অনেকদিন পর নবনী লিখলাম। কয়েক বছর ধরে এই কাহিনী মাথায় দিয়ে ঘুরছি। লিখতে যাই, লিখতে পারি না। অথচ পুরো গল্প মাথায় তৈরী হয়ে আছে। এ এক অদ্ভুত অবস্থা। একটা গল্প মাথায় নিয়ে অন্য কিছু কারও মুশকিল। সব সময় মাথায় ভোতা ধরণের যন্ত্রণা হতে থাকে। একসময় ধরেই নিলাম নবনী আর লেখা হবে না। পুরোপুরি ব্যাপারটা মাথা থেকে তাড়িয়ে দিলাম। এক ধরণের তৃপ্তি বোধ করলাম। বাঁচা গেল, নবনী নিয়ে আর যন্ত্রণা করতে হবে না, আর ঠিক তখনি লেখার আগ্রহ ফিরে পেলাম। আমার জন্যে এ এক রহস্যময় ও আনন্দময় অভিজ্ঞতা। আমার পাঠকদের এই অভিজ্ঞতার কথা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না।
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
চাঁদটা মনে হয় আকাশ থেকে নেমে আসছে। কি তীব্র তাঁর আলো? চাঁদের আলোয় কাকটার একটা দীর্ঘ ছায়া পড়েছে। রক্তে আমার শাড়ি ভিজে যাচ্ছে। এত রক্ত মানুষের শরীরে থাকে? পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের পায়ের শব্দ। নোমান কি আসছে? সে যদি আসে তাহলে তাকে একটা কথা বলে যেতে চাই। কথাগুলি বলার মত শক্তি আমার থাকবেতো? আমি বলব, এই দেখ আমি মরে যাচ্ছি। যে মানুষ মরে যাচ্ছে তাঁর উপর কোন রাগ কোন ঘেন্না থাকা উচিত না। আমি অনেককাল আগে একটা মানুষকে যে ভাবে ভালবেসেছিলাম তোমাকেও ঠিক সেই ভাবেই ভালবেসেছি। ভালবাসার দাবী আছে। সেই দাবী খুব কঠিন দাবী। ভালবাসার সে দাবী নিয়ে তোমার কাছে হাত জোড় করছি। আমার একটা মেয়ে আছে। কোন একটা এতিমখানায় বড় হচ্ছে। তুমি কি ওকে তোমার কাছে এনে রাখবে? প্রথম হয়ত তাকে ভালবাসতে পারবে না। কিছুদিন পর অবশ্যই পারবে। ও তো আমারই একটা অংশও। আমিতো তোমাকে ভালবেসেছি। এক খন্ড বিশাল মেঘ চাঁদটাকে ডেকে দিয়েছে। চাঁদের আলো এখন আর চোখে লাগছে না। চারদিক কি সুন্দর লাগছে। কি অসহ্য সুন্দর । হতাশ, গ্লানি, দুঃখ ও বঞ্চনার পৃথিবীকে এত সুন্দর করে বানানোর কি প্রয়োজন ছিলে কে জানে ???
আমার পড়া প্রথম প্রেমের উপন্যাস নবনী। আমার এখনো মনে আছে আম্মু বইটা পড়তে মানা করার পর ও আমি শেল্ফ থেকে নিয়ে পড়ে ফেলেছিলাম। এরপর আরো কয়েকবার পড়া হয়েছে। এই উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শুরুটা হয় খুবই বৈচিত্র্যহীনভাবে। এতটাই সাদামাটা যে শেষটা যে এত বিষণ্ন সুন্দর হবে তা পাঠকের কল্পনার বাইরে। এক বসায় শেষ করে ফেলার মতো বই। তবে শেষ করার পর মনটা অদ্ভুত বিষণ্ণ হয়ে থাকার মতো বই৷ কাজে অকাজের ফাঁকে ফাঁকে চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলার মতো বই। একই সাথে সহজ-সরল,জটিল,চাপা,চঞ্চল, তীক্ষ্ণ দূরদর্শীতা সম্পন্ন , জগৎ-সংসারের প্রতি উদাসীন সব ধরনের মানুষের গল্প এক মলাটের ভেতরই বলে গেছেন হুমায়ুন আহমেদ। এই উপন্যাসের আমার সবচেয়ে প্রিয় চরিত্র নবনীর বড় মামা। সবার সমস্যাই তার সমস্যা। নবনীর বড় মামার মত মানুষরা সবার খুব বেশি প্রিয় হতে পারেন না। কিন্তু তারপর ও তাঁরা আছেন বলেই আপাতদৃষ্টিতে "অকাজ" মনে হওয়া অনেক কাজ হয়ে যায়। হুমায়ুন আহমেদ আমার খুব প্রিয় কোনো লেখক নন। তবে তাঁর বইগুলো আমার অস্থিরতার সঙ্গী। আমি কিছুদিন ধরেই উপলব্ধি করছি যখন আমার অস্হির লাগে তখন তাঁর বইগুলো পড়লে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়। হুমায়ুন আহমেদের লেখনীর যে দিকটা আমার সবচেয়ে ভালো লাগে সেটা হচ্ছে উনার সহজ সাবলীল বর্ণনার ভঙ্গি যা পাঠককে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে। । সাদামাটা কিছু চরিত্রের অনাড়ম্বর জীবনের গল্পটার গোপন সত্য ও গভীর ক্ষতকে সুকৌশলে বলেছেন একদম শেষটায়। চিরায়ত অতৃপ্তি নিয়েই শেষ করেছি বইটা।
আমাকে যতবার জিজ্ঞাসা করা হয় সবচেয়ে প্রিয় গল্পের বই কোনটি, আমি প্রতিবার নিঃসঙ্কোচে, নির্দ্বিধায় এই বইটির নামই বলি। কোনো কারণ নেই বলার, হয়তো সাহিত্য গুণ বিচারে এই বই খুব আহামরি মাস্টারপিস না। তবুও এটি আমার অন্যতম প্রিয় বই। হয়তোবা আজীবনই থাকবে।
এতো সুন্দর বর্ণনা যে মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়েছি...কাহিনী হিসেবে যদি বলতে চাই তাহলে বলবো খুবই সাদামাটা একটি কাহিনী...কিন্তু এতো সুন্দর করে কজনই বা লিখতে পারেন?...একটি প্রসঙ্গ থেকে অন্য প্রসঙ্গে এতো সুন্দরভাবে চলে গিয়েছেন যে পাঠকের কাছে মনেই হয়নি হঠাৎ করে অন্য কোন প্রসঙ্গ চলে এসেছে...একজন দক্ষ কারিগরের দ্বারাই এটা সম্ভব...এক কথায় অসাধারণ...
বইটা পড়ার সময় বারবার মনে হয়েছে মেয়েরা কি আসলেই এমন হয়? শেষে করে মনে প্রশ্ন থেকে গেল 'মেয়েরা কেন এমন হয়?'
(spoiler ahead) একজকে মরতে দিতে দিয়ে তার ভালোবাসায় পাগল হয়ে যাওয়ার মাঝে কিসের স্বার্থকতা তা আমার মাথায় ঢুকলো না!! এমনিতেই মেয়েদের বুঝতে পারি না! এমন লেখা পড়লে আরো কনফিউজড হয়ে যায়! বোঝার ইচ্ছাটাও আর থাকে না!!
কাল ঈদুল ফিতর। দুঃখিত, আজ ঈদুল ফিতর। বই পড়তে পড়তে ঘড়ির কাটায় রাত বারোটা ক্রস করেছে। মাএ শেষ করলাম বইটা।
বইটা শুরু করার পূর্বের কিছু কথা বলি। আমার রোজার ঈদটা কেন জানি খুব মন খারাপের মধ্য দিয়ে কাটে। চাঁদরাএে মানুষের কতত আনন্দ। মানুষ জন কতত মজা করে আর আমি মন মরা হয়ে থাকি। সেই সন্ধ্যা থেকে অনলাইনে স্ক্রোল করছি। সবার ঈদ নিয়ে তীব্র উৎসাহ দেখছি। কিন্তু ভিতরে ভিতরে নিজের খুব খারাপ লাগছিল। অন্ধকার একটা রুমে একলা শুয়ে শুয়ে ফেসবুকে অন্যদের নিজেদের প্রিয়জনের সাথে আনন্দ মুহুর্তগুলা দেখতে গিয়ে মনে হচ্ছিল আরো বেশি কষ্ট হচ্ছে। এজন্য সর্বপ্রথম ডিএক্টিভেট করলাম ইনস্টাগ্রাম। এরপর চেষ্টা করলাম ফেসবুক ও ডিএক্টিভেট করতে কিন্তু, জানি না কি সমস্যা হল না! এরপর ফেসবুক এপস আনইনস্টল করে বরফশীতল পানিতে গোসল করলাম। মাথাটা একটু ঠান্ডা লাগছে। মনের মধ্যে হওয়া তীব্র এক আক্ষেপের মাত্রা কিছুংশে কুমছে। এরপর ভাবলাম বই পড়ে রাতটা কাটাই। এ বাদে আমার করার ও কিছু নাই। আজ চাঁদ রাত আর কাল just another Monday. তো এরপর এই বইটা পড়া শুরু করি৷ চাইলে থ্রিলার কিংবা হরর পড়তে পারতাম কিন্তু মন চাইল সামাজিক উপন্যাসই পড়তে কারণ আমি নিজে অসামাজিক। এই বইটা নিয়ে এর পূর্বে অনেক রিভিউ দেখছি। মানুষের কাছে এই বইটা ভালই জনপ্রিয়। তো আমি ভাবলাম হয়ত কন্টেন্ট কোথাও কেউ নেই কিংবা অপেক্ষার মতন হবে। কিন্তু দিনশেষে হল কী?
আমার আহামরি লাগে নাই বরং বেখাপ্পা লাগছে। প্রথমত এই শিক্ষক আর স্টুডেন্টের মধ্যে আউলফাউল সম্পর্ক আমার সেই ছোটকাল থেকেই অপচ্ছন্দ। এসব কাজ কে সাংঘাতিক ছেচড়ামী লাগে। তবুও শুরু করছি বই শেষ না করে রাখব না বিধায় পড়লাম। নবনী মেয়েটা তার স্যারকে নিজে ম্যানিপুলেট করল। তার সাথে অনৈতিক কাজকারবার করল। অতঃপর এই ভন্ড স্যার যখন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে নবনীর বাবাকে জানাল তখন তার বাবা নবনীকে জিগ্যেস করলে নবনী লিটারেলি আসমান থেকে পড়ল। এরপর বেচারারে কুত্তার মতন পড়তে হইল। স্যাডড (দ্যো হালারপো ডিজার্ভ করে এমনে মরা)। নবনীর বর্তমান হাজবেন্ড নোমানের মেরুদণ্ডহীনতা এটাও পড়ার সময় হাসি পাচ্ছিল। দুনিয়া বড়ই অদ্ভুত।
যাইহোক এটা জাস্ট একটাাাা ফিকশনননননন! Calmmm Down Fuad. শুরু করছিলাম মন খারাপ কাটাতে বই শেষ করে হইল মেজাজ খ��রাপ। তবে বেস্ট পার্ট হচ্ছে মেজাজ খারাপ মন খারাপকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। এখন আর কষ্ট হচ্ছে না কোন কিছু নিয়ে কিন্তু মেজাজ অসম্ভব খারাপ।
যখন শিশুরা ছোটবেলা থেকে বাবা মার তীব্র কিন্তু অপ্রয়োজনীয় শাসনে বড়ো হয় তারা সাধারণত নিজের ইচ্ছার কথা, ভালো লাগার কথা, ভালো না লাগার কথা মুখ ফুটে বলতে পারে না। জীবনের ছোট ছোট বিষয়ে এইসব না বলা কথা তেমন কোনো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় না। আবার সেই শিশু বড়ো হওয়ার পড়েও সেই ভীতির জন্য নিজেরই অজান্তে তার ইচ্ছা অনিচ্ছার কথা তার বাবা মাকে বলতে পারে না, বলার সাহস পায় না। এই না পারার ফলাফল কতটা ভয়ংকর হতে পারে তারই একটু চিত্র এই গল্প ফোটানো হয়েছে।
আল্লাহ সকল বাবা মাকে এই বোধ দিক কিভাবে সন্তানের সাথে মিশতে হয়, কথা বলতে হয়, সম্মান দিতে হয়, গুরুত্ব দিতে হয়, ভালোবাসতে হয়, শাসন করতে হয়।
বইয়ের ভালো লাগা লাইন:
পৃথিবীতে দু ধরনের মানুষ খুন হয়, প্রবল ঘৃণার এবং প্রবল ভালোবাসার মানুষ।
আদর্শ মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। আদর্শ মানুষ ডিসটিল্ড ওয়াটারের মত – স্বাদহীন। সমাজ পছন্দ করে অনাদর্শ মানুষকে। যারা ডিসটিল্ড ওয়াটার নয়-কোকা কোলা ও পেপসীর মত মিষ্টি কিন্তু ঝাঁঝালো।
আমরা মানুষের জটিলতা দেখেই অভ্যস্ত। সারল্যকে আমরা ভয় করি। কারো ভেতর ঐ ব্যাপারটি দেখতে পেলে থমকে যাই এবং আমাদের মনের একটি অংশ বলতে থাকে - নিশ্চয়ই কোন একটা রহস্য আছে।
নবনী তার স্যারের বেলায় কেনো মিথ্যা বললো? তার স্যার যখন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তার বাবার কাছে এসেছিলো তখন সে স্বীকার করতে পারতো। যখন লোকজন তার স্যারকে ধরে এনেছিলো তখন ঐ ঝড়বৃষ্টি রাতের কথা স্মরণ করে সহজ স্বীকারোক্তি দিতে পারতো। বলতে পারতো স্যারকে আমি প্রচণ্ড ভালোবাসি। স্যার তো কখনো তাকে প্রশ্রয় দেয়নি। সেই স্যারের গায়ে পড়ে ভালোবাসা বুঝাতে চেয়েছিলো।
আমার নবনীর ওপর খুব রাগ হলেও রাগ করতে পারছিনা। নোমানের সাথে তার সংসার জীবনটা খুব মধুমাখা ছিলো। আজ যারা মুখে ভালোবাসার দোহাই দেয় অথচ সামান্য বিষয় মানাতে পারেনা তাদের উচিত নবনীকে ফলো করা। নবনীর জীবনের শেষটাতে এসে ওর জন্য আমার মায়াটা প্রচণ্ড হচ্ছে। যেমনই থাকুক স্ত্রী হিসেবে খারাপ ছিলোনা কিংবা মায়ের মমতার দিক থেকেও চমৎকার ছিলো।
প্রচ্ছদে যেভাবে লেখা " হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের উপন্যাস" তা দেখে হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেন উথাল পাথাল প্রেমের কাহিনী,শিরি ফরহাদ কিংবা লাইলী মজনু। কিন্তু না... প্রেম আছে তবে তা গতানুগতিক মনে হয়েছে, কিন্তু গল্পের মধ্যে হালকা রহস্য ছিল একটু টুইস্ট ছিল। সব মিলিয়ে মোটামুটি। দশে সাড়ে পাঁচ! হ্যাপি রিডিং 💙
পড়ে ফেললাম হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের উপন্যাস 'নবনী'। আমার এক ফ্রেন্ড বহুদিন আগে এই বইয়ের কথা বলেছিলো যে, হুমায়ূন আহমেদের এই বই আমার মাথা ঘুরিয়ে দিবে। সত্যি বলতে, মাথা ঘুরানোর মতো কিছুই পাইনি।
যাইহোক, বইয়ে আসি। এক দুপুরে একদম হঠাৎই নবনীর বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। কিছু বুঝে উঠতে না উঠতেই রাতে তার বিয়েও হয়ে যায়। বিয়ে হয় নোমানের সাথে। খুব সাধারণ একটা ছেলে, তবে বেশ গোছালো। নবনীর এর আগের বিয়েগুলো ভেঙে যেতো। তার পিছে দায়ী ছিলো নবনীর প্রথম প্রেম। তার ইতিহাস টিচার। তিনি ভাড়া থাকতেন নবনীদের বাসাতেই। কি হয়েছিলো এমন যে তাদের বিয়েটা হয়নি? কেনোই বা ট্র্যাজেডি? জানতে হলে পড়ে ফেলুন 'নবনী'।
সত্যি বলতে আমার কাছে আহামরি কিছু মনেই হয়নি। হুমায়ূনী ভাইব পুরো উপন্যাসজুড়ে। সেই যা একটা ভালো লাগার বিষয়। তা বাদ দিয়ে খুবই নরমাল একটা প্রেম কাহিনী। যা আপনি অলিতে গলিতে, মুভিতে দেখিতে পাইবেন। এভারেজ লেগেছে। পড়ে দেখতে পারেন। আপনার ভালো লাগলেও লাগতে পারে।
এক অসম্ভব স্ট্রেসময় দিনে অফিসে বসে এই বইটা পড়েছি। বইটা আমাকে রিয়েলিটি এস্কেপ করার সুযোগ দিয়েছিলো; আমাকে অফিস থেকে নিয়ে গিয়েছিলো বহুদূরে- যেখানে নবনী এক সকালে জানতে পারে আজ রাতে সম্ভবত তার বিয়ে। সেই নবনী- যে একবার একজনকে খুব গভীরভাবে ভালোবেসেছিলো এবং ভবিষ্যতে আরো একজনকে সে একইভাবে ভালোবাসবে। কিশোরী নবনী আর প্রাপ্তবয়স্ক নবনীর মাঝে সে কী বিরাট ফারাক... আমি মুগ্ধ হয়ে পড়ে গেলাম। জীবনে যতবার এই বইটা দেখবো ততবারই অফিস স্ট্রেসের মেমোরি আর কিভাবে এই বইটা আমাকে এস্কেপ করার সুযোগ দিয়েছিলো তা মনে পরে যাবে।
হুমায়ুন আহমেদ ছোট সাইজের বই কম লিখেননি। তার লেখার বিশাল বড় একটা অংশ ১০০ থেকে ১৫০ পৃষ্ঠার বই দখল করে রেখেছে। এর মাঝে যে কয়টি বই পছন্দের কাতারে ফেলা যায়, 'নবনী' নিঃসন্দেহে তার মধ্যে একটি!
"হতাশা,গ্লানি,দুঃখ ও বঞ্চনার পৃথিবীকে এত সুন্দর করে বানানোর কি প্রোয়জন ছিলো কে জানে?"
পুরোটা বই জুড়েই জীবন সংসারের ঝঞ্ঝাট, উদাসিনতার গল্পই যেনো প্রতিটি চরিত্রে। বইয়ের প্রথম অংশ পড়ে শেষ অংশে কি হবে তা বুঝা যায় দায়।
এই বইটা আমি পড়ি বছরের প্রথম দিকে কোন এক বিষণ্ন শীতের রাতে। বইটা পড়ে আমি এতটাই অবদমিত হই যে, কিছু লিখার মত শব্দ খুঁজে পাই নি।
গল্পের নায়কা নবনী, যারা জীবনে একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন অধ্যায় আছে যা তার মুছে ফেলা স্মৃতির একাংশ। এক দুপুরে ঘুম ভাঙ্গার পর জানতে পারে তার বিয়ে। এতে তার আশ্চর্য হওয়ার কথা হলেও, পারতপক্ষে সে আশ্চর্য হয়নি।তার জীবনে ঘটে যওয়া অতীতের কার��ে, কোন পাত্রপক্ষই বেশিদূর এগো ত না। অবশেষে লোকচক্ষু অগোচরে নবনীর বড় মা তার বিয়ে ঠিল করেন। প্রথমে ভাবা হয় কাউকে না জানিয়েই এ বিয়ে সম্পূর্ণ হবে কিন্তু না পরে খুব আয়োজন করেই নবনীর বিয়ে হয়।( এই অংশ নবনীর বড় মামাকে আমার খুবই পছন্দ হয়। যে কিনা পরে কিসে ভালো হবে তাতেই চিন্তিত। এমন মানুষদেরকে আমরা যদিও সেই ভাবে লক্ষ্য করি না। )
পাত্রের নাম নোমান। সহজ, সরল, সাতে-পাঁচে না যাওয়া ব্যক্তি। নোমান তার বন্ধুর সফিকের অফিসে চারকরি করত। শুরু হয় নোমান আর নবনীর ছোট একরুমের সংসার যাপন। দুজনের অল্প অল্প করে কাছে আসার গল্প, জ্বর মাপার বাহানায় কাপল ছুয়ে দেয়া, চায়ের কাপে অপেক্ষায় থাকা। এই সুন্দর মুহূর্ত গুলোর মধ্যেও নবনী চেষ্টা করত তার ফেলে আসা অতীতের গল্প,নোমানকে বলার। কিন্তু কখনই বলা হয়ে উঠেনি। এমন করেই এগুতে থাকে। তবে এ মাঝে ছিলো এক ঝঞ্ঝট। নোমানের বন্ধুর সফিক ও তার স্ত্রী অহনার জন্য গল্পের কাহিনী ঘুরতে থাকে। যা প্রথম দিকে কল্পনাই করা যায়নি।
নবনী গল্পের শেষে আনিস স্যারের জন্য যেমন আমার খুব খারাপ লাগছিলো তেমনি নবনীর শেষ পরিণতী তেমনি আহত করে। কি ছিলো নবনীর অতীতে? গল্পের শেষে লখকের কঠোর পরিসমাপ্ত সত্যিই ব্যথাদায়ক।
This is my favorite of all Humayun Ahmed that I have read. Jhochna o Jononir golpo is an exception. Noboni is a great wiring not only as a story but also it is a different novel considering Bengali Novels of that time. The story flows to unpredictable plots and empowers readers more to follow & engage. I read Noboni when I was very young and since then, I have not read such a great women centric novel in Bengali till now!
সত্যিকার হুমায়ূন আহমেদকে চেনা যায় যে বইগুলো পড়লে, 'নবনী' বইটি সেগুলোর মধ্যে একটি। একদম ঝরঝরে লেখা। উপন্যাসজুড়ে সহজ কথা খুব সহজে বলে গেছেন লেখক। কিন্তু গোপন কথাটি অনেক মুন্সিয়ানায় গোপন করে ব্যক্ত করেছেন একদম শেষটায়। মুগ্ধ হয়ে পড়ার মত বই। পড়া শেষ করে বসে থেকে 'এতক্ষণ কী পড়লাম' মনে হওয়ার মত বই।
শুরুতে হালকা স্লো আর সহজে আঁচ করতে পারা কাহিনী মনে হবে, ইচ্ছে হবে বাদ দেই। কিন্তু শেষ অবধি যেতে থাকুন, লাস্ট চাপ্টারটা বড়সড় ধাক্কা দিবে, সাথে শোনাবে বিষাদের সুর।
নেত্রকোনায় নবনীদের বাসা। নবনীর একটা সমস্যার জন্য বিয়ে হচ্ছিলো না। নবনীর বড় মামা তাই একটি বিয়ে জোগাড় করেছেন। ছেলে একটু গরীব। কিন্তু বিয়ে হবে, এটাই অনেক। ছোট করে বিয়ে সেড়ে ফেলার ইচ্ছা। খুবই গোছানো মানুষ বড় মামা। সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। কথা ছিলো কাউকে না জানিয়েই ছোট করে বিয়ে করে ফেলার। এতে নবনীর মা-বাবা খুবই খুশি ছিলেন। কিন্তু বড় মেয়ের বিয়ে এইভাবে দিতে ইচ্ছা করলো না নবনীর মার। বিয়ের সব ধরণের অনুষ্ঠান করা হলো। ব্যান্ড নিয়ে আসা হলো। চারদিক থেকে সব আত্মীয় চলে আসলো। নবনীর বোন ইরার বান্ধুবীরা নবনীদের বাসায়ই বাসর ঘর সাজিয়েছে। নবনীর ভাই অন্তু আছে ব্যান্ড এর তদারকি। ব্যান্ড আনার কারণে নবনীর প্যারালাইজড বাবা খুবই রাগ করলেও দেখা গেছে উনি ব্যান্ড এর সাথেই সর্বক্ষণ লেগে আছেন। সে রাতেই নবনীর বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের রাতেই বৃষ্টি হয় খুব। বৃষ্টিতে খেলা করে সবার জন্য অনেক স্মৃতিতে ভরপুর একটি রাত হয়ে যায় নবনীর বিয়ের রাত।
নোমান তার বন্ধু সফিক এর অফিসে চাকরি করে। বিরাট বড়লোক সফিক। আলিশান বাড়ি। তাঁর স্ত্রী এর নাম অহনা। মেয়েটা কালো কিন্তু অনেক মায়াবী একটা চেহারা। নোমান এর ময়না পাখি আছে, প্রতিদিন ময়নাকে দিয়ে "নবনী" বলানোর বাচ্চাদের মত চেষ্টা ভালোই লাগে নবনীর। মানুষটা অনেক হিসাব করে খরচ করে। ছোট একটা বাসা। একজন এর জন্য সব কিছু কেনা। এখন নবনীর জন্য সব কিছু একটা নতুন করে কিনতে হচ্ছে।
সফিকদের সাথে বাইরে খেতে যাওয়ার পর অহনা বার বার বুঝিয়ে দিচ্ছিলো যে তারা বরাবর না। অহনারা অনেক উপরের স্তরের মানুষ। এই ব্যাপারটি পছন্দ হয়নি নবনীর।
নবনীদের বাসায় তাঁর কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক ভাড়া থাকতো। লেখক কোনো নাম দেয়নি তার। সুবিধার্তে নাম ধরা হলো রফিক। এতিমখানায় বড় হওয়া খুবই সাধাসিধা ধরণের মানুষ। মাটির দিকে তাকিয়ে কথা বলতো আর চলতো। কিছুটা ধার্মিক। এমন একজনকে কিভাবে গার্লস কলেজের চাকরি দেয়া হলো তা একটি চিন্তার বিষয়। একদিন শিক্ষকের সাথে ঝগড়া করতে যেয়েই মনের মিলন হয়ে যায়। নবনী নিজের মতো ঝেড়ে যাচ্ছিলো, কিন্তু শিক্ষক বাচ্চাদের যেভাবে বুঝায় সেভাবে নবনীকে বুঝানোর চেষ্টা করছিলো, আর কথার ফাঁকে একবার এর জন্য উনার হাসি নবনী দেখতে পায়, নবনীর মনে হয় এতো সুন্দর একটা মানুষের হাসি কিভাবে হয়? শুর হয় নবনীর রাত জাগা। এক পর্যায় উনি অসুস্থ হলে নবনী তার রুমে যেতো খাবার নিয়ে। এভাবেই সখ্যতা গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে রফিক নবনীকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব পাঠালে তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়। এতেও শান্তি হয় না নবনীর এলাকার মানুষের। তারা তাকে ধরে নিয়ে এসে মারতে মারতে মেরেই ফেলে। শুরু হয় নবনীর মাথা খারাপ হওয়া। মাঝে মাঝে নবনী কাউকে চিনতে পারে না। নবনীর বড়ো মামা নবনীকে নিয়ে ঢাকা চলে যায়, কেউ জানে না নবনীর ঠিকানা। সেখানে ১ বছর থাকার পর আবার নবনীকে ফিরিয়ে দিয়ে যায় বাসায়। তারপর বহু বছর কেটে যায়। নবনীর বিয়ে ভাঙ্গতেই থাকে। শেষ মেষ বিয়ে হয় নোমান এর সাথে।
নোমানের সাথে নবনীর সংসার খারাপ চলছিলো না। তাদের ঘরে নতুন মেহমান আসবে। সে জন্য মোটামোটি ভালোই দিন কাটছিলো নবনীর। পুরানো কথা মনে আসলেও তেমন ব্যাথা দিতো না। নোমান নাম এর সহজ সরল মানুষটাকে নবনীর ভালো লাগা শুরু করে।
নোমান সফিকের একটি ছবিতে কাজ করছে। সেখানে ফুট ফরমাশ করাই তার কাজ। খুবই লয়াল ভাবে প্রতিটা কাজ করছে নোমান। এদিকে অহনার একটু পর পর রাগ করার অভ্যাস, সেই রাগও ভাঙ্গাতে হচ্ছে নোমান এর। কারণ অহনা শুধু নোমান এর সাথেই ঠিক ভাবে আচরণ করে। ভার্সিটি লাইফে সফিক নানা ভাবে অহনাকে ব্যবহার করেছে। তার মাধ্যম ছিলো নোমান। নোমান সফিকের দেয়া টাকা নিয়ে যেতো অহনার কাছে। অহনার কোনো পামিস্ট এর কাছে যেতে হলেই নোমানকে যাওয়া লাগতো সাথে। ধারণা করা যায় অহনার মনে নোমান এর জন্য ভালোবাসা জমা ছিলো। তাই যখন নোমানের জীবনে নবনীর আগমন হয়েছে, সেখান থেকে অহনার মনে ক্ষোভ জমেছে। নবনীর জীবনের খুঁটিনাটি বের করেছে অহনা। সেখান থেকেই জানতে পেরেছে যে নবনীর একটি মেয়ে আছে। সেই মেয়ে এতিম খানায় বড় হচ্ছে।
নবনী, অহনা, সফিক, নোমান একটি নৌকায় ছিলো। গান বাজনা হচ্ছিলো। গান গাচ্ছিলো অহনা। হুট করে অহনার রাগ হয়ে যায়। সেই রাগ এর মাথায় অহনা নবনীকে তার মেয়ের কথা বলে দেয়। তারপরই নোমানকে নিয়ে সেই জায়গা থেকে প্রস্থান করে। নোমান চলে যাচ্ছে অহনার সাথে। সফিক ধরেছে নবনীকে। নবনীর পুরানো সব কথা মনে পড়ে। তাকে কেনো ঢাকায় ১ বছর রাখা হয়েছিলো সব মনে পড়ে। নবনীর দুনিয়া উলটে যায়। তার মনে হতে থাকে, তার শরীর থেকে রক্ত ঝড়ছে অনেক। আকাশের চাঁদ ঢেউ এর মতো দুলছে। নবনী মনে হয় বাঁচবে না, ভিতরের বাচ্চাটিও হয়তো বাঁচবে না। জ্ঞান হারানোর আগে নবনীর শেষ আবদার ছিলো ন���মান এর কাছ, সে যাতে তার মেয়েটিকে আগলে রাখে।
This entire review has been hidden because of spoilers.
বইটা কেন পড়েছি কারণটা অদ্ভুত! বিকেলে ফেসবুকে একটা স্কৃনশটে বইটার কয়েক লাইন দেখে আগ্রহী হয়েছি। অনেকে মন্তব্য করেছে, বইটা নাকি ফালতু।
আমি তাদের কথা সম্পূর্ণ ফেলে দিতে পারতেছি না। তবে কেন জানি বইয়ের গল্পটা ভালো লাগেনি। হয়তো লেগেছে। ক্রিটিকসের মতো ভাবতে পারছি না কারণ এখন সাড়ে তিনটা বাজে রাত। আমাকে ঘুমাতে হবে।
ইসলাম বিদ্বেষমূলক কিছু অংশ বইতে ছিলো। হুমায়ূন আহমেদের উপর আমি বায়াসড কিছুটা, এটুকু ক্ষমা করে দিবে সাবকনসাস! হাহ!
গল্পটা ভালো, একমনে পড়ে যেতে ভালো লাগল। পোশাক নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে নানান কথা বলেছেন, যুক্তি আবার পাল্টা যুক্তি দেখিয়েছেন। তবে পাঠকদের নিজের মতো করে ভাবার জন্য একটা বিশাল জায়গা রেখে দিয়েছেন। কোন দিকে কি হয়েছিল নিজের মতো ভেবে দেখা যেতে পারে। পড়া শেষ করে কিছুক্ষণ ভাবতে ভালোই লাগবে।
নবনী হুমায়ুন আহমেদ এর লেখা একটি সাধারণ গল্প। প্লট তেমন ভালো লাগেনি। হুমায়ুন আহমেদ এর সাবলীল লেখার ধরনের জন্যই হয়ত পড়ে শেষ করতে পেরেছি। অন্যথায় হয়ত পড়ে থাকত।