Bibhutibhushan Bandyopadhyay (Bangla: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়) was an Indian Bangali author and one of the leading writers of modern Bangla literature. His best known work is the autobiographical novel, Pather Panchali: Song of the Road which was later adapted (along with Aparajito, the sequel) into the Apu Trilogy films, directed by Satyajit Ray.
The 1951 Rabindra Puraskar, the most prestigious literary award in the West Bengal state of India, was posthumously awarded to Bibhutibhushan for his novel ইছামতী.
বিভূতিভূষণের বই মানেই অসাধারণ। এটাও তার ব্যতিক্রম নয়। পুরো মায়াময় একটা বই।গল্পের প্রধান চরিত্র কিন্তু শরৎ যদিও বইয়ের নাম কেদার রাজা। শরৎ, একটা পবিত্র, শুদ্ধতম একজন নারী । তাই শত বিপদে পড়েও সে নিজের মূল্যবোধকে ধরে রাখতে পেরেছে।
কিছু অতিনাটকীয়তা আছে, জাতপাত নিয়ে লেখকের কিছু বাড়াবাড়ি টাইপের কথা মনে জ্বালা সৃষ্টি করেছে। শেষটায় চমক যেটা একেবারেই আশা করিনি। এখানেও সেই চিরচেনা বিভূতি ভূষণ তার অলৌকিকত্বের উপর বিশ্বাস নিয়ে হাজির, তবে তা বেশ লেগেছে।
বিভূতিভূষণ আমার অসম্ভব প্রিয় একজন লেখক। তার প্রতিটা উপন্যাস পড়বার পর আমার ভেতরে একটা শান্তি শান্তি ভাব আসে। শুধু আমার কেন! সবারই নিশ্চয়ই আসে। তার লেখায় প্রকৃতির বর্ণনা থেকে শুরু করে সবকিছুই ভেতরটা কেমন প্রান জুড়িয়ে যাওয়া শীতল করে দেয়। সেই বিভূতিকেই কেদার রাজা বইয়ের মাধ্যমে অন্যরকমভাবে চিনলাম। আর কখনোই তার লেখার সাথে এইদিক থেকে পরিচিত হইনি। বইয়ের শুরুটা রাজবংশের এক রাজপুত্রকে দিয়ে। যার নাম কেদার রাজা। রাজরক্ত শরীরে থাকলেও প্রভাব প্রতিপত্তির কিছু্ই অবশিষ্ট নেই। খুবই আত্নভোলা সরল সোজা মানুষ এই কেদার রাজা। খাজনা চাইতে গিয়ে প্রজাদের দুঃখের কথায় ভুলে ফেরত চলে আসেন,গান বাজনা নিয়ে এতই মেতে থাকেন যে কখনো কখনো বাড়ি ফিরতে মধ্যরাত হয়ে যায়। জঙ্গলের মধ্যে একাকী সেই বাড়িতে অপেক্ষায় থাকে তার বিধবা কন্যা শরৎ।
এই শরৎকে নিয়েই কাহিনী এগোয়। অসম্ভব রুপবতী হবার দরুন গ্রামের এক লোকের কলকাতাবাসী ছেলে প্রভাসের নজরে পড়ে সে। প্রভাস যদিও তাকে দিদি ডাকে,এটা সেটা উপহার এনে দেয়,তাকে কলকাতা শহর দেখাবার কথা বলে নিয়ে যায় শহরে। সহজ সরল মেয়েটা বাবার সাথে করে চলেও যায় সেখানে। কি এক গভীর চক্রান্ত সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করে আছে সে জানতেও পারে না। কিন্তু সে সরল হলেও খুবই বুদ্ধিমতি,তেজী এবং সাহসী। জীবন তার জন্য হাজারো প্রতিকূলতা নিয়ে অপেক্ষা করলেও সে লড়াই না করে নিজেকে বিকিয়ে দিতে রাজি নয়।
আড়াইশ পৃষ্ঠার একটা বই এর আগে কবে একটানে শেষ করেছি মনে করতে পারি না। তারপর বিভূতি! ভেবেছিলাম রয়েসয়ে পড়বো, কিন্তু "তারপর কি হলো? কি হলো শরৎয়ের? এরপর কি করবে সে?" এরকম একটা দুশ্চিন্তায় ভুগে শেষ পর্যন্ত না পড়ে বইটা রাখতে পারবেন না। এবং শেষ পর্যন্ত মুগ্ধ হতে থাকবেন,আড়াইশ পৃষ্ঠা কম মনে হবে।
বিভূতিভূষণের এই বইটা এত পরে পড়লাম বলে রীতিমতো আফসোস হচ্ছে। যদি সাবলীল, শ্বাসরুদ্ধকর, একটানে পড়বার মতো অসাধারণ একটা বাস্তব জীবনমুখী উপন্যাস আপনি খুঁজছেন তো এটাই সেটা। দেরী না করে পড়ে ফেলুন।
গড়শিবপুরের রাজ পরিবারের বংশধর কেদার। বিভূতি যে সময়ের কথা উপন্যাসে উল্লেখ করেছেন, তখন রাজবাড়ির পুরনো জৌলুস আর নেই। কেদার রাজা নামে মাত্রই রাজা, তার একমাত্র বিধবা মেয়ে শরৎ তার দেখভাল করে। এই বাবা মেয়ের জীবন ই এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য।
বিভূতি এর লেখার একটি বড় বৈশিষ্ট্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা। এই উপন্যাসেও ভরপুর প্রকৃতির বর্ণনা, বাংলার চিরায়ত গ্রামীণ জীবনকে সামনে এনেছে বারবার।
কেদার আর তার মেয়ে তাদের গ্রামের ই এক শহুরে ছেলে প্রভাস ও তার বন্ধু অরুণের সাথে কলকাতা বেড়াতে যায়। কিন্তু প্রভাস ও অরুণের এর পিছনে ছিল খারাপ উদ্দেশ্য। বিধবা শরৎ কে তারা ধোঁকা দিয়ে পতিতাপল্লীতে নিয়ে যায়। বাবা আর মেয়ে দুইজন খড়কুটোর মত ভেসে যায়। টনটনে ব্যক্তিত্ববোধ সম্পন্ন, অতীত গৌরবে গৌরবান্বিত অথচ গরীব পিতা এবং কন্যার টানাপড়েন, সংকট, ভালবাসা সবকিছু মিলিয়েই এই উপন্যাস।
Bibhutibhushan is one of my favourite novelists. This novel is, however, below his usual high standards. It's overlong, repetitious in the overall narrative and the victory of the 'righteous', the principal protagonists, Kedar and his daughter, Shorot, have weakened the novel to a great extent. It's as if he has this firm belief in the absolute, an idealism that seems quite naive throughout. The ending is ridiculous, to say the least.
However, Bibhutibhushan excels in his description of nature, it's almost flawlessly pictured, the imagery that formed in this reader's mind is beautiful, awe-inspiring, terrifying, even.
কেদার রাজা উপন্যাসের নাম দেখে মনে হতে পারে কেদার রাজাই এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। তবে প্রকৃতপক্ষে তার কন্যা শরৎই উপন্যাসটির মূল চরিত্র। কেদার রাজা বা শরতের পূর্ব পুরুষরা বিরাট জমিদারির মালিক ছিলেন, সেই সূত্রে তাদের এই রাজা উপাধি। তবে বর্তমানে তাদের অবস্থা তলানিতে ঠেকেছে। কিছু ভূসম্পত্তির খাজনা ছাড়া তেমন কোন আয় নেই তাদের। সেই খাজনাও ঠিকমতো আদায় হয় না। তবু কেদার রাজার মন রাজার মতোই বিশাল তবে ভীষণই সরল। তার ২৫/২৬ বছর বয়সী বিধবা কন্যা শরৎও ঠিক তেমনি সরল, ভালোমানুষ কিন্তু দৃঢ়চেতা। শরৎ প্রথাগত রাজকন্যার মতোই সুন্দরী। বিধবা হওয়ায় ধর্মের শূচিতা নিয়ে তার বাড়াবাড়িটা অবশ্য একটু বেশি, সেটা লেখকের নিজের ধ্যান ধারনা থেকেই উৎসারিত বলে মনে হয়েছে। তবে মনের দিক থেকেও শরৎ পবিত্র, শুদ্ধ। তাই শত বিপদে পড়েও সে নিজের মূল্যবোধকে ধরে রাখতে পেরেছে। কিছু অতিনাটকীয়তা আছে, জাতপাত নিয়ে লেখকের কিছু বাড়াবাড়ি টাইপের কথা মনে জ্বালা সৃষ্টি করেছে। শেষটায় চমক যেটা একেবারেই আশা করিনি। এখানেও সেই চিরচেনা বিভূতি ভূষণ তার অলৌকিকত্বের উপর বিশ্বাস নিয়ে হাজির, তবে তা বেশ লেগেছে। সব মিলিয়ে ভালোই লেগেছে।
বিভূতিভূষণের বই মানেই প্রকৃতির আদিমতা আর বিশালতা। মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়েছি।হয়তো বড় হয়ে গিয়েছি বলে অত লক্ষীমন্ত শরৎ এর বোকামি খানিকটা বিরক্তি উদ্রেক করেছে। তবে শেষে লেখক বরাবরের ন্যায় আমার মত দুঃখ সইতে না পারা পাঠক��ের তৃপ্তি দিয়েছেন।
মানিক বন্দ্যেপাধ্যায়ের পুতুলনাচের ইতিকথা পড়ার সময় এক বিস্ময়কর চরিত্র কুমুদ আমার মাঝে তুমুল আলোড়ন ফেলেছিল। মুগ্ধ হয়েছিলাম মানিকের গভীর জীবনদর্শন ও নিরীক্ষণ ধর্মী চরিত্রায়ণে। আরো একবার অন্যভাবে মুগ্ধ হলাম কেদার রাজা চরিত্রে।বিভূতিভূষণের জীবনের প্রতি অসাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি কেদার রাজার মধ্য দিয়েই প্রতিভাত হয়েছে।
কেদার রাজা আত্মভোলা, বালকসুলভ, উদার ও নির্মোহ। আমরা দেখি, যখন প্রভাস কেদারের মেয়ে শরৎসুন্দরীকে দেওয়ার জন্য আংটি নিয়ে আসে, কিন্তু দরিদ্র কেদার রাজা আংটি পেয়ে আনন্দে বিহ্বল না হয়ে বরং বিরক্তই হন। কেননা তার গেঁয়োহাটির আখড়াইয়ের আসরে বেহালা বাজানো পন্ড হতে যাচ্ছে। এখানে পাঠককে ভাবার জন্য থামতে হয়।
এছাড়া পুরো উপন্যাসজুড়েই লেখক বিভিন্ন বিষয় কী অসাধারণ ভাবেই না দেখিয়েছেন! যেমন উপন্যাসের প্রথম দিকেই দেখতে পাই, কেদার রাজা যখন ভাত খেতে বসেন, তখন মেয়েকে বিরক্ত হয়েই বলেন যে, ছাইপাশ এসব কেন রাঁধে? মেয়েও এর উত্তর দেয় বিরক্ত সুরে। অথচ দুজনেই নিজেদের দারিদ্র্যতা সম্পর্কে অবগত। এখানে বিভূতিবাবু বাঙালি পুরুষের চিরায়ত স্নেহের ভর্ৎসনা ও নারীর গঞ্জনা কী নিখুঁতভাবেই না পরিস্ফুটন করেছেন।
শরৎসুন্দরীর কাহিনি সিক্রেট রাখব, অপরদিকে রাজলক্ষ্মীর মধ্য দিয়ে এক গ্রাম্য কিশোরীর মেন্টালিটি যথোচিত ভাবেই ফুটে উঠেছে। সবশেষে, বিভূতিভূষণের সেই চিরপরিচিত মায়াময় লেখনী,প্রকৃতির প্রতি প্রেম,বাবা-মেয়ের অপরিসীম ভালোবাসা,সব মিলিয়ে খুব সুন্দর একটি উপন্যাস।
এক তারা কম দিয়েছি, কারণ কিছু কিছু জায়গায় কিশোর উপন্যাসের মতো গন্ধ পেয়েছি।
নিছক সমালােচকের দৃষ্টিতে 'কেদার রাজা'র বিশ্লেষণে হয়তাে অনেক ত্রুটি, সীমাবদ্ধতা, বৈচিত্র্যের অভাব ইত্যাদি প্রকট হতে পারে। কিন্তু মুগ্ধ এক পাঠকের নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে এ উপন্যাসকে স্নিগ্ধ মানবিক সম্পর্কে সিক্ত, গ্রাম্য প্রকৃতির বৈচিত্র্য ও অলৌকিক লােকগাথামণ্ডিত বিবরণ সম্পৃক্ত এবং সর্বোপরি লােভ-লালসা-স্বার্থচিন্তা অতিক্রম করে মহত্তর মানববন্দনার জয়গানে মুখর এক খণ্ডচিত্র বলেই মনে হবে। লেখকের বক্তব্য ও বার্তা সংগত কারণেই স্পষ্ট ও প্রতীয়মান হয়ে ওঠে। নিজের মতাে করে সমাজকে গড়তে চেয়েছেন, বদলাতে চেয়েছেন বিভূতিভূষণ। তার সেই কল্পসমাজে হিংসা, দ্বেষ, লােভ, লালসা থাকবে না। থাকবে শুধু কেদার, শরৎ, গােপেশ্বর, রাজলক্ষ্মীদের মতাে মানুষজন। সেই 'ইওটোপিয়া'র চিন্তায় বিভাের হয়ে পাঠকও স্বপ্ন দেখবে নতুন এক সমাজ, নতুন এক জনপদের।
🠚 "মেয়েমানুষের অনেক শত্রু—বিশেষ করে মা, যে সকলকে বিশ্বাস করে তার শত্রু এখন দেখছি চারিদিকেই।"
🠚 "কতকাল আগে বিস্মৃত মুহূর্তগুলির আবেদন-আজও তাদের ক্ষীণ বাণী অস্পষ্ট হয়ে যায়নি তো! বিস্মৃতির উপলেপন দিয়ে রেখেছে চলমান কাল, সেই মুহূর্তগুলির ওপর।"
🠚 "পাপে যারা পাকা হয়ে গিয়েছে, তারা পাপপুণ্য বলে জ্ঞান অল্প দিনেই হারিয়ে ফেলে, পাপে ও বিলাসে মত্ত হয়ে বিবেক বিসর্জন দেয়। কোনো অসুবিধাতে আছে বলে নিজেকে মনে করে না। পুণ্যের পথই কণ্টকসঙ্কুল, মহাদুঃখময়—পাপের পথে গ্যাসের আলো জ্বলে, বেলফুলের গড়েমালা বিক্রি হয়, গোলাপজলের ও এসেন্সের সুগন্ধ মন মাতিয়ে তোলে। এতটুকু ধুলোকাদা থাকে না পথে। ফুলের পাপড়ির মতো কোঁচা পকেটে গুঁজে দিব্যি চলে যাও।"
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখার সব বৈশিষ্ট্য এই উপন্যাসে থাকলেও তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনাগুলির মধ্যে একে ফেলা যাবে না। তাই বলে একেবারে অপঠিত রাখাও উচিত নয় এমন মায়াময় উপন্যাসকে। বড় সুন্দর ভাবনা থেকে উপন্যাসটি বুনেছেন লেখক। যদিও লেখাটি কিছু দীর্ঘায়িত করা হয়েছে বলে মনে হল আমার, পুনরুক্তিও আছে সেটা না হলে হয়ত আরো ভাল লাগত।