Jump to ratings and reviews
Rate this book

Humayun Ahmed (Chronological List) #99

শ্রাবণ মেঘের দিন

Rate this book
মতি একজন গাতক (গায়ক) তাকে মনে মনে ভালবাসে ঐ গ্রামেরই একটি মেয়ে কুসুম তার গানের গলাও খুব ভাল, সে সব সময় ভাবে মতি মিয়াকে নিয়ে একটা গানের দল করে দেশে দেশে ঘুরে বেড়াবে। কিন্তু ঢাকা থেকে আসা ঐ গ্রামের জমিদার নাতনি শাহানা কে ভালবাসে মতি তবে জানেনা শাহানা তাকে একজন ভাল মানুষ হিসেবে মুল্যায়ন করে মাত্র। এদিকে কুসুমের বাবা উজান থেকে একটি ছেলে সুরুজ কে নিয়ে আসে কুসুমের সথে বিয়ে দেয়ার জন্য। ঐ গ্রামের বাসিন্দা পরান এর স্ত্রী প্রসব বেদনায় ছটফট করছিল জমিদারের নাতনি শাহানা একজন ডাক্তার এই ভেবে মতি মিয়া তাকে ডেকে আনে। শাহানা এসে বুঝতে উনার পেটের বাচ্চা উল্টে আছে সে বইতে পড়েছে এর চিকিৎসার ব্যাপারে কিন্তু বাস্তবে কখনো করেনি, তবুও কোন উপায় না দেখে সাহস করে সেই সন্তান সাভাবিক ভাবে ডেলিভারি করাতে সক্ষম হয়। এবং যেই জমিদারকে এলাকার সবাই ঘৃনার চোখে দেখত তারা সবাই এখন তাকে সম্মান করে। একদিকে কুসুমের বিয়ের আয়োজন চলছে এন্যদিকে জমিদারের নাতনিরা ঢাকায় ফিরে যাচ্ছে জমিদার সহ, জমিদার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি মিলিটারীদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করেছিল তাই গ্রামের সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে তার জমিদার বাড়ি একটি হাসপাতালের জন্য দান করে বিদায় নেয়, আর তাই গ্রামের প্রাই সবাই চলে আসে তাদের বিদায় জানাতে। কুসুম বাড়িতে একা মতিকে না পাওয়ার কষ্টে সে বিষ পান করে, কুসুমের মা টের পেয়ে সবাইকে ডাকে এবং তাকে নিয়ে মতি আর সুরুজ নৌকায় ছোটে ডাক্তার শাহানার ছুতে কিন্তু মাঝপথেই সোয়া চান পাখি চিরনিদ্রায় শায়ীত হয়।

--আর মতি গাতক গেয়ে উঠে শুয়া চান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি...।

160 pages, Hardcover

First published November 30, 1994

26 people are currently reading
864 people want to read

About the author

Humayun Ahmed

456 books2,906 followers
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.

Early life:
Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.

Education and Early Career:
Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.

Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.

Marriages and Personal Life:
In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.

Death:
In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
595 (34%)
4 stars
769 (44%)
3 stars
305 (17%)
2 stars
55 (3%)
1 star
14 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 72 reviews
Profile Image for Rubell.
188 reviews23 followers
September 23, 2022
শ্রাবণ মেঘের দিন, কি মায়াবী একটা নাম! শুধু নামটার জন্যই উপন্যাসটাকে একটা চান্স দেওয়া যায়। আমিও বইটা পড়ার জন্য শ্রাবণ মাসের কয়েকটা দিনকেই বেছে নিয়েছি।
(নিন্দুকেরা বলবে এটা শরৎ ঋতু, আশ্বিন মাস; তারা জানেনা শরতেই এখন বেশি বর্ষা হয়, আশ্বিন ইজ দা নিউ শ্রাবণ!)

উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র মতি। সে গায়ক। সে গলা ছেড়ে গাইলে শ্রোতাদের চোখে পানি এসে যায়।
আজ থেকে মতি আমার প্রিয় ফিকশনাল কণ্ঠশিল্পী। ফেভারিট ফিকশনাল ক্যারেকটার যদি থাকতে পারে, ফেভারিট ফিকশনাল কণ্ঠশিল্পী কেন থাকবে না?

মতির গাওয়া দুইটা গান আমার আগে থেকেই খুব প্রিয়:
১. মরিলে কান্দিস(কান্দিও) না আমার দায়
২. তুই যদি আমার হইতি, আমি হইতাম তোর

গান বাজনার অংশটুকু এই উপন্যাসের বিশেষ আকর্ষণ। পড়ার সময় গানগুলো আমি শুনতে পাচ্ছিলাম।
এমনিতে উপন্যাসের সবকিছুতেই আশানুরূপ হুমায়ূনীয় বৈশিষ্ট্যে আছে। সিনেমা বানানোর জন্য আদর্শ গল্প। সিনেমা একটা বানিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ (১৯৯৯), বহুদিন আগে টিভিতে দেখেছিলাম, এখন কিছু মনে নেই। মনে না থেকেই ভালো হয়েছে। শুধু গানগুলো মনে আছে। গানগুলো ভালো।
Profile Image for Arupratan.
235 reviews385 followers
July 10, 2022
অনেকদিন পরে হুমায়ূন আহমেদের কোনো উপন্যাস পড়ে তৃপ্তি পেলাম। এমন নয় যে এই উপন্যাসে উনি নতুন কিছু লিখেছেন। কাহিনি কিংবা চরিত্রনির্মাণ, সবকিছুতেই হুমায়ূনীয় বৈশিষ্ট্যের পরিচিত ছাপ। তবু এই উপন্যাসটা ভালো লাগলো। হুমায়ূন আহমেদের বেশিরভাগ উপন্যাসের যে-ব্যাপারটা আমার পছন্দ হয়না— "খাপছাড়া সমাপ্তি"— এই বইতে সেই দোষটাও নেই।
Profile Image for Nazrul Islam.
Author 8 books228 followers
March 12, 2017
দুপুর থেকে মনটা আঁকুপাঁকু করেতেছিল । গতকালের বৃষ্টির রেশ সম্ভবত আজো রয়ে গিয়েছে। হঠাৎই হুমায়ূন আহমেদ পড়তে মন চাচ্ছিল। কি পড়ি? কি পড়ি ? ঘাটাতে ঘটাতে শ্রাবণ মেঘের দিন নিয়ে বসলাম। হুমায়ূন আমেদের বইয়ের একটা ভালো দিক হচ্ছে বৃষ্টিকে রিপ্রেজেন্ট করে উনি অনেক বই লিখে গিয়েছেন। খুবই সিম্পল একটা গল্প । আর হুমায়ূন আহমেদের সাধাসিধে জবানিতে বইটা খুবই সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।

বইটা পড়তে পড়তে একটা জিনিস খেয়াল হল। কেন হুমায়ূন আহমেদ এত জনপ্রিয়? উনার চেয়েও ভালো এবং শক্তিশালী লেখক আমরা আগেও পেয়েছিলাম । কই তারা এত ভালো লেখক হওয়া স্বত্বেও তো সবার হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারেনি ?
উত্তরটা খুব সিম্পল - এই যে আমার বৃষ্টি ভেজা দুপুরে একটা সরল সাধারণ কাহিনীওয়ালা বৃষ্টির বই পড়তে মনে চাইলো । বাংলার ইতিহাসে আর কেউ এইরকম একটা সিজন বা বিষয় কে কেন্দ্র করে এত এত বই লিখে যায়নি । সবচেয়ে বড় কথা কেউ কোনদিন চেষ্টাও করেনি । হাত বাড়ালেই হুমায়ূন আহেমদের যে বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন এর আগে আর কেউ কি এই সুযোগটা করেছে?
আরেকটা বিষয় হল - ইট পাথরের এই শহুরে ছেলেমেয়েদের হুমায়ূন আমেদে বৃষ্টি বিলাস ,জোছনা বিলাস নামক অদ্ভুত অদ্ভুত টার্মের সাথে পরিচয় করিয়ছেন ।যা ভূতপূর্ব কোন লেখক স্বপ্নেও কল্পনা করেনি।

যে ছেলে মেয়েরা বৃষ্টির নাম শুনলে আগে ছাতা খুঁজত তাদের তিনি খোলা আকাশের নিচে দাঁড় করিয়েছেন শুধু কিছু শব্দ ব্যাবহার করে ।

চাঁদ যাদের কাছে শুধুই একটা গ্রহ তাদের তিনি পরিচয় করিয়েছেন জোছনা বিলাস এর সাথে । চাঁদের আলোয় আবার গোলস করা যায় নাকি ? কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ তা সবাইকে করিয়ে ছেড়েছেন ।

কেউ কি কোনদিন বলেছে "চাঁদনী পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়।" চাঁদনী পসর রাতের সাথে মৃত্যুর কি সম্পর্ক ? কিন্তু হুমায়ূন সবার মাঝে এই বোধটা ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন ।

নাকি মৃত্যুকে এইভাবে বর্ণনা করেছে আগে কেউ ? "মরিলে কান্দিও নাআমার দায়......"
আমাদের হাতের কাছে থাকা সামান্য জিনিসগুলোকে হুমায়ূন আহেমদ চিনিয়েছেন নতুন করে । নতুন আঙ্গিকে ।

এই যা বইতে যখন কুসুম মতিকে বলছে " জোছনার মইধ্যে গোসল করনের ইচ্ছা করতাছে..."

আমি জনালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলাম আজকে আসলেই চাঁদনী পসর রাত । থালার মত একটা চাঁদ আজকের আকাশে । জোছনাবিলাসের উত্তম চাঁদ ।
Profile Image for Omar Faruk.
263 reviews16 followers
September 29, 2022
ঈদের বেশ কয়েকদিন আগে শুরু করেছিলাম। এর মধ্যে অন্যান্য বইও শেষ করেছি। কিন্তু এটা শেষ করার চিন্তা মাথায় আসলেই আফসোস হতো। এতো সুন্দর বই এই অল্পতেই শেষ হয়ে যাবে?

অবশেষে বিষন্ন সুন্দর বইটি শেষ হলো। এখন আমার নিজেকে মতি মনে হচ্ছে। যার কেউ হয়নি, যে কারো হয়নি। বইয়ের এই অনবদ্য কাহিনীর সাথে কখন যে হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে, সেটা নিজেই টের পাইনি।
Profile Image for Ummea Salma.
125 reviews121 followers
February 2, 2022
শুধুমাত্র পুষ্প আর কুসুমের জন্য বা মতির প্রতি কুসুমের ভালোবাসার জন্য বইটা প্রিয় হয়ে থাকবে।

বইয়ের নামটা কি মিষ্টি তাইনা? 'শ্রাবণ মেঘের দিন'
Profile Image for Noyon.
53 reviews8 followers
May 25, 2023
শেষে এসে এমন করার কি দরকার ছিল,বিষন্ন করে দেয়।
তেতুল বনে জোছনা, আর শ্রাবণ মেঘের দিন,এই দুইটা বই একদম অন্যরকম সুন্দর।
Profile Image for Shanin  Hoque .
27 reviews35 followers
August 2, 2021
শ্রাবণ মেঘের দিনে 'শ্রাবণ মেঘের দিন'!

আজ দিনভর অঝোর ধারায় শ্রাবণের বারিধারা ঝরতে দেখে আরো একবার পড়ে ফেললাম নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত স্নিগ্ধ-সুন্দর উপন্যাস - 'শ্রাবণ মেঘের দিন'।

হুমায়ূন আহমেদের সব রচনার মতো 'শ্রাবণ মেঘের দিন'-এর মূল উপজীব্য-ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা।গ্রামীণ সাধারণ মানুষের চোখে জীবনের যে ছবি আঁকা তার-ই প্রতিচ্ছবি হুমায়ূন আহমেদের এই উপন্যাসটিতে উপস্থাপন করেছেন।

হাওরের জলের বুকে ভেসে থাকা আর দারিদ্র্য,অশিক্ষা,কুসংস্কার আর নিখাদ সারল্য জড়িয়ে জীবন যাপন করা কিছু মানুষ ঘেরা একটি ছোট দ্বীপ 'সুখানপুর'। সেই গ্রামের বাসিন্দা মতি মিয়া, কুসুম, পুষ্প, সুরুজ, মিতু, মোহসিন।সেই সঙ্গে আরো আছেন সুখানপুর গ্রামের মুকুটবিহীন অধিপতি বৃদ্ধ ইরতাজউদ্দিন এবং প্রবাস থেকে বেড়াতে আসা তার দুই নাতনি- ডা.শাহানা ও নিতু ।এরা প্রত্যেকে জীবনকে সম্পূর্ণ পৃথক নিরিখে অবলোকন করেন ; নিজস্ব পন্থায় জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করেন ; জীবন সম্পর্কে প্রত্যেকের উপলব্ধি স্বতন্ত্র।সে কারণেই,জীবনে অসীম অভাব থাকা স্বত্তেও গ্রাম্য-গায়ক একজন সুখী মানুষ। পক্ষান্তরে,সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো ডা.শাহানা আশ্চর্যরকমের দুখী একজন মানু্ষ ; প্রতিনিয়ত একাকিত্ব তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়।যাবতীয় যন্ত্রণা থেকে সে মুক্তি চায়। চিরআকাঙ্ক্ষিত মুক্তির জন্যে তার প্রাণ বারবার হাহাকার করে ওঠে।জীবনবোধের এই বৈচিত্র‍��য-ই 'শ্রাবণ মেঘের দিন' উপন্যাসটির পাতায় পাতায় লেখক সেই তুলে ধরেছেন।পড়তে পড়তে মনে হয়েছে, আমাদের চারপাশেই এই মানুষগুলো হেঁটে বেড়ায়, জীবন যাপন করে।আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এদের দেখা মেলে।বিষয়গুলোকে শব্দবন্দী করে যে আনন্দ পাওয়া যায় তার চেয়ে ঢের বেশি আনন্দ পাওয়া যায় সেসব বিষয় অন্তর থেকে অনুভব করতে পারলে। তার জন্যে বিষণ্ন সুন্দর উপন্যাসটি পড়ে ফেলা প্রয়োজন।আহামরি কোনো ঘটনার ঘনঘটা নেই, তথ্য-উপাত্ত প্রাপ্তির সম্ভাবনা নেই তবুও জ্ঞাত কিংবা অজ্ঞাত কারণেই মায়া জড়ানো এই রচনাটি পড়তে আপনার ভালো লাগবে।বেশি সময়-ও ব্যয় হবে না ; চাইলে এক বসায় পড়ে শেষ করে ফেলা যায়! আর,গৃহবন্দী এই সময়ে বইটির পাতায় মুখ গুঁজলে মনের অজান্তেই আপনি পৌঁছে যাবেন ছায়া সুনিবিড় 'সুখানপুর' গ্রামে ; কল্পনায় হলেও সুখকর একটা ভ্রমণের সুযোগ লুফে নিতে ভুলবেন না যেন!
Profile Image for Aadrita.
276 reviews228 followers
October 7, 2023
বৃহস্পতিবার অফিস শেষে বিচ্ছিরি বৃষ্টিতে কোনো যানবাহন না পেয়ে কিছুটা হেটে, কিছুটা বাসে, কিছুটা রিকশায় বাসায় ফিরতে ফিরতে মেজাজ খিঁচড়ে যাচ্ছিলো। জামা জুতা ভিজিয়ে, ছাতা আর ব্যাগ সামলে ঢাকা শহরের জ্যাম আর মিনি-সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বাসায় ঠিকঠাক পৌছানোর পর তো বৃষ্টি দেখতে ভালোই লাগে। তখন মনে হলো বৃষ্টিবিলাসটা পরিপূর্ণ করতে এক কাপ চা বানিয়ে একটা হুমায়ুন আহমেদ পড়া দরকার।

শ্রাবণে না হলেও আশ্বিনে বইটা পড়ে ভালো লাগলো। সংজ্ঞা অনু্যায়ী এখন শরৎকাল হলেও প্র্যাকটিকালি এটাই বর্ষাকাল (ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রফেশনাল হিসাবে ক্লাইমেট চেঞ্জ নিয়ে একটা লাইন বলার সুযোগটা ছাড়লাম না আরকি)। লেখকের আর দশটা উপন্যাসের মতো এটাও বিষাদমাখা, পাতায় পাতায় বিষাদ৷ গল্পের প্রেক্ষাপট তেমন কিছু না। শহুরে দুই বোন শাহানা আর নীতুর একদিন হুট করে গ্রামে দাদাজানের বাড়িতে এসে কয়েকদিন ছুটি কাটানোর গল্প। তবে চরিত্রগুলোই সব।

মতি মিয়া - গান শুনিয়ে সবাইকে কাদালো, কিন্তু দিন শেষে সে কারও হলো না, কেউ হলো না তার। শাহানা - গ্রামের সবার রোগ সারিয়ে, পুরো গ্রামটাকে সারানোর ব্যবস্থা করে গেলো, অথচ তাকে সারানোর দায়িত্ব নিলো না কেউ। নীতু - জেদী ছোট্ট মেয়ে, শুরু থেকে পটরপটর কথা বলে পাঠকের মুখে হাসি ফুটিয়ে শেষে গিয়ে সাহসী সব কথায় গ্রামবাসীকে নাড়া দিয়ে গেলো।

এইযে বৃষ্টি দেখলেই একটু হুমায়ুন আহমেদ পড়ে কাঁদতে মন চায়, কয়েকটা জেনারেশনকে এভাবেই বৃষ্টিবিলাস, সাথে জোছনাবিলাস আরও কত কী শিখিয়ে গেলেন লেখক।
Profile Image for Hamima Afroz Lopa.
30 reviews121 followers
March 16, 2018
“আমাদের সবার ভেতর গান আছে। বিশেষ বিশেষ সময়ে সেই গান আপনাআপনি কানে বাজতে থাকে।”

আমাদের দেশে অনেকের বই পড়া শুরু হয়েছে হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ার মাধ্যমে…আমি এমনও অনেককে বলতে শুনেছি বাংলাদেশের বেশির ভাগ পাঠকই তৈরি হয়েছে ‘সেবা প্রকাশনী’ আর ‘হুমায়ূন আহমেদ’ এর বই পড়ে…কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সেটা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম…ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন ধরণের গল্পের বই পড়ার অভ্যাস থাকলেও, আমার পড়া প্রথম উপন্যাস ছিল হুমায়ূন আহমেদের একটা কিশোর উপন্যাস...কিন্তু দুটো কিশোর উপন্যাস পড়েইছোতবেলায় আর খুব একটা পড়া হয়নি হুমায়ূন আহমেদের বই...পুরোপুরি বইয়ের জগতে আমার প্রবেশ মুহম্মদ জাফর ইকবালের বই পড়ার মাধ্যমে…হুমায়ূন আহমেদ যদি কোয়ান্টিটিকে প্রাধান্য না দিয়ে কোয়ালিটিকে প্রাধান্য দিতেন তাহলে আমি হয়তো তাঁর লেখার ফ্যান হয়ে যেতাম…বেছে বেছে তাঁর কয়েকটি বই পড়লেই বোঝা যায় কী সুন্দর লেখনী ছিল তাঁর!!…এভাবে কোয়ান্টিটিকে প্রাধান্য না দিলেই পারতেন…

শ্রাবণমেঘের দিন!

ছোটবেলায় বেশ কয়েকবার ফিল্মটি দেখেছিলাম…কাহিনী আগে থেকে জানা থাকলেও উপন্যাসটি ভালো লাগতে কোন সমস্যা হয়নি…মুভিটার থেকে বইটি বেশি সুন্দর…শাহানা, নীতু, ইরতাজুদ্দিন, কুসুম, পুষ্প, সুরুজ, মিতু, মোহসিন – প্রতিটি চরিত্রই নিজের মত করে কল্পনা করতে পেরেছি…শুধু মতি চরিত্রটা কল্পনা করতে গিয়ে বার বার জাহিদ হাসানকেই মনে পড়ে গিয়েছে…তাঁর মত সুন্দর করে আসলেই আর কেউ চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে পারতেন না…শাহানা আর নীতু দুটি চরিত্রকেই অসম্ভব ভালো লেগেছে…এমনকি মিতুকেও অনেক ভালো লেগেছে যদিও তার পার্টটা অনেক কম ছিল…

এই বই পড়েই বোঝা যায় মতির মত হতদরিদ্র এবং আত্মীয়স্বজনহীন মানুষ কোন কারণ ছাড়াই সুখী হতে পারে…আবার শাহানার মত মানুষও ভেতরে ভেতরে দুঃখী হতে পারে…যার কোনকিছুরই কোন অভাব নেই…যে কিনা প্রকাণ্ড রাজবাড়ির রাজকন্যা, গোল্ড মেডেলিস্ট মেডিকেল স্টুডেন্ট… আরও আছে আত্মীয়স্বজনঘেরা হাসিখুশী পরিবার…মানুষ আসলেই বড় বিচিত্র প্রাণী…অনেকে একাকী থেকেও খুঁজে নিতে পারে নতুন একটি পৃথিবী আবার অনেকে ভীড়ের মাঝে থেকেও এই বিশাল পৃথিবীতে হয়ে পড়ে প্রচণ্ড একা…

“সব মানুষের মধ্যে নানান ধরণের স্বপ্ন থাকে। তার মধ্যে কোনটা সত্যি স্বপ্ন কোনটা মিথ্যে স্বপ্ন সে ধরতে পারে না। মানুষ সব সময়ই বাস করে একটি বিভ্রমের ভেতর।"
Profile Image for Esha.
176 reviews51 followers
June 1, 2020
এত সুন্দর সাবলীল করুণ বই বহুদিন পড়িনি
Profile Image for Abu Rayhan Rathi.
108 reviews
September 9, 2020
হুমায়ূন আহমেদ মানেই মুগ্ধতা। আর এই বইটাতেও তার ব্যাতিক্রম হয় নি।গ্রাম-বাংলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাধুরি মিশ্রিত বর্ণনা বইটির মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে।যদিও লেখক গ্রামবাংলা সম্পর্কিত বই খুব কমই লিখেছেন।
Profile Image for Shafi Abdullah .
24 reviews
January 12, 2019
টিপিকাল হুমায়ূন আহমেদ। আহামরি কিছুই নাই। ডিস্টিংশন পাওয়া ডাক্তার বোনের সাথে ছোটো বোন নিতু দাদাবাড়িতে বেড়াতে যায়। সাধারণ নিয়মের তোয়াক্কা না করে দুটি মেয়ে অন্যান্য মানুষদের মাঝরাতে প্রচুর প্যারা দিয়ে জমিদার দাদার বাড়িতে পৌছায় ভোরের দিকে। সেখানে ইনিয়ে বিনিয়ে কাহিনী চলতে থাকে। শেষটা অপূর্ণই থেকে গেল হুমায়ূন আহমেদের মাপা সিগনেচার এর মতো।
মাঝখানে শাহানা সমাজের তালা চাবি ভাঙার চিন্তা ভাবনা করলেও সে রকম কিছু করতে পারে না। মনের উত্তালতা সে তার সাথে করে ফেরত নিয়ে যায় বলেই মনে হয়। ভালোই, খারাপ কি।
Profile Image for Rideeta Tabassum Prova.
98 reviews24 followers
July 18, 2022
কেমন জানি একলা লাগে, প্রতিবার পড়ে শেষ করি। মনে হয় বড্ড একলা।
110 reviews
April 22, 2022
"মানুষ যেমন বৃষ্টির মধ্যে গোসল করে,আমার জোছনার মধ্যে গোসল করোনের ইচ্ছা করে।গোসল করবেন মতি ভাই?"

গত বছর প্রচুর হুয়ামুন আহমেদ পড়সি।এই বছর তাই ঠিক করসিলাম গোটা কয়েক হুমায়ুন আহমেদ পড়বো,তার বেশি না।গত দু-চারদিন ধরেই আবহাওয়া টা মেঘলা।প্রতিদিন সেহেরির আগে নিয়ম করে বৃষ্টি নামছে।সেই বৃষ্টি আর ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় বছরের শুরুতে করা সব পরিকল্পনার কথা ভুলে গেলাম।শ্রাবণ মেঘের দিন বইটা তাই একরকম ওয়েদার ডিমান্ডেই তুলে নিয়েছিলাম।কুসুম,মতি,শাহানা আর এরতাজুদ্দিন সাহেব(ইয়েস,এরতাজুদ্দিন সাহেব!)দের জন্য বইটা স্মরণে থাকবে।
Profile Image for Imtiaj Ahmed.
49 reviews1 follower
August 30, 2024
একটু বিষন্নতা দরকার ছিলো।
এইতো বিষন্ন লাগছে... বিষন্নতারও একটা প্রকট রূপ থাকে। মাঝেমধ্যে ভালোই লাগে।
Profile Image for সারস্বত .
237 reviews136 followers
May 7, 2017
:::রিভিউ:::

দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে তব মঙ্গল- আলোক
তবে তাই হোক।
মৃত্যু যদি কাছে আনে তোমার অমৃতময় লোক
তবে তাই হোক ॥
পূজার প্রদীপে তব জ্বলে যদি মম দীপ্ত শোক
তবে তাই হোক।
অশ্রু-আঁখি- 'পরে যদি ফুটে ওঠে তব স্নেহচোখ
তবে তাই হোক ॥

প্রাচীন তিমির ঘেরা একটি দ্বীপে, রাজকুঠি আগলে একা বসে ছিলেন বৃদ্ধ রাজা। সারাদিকে শুধু আঁধারের গল্প। কোথাও নেই আলো। সেই আঁধারের সিংহ দুয়ার দিয়ে হঠাৎ একদিন প্রদীপ হাতে প্রবেশ করলো দুই রাজকন্যা। জ্বালাল মঙ্গল-আলোক। তাঁরা এলে সমগ্র দ্বীপ জুড়ে বয়ে গেলো ঝড়। সেই ঝড় বর্ষণের নয়, পবনের নয়, সেই ঝড় প্রাণের। ওরা যখন এলো যেন জ্যোৎস্না এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেল পুরো দ্বীপের বুকে জমে থাকার সহস্র বছরের আঁধার। আর যেদিন ফিরে যাবার পথে চোখ রাখলো সেদিন সুখানপুর বৃষ্টিকে বলেছিলো, আজ একটা গান শোনাও। তোমার অশ্রুতে আজ শ্রাবণ মেঘের দিনে ভিজিয়ে দাও।


সুখানপুর, হাওড়ের জলের বুকে ভেসে থাকা একটি দ্বীপ। সেই দ্বীপের মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন হলো দারিদ্রতা, অশিক্ষা, কুসংস্কার আর সরলতা। বৃদ্ধ ইরতাজুদ্দিন এই দ্বীপের অঘোষিত রাজা। বিশাল কাঠের দোতালা রাজপ্রাসাদে বৃদ্ধের একা বেঁচে থাকাটা যেন এক শাস্তি। কিন্তু একদিন তাঁর এই রাজত্বে একমাত্র ছেলের দুই কন্যা শাহানা এবং নীতু এসে বৃদ্ধকে ঘুণে ধরা অস্তিত্বে যেন প্রাণের সঞ্চার ঘটালো।

তরুণী শাহানা আর কিশোরী নীতু, বিপরীত স্বভাবের দুইবোন ইরতাজুদ্দীনের সম্রাজ্য নিয়মগুলো যেন প্রতিদিন ভেঙ্গে দিচ্ছিলো, সেগুলোকে ভরে দিচ্ছিলো অবহেলায়। যখন গ্রামের ঢোল বাদক পরাণের স্ত্রী দুর্গা সন্তান ধারন করতে গিয়ে মৃত্যুর শেষ সীমায় পৌছে গিয়েছিলো তখন ডাক্তার শাহানা সব আভিজাত্যকে পিষে দিয়ে দুর্গার সন্তানকে নিয়ে আসে পৃথিবীতে। সেই ঘটনায় গ্রামে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে যেন ভরিয়ে দেয় আলোর শিখায়।

সুখানপুরের বাউন্ডুলে কিন্তু অকপট গায়ক মতি মিয়া, শাহানা আর নীতুর সম্মানে আয়োজন করে গানের জলসা। আপাতদৃষ্টিতে গ্রাম্য গানের জলসা নিয়ে শাহানার সংশয় ছিল। কিন্তু মতি মিয়ার কন্ঠে যখন শব্দ টেউ তুললো,

মরিলে কান্দিও না আমার দায়,
ও যাদুধন।
মরিলে কান্দিও না আমার দায়

নশ্বরতার এই সত্য যেন শাহানার ভেতরের বহু দিনের ঘুমন্ত এক নারী সত্ত্বাকে জাগিয়ে তুললো। যে বড় ডাক্তার হতে চায় না, চায় না বড় ঘরের কারো অর্ধাঙ্গিনী হয়ে সংসার নামক চক্রে জীবন পাড়ি দিতে। সে শুধু চায় মুক্তি, এই নশ্বর জীবনে মুক্তির অবিনশ্বর আলোয় হারিয়ে যেতে। শাহানা ভাবে কেমন হয় যদি সে থেকে যায় সুখানপুরে? কেমন হয় যদি মতি মিয়ার গানের দলে গান গেয়ে কাটিয়ে দেয় বাকীটা সময়?

সুখানপুরে আরেকটি মেয়ে ছিল। ঠিক শাহানার মত। তবে সে রাজকন্যা নয়। গবীর ঘরের সন্তান। শাহানার মত সেও মতিও সুর শব্দের স্পর্শে হয়েছিলো বিদ্রোহিনী। কিন্তু কেউ কখনো কুসুমকে জানতে পারেনি। শাহানাকে জানার জন্য অন্তত তাঁর আশপাশের মানুষগুলো চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু কুসুম? দারিদ্রতা যে ঘরের ছাদ সেখানে চেতনার গভীরে মনকে লালন করা হলো বিলাসিতা। আর সেই বিলাসিতা করতে গিয়ে কুসুম একদিন মৃত্যু মেখে নৌকায় ভেসেছিলো। আর সেই নৌকার দাড় টানছিলো মতি মিয়া।

ব্যক্তিগত অভিমতঃ

ইরতাজুদ্দিন, শাহানা, কুসুম আর মতি মিয়া। এ চারটি নামকে পাঠকের চরিত্রের নাম মনে হতে পারে কিন্তু এই চারটি নাম শুধু চারটি চরিত্র না চারটি চেতনার নাম, চারটি দিগন্তের নাম।

ইরতাজুদ্দিন আমাদের মাঝে লুকিয়ে থাকা আভিজাত্যের সত্ত্বা যে নিয়মের শৃঙ্গলে নিজেকে বন্দী রাখতে বলে। শাহানা সেই বিদ্রোহী সত্ত্বা যে এসে বার বার নিয়মকে ভেঙ্গে দিয়ে বলে বেঁচে থাকাই সব থেকে বড় নিয়ম। কুসুম আমাদের মাঝে ক্ষুধার্ত সেই সত্ত্বার প্রতিনিধি যার কাছে বেঁচে থাকা মানে ভালোবাসা, বেঁচে থাকা মানে শুধু ভালোবাসার মানুষের নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা। আর মতি মিয়া হলো আমাদের ভেতরের মুক্তি। যার কোন পিছুটান নেই। হারাবার কিছু নেই। বাতাসের মত, বৃষ্টির মত, জ্যোৎস্নার আলোর মত সে স্বতন্ত্র, সে মুক্ত।

পরিশেষে বলব হুমায়ূন আহমেদের বইগুলো মাঝে শ্রাবণ মেঘের দিন তাঁর রচনার মাঝে একটা দামী হীরক খন্ড। শুধু পড়লেই হয়তো এই হীরক খন্ডের আলোর স্পর্শ মিলবে না। প্রতিটি লাইনের মাঝে লেখক মঙ্গল আলোকের ছবি লুকিয়ে রেখেছেন। তাঁকে পরম মমতায় খুঁজতে হবে।

আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর ॥
মহিমা তব উদ্ভাসিত মহাগগনমাঝে,
বিশ্বজগত মণিভূষণ বেষ্টিত চরণে ॥
গ্রহতারক চন্দ্রতপন ব্যাকুল দ্রুত বেগে
করিছে পান, করিছে স্নান, অক্ষয় কিরণে ॥
ধরণী'পরে ঝরে নির্ঝর, মোহন মধু শোভা
ফুলপল্লব-গীতবন্ধ-সুন্দর-বরনে ॥
বহে জীবন রজনীদিন চিরনূতনধারা,
করুণা তব অবিশ্রাম জনমে মরণে ॥
স্নেহ প্রেম দয়া ভক্তি কোমল করে প্রাণ,
কত সান্ত্বন করো বর্ষণ সন্তাপহরণে ॥
জগতে তব কী মহোৎসব, বন্দন করে বিশ্ব
শ্রীসম্পদ ভূমাস্পদ নির্ভয়শরণে ॥
Profile Image for Mehedi  Hasan Mahfuz.
171 reviews27 followers
Read
June 12, 2023
পড়ার সময় উপভোগ করেছি। প্রথমবারের মতন নিজের গ্রাম এবং পৈতৃক বাড়িতে যাচ্ছে শাহানা এবং নীতু। তাদের পৈতৃক বাড়ি যে রাজপ্রাসাদ তারা নিজেরাও জানে না। গ্রামের নাম সুখানপুকুর।সেখানে গিয়ে শাহানা এক অদৃশ্য মায়ার বন্ধনে আটকে যায়। ডাক্তারি বিদ্যার কারণে গ্রামের মানুষের কাছে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাওয়া শাহানার গল্প, গ্রামের মানুষের সুখ দুখের গল্প, দুঃখের কারণে গলায় ভালো করে গান বসা মতি আর জ্বীনে ধরা কুসুমের গল্প দিয়ে লেখক পাঠককে আবেগের দোলাচলে ভাসিয়েছেন।
হ্যাপি রিডিং💙
Profile Image for Tanvir.
3 reviews
June 29, 2023
অসম্ভব ভালো লাগার মতো একটি বই শ্রাবণ মেঘের দিন।
পুরো গল্পের বিশ্লেষণ লিখে বলার মতো দক্ষতা আমার নাই,তবে শুধু একটু বলবো পুরো গল্পে শাহানা চরিত্র টির মায়ায় পড়ে গেছিলাম, খুব চেষ্টা করেছি চরিত্রটিকে নিজের মতো করে আঁকতে কিন্তু পারিনি,হয়তো গল্পের শাহানা আমার কল্পনার ও অধিক সুন্দর। আরেকজনের কথা না বললেই নয় গল্পের মূল চরিত্রের একজন মতি মিয়া, আমার কল্পনার বাস্তবতায় যে চরিত্রটি অভিনয় করেছিলেন তিনি লিজেন্ড ফারুক স্যার।
Profile Image for Rajib Majumder.
136 reviews7 followers
January 26, 2021
বড় বিষাদ আর মায়া জড়ানো লেখা। প্রত্যেকটা চরিত্রই চমৎকার। গোটা উপন্যাস জুড়েই শাহানা, নীতু, বৃদ্ধ ইরতাজুদ্দিন পাল্লা দিয়ে গেছে একে অপরের সাথে। আর শাহানা এবং নীতুর বাবা কাহিনিতে সরাসরি না থেকেও জোরাল চরিত্র।
Profile Image for Sazzad Hossen.
101 reviews6 followers
April 4, 2023
I didn’t expect for the ending and also it’s best of Humayun Ahammed's novels..
Profile Image for MD Sabbir  Hossain  Sifat .
9 reviews4 followers
July 26, 2018
বই : শ্রাবণমেঘের দিন।
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ।
গ্রন্থস্বত্ব : গুলতেকিন আহমেদ।
প্রকাশনী : সময়।
প্রকাশক : ফরিদ আহমেদ।
প্রকাশকাল : নভেম্বর ১৯৯৪
প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ।
পৃষ্ঠা : ১৫৮ পৃষ্ঠা।
মুদ্রিত মূল্য : ২০০ টাকা
.
সুখানপুর
হাওরের জলের বুকে ভেসে থাকা একটি ছোট দ্বীপ।
এই দ্বীপের মানুষগুলোর বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন গুলো হলো,
-দারিদ্র্যতা!!
-অশিক্ষা!
-কুসংস্কার!
-আর গভীর সরলতা।
এই দ্বীপের স্বঘোষিত রাজা হলেন উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র শাহানা আর নীতুর দাদা বৃদ্ধ ইরতাজউদ্দিন সাহেব।
বিশাল কাঠের দোতালা রাজপ্রসাদে বৃদ্ধের একা একা বেঁচে থাকা যেন অসাধারন শান্তি।
হঠাৎ একদিন এই শান্তির রাজ্যে বৃদ্ধের একমাত্র পুত্রের দুই কন্যা শাহানা ও নিতুর আগমন ঘটল।
আর তাতেই যেন বৃদ্ধের ঘুনে ধরা অস্তিত্বে প্রাণের সঞ্চার ঘটে ।
তরুনী শাহানা আর কিশোরী নিতু দুজন বিপরীত স্বভাবের দুই বোন।
দুইবোন দিন দিন দাদাজানের সম্রাজের নিয়মগুলো যেন বিলীন করে দিচ্ছিলো।
দাদার কঠিন নিয়মগুলো দুজন পরিপূর্ন করে দিচ্ছিলো অবহেলায়।
যখন গ্রামের ঢোল বাদক পরাণের স্ত্রী দুর্গা সন্তান প্রসব করতে গিয়ে অবধারিত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো তখন গোল্ড মেডেলিষ্ট ডাক্তার শাহানা তার দাদাজানের আভিজাত্যকে পিষে দুর্গার সন্তানকে পৃথিবীর মুখ দেখায় এবং দুর্গাকে বাঁচিয়ে তোলে।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে শাহানা গ্রামের প্রতিটা মানুষের হৃদয়ে যায়গা করে নেয়।
এবং প্রত্যেকের মন থেকে অন্ধকার মুছে ভরিয়ে দেয় আলোর দীপ্ত শিখায়।
.
সুখানপুরের বাউন্ডুলে গায়ক মতি মিয়া।
যার সাথে সাহানাদের পরিচয় হয়, স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে।
গায়ক মতি মিয়ার রয়েছে একটি গ্রাম্য গানের দল।
শহর থেকে আগত শাহানা ও নিতুর সম্মানে সে একটি গানের আসর রাখে।
তার আগে অবশ্য স্টেশন থেকে ফেরার পথে শাহানা ও নিতুকে কথা দেয় যে স তাদের গান শোনাবে।
কিন্তু শাহানার গ্রামের গানের আসর নিয়ে বেশ সংশয় ছিলো।
কিন্তু যখন মতি মিয়ার কন্ঠে যখন শব্দের খেলা ঢেউ তুললো,
-মরিলে কান্দিও না আমার দায়
ও যাদুধন!!
মরিলে কান্দিও না আমার দায়
.
শাহানা যেন হারিয়ে যেতে থাকলো কোন এক গভীর মায়ার মধ্যে।
নশ্বরতার চির সত্য যেন শাহানার ভেতরের বহু দিনের ঘুমন্ত এক নারী সত্ত্বাকে জাগিয়ে তুললো।
তার তখন বার বার মনে হতে লাগলো,
-সে চায়না ডাক্তার হতে!!
-চায়না কোন বড় ঘরের কারো অর্ধাঙ্গিনী হয়ে সংসার নামক জীবনচক্র পারি দিতে।
-সে শুধু চায় মুক্তি।
এই নশ্বর জীবনে মুক্তির অবিনশ্বর আলোয় হারিয়ে যেতে।
তখন তার মাথায় ভাবনা আসে,
-সে যদি সুখানপুরে থেকে যায় কেমন হয়..!!
-কেমন হয় মতি মিয়ার গানের দলের সাথে গান গেয়ে বাকি সময়টা কাটিয়ে দিলে।
.
সুখানপুরে আরেকটি মেয়ে ছিল
সে ও শাহানার মতই চিন্তা ভাবনা করে..!!
সে শাহানার মত রাজকন্যা না।
সে ছিল গরীর ঘরের মেয়ে।
কিন্তু সে ও শাহানার মত মতির সুর শব্দের স্পর্শে হয়েছিল বিদ্রোহিণী।
কিন্তু কেউ কখনও কুসুমকে জানতে পারেনি।
শাহানার ক্ষেত্রে অন্তত তারর আশে পাশের মানুষগুলো জানার চেষ্টা করছে কিন্তু কুসুমের ক্ষেত্রে কিছুই না।
দারিদ্রতা যে ঘরের ছাদ সে ঘরে চেতনার মনকে লালনা করে আসলেই চরম বিলাসসিতা।
আর কুসুম সেই বিলাসিতা করতে গিয়ে মৃত্যু গায়ে মেখে নৌকায় ভেসেছিলো।
আর সেই নৌকার দাড় টানছিলো মতি মিয়া।
.
👉ব্যাক্তিগত অভিমত :
.
-ইরতাজউদ্দিন
-শাহানা
-মতি
-কুসুম!!
এই চারটি নামকে উপন্যাসে শুধু চরিত্র মনে হয়নি, মনে হয়েছে এই চারটি নাম যেন চারটি চেতনার নাম।
চারটি অসীম দিগন্তের নাম।
ইরতাজউদ্দিনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা আভিজাত্যের সত্ত্বা যে নিয়মের শৃঙ্খলে বন্দি রাখতে বলে।
শাহানা আর নিতু যে বিদ্রোহী সত্ত্বা তারা এসে বার বার কঠিন শৃঙ্খল ভেঙ্গে দিয়ে যেন বুঝিয়ে দেয় যে,
-কঠিন নিয়ম ভেঙ্গে বেঁচে থাকাই তো জীবন।
কুসুম উপন্যাসে যে ক্ষুধার্ত সত্ত্বার পতিনিধিত্য করে,
সেখানে বেঁচে থাকা মানেই,
-ভালোবাসা
-ভালোবাসার মানুষের নিঃশ্বাসের শব্দ নিঃশব্দে শোনা।
আর মতি মিয়া তো বাউন্ডুলে।
আমাদের ভেতরের মুক্তির প্রতীক!!
যার কোন হারাবার কিছু নেই
পিছুটান বলতে কিছু নেই
বার বার মনে হচ্ছে মতি মিয়া
-বাতাসের মত
-বৃষ্টির মত
-রাতের জ্যাোৎস্নার মত স্বতন্ত্র
-মুক্ত।
.
👉লেখকে আর বইকে নিয়ে বিশেষ কিছু কথা :
.
সকাল থেকে তীব্র বৃষ্টির জন্যই শ্রাবন মেঘের দিন নিয়ে বসা..!!
নামটা যখন বৃষ্টির সাথে অনেক মিল তাহলে অব্যশই বৃষ্টিকে রিপ্রেজেন্ট করে কিছু আছে সে আসায় আসলে বসা।
বইটা পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিলো,
কেন স্যার এতো জনপ্রিয়..!!
তার আগেও বাংলায় তার মত শক্তিশালী লেখক ছিলো কিন্তু তারা কেন তারমত হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারেনি তার উৎকৃষ্ট প্রমান এটার মাধ্যমে পেয়েছি!
এই যে বৃষ্টি...!!!
তার আগে হয়তো কোন লেখক এমন বিষয় কে কেন্দ্র করে কাহিনি ফুটিয়ে তোলেনি।
আমাদের ইট পাথরের শহরের মানুষদেরকে,
-বৃষ্টি বিলাস..!!
-জ্যাোৎস্মা বিলাস..!!
এসব জিনিসের সাথে পরিচয় তিনিই করিয়েছেন।
আগে যে ছেলে মেয়ের বৃষ্টির নাম শুনলে আগে ছাতা খুঁজতো আজ তারা স্যারের সৃষ্টি পড়ে খোলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে বৃষ্টি বিলাস করছে।
বাহ্
তাদেরকে খোলা আকাশের নিচে দাড় করাতে ব্যাবহার করছেন কিছু শব্দ মাত্র।
আগে চাঁদ যাদের কাছে শুধুমাত্র গ্রহ ছিলো,
তারা স্যারের সৃষ্টি পড়ে পরিচিত হয়েছে জোছনা নামক গভীর মায়ার সাথে।
চাঁদের আলোয় আবার গোছল করা যায়..!!
এটাও স্যার করিয়ে ছেরেছেন ✌
কেউ কি কোনদিন বলেছে..?
.
-চাঁদনী পসর রাইতে যেন আমার মরন হয়..!!
চাঁদনী পসর রাতের সাথে মৃত্যুর সম্পর্ক কি??
কিন্তু সবার মাঝে এই বোধটা ঢুকিয়ে দিয়েছেন✌
কেউ কি কখনও মৃত্যুর কথা বর্নানা করছে এভাবে...!!
-মরিলে কান্দিও না আমার দায়..!!
.
আসলে স্যার আমাদের আশেপাশের জিনিসগুলো নতুন আঙ্গিকে আমাদের চিনিয়েছে।
.
শ্রাবন মেঘের দিনে, কুসুম যখন মতিকে বলেছে,
-জ্যাোৎস্মার মইধ্যে গোছল করতে ইচ্ছে করতেছে।
ঘোরের মধ্যে আমিও জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে চাঁদনী পসরা রাত খুঁজছি..!!
আজকি চাঁদনি রাত..??
রুপার থালার মত একটা চাঁদ কি আজ আকাশে আছে??
জ্যাোৎস্মা বিলাসের জন্য উওম চাঁদ কি আকাশে আছে...!!
.
রেটিং : ৯.৯/১০।
Profile Image for Nadira.
30 reviews1 follower
July 8, 2024
আচ্ছা,এখন কি শ্রাবণ মাস?

Ps. My 4am thoughts:
আচ্ছা,সারা বছর ধরে শ্রাবণ মেঘের দিন থাকতো যদি? শুধু মেঘের দিন,মাঝে মাঝে দুই একদিন বৃষ্টি হতো..আমি ব্রহ্মপুত্রের পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে সেই বৃষ্টিতে ভিজতাম..আবার হয়তো ভিজতাম না।কি জানি..
Profile Image for Mueed Mahtab.
344 reviews
May 21, 2025
তুই যদি আমার হইতি, আমি হইতাম তোর।
Profile Image for Rehnuma.
444 reviews21 followers
Read
November 11, 2024
❛এক যে ছিল সোনার কন্যা
মেঘবরণ কেশ
ভাটি অঞ্চলে ছিল সেই কন্যার দেশ...❜

সুখানপুকুর গ্রামে বেড়াতে এসেছে ইরতাজুদ্দিন সাহেবের দুই নাতনি শাহানা এবং নীতু। শাহানা পেশায় ডাক্তার। নীতু বাও কী তেও বছরের কইন্যা। শহুরে মানুষ দাদাবাড়ি বেড়াতে এসেছে বিশাল অবস্থা যাকে বলে।
ইরতাজুদ্দিন গাঁয়ের জমিদার পর্যায়ের মানুষ। জমিদারি স্বভাবটাও তার মধ্যে লক্ষণীয়। বিশাল কাঠের দোতলা বাড়িতে বলতে গেলে একাই তার বাস। নাতনিদের পেয়ে তার বাড়ি গম গম করছে। সে খুব খুশি।
তবে শাহানা আর নীতু বেশ অদ্ভুত। শাহানা গায়ে এসে নিজের মতো ঘুরঘুর করছে। বইতে পড়া গাঁয়ের বর্ণনা আর বাস্তবের অভিজ্ঞতাগুলো বুঝতে চেষ্টা করছে। এদিকে নীতু প্রথমে একটু ঘিনঘিন করলেও এখন বেশ আছে। গল্পের বই পড়ছে। পুষ্প নামের এক মেয়ের সাথে বেশ ভাব জমিয়েছে।
মতি, গানের দলের অধিকারী। যেদিন শাহানারা প্রথম এলো, সেদিন নৌকায় তাদের সঙ্গ সেই দিয়েছে। কথা দিয়েছে গানের আসর করবে। কিন্তু হতদরিদ্র মতি টাকার জোগান করতে পারছে না শাহানাদের গান শোনানোর আসরের।
কুসুম লম্বা কেশের অধিকারী, মায়া চোখের একদম মানানসই গ্রাম্য কন্যা। মতিকে সে ভালবাসে। খুব শখ তার মতির সাথে গানের দলে যোগ দিয়ে গান গাইবে,

❛চান্নিপসর রাইতে যেন আমার ম রণও হয়❜

কিন্তু মনের কথা বলতে পারেনা। মতির ধ্যানজ্ঞান শুধু গান। আর এখন নতুন জুটেছে রাজবাড়ির নাতনিকে গান শোনানোর বাসনা।
দুর্গার প্রসব বেদনায় যখন ধাই হাল ছেড়ে দিলো তখন মতি একরকম জেদ করেই শাহানাকে আনতে যায়। শাহানা আসে দুর্গার চিকিৎসায়। খুবই জটিল ডেলিভারির কেসটা সে সুন্দরভাবে করে ফেলে। গায়ে সে বিখ্যাত হয়ে যায়।
কুসুমের বাপ মোবারক সাথে করে সুরুজ নামের এক ছেলেকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন। কথা হচ্ছে কুসুমের সাথে তার বিয়ে হবে। কিন্তু কুসুম কি রাজি হবে? কুসুমের মনে যে মতির বাস। কিন্তু মতির মনে কে বাস করে?
শাহানারা চলে যাবে। গাঁয়ের ঘাটে লোকে লোকারণ্য। বিদায় দিতে এসেছে। একই দিনে কুসুমের বিবাহ। গান হচ্ছে,

❛আইজ আমরার কুসুম রানীর বিবাহ হইবো❜

কিন্তু শেষে এটা কী হলো!
একদিকে ইঞ্জিনের নৌকা ছুটে গেছে শাহানাদের নিয়ে। অন্যদিকে আরেক নৌকায় ছুটছে মতি, সুরুজ, মোবারক আর?
অপূর্ব গলায় কেউ গাইছে,

❛তুই যদি আমার হইতি, আমি হইতাম তোর।❜


পাঠ প্রতিক্রিয়া:

❝শ্রাবণ মেঘের দিন❞ হুমায়ূন আহমেদের গ্রামীণ সাধারণ জীবনযাত্রা উপজীব্য চমৎকার একটা উপন্যাস।
উপন্যাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অদ্ভুত এক মায়া ঘিরে ছিল। হাওরের কথা, চান্নি পসর রাতের মুগ্ধ করা বর্ণনা আর শ্রাবণ মেঘের পরে বৃষ্টির সেতারের পরিবেশে আচ্ছন্ন হয়ে গেছিলাম।
গ্রামীণ জীবনধারা, তাদের অজ্ঞতা, সরলতা আবার অদ্ভুত বিশ্বাসের কথাগুলো লেখক এত দারুণভাবে লিখেছেন। শহুরে মানুষের আগমন ঘটলে গ্রামে যেমন পরিবর্তন হয়, তাদের ভাবভঙ্গি যেমন হয় সেই সরল বর্ণনাগুলো আমার দারুণ লেগেছে।
আমি সবসময় বলি হুমায়ূন আহমেদ এমন একজন লেখক যার শব্দের জাদুতে অতি সাধারণ জিনিসও অপার্থিব লাগে। তাইতো গান করে শেষ রাতে যখন মতি পেটে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমত যাচ্ছিল তখন আল্লাহর উসিলায় কুসুমের পাঠানো সামান্য গরম ভাত, বেগুনের ভর্তা আর ডিমের সালুনও কেমন রাজকীয় খাদ্য মনে হচ্ছিল। আমার মনে হচ্ছিল এখুনি যদি এই পদগুলো আমার সামনে রাখে আমি গপগপিয়ে পুরো খানা সাবাড় করে দেবো।
গল্পটা আহামরি নয়। গাঁয়ের মানুষের জীবন, অজ্ঞতা, সেখানে পর্যাপ্ত সুবিধার অপ্রাপ্তি এসবই ছিল।
তবে মুগ্ধ করেছে রাতে বসা গানের আসর। শহুরে কনসার্টের থেকেও যার আবেদন বেশি। যে গান শুনে শাহানা নিজের চিন্তাধারাকে এক ভিন্ন রূপে আবিষ্কার করে। যে গান শুনে কুসুমের চোখে পানি এসে যায়। এই বর্ণনা গুলো পড়ার সাথে আমি আরো অনেক আগে দেখা এই সিনেমার দৃশ্যগুলো আবার কল্পনা করছিলাম। বইটা পরে পড়া হলো। সিনেমাটা অনেক আগেই দেখেছি। দুটোই বেশ লেগেছে।

চরিত্র:

হুমায়ূন আহমেদের লেখায় এমন কিছু আছে বা তিনি লেখেনই এমনভাবে যে সেখানে খারাপ, রূঢ়, বা সোজা কথায় ভিলেনদেরও ভালো লাগে।
এই উপন্যাসে তেমন ভিলেন নেই। তবে কিছুটা নেগেটিভ চরিত্র হিসেবে ইরতাজুদ্দিনকে বিবেচনা করা যায়। কিন্তু তাকে আমার বেশ লেগেছে। তার শেষটাও মুগ্ধ করেছে। শাহানা যেমন চোখ ভর্তি জলে ভেসে গেছিল আমি না গেলেও মুগ্ধ হয়েছি।
শাহানাকে দারুণ লেগেছে। তার অদ্ভুত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আর কেমন গা ছাড়া স্বভাব খুব মনে ধরেছে।
মতিকে ভালো লেগেছে। কুসুমকেও দারুণ লেগেছে। সুরুজকে সিনেমায় আরেকটু জায়গা দেয়া হয়েছিল। এখানে তেমন না হলেও যা ছিল ভালো ছিল।

আবারো লেখক যা করেন তাই করেছেন। চান্নি পসর রাতের মুগ্ধতা, শ্রাবণের ধারার মোহনীয় অবস্থা আর শেষের আবেগঘন দৃশ্যর পর একেবারে শেষটা কষ্টদায়ক। না করলেই কি নয়?
কষ্টের মাঝেই সুখ আছে তাই হয়তো!


❛এমন পূর্ণিমা রাতে গাঁয়ের দীঘিতে প্রিয় মানুষের হাত ধরে হাঁটতে কেমন লাগবে? যদি কোনো গান গাওয়া যায় তবে?❜
Profile Image for Sazin.
4 reviews
September 14, 2023
রোম্যান্টিক টাইপ নভেল গুলা তখনই বেশ ফুটে ওঠে, যখন শেষে কাঁদবার মতন একটা দৃশ্য ক্রিয়েট করা যায়। শাহানা মেয়েটা যেমন মতি কে ভালোবেসেছিল, কুসুম মেয়েটাও। কুসুমের আত্মহত্যার ভ্যালিড কারণটা একটা মিস্ট্রি। হুমায়ুন স্যারের বই, এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক যে এমন কিছু মিস্ট্রি দিয়ে উনি বইটা শেষ করবেন যেটা চিন্তার উর্ধ্বে। এটা এমনও হতে পারে যে কুসুম ভেবেছিল যে শাহানা মতিকে ভালোবাসে, মতিও শাহানাকে ভালোবাসে। এখন শাহানা যদি মতিকে বিয়ে করে তাহলে ওর ভালোবাসার মানুষ মতি সুখে সাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারবে; কেননা ওর বিয়ে ঠিক হয়েছিল সুরুজ আলির সাথে। সে বিবাহ করে সংসার করবে কিন্তু তাঁর ভালোবাসা এভাবে অসহায়ের মতো পড়ে থাকবে সেটা সে সহ্য করতে পারবেনা। কেননা তার বিয়ের পরে সে মতির সাথে দেখা করতে পারবেনা। আর যেহেতু শাহানা চলে গিয়েছে তাই মতির কি করুণ পরিণতি হবে সেটা ভেবেই কুসুম আত্মহত্যা করে। আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে এমনই চিন্তা এসেছে। আপনাদেরটাও জানাবেন।
Profile Image for Dr. Atik Abdullah Arafat.
47 reviews1 follower
May 14, 2025
আচ্ছা, Fever Dream এর সঠিক বাংলা অনুবাদ কী? সম্ভবত আমার জানা নেই, জানা থাকলেও ঠিক এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না, আর আমি মনে করার চেষ্টাও করছি না। সে যেটাই হোক আমার ধারণা শব্দটা এই উপন্যাসকে বর্ণনা করার জন্য একদম পারফেক্ট হবে। শুরু থেকেই পুরো উপন্যাসটা কেমন একটা ঘোরের আবেশ সৃষ্টি করে, আর তার নিজস্বে বলয়ে আটকে রেখে দর্শকের সামনে উপনীত হয় স্বভাবজাত হুমায়ূনীও স্টাইলে। এটাও ওনার লেখা বাকি আট-দশটা উপন্যাসের মতো হলেও এক সুক্ষ্ম প্রাচীরের মধ্যমে যেন আলাদা করে রেখেছে নিজেকে। দর্শকের চাহিদা মেপে ডেলিভারি দেওয়া হয়েছে পরিপূর্ণ মাত্রায়। মুগ্ধ।
Displaying 1 - 30 of 72 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.