা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে গ্রন্থটিতে। বিশেষ করে দু'দুটো বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতন পর্যন্ত প্রতিটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। চীনের সংস্কার কর্মসূচিও আলোচনা থেকে বাদ যায়নি। গ্রন্থটির দুটো উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হচ্ছে নতুন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবস্থা ও বিশ্ব পরিবেশগত সমস্যা। বিংশ শতাব্দিতে এই দুটো বিষয় বিশ্ব রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিল। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ভূমিকা, বাণিজ্যজোট হিসেবে এদেশের ভূমিকা সঙ্গতকারণেই আলোচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব পরিবেশগত সমস্যা শীর্ষক অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে বিশ্বের উষ্ণতারোধ সংক্রান্ত কিয়োটো চুক্তি থেকে শুরু করে বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনের বিষয়টি পর্যন্ত। বাংলাদেশের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিধায় উভয় অধ্যায়েই বাংলাদেশের প্রসঙ্গটি আলোচনা করা হয়েছে। 'সভ্যতার সংকট' বিংশ শতাব্দীর শেষ দিনগুলোতে আলোচনার ঝড় তুলেছিল। এটা বিবেচনায় নিয়েই ঊনবিংশ অধ্যায়ে 'সভ্যতার সংকট' ও নয়া বিশ্ব ব্যবস্থার স্বরূপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এর ফলে পাঠকরা ওইসব উপাত্ত ও তথ্য নিয়ে বিংশ শতাব্দীতে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণ করতে পারবেন।
গ্রন্থটি মূলত রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্রদের জন্য একটি রেফারেন্স বই। সাধারণ পাঠকরাও বইটি পড়ে বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
হাই স্কুলের সমাজ বইয়ের সিলেবাসে ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেইরকম টেক্সটবুকের মত একটা বই। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বইটা লেখা হয়েছে। অনেক ইনফরমেশন আছে, কিন্তু বিস্তারিত বিবরণ নেই। প্রবন্ধগুলো আরেকটু তথ্যসমৃদ্ধ হলে পড়াটা কিঞ্চিত বেশি আনন্দদায়ক লাগতো। পেজ সংখ্যা নাহয় একশ-দু'শ বাড়ত। তারপরও লেখক ২৬৪ পেজের মধ্যে ১০০ বছরের ইতিহাসের চুম্বক অংশ তুলে এনেছেন। পাঠকের মনে অনেক কী? কেন? কীভাবে?-টাইপ প্রশ্নের উদয় ঘটবে। সেটাই বা খারাপ কী? ইন্টারনেট আছে না!
বইটা অনেক ভালো হতে পারতো যদি তারেক স্যার পুরোটা একাডেমিক পার্সপেকটিভ থেকে না লিখতেন। আর,কেন যেন মনে হয়েছে সহজ তথ্যগুলোকে তিনি জটিল করে তোলবার চেষ্টা করেছেন।
অসাধারণ বই। বিংশ শতকের রাজনীতির ইতিহাসের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ব্যাখ্যা সুন্দরভাবে দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে উপসাগরীয় যুদ্ধ, আফগানিস্তান সমস্যা, সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতন, চীনের কমিউনিজমের সংস্কার সম্পর্কে। সেই সাথে আছে একবিংশ শতকের জন্য ভবিষ্যদ্বাণী, স্যামুয়েল পি হান্টিংটনের সভ্যতার সংকট নীতির আলোকে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা, নয়াবিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা, পরিবেশ নিয়ে আলোচনা ইত্যাদি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে এখানে।
যদি প্রশ্ন করি পৃথিবীর ইতহাসে কোন শতাব্দীটি সব চেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে ইতিহাসের পাতায় এবং তার উত্তর যদি হয় বিংশ শতাব্দী তাহলে মনে হয় না ভুল বলা হলো। দুইটি বিশ্বযুদ্ধ এবং সমাজতন্ত্রের উত্থান এবং পতন ছিলো এই শতাব্দীটির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মূলত বইটিতে ১৯০০-২০০০ সালের বিশ্ব রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি স্থান পেয়েছে। . বইটি মোট ১৯টি অধ্যায়ে বিভক্ত। যার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো হলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, রুশ বিপ্লব, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপীয় রাজনীতি, স্নায়ুযুদ্ধ, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন, মধ্যপ্রাচ্য সংকট, সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতন, আফগানিস্তান এবং সভ্যতার সংকট ও নয়া বিশ্বব্যবস্থার স্বরূপ। . ৭টা মহাদেশে সবথেকে সভ্য, শিক্ষিত এবং আধুনিক মানুষ ছিলো ইউরোপে, অন্তত লোকে তাই মনে করতো। কিন্তু যখন সেই ইউরোপেই দুই দুইটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয় যেখানে পৃথিবীর বৃহৎ এবং ক্ষুদ্র শক্তিগুলোও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে তখন মানুষ ইউরোপোর সভ্যদের নগ্ন রূপ দেখতে পায়। সেই যুদ্ধে কোটি কোটি মানুষ মারা যায়। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিনিদের পারমাণবিক বোমা হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে যখন আঘাত হানে তখন পৃথিবীর মানুষ সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারে যুদ্ধ কতোটা ভয়ংকর হতে পারে। . বইটিতে যতোগুলো যুদ্ধ এবং রাজনৈতিক সমস্যার কথা বলা হয়েছে মূলত তার বেশীরভাগই পুঁজিবাদ বনাম সমাজতন্ত্রের ফলাফল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যখন দুইটি নতুন পরাশক্তি পৃথিবীতে দেখা দেয় যার একটি হলো পুঁজিবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যটি সমাজতান্ত্রিক সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন তখন তারা দুই মতাদর্শের দেশ চাইছিলো তাদের মতাদর্শ পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে। যারই ফলস্বরূপ আমরা জার্মানের বিভক্তি দেখতে পাই, কোরিয়ার বিভক্তি এবং যুদ্ধ, আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন এবং মার্কিনিদের অস্র সরবরাহ যার ফলাফল তালেবানের জন্ম, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কিউবার মিসাইল সংকট, চীনে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে গৃহযুদ্ধ, পূর্ব ইউরোপে বিশৃঙ্খলা, ন্যাটোর প্রতিষ্ঠা এবং সর্বোপরি একটা স্নায়ুযুদ্ধ দেখা দেয় যা পৃথিবীর মানুষ কখনো ভুলবেনা এবং এর সমাপ্তি হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন বিভক্তির মাধ্যমে। আমরা বলতে পারি বিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সমস্যায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো সমাজতন্ত্র বনাম পুঁজিবাদকে কেন্দ্র করে। . আপনারা যারা ভূ-রাজনৈতিক ইতিহাস জানতে চান নয়তো আগ্রহী এইসব বিষয়ে তারা অবশ্যই বইটি পড়ে দেখবেন। বইটিতে যদিও কোনো ঘটনাই বিস্তারিত করে দেওয়া নেই কারন ১০০ বছরের বিশ্বরাজনীতির ইতিহাস কখনো ২৭২ পৃষ্ঠাতে বিস্তারিত দেওয়া যায়না আর তা যদি হয় বিংশ শতাব্দীর রাজনীতির ইতিহাস তাহলে তো প্রশ্নই উঠেনা।বইটির অন্যতম পজিটিভ দিক হলো বইটিতে সকল কিছুর কারনগুলো খুব সুন্দরভাবে ব্যাখা করা হয়েছে অযথাই অতিরিক্ত সাল-তারিখ এবং নাম উল্লেখ্য না করে। . Arthur Koestler এর একটি উক্তি দিয়ে শেষ করছি যা বইটিতে উল্লিখিত হয়েছে, "... from the down of consciousness until August 6, 1945 man had to live with the prospects of his death as an individual, since that day when the first bomb outshore the sun over Hiroshima, mankind as a whole has had to live with the prospect of it's extinction as a species. "
ইতিহাস, রাজনীতি নিয়ে পড়া আমার প্রথম বই। এটা পড়ার পড়া বিংশ শতাব্দীর রাজনীতি নিয়ে বেসিক লেভেলের একটা ধারনা হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি আলোচনা করা হয়েছে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে। এছাড়া মাধ্যপ্রাচ্য, চীন, জাপান, কোরিয়া, ইউরোপের অন্য বেশ কিছু দেশ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন বৈশ্বিক সংকট বেশ ভালোভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বইটা লেখা হয়েছে মূলত একটা বিশেষ পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে। তাই, স্বাভাবিকভাবেই বইটাতে প্রচুর তারিখ, পরিসংখ্যান আছে। তবে নিরপেক্ষ পাঠক হিসেবে পড়ার কারনে এ বিষয়গুলোকে খুব বেশি উপভোগ করতে পারিনি। অতিমাত্রায় তারিখ, সাল, পরিসংখ্যানের সংযোজন বেশ বিরক্তিকর এবং একঘেয়ে মনে হয়েছে। এই বইই হয়ত আবার একাডেমিক পারপোজে পড়লে বেশ উপকার হবে। আমার কাছে এটা একাডেমিক বইয়ের মতোই মনে হয়েছে। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে ঘটনাগুলো খানিকটা অগোছালো এবং কোন ঘটনার খুব বেশি ডেপথে যাওয়া হয়নি। এটা খুব সহজে অনুমেয় যে ২৭০ পাতার মধ্যে ১০০ বছরের ইতিহাসকে বন্দী করা যাবে না। তবে বইয়ে অনেক ইনফরমেশন পেয়েছি, যেটা একটা প্লাস পয়েন্ট। তাছাড়া, বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়ে আমার একেবারেই কোন ধারণা ছিল না, এই বই পড়ার পর মোটামুটি একটা ধারণা পেয়েছি। এই বইটার আরো একটা খন্ড আছে, কিছুদিন গ্যাপ দিয়ে হয়ত সেটা পড়ব। এখনই ঐটা শুরু করলে রিডার্স ব্লকে পড়ে যাব, তাই ভাবছি ওইটা পড়ার আগে ২-১ টা ফিকশন পড়ে ফেলব।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ইতিহাস বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রেফারেন্স বুক হিসেবে রচিত এই বইটার আলোচ্য বিষয় হলো বিংশ শতাব্দীর উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী যা পুরো বিশ্বকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, চীন ও রাশিয়ায সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব, কোরিযা, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্য সংকট, পরিবর্তিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন, নয়া বিশ্বব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে বইটাতে।
নিজে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র হওয়ায় আন্তর্জাতিক রাজনীতি আমার অন্যতম আগ্রহের একটা বিষয়। তো সেই আগ্রহের জায়গা থেকেই বইটা হাতে নেওয়া। কিন্তু বেশ খানিকটা দেরি হয়ে গিয়েছে আর কি, কেননা বইটার অধিকাংশই আমাকে ডিপার্টমেন্টের পাঠ্যসূচিতে পড়তে হয়েছে গত তিন বছরে। ডিপার্টমেন্টে ভর্তির পরপর পড়লে বেশ কাজে লাগত দেখা যাচ্ছে! যাহোক, বেশ কিছু জানা বিষয় আরেকবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া গেল বইটা থেকে। সাথে লেখকের নিজস্ব কিছু ব্যাখ্যা, ঘটনার ভিন্ন ভিন্ন কিছু দিক, কিছু নতুন তথ্যও পাওয়া গিয়েছে। আর যেহেতু লেখক সংক্ষেপে শুধু ঘটনাগুলো বলে গিয়েছেন, ফলে অনেক তথ্য আর তত্ত্ব নোট করতে হয়েছে বিশদভাবে জানার জন্য। প্রতিটা অধ্যায়ের শেষে রেফারেন্স উল্লেখ করায় বেশ কিছু নতুন বই আর আর্টিকেলেরও সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। চীনের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ও এর খাপ খাইয়ে নেওয়া, ভিয়েতনাম যুদ্ধ বা নয়া বিশ্বব্যবস্থা সম্পর্কে দারুণ কিছু তথ্য আর বিশ্লেষণও পাওয়া গিয়েছে।
তবে বইটার কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। প্রথমেই যা আসবে তা হলো বইটার আয়তন ও বিষয়বস্তুর মধ্যকার পার্থক্য। ২৭০ পৃষ্ঠার মধ্যে পুরো বিশ্বের ১০০ বছরের ইতিহাস লিখতে গেলে যা হওয়ার সেটাই হয়েছে; অনেক ঘটনা বাদ পড়েছে, অনেক ঘটনা শুধু নামেমাত্র উঠে এসেছে বা পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পাওয়া যায় নি। আরব-ইসরাইল যুদ্ধ, কিউবার বিপ্লব, ইরানের ইসলামি বিপ্লব বইয়ে স্থান পায় নি, মধ্যপ্রাচ্য সংকটের বর্ণনা নেই বললেই চলে। লেখকের নিজস্ব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের অভাবও দেখা গিয়েছে ; লেখক যেন শুধু ঘটনার সরল একটা বয়ান তুলে ধরেছেন। কালক্রম রক্ষা না করায় আলোচনা বুঝতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে, অনেক বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি হয়েছে। আর অ্যাকাডেমিক বই হওয়ায একটা খটমটে ভাবও লক্ষ্যণীয়। কিছু সন-তারিখেরও ভুল দেখতে পেয়েছি।
মোটের উপর বলতে গেলে, যারা ইতিহাস বা আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে একদম মৌলিক ধারণা নিতে চান তাদের জন্য বেশ উপকার করবে বইটা। কিন্তু ঐ পর্যন্তই, খুব বেশি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চাইলে হতাশ হতে হবে সেটাও বলে রাখছি।
১০০ বছরের রাজনীতির ইতিহাস, তাও পুরো বিশ্বের ! ২৭০ পৃষ্ঠার বইকে অপ্রতুল বললেও কম বলা হয় । লেখকও এ বিষয়ে অবহত । লেখক একজন স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ, তাই শুধুমাত্র গত ১০০ বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা গুলির উপর আলোকপাত করেছেন ।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ইতিহাস জানতে আগ্রহী অথচ কোন পূর্বপাঠ নেই তাদের জন্য এই বইটি পাঠ্য হতে পারে । বলা যেতে পারে, বইটি আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ের সিলেবাসের মত অর্থাৎ কোন বিষয়গুলো আপনার না জানলেই নয় । ইতিহাস বেশি না ঘেঁটে সারসংক্ষেপ করা হয়েছে কিন্তু তথ্যবহুল । যদি কোন বিষয় বিশদ জানার আগ্রহ থাকে তবে এখানে খুব বেশি সাহায্য আশা করা ঠিক হবে না । বইটি আমার কাছে অনেকটা নির্ঘণ্টের মত মনে হয়েছে ।
কোন বই সহজপাঠ্য হলেই সুখপাঠ্য হয় না । আন্তর্জাতিক রাজনীতি অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক একটি বিষয় । এর সাথে ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বইয়ের আয়তন কমাতে লেখক ইতিহাস সংক্ষিপ্ত করেছেন, আপত্তি নেই, কিন্তু কিছু বিষয়ের বর্ণনা আরও রসালো হতে পারত । অর্থাৎ সাহিত্য হিসেবে এ বই ব্যর্থ । সম্ভবত লেখককে এর জন্য দায়ি করা যায় না । তিনি অনেকটা পাঠ্যপুস্তকের ঢঙ্গে লিখেছেন এবং আমার অভিজ্ঞতা বলে বইটা সবাই সেই উদ্দেশ্যেই পড়ে থাকে , বিশেষ করে বিসিএস পরীক্ষার্থী অথচ এই বই পড়েন নি এমন মানুষ কম আছেন ।
পূর্ব ইউরোপ, স্নায়ুযুদ্ধ, চীনা বিপ্লব - অধ্যায়গুলো ভাল লেগেছে, কেননা এ বিষয়ে আমার ধারণা শুন্য ছিল ।
কিছু খারাপ দিক না বললেই নয় । বইয়ে প্রদত্ত সারণিগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণ লেগেছে । আলোচ্য বিষয়ের সাথে কিভাবে সম্পর্কযুক্ত তা গুছিয়ে লিখলে ভাল হত । অধিকাংশ সারণি ১৫-২০ বছরের পুরনো । সম্পাদক বা প্রকাশকের উচিৎ এগুলো আধুনিক তথ্য দিয়ে নবায়ন করা । লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাই না । তবে পাঠককে অনুরোধ করব নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে পড়তে ও বিচার করতে ।
সর্বোপরি একটি তথ্যপূর্ণ বই । এই বই পড়ে পাঠক আরও বিশদ জানতে আগ্রহী হবেন ।
• বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে বিংশ শতাব্দী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। দু'দুটি মহাযুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ, সাম্রাজ্যের পতন এবং পারমাণবিক বিবাদের আশঙ্কায় রুদ্ধশ্বাসে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছিল তখনকার মানুষজন। তারেক শামসুর রেহমানের লেখা এই বইটি আগ্রহী পাঠকদের প্রাথমিক ধারণা দিতে খুব ভালো কাজে আসবে। আমার ইন্টারে ইতিহাস থাকার সুবাদে এখানকার বেশিরভাগ ঘটনাবলিই কিছু বিস্তর পড়া হয়েছিল, তাই সেসব বিষয় ভালো করে বুঝতে পেরেছি। তবে এই বইটার মূল সমস্যা হলো লেখক শুধু তথ্যই রেখে গেছেন; কোন বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেননি, কিছু জায়গায় যৎসামান্য বিশ্লেষণ ছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের যুদ্ধক্ষেত্রগুলোর বর্ণনা তিনি দেননি। স্টালিন, হিটলার ও মুসোলিনিকে নিয়ে অনায়াসেই কয়েকটা অধ্যায় যুক্ত করতে পারতেন। নাজি বাহিনীর অপারেশন বারবারোসা, চার্চিলের ভাষণ আর ডানকির্কের মতো এত বিখ্যাত ঘটনাগুলোর কোন উল্লেখই তিনি করেননি। যদিও বইটির আকার অনুযায়ী সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করা যেত না, তবে শুধুমাত্র প্রাথমিক ধারণা পাওয়ার জন্য এ বইটির রেফারেন্স দেওয়া ভালো। এখানকার অনেক তথ্যই অসামঞ্জস্যপূর্ণ; মানে বইটির সম্পাদনা করার সময় অনেক সাম্প্রতিক তথ্য যোগ করা হয়নি, আবার কিছু কিছু জায়গায় করা হয়েছে। এত মুদ্রণের পরেও বইয়ে ভুল বানান আর টাইপো দৃষ্টিকটু লেগেছে।
বইয়ের নাম:-বিশ্ব রাজনীতির ১০০বছর লেখক:- তারেক শামসুর রেহমান প্রকাশক :- শোভা প্রকাশ প্রচ্ছদ:-ধ্রুব এষ মুদ্রিত মূল্য:- ৩০০টাকা পৃষ্ঠা:-২৭২
প্রিভিউ:-
বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর বইটি মূলত বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে সংঘটিত হওয়া ঘটনাবলির একটি সংকলন।বিংশ শতাব্দীর যে বিষয়গুলো বিশ্ব রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছিল,তা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়ছে বইটিতে।বিশেষ করে দু'দুটো বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতন পর্যন্ত প্রতিটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে।চীনের সংস্কার কর্মসূচীও আলোচনা থেকে বাদ যায়নি।বইটির উল্লেখ্যযোগ্য অধ্যায় হচ্ছে নতুন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও বিশ্ব পরিবেশগত সমস্যা।বিংশ শতাব্দীতে এই দু'টো বিষয় বিশ্ব রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিল।আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ভূমিকা, বাণিজ্যজোট হিসাবে এদেশের ভূমিকা সঙ্গত কারনেই তাই আলোচনা করা হয়েছে।অন্যদিকে বিশ্ব পরিবেশগত সমস্যা শীর্ষক অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে বিশ্বের উষ্ণতারোধ সংক্রান্ত কিয়োটো চুক্তি থেকে শুরু করে সবর্শেষ প্যারিস সম্মেলন বিষয়টি পর্যন্ত আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিধায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গটি আলোচনা করা হয়েছে।"সভ্যতার সংকট"বিংশ শতাব্দীর শেষ দিনগুলোতে আলোচনার ঝড় তুলেছিল। এটা বিবেচনায় নিয়েই ঊনবিংশ অধ্যায়ে "সভ্যতার সংকট"ও নয়া বিশ্ব ব্যবস্থার স্বরুপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।গ্রন্থটিতে প্রচুর সারণি ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে পাঠকরা ওইসব উপাত্ত ও তথ্য নিয়ে বিংশ শতাব্দীতে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণ করতে পারবেন।বইটি মূলত রাষ্ট্রবিজ্ঞান,ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্রদের জন্য একটি রেফারেন্স বই।একই সাথে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারীরা বইটি পড়লে খুবই উপকৃত হবেন।আর সর্বসাধারণ পাঠকরাও বইটি পড়ে বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
লেখক পরিচিতি:-
ড.তারেক শামসুর রেহমান বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জরি কমিশনের সাবেক সদস্য। তিনি বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান। অধ্যাপক রেহমান গত দু'দশক ধরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ও বৈদেশিক নীতি নিয়ে গবেষনা করেছেন।এর ফলশ্রুতিতে তিনি এসব বিষয়ে বেশ কয়েকটা বই প্রকাশ করেছেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রির অধিকারী ড.রেহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তুলনামূলক রাজনীতি তার আরেকটি গবেষনার বিষয়।এ বিষয় নিয়েও তার অনেকগুলো বই রয়েছে।অধ্যাপনার পাশাপাশি ড.রেহমান নিয়মিত কলাম লেখেন।প্রায় প্রতিটি দৈনিক কলামে নিয়মিত ছাপা হয়।তার উল্লেখ্যযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ইরাক যুদ্ধ পরবর্তী আন্তর্জাতিক রাজনীতি,গণতন্ত্রের শত্রু-মিত্র, নয়া বিশ্ববব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, বিশ্ব রাজনীতির চালচিত্র, উপআঞ্চলিক জোট,ট্রানজিট ইস্যু ও গ্যাস রফতানি প্রসঙ্গ,বাংলাদেশ ; রাষ্ট্র ও রাজনীতি, বাংলাদেশ;রাজনীতির ২৫ বছর, গঙ্গার পানি চুক্তি:প্রেক্ষিত ও সম্ভবনা,সোভিয়েত - বাংলাদেশ সম্পর্ক ইত্যাদি।ড.রেহমান তার গবেষণার কাজে পৃথীবির অনেক দেশ সফর করেছেন।তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আইভিপি ফলো।
পাঠ প্রতিক্রিয়া:- এক কথায় অসাধারন একটা বই।আমার মনে হয় সবার পড়া উচিত।হুদাই বসেছিলাম সময় কাটছিল না তাই বইটা নেয়া,এতটা ভালো লাগবে বুঝিনি।আর বইটাও এত গুরুত্বপূর্ণ বইটা পড়ার পর বুঝলাম।আমার ব্যাক্তিগত অনুরোধ সবাইকে বইটা পড়ার জন্য।
"Power, like love, is easier to experience than to define or measure."
গত শতাব্দীতে আমরা প্রত্যক্ষ করেছি বড় তিনটি ঘটনা, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের উত্থান। একটি বইয়ের মধ্যে পুরো এক শতাব্দীর ইতিহাসকে তুলে ধরা অনেক কঠিন একটা কাজ।সেখানে ইতিহাসের মূল্যায়ন করা আরও দূরুহ। তবে বইটিতে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি, সারাংশ তুলে ধরা হয়েছে। উগ্র জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল সেই একই কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়।মাঝের সময়টিকে লেখক যুদ্ধবিরতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জয়ী পক্ষের উপুর্যুপরি শর্তই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত করতে রসদ যুগিয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমান্তরালে অক্টোবর বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়াতে বলশেভিকদের ক্ষমতা দখল এবং পৃথিবীতে পুঁজিবাদী বিশ্বের প্রতিপক্ষ সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার উত্থান হয়েছে। যাকে অনুসরণ করে মধ্য শতাব্দীতে চীনেও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্ম।তবে চীন ও রাশিয়ার সমাজতন্ত্রের নীতিগত পার্থক্য থাকার কারণে কমিউনিস্ট শাসনব্যবস্থা মস্কো-বেইজিং শিবিরে বিভক্ত হয়ে যায়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লীগ অব নেশনের ব্যর্থতা বর্তমান জাতিসংঘের সৃষ্টিকে ত্বরান্বিত করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপ,কোরিয়া কিংবা ভিয়েতনাম মস্কো এবং ওয়াশিংটন শিবিরে বিভক্ত হয়ে যাওয়া গত শতাব্দীর উল্লেখযোগ্য ঘটনা।যার ফলে প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের। কোরিয়া ও কিউবা সংকটকে কেন্দ্র করে স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা যা দুই পরাশক্তি আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নকে পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছিল। যদিও তারা বৃহত্তর ক্ষতির চিন্তা করে অস্ত্রের ব্যবহার একসময়ে কমিয়ে আনে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ শাসনের সমাপ্তি এবং নেলসন ম্যান্ডেলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ কিংবা আমেরিকা-সোভিয়েত বলয়ের বাইরে গিয়ে ন্যামের প্রতিষ্ঠা ছিল আমাদের সভ্যতার উন্নতির ইতিবাচক এক পর্যায়।মধ্যপ্রাচ্য সংকট, আফগানিস্তানে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নের হামলা কিংবা উপসাগরীয় যুদ্ধে জাতিসংঘের নির্লিপ্ততা বরাবরই জাতিসংঘের গঠনের উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
গত শতাব্দীতেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল একুশ শতকের ভবিষ্যৎ। আমরা এখন এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছি যেখানে চারদিকে শুধু সমস্যাই। হান্টিংটনের সভ্যতার সংঘাতের দিকে তাকালে দেখতে পাই মুসলিম এবং খ্রিস্টানের মধ্যকার সংঘর্ষ। এছাড়া রয়েছে পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের মত নানারকম সমস্যা যা আমাদের সময়কে হুমকির মুখে ফেলেছে।
বইটির অনেক ঘটনাই বিস্তারিতভাবে আলাদা পড়েছি বিভিন্ন সময়ে তাই ঘটনাগুলো মেলাতে তেমন একটা সমস্যা হয়নি।তবে বইতে অনেকগুলো ভুল দেখলাম বিশেষত সালের ক্ষেত্রে। সুখপাঠ্য একটা বই। অল্পের মধ্যে একশো বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসকে জানতে চাইলে যে কেউ পড়ে নিতে পারেন বইটি। হ্যাপি রিডিং।
বইটা যার থেকে নিয়েছিলাম তিনি লাল-নীল-হলুদ বিভিন্ন রঙের হাইলাইটার দিয়ে দাগিয়ে দাগিয়ে পড়েছেন। বইটা দেখে আমার এইচএসসি এর সময়কার কথা মনে পড়ে গেলো। প্রত্যেকটা লাইন দাগানো হয়েছিলো ৪-৫ বার। মাঝে মাঝে অতিরিক্ত কলম এর খোঁচায় বই এর পাতা ছিঁড়েও যেতো। যাকগে ওসব আঁতলামির কথা। যা বোঝাতে চাচ্ছিলাম তা হলো - এই বইটিও একই ধাঁচের বই; মানে একাডেমিক গোঁছের। যারা চাকুরীর প্রিপারেশন নেয়া শুরু করেছেন কেবল, আর আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে ব্যাসিক ধারোনাটুকুও নেই, তাদের জন্য এটা মাস্ট রিড। শুধু তাই নয়, দাগিয়ে দাগিয়ে পড়তে পারলে পরীক্ষায় কমনও পেয়ে যেতে পারেন!
২৭০ পৃষ্ঠার বই হলেও আমার বইটি পড়তে ২৭ দিনের বেশি লেগেছে; মানে প্রতিদিন গড়ে ১০ পৃষ্ঠা। একটা চ্যাপ্টার পড়ি আর 'দম' নিই। এতো এতো ইনফরমেশন একসাথে হজম হচ্ছিলোনা। শুরুর দিকে অনেক তথ্যের রিপিটেশন প্রচন্ড রকম বিরক্তির উদ্রেক করেছিলো। কিন্তু আসলে কিছু করারও নেই। একটা ইস্যুর সাথে আরেকটা এমনভাবে জড়িত যে ইনফরমেশন রিপিটেশন হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বইটি চ্যাপ্টার করে এভাবে না লিখে যদি সত্যেন সেন এর গদ্যের মত করে ক্রোনোলজিক্যালি ইতিহাসগুলো সাজানো যেতো তাহলে তথ্যের এই রিপিটেশন টা অন্তত বন্ধ হতো আর বইটিকে 'সুখপাঠ্য' লিখতে পারতাম।
বিশ্ব ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কে আপনার জ্ঞান যদি শুন্য হয়ে থাকে, তবে প্রাথমিকভাবে এই বইটি খুব সহায়ক নয়। বিষয়বস্তুর দিক থেকে একটু অগোছালো মনে হয়েছে আমার। প্রথমবার ঘটনা প্রবাহের ধারাবাহিকতা বুঝতে প্রায়ই খেই হারিয়ে ফেলছিলাম। সময়ের ব্যবধানে মোটামোটি তিনবার পড়ার পর এখন বইটা ভালো লাগছে, কারণ অনেক আনুসাঙ্গিক তথ্য ও কনসেপ্ট সম্পর্কে (বয়সের কারণে :p ) পূর্ব ধারনা ছিল। তবে এর ভালো দিক হল গত শতাব্দীর সব ব্যা���ারেই কিছু না কিছু আলোচনা আছে। এবারে এসে বুঝতে পারলাম, এটি ইতিহাসের নয় বরং রাজনৈতিক বিশ্লেষণের বই (Duh!)। পড়া শুরু করলে আপনি অনেক অনেক ঘটনার রেফারেন্স পাবেন। গুগল, ইউটিইউব বা অন্য বই ঘেঁটে সেসব ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এসে এই বই পড়া রিজিউম করলে ধারনা আরো স্পষ্ট হবে!
১০০ বছরের বিশ্ব রাজনীতিকে মাত্র ২৭১ পাতায় আটকে দিলে ব্যাপারটা ক্যামন যেন হয়ে যায়। সবকিছু থেকে একটা গোলমেলে ধারণা ছাড়া আর কিছু লাভ করা তখন অসম্ভব হয়ে পড়ে। লেখকের প্রতি ভীষণ ক্ষোভ রয়ে গ্যালো। রেটিংঃ ২.৫
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে আগ্রহ থাকলে এই বইটা পড়া উচিত। লেখক বেশ সহজ কথায় অনেক টপিক তুলে এনেছেন। বেশি গভীরে গিয়ে লেখেননি (টপিক অনেক হওয়ায় তা সম্ভবও ছিলো না) , তথ্যবহুল বই।অনেকটা ব্যসিক লেভেল এবং একাডেমিক দিক থেকে লেখা। ভালো বই।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ইতিহাস ও সমসাময়িক ভূ-রাজনীতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী পাঠকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি বই ‘বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর‘। কারণ এই বইতে লেখক ড. তারেক শামসুর রেহমান বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমূহ চমৎকার তথ্যবহুলভাবে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
বইটিতে মোট উনিশটি অধ্যায়ে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বেশি আলোচিত আঠারোটি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বইটি পড়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতন পর্যন্ত আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধ এবং এই দ্বন্দ্বের আড়ালে নীরবে চীনের উত্থান, চীনের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব পরবর্তীতে সময়ে অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে শক্তিশালী হওয়া চীনের অপার সম্ভাবনার খুঁটিনাটি জানা যাবে।
এছাড়াও জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনসহ কীভাবে ভিয়েতনাম যুদ্ধ শুরু হলো, আফগানিস্তানে রাশিয়া ও আমেরিকার দখলদারিত্ব, দুই কোরিয়ার সমস্যা, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গ বর্ণবাদ, ফিলিস্তিন তথা আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে ইসরাইলের দ্বন্দ্ব এবং উপসাগরীয় যুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।বাদ যায়নি নতুন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, উষ্ণতাবোধ সংক্রান্ত কিয়োটা চুক্তি থেকে শুরু করে প্যারিস সম্মলেন এবং বিশ্ব শতাব্দীর আলোচিত 'সভ্যতার সংকট' সহ-অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও।
বইটি মূলত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসনির্ভর একটি গ্রন্থ। বইটি রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্র এবং বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্যে সহায়ক হবে। এছাড়া সাধারণ পাঠকরাও স্বল্প পরিসরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বুঝতে হলে গত শতাব্দীর যে বিষয়গুলো সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থাকা প্রয়োজন সে বিষয়ে ধারণা পাবে। বইটিতে অত্যধিক তথ্যবহুল হলেও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত সুন্দর সবলীলভাবে উপস্থাপন করায় সহজেই বোঝা যায় এবং পড়তেও বিরক্তিকর লাগে না।
বই : বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর লেখক : তারেক শামসুর রেহমান প্রকাশনী : শোভা প্রকাশ পৃষ্ঠা : ৩৫০ মূল্য : ২৬০
রিভিউ লেখক : আঃ কাহ্হার (সিয়াম)
This entire review has been hidden because of spoilers.
বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর গ্রন্থটি মূলত বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে সংঘটিত হওয়া ঘটনাবলীর সংকলন। বিংশ শতাব্দীর যে ঘটনাবলি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, তার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। ঊনবিংশটি অধ্যায়। তারেক শামসুর রেহমান ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান। বিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক ইতিহাস জানার জন্য এটি একটি দারুণ বই। .
বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর তারেক শামসুর রেহমান শোভা প্রকাশনী প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০০৮ মুদ্রিত মূল্য : ৩০০
Probably a great book when it came out. Outdated today. And focuses a lot on numbers. But still provides useful insights on historical events like Bolshevik revolution, 20th century China and apartheid South Africa.
বিশ্ব রাজনীতিতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে মোটামোটি ধারণা পাওয়া গেছে বইটি পড়ে। উৎসুক মনের তৃষ্ণা মেটাতে ইন্টারনেট বা অন্য কোথাও থেকে জেনে নিতে হবে বিস্তারিত।
Loads of Information delivered in a way that won't help building a strong conceptual base of geopolitics. Certainly, this book was written to memorise and throw it up on exam papers.
চমৎকার বই। বিংশ শতাব্দীর অতি গুরুত্বপূর্ণ যে ঘটনাগুলো(প্রথম+দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, রুশ বিপ্লব, স্নায়ুযুদ্ধ, কোরিয়া-কিউবা সংকট, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, চীনে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, মধ্যপ্রাচ্য সংকট, আফগানিস্তান, সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতন) বিশ্বরাজনীতিতে প্রভাব রেখেছে, সংক্ষিপ্ত আকারে সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। কিছু কিছু বিষয় যেমন: মার্কসবাদ-সমাজতন্ত্র নিয়ে যে আলোচনাগুলো এসেছে সেগুলো আরো কিছুটা সহজভাবে তুলে ধরলে ভাল হতো।
পড়েছি শোভা প্রকাশের ২০০৮ সনে প্রকাশিত বই। এত বেশি বানান ভুল এযাবৎকালে আর কোন বইয়ে পাইনি, এতটাই জঘন্য।
অসাধারণ বই। বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে এরকম সহজ সরল ভাষায় লিখিত বই বাংলা ভাষায় পাওয়া দুষ্কর। অনেক তথ্যই জানা গেলো। সেই সাথে বইটি লিখার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ দর্শন আমাকে মুগ্ধ করেছে।